মেঘের উল্টোপিঠ পর্ব -২০

#মেঘের_উল্টোপিঠ
#সাদিয়া_মেহরুজ_দোলা
#পর্ব__২০

‘ “ভালোবাসা ” শব্দটা তোমার জন্য আমি বরাদ্দ করবোনা।তাছাড়া, এক্স গার্লফ্রেন্ড এর বোনকে আদও ভালোবাসা যায়? হু? হোয়াট ডু ইউ থিংক?’

আমি স্তম্ভিত হয়ে রইলাম! পূর্ব ইশারায় ভ্রু উঁচু করে উত্তর দিতে বলছেন। রাগে, ক্ষোভে দাঁত কিড়মিড় করে অন্যদিকে দৃষ্টিপাত ফেলি! পূর্ব ভালোবাসেন আমায়! তা প্রতি ক্ষন, সেকেন্ড এবং তার ব্যাবহার স্পষ্টত প্রমাণ করে দিচ্ছে। এমনকি আমার ধারণার বেশ আগ থেকেই তিনি আমায় পছন্দ করেন তা আমি নিশ্চিত। অথচ মুখে শিকার করতে এতো কেনো বাহানা? এতো কেনো মিথ্যা বলা?

স্থির গাড়ি তার জরতা ছেড়ে চলতে শুরু করলো। খারাপ লাগলো! পূর্ব জানেন রেগে গিয়েছি আমি। রাগ ভাঙানোর একটুও চেষ্টা করলেন না?বদ লোক! হুহ্! সিটে গা এলিয়ে বসতেই কানের নিকট কারো তুলতুলে স্পষ্ট। ক্ষনকালে বোধগম্য হয় এটা পূর্বের ওষ্ঠাধরের কোমল স্পর্শ! নেত্রযুগল বন্ধ করতেই কর্ণপাত হয় তার ফিসফিসিয়ে বলা কথ্য! তিনি বললেন,

‘ আমার এতো অনুভূতি! তোমায় ঘিরে অতিরিক্ত চাওয়া, নির্ঘুম রাতের একমাত্র কারণ, অস্থিরতা তৈরির মূল উৎস, এতো এতো অনুভূতিকে আমি কিভাবে ‘ ভালোবাসা ‘নামক চারটে শব্দ প্রদান করি বলোতো? ভালোবাসার শীর্ষে উর্ধ্বের অনুভূতিটা আমি তোমায় প্রদান করলাম। ‘

চট করে তার প্রতি অবলোকন করতে দৃশ্যমান হয় তার থমথমে মুখোশ্রী। ড্রাইভিং এ মনোযোগী সে। এমন ভাব, সে এতক্ষণ যাবৎ ড্রাইভিং -ই করছিলেন। আমি নিভৃতে হাসি! লোকটা ভীষণ পাগলাটে!

___

‘কবুল! কবুল! কবুল ‘

তিনটা শব্দ বলা শেষে তপ্তশ্বাস ফেলি। নতজানু হই তৎক্ষনাৎ! পূর্বের বন্ধুমহলের সকলে একসাথে বলে উঠলেন, ‘ আলহামদুলিল্লাহ ‘!

পূর্বের জেদের কাছে হার মেনে আজ ফের দ্বিতীয় বার আমাদের বিয়ে হলো। ক্ষনিকের মধ্যেই তিনি কিভাবে যেনো চোখের পলকেই সবকিছুর আয়োজন করে ফেলেছেন। কাজি অফিসে আসতেই পূর্বের সকল বন্ধুদের দর্শন হয়। রাস্তায় তাকে বারংবার বুঝিয়ে লাভ হয়নি, এখন বিয়ে কেনো করবো? আমরা পূর্ব – বিবাহিত তো! সে শুনেনি। মানেনি আমার কথা। পুরো রাস্তা ফোনে কথা বলে বিয়ের আয়োজন ছোট করে ফেলেছেন।

