#গল্পেরনাম_ভালোবাসার_অনুভূতি
#লেখিকাঃতানিশা_তিশা_মনি
#পর্ব_1
বউ সেজে বসে আছে মেঘনা ।আজ তার বিয়ে তার ব্ড় চাচার ছেলে আবির এর সাথে।তার বাবারা মোট পাচ ভাই বোন। তিন ভাই দুই বোন।মেঘনার বাবা সবার ছোট ।তার ভালো নাম তাসনুবা সায়াজ মেঘনা।সবাই তাকে আদর করে মেঘ ডাকে। তারা দুই ভাই বোন। বড় ভাইয়ের নাম হল তাসনিধ সায়াজ মিহির ।মিহির তার থেকে তিন বছরের বড়। মেঘনা এবার এস এস সি exam দিয়েছে ।আর মিহির অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পরে।এত তারাতারি বিয়েটা করতে চায় নি মেঘ। কিন্তু আবির কানাডা চলে যাবে তাই যাওয়ার আগে বিয়েটা দিয়ে রাখাই ভালো বলে মনে করেন আবিরের বাবা আর মেঘের বাবা।তাদের ছোট বেলা থেকেই বিয়ে ঠিক হয়ে আসে।মেঘ ও আর বেশি কিছু বলে নি সবার খুশি থাকলেই সে খুশি।সে বাবার বাধ্য মেয়ে কখনো বাবার কথা অমান্য করে নি। তার বিশ্বাস বাবা মা যা করবে সব তার ভালোর জন্য।তার মা বাবাও কোনো কমতি রাখেন নি একমাএ মেয়ের বিয়েতে।
কাজির বিয়ে পড়ানোর শব্দে মেঘনার ঘোর কাটে সে একটু নড়ে চড়ে বসে। কাজি আবির কে কবুল বলতে বলেন কিন্তু সে চুপ করে আসে কিছুই বলছে না।সবাই তাকে কবুল বলতে বলছে কিন্তু সে চুপ করে বসে আছে।
(ধমক দিয়ে আবিরের বাবা বললেন )
“কী হচ্ছেটা কী আবির ।চুপ করে আছ কেন?”
সবাইকে অবাক করে আবির বলল
“আমি এই বিয়েটা করব না বাবা।”
আবির এর বাবা ঝাঝালো কন্ঠে আবিরকে জিঙ্গেস করলো
“বিয়েটা করবে না ,মানে কী আবির? কী বলছ এসব।”
“আবির বলল আমি জেরিন কে ভালোবাসি বাবা।আর ওকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করতে পারবো না। এখন তো আরোই পারবো না।বিকজ সি ইজ প্রেগনেন্ট। অার ওর বাচ্চার বাবা আমি।”
(জেরিন হলো মেঘের বড়ো ফুপুর মেয়ে। ওরা সেইম এইজের। এবার দুজন একই স্কুল থেকে এস, এস, সি পরিক্ষা দিয়েছে। দুজন ছোট বেলা থেকেই খুব ভালো বন্ধু।)
আবিরের কথা শুনে বিয়ে বাড়ির সবাই স্তব্দ হয়ে গেল। চারপাশের লোকেরা কানাঘুষা করা শুরু করে দিলো। আবির এর বাবা রেগে কশিয়ে ছেলের গালে একটা চর মারল।চড়টা মারার সাথে সাথে বিয়ে বাড়ির সবাই শান্ত হয়ে গেল।
আবির বাবা রেগে চেচিয়ে বললো
“এই চড়টা তোমাকে আগে মারলে আজকের দিন আর দেকতে হত না।”
আবির গালে হাত দিয়ে মাথা নিচূ করে দারিয়ে আছে।এই সব শুনে মেঘ হতবম্ভ হয়ে গেছে।এসব কী বলছে আবির তার মাথায় কিছুই ঢুকছে না।বিয়ের দিন এসে বলছে বিয়ে করতে পারবে না।তাও আবার কিনা তার বোনকে ভালো বাসে সেই জন্য ।মেঘ ছলছল চোখে একবার তার বাবার দিকে তাকালো।ওর বাবা একবার মেয়ের দিকে তাকিয়ে, তারপর ধীর পায়ে আবির এর দিকে এগিয়ে গেলেন। আবির এর এক নিজের হাতের মুঠোয় ধরে বললেন
“এটা কী বলছিস বাবা।সেষ মূহুর্তে এসে এসব কেনো বলছিস।এই বিয়েটা না হলে আমাদের সবার মান সম্মান ধূলোয় মিশে যাবে ।তাছাড়া একবার মেঘনার কথা ভাব ওর কী হবে। ”
