#ভালোবাসার_প্রজাপতি
#পর্বঃ৫
#মাহিয়া_মুন
বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট।
কিছুক্ষন আগেই আমেরিকা থেকে আসা প্লেন ল্যান্ড করেছে। এয়ারপোর্ট এর বাহিরে প্রচুর ভির। সবাই অপেক্ষা করছে নিজ নিজ স্বজনের জন্য।
মেঘের বাবা মিস্টার মেহরাব চৌধুরী এবং বড় আব্বু মিস্টার আজিজ চৌধুরী অপেক্ষায় আছেন। দুজনেরই আনন্দে চোখে পানি জমা হচ্ছে। মিস্টার আজিজ চৌধুরীর চোখের কোনা গড়িয়ে জল পড়ছে।
কারণ আর একটু পরেই তার কলিজার টুকরা বড় ছেলেকে নিজের চোখের সামনে দেখতে পাবেন।
বুকে বুকে আগলে নিতে পারবেন।
সন্ধ্যার পর দুই ভাই (মিস্টার আজিজ চৌধুরী এবং মিস্টার মেহরাব চৌধুরী) যখন মিটিং রুমে ছিলেন তখনি মিস্টার আজিজ চৌধুরীর ফোন বেজে উঠে।
তিনি ফোন এর স্কিনে তাকিয়ে দেখেন তার বড় ছেলের বন্ধু জিসান ফোন করেছে।
অসময়ে জিসানের ফোন দেখে খানিকটা দুশ্চিন্তায় পড়েন।
Excuse me বলে ফোন রিসিভ করার পর জানতে পারে তার ছেলে এবং সে কিছুক্ষনের মধ্যেই বাংলাদেশ ল্যান্ড করবে।
আদ্রিজ চেয়েছিলো তাদেরকে সারপ্রাইজ দিবে।
কিন্তু জিসান চাইছে আদ্রিজের বাবা এবং কাকাই এয়ারপোর্ট এসে আদ্রিজকেই সারপ্রাইজ্ড করুক।
মিস্টার আজিজ খুশিতে কথা বলার শক্তি যেনো হারিয়ে ফেলেছিলেন তখন।
মিটিং ক্যান্সেল করে মিস্টার মেহরাব কে নিয়ে এয়ারপোর্ট রওনা হন।
গাড়িতে বসে মেহতাব কে সবটা বলেন।
ভাইয়ের ডাকে ধ্যান ভাঙে তার।
মিস্টার মেহরাব নিজের ভাইকে চোখ দিয়ে ইশারায় সামনে তাকাতে বলেন।
মিস্টার আজিজ চৌধুরী সামনে তাকিয়ে অবাক হয়ে যান।
আদ্রিজ এবং তার বন্ধু জিসান ট্রলি হাতে এগিয়ে আসছে।
ইন করা সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট, হাতে ব্র্যান্ডেড ব্ল্যাক ওয়াচ, চোখে ব্ল্যাক সানগ্লাস, চেহারায় গাম্ভীর্য ভাব নিয়ে হেঁটে আসছে মিস্টার আদ্রিজ চৌধুরী।
এয়ারপোর্ট এর বেশিরভাগ মেয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে। এইগুলাতে আদ্রিজ অব্যস্থ।
আদ্রিজ কিছুদূর এগিয়ে এসেই নিজের বাবা এবং কাকাই কে দেখে অবাক হলো।
চোখ রাঙিয়ে জিসানের দিকে তাকাতেই জিসান একটা কেবলা মার্কা হাসি দিয়ে বললো,
“সারপ্রাইজ… হিহিহিহি, এইভাবে তাকাস কেন। বাসায় যাওয়ার আগেই কি হসপিটাল নিতে চাস নাকি।”
আদ্রিজ কিছু না বলে বাবা এবং কাকাই এর দিকে এগিয়ে গেলো।
বাবাকে সালাম দিয়েই জড়িয়ে ধরলো।
মিস্টার আজিজ চৌধুরী মুখে হাসি চোখে পানি নিয়ে নিজেও জড়িয়ে ধরলেন।
আদ্রিজের নিজেরো চোখ ভিজে আসছে এত বছর পর নিজের বাবাকে জড়িয়ে ধরতে পেরে।
আদ্রিজ কিছুক্ষন পর বাবাকে ছেড়ে জিজ্ঞেস করলো,,
“কেমন আছো বাবা?”
“এতদিন খুবই অস্থির ছিলাম রে বাবা তবে তোকে দেখে এখন শান্তি পেলাম।”
আদ্রিজ হেসে নিজের কাকাই কে জড়িয়ে ধরলো।
“কেমন আছো কাকাই?”
