#তুমি_হাতটা_শুধু_ধরো
#পর্বঃ২৪
#Jhorna_Islam
নোহা তার বাবার সাথে কথা বলে পিছনে ফিরতেই দেখতে পায়,,তার শাশুড়ী ভ’য়ং’কর দৃ’ষ্টি’তে তার দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ করে পিছনে ফিরে কাউকে দেখে প্রথমে ঘা’ব’ড়ে যায় নোহা।তারপর নিজেকে আবার সা’মলে নেয়।
–কিছু বলবেন মা?
— হেসে হেসে কার সাথে কথা বলতেছিলে?
— কেনো বলুনতো মা? আমি কি এখন কারো সাথে কথা বলতে গেলেও আপনার থেকে পা’র্মি’শ’ন নিতে হবে?
— অবশ্যই নিতে হবে।ভুলে যেওনা তুমি তোমার বাপের বাড়িতে নেই।এসব আমি একদম স’হ্য করবোনা।বাড়ির কাজ ফেলে উনি হাসি তা’মা’শা করে।
— কাজ এখন করি বা পরে।ফেলে রাখি বা করে ফেলি।আপনার তো দেখার বিষয় না মা।সবকিছু আপনি ঠিক টাইমে পেলেই হলো।এতো কথা শুনানোর তো কোনো কারণ দেখছিনা।আর ফেলে রাখলেও তো আপনি করে দিবেন না এতো কথা বলে লা’ভ আছে?
— মুখটা বেশি চলছেনা তোমার?
— এতো দিন চুপ থাকতে থাকতে কথা বলার জন্য যে গলার স্ব’র লাগে না? ঐটাতে জং ধরে গেছে বুঝলেন।তাই মুখটাকে বেশি বেশি চালিয়ে জং ছোটাচ্ছি।
বলেই নোহা ডো’ন্ট কেয়ার ভা’ব নিয়ে পা’শ কাটিয়ে চলে যায়।
ব’ড্ড বা’ড় বে’ড়েছো মেয়ে। কথায় আছেনা অতি বা’ড় বে’ড়োনা ঝ’ড়ে পরে যাবে।
কথাটা মনে মনে আ’ওড়ায় নোহার শাশুড়ী।
———————————————
দুপুরের খাবার রুশ ও মি.এলেক্স শেষ করে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলে।
খাওয়া দাওয়া শেষ হলে মি. এলেক্স কে রেস্ট নেওয়ার জন্য পাঠায়।রুশ ও চলে যায় একটু রেস্ট নেওয়ার জন্য। দুপুরের খাওয়াটা একটু বেশি ই হয়ে গেছে। এখন ইচ্ছে করতেছে হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে থাকতে। রেস্ট না নিলেই নয়।
রুশ ও মি.এলেক্স রেস্ট নেওয়ার জন্য চলে যেতেই সোহা,হাত ধুয়ে প্লেট নিয়ে দায়ানের পাশের চেয়ারে বসে।
খাবার মাখিয়ে খুব সুন্দর করে দায়ানের মুখের সামনে ধরে।দায়ান সোহার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,, আমি এখন খাবোনা।খিদে নেই আমার।তুমি খাও।সকাল থেকে অনেক কাজ করেছো।তোমার নিশ্চয়ই খিদে পেয়েছে? তুমি খেয়ে নেও।
কেনো খাবেন না? আশ্চর্য তো।বেলা কয়টা বাজে সে দিকে আপনার কোনো খেয়াল আছে? খেয়ে নিন চুপচাপ। আমি কোনো কথা শুনতে চাইনা।ঔষধ আছে আপনার ভুলে গেছেন? তারউপর আবার ঠিক টাইমে না খেলে বুক ব্যাথা করবে।সো ল’ক্ষী ছেলের মতো খেয়ে নেন।
পা/গ/ল হয়ে গেছো।বাড়িতে আমরা একা না।আরো লোক আছে। ওরা দেখলে কি হবে ভাবতে পারতেছো তুমি? লজ্জায় পরতে হবে।তার মধ্যে রুশ দেখলে তো কোনো কথাই নেই।আমাকে নিয়ে লে’ক ফুল করবে।।
এগুলো কি রকম কথা বলেন আপনি? আমরা কি এখানে বসে প্রেম করছি নাকি।যে এতো ভাবাভাবি হবে।আর ওরা কেউ এখন আসবেনা।চুপচাপ খান তো।বা’ই এনি চান্স যদি এসেও পরে তো আমি রুশ ভাইয়াকে মা’না করে দিবো আপনাকে লে’ক ফু’লিং করতে।হয়েছে এবার হা করুন।
