#মেঘের_আড়ালে_বৃষ্টি
#আটাশ
#প্রজ্ঞা_জামান_দৃঢ়তা
প্রয়াস রোদ বসে আছে পার্কের বেঞ্চিতে। রোদের মুখ ফোলা দেখে বোঝা যাচ্ছে সারারাত কান্না করেছে। এই কয়দিনে যেন চেহারায় লাবন্যতা হারিয়ে গেছে। চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে।
প্রয়াস বলে, “আমাকে এখানে কেন ডেকেছো?”
রোদ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে, “কেন ডেকেছি বুঝতে পারছো না?”
“না পারছিনা। কয়দিন পর তোমার ফ্লাইট।চলে যাবে এখন তোমার উচিত সবাইকে সময় দেয়া।”
রোদ এবার চিৎকার করে উঠে, “কি বলছো এসব তুমি? তোমার বাবা উনার বন্ধুর ছেলের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করতেছেন আর তুমি বলছো আমি তোমাকে কেনো ডাকছি?”
স্বাভাবিকভাবে প্রয়াস বলে, বিয়ে দিলে করে নিবে।এটা নিয়ে এতো ভাবার কি আছে?”
এবার রোদ যেন আশ্চর্যের শেষ সীমায় চলে যায়। প্রয়াস এ কথা বলছে! যে প্রয়াস রোদকে কোন ছেলের সাথে কথা বলতে দেখলে রাগ করে। সে বলছে অন্যকাউকে বিয়ে করে নিতে?
“তাছাড়া ওই ছেলে ও তোমার সাথে যাওয়ার জন্য রাজি আছে। আব্বু চায় তুমি যাতে আমেরিকা গিয়ে একা হয়ে না পড়ো তাই বিয়ে দিয়ে পাঠাতে চাচ্ছে।”
“ওহ আচ্ছা! তুমি এতো স্বাভাবিকভাবে কি করে কথা বলতে পারছো? আমার তোমাকে বড্ড অচেনা লাগছে। বড় আব্বু যদি আমার কথা চিন্তা করে বিয়ে দিতে চায় তাহলে তোমার সাথে দিতে বলো। তাহলে তারাও চিন্তা মুক্ত থাকবে আর আমরাও সুখে থাকবো।”
“পাগল হয়ে গেছো রোদ মাত্র আমার ক্যারিয়ার শুরু আর এর মাঝে চলে গেলে আমি ক্যারিয়ার গড়তে পারবো না।”
রোদ এবার হুংকার দিয়ে উঠে, “আমার চেয়ে ক্যারিয়ার বড় তোমার কাছে!
আমি কিচ্ছুনা? এটা তুমি বলতে পারলে? ঠিক আছে তুমি কাউকে বলতে না পারলে আমি বলবো। ”
প্রয়াস বলে, “কাকে বলবে?”
“কাউকে না পারি রিফাত ভাইয়াকে বলবো। ভাইয়া নিশ্চয়ই আমাদের বুঝবে।”
রোদ একথা শেষ করে সামনে এগুতে লাগলে প্রয়াস পেছন থেকে হাত টেনে ধরে আর শান্ত স্বরে বলে, “ভাইয়া জানে রোদ।”
রোদ উত্তেজনায় ভূলবশত বলে, “হ্যাঁ জানে তো” বলেই থমকায়।
খুব অবাক হওয়ার মত করে বলে, “জানে ভাইয়া?”
প্রয়াসের হাত ধরে জিজ্ঞেস করে, “কি জানে ভাইয়া?”
প্রয়াস চুপ।
রোদ আবার জিজ্ঞেস করে, “কি হলো, ভাইয়া কি জানে?”
“ভাইয়া জানে আমার আর তোমার কি সম্পর্ক।”
রোদ খুব অবাক হয়। হাসি মুখ নিয়ে বলে, “তাহলে ভাইয়া নিশ্চয়ই বুঝেছে আমাদের কথা? বলো ভাইয়া কি বলছে? বলো না প্রয়াস?”