“এইতো বেটা আলহামদুলিল্লাহ ভালোই আছি কিন্তু তোমায় দেখে আরো শান্তি পেলাম। তা বাবা এইভাবে না জানিয়ে আসলে। ”
আদ্রিজ রাগি চোখে জিসানের দিকে তাকিয়ে বললো,
“আসলে কাকাই ভেবেছিলাম একসাথে বাসায় গিয়ে তোমাদের সারপ্রাইজ দিবো। কিন্তু এই গবেট টা আগেই জানিয়ে দিলো।”
“একদম এইভাবে তাকাবি না । আংকেল ছোটো বেলায় কি আন্টি এরে তিতা করলার রস খাইয়েছে নাকি। কেমন রাগি,গম্ভীর হয়ে থাকে। আমি যে কয়বার করে মরতে মরতে বেচেঁ গেছি। কোনদিন না জানি ইন্নানিল্লা হয়ে যাই।”
আদ্রিজ চিবিয়ে চিবিয়ে বললো,
“তুই যদি চুপ না হস তাহলে তোকে এখানেই ইনানিল্লা করে দিবো।”
মিস্টার আজিজ চৌধুরী হেসে বললেন ,
“হয়েছে ছেলেটাকে আর রাগ দেখাতে হবে নাহ দুজন গাড়িতে বসো। বাসায় আমি এখনো কাউকে জানাই নি।”
সবাই গাড়িতে বসার পর মিস্টার মেহরাব গাড়ি চালানো শুরু করলেন।
চৌধুরী বাড়ির ড্রয়িং রুমে বসে আদি মেঘের চুল টানছে আর মেঘ আদির। দুজন সারাদিন সময় পেলেই একজন একজনের সাথে পিছে লাগবে।
মিসেস মনোয়ারা চৌধুরী সোফায় বসে বললেন,
“কি হইছে দাদুভাইরা , তোমরা পাড়ার মহিলাদের মতো একজন একজনের চুল টানছো কেনো?”
“আম্মা , পাড়ার মহিলাদের মতো না এরা পাড়ার মহিলাই। নয়তো সারাক্ষণ এইরকম কিভাবে করে দুজন।”
মিসেস অনুপমা চৌধুরী বললেন।
মেঘের বড় আম্মু মিসেস আশা চৌধুরী ও এসে বসলেন তাদের সাথে।
আয়না কফি নিয়ে এসে দিতে দিতে বললো,
“হয় ছোটো মা ঠিক কইছেন । মোগো গ্রামে ও যখন ঝগড়া লাগে তখন একজন একজনের চুল টানে।”
মেঘের মা কফি খেতে খেতে মেঘ কে জিজ্ঞেস করেন,
“মেঘা আর নিহার কি খবর রে মেঘ। তারা কি এখনো গ্রামের বাড়ি।”
“হ্যা মা কাল মনে হয় আসবে।”
মেঘের বড় আম্মু তার শাশুড়ি মাকে হটাৎ জিজ্ঞেস করলেন ,
“মা , নিহাকে আপনার কেমন লেগেছে। নাহ মানে আমি চাইছি…… ”
“বৌমা বুঝতে পেরেছি তুমি কি বুঝাতে চাইছো। নিহা মেয়েটাকে আমার খুবই ভালো লেগেছে। যথেষ্ট নম্রতা, ভদ্রতা আছে মেয়েটার মাজে। চেহারায় মায়া ভরপুর।”
মেঘ কিছুটা উৎসুক কণ্ঠে বলল,
“কেনো বলোতো বড় আম্মু, হটাৎ আমার হবু সালিকার
ব্যাবহার নিয়ে পড়লে যে তোমরা?”
মেঘের মা হেসে বললেন ,
“কারন ভাবী চাচ্ছে তোর হবু সালিকা কে তোর ভাবী বানাতে।”
মেঘ চোখ বড় বড় করে বলে,
“What!!”
মেঘের আম্মু মেঘ কে ধমক দিয়ে বললেন,
” এইভাবে ষাঁড়ের মত চিল্লাস কেনো?”
মেঘের বড় আম্মু বলেন,
“কেনো মেঘ, নিহার কি ব্যাবহার ভালো না নাকি॥”
“না না বড় আম্মু , নিহা যথেষ্ট ভালো মেয়ে কিন্তু…….…’
মেঘ আর কিছু বলার আগেই বাসার কলিং বেল বেজে উঠলো।
মেঘের বড় আম্মু আয়নাকে বললেন,
“আয়না দেখতো কে এসেছে। আদ্রিজের বাবা এবং কাকাই তো এত তাড়াতাড়ি আসার কথা না।”
আয়না গিয়ে দরজা খুলে অবাক হয়ে দরজার ওই পাশে থাকা ব্যাক্তিটির দিকে তাঁকিয়ে রইলো।
আদ্রিজ আয়নার দিকে তাঁকিয়ে বললো ,
“কেমন আছো আয়না আফা।”
আয়না চিৎকার দিয়ে বললো ,
“বড় আম্মাগো দেইখা যান কেডায় আইছে। আমি কি সপ্ন দেহি নি।!”
আয়নার চিৎকারে সবাই দরজার কাছে এসে স্তব্ধ হয়ে গেলেন।
আদ্রিজ এসে নিজের মাকে জড়িয়ে ধরলেন।
মিসেস আশা চৌধুরী এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না। হটাৎ করেই ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠলেন।
সারা মুখে চুমু একে দিলেন।
আদ্রিজ মায়ের চোখের পানি মুছে দিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললেন,
“মা কান্না থামাও। আমিতো এসে পড়েছি। এইভাবে কান্না করলে আমি আবারো চলে যাবো।”
মিসেস আশা চৌধুরী বহু কষ্টে কান্না থামালেন। এত্ত বছর পর ছেলেকে দেখে নিজেকে সামলাতে পারছেন না।
কিন্তু নিজের ছেলের রাগ সম্পর্কে তিনি অবগত।
কান্না না থামালে হয়তো দেখা যাবে সত্যি সত্যি চলে যাবে।
আদ্রিজ দাদুর সামনে গিয়ে দাদুকে সালাম দিয়ে জড়িয়ে ধরলো।
মেঘ তার ভাই এর দিকে তাঁকিয়ে আছে। ছেলে হয়েও চোখ সরাতে পারছে না।
কি সুন্দর চোখ , পুরো বাঘের চোখের মতো। বডির ধরন কিছুটা সুশান্ত সিং রাজপুতের মত। ফর্সা গায়ের রং, মুখ ভর্তি খোঁচা খোঁচা চাপ দাড়ি । ঠোঁটের রং হালকা লাল। উচ্চতা মেঘের মতোই প্রায় ছয় ফুটের কাছাকাছি। চেহারায় সব থেকে আকর্ষণীয় জিনিসটি হলো ঘন কালো ভ্রু, যা ফকফকে চেহারায় নজর কেরে রেখেছে। এতো সুন্দর তার ভাই তবে গাম্ভীর্যতায় ভরপুর।
আদ্রিজ এর জড়িয়ে ধরাতে হুস আসলো মেঘের। খানিকটা লজ্জাও পেলো। হেসে নিজেও জড়িয়ে ধরলো ভাইকে।
আদি এতক্ষন ধরে খেয়াল করলো তার ভাই সবার সাথে কথা বলছে কিন্তু তার সাথে এখনো বলে নাই।
সে গাল ফুলিয়ে বলে উঠলো,
“কেউ একজন হয়তো ভুলে গেছে তার একজন ছোটো ভাই আছে। অবশ্য আমিতো মনে রাখার মতো কেউ না।”
আদ্রিজ হাঁটু ভাঁজ করে আদির সামনে বসে আদিকে জড়িয়ে ধরে বললো,
“কেউ একজন একদম ভুলে যায় নি তার একজন ছোটো ভাই আছে। সবার শেষে আমি তার কাছে আসলাম যাতে তাকে আমি বেশি আদর করতে পারি।”
“আমি টেবিলে নাস্তা দিচ্ছি । মেঘ তুই আদ্রিজ কে তার রুমে নিয়ে যা। আদ্রিজের বাবা আর কাকাই আপনারাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসেন।”
মিসেস আশা এই বলে কিচেন এ চলে গেলেন।
আদ্রিজ নিজের রুমে প্রবেশ করে চারপাশে তাকিয়ে বুজলো আগের আসবাব পত্র গুলো নেই। নতুন ভাবে সাজানো রুম টা।
আদ্রিজ অতিরিক্ত গরমে প্রায় হাপিয়ে গেছে। তাই রুমে এসেই সাওয়ার নিতে চলে গেলো।
রাতে ডিনার এর পর নিহা এবং মেঘা রুমে বসে লুডু খেলছে। নিহার খেলার ইচ্ছে ছিলো না কিন্তু মেঘার জোড়াজুড়ি তে না পেরে খেলতে বসেছে।
খেলায় যখন টান টান উত্তেজনা তখনি মেঘার ফোনে মেসেজ আসে।
মেঘা হোয়াটস অ্যাপ এ ঢুকে দেখে মেঘ একটা ছবি পাঠিয়েছে যেটা তাদের ডিনার টাইম এ ডাইনিং টেবিলে তুলা।
মেঘা ছবিতে একজনকে দেখে চোখ বড় বড় করে ফেললো।
নিহা মেঘার মুখের এইরকম রিয়াকশন এর কোনো মানে বুজলো নাহ।
“কিরে চোখ এইরকম বড় বড় করে ফেললি কেনো?”