দায়ান তবুও খেতে চায় না।উঠে চলে যেতে নেয়।
সোহা তারাতাড়ি দায়ানের হাত ধরে বসিয়ে দেয়।আর নিজের পা দিয়ে,দায়ানের পা জোড়া পেঁচিয়ে ধরে।
হোয়াট দা !! এগুলা কি রকম ব্যাবহার সোহা?? পা সরাও।
একদম না।এতো সময় ভালো ভাবে বলেছি শুনেন নি।এখন এভাবে চুপচাপ খেয়ে নেন।নয়তো আমাকে তো চিনেন না।একদম কোলের উপর উঠে বসে দেন আপনাকে খাওয়াবো।আপনিকি সেইটাই চাইছেন? আমার কোনো আপত্তি নেই।বলেই লজ্জা পাওয়ার ভা’ন ধরে।
দায়ান পরেছে মহা ঝা’মেলায়।এই মেয়ে যে না খেলে ছাড়বেনা সেটা খুব ভালো করেই উপ’ল’ব্ধি করতে পেরেছে।তাই চুপচাপ হা করে খাবারটা মুখে নেয়।
এইবার তো খাচ্ছি। পা টা সরাও।
নাহ আপনার খাবার শেষ না হওয়া অবধি পা সরছেনা জনাব।
তুমি কিন্তু তোমার লিমিট ক্র’স করতেছো সোহা।বেশি বাড়াবাড়ি করলে কিন্তু তোমার খবর আছে।
সোহা দায়ানের দিকে তাকিয়ে মুখটা কে বাচ্চাদের মতো করে বলে উঠে,,,, প্লিজ খেয়ে নিন না চুপচাপ তারাতাড়ি। আমার প্রচুর খিদে পেয়েছে।আপনাকে খাইয়ে তারপর আমি খাবো।আপনি না খেলেতো আমি খেতে পারতেছি না। দেখেন কতো বেলা হয়ে গেছে। কিছুসময় পর আসরের আজান দিয়ে দিবে।
দায়ান ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যি অনেক বেলা হয়ে গেছে। সোহার মুখটাও ছোটো হয়ে গেছে।হয়তো খিদে পেয়েছে অনেক। তাই কথা বাড়ায় না চুপচাপ খেতে থাকে।
সোহা খুব মনোযোগ দিয়ে দায়ান কে খাওয়াচ্ছে। দায়ান খাবার মুখে তুলে নিচ্ছে আর মলিন হয়ে যাওয়া সোহার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
— সোহা।
— হু,, খাবার মাখাতে মাখাতে জবাব দেয় সোহা।
— দায়ান কোনো ভ’নিতা না করে,,সোজা’সা’প্টা বলে উঠে,,,,,,, তুমিও আমার সাথে খেয়ে নেও।নয়তো এতো লেট করে খেলে তুমিও অসুস্থ হয়ে যাবা।
সোহার চোখ জো’ড়া চিকচিক করে উঠে খুশিতে দায়ানের কথা শুনে।
দায়ানকে বলে,,,,,,,আপনি সত্যি বলছেন? এই প্লেট থেকে আমি খেয়ে নিবো?
হুম।
আপনার কোনো প্র’ব্লে’ম হবে না?
না।তুমিও খাও।
ওকে বলে সোহা ও একই প্লেট থেকে খাবার খেতে থাকে।একবার দায়ানের মুখে খাবার তুলে দেয়।তো একবার নিজের মুখে।
দায়ানের দিকে তাকিয়ে সোহা মনে করেন ভাবে,,,,লোকটা এতোটাও খা’রাপ নয়।মনটা খুব নরম।কাউকে দেখাতে চায় না।সবাইকে নিজের গ’ম্ভীর রাগী মু’ড টাই দেখায়।নিজের ভিতরে রাখা কোমল হৃ’দয় টা কাউকে দেখায় না।
লোকটা পুরাই নারকেলের মতো উপরটা শ’ক্ত । ভিতরটা নরম।আমি জানিনা কেনো আপনি এমন হয়ে গেছেন।দেইখেন আমি আপনাকে পাল্টে দিবো।আপনি মন খুলে হাসবেন।তার জন্য যা করা লাগে আমি তাই করবো।
সোহার ভাবনার মাঝে দায়ান বলে,,,সোহা তুমি এবার খাও।আমি আর খেতে পারবোনা।
খেতে পারবেন না মানে? এই কয়টা খাবারে পেট ভরে গেলো আপনার? আমায় বোকা পেয়েছেন।না খাওয়ার বা’হা’না দিতেছেন আমায়? কোনো বাহানা চলবে না।চুপচাপ খাবার খেতে থাকেন।