প্রয়াস রোদকে একটু কাছে এনে বলে, “শুনতে চাস ভাইয়া কি বলছে? তবে শোন। ভাইয়া বলছে, আমাদের দুই পরিবারকে অনেক কষ্টের পর এক করা গেছে। এখন যদি তারা আমাদের সম্পর্কের কথা শুনে তাহলে আবার দুই পরিবার ভাগ হয়ে যাবে।” প্রয়াসের চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে।
“একটা বিয়ে দুই ভাইকে এতো বছর একে পরের থেকে দূরে রেখেছে। আবার আমাদের একটা ভুল বা বিয়ে যাই করি না কেন তারা আবার আলাদা হয়ে গেলে। আমি বা তুমি কেউই নিজেকে ক্ষমা করতে পারবোনা।
তাছাড়া আব্বুর অপারেশন হলো কিছুদিন আগে। এখন এমন আঘাত নিতে পারবেন না। আল্লাহ না করুক আব্বুর যদি কিছু হয়ে যায়।আমরা নিজেকে কখনও ক্ষমা করতে পারবো না।তাতে কি আমরা সুখে থাকবো?”
প্রয়াস রোদের কাছে উত্তরের আশা না করে আবার বলে, “রোদ তুমি দেখেছো আব্বু আর চাচ্চু দুজন দুজনকে পেয়ে কত খুশী? কত আনন্দে আছে তারা। জানো রোদ আমি আমর আব্বুকে কোনদিন এতো খুশী দেখিনি।কিন্তু এখন তিনি যতটা ভালো আছেন ততটা ভালো কোনদিন ছিলেন না।
তাহলে আমরা কি করে স্বার্থপরের মত আমাদের সুখের জন্য তাদের সুখ কেড়ে নেবো? এতে কি আমরা ভালো থাকতে পারবো?
প্রথমে তোমার মত আমিও বুঝতে চাইনি।কিন্তু পরে যখন রিফাত ভাইয়া বুঝালো। আমিও অনেক ভেবে দেখলাম। আমাদের আলাদা হয়ে যাওয়া উচিত। আমাদেত পরিবারের এতোগুলো মানুষের জন্য।
তাছাড়া আমরা দুজনে এখন যথেষ্ট ম্যাচিউরড তাই আমাদের সবদিক ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আমারা স্বামী স্ত্রী নাই বা হলাম। কাজিন হিসেবে একটা সম্পর্ক তো রয়েই যায়।”
রোদ বলে, “আমরা দুজনে চেষ্টা করলে ঠিকই সবাইকে বুঝাতে পারবো। তুমি আমি মিলে সব এক করতে পারবো।
যত সময় লাগে লাগুক তাও আমি অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবো না। তুমি প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেওনা আমি মরেই যাবো। প্রয়াস দয়া করো আমায়।”
প্রয়াস রোদের মাথায় নিজের মাথা ঠেকিয়ে বলে, “আমরা এক হতে পারবো না রোদ। কিছুতেই না। আমাদের পরিবার কোনদিন আমাদের মেনে নিবে না। তাছাড়া আমরা তো পালিয়ে যেতেও পারবো না।
এখন মনে হচ্ছে দুই পরিবারের মিল না হলেই ভালো হতো। তাতে অন্তত আমারা জানতাম না আমাদের সম্পর্ক কি! আর কাউকে কষ্ট দেয়ার দায়বদ্ধতা ও থাকতো না আমাদের।
তুমি রাতুলকে বিয়ে করে নাও।এতে দুই পরিবারের শান্তি।
রোদ বলে, “আর আমাদের শান্তি? তার কি হবে?”
প্রয়াস এই প্রশ্নের কোন উত্তর দেয় না। কারণ এই প্রশ্নের উত্তর তার কাছে নেই।
সে জানেনা সে কি করে থাকবে রোদকে ছাড়া। আর রোদই বা কি করে থাকবে তাকে ছেড়ে।তিবে হ্যাঁ সে এটা জানে দুই পরিবার খুশী থাকবে আর সেই খুশীতেই তাদের খুশী।
প্রয়াস বলে, “তুমি কি চাও আমরা আবার আমাদের পরিবারকে আলাদা করে ফেলি?”
“না।”
“তুমি কি চাও আমাদের ভালবাসার জন্য আমাদের পরিবারের ভালবাসাকে পায়ে ঠেলে দেই?”