কাজি অফিসে আসার পর তারা আপু আমায় এখানকার এক ছোট্ট রুমে নিয়ে লাল বেনারসি পড়তে দেন। ইচ্ছেটা পূর্বের!তার বার্তা, সাদামাটা ভাবে বিয়ে কেনো হবে? হলে হওয়ার মতো করেই হবে। লাল বেনারসি সহ কিছু গয়না এবং কৃত্রিম সাজে নিজেকে আবৃত করে বিয়ের আসরে বসার পর-পরই কাজি তাড়া দেয় কবুল বলার জন্য। পূর্ব আগেই ৩ কবুল তড়িৎ বেগে বলে ফেলেছেন। তার এহেন কান্ডে উপস্থিত সবাই শুধু মুখ চেপে হেঁসেছে। কোনো শব্দ উচ্চারণ করতে পারেনি পূর্বের ধমক খাওয়ার ভয়ে!

বর্তমানে সে আমার পানে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। পাশে দাঁড়ানো শুভ ভাইয়া তা খেয়াল করে তাকে কনুই দিয়ে গুঁতো মেরে বললেন,

‘ এমনে তাকায় আছিস ক্যান ব্যাটা? আমাদের ভাবীর ওপর নজর পড়বে তো! দৃষ্টি সরা।অন্য দিকে তাকা জলদি। ‘

পূর্ব বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে বললেন, ‘ কাজকর্ম নেই? নিজের কাজ কর না অযথা ফাউল জ্ঞান না দিয়ে। আমার বউ! আমি অবশ্যই তাকাবো। ‘

শুভ ভাইয়া দাঁত কেলিয়ে হেঁসে পূর্বের পিঠে চাপড় দিতে নিলেই পূর্ব চোখ গরম করে তাকান। সঙ্গে সঙ্গে শুভ ভাইয়ার হাসি বন্ধ! থতমত খেয়ে বলল,

‘ ভাইরে ভাই! এমনে তাকাইস না। কলিজা কাপে আমার।মনেহয় তুই এখনি থাপ্পড় দিবি আমারে! ‘

শুভ ভাইয়ার মুখোশ্রী ভঙ্গি দেখে এতক্ষণ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করা সবার মধ্যে হাসির রোল পড়ে। একমাত্র পূর্ব! রোবটের ন্যায় সে রাশভারী মুখশ্রীতে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে আছে। অদ্ভুত!

কাজি অফিস থেকে বেড়িয়ে সবাই সিদ্ধান্ত নেয় কক্সবাজার ট্যুর দিবে সকলে যেহেতু গ্রাম ঘোরার ইচ্ছাটা অপূর্ণ থেকেছে সবার। তাছাড়া সকলের এখন ছুটি! পূর্ব প্রথমে ঘোর নিষেধাজ্ঞা জানালেও পরে সবার ভীষণ অনুরোধে রাজি হয়ে যান। আমার পাশে এসে নিম্ন কন্ঠে বললেন,

‘আমার ভাগ্য কতো খারাপ দেখেছো? না ফার্স্ট টাইম বিয়ের পর বাসর করতে পারলাম আর না সেকেন্ড টাইম বিয়ের পর! ‘

বলেই হতাশ হয়ে লম্বা শ্বাস ফেললেন। আমি লজ্জায় চুপসে আড়ষ্ট হয়ে দাঁড়াই। বেলাজ লোক! গাম্ভীর্যতার সাথে ইনি দেখি ঠোঁটকাটা ধরনের’ও। আর কত রূপ দেখতে হবে তার? আঁড়চোখে তার পানে তাকাতে দেখি পূর্ব আমারই মুখোশ্রীর প্রতি দৃষ্টিপাত ফেলে তাকিয়ে আছেন! খানিক পর তিনি ফের মিহি কন্ঠে বললেন,

‘ এভাবে লজ্জা পেয়ে গালগুলো লাল রঙে পরিণত করা খুব জরুরি? এখন যদি সবার সামনে উল্টো পাল্টা কিছু করে বসি? ‘

আমি চমকে বললাম,’ মানে?’

‘ গালদুটো তো লাল বানিয়ে আপেলের মতো তৈরি করেছো। এখন তো আমার আপেল খেতে ইচ্ছে করছে। কামড় দিয়ে বসলে..’