মেঘা কিছু না বলে ফোনটা নিহার হাতে ধরিয়ে দিল।নিহা ছবিটির দিকে তাকিয়ে কিছুই বুজলো না।
তবে, আদ্রিজ কে দেখে কিছুক্ষন এর জন্য থমকে গেলো ।
মেঘা চোখ বড় বড় করে বলল ,
“ইনি তো মেঘের বড় আব্বুর বড় ছেলে আদ্রিজ চৌধুরী। ইনি কবে আসলো ?”
নিহা চোখ রাঙিয়ে বললো,
“আমি কিভাবে জানবো তুই মেঘ ভাইয়াকে জিজ্ঞেস কর।”
মেঘা একটা বোকা বোকা হাসি দিয়ে বললো,
“ওহ হ্যা , আসলেইতো তুই কিভাবে জানবি হিহিহিহি
আমি মেঘ কেই জিজ্ঞেস করছি।”
এই বলে মেঘা ফোনটা নিয়ে বেলকনিতে চলে গেলো।
নিহা রুম থেকে বের হয়ে কিচেন এ গিয়ে দেখলো মিসেস মারিয়ম পিঠা বানাচ্ছেন। নিহা গিয়ে পিছ থেকে জড়িয়ে ধরলো। মিসেস মারিয়াম বুঁজতে পেরে হেসে দিলেন।
“কিরে মা , কিছু লাগবে নাকি ?”
“না মামনি । এমনিই তোমায় কিচেনে দেখে আসলাম। এতো রাতে পিঠা কেনো বানাচ্ছো। ”
মিসেস মারিয়াম হাসি মুখে বললেন,
“তোরা তো কাল খুব ভোরে চলে যাবি কাল । বাসায় নিয়ে খাবি পিঠাগুলো। আমের আচার বানিয়ে রেখেছি। জামাকাপড় গুছিয়ে নিয়েছিস তো আর মেঘা কি করছে?”
নিহা পাটিসাপটা খেতে খেতে বললো,
“হ্যা মামনি গুছিয়ে নিয়েছি আর মেঘা মেঘ ভাইয়ার সাথে কথা বলছে। মনে হয় মেঘ ভাইয়ার বড় ভাই মেঘা কালকে যার কথা বলেছিল তিনি এসেছেন।”
মিসেস মারিয়াম অবাক হয়ে বললেন,
“তাই নাকি ভালইতো।”
“হুঁম। দেখি তুমি বসো , আমি বাকি পিঠাগুলো ভেজে নিচ্ছি। তোমায় প্রচুর ঘামিয়েছে।”
“আরে পাগলি আর অল্প কিছু পিঠা আছে। তোদের কাল খুব ভোরেই উঠতে হবে,এখন যা গিয়ে ঘুমিয়ে পর।”
“তুমি বসোতো মামনি”
নিহা জোর করেই মামনিকে সরিয়ে নিজে পিঠা ভাজতে লাগলো॥”
*
*#ভালবাসার_প্রজাপতি
#পর্বঃ৬
#মাহিয়া_মুন
চলন্ত ট্রেনে জানালার পাশের সিটে বসে আছে নিহা।
মেঘা তার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে।
হাতে একটা গল্পের বই নিহার।
গল্প পড়তে অনেক ভালোবাসে সে। গল্প পড়ার সময় তার চারদিকে আর খবর থাকে নাহ।তবে এখন গল্প পড়ায় মন নেই তার।
চলন্ত ট্রেনের জানালা দিয়ে দিগন্ত প্রসারিত শষ্যক্ষেত্র,
কৃষকের মাঠে চাষ করা, গাছপালা, বন জঙ্গল সবকিছুই নিহার নিহার মন ছুঁয়ে যাচ্ছে।
সকালে খুব তাড়াতাড়ি রওনা দিয়েছিল তারা। মিস্টার জয়নুল হাওলাদার ট্রেন ছাড়া পর্যন্ত তাদের সাথেই ছিলেন।
গন্তব্যের প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছে ট্রেন।নিহা হাতে থাকা হুমায়ূন আহমেদের অপেক্ষা উপন্যাসটি পড়ায় মনোযোগী হলো।
*
*
মেঘ আদ্রিজকে ডাকতে তার রুমে আসলো। এসে দেখে আদ্রিজ পুশআপ করছে।
মেঘ ভাবে সেতো মাসে দুবার জিম করে কিনা সন্দেহ। আগে যতটুকু করতো এখন তাও করা হয়না।
রাত জেগে মেঘার সাথে কথা বলে সকালে ঠিক মতো কলেজেই যেতে পারে না।
গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত আদ্রিজ আর সে সুইমিং পুলের পাশে বসে আড্ডা দিয়েছে। যদিও বেশিরভাগ কথা ছিলো আদ্রিজের বিজনেস এবং মেঘের পড়ালেখা বিষয়ক।