“না।”
“তুমি কি চাও আমরা সারাজীবন অভিশাপ নিয়ে বাঁচি?”
“না।”
“তুমি কি চাও আমরা আমাদের বাবাদের মন ভেঙে দেই?”
“না”
“তাহলে তুমি আর একটা কথা ও বলবেনা। আজ থেকে আমরা আমাদের ভাগ্যকে আল্লাহর উপর ছেড়ে দিবো। যদি বিধাতা আমাদের দুজনের ভাগ্য দুজনকে রাখে তো আমাদের আবার এক হওয়া হবে। আর যদি না থাকে তো ভাগ্য বলে মেনে নেবো।”
রোদ কাঁদছে কান্নার ধমকে পুরো শরীর কাঁপছে। কাঁদছে প্রয়াস ও। তবে তার কান্না নিশব্দে।
বলা হয়ে থাকে ছেলেরা কাঁদে না। যদি না তাদের কষ্টের পরিমাণ তীব্র না হয়।
আজ প্রয়াস কাঁদছে। জীবনের সবচেয়ে মুল্যবান মানুষকে হারানোর যন্ত্রনায় কাঁদছে। সব পেয়েও যেন সব এক নিমিষেই হারিয়ে গেল।
এই জন্যই জীবনে সময়ের প্রতি কোন বিশ্বাস নেই।কখন কাকে কোথায় আটকে দেয় কেউ জানেনা।
আমাদের সমাজে এমন অনেক প্রেমিক প্রেমিকা আছে।যারা পরিবারের জন্য নিজের ভালবাসা উৎসর্গ করে দেয়। তাদের মাঝে আজ আরও দুটো নাম যোগ হলো রোদেলা ও প্রয়াস।
“আর তাদের দোয়া ছাড়া আমরা সুখী ও হতে পারবো না।আমার খুব কষ্ট হচ্ছে রোদ খুব কষ্ট হচ্ছে। সব পেয়েও কেন আবার আমরা সব হারিয়ে ফেলছি?”
রোদ কাঁদছে প্রয়াস কাঁদছে। তার সাথে কাঁদছে প্রকৃতি।আজ প্রকৃতি কেমন গুমোট হয়ে আছে। আকাশে সাদা কালো মেঘের খেলা চলছে। পুরো পৃথিবী থমকে আছে।হয়তো একটু পর বৃষ্টি নামবে।
“মেঘের আড়ালে বৃষ্টি”
মেঘের আড়ালে বৃষ্টি যখন নামবে। পুরো পৃথিবীর সাদা কালো অন্ধকার কেটে যাবে।মেঘ ঝরবে বৃষ্টি হয়ে। তার সাথে অন্ধকার দূর করে নিয়ে আসবে। একটা রোদেলা দিন। রোদের মধ্য দিয়ে সূচনা হবে এক নতুন দিনের।
সেদিনের রোদ দেখে কেউ বুঝতে পারবে না। যে একটু আগে কি প্রবল ঝড় বয়ে গেছে। কি যন্ত্রণার সময় কেটেছে।
★★★
চার বছর পর
রোদ আজ ‘ল’ পাস করেছে। চারটি বছর কেটে গেল নিজের দেশ, নিজের মানুষদের ছেড়ে এসেছে আমেরিকাতে। খুব একা সে। নিজের দেশ ছেড়ে না আসলে হয়তো বুঝতে পারতো না স্বদেশ প্রেম কাকে বলে। যেখানে নিজের দেশকে সবাই অবহেলা করে। সেখানে অন্যদেশে গেলে বুঝতে পারে নিজের দেশের ধুলাবালি ও কত মুল্যবান ছিলো। রোদের কাছে ও তাই মনে হচ্ছে। পড়াশোনার জন্য আসলেও সবসময় মন বাড়ি ফিরে যেতে ইচ্ছে করে।
কতশত স্মৃতি জমে আছে মনের মাঝে। কত সুখের স্মৃতি আবার তীব্র বেদনার স্মৃতি। সব সব সব মনকে নাড়িয়ে দেয়।
আর একটা জিনিস রোদ বুঝেছে। মানুষের চেনা সোজা কাজ নয়। মুখোশের আড়ালে কত মানুষ লুকিয়ে থাকে কে তাদের চিনতে পারে!