আরে কিন্তু,,,,,,,,
কিসের কিন্তু? কোনো কিন্তু না।অনেক জো’রা’জো’রির পর দায়ান আর কয়েক লো’ক’মা খায়।তারপর সোহা নিজেও খাবার খাওয়া শে’ষ করে। দায়ানকে ঔষধ খাইয়ে দেয়।
আজ সোহা নিজের ওড়না টা দিয়ে দায়ানের মুখ মুছিয়ে দিতে ভুলে যায়।
দায়ান ঠা’ই বসে রয়।মনে মনে চাচ্ছে সোহা যেনো তার ওড়না টা দিয়ে মুখ মুছিয়ে দেয়। কিন্তু কোথায় কি,,এই মেয়েতো থালা বাসন নিয়ে পরে আছে।দেখো কাল কি ভাব নিয়ে বলল,,, আপনার মুখ মুছিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব টা আমি নিলাম। আর একদিন না যেতেই ভু’লে গেছে।
সোহা এক মনে কাজ করে চলেছে আসলেই সে বে মা’লু’ম ভুলে গেছে।
দায়ান সোহার দিকে তাকিয়ে আছে। সোহা তা দেখে দায়ানকে একটা মুচকি হাসি উপহার দেয়।
দায়ান কিছু না ভেবেই সোহার ওড়নাটা টা’ন দিয়ে নিজেই মুখটা মুছতে থাকে। আর বলে,,,,, এই ভাবে দায়িত্ব নিতে আসছো? দেখোনা মুখে পানি লেগে আছে।
সোহার ওড়না তে টা’ন পরায়।দায়ানের দিকে তাকিয়ে পুরাই অবাক।দায়ান তার ওড়না দিয়ে মুখ মুছছে? এটা কি তার স্বপ্ন? দায়ানের কথাতে বুঝতে পারলো কোনো স্বপ্ন না বা’স্ত’ব।
দায়ান মুখ মুছে ততক্ষণে সোফায় বসতে যেতে নেয়।
সোহা নিজের ভাবনা থেকে বেরিয়ে দায়ানকে বলে,,,এইই ঐখানে বসতে যাইতাছেন কেনো এখন? রুমে একটু শুয়ে রেস্ট নিন।ভালো লাগবে। এমনিতেই জ্বর থেকে উঠেছেন।শরীরটা নিশ্চই দূর্বল।ওরা আসলে আমি আপনাকে ডেকে দিবো যান।
দায়ান ও তাই করে রুমের দিকে যেতে থাকে।সত্যি একটু শো’য়া দরকার। যেতে যেতে বলে,,,তুমিও এসব রেখে একটু গিয়ে রেস্ট নেও।সকাল থেকে কাজ করে চলেছো শরীর খারাপ করবে।
আপনি যান।আমিও যাবো।
সন্ধ্যার দিকে দায়ান,রুশ ও মি.এলেক্স তাদের অফিসিয়ালি কথা শুরু করে।৷ ব্যবসায়িক অনেক কিছুই ওরা আলাপ আলোচনা করে।একটা ডি’ল ও সাইন করে দায়ান মি. এলেক্স এর সাথে।
মি. এলেক্স বেরিয়ে যাওয়ার আগে সোহার অনেক প্রশংসা করে।স্পে’শালি রান্নার। সোহা বলেছিলো রাতে খেয়ে যেতে শুনেনি।কি একটা কাজ নাকি আছে। রুশ ও মি.এলেক্স এর সাথেই বেরিয়ে গিয়েছিলো বি’দায় নিয়ে।
——————————————-
ভালো সময় গুলো খুব দ্রুত চলে যায়। বোঝাই যায় না।এর মধ্যে পাঁচ দিন কেটে গেছে।
সোহা আর দায়ানে সম্পর্কের উন্নতি না হলেও অব’নতি হয়নি।দায়ানের হাত এখন কিছুটা ভালো। গতকাল গিয়ে সে’লাই খুলে আনিয়েছে।অবশ্য হাত দিয়ে এখনো কিছু করতে পারবেনা।শুকাতে টাইম লাগবে।সোহাই দায়ানকে খাইয়ে দেয়।
এর মধ্যে সোহা ভার্সিটিতে গেছে দুই দিন। অবশ্য নিজে থেকে না।দায়ান সোহাকে ধ’মকিয়ে ধা’মকিয়ে পাঠিয়েছে।কতো বা’হা’না দিয়েছিলো না যাওয়ার জন্য। দায়ানকে একা রেখে যাবে না।এই হাত দিয়ে কিছু করতে পারবে না সোহা কে ছাড়া।কিছুর প্রয়োজন হলে তখন কে দেখবে? জমেলা খালাও তো নেই যে বলে যাবে।
