ভালোবাসা তুই পর্ব -০৩+৪

#ভালোবাসা_তুই
#পর্বঃ৩
#লেখিকা_নিদ্রানী_নিদ্রা

[ কপি করা নিষেধ ]

ছাদে এনে শুভ্র ভাই আমাকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে বলল,

” এই শুভ্রতা তুই এতো বড় হয়ে গেলি কবে ? আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না তুই সেই শুভ্রতা । ছোটবেলায় তো সারাদিন আমার পিছু পিছু ঘুরতেই থাকতি আর এখন কতো বড় হয়ে গেছিস ।

আমার ঠিক কি বলা উচিত আমি বুঝতে পারছি না।
আমাকে চুপ থাকতে দেখে উনি আবার বলে উঠলেন,

” ছোটবেলায় তো দেখতে পেত্নীর মতো ছিলি । এখন তো দেখতে আরও পেত্নীর মতো হয়েছিস । তোকে দেখে কেউ ভয় পায় না ? আমার তো ভয় লাগছে তোকে দেখে !

আমার এবার কান্না আসার উপক্রম। আম্মু তো বলতো ছোটবেলায় আমি অনেক কিউট দেখতে ছিলাম । এখন ও তো সবাই বলে আমি নাকি অনেক কিউট, সুন্দরী কিন্তু শুভ্র ভাইয়ের মতো এভাবে কেউ আমাকে কোনদিন বলে নাই । শুভ্র ভাই আবার বলে উঠলেন….

” শুভ্রতা একটু কাছে আয় তোর ”

আমি এখানেই ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইলাম তাই শুভ্রর ভাই আবার বলে উঠলেন ….

” তোকে কিছু বলছি তো আমি ! শুনতে পাচ্ছিস না তুই?

আমি এক কদম উনার দিকে এগিয়ে গেলাম । উনি আমার হাতটা ধরে বললেন …

” ছোটবেলায় তর হাতটা অনেক নরম ছিলো। এখন তো আরও নরম হয়েছে । তোকে দেখতে ও বাচ্চা বাচ্চা লাগছে । তুই কি এখন ও বাচ্চা আছিস শুভ্রতা ?

আমার তো মনে হচ্ছে শুভ্র ভাই একটা অসভ্য, অভদ্র লোক। উনার মতো অসভ্য, অভদ্র লোক পুরো পৃথিবীতে খুঁজলে ও পাওয়া যাবে না। উনি অতিরিক্ত বেয়াদব একটা লোক। সবাই বলে শুভ্র ভাই নাকি অনেক ভালো, ভদ্র একটা লোক কিন্তু আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না উনি ভালো , ভদ্র লোক। …….. আমি এবার উনাকে পাশ কাটিয়ে ছাদ থেকে নেমে যেতে চাচ্ছিলাম কিন্তু উনি আমার ডান হাতটা মুচড়ে ধরে বললেন ,,

” তোকে যেতে বলেছি ! তর সাহস তো কম না আমাকে উপেক্ষা করে চলে যাচ্ছিস ।

” আহহ ব্যাথা লাগছে ভাইয়া ছাড়ুন ।

” ব্যাথা লাগার জন্যই তো ধরেছি ।

বাসায় আসার পর টানা দশ দিন আমার হাতে ব্যাথা ছিল । তারপর থেকে শুরু হলো শুভ্র ভাইয়ের সাথে আমার লড়াই কে কাকে কতটুকু জ্বালাতে পারি । উনি আমাকে কখনো ভোর বেলা, কখনো রাতে , কখনো ফোনে জ্বালাতে থাকেন ।

একদিন রাত ১২ টায় শুভ্র ভাই আমাকে কল করে বললেন ,

” শুভ্রতা আমি বাসার নিচে দাঁড়িয়ে আছি । পাঁচ মিনিটের মধ্যে নিচে আয় । এখন নিচে না আসলে তোকে একেবারে খুন করবো আমি। কথাটা মাথায় রাখিস।
#ভালোবাসা_তুই
#পর্বঃ৪
#লেখিকা_নিদ্রানী_নিদ্রা

[ কপি করা নিষেধ ]