বিষ্ফোটিত নেত্রে তাকিয়ে বলে উঠি, ‘ আ..আপনি ঠিক আছেন তো পূর্ব? আপনি পূর্বই তো?’

উত্তর পাওয়া হলো না! সে নিরুত্তর থেকে শুভ ভাইয়ার সাথে কথায় ব্যাস্ত হলেন। যেনো আমার কথা শুনেইনি! সবাই ব্যাস্ত হয়ে পড়লো কথার মধ্যে! তাদের কথা বলার টপিক কক্সবাজার কি করে যাচ্ছি আমরা? একজন বলছে প্লেনে আরেক জন তাকে ধমকে বলছে বাসে! পরিশেষে অরণ্য ভাইয়া আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন,

‘ তুমিই বলো লিটল গার্ল! কিভাবে যেতে চাও কক্সবাজার? প্লেনে নাকি বাসে?নাকি গাড়িতে করেই?’

আমি চট করে না ভেবেই কিয়ৎ আহ্লাদী কন্ঠে বললাম,

‘ প্লেনে যাই ভাইয়া? প্লিজ? ‘

অরণ্য ভাইয়া একগাল হাসলেন। মিষ্টি কন্ঠে বললেন, ‘ ব্যাস! ডিসিশন ফাইনাল। এখন আর কেও কোনো তর্ক করতে পারবে না কিভাবে যাবো। তর্ক শুরু করলেই পূর্বের হাতের চড় তার গালে পড়বে! ‘

শেষে আমার কথা অনুসারে প্লেনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলো। অরণ্য ভাইয়া কোনোমতে ম্যানেজ করে নিলো প্লেনের টিকের। তার বড় ভাই ইমিগ্রেশন বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকতা হওয়াতে অতোটা বেগ পেতে হলো না। যদিও সাধারণ হলে আমাদের আজ আর কক্সবাজার যাওয়া হতোই না। ফ্লাইট রাত ৮ টার দিকে ঠিক হলো।এখন মাত্র সকাল হওয়াতে ততক্ষণ অব্দি সবাই এখানকার একটা হোটেলে থাকবে। আশপাশ ঘুরে দেখবে! মৃদু সময়ের মধ্যে এতটুকু বোধগম্য হলো পূর্বের বন্ধুমহলের সকলে প্রকৃতিপ্রেমি! দে আর ট্যুর ফ্রিক!

.

দুপুর অব্দি হোটেলে নিজের রুমটায় ঘুমিয়েছি শুধু। পূর্বের দেখা নেই! সে আমায় রুম দেখিয়ে কোথাশ গিয়েছে? জানা নেই। একবার ইচ্ছে হলো তারা আপুকে জিজ্ঞেস করবো। কিন্তু পরবর্তীতে আর তা করা হয়নি। ঘুমিয়ে পড়েছি! ওয়াশরুম থেকে গোসল সেরে বের হতেই নেত্র সম্মুখে দৃশ্যমান হলো কাঙ্ক্ষিত সেই ব্যাক্তিকে! পূর্ব সোফায় বসে এক ধ্যানে ফোনে টাইপিং করছেন।

ধাতস্থ হয়ে তার নিকট দাঁড়িয়ে বলি, ‘ আম্মু, মামনি তাদের জানিয়েছেন আমরা কক্সবাজার যাচ্ছি? ‘

কিয়ৎক্ষণ চুপ রইলেন তিনি। শেষে ফোন পাশে ছুঁড়ে মেরে আমাতে দৃষ্টি ফেলে বললেন,

‘ হ্যা! একটু আগেই বলেছি। ‘

‘ সবাই কি ঢাকায় পৌঁছে গেছে?’

‘ হু। ‘

স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে চুল পরিপাটি করায় মনোযোগ প্রদান করি। তবুও অদ্ভুত ভাবে আমার দৃষ্টি পূর্বের ওপর যাচ্ছে। ইনি এতোটা সুদর্শন কেনো? একটু কম সুন্দর হলে কি হতো? এইযে আঁড়চোখে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমার চোখ ব্যাথা হয়ে যাচ্ছে তা কি এই গম্ভীর মানব জানে?