কিন্তু কে শোনে কার কথা? সোহা জে’দি হলে দায়ান মহা জে’দি।কোনো বাহানা শুনেনি।
শে’ষে দায়ানের সাথে না পেরে গু’ম’ড়া মুখেই গেছে ভার্সিটিতে।যাওয়ার আগে অবশ্য দায়ান কে হাজার খানেক উপদেশ দিয়ে গেছে।
দায়ান ও বলেছে সব মেনে চলবে।
তারপর গিয়েছে।
———————————–
আজ সকাল সকাল সব কাজ সেরে ফেলেছে সোহা।কারণ আজ দায়ানের সাথে শপিং এ যাবে।দায়ানই বলেছে তারাতাড়ি সব কাজ শেষ করার জন্য। সময় বাড়ার সাথে সাথে লোকজনের ভি’ড় ও বাড়তে থাকে।আর দায়ানের এতো ভি’ড় লোকজনের সমা’গম পছন্দ না।তাই সকাল সকাল ই দুইজন বেরিয়ে পরে।
অবশ্য শপিং করার একটা কারণ আছে,,,, আরো দুইদিন আগেই দায়ান জানিয়েছে তাদের বিজনেস ম্যানদের জন্য একটা পার্টির আয়োজন করা হয়েছে।সেখানে ফ্যামিলি সহ উপস্থিত থাকতে হবে।তাই দায়ান যখন যাবে সোহা ও যেনো যায়।একা বাড়িতে রেখে যাবে না।আর জমেলা খালা ও বাড়িতে নেই যে সোহার কাছে রেখে যাবে।তাই সোহাকে যেতেই হবে।
সোহা শুনে খুশিই হয়েছিলো। তারপর আবার মনটা খারাপ হয়ে যায়।আমারতো ভালো কোনো জামা নেই।যা আছে তা পরেতো আর ঐসব পার্টিতে যাওয়া যাবে না।কতো বড় লোক মানুষ যাবে।এসব ড্রেস পরে গেলে মানুষ কি বলবে? সবাই তাকিয়ে থাকবে আর হাসাহাসি করবে।উনার তো মা’ন স’ম্মা’নের একটা ব্যা’পার আছে।এসব ভাবতে ভাবতে সোহা মুখটা কালো করে ফেলে।
দায়ান হয়তো সোহার মনের কথাটা বুঝতে পেরেছে। তাই সোহাকে শপিং করিয়ে দেওয়ার কথা নিজে থেকেই বলেছে।
দুজনেই শপিং কম’প্লে’ক্স এর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরে।আজ আর দায়ান নিজে গাড়ি ড্রা’ই’ভ করেনি।ড্রা’ইভার নিয়ে এসেছে সাথে।হাতটা এখনো একটু একটু ব্যা’থা করে।
কিছু সময়ের মধ্যেই ওরা পৌছে যায়।কারণ বেশি দূরে না। দায়ানের বাসার কিছুটা কাছেই।গাড়ি থেকে দু’জনেই শপিং কম’প্লে’ক্স এর ভিতরে ঢুকে পরে।
সোহা দায়ানের পাশাপাশিই হাটতেছে।এই শপিং কম’প্লে’ক্স এর কথা অনেক শুনেছে।ইউটিউব এ ও দেখেছিলো।কিন্তু সামনা সামনি এই প্রথম।
চারদিকে তাকিয়ে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ করেই কারো সাথে জোড়ে ধা’ক্কা খায়। পরে যেতে যেতে নিজেকে অনেক ক’ষ্টে বাঁ’চি’য়ে নেয়। সামনে তাকিয়ে কিছু বলতে নিবে,,,তার আগেই কোনো মেয়ের ক’ন্ঠে আ’গ’ত বাক্য শুনে স্ত’ব্ধ হয়ে যায়। চোখ দিয়ে স্রো’ত ধারা বয়ে চলে নিরবে।
#চলবে,,,,,,#তুমি_হাতটা_শুধু_ধরো
#পর্ব২৫
#Jhorna_Islam
সোহা যার সাথে ধা’ক্কা খেয়েছে তাকে মাত্রই স’রি বলতে নেয়।কিন্তু তার আগেই মেয়েটি তাকে যা নয় তাই বলেই অপ’মা’ন,করতে লাগলো।
কা’না নাকি চোখে দেখতে পাওনা? ইচ্ছে করতেছে ঠা’টি’য়ে চ/ড় লাগিয়ে দেই।জীবনে মনে হয় এরকম শপিং ম’ল দেখোনি।অবশ্য পোশাকের বে’শ ভূ’ষা দেখেই বোঝা যায় কোনো ক্ষে’ত থেকে উঠে আসছে। মেয়েটির কথায় মেয়েটির সাথে দাঁড়ানো বান্ধবী গুলো শব্দ করে হেসে দেয়।