আবির হাতটা নিজের হাতটা ঝাড়া দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে বললো
“আপনার মেয়ের কি হবে সেটা আমি জানি না। আপনার মেয়ে আপনি বুঝে নিন। আর বাকি রইলো আপনাদের মান সম্মানের কথা। সেটা বিয়েটা ঠিক করার আগে আপনাদের ভাবা উচিৎ ছিলো।তাছাড়া আপনাদের এই সো কলড মান সম্মানের কথা ভেবে তো আমি আমার নিজের জিবনটা নষ্ট করতে পারি না।”
আবিরের কথা শুনে ওর বাবা আরো রেগে গেলো। আবার আবিরকে চড় মামার জন্য হাত উঠাতেই কেউ ওনার হাত ধরে ফেলল।তাকিকে দেখল জেরিন ওনার হাত ধরে আছে।আবিরের বাবা অগ্নি চোখে তাকাল জেরিন দিকে।
জেরিন জেদি গলায় বললো
“মামু প্লিজ,,,,তুমি ওকে এভাবে সবার সামনে মারতে পার না। ”
আবিরের বাবা নিজের হাতটা এক ঝটকায় জেরিনের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললেন
“তোমার সাহস তো কম না তুমি আমাকে উপদেশ দিচ্ছো। এবার আমি কি করবো আর কি করবো না সেটা তুমি আমায় বলে দিবে”।
আবিরের মা এগিয়ে এসে আবিরের বাবাকে ঝাঝালো গলায় বললো
” হ্যা দিচ্ছে,,,তুমি কোন সাহসে আমার ছেলের গায় হাত তোলো।”
“আবিরের বাবা চিল্লিয়ে আবিরের মা কে বললো”
“এত কিছুর পর ও তুমি এই কথা বলছ আবিদা? তোমার ছেলে যা করেছে তাতে ইচ্ছে করছে আমি ওকে জানে মেরে দি ।স্কাউনডেল কোথাকার।”
আবিদা রহমান আরও জোরে চিল্লিয়ে বললেন
“আমার ছেলে কোনো ভুল করেনি।যা করেছে একদম ঠিক করেছে।তুমি যে তোমার ভাইয়ের মেয়েকে আমার ছেলের বউ বানাতে চাইছো ।এই মেয়ের কী যগ্যতা আছে আমার ছেলের বউ হওয়ার।মাথায় কোন বুদ্ধি নেই,, সাড়াদিন খ্যাতদের মতো চোখে চশমা পরে থাকে,,,,,ঠিক মতো কারো সাথে কথাটা অবদি বলতে জানে না,,,,রান্না বান্না ঘরের কাজ কোনো কিছুই জানে না,,, খ্যাতের মত চলা ফেরা ফেরা করে,,,,থাকার মধ্যে আছে শুধু রূপ ।তো রূপ ধূয়ে কী আমার ছেলে পানি খাবে।”
আবিদা রহমানের কথা শেষ হতেই জেরিন বলল
“তাছাড়া মামু মেঘ আবির ভাইয়াকে ঠকিয়েছে।ও অন্য একজনকে ভালো বাসে। আমার কাছে প্রমাণ আছে দারাও দেখাচ্ছি।”‘
এই বলে হাতের ফোন টা নিয়ে একটা ছবি বের করল। তারপর সেটা সবার র্সামনে ধরল যেখানে স্পর্ট দেখা যাচ্ছে মেঘ একটা ছেলেকে জরিয়ে ধরে আছে।এসব দেখে মেঘ স্তব্দ হয়ে গেল। কী বলছে এসব জেরিন?ও অন্য কাউকে ভালোবাসে।এই ছেলেটাকে তো ও চেনেই না।আর তাছাড়া এরকম ওকে কখনো কেউ জরিয়ে ধরেনি। এই ছবি গুলো মিথ্যা।জেরিন এভাবে ওর নামে মিথ্যা কথা বলছে।মেঘের চোখ দিয়ে অজর ধারায় পানি পরছে। মূহুর্তেই মেঘের ভিষন রাগ হলো,,, সাহস হয় কিকরে ও নামে এসব আজে বাজে কথা বলার।মেঘ জেরিনের কাছে গিয়ে সজোরে ওর গালে একটা চর মারল আর বলল
“কেন মিথ্যা বলছিস জেরিন।এসব ছবি মিথ্যা।আমি কাউকে ভালোবাসি না।”
জেরিন চিল্লিয়ে বললো
“মিথ্যা তাই না?রিয়া তো তোকে নিজের চোখে দেখেছে ছেলেটাকে কিস করতে।কিরে রিয়া বল।”
(রিয়া হলো মেঘ আর জেরিনের বেষ্ট ফ্রেন্ড)রিয়া ইনোসেন্ট মুখ করে বললো
“হ্যা,,,,,আমি নিজে দেখেছি।”
মেঘ দুই পা পিছিয়ে গেল যাদের ও এতো ভালো বাসে বিশ্বাস করে।তারা ওর নামে এভাবে মিথ্যা বলছে।হটাৎ মেঘের গালে কেউ একটা চড় মারে।সে অবাক হয়ে তাকায় দেখে আবির রক্ত চক্ষু নিয়ে তার সামনে দারিয়ে আছে।চিল্লিয়ে আবির বলল
“তোর সাহস হয় কী করে আমার জেরিন কে চড় মারার।ক্যারেকটারলেস মেয়ে কোথাকার।”
এতক্ষন দূরে দারিয়ে সব দেখছিলো মিহির। সে কখনো চায় নি তার বোন এর বিয়ে আবির এর সাথে হোক।প্রথম কারন হল তার বোন এখনও ছোট ।আর দ্বীতয়ত আবিরকে ও দুঃচোখে দেখতে পারে না। আর ত্বীতিয়ত তার কাকী মা মানে আবির এর মা অভদ্র একজন মহিলা ,,,,,তার মাকে দুচোখে সয্য করতে পারে না। সব সময় কারনে অকারনে কথা শোনায়।তার কারন আজম রহমান (মেঘের বাবা)এর সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিল আবিদা রহমান এর বোনের,,,, কিন্তু আজম রহমান বিয়ের কিছু দিন আগে মিড়া রহমান (মেঘের মা) কে চুপি চুপি বিয়ে করেছিলেন। আর তার জন্য মিড়া রাহমান কে দেখতে পারে না আবিদা রহমান। মিহির বার বার বারন করেছে তার বাবা কে আবিরের সাথে যাতে মেঘের বিয়েটা না দেয়। কিন্তু শুনেন নি তিনি বলেন তার বড় ভাইয়ের মুখের উপর তিনি কোনো কথা বলবেন না।আর তার মতে আবির অনেক ভালো ছেলে মেঘনা কে ভালো রাখবে,,, আর এই নিয়ে আর কোনো কথা শুনতে চান নি তিনি। তারজন্য মিহির রেগে এতোদিন ওর বাবা মায়ের সাথে কথা বলেনি।এতক্ষন সে চুপ চাপ দূরে দাড়িয়ে সবটা দেখছিল ।কিন্তু তার বোনকে আবির চড় মেড়েছে দূঃষচরিএা বলেছে এটা দেখে ওর ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে গেল ।আবিরের এতো বড়ো সাহস ও তার কলিজার গায় হাত তুলেছে।আজকে ওর হাতই ভেঙ্গে দেবে। যেই ভাবা সেই কাজ,,,, মিহির আবির এর কলার ধরে একের পর এক ঘুসি মারতে লাগলো আর চিল্লিয়ে বলল
” তোর এত বড় সাহস তুই আমার বোন কে দুঃশচরিএা বলিস। আমার বোন এর গায় হাত দিস তোর এই হাত আমি ভেঙ্গে দেব মাটিতে গুড়িয়ে দেবো।”
সবাই এসে মিহির কে থামাল।আবিরের নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে ।খুব খারাপ অবস্থা তার ,,,মিহিরের রাগ যেন এখনো কমছে না, রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে।রাগ কমাতে দেয়ালে দুই তিনটা ঘুষি মারল। তখনই মিড়া রহমান মিহিরের গালে সজোরে একটা চর মারল বলল
“এই শিক্ষা দিয়েছি আমি তোমাকে। বড় ভাইয়ের গায় হাত তোলো,,, বেয়াদব ছেলে কোথাকার।”
আবিদা রহমান রেগে বললেন
থাক মিরা তোমাকে আর আদিক্ষেতা করতে হবে না। (তারপর আজম রহমানের দিকে তাকিয়ে বললেন
“একটা ছোট লোক মেয়েকে বিয়ে করে এই বাড়ির বউ বানিয়ে নিয়ে এসছো ।নিজেই তো একটা দুঃশচরিএা বড়ো লোক ছেলে দেখে ফাসিয়ে বিয়ে করেছে।আর ছেলে মেয়ে দুটোর একটাকেও ঠিকভাবে শিক্ষা দিতে পারেনি।মেয়েটাকে নিজের মতো গুন্ডা বানিয়েছে। আর ছেলেটা আস্ত একটা গুন্ডা । ছোট লোক মহিলা কোথাকার।”