দৃষ্টিপাত অন্যত্রে ফেলতেই পিছনে কারো উপস্থিতি উপলব্ধি হয়। ঘাড় কাত করে সেদিকে তাকাতে দৃশ্যমান হলো পূর্বকে। আমি হকচকিয়ে কয়েক কদম দূরে সরে বলি,

‘কিছু বলবেন?’

পূর্বকে সন্নিকটে আসলেন। আমি ততক্ষণে দেয়াল এর সাথে আঠার মতো চিপকে দাঁড়িয়ে! তিনি ঝুঁকে আমার দু’পাশে তার বলিষ্ঠ হাতজোড়া ধীরে স্থাপন করে বললেন,

‘ আঁড়চোখে তাকিয়ে চোখ ব্যাথা করতে আমি বলেছি? চাইলে সামনাসামনি তাকিয়ে থাকো। নিষেধ তো করেনি আমি তাইনা? ‘

থতমত খেয়ে বলি,

‘ আপনি কি করে..?’

পূর্ব ঠোঁট বাঁকিয়ে বললেন, ‘ যেভাবে বিড়বিড় করছিলে। আয়না থেকে স্পষ্টত তোমার ঠোঁট নাড়ানো বোঝা যাচ্ছিলো। সেভাবেই বোঝা যায় কি বলছিলে তুমি ষ্টুপিড! ‘

আমি মিইয়ে গেলাম। আশপাশে তাকাতে শুরু করলাম। পূর্ব ক্ষনিক বাদে তার হাত সরাতেই ওড়না ঠিক করে এক দৌড়ে রুম থেকে পগারপার আমি। ইশ! কি লজ্জাজনক অবস্থা। নিশ্চিত সে এটাও শুনেছে তাকে আমি ‘ সুদর্শন ‘ শব্দটা বলেছি। তাকে আগ থেকে কিছু জানাবো না করে করে আস্তে ধীরে, নিরবে নিভৃতে সেই তাকে ভালো লাগার বিষয়টি প্রকাশ করে দিচ্ছি!

___

অল্পসময়ের মধ্যেই কক্সবাজারে এসে পৌঁছাই সকলে। হোটেল আগে থেকেই অনলাইন এ বুক করে ফেলেছিলো সামাদ ভাইয়া। গাড়ি ধরে সবাই নিজেদের হোটেলে এসে রুমে চলে যায়। আপাতত রেস্ট করবে সবাই! কাল সকালে বের হবে হোটেল থেকে চারপাশ দর্শন করতে।

রাত বাড়ছে ধীরে ধীরে! ঘুম নেই আমার নেত্রে বিন্দুমাত্র। দুপুরে ঘুমানোর ফল এটা। অরিন এবং আমি এক রুমে ছিলাম। অরিন ঘুমে কাতর! আমি নিরবে গায়ে শাল জরিয়ে বেড়িয়ে পড়ি। আশপাশ অন্ধকার। নিশ্চিত ঘুমে সকলে! কিছূদূর যেতে সিঁড়ি বেয়ে নিচে আসার পর বেলকনির কাছে যেতেই দৃশ্যমান হলো কাওকে। তাকে দেখে বিন্দু ভীতি নিয়ে ফিরে যেতে নিবো তখনই চাঁদের আলোয় খেয়াল হলো সেই ব্যাক্তিটি ‘ পূর্ব ‘! কৌতূহল নিয়ে তার নিকট আগাই। পাশে দাঁড়িয়ে বলি,

‘ আপনি এতোরাতে? ঘুমাননি?’

পূর্ব স্বাভাবিক ভাবেই আমার পানে তাকালেন। একটুও চমকালেন না। রাশভারী কন্ঠে বললেন,

‘ সেটা আমার ব্যাপার! কিন্তু তুমি এতোরাতে এখানে কি করছো?’