জীবন কতটা কঠিন কতটা যন্ত্রণার তা বুঝতে অনেকটা সময় লেগে গেলো।
এতো অচেনা মানুষের ভিড়ে একজন সবসময় রোদের পাশে থেকেছে সে হচ্ছে রাতুল।
“রোদেলা তুমি বাড়ি ফিরে যাবে কবে? এখানে পড়া শেষ। তো কি করবে ভাবছো?”
“দেশে ফিরে যেতে খুব ইচ্ছে করলেও। সেই একটা মানুষের জন্য যেতে ইচ্ছে করে না।”
“প্রয়াস?”
“হুম, জানো তো রাতুল আমি চাইলেও ওই মানুষটার মুখোমুখি হতে পারবোনা। তাই যেতে ইচ্ছে করছে না।”
“তোমার যাওয়া উচিত। হয়তো সে মানুষটি তোমায় আজও ভালবাসে।”
রোদ তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে, “ভালবাসা! আসলে আমি আজকাল ভালবাসার মানে ঠিক বুঝতে পারিনা। আর যদি ভালবাসতো তাহলে এই এতোগুলো বছরে আমার খবর নিলো না কেমন আছি।
আমি কলের পর কল দিয়ে গেছি।প্রতিদিন টেক্সট দিয়েছি কই সে কোন রিপ্লে দেয়নি কেন? এটা কি ভালবাসার পর্যায়ে পড়ে।
ভালবাসা যদি এটা হয়। এই যে আমি যেটা তার জন্য ফিল করি সেটা তবে কি?
এমন কোন ঘন্টা নেই যখন আমি তার কথা চিন্তা করি না। আমি খুব চেয়েছি তাকে ভুলতে কিন্তু কই ভুলতে পারিনি তো!সে পেরেছে কারণ সে ভুলে গেছে।
একজন প্রেমিক হিসেবে না হোক। চাচাতো ভাই হিসেবে খোঁজ নিতে পারতো।”
রাতুল বলে, মিস করো প্রয়াসকে খুব তাই না রোদেলা?”
রোদ দূর আকাশপানে তাকিয়ে এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, “জানিনা!”
রাতুল একপেশে হেসে বলল, “জানো না?”
রোদ চুপ।মনে হচ্ছে ভাবনারা তার মনে মস্তিষ্কে এসে বসেছে।জীবন কখন কাকে কোথায় নিয়ে যাবে তার কোন ঠিক নেই।
★★★
রোদ ফিরে যায় অতীতে
সেদিন প্রয়াসের সাথে দেখা করার পর। অনেক ভেবে বুঝতে পারে সে প্রয়াসকে ছেড়ে থাকতে পারবেনা। তাই আমেরিকা ফ্লাইটের তিনদিন আগে প্রয়াসের কাছে চলে যায় সারাজীবনের জন্য।
রোদ প্রয়াসদের বাসার সামনে এসে কল দেয় প্রয়াসকে। প্রয়াস নিচে নেমে এসে দেখে।রোদ জামা কাপড় সব নিয়ে পালিয়ে এসেছে বাসা থেকে।
প্রয়াস খুব অবাক হয়।এতো করে বুঝানোর পরও রোদ কথা শুনেনি দেখে রাগ হয় প্রয়াসের।
“কাল তোমার বিয়ে রোদ, আর আজ তুমি চলে আসলে এভাবে?”