নিশ্চই শুধু দেখে দেখে চোখ জো’ড়া’তে এসেছো? আহারে তোমাদের মতে লো স্টে’ন’ডা’রে’র মেয়েরা আর কি ইবা করবে।
আমার সাথে ইচ্ছে করেই ধা’ক্কা লাগিয়েছো না সি’ম’প্যা’থি পাবার আশায়। আমার মন টা আবার অনেক বড় চলো চলো আমি তোমায় একটা ড্রে’স কিনে দেই। বলেই মেয়েটা তার বান্ধবীদের দিকে তাকিয়ে আবার হাসতে লাগলো।
কিন্তু হঠাৎ করে কারো কথা শুনে সবার হাসি ব’ন্ধ হয়ে যায়।
তাই নাকি,,,,,, মিস হোয়াট এ’ভা’র তা আপনার এতো বড় মন নিয়ে রাস্তা ঘা’টে চলাচল করেন কি করে সমস্যা হয় না আপনার? আহারে আমি আমার জীবনের প্রথম এতো বড় মনের মেয়ে দেখেছি বুঝলেন।
সোহা এখনো নিরবে চোখের পানি ফেলে চলেছে।এতো অপ’মান সহ্য করতে পারতেছে না।কতোগুলা কথা শুনাইলো মেয়েটা ওর তো কোনো দো’ষ ছিলো না।তাও তো স’রি বলতে চেয়েছিলো।কিন্তু তার আগেই মেয়েটা কথার বা’ণ ছু’ড়’তে লাগলো।
দায়ান এতোসময় সোহার সাথে ছিলোনা।ফোন চা’পতে চা’পতে সামনে এগিয়ে গিয়েছিলো।পরে সাথে সোহাকে না দেখে আবার পিছনে বে’ক করে।পরে শুনতে পায় মেয়েগুলো সোহাকে যা’তা বলে অ’প’মা’ন করছে।আর দায়ান তো চুপ করে থাকার লোক নয়।কি করে যো’গ্য জ’বা’ব দিতে হয় খুব ভালো করেই জানে।
মেয়েটি দায়ান কে দেখে এক দৃ’ষ্টি’তে তাকিয়ে আছে। এটাতো দায়ান শেখ। আব্বুর সাথে অনেক বার দেখেছে ব্যবসায়িক মিটিংয়ে। অবশ্য দায়ান তাকে দেখেনি।সে দেখেই পছন্দ করে ফেলেছিলো।তারপর আব্বুর মুখে দায়ানের প্রশংসা শুনে শুনে আস্তে করে ভালোবাসতে শুরু করেছিলো।আব্বুকে বলে দিয়েছিলো,,বিয়ে করলে দায়ানকেই করবে।আব্বু যেনো যে করেই হোক দায়ান কে তার জন্য এনে দেয়।আব্বু তাকে বলেছে এখন একটা কাজ নিয়ে বি’জি।কাজটা শেষ হলেই এ বিষয়ে দায়ানের সাথে কথা বলবে। মেয়েটির ভা’ব’নার ছে’দ ঘ’টে দায়ানের কথায়।
তা ম্যাডাম ও না হয় কা/না দেখতে পায়নি।আপনি কেনো দেখতে পাননি বলুনতো।আপনার চোখে তো দেখার কথা তাহলে ধা’ক্কা খেলেন কিভাবে?আপনার ওকে চ/ড় মা’রতে ইচ্ছে করতেছে রাইট? বিলিভ মি আমার ও ইচ্ছে করতেছে ঠা/টি/য়ে চ/ড় মা’রতে।কিন্তু আফসোস পারলাম না। মেয়ে মানুষের গা’য়ে আমি খুব সহজে হা’ত তুলি না।আবার লিমিট ক্র’স করলে ছাড়িও না।এতোটা ভালো মানুষ আবার আমি নই।
আর কি যেনো বলছিলেন ওর পোশাকের বেশ’ভূ’ষা দেখেই বোঝা যায় কোনো ক্ষে’ত থেকে উঠে এসেছে রাইট? বাট মিস,,,এখানে আসা প্রতিটা মানুষ ই বুঝতে পারছে কে কোথা থেকে এসেছে।কার ক্লা’স কেমন।ও শা’লী’নতা বজায় রেখে পোশাক পরলে যদি লো স্টে’ন ‘ডার ক্ষে’ত হয় তাহলে তাই ভালো।এট’লিস্ট কেউ তো আর ওর শরীরের দিকে লো’লু’প দৃষ্টিতে তাকাবে না।
আর কি কি যেনো বলছিলেন মিস? ওহ মনে পরেছে,,,, দেখে চোখ জো’ড়া’নোর জন্য এসেছে।কেন ওর কি কিনার ক্ষ’ম’তা নেই নাকি? ও দেখে দেখে চোখ জো’ড়া’তে আসবে কেনো?
এই রকম দু- চারটে শপিং ম’ল কেনার সা’ম’র্থ আছে আমার ম্যাডাম। তাই আমার ওয়াইফ কে চোখ দিয়ে দেখে মন জো’ড়াতে আসতে হবে না।চাইলে পুরো ম’ল টাই কিনে নিতে পারে।
উপরটা দেখে কখনো ভিতরটা বি’চার করবেন না। সবাইতো আর আপনার মতো শো-অফ করে বেরায় না।কিছু কিছু মানুষ অসাধারণ হয়েও সাধারণ থাকতে পছন্দ করে।যেমন আমার ওয়াইফ। বলেই দায়ান সোহাকে কাছে নিয়ে আসে একহাতে কোমড় জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে রাখে।
সোহা ফ্রি’জ’ড হয়ে যায়।দায়ানের দিকে তাকিয়ে রয়।
মেয়েটি দায়ানের বলা আমার ওয়াইফ কথাটা শুনে বড় স’ড়ো একটা ধা’ক্কা খায়।মুহূর্তে এতোদিনে জমিয়ে রাখা আশা গুলো ভে’ঙে চূ’র্ণ বি’চূ’র্ণ হতে থাকে।চোখের কোণে নোনাজল জমতে থাকে।হৃ’দ’য়ে সাজানো সু’প্ত আশা গুলো সব ভা’ঙ’তে থাকে।
দায়ান আবার মেয়েটিকে বলতে শুরু করে,,,,,,এইযে দেখছেন আপনি এতো গুলো কথা বললেন ও কিন্তু একটা শব্দ ও বলেনি আপনাকে।অথচ দোষ কিন্তু ওর ছিলো না।তাও চুপ হয়ে রয়েছে।এটা কিন্তু ওর দূ’র্ব’লতা না এটা ওর পারিবারিক শিক্ষা। আর আপনার ব্যবহারে যে কেউ বলে দিতে পারবে আপনি কেমন শিক্ষাতে মানুষ হয়েছেন।
আর আপনি চাইলে আমার ওয়াইফ আপনাদের সবাইকে শপিং করিয়ে দিতে পারে।আ’নলি’মি’টে’ড অফার আপনার আর আপনার ফ্রে’ন্ড’দের জন্য। যে যা ইচ্ছে হয় কিনবেন বি’ল আমি পে করবো। আমার ওয়াইফ আবার লোকদের দা’ন করতে খুব ভালোবাসে।
দায়ানের কথা তে মেয়েটির বু’কে ছু/ড়ির মতো আ’ঘা’ত করতে লাগে।নিজের প্রিয় মানুষটার মুখ থেকে কেউই এসব ক’টু বাক্য সহ্য করতে পারবেনা।মেয়েটি রা’গে দুঃখে শ’ক্ত করে নিজের জামা হাতের মুঠোয় ধরে রাখে।একেইতো নিজের ভালোবাসার মানুষটা অলরেডি অন্য কারো হয়ে গেছে।তার উপর সেই মানুষটাই তাকে কতো কথা শুনাচ্ছে তার ওয়াইফের জন্য। আবার চোখের সামনে মেয়েটির কো’ম’ড় জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে।মেয়েটির ইচ্ছা করতেছে পুরো ম’লে আ/গুন লাগিয়ে দিতে।সবকিছু ধ্বং’স করে দিতে।পাশের বান্ধবী গুলো হয়তো বুঝতে পারছে মেয়েটির মনের অবস্থা। কারণ তারাও দায়ানকে দেখে অবাক হয়ে গেছে।ওদের বান্ধবী দায়ানকে নিয়ে সারাক্ষণ ই কথা বলে।পিক ও দেখিয়েছে দায়ানের।তাই তাদের চিনতে কোনো অসুবিধা হয়নি।
দায়ান মেয়েটিকে বলে নে’ক্স’ট টাইম কারো সাথে ভালো ব্যাবহার না করেন।খারাপ ব্যাবহার করবেন না।কারো সম্পর্কে কোনো কিছুনা জেনে।বলেই সোহাকে নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।
মেয়েটি এক দৃ’ষ্টি’তে দায়ানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। দায়ানের হাতটা এখনো সোহার কো’মড় জড়িয়ে ধরা।
দোস্ত তুই ঠিক আছিস? চল বাড়ি চল।এখানে থাকা লাগবো না।নিজেকে শ’ক্ত কর। নানান ভাবে শা’ন্তনা দেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে অন্য মেয়ে গুলো। মেয়েটি নিজেকে সামলে নিয়ে বলে আমি ঠিক আছি চল।বলেই ওদের রেখেই মেয়েটি এক প্রকার দৌড়ে বের হয়ে যায় ম’ল থেকে।
দায়ানের দিকে এখনো সোহা তাকিয়ে আছে। এই লোকটা এতো ভালো কেনো? সব সময় সব বি’প’দ থেকে ঠিক র’ক্ষা করে নেয়।আজ মেয়েটিকে কতো গুলো কথা শুনিয়ে দিলো তার জন্য। বাবার প্রতি সোহার ভালেবাসাটা আরো হাজার গু’ণ বেড়ে গেলো।এরকম একটা মানুষ কে নিজের জী’বন স’ঙ্গী করে এনে দেওয়ার জন্য। কি সুন্দর লোকটা তার প্রতিটা অ’প’মানের যো’গ্য জ’বাব দিয়ে এসেছে।
কে বলেছে দায়ান তাকে স্ত্রী হিসাবে মানে না।মুখে হয়তো বলে মানে না।কিন্তু প্রতিটা প’দে প’দে দায়ান উপ’ল’ব্ধি করিয়ে দেয় দায়ানের কথায় ও কাজে যে সোহা তার ওয়াইফ।
দায়ান হয়তো নিজেই জানে না নিজের অজান্তেই সোহাকে কতোটা কাছে টেনে নিয়েছে।কতোটা আপন করে নিয়েছে।আর বেশি দে’রি নেই জামাই জা’ন দেইখেন আপনার আমাকে ভালোবাসতে।আমি সেই দিনের অপেক্ষায় আছি।আমার মন বলছে আর বেশি দিন আমায় অপেক্ষা করতে হবে না।আপনি আমায় পুরোপুরি মেনে নিবেন,,কাছে টেনে নিবেন৷ ভালোবাসবেন খুব ভালোবাসবেন।সোহা মনে মনে কথা গুলো বলে।
এতো সময় মেয়েটির অ’পমানে চোখ দিয়ে পানি পরেছে।এখন দায়ানের কেয়ার দেখে চোখের পানি চিকচিক করছে সোহার।
সোহার ভাবনার মাঝেই দায়ান বলে উঠে,,,,,,,, ইচ্ছে তো করছে ঠা’টিয়ে তোমার গা’লে চ;ড় লাগাই।
এতোসময় কি কথা বলার মে’শিন অফ হয়ে গিয়েছিলো তোমার? কথা বলতে পারো নি? চুপ করে ছিলে কেনো।
মেয়েটি এতো কিনা বলল একটা কথার ও জ’বাব দাও নি কেনো।চোখের পানি ফেলে তুমি মেয়েটিকে আরো বুঝাতে চেয়েছিলা যে তুমি সত্যিই দূ’র্বল।
যেখানে সেখানে চোখের পানি ফেলবানা বলে দিলাম। আরেক দিন যদি কাঁদতে দেখি তাহলে আমি নিজেও জানিনা কি করবো।
নিজের অ’পমানের জ’বাব নিজে করতে শিখো।সব সময় তোমার হয়ে কথা বলার জন্য অন্য কেউ থাকবে না।
আর অন্য সময় তো কথা বলে মাথা খা’রাপ করে দাও।তখন চুপ ছিলে কেনো? আমার একটা কথাও তো ছা/ড় দেও না। তখন কি হ’য়েছিলো বলোতো।গ’লা মি”উ’ট হয়ে গেছিলো?
সোহা দায়ানের কথায় কোনো কথা বলে না।চুপচাপ থাকে।সত্যি বলতে একটু ঘা/বড়ে গিয়েছিলো হঠাৎ করে।
দায়ান আরো কতক্ষন সোহাকে কথা শুনিয়ে তারপর শান্ত হয়।
তারপর দায়ান তাকে অনেকগুলো ড্রেস কিনে দিয়েছে।ড্রেস এর সাথে ম্যাচিং করে হিজাব,,কসমেটিকস,, জোতা,,,আরো নানান প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে দিয়েছে।
শাড়ী গয়না কিনে দিয়েছে। সোহা এতো সব ড্রেস শাড়ী দেখে হা করে তাকিয়ে ছিলো। এই লোকটা এতো গুলো নিতেছে কেন? এগুলো কবে পরে শেষ করবে সে? মনে মনে নিজের কাছেই নিজে জানতে চায়। সামনা সামনি কিছু বলে না।এমনিতেই রে’গে আছে।যদি আরো রে’গে যায় সেই ভ’য়ে।
দায়ানের জন্য ও কয়েকটা ড্রেস ও জোতা কিনে বেরিয়ে আসে ওরা ম’ল থেকে।
———————————————
পরের দিন সকাল সকাল সোহা উঠে নামাজ পড়ে। তারপর রান্না ঘরে গিয়ে দায়ানের জন্য কফি বানায়।
কফি বানিয়ে হাতে কাপটা নিয়ে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। দায়ানের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে ছোটো করে দরজায় একটা টো’কা দেয়।ঐপাশ থেকে কোনো সারা শব্দটা আসে না।আবার ও সোহা টোকা দেয়।নাহ কোনো সারা শব্দ নেই।তাই আস্তে করে দরজার ন’ব টা ঘুরিয়ে দরজাটা খুলে ভিতরে ঢু’কে। জানালা লাগানো ও লাইট অফ দেখে রুমটা আবছা অ’ন্ধ’কার হয়ে আছে।
সকাল সকাল তো এমনিতেই শীত শীত ভা’ব থাকে।তার উপর দায়ানের রুমের এসির পাওয়ার অনেক বেশি দেওয়া।সোহার মৃ’দু কা’পু’নী উঠে গেছে। বিছানায় তাকিয়ে দেখে দায়ান এখনো ঘুমুচ্ছে হাত পা কো’করি’য়ে হয়তো শীত লাগছে।
তাই সোহা কফির কাপটা টেবিলে রেখে এসির রিমোটটা খুঁজে এসি অফ করে দেয়। দায়ানের পাশে গিয়ে পায়ের নিচ থেকে চাদরটার ভা’জ মেলে দায়ানের শরীরে দিয়ে দেয়।
দায়ান ও মনে হয় এটার অপেক্ষাতেই ছিলো।চাদরটা শরীরে জড়িয়ে আরো আরাম করে ঘুমিয়ে পরে।সোহা মৃদু হেসে দেয় দায়ানের কাজে।মাথায় একটু হাত বুলিয়ে বেরিয়ে আসে। আর ডাক দেয়না।ঘুমোচ্ছে ঘুমাক।
————————————-
সোহা বাগানে চলে আসে চারিদিকে তাকিয়ে অবাক,,গাছে ফুল ফুটেছে। চোখে মুখে খুশির ঝিলিক দেখা দেয়।ফুল গুলো হাত দিয়ে ছুয়ে ছুয়ে দেখতে থাকে অনেক সময় নিয়ে।
পরোক্ষনে মনে হয় দায়ান কে খবরটা দিতে হবে। ভেবেই উপরে দৌড় লাগায়।
দায়ান মাত্রই ঘুৃম থেকে উঠে ড্রইং রুমে এসেছে।সোহাও দৌড়ে আসায় দায়ানের সাথে ধা’ক্কা খায়।দায়ান কিছু বোঝে উঠার আগেই নিচে ঠা’স করে পরে যায়।
আহ আমার কো’মড় ভেঙে গেলো।বলেই দায়ান সোহার দিকে রা’গী চোখে তাকায়।
সোহা মে’কি হাসি দিয়ে বলে,,,চিন্তা করবেন না ভেঙে গেলে আমি বিক্রি করে দিবো।শুনবেন আমি কিন্তু ভাঙা জিনিস কেনার জন্য লোকেরা মাইকিং করে না? ঐটা পারি।
” পুরাতন ভাঙা চূ’রা সব বিক্রি করুন ঘর দুয়ার সব পরি’ষ্কা’র করুন।”
পুরাতন ভাঙা চূ’ড়া,টিন ভাঙা,লোহা ভাঙা,বালতি ভাঙা,ডা’ম ভাঙা তা’মা-পি’তল ভাঙা বিক্রি করতে চাইলে চলে আসুন আমাদের মাইকের কাছে।
ওহ থু’ক্কু আমিতো কিনবো না বিক্রি করবো,,তাই আমি বলবো,,,ভাঙা কো’মড় নিতে চাইলে চলে আসুন আমার কাছে।আপনার ভাঙা কো’মড় বিক্রি করে নতুন কো’মড় লাগিয়ে দিবো ওকে???
#চলবে,,,,
বিঃদ্রঃ কেমন হয়েছে জানাবেন।