‘ দুপুরে ঘুমিয়েছি। ঘুম আসছে না এখন।তাই বের হয়েছি রুম থেকে। ‘

পূর্ব তার ডান ভ্রু উঁচু করে বললেন, ‘ এতো রাতে একা একা বের হয়েছো। সাহস বেশি হয়ে গিয়েছে তাই না? ‘

আমি প্রতিত্তুর করলাম না। স্থির দৃষ্টিপাত ফেললাম সামনে। বেলকনি থেকে স্পষ্টত সমুদ্র দেখা যাচ্ছে। সমুদ্রের ওপর পড়া চাঁদের আলো সমুদ্রের সৌন্দর্য দ্বিগুণে রূপান্তর করেছে। হটাৎ নিষিদ্ধ ইচ্ছে চেপে বসলো মস্তিষ্কে! হানা দিলো কপট ভাবে। আমি পূর্বের মুখোশ্রীর প্রতি দৃষ্টি দিয়ে জেদ ধরে বলে উঠলাম,

‘ আমি সমুদ্র দেখবো পূর্ব! কাচ থেকে। এখনি, এই মূর্হতে! আপনি আমায় নিয়ে যাবেন নাকি আমি একাই চলে যাবো বলুন?’

পূর্ব আশ্চর্য হয়ে বললেন, ‘ এতো রাতে সমুদ্র দেখতে যাবে? মাথা খারাপ? ম্যানেজার বের হতে দিবেনা এখন হোটেল থেকে। সকালে নিয়ে যাবো। রুমে গিয়ে ঘুমাও! ‘

‘ আচ্ছা আপনার যাওয়ার দরকার নেই। আমি একাই যাচ্ছি! ‘

বলে হাঁটা শুরু করি। পূর্ব বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছেন। হয়তো আমার অনাবশ্যক জোর তার বিশ্বাসগম্য হচ্ছেনা। কিয়ৎ দূর যেতেই তিনি আমার পাশে এসে দাঁড়ালেন দৌড়ে! রীতিমতো হাঁপাচ্ছেন। শান্ত হয়ে বললেন,

‘ এত বিরক্ত করো কেনো?’

আমি নিরবে হাসি! পূর্ব কোনোমতে ম্যানেজার কে রাজি করিয়ে আমায় নিয়ে সমুদ্রের উদ্দেশ্যে চললেন। কাঙ্খিত স্থানে এসে পৌঁছাতেই আমি উচ্ছ্বসিত হয়ে পূর্বকে মাঝপথে ফেলেই দৌড়ে সমুদ্রের ধারে এসে লম্বা শ্বাস নেই। জুতোজোড়া পিছেই ফেলে এসেছি। খালিপায়ে হাঁটার কারণে পড়ে থাকা বিভিন্ন পাথরে পা আঁটকে বারংবার হোঁচট খেয়ে পড়তে হচ্ছে!

অতঃপর পূর্বের কথা মনে হতেই পিছন ফিরলাম। সে আমার জুতো জোড়া একহাতে নিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। আমি তাকাতেই হনহনিয়ে হেঁটে এসে জুতো সামনে ফেলে বললেন,

‘ জুতো পড়ো! ‘

বিনাবাক্য তার কথা মেনে নিয়ে জুতো পড়লাম চটপট। তিনি কাছে আসলেন। নিরবে, নিঃশব্দে! সম্মুখে দাঁড়িয়ে তার একহাত দিয়ে কপালের সামনে আসা ছোটো ছোটো চুলগুলোকে কানের পিঠে আলত হাতে গুঁজে দিলেন। হটাৎই তিনি আমার ডান হাত আকড়ে ধরে চকচকে দেখতে আংটি পড়িয়ে দিলেন। কিয়ৎ বাদে বোধগম্য হলো আংটি’টা হিরের।প্রশ্নাতুর দৃষ্টিতে তার পানে তাকাতে পূর্ব আফসোসের সুরে বললেন,

‘ বাসর তো করা হলোনা। বাসর রাতে নাকি বউকে গিফট দিতে হয়। ভাবী বললো এটা নাকি নিয়ম! বাসর না করতে পারলেও নিয়মটা পালন করলাম। আফসোস তাহলে একটু হলেও কমবে! আংটি’টা গিফট হিসেবে দিলাম।’

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here