শুভ্র ভাইয়ের ফোন পাওয়ার পর ভয়ে ভয়ে রুম থেকে বের হলাম। শুভ্র ভাইকে তো আমি ভয় পাই কিন্তু আমার আম্মুকে শুভ্র ভাইয়ের থেকেও বেশি ভয় পাই।
আম্মুর রুমের সামনে গিয়ে দেখলাম আম্মু বিছানা ঠিক করছে । এখন যদি আম্মুকে নিচে যাওয়ার কথা বলি আম্মু কিছুতেই আমাকে নিচে যেতে দিবে না। তাই আম্মুকে না বলেই বাসা থেকে বের হলাম। নিচে গিয়ে দেখি শুভ্র ভাই কাঁধে একটা ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার গায়ে লাল একটা টি-শার্ট আর কালো জিন্স। চুল গুলো এলোমেলো হয়ে আছে। চেহারায় ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আমি উনার কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই একটু মুচকি হাসি দিয়ে বললেন ,

” তুই এসেছিস শুভ্রতা ?

আমি উনার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বললাম ,

” আপনি আমাকে এতো রাতে নিচে আসতে বললেন কেন ? আর বাহিরে দাঁড়িয়ে কি করছেন আপনি বাসায় চলুন ।

আমার প্রশ্নে উনি ভ্রু কুঁচকে বললেন ,

” আমি এখানে দাঁড়িয়ে মশাদের সাথে পিকনিক করছি , ডাফার । এতো রাতে বাসায় গেলে ফুপ্পি কি মনে করবে ?

” আম্মু আবার কি মনে করবেন ? আপনি আম্মুর অতি আদরের ভাতিজা। আপনি যখনই বাসায় যাবেন তখনই আম্মু খুশি তে আত্মহারা হয়ে আপনার আপ্যায়ন করবে । উনার আদরের ভাতিজা বলে কথা ।

” তুই এইসব বুঝবি না গাঁধী ।

” আপনি এখন কোথা থেকে এসেছেন ।

” চট্টগ্রাম থেকে এসেছি ।

” চট্টগ্রাম থেকে বাসায় না গিয়ে সোজা এখানে কেন আসলেন ।

” শুভ্রতা তুই আমাকে ভাই মনে করলে ও আমি কিন্তু তোকে বোনের নজরে দেখি না । আমার ভালোবাসা তুই এটা বুঝিস ? বুঝিস না তো ।

আমি উনার কথা শুনে মাথা নাড়িয়ে বললাম যে উনার কথার মানে আমি বুঝি নি ।

” এতো অবুঝ কেন তুই শুভ্রতা । কবে বুঝবি আমাকে । আমি যে তর বিরহে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছি ।

উনার কথা শুনে আমি উনাকে বললাম ,

” শুভ্র ভাই আপনি কি আমাকে ভালোবাসেন ?

উনি মনে হয় আমার কথায় অসন্তোষ হলেন । আমাকে ধমক দিয়ে বললেন ,

” এই ভালোবাসার কি বুঝিস তুই ? বেশি পাকনামো শিখে গেছিস হ্যা ।

আমাকে আরও কয়েকটা ধমক দিয়ে আমার পায়ের কাছে বসে যখন আমার পায়ে হাত দিতে যাবেন তখনই আমি দু পা পিছিয়ে গিয়ে বললাম ,

” একি আপনি আমার পায়ে হাত দিচ্ছেন কেন ?

” তর কি মনে হয় আমি তর পা কেটে রেখে দিবো । কোন সাহসে পা সরিয়ে নিয়ে গেলি তুই । পা দে বলছি ।

আমি পা এগিয়ে দিলাম । উনি আমার পায়ে একটা পায়েল পড়িয়ে দিলেন। তারপর আমার সামনে দাঁড়িয়ে বললেন ,

” অনেক জার্নি করে এসেছি । এখন বাসায় গিয়ে একটু রেস্ট নিবো । তুই সোজা বাসায় যা।

আমি উনার কথা মতো বাসায় চলে গেলাম। তারপর আমার রুমের বেলকনিতে গিয়ে দেখলাম শুভ্র ভাই চলে গেছে । আমি রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকাল ৯ টা বাজে । আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি শুভ্র ভাই হাজির। উনি আমার দিকে তাকিয়ে আম্মুকে বললেন ……

#চলবে

[ গল্প ভালো লাগলে শেয়ার করবেন সবাই ]
#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here