অহেতুক কথা আদ্রিজ বলতে পছন্দ করে নাহ এইটা মেঘ জানে।
মেঘ এবং আদি একি রকম।ছোটো বেলা থেকেই দুষ্টামি করতে পছন্দ করে। আদ্রিজের হাতে মেঘ অনেকবার মাইর খেয়েছে এইরকম দুষ্টামির কারনে। আদ্রিজ তাদের বিপরীত।
আদ্রিজের রাগকে পরিবারের সবাই অনেকটাই ভয় পায়।
আদ্রিজ্জ মেঘ কে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ভ্রু কুঁচকে বলে উঠে,
“কি হলো মেঘ, এইভাবে দাড়িয়ে আছিস কেনো? কিছু বলবি।”
আদ্রিজের ডাকে মেঘের হুস আসে।
“হ্যা ভাইয়া নাস্তার টেবিলে সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।”
“ওহ্,ঠিক আছে আছে তুই যা আমি আসছি।”
এই বলে আদ্রিজ টাওয়েল হাতে নিয়ে ওয়াশ রুমে চলে গেল।
নাস্তা শেষে আদ্রিজের বাবা আদ্রিজকে বলে উঠলেন,
“বাবা তোর ফ্রেন্ডস দের ইনভাইট করেছিস তো।”
আদ্রিজ গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠলো,
“কি দরকার ছিল বাবা পার্টি দেওয়ার। আমার হাতে প্রচুর কাজ এখন। আমি এসেছি মানুষ এমনিতেই জেনে যাবে । এখানে আয়োজন করে জানানোর কি আছে।”
আশা চৌধুরী আদুরে গলায় বলে উঠলেন,
“চৌধুরী বাড়ির বড় ছেলে তুমি বাবা। এতো বছর পর তুমি এসেছো পার্টি দেওয়া হবে নাহ এইটা কি মানায়। আর কাজ তো তুমি সবসময় করো। দেশে এসেছো বেশি না হলেও এক মাস একটু সময়টা উপভোগ করো।”
“সময় অপচয় করা আমার একদম পছন্দ নয় এইটা জানো। আর কাল থেকে মেঘ অফিস যাওয়া শুরু করবে।”
মেঘ স্যান্ডউইচ মুখে দিয়েছিল মাত্র। আদ্রিজের কথা শুনে স্যান্ডউইচ গলায় আটকে কাশতে লাগলো।
এক পর্যায়ে কাশি কিছুটা কমলে মেঘ মিনমিন করে বলে উঠলো,
“আমি নাহ মানে আমার এখনো অফিস যাওয়ার বয়স হয়েছে বলো ভাইয়া। আমি এখনো অনেক ছোট আদির মতো।”
আদ্রিজ দাতে দাঁত চেপে বলে উঠলো ,
“শুনলাম মেঘা নামে কারো সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে আছো। কাকাই কাকিমা তারাও মেনে নিয়েছে। নিশ্চই মেঘার বাবা মা বেকার ছেলে দেখে তাদের মেয়ে বিয়ে দিবে নাহ। কাল থেকে তুমি অফিস যাবে। দ্বিতীয়বার যাতে তোমায় না বলতে হয়।”
মেঘ বুজলো আদ্রিজ রেগে যাচ্ছে তাই মুখ ফুলিয়ে বলে উঠলো,
“আচ্ছা।”
পড়ন্ত বিকেল।
নিহা রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে বাসায় যাচ্ছে। ইচ্ছে করেই রিক্সা নেয় নি। পরনে শুভ্র রঙের শাড়ি। চুলগুলো হাত খোঁপা করা। কপাল এ ছোটো টিপ।
শাড়ি নিহার খুব পছন্দ।
আজ ঐশীকে পড়াতে গিয়ে এইরকম একটা পরিস্থিতিতে পরতে হবে ভাবে নি সে।
নিহাল এবং তার নতুন বিয়ে করা বউ (সম্পর্কে যে মেঘার মামাতো বোন) ঐশীদের বাসায়।
নিহা যতই ভাবে নিহালকে ভুলে যাবে ততই যেনো বেশি মনে পরে ।
নিহালের বউ নিহাকে দেখেই চিনে ফেলেছিল, কারণ গ্রামে বিয়ের দিন মেঘা তার সাথে নিহার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। মেয়েটা তার থেকেও যথেষ্ট সুন্দরী। সেই জন্যইতো নিহাল তাকে ছেড়ে দিলো।
নিহার মনে প্রশ্ন জাগলো,
“একজনের মন ভেঙে আর একজনকে নিয়ে কি সুখে থাকা যায়।”
হয়তো যায়। নিহালকেতো দেখলো কতটা খুশি।
এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে রাস্তার মাঝখানে চলে এসেছে বুঝতেই পারেনি।
হটাৎ হাতে টান পড়ায় হুড়মুড়িয়ে কারো বুকের সাথে ধাক্কা খেল।
কিছু বুজে উঠার আগেই বাম গালে ঠাস করে চড় পড়লো।
থাপ্পড় খেয়ে যেনো নিহার মাথা ঘুরে গেছে। চারিদিকে অন্ধকার দেখছে। গালে হাত দিয়ে সামনে দাড়িয়ে থাকা ব্যাক্তিটির দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল।
মস্তিষ্ক হটাৎ যেনো সচল হয়ে উঠলো। নিহার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।
কারন সামনে দাড়িয়ে থাকা ব্যাক্তিটি মিস্টার আদ্রিজ চৌধুরী ।
আদ্রিজ কফি শফে এসেছিল তার কলেজ লাইফ এর বন্ধুদের সাথে দেখা করতে। ইচ্ছে ছিলো নাহ এইরকম পাবলিক প্লেসে আসার। বন্ধুরা রিকোয়েস্ট করেই এক প্রকার আনিয়েছে তাকে।
কফি শফ থেকে গাড়িতে উঠতে যাবে তখনি দেখলো একটি শাড়ি পরিহিতা মেয়ে রাস্তার মাঝখান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।
অনেকেই মেয়েটাকে সরে যেতে বলছে তবে মনে হচ্চে মেয়েটার সেদিকে কোনো খেয়াল নেই। হটাৎ লক্ষ্য করলো একটি কার খুব দ্রুত মেয়েটির দিকে এগিয়ে আসছে।
কোনো কিছু না ভেবেই দৌড়ে এসে মেয়েটির হাত ধরে টান দিয়েছে। নাহলে আর একটু হলেই এতক্ষনে মেয়েটির রক্তমাখা দেহ রাস্তায় পরে থাকতো।
নিহার এইভাবে তাকিয়ে থাকাতে আদ্রিজের রাগ আরো বেরে গেল। ধমকে বলে উঠলো,
“এই মেয়ে গাড়িতে চাপা পরে কি মরার শখ হয়েছে নাকি।! এতো মরার ইচ্ছে থাকলে বাসায় গিয়ে মরেন। ইডিয়েট কোথাকার।”
জিসান দৌঁড়ে এসে আদ্রিজকে থামিয়ে বললো,
“ভাই কি করছিস কি থাম , চারপাশে অনেক মানুষ দেখছে।”
আদ্রিজ নিহার দিকে রাগি চোখে তাঁকিয়ে হনহন করে গাড়ির দিকে চলে গেল। জিসান ও একবার নিহার দিকে তাঁকিয়ে আদ্রিজের পিছে পিছে চলে গেলো।
আশেপাশের লোকজন কানাঘুষোকরতে করতে নিজ নিজ গন্তব্যে হাঁটা শুরুকরলো।
নিহা এখনো থম মেরে ঠায় দাড়িয়ে রইলো । ভয়ে এখনো তার বুক দূরু দূরু করছে। হৃদস্পন্দন উর্ধ্বগতিতে চলছে। শরীর ঘেমে একাকার হয়ে গেছে।
সত্যিতো আর একটু হলে হয়তো এতক্ষণে সে………..
আল্লাহ্ ঠিক সময় ওই লোকটাকে পাঠিয়ে দিয়েছে ।
আস্তে ধীরে একটা রিকশা ডেকে উঠে পরলো।
মেঘা সোফায় বসে টিভি দেখছিল। কলিং বেলের শব্দে বুজতে পারলো যে নিহা এসেছে।
দরজা খুলে দিতেই নিহা মেঘাকে পাশ কাটিয়ে সোফায় গিয়ে বসে চোখ বন্ধ করে রইলো। তার এখনো শরীর মিদ্রু কাপছে।
নিহার গালের দিকে নজর পড়তেই মেঘা আঁতকে উঠলো। স্পষ্ট পাঁচ আঙ্গুলের ছাপ বুজা যাচ্ছে।
মেঘা উচ্চস্বরে বলে উঠলো,
“এই নিহু তোর গালে থাপ্পড় এর দাগ কেনো? তোকে থাপ্পর দিল কে।?”
নিহা কিছু বলছেনা দেখে মেঘা আবারো একি প্রশ্ন করলো।
নিহা কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো ,
“তোর হবু ভাসুরে।”
মেঘা খানিকটা ভেবাচেকা খেয়ে বললো,
“আমার ভাসুর মানে ।”
নিহা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঐশীদের বাসা থেকে রাস্তায় ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনা বললো।
মেঘা সব শুনে রিয়াকশন দিতেই যেনো ভুলে গেছে।
নিহার দিকে তাঁকিয়ে হটাৎ করেই নিহাকে জড়িয়ে ধরলো।
নিহা বুজতে পারল মেঘা এখন কান্না করে দিবে। বলতে না বলতেই মেঘার ফুপানোর আওয়াজ শুনতে পেল।
নিহা কিছুক্ষন চুপ থেকে থেকে বললো,
“মেঘা বাচ্চাদের মত কান্না করছিস কেনো । দেখ আমি একদম ঠিক আছি আমার কিছু হয় নি।”
মেঘা ফুপানো কণ্ঠে বললো,
“ঠিক আছিস, আজ যদি আদ্রিজ ভাইয়া সময় মত না আসতো তাহলে ……….। আর গ্রামে ছিলাম বলে ওই নিহালকে কিছু বলতে পারি নি। ওই বদমাইশ ছেলেটাকে যদি আমি নর্দমায় না চুবিয়েছি।”
“আচ্ছা ঠিক আছে। শান্ত হ, আমায় কষ্ট করে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি খাওয়া।”
মেঘা লেবুর শরবত বানিয়ে নিহাকে দিয়ে বললো,
“নিহু , সন্ধ্যার পর তুই আর আমি একটু বের হবো।”
“কোথায় যাবি?”
“ওই আসলে মেঘেদের বাসায়।”
নিহা অবাক হয়ে বললো,
“কি॥!!”
“হ্যা । মেঘের আম্মু নিজে ফোন দিয়ে বলেছে যাতে আমি আর তুই সন্ধ্যার পর ঐখানে থাকি। আদ্রিজ ভাইয়া আশা উপলক্ষে সন্ধ্যার পর নাকি পার্টি দেওয়া হয়েছে। ওনার কথা কিভাবে অমান্য করি বল। আর মেঘ ও বলেছে যেতে।”
“অমান্য করার কথা বলছিনা আমি কিন্তু আমি গিয়ে কি করবো। তুই মেঘ ভাইয়ার সাথে চলে গেলেই তো হয়।”
“তুই গিয়ে কি করবি মানে তুই যাবি মানে যাবি এটাই শেষ কথা।”
নিহা হতাশার একটা নিঃশ্বাস ফেললো। কারণ মেঘা যে তাঁর কোনো কথা শুনবেনা এইটা সে জানে। চৌধুরী বাড়িতে আরো দুই বার গিয়েছিল সে আর মেঘা।
মেঘ ভাইয়া নিয়েছিল তার পরিবারের সাথে মেঘার পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য।
মেঘ ভাইয়ার পরিবারের প্রতিটি মানুষই ভীষন আন্তরিক। সহজেই মানুষকে কতটা আপন করে নেয়।
*
*
*
*
চৌধুরী বাড়ি নানান ফুলে সজ্জিত। লাইটিং এর আলোয় চারদিক আলোকিত। হালকা ভলিউম এ সং চলছে। সেই তালে অনেকেই ড্যান্স করছে।
আজিজ চৌধুরী এবং মেহরাব চৌধুরী গণমান্য ব্যাক্তিদের সাথে কথা বলায় ব্যাস্ত।
আশা চৌধুরী, অনুপমা চৌধুরী অবং তাদের শাশুড়ি মাও কয়েকজনের সাথে গল্পে মেতে উঠেছে।
আদ্রিজ এখনো আসে নি । সবাই তার অপেক্ষায় আছে।
নেঘ তার বন্ধুদের সাথে দাড়িয়ে আছে। মেয়েরা তার পাশে ঘুরঘুর করছে যার কারনে সে বিরক্ত।
তবে তাঁর হাসিও পাচ্ছে কারন এসব মেয়েরাই কিছুক্ষন পর তাঁর ভাই কে দেখে ভাইকে ইমপ্রেস করতে চাইবে।
আরিয়ান বলে উঠলো,
“কিরে মেঘা আর নিহা ওরা কি আসবেনা?”
“হ্যা আসবে। একটু আগে ফোন দিয়েছি বললো রিক্সায় আছে।”
কেউ আর কিছু বলতে পারলো না কারন সবার নজর সিড়ির দিকে গেলো।
ব্ল্যাক স্যুট , ব্ল্যাক কেটস , ব্ল্যাক ব্র্যান্ডেড ওয়াচ , চেহারায় গাম্ভীর্যতা নিয়ে সিড়ি দিয়ে নামছে আদ্রিজ।
মাথার উপরে লাভ আকৃতির বেলুনগুলো তার উপরেই পড়ছে সেই সাথে ফুলের বৃষ্টি।
পার্টিতে আসা সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। মেয়েরা তো পারে না চোখ দিয়ে গিলে খাবে
আদ্রিজ গট গট পায়ে সিড়ি দিয়ে নেমে তার বাবার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো।
আজিজ চৌধুরী হেসে নিজের ছেলেকে জড়িয়ে ধরলেন। আদ্রিজ নিজেও হালকা হেসে বাবাকে জরিয়ে ধরলো। আজিজ চৌধুরী মাইক হাতে নিয়ে সকলের উদ্দেশ্যে বলে উঠলেন,
“Ladies and gentlemen. Hope everyone is well. Best wishes to all. Everyone must have understood by now who is intended for today’s party. Yes, He is my eldest son Adriz Choowdury. Seven years ago, He went to America to study. But at the same time , He created his own identity there. Choowdury has built a fashion house in America with his own efforts. Yesterday He came without informing us . Surprised us. I hope everyone will pray for my son. Enjoy the Party everyone.”
সবাই করতালির মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানালো আদ্রিজকে।
আদ্রিজ সবার সাথে পরিচিত হয়ে বন্ধুদের কাছে এসে দাঁড়ালো। তার কাছে এসব একদম বিরক্ত লাগছে।
আদ্রিজের বন্ধু তুহিন হেসে বললো ,
“দেশে তো এসে পরলে ভাই এইবার বিয়ে শাদি করে নেও বয়স তো তাও কম হলো নাহ। আমরা বাবা ডাক শুনি আর আমাদের বন্ধু এখনো বিয়েই করলো নাহ।”
আদ্রিজ রাগি চোখে তাঁকিয়ে বললো গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
“আমার বউ নেই কে বলেছে তোদের?”
বন্ধুমহল চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইল আদ্রিজের দিকে। জিসানের হেচকি উঠে গেছে।
আদ্রিজ বাঁকা হেসে তাকিয়ে রইলো তার বন্ধুদের দিকে।
ফাহাদ চোখ বড় বড় করে বললো,
“তুই বিয়ে করে ফেলেছিস নাকি আমেরিকাতে। আমাদেরকে জানালি না। কে সেই মেয়ে?”
আদ্রিজ আবারো বাঁকা হেসে বলে উঠলো,
“আমার বউ তো একজন না।”
এইবার যেনো সবার চোয়াল যুলে পরার মত অবস্থা।
তুহিন চিল্লিয়ে বলে উঠলো,
“কি বলছিস ভাই এসব। মাথা ঠিক আছে তোর। পাগল টাগল হয়ে গেলি নাকি।”
“একদম না। আমি একদম ঠিক আছি। আর যা বলছি ঠিক বলছি।”
জিসান আর চুপ থাকতে না পেরে বললো,
“কারা তোর বউ? ”
আদ্রিজ হালকা হেসে বললো,
” বন্ধুর মা যদি আমার মা হয় , বন্ধুর বাবা যদি আমার বাবা হয় , বন্ধুর বোন যদি আমার বোন হয় তাহলে বন্ধুর বউ আমার কি হবে?”
সবাই এক সাথে বলে উঠলো,
“বউ”
যখন বুজতে পারলো আদ্রিজ্জ কি বলেছে চোখ বড় বড় হয়ে গেল এক একজনের।
জিসান হাসতে হাসতে বললো,
“যাক আমার বউ তাহলে রক্ষা পেলো।”
সবাই হেসে দিলো। আদ্রিজ নিজেও হেসে সামনে তাকাতেই যেনো থমকে গেলো।
মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো কালো শাড়ি পরে দরজা দিয়ে আসতে থাকা মেয়েটির দিকে। মেয়েটির হাঁটু সমান চুল যেনো আদ্রিজকে মোহনীয় করে তুলছে। কাজল কালো চোখের মায়ায় যেনো নিজেকে হারিয়ে ফেলছে। নিজের অজান্তেই মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসলো ,
“এলোকেশী মায়াবতী।”
*
*
*
*
(আসলামু আলাইকুম। দুঃখিত কালকে গল্প দিতে না পারায়। আজকে আর একটি পার্ট দেওয়ার চেষ্টা করবো।)
*
(আসলামু আলাইকুম)