আজম রহমান এতক্ষণ চুপ থাকলেও এখন তার ভীষণ রাগ লাগছে মিড়া রহমান মাথা নিচু করে চোখের পানি ফেলছেন,,,মেঘ ও কাদছে, মিহির মাথা চেপে ধরে দাঁড়িয়ে আছে।আজম রহমান বললেন
” ব্যাস অনেক হয়েছে এই বিয়ে হবে না। আত্নীয় স্বজনদের দিকে তাকিয়ে হাত জোর করে বললেন আপনাদের মূল্য বান সময় নষ্ট করার জন্য sorry প্লিজ আপনারা এখন আসতে পারেন।”
আত্মীয় স্বজনেরা আস্তে আস্তে চলে যেতে লাগল । মূহুর্তের মধ্যে প্রায় সব খালি হয়ে গেল।শুধু অনেক কাছের আত্মীয় যারা তারা রয়ে গেলেন। সবার চলে যাওয়ার পর ,,,,আজম রহমান আবিরের সামনে গিয়ে দাড়ায় তারপর রাগি চোখে আবির এর দিকে তাকায়,,আবির মাথা নিচু করে ফেলে। তারপর পাশে থাকা জেরিন এর দিকে তাকিয়ে অতি শান্ত কন্ঠে জিঙ্গেস করে
“কেন করলে এমন জেরিন।তুমি তো জানতে আবির এর বিয়ে মেঘনার সাথে ঠিক হয়ে আছে। সব জেনেও এমনটা করতে লজ্জা করলো না। মেঘ তো তোমার আপন মামাতো বোন ,, তোমার ফেন্ড,, তোমরা ক্লাস 1 থেকে এক সাথে পরছো,, ওর ব্যাপারে সবটাই জানো তুমি তাহলে কীভাবে ওকে ঠকালে একবার ও মেঘনার কথা মনে হয়নি যে ও কতটা কষ্ট পাবে।”
“কষ্ট কেন পাবে মামু। ও তো অন্য একজনকে ভালোবাসে।তার সাথে মেঘের Physical relation আছে। আমি রিয়া সীমা আমরা নিজে দেখেছি সেই ছেলেটার সাথে মেঘ কে হোটেলে যেতে।”
আজম রহমান চিল্লিয়ে বললৈন
“এবার আজম রহমান এর মাথায় রাগ উঠে গেল। সে বলল অসভ্য মেয়ে মিথ্যা কথা বল আমার সাথে,, আমার মেয়েকে আমি খুব ভালো করে চিনি। ও এমনটা কখনও করতে পারে না।ও কাউকে ভালো বাসলে সবার আগে আমাকে বলত আমি সবার আগে জানতাম।”
আজম রহমান এর কথার মাঝে নিলুফা আহমেদ (জেরিনের মা)বললেন
“তোমরা কে কি জানো,,, কিংবা জানো না তা আমার জানার দরকার নাই।আমার মেয়ের এখন কী হবে,,,,দোশ তো আর আমার মেয়ের একার না আবিরের ও আছে।”
জেরিন গিয়ে তার মাকে জরিয়ে ধরে নেকা কান্না কাদছে আর বলছে,,,
“এবার আমার কী হবে mom আমি আবিরকে না পেলে মরে যাব। আমার বেবির কী হবে। ও কার পরিচয় বড়ো হবে মম।কাকে বাবা বলে ডাকবে mom।”
কেউ কিছু বলতে যাবে তার আগেই আবিদা রহমান জেরিন এর কাছে গিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল
“কান্নাকাটি করে না মা,,,,তোমার বেবি আবিরের পরিচয় বড়ো হবে। আবির কে বাবা ডাকবে। আমি সেই ব্যাবস্থাই করব। লক্ষী মেয়ে একদম কাদবে না,,, কাদলে আমার নাতির কষ্ট হবে।”
আজম রহমান হতভম্ব হয়ে গেলেন। তার মেয়েটা কতক্ষণ থেকে কাদছে,,কতটা কষ্ট পেয়েছে তা কি তার ভাবির চোখে পরছে না।কী দিয়ে তৈরি এই মহিলা ,,,এমন একটা সময় কীভাবে এই কথা বলতে পারেন ভাবি। সে একবার মেঘের দিকে তাকালো তারপর মিড়া রহমান এর দিকে তাকালো মা মেয়ে দুজনই নিশব্দে চোখের পানি ফেলছেন। আজম রহমানের কলিযাটা ছ্যাত করে উঠল,,, তার জন্য তার পরিবার এত কষ্ট পাচ্ছে ।হ্যা এই সব কিছুর জন্য সে দায়ী। তিনি একবার মিহিরের
