তোমায় চেয়েছি পুরোটাই পর্ব -১৫+১৬

#তোমায়_চেয়েছি_পুরোটাই
#পার্টঃ১৫
#জয়ন্ত_কুমার_জয়

এতো জোরে কো*মর চেপে ধরলো যে ব্যাথায় আমার চোখের কয়েকফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।একটু চোখ মেলতেই সামনে যাকে দেখলাম তাকে দেখে দেখে আমি নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছি না।বিষন্ন আমায় এখানে নিয়ে আসলো কেন? মুখ থেকে বিষন্ন নিজের হাত সরিয়ে নিলো।ভয়ে আমি একদম জমে গেছি।কাঁপা কাঁপা স্বরে বললাম

” বি..বিষন্ন, তু..তুই ”

বিষন্ন আমার আরো কাছে চলে এলো।ওর শ রীর আমার শ রীরের সাথে একদম লেগে আছে।এতো কাছে এসেছে যে ওর লম্বা চুলগুলো আমার কপালে এসে স্পর্শ করছে।বিষন্ন চাপা স্বরে বললো

” কেন ওই ছেলেটা ভেবেছিলে? ”

” বিষন্ন কি বলছিস তুই এসব ”

” ঠিকি বলছি,এতো সাহস হয় কি করে অন্য ছেলের সাথে কথা বলার? ”

বিষন্ন তার হাত আমার কো মড়ে আরো শক্ত করে ধরলো।ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠলাম।বিষন্নকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ধাক্কা দিলাম কিন্তু কোনো লাভ হলো না,এতো জোরে ধাক্কা দেওয়াতেও বিন্দুমাত্র সরাতে পারলাম না।বিষন্ন তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো

” খুব ব্যা থা লাগছে তাই না? আমার স্পর্শ খুব ব্যাথা দেয় ? ওই ছেলের স্প র্শ খুব আরাম লাগে তাই না? খুব মজা লাগে? ”

বিষন্নের কথাগুলো যেনো আমার শরীরে কাঁটার মতো বিঁধে যাচ্ছে।কো*মড় থেকে হাত সরিয়ে বিষন্ন সাইডে গিয়ে একটা সিগারেট ধরালো।বিষন্ন কি এখন সিগারেট সাথে নিয়ে ঘুরছে? ওর চোখ দেখে মনে হচ্ছে খুব রেগে আছে।খুব হাসি পাচ্ছে এখন।বেচারা আমায় যেভাবে কষ্ট দিতে চেয়েছিলো এখন নিজেই সেভাবে কষ্ট পাচ্ছে,হাহাহাহা।মিঃ বিষন্ন, কেবল তো শুরু,আরো কতো কি দেখার বাকি আছে।বিষন্ন হাতের সিগারেট ফেলে দিয়ে আবারো কাছে এসে বললো

” ওই ছেলেটা তোমায় কি বলছিলো? ”

” কিচ্ছু না বাদ দাও ”

” জানতে চেয়েছি আমি,”

” বলেছে এই শাড়িটায় আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে ”

” আর তুমি তখন কি বললে? ”

” আমি তেমন কিছু বলিনি,শুধু বলেছি আপনাকেও সুন্দর লাগছে ”

” এই কথা বলেছো? ”

” হ্যা শুধু এইটুকুই বলেছি ”

এতো হাসি পাচ্ছে যে হাসি চেপে রাখা খুব কষ্টের হয়ে যাচ্ছে। বিষন্নের মুখ একদম চুপসে গেছে।হাহাহাহাহা, মুখটা দেখার মতো ছিলো।বিষন্ন আমায় দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বললো

” কেন বলেছো এটা? ”

” কেন বলেছি তোকে বলতে হবে? তুই যখন মেয়েদের সাথে লুতুর পুতুর করিস তখন কি আমি বলেছিলাম কেন এসব করিস? ”

” ওহ মাই গড,,আমারটা আর তোমারটা কি একই হলো নাকি? আমি তো…. ”

” তুই তো কি? বল বল থামলি কেন? ”

” কিছু না,তুমি আর ওই ছেলের সাথে কথা বলবে না ”

” বলবো, একশো বার বলবো।তুইও ওই লাল পরীর সাথে কথা বল যাহ,”

ঘরে থেকে বেড়িয়ে এলাম।আঙ্কেল আন্টির কেক কাটা শেষ।এখন গান হবে।তার আগে একটু ব্রেক দেওয়া হয়েছে।নীলুর সাথে দারিয়ে আছি তখনই সেই ছেলেটা আবারো হাজির।যার সাথে সিঁড়িতে ধাক্কা লেগেছিলো।ছেলেটা সামনে এসে বললো

” হাই,কেমন আছেন ”

ইচ্ছে ছিলো ছেলেটাকে বলি যে আপনি এভাবে গায়ে পরে কথা কেন বলতে এসেছেন? কি ভেবেছেন আমায় পটিয়ে ফেলবেন? লাভ হবে না,এই মিষ্টি একজনার ওপর হালকা পটে আছে।কিন্তু সেটা বলতে পারলাম না।কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে বিষন্ন আমার দিকে তাকাচ্ছে।চোখে চোখ পড়তেই চোখ অন্য দিকে সরিয়ে নিচ্ছে।এখন ছেলেটার সাথে কথা বললে বেচারা আরো রেগে যাবে।উফফ পিচ্চিটাকে রাগাতে এতো ভালোলাগে কেন?। ছেলেটা আবারো বললো

” কিছু ভাবছেন? ”

” নাহ কিছু না,”

” আমি আদি,আপনার নামটা জানতে পারি? ”

” পরী ”

পরী নামটা কেন বললাম? আমার নাম তো পরী না? পরী হলো সেই পিচ্চি মেয়েটার নাম।কেন হুট করে এই নামটা বললাম কে জানে, আচ্ছা আমার কি হচ্ছে? কিসব উদ্ভট উদ্ভট ব্যাবহার করে যাচ্ছি। ছেলেটা বললো

” ওয়াও,অনেক সুন্দর নাম ”

” হুম সুন্দর নাম ”

” আপনাকে এই শাড়িটা খুব মানিয়েছে ”

” ধন্যবাদ ”

” আচ্ছা আপনি কি এই বাড়ির কেউ? ”

” না, আমি এই বাড়ির বড় মেয়ের বেস্টফ্রেন্ড ”

” ও আচ্ছা,”

তখনি ছেলেটার একটা ফোন আসলো।ছেলেটা ইশারায় এক মিনিট সময় চেয়ে সাইডে চলে গেলো।ছেলেটা চলে যেতেই বিষন্নের দিকে তাকালাম।বেচারা কফি হাতে ভ্রু কুঁচকে দারিয়ে আছে।আমি ওকে দেখে একটু মুচকি হাসলাম।

নীলু মাউথপিস হাতে দারিয়ে আছে। তার ওপর স্পোর্টলাইট ফেলানো।চারিদিক অন্ধকার।আমার পাশেই তিশা, তিশার পাশে ঈশা দারিয়ে। নীলু বলছে

” লেডিস এন্ড জেন্টেলম্যান,আজকের পার্টিটা আমার বাবা মায়ের বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে। এবং এই উপলক্ষে বাবা এবং মা একটা ডান্স পারফামেন্স করে দেখাবে।”

সবাই হাত তালি দিচ্ছে। নীলু ছুটে এসে আন্টি আর আঙ্কেলকে স্টেজে নিয়ে গেলো।আন্টি লজ্জায় একদম লাল হয়ে গেছে।আঙ্কেলকে দেখে মনে হচ্ছে তিনি বেশ রোমান্টিক মুডে আছেন।কি সুন্দর আন্টির হাত ধরে এদিক ওদিক হাত দোলাচ্ছে।

আন্টি লজ্জায় আর থাকতে পারলেন না।ওখান থেকে সরে এলেন।নীলুর ওপর আবারো স্পর্ট লাইট পড়লো।নীলু বললো

” এবার আমাদের একটা গান গেয়ে শোনাবে আমার প্রিয় ছোট ভাই বিষন্ন ”

এবারে যেন হাত তালির ধুম পড়ে গেলো।বেশিরভাগ মেয়েরা হাত তালি দিচ্ছে। তাদের দেখে মনে হচ্ছে বিষন্নের গান গাওয়ায় তারা খুব খুশি। আমার সামনেই পাশাপাশি দুইটা মেয়ে দাডিয়ে।একটা মেয়ে অন্যজনকে বললো

” ছেলেটা দেখতে কিন্তু খুব হ*ট,,তাই না? ”

অন্য মেয়েটা বললো ” হুম, আমি তো দেখেই ক্রাশ খেয়েছি,ওর নামটাও কিন্তু ডিফারেন্ট, বিষন্ন ”

” হ্যা,ভাবছি ওকে প্রপোজ করবো ”

” লাভ হবে না,ওর নাকি তানহাকে খুব পছন্দ হয়েছে ”

” তুমি কিভাবে জানো? ”

” তখন দেখলাম ওর বোন,কি যেন নাম,,ওহহ হ্যা নীলু,ওর বোন তানহা কে বললো ওনার ভাই নাকি তাকে পছন্দ করেছে ”

” আমাদের পোড়া কপাল ”

” হ্যা,এখন মনে হচ্ছে ওর মতো ছোট ড্রেস পড়ে আসা উচিৎ ছিলো,তাহলে যদি একটু চোখে পড়ে ”

এটুকু শুনেই আমার কেমন যেন রাগ রাগ লাগলো।ইচ্ছে করছে মেয়ে দুইটাকে ইচ্ছে মতো কথা শুনিয়ে দিই।পার্টিতে এসে ছেলে পছন্দ করবে এটা কেমন কথা? আর এখানে কি আর ছেলে নাই? বিষন্ন কি একাই নাকি? সবাই ওর পেছনে কেন পড়ে আছে?। মেয়েগুলার আজকাল এই সমস্যা,সুন্দর ছেলে দেখলো তো চাঁদ হাতে পেয়ে গেলো।এসব মেয়েদের দিনে রাতে থাপ*ড়ানো দরকার।বিষন্ন গিটার প্লে করে গান গাইছে

দুয়া ভি লাগে না মুঝে,দাওয়া ভি লাগে না মুঝে
জাবছে দিল কো মেরে,তু লাগাহে
নিন্দ রাতো কি মেরি,

গান শেষে সবাই হাত তালি দিলো।বিষন্ন সরে আসতেই কয়েকটা মেয়ে পর কাছে গেলো।কি যেন বলছে,বিষন্নও তাদের কথায় খুব মজা পাচ্ছে বলে মনে হলো।মেয়েগুলি কি যেন বকে হাসছে,তাদের সাথে বিষন্নও হাসছে।কি আজব, এতে হাসির কি আছে?।এখানে থাকতে আর ভালো লাগছে না।তবুও থাকতে হলো।নীলু জোর করে আটকে রাখলো।

রাত বাজে বারোটা।আঙ্কেলের অফিসের সবাই চলে গেছে।তাদের মেহমানরাও চলে গেছে।শুধু থেকে গেছে নীলুর দাদি একাই।তিনি দখল করে আছে নীলুর ঘর।রাতে সবাই একসাথে ডিনার টেবিলে বসে গেছে।নীলু আর আমি ওপর থেকে নামতেই দেখলাম পরী নামের মেয়েটা ওখানে দারিয়ে আছে।মেয়েটার কাছে গিয়ে বললাম

” আরেহ পরী,তুমি কোথায় ছিলে এতোক্ষণ? দেখলাম না যে? ”

পরী মিষ্টি হেসে বললো ” ছাদে ছিলাম, এতো লোক আমার ভাল্লাগেনা ”

” ও আচ্ছা,এখানে দারিয়ে কেন,,চলো খেতে চলো ”

” আমি খাবো না আপা,আপনে যান ”

নীলু বললো ” খাবে না কেন? চলো,এই বাড়িতে লজ্জার কিছু নেই,”

টেবিলে বসলাম।আন্টি সবাইকে খাবার সার্ভ করছে।আমি সার্ভ করতে চাইলে আন্টি জোর করে আমায় বসিয়ে দিলেন।আজকে অনেক ধরনের রান্না হয়েছে। আঙ্কেল পরীকে দেখে বললো

” এই মেয়েটা কে? ”

বিষন্ন ইতস্তত করে বললো ” বাবা ওকে আমি এনেছি ”

আঙ্কেল বিষ্মিত হয়ে বললো ” নিয়ে এসছো মানে?,”

” বাবা ওর নাম পরী।ওর বাবা,মা কেউ নেই,রাস্তায় দেখা হয়েছে।তাই ওকে নিয়ে এসেছি,ও আমাদের বাড়িতে একটু আধটু কাজটাজ করবে আর এখানেই থাকবে ”

” রাস্তায় হাজার হাজার মেয়ে থাকে বিষন্ন। তাই বলে তুমি তাদেরকেও ঘরে আনবে? ”

বিষন্ন চুপ করে রইলো কিছু বললো না।আন্টি বললো

” এভাবে বলছো কেন? বাপ,মা মরা মেয়েটাকে এনেছে ভালোই তো করেছে,মেয়েটা কতো কষ্টে ছিলো,এখন একটু শান্তিতে থাকবে ”

” আমি তো এখানে শান্তিশালা খুলে বসিনি।কোথাকার কোন মেয়ে বাড়িতে এনে হাজির ”

” তুমি এরকম কেন করছো,মেয়েটাকে দেখেছো? কত মিষ্টি চেহারা,”

তখনি কলিংবেল বাজলো।আন্টি রহিমের মা’কে বললো দরজা খুলতে।তিনি দরজা খুলেই বিকট একটা চিৎকার দিয়ে ডাইনিং টেবিলে দৌড়ে এলেন।আন্টি রেগে বললেন

” কি হলো রহিমের মা? এভাবে দৌড়ে আসার কি আছে,? ”

” আ..আফা,পুলিশ ”

” কিহ? পুলিশ? ”

” হ আফা,পুলিশ আইছে ”

আমি বিষন্নের দিকে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকালাম।কাল রাতে ওই মা তাল গুলোট সাথে বিষন্নর মারা মারি হয়েছিলো,এটাতো আমি ভুলেই গিয়লছিলাম, এখন কি হবে? পুলিশ কি বিষন্নকে ধরে নিয়ে যাবে?। ভয়ে আমার সারা শরীর কাঁপছে।বিষন্নকে দেখে তেমন চিন্তিত মনে হচ্ছে না।সে দিব্যি জুসের গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে।

খাওয়া শেষ হওয়া অব্দি থানার ওসি বসে রইলো।খাওয়া শেষে আঙ্কেল ওসির সামনের সোফায় বসলেন।সাথে বিষন্নও বসলো।আমি ওপর থেকে সব দেখছি।ওসি বললো

” স্যার কেমন আছেন, শরীর ভালো? ”

” ভালো না,প্রেসারটা আপ-ডাউন করছে।এতোরাতে কি মনে করে? ”

” স্যার আসলে আপনার ছেলের নামে একটা অভিযোগ আছে ”

আঙ্কেল সহজ ভঙ্গিতে বললেন ” কি অভিযোগ? ”

” উনি গতকাল একজনকে মা*ডার করেছেন।আর দুইজন হসপিটালে,ওদেরও অবস্থা খারাপ ”

চলবে?#তোমায়_চেয়েছি_পুরোটাই
#পার্টঃ১৬
#জয়ন্ত_কুমার_জয়

” উনি গতকাল একজনকে মা*ডার করেছেন।আর দুইজন হসপিটালে,ওদেরও অবস্থা খারাপ ”

আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই বাবা আমায় থামিয়ে দিলেন।সিগারেট ধরালেন।আজকের দিনে বাবা সবরকম নেশা করেন।দেশী থেকে ইংরেজ সব ধরনের নে*শা।সিগারেট হলো ৪র্থ পর্যায়ের নে শা।বাবা সিগা রেটের ধোঁয়া গিলে বললেন

” মা ডার টা কিভাবে করেছে? ”

” স্যার তদন্ত অনুযায়ী প্রথমে ধা রালো কিছু দিয়ে হাত এক কো*পে আলাদা করে ফেলা হয়েছে।তারপর ম দের বো তল দিয়ে পে টে য*খম করা হয়েছে ”

” যে মা*রা গেছে সে মা*তাল ছিলো? ”

” হ্যা স্যার ”

” মা*তাল কয়েকজন মিলে একটা মেয়ের সাথে যদি খারাপ কিছু করে,আর সেটা কেউ বাঁধা দিতে গিয়ে যদি খু ন করে, তাহলে সেটা কি অন্যায়? ”

” আইনের মতে অন্যায় হবে স্যার।বিচারের দায়িত্ব আইনের ”

” আ*ইনে আমার মন কখনো ছিলো না।আমি আ*ইন বিরোধী।মেয়েটার লