#এক_মুঠো_কাঁচের_চুরি
#পর্ব_২৪
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu
প্রায় একঘন্টা ধরে পার্কে অপেক্ষা করছে চৈতালি।সকালে না খেয়ে কাউকে কিছু না বলে,বাসা থেকে বেড়িয়েছে।তার ধারনা সে,খালি হাত পায়ে গেলে-ও আবির তাকে ফিরিয়ে দিবে না।বিনাবাক্য গ্রহণ করে নিবে।বাসা থেকে বের হয়ে আসার সময় বলেছিল।
আর কখনো এই বাসায় ফিরবে না।চৈতালি কি জানে না,তাকে আবার এই বাসায় ফিরতে হবে।অবুঝ মনটা যে,বুঝে না।তার বিশ্বাস তার ভালোবাসার মানুষ তাকে কখনো ফিরিয়ে দিবে না।সময়ের সাথে রৌদ্রের তাপ তীব্র হচ্ছে,চৈতালি বিরক্ত হয়ে গাছের আড়ালে গিয়ে বসলো।
বেলা বাজে বারোটা রোকেয়া বেগম এখনো রুম থেকে বের হন নাই।তানহা ডেকেছিল।বলেছেন পরে খাবে।রাগ করে চৈতালিকে ডাকে নাই তানহা।রোকেয়া বেগম আসলে,হয়তো চৈতালিকে ডাকার কথা বলতো।ইফাদ এখনো পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে।তানহা দুপুরের রান্নার জোগার করতে গেল।তানহা কাজ করছিল।একজোড়া হাত এসে,তানহাকে দু’হাতে আবদ্ধ করে ফেললো।আচমকা কারো স্পর্শ পেয়ে,চমকে উঠলো তানহা।ইফাদকে দেখে স্বস্থির নিঃশ্বাস ছাড়লো তানহা।
–আরে কি হচ্ছে টা কি।ছাড়ুন বলছি।
–আগে বলো তুমি আমাকে রেখে চলে এসেছো কেনো?
–রান্না কি আপনার বউ করবে।
–না আমি করে দিব।আমি কিন্তু বেশ ভালো রান্না করতে পারি।তুমি যাও গিয়ে ঘুমিয়ে পড়।আজকে আমি রান্না করবো।
–এই ভরদুপুর বেলা আমি কেনো ঘুমোতে যাব।আমি এখন ঘুমাবো না।
–তুমি এখন না ঘুমালে,আমি’ও রাতে ঘুমোতে দিব না।
–অসভ্য।
–ছেলে মানুষ বউয়ের কাছে অসভ্য হবে না।তাহলে কার কাছে হবে।
–আপনি যাবেন।আমাকে কাজ করতে দিন।টেবিলে খাবার রাখা আছে খেয়ে নিন।সবাই না খেয়ে আছে।
–আম্মু বাহিরে আসে নাই।
–না,ডেকে ছিলাম।বললেন পরে খাবেন।
–আর চৈতালি।
–তার খবর আমি জানি না।
–তুমি সব সময় এত রেগে রেগে কথা বলো কেনো?ভালোবেসে মিষ্টি করে কথা বলতে পারো না।
–ও গো’ প্রাণের স্বামী এই যে,গরম তেল দেখছেন।এখন যদি এখান থেকে না যান,তাহলে পুরোটাই আপনার মাথায় ঢেলে দিব।কি রোমান্টিক তাই না।
–না একদম রোমান্টিক না।আমি দেখিয়ে দিচ্ছি।কোনটা রোমান্টিক।বলেই গভীর ভাবে তানহার গালে অধর ছুঁইয়ে দিলো।তানহা ধাক্কা দিয়ে ইফাদকে সরিয়ে দিল।
–লজ্জা-শরম ভাত দিয়ে খেয়ে ফেলছেন।আম্মা বা চৈতালি আসলে কি মনে করবে।
–কিছু মনে করবে না।আমার আব্বুও আমার আম্মুকে অনেক ভালোবাসতো’।
–আপনি এখানে থেকে যাবেন।একদম বিরক্ত করবে না।
রোকেয়া বেগম রান্না ঘরের দিকে আসছিলেন।তানহার শেষের কথাটা শুনতে পেলেন।ইফাদ কিছু বলতে যাবে।তার আগেই রোকেয়া বেগম বলল।
–কি ইফাদ।মায়ের গলা শুনে মায়ের দিকে তাকালো ইফাদ।নরম সুরে বলল।
–জ্বী আম্মু।
–মেয়েটাকে বিরক্ত করছিস কেনো?
–বিরক্ত করছি না আম্মু।আমার ঔষধ খুঁজে পাচ্ছি না।তাই তানহাকে খুঁজে দিতে বললাম।কিন্তু তানহা খুঁজে দিচ্ছে না।
–তোর ঔষধ প্রতিদিন হারিয়ে যায় তাই না রে।আমার সাথে আয়।আমি তোর ঔষধ খুঁজে দিচ্ছি।তোর বাবাও ঔষধ খুঁজে পেত না।তাই বারবার আমার কাছে আসতো।আর বলত আমি যেনো তার ঔষধ খুঁজে দেই।ইফাদ অসহায় দৃষ্টিতে তানহার দিকে তাকালো।ইফাদের অসহায় মুখখানা দেখে,মুখে হাত দিয়ে হাসছে তানহা।
–চোখের সামনে ঔষধ রেখে ঔষধ খুঁজে পাস না।তাড়াতাড়ি চল খাবার খেয়ে নিবি।চৈতালি উঠেছিল।
–জানিনা আম্মু আমি তো মাত্রই উঠলাম।
–আচ্ছা বাহিরে আয়।আমি দেখছি।রোকেয়া বেগম চৈতালির রুমে উঁকি দিয়ে দেখলেন।চৈতালি তার রুমে নেই।মেয়ে কলেজে গিয়েছে ভেবে ড্রয়িং রুমে ফিরে আসলেন।
দীর্ঘ দুই ঘন্টা অপেক্ষা করার পরে আবির আসলো।চোখ-মুখে বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট।চৈতালির চোখ-মুখে বিষন্নতার ছাপ।চেহারায় মলিনতা বিদ্যমান।করুন দৃষ্টিতে আবিরের দিকে চেয়ে আছে।কি অসহায় সেই চাহনি।দেখলে যে,কারো দয়া হবে।নিরবতা ভেঙে চৈতালি বলল।
–স্যার আমি সবকিছু ছেড়ে আপনার কাছে চলে এসেছি।আমার আর কিছু চাই না।আমার শুধু আপনাকে চাই।প্লিজ আমাকে আপনার সাথে নিয়ে চলুন।সারাজীবন আপনার সাথে থাকতে চাই।
চৈতালির কথা শুনে,আবির চোখ বড় বড় করে তাকালো।অবাক কণ্ঠে বলল।
–কিহ তুমি তোমার পরিবার ছেড়ে,নিজের বাড়িঘর ছেড়ে আমার কাছে চলে এসেছো।তোমাকে না একটা কাগজ দিয়েছিলাম।ওটা কই?
–ওটা আমি বাসায় রেখে আসছি।ভাবির সাথে আমার ঝগড়া হয়েছে।আমি ভাবির সাথে কথা বলছি না।আমরা আজকেই বিয়ে করবো চলুন।
–এই চৈতালি তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে।যে,মেয়ে দু-দিনের একটা ছেলের জন্য তার পরিবার,তার সবকিছু ছেড়ে চলে এসেছে।আমার থেকে ভালো কিছু পেলে আমাকে ছেড়ে দিবে না।তার কোনো নিশ্চয়তা আছে।স্যরি চৈতালী।আমি তোমাকে গ্রহণ করতে পারলাম না।ভদ্র মেয়ের মতো যে,বাসা থেকে এসেছো।আবার ভদ্র মেয়ের মতো নিজের বাসায় ফিরে যাও।সারাজীবন তপস্যা করলে-ও তুমি আমাকে পাবে না।ভালো থাকবে আসছি।
আবিরের কথা শুনে,চৈতালির মনে হলো বিশাল আকাশটা তার মাথায় ভেঙে পড়েছে।চৈতালি কান্না করতে করতে বলল।
–এই স্যার আপনি এসব কি বলছেন।আপনি তো’ বলেছিলেন আপনি আমাকে বিয়ে করবেন।আপনি এসব কি বলছেন।আমি এখন কোথায় যাব।প্লিজ আমার সাথে এমন করবেন না।আপনি যা বলবেন।আমি তাই করবো।আপনার পায়ের নিচে পড়ে থাকবো।আমার সাথে এমন করবেন না।
–তুমি এসব নাটক করে,নিজের পরিবারের মন গলাও।তারা যদি দয়া করে তোমাকে তাদের বাসায় থাকতে দেয়।
প্রিয়া আবিরের বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছিল।আবিরের বাবা-মায়ের জন্য খাবার কেনার জন্য নিচে নামলো।হঠাৎ চোখ যায়।পার্কের ফাঁকা মাঠের বিশাল গাছের নিচে।একটা মেয়ে আবিরের হাত ধরে কিছু একটা বলছে।প্রিয়ার ফুরফুরে মনটা নিমিষেই বিষাক্ত হয়ে উঠলো।হিতাহিতজ্ঞান হারিয়ে রাস্তায় মাঝখানে দিয়ে হাঁটা শুরু করলো।উদ্দেশ্য ছেলে মেয়ে দুটোর কাছে পৌছানো।এক প্রকার দৌড়ে রাস্তা পার হলো।দ্রুত গতিতে হাঁটতে প্রিয়া।
আবির চৈতালির হাত থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছিল।ঠিক সেই সময়ে কষে থাপ্পড় বসে আবিরের গালে,হঠাৎ করে থাপ্পড় পড়ায়।আমি রেগে যায়।আবির মনে করেছে।চৈতালি আবিরকে থাপ্পড় মেরেছে।আবির রাগান্বিত চোখে সামনের দিকে তাকালো।নিমিষেই সব রাগ উবে গেলো।মনে এসে ধরা দিল একরাশ ভয়।চৈতালি বোকার মতো মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে।প্রিয়া আবিরের কলার চেপে ধরে বলল।
–জা*নো*য়া*রে*র বা*চ্চা* তুই নাকি ভালো হয়ে গেছিস।আমি আসলে নাকি তুই আমার মনের মতো হয়ে চলবি।এটা তোর হবার নমুনা।তোকে ভালো হবার সুযোগ দিতে চেয়েছিলাম।আর দিব না।বলেই আবিরের গলা চেপে ধরলো।আবির নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা-ও করছো না।চৈতালি রেগে প্রিয়াকে ধাক্কা দিল।
–আপনার তো’ সাহস কম না।আপনি আমার-ই সামনে আমার প্রিয় মানুষের শরীরের আঘাত করছে।
চৈতালির কোথায় তিক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চৈতালির দিকে তাকালো প্রিয়া।আবিরকে উদ্দেশ্য করে বলল।
–এই মেয়েটা কে রে?আমার সাহস নিয়ে কথা বলছে।ও কি জানে না।প্রিয়া যখন কথা বলে,প্রিয়া ওপরে কেউ কথা বললে,পরিনাম কি হয়।
–চৈতালি তুমি চলে যাও।তুমি একদম প্রিয়ার সাথে বাজে ব্যবহার করবে না।তা-না হলে তোমার জিভ আমি টেনে ছিঁড়ে ফেলবো।
–আপনি আমার সাথে এমন করছেন কেনো?এই মেয়েটা কে?আপনি এই মেয়েটাকে কিছু বলছেন না কেনো?
–আবির তোমার কে হয়?বলল প্রিয়া।
–চৈতালি আমার স্টুডেন্ট হয় প্রিয়া।আমার থেকে কিছু সাজেশন নিতে এসেছিল।কথা শেষ হবার সাথে সাথে আবার আবিরের গালে কষে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো প্রিয়া।
–তোর থেকে জানতে চেয়েছি।তুই এত কৈফিয়ত দিচ্ছিস কেনো?এই মেয়ে বলো আবির তোমার কে হয়।
–আবির স্যারের সাথে আমি রিলেশনে আছি।আজকে আমি আমার বাসা থেকে বের হয়ে আসছি।আবির স্যারের জন্য।এই যে,আমার শরীরে আঘাত চিহ্ন দেখতে পাচ্ছেন।আবির স্যারের জন্য পরিবারের হাতে মার খেয়েছি।এই মানুষটাকে ভালোবেসে যতটা ছোট হয়েছি।দ্বিতীয় কোথায়ও এতটা ছোট হয় নাই।আপনি আমাদের বিষয় আমাদের বুঝে নিতে দিন।
চৈতালির কথায় শব্দ করে হেসে দিল প্রিয়া।
–তোর নতুন প্রেমিকা’কে আমার কথা জানাস নাই।এই মেয়ে,দেখতে শুনতে তুমি মাশাল্লাহ।এত সুন্দর রুপ দিয়েছে আল্লাহ তোমাকে।তা বেছে বেছে পঁচা জিনিসে হাত দাও কেনো?আমি বুঝি না।সুন্দরী মেয়েগুলো ভালো জিনিস রেখে পঁচা জিনিস গুলো কেনো পছন্দ করে।তুমি দু’দিনের একটা বাচ্চা মেয়ে।তোমার কলেজের শিক্ষক উনি।লজ্জা করে না এত বড় মানুষের সাথে রিলেশন করো।আবিরের মাথার চুল টেনে ধরে বলল।
–তুমি একটা বাচ্চা মেয়ে।তুমি কেনো এই বুইড়া বেটার লগে প্রেম করো।এই যে, মাথায় দেখতে পাচ্ছো।চুল গুলো পড়তে শুরু করেছো।কয়টাদিন গেলেই টাক পড়বে মাথায়।এত রেখে টাকলা মাথা পছন্দ হলো।দেশে ছেলের অভাব পড়েছে।
–আবির স্যারকে নিয়ে একদম বাজে কথা বলবেন না।আপনি আগে নিজের চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখুন।আয়নায় কখনো নিজের চেহারা দেখেছেন।বলতে বলতে প্রিয়ার হাত আবিরের মাথা থেকে সরিয়ে দিতে লাগলো।আবির চৈতালিকে ধাক্কা দিয়ে বলল।
–তোর সাহসের আমি তারিফ করছি।তুই কোন অধিকারে আমার আর প্রিয়ার মধ্যে আসিস।প্রিয়াকে নিয়ে আর একটা বাজে কথা বললে,তোর মুখ আমি ভেঙে দিব।
আবিরের সাথে শুনে,চৈতালি একদম থ হয়ে গেল।এটাই কি সেই আবির,যাকে সে পাগলের মতো ভালোবাসতো।যে,আবির তার সব পাগলামি গুলো সহ্য করে নিত।ছোট ছোট আবদার গুলো পূরণ করে দিত।সারাদিন বিয়ে বিয়ে করে মাথা খেত।আজ যখন বিয়ের সময় আসলো।তাহলে এভাবে সরে যাচ্ছে কেনো।পুরো মাথাটা কেমনে ঘুরতে শুরু করলো।প্রিয়া আবার আবিরের গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।
–তুমি ঐ মেয়েটার জন্য আমাকে মারলে।
–তুই মেয়েমানুষের শরীর হাত দিবি কেনো?তোর হাত আমি ভেঙে ফেলি নাই।এটাই তোর ভাগ্য ভালো।
চৈতালি আবিরের হাত ধরে বলল।
–আপনার জন্য আমি সবকিছু ছেড়ে চলে এসেছি।আপনাকে আমাকে গ্রহন করতেই হবে।চলুল আপনি আজকেই আমাকে বিয়ে করবেন।বলেই আবিরকে টানতে লাগলো।প্রিয়া ঝারি দিয়ে চৈতালির হাত সরিয়ে দিল।চৈতালি রেগে বলল।
–আপনি এসে থেকে বাড়াবাড়ি করে যাচ্ছেন।কে হন আপনি আবির স্যারের।কিসের এত ক্ষমতা দেখাচ্ছেন আপনি।
–কেনো তোমার প্রাণের আবির স্যার তোমাকে বলে নাই।আমি তোমার আবির স্যারের কে হই।বউ হই আমি আবিরের।
–প্রমাণ কি?
–তোমার মত অনেক মেয়ে প্রমাণ চাইতে এসেছে।কিন্তু আমি তাদের কাছে নিজেকে প্রমাণ করাটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করিনি।তাই তোমার কাছেও করছি না।বাচ্চা একটা মেয়ে বড় বিপদ হবার আগেই জীবনটা বেঁচে গেছে।লক্ষি মেয়ের মতো বাসায় ফিরে যাও।বলেই আবিরের কলার ধরল।
–সাতদিনের মধ্যে বাংলাদেশে তুই আমাদের বিয়ের আয়োজন করবি।বাংলাদেশের সবাই জানবে আমাদের বিয়ের কথা।তোর বাবা-মাকে জানাবি।এখন এই মুহুর্তে তোর বাসায় নিয়ে গিয়ে সবার সাথে পরিচয় করাবি।বলেই আবিরের কলার ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেলো।
চৈতালি মাটিতে ধপ করে বসে পড়লো।মস্তিষ্কের সবকিছু ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।যার জন্য সবকিছু ছেড়ে দিলাম।আজকে সে,আমাকে ছেড়ে দিল।মাঠের মাঝখানে বসে,চিৎকার করছে চৈতালি।সবাই আড়চোখে তাকিয়ে আছে চৈতালির দিকে।কেউ কেউ এগিয়ে আসলো।কিন্তু ফলাফল শূন্য।
দরজায় কলিং বেল বেজে উঠলো।হাসনা বেগম এসে দরজা খুলে দিলো।আবিরের পাশে একটা মেয়েকে দেখে অবাক হলেন।আবিরকে প্রশ্ন করল।
–বাবা মেয়েটা কে?
–মা ওর নাম প্রিয়া।বিদেশে থাকতে আমরা বিয়ে করেছি।তোমাদের জানানো হয় নাই।প্রিয়া এতদিন বিদেশে ছিল।আজকে দেশে এসেছে।তাই আমরা আমাদের বিয়েটা পারিবারিক ভাবে অনুষ্ঠান করে আবার করতে চাই।প্রিয়া সাথে করে হরেক রকমের খাবার নিয়ে এসেছে।হাসনা বেগমকে সালাম দিয়ে,সেগুলো তার হাতে ধরিয়ে দিল।মেয়ে বেশ পছন্দ হয়েছে হাসনা বেগমের।আবির আর প্রিয়াকে বাসার মধ্যে নিয়ে আসলো।মাহতাব সাহেব,টিভিতে খবর দেখছিলেন।বাহিরের কথা গুলো সবকিছুই শুনতে পাচ্ছিলেন।তবু্ও চুপ রইলেন।আবির এসে বাবাকে-ও একই কথা বললেন।
–মেয়ে যখন তোমার পছন্দ।তখন আমরা কি বলবো।তুমি তো’ আর আমাদের পছন্দ মতো বিয়ে করবে না।
–বাবা বিয়েটা সাতদিনের মধ্যে করতে চাই।আমি চাই না।প্রিয়া আমার জন্য কারো কাছে,কোনো কথা শুনুক।
–তানহাদের বিয়েতে আমন্ত্রণ করতে পারি।নাকি তা-ও পারবো না।মেয়েটার বিয়ে হয়েছে দুই বছরের বেশি।একদিন আসছিল।মুখে কিছু তুলে দিতে পারি নাই।তোমার বিয়ে উপলক্ষে মেয়েটাকে কয়টাদিন এই বাসায় এনে রাখবো।
–আমার কোনো সমস্যা নেই।তুমি তানহার পুরো শশুর বাড়ির লোকজনকে নিমন্ত্রণ করতে পারো।
–আচ্ছা সন্ধ্যার সময় তানহাকে নিয়ে আসতে যাব।আবির সন্মতি জানালো।প্রিয়া মাহতাব সাহেবকে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করল।একটু থেকে বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিলো।
বিধস্ত অবস্থায় রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে চৈতালি।সবাই আড়চোখে চৈতালিকে পরখ করছে।সেদিকে বিন্দু মাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই চৈতালি।শূন্য মাথায় একটা কথা ভেসে আসলো।বাসায় কাউকে কিছু না বলে আসছে।তারমানে ঐ বাসার ফেরার সুযোগ একটা আছে।কোনোকিছু না ভেবে।বাসার উদ্দেশ্য হেঁটে যাচ্ছে চৈতালি।
বাসায় এসে কারো সাথে কোনো কথা না বলে,দৌড়ে নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল।
রোকেয়া বেগম তানহার দিকে তাকালো।তানহা-ও রোকেয়া বেগমের দিকে তাকালো।
চলবে…..
(