“হুম এসেছি। আমরা এখন বিয়ে করবো। তুমি না চাইলেও করবো। আমি তোমাকে ছেড়ে দেশের বাইরে ও যাবো না। আর অন্য কাউকে বিয়ে ও করবো না।
তুমি যদি আমাকে ফিরিয়ে দাও আমি সুসাইড করবো।”
প্রয়াস রোদকে নিয়ে যায়। বাড়ির পেছনের বাগানে সেখানে সুন্দর ফুলের বাগান আছে প্রয়াসের। তার সাথে আছে একটা দোলনা। প্রয়াস রোদকে সেখানে নিয়ে বসিয়ে দেয়।
অনেক্ষণ চুপ থেকে কিছু একটা ভেবে নেয়। ফোন হাতে নিয়ে কাকে যেন টেক্সট করে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে। তারপর রোদকে বুঝাতে থাকে।
দেখো রোদ আমরা যদি চাই তাহলে এক হতেই পারি। তুমি যেভাবে চাইছো সেভাবে। কিন্তু এতে আমরা কখনো সুখী হবো না। বাবা মায়ের মনে কষ্ট দেয়ার অপরাধ আল্লাহ ততক্ষণ ক্ষমা করেন না যতক্ষণ মা বাবা ক্ষমা করেন। তাই আমি আমাদের বাবা মাকে কষ্ট দিতে চাই না।”
রোদ এবার ক্ষেপে যায়, “আজ কয়েকদিন ধরে দেখছি তুমি এই কথাই বলছো। আমার সাথে সম্পর্ক করার আগে বাবা মায়ের পারমিশন নিয়েছিলে? কই তখন তো বলছো তোমার বাবা মায়ের বোনের সবার আমাকে প্রয়োজন।
অথচ আজ কি বলতেছো?
আমি ভেবেছি আমার আগে তুমি বলবে চল রোদ বিয়ে করে ফেলি আমরা। কিন্তু না তুমি এসব কি করছো? আমি তোমার হাতের পুতুল নাকি?
তুমি চাইলেই আমার সাথে সম্পর্ক করলে। আবার বলবে অন্য কাউকে বিয়ে করে নিতে? না এটা তুমি করতে পারো না।”
রোদ প্রয়াসের দুই বাহুতে নিজের দুহাতে ধরে হালকা ধরে থেকে আকুতি করে বলে, “প্লিজ তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিও না। বাসায় এতোক্ষনে জেনে গেছে আমি বাড়ি থেকে পালিয়েছি। এখন আমি ফিরতে পারবো না। তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিলে আমি নিজেকে শেষ করে দিবো।”
প্রয়াস রোদকে এক ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরিয়ে দেয়। খুব রেগে যায় বলে, “তুমি কি ভেবেছো কি হ্যাঁ? তুমি চাইলে আমাকে বিয়ে করতে হবে?
সবাই প্রেম করে তাই বলে সবাই বিয়ে করে না। আমিও করেছি প্রেম তাই বলে বিয়ে করতে পারবো না।”
রোদ প্রয়াসের এমন ব্যবহারের সাথে পরিচিত নয়। তাই অনেকটা সময় লাগে ধাক্কা সামলাতে। মুখ থেকে কোন কথা বের হচ্ছে না। চারদিকে পিনপতন নীরবতা অথচ রোদের কানে প্রয়াসের কথাগুলো যেন বারবার ধাক্কা দিচ্ছে।যেন রিপিট টেলিকাষ্ট হচ্ছে।
প্রয়াস কথা শেষ করার আগেই একটা মেয়ে এসে হাজির হয়।মেয়েটাকে রোদ এর আগে দেখেছে। প্রয়াসের ফুফাতো বোন নাম রিমি। কিন্তু উনি এখানে কেন? উনি কি করে জানলেন আমরা এখানে?
রিমি এসেই প্রয়াসকে বলে, “হেই জান এখানে কি করছো তুমি? আমি কখন থেকে তোমার অপেক্ষা করছি। তোমার রুমে বসে আছি। তুমি আসছো বলেই লাপাত্তা হয়ে গেছো।”
মেয়েটা বোধহয় এখানে রোদকে খেয়াল করেনি। তাই এমন একটা কথা বলে ফেললো।
রোদ কথাগুলো শুনে বিস্ময়ের শেষ পর্যায়ে চলে যায়।
প্রয়াসের রুমে এতো রাতে এই মেয়ে কি করে থাকতে পারে?কেনই বা থাকবে?
রোদের কানে মনে হচ্ছে কেউ গরম শিশি ঢেলে দিয়েছে। বুকের ভেতরটায় এক অজানা কষ্টে ভার হয়ে আসছে। আর তার মন জানান দিচ্ছে আসন্ন বিপদের কথা।
চলবে…