দিকে তাকালেন ।আর তাকাতেই আৎকে উঠলেন ।মিহির অগ্নি দৃষ্টিতে সবার দিকে তাকিয়ে আছে।মিহিরের এই দৃষ্টি বলে দিচ্ছে সে কতটা রেগে আছে।ঘৃনৃত চোখে তাকিয়ে আছে সবার দিকে,,, মিহির এর এই চোখ বলে দিচ্ছে তার এখানে সবাইকে খুন করতে একবারও হাত কাপবে না। সে যে তার বোনকে পাগলের মতো ভালোবাসে,,, তার বোনের চোখের এক ফোটা পানি সয্য করতে পারে না। তার মেঘ বুড়িকে কেউ কাদালে,,তাকে খুন করতে দ্বীতিয়বার ভাববে না।তার বোনই তার কাছে সবকিছু।
শফিক রহমান( আবিরের বাবা)এর কথায় তার ঘোর কাটে।এতক্ষন মিহিরের দিকে তাকিয়ে ছিলেন তিনি এবার মিহিরের দিক থেকে চোখ সরিয়ে ভাইয়ের দিকে তাকান শফিক রহমান আবিদা রহমান কে বলল
“কী বলছ এসব…এখন এসব বলার সময় নয়।কীকরে সবটা ঠিক করা যায় সেটা ভাব।”
“সেটাই তো বলছি।আবিরের সাথে জেরিন এর বিয়ে দিয়ে দাও,,তাহলে সব সমস্যার সমাদান হয়ে যাবে।দেখ, মেঘনা যেমন তোমার ভাইয়ের মেয়ে তেমনি জেরিনও তোমার বোনের মেয়ে। মেঘনার জন্য তুমি জেরিন এর সাথে অবিচার করতে পার না।”
শফিক রহমান এতক্ষন চুপ করে আবিদা রহমান এর সব কথা শুন ছিলেন মনোযোগ দিয়ে।সব শুনে চুপ করে রইলেন,,কি বলবেন বুঝতে পারছে না। তাকে এভাবে ভাবতে দেখে আবিদা রহমান বাকা হাসলেন।তিনি জানেন তার স্বামী কে কিভাবে রাজি করাতে হবে।এর মধ্যে আবির এসে তার বাবার হাত ধরে মাথা নিচু করে অসহায় গলায় বলল
“বাবা আমি জেরিন কে খুব ভালোবাসি।ওকে ছাড়া বাচব না।তাছাড়া ও সবদিক থেকে আমার যোগ্য,,, বিউটিফুল, স্মার্ট ,ইনটারলিজেন্ট,,, একমাএ জেরিনের আমার বউ হওয়ার যোগ্যতা আছে ।মেঘনা কোনো দিক থেকে আমার বউ হওয়ার যোগ্য না।”
এবার মেঘনা চোখ তুলে তাকাল সবার দিকে,, সবাই আগ্রহ নিয়ে শফিক রহমানের দিকে তাকিয়ে আছেন।কিন্তু তিনি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছেন।কি করবেন বুঝতে পারছেন না। দুজনকেই সে সমান ভালো বাসে। তার মনে কি চলছে সেটা বুঝতে পারে মেঘ।সে চোখের পানি মুছে নিজেকে শক্ত করে।ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে শফিক রহমান এর সামনে দাড়ায়,,,, সবার চোখ এখন তাদের দুজনের দিক।মেঘ ধীর কন্ঠে ডাক দেয়…
” চাচ্চু। ”
মেঘের ডাক শুনে মেঘের মুখের দিক তাকায় সফিক রহমান।মেঘ তার চাচ্চুকে ধরে একটা চেয়ারে বসায়,,,, তারপর হাটু গেরে তার চাচ্চুর সামনে বসে।শফিক রহমান এর এক হাত নিজের দুই হাতের মাঝখানে নিয়ে বলে
“চাচ্চু আমি তোমার সব সময় সব কথা শুনেছি,,,যেভাবে বলেছ সেভাবে চলেছি,, যা করতে বলেছ তাই করেছি। কখনও কোন কথা অমান্য করি নি। কখনো কিচ্ছু চাই নি তোমার থেকে,,, আজ কিছু চাইব প্রথম এবং শেষ বারের মতো আর কখনো কিছু চাইব না প্রমিস। তুমি আমাকে প্রমিস কর যা চাইব তাই দেবে।”
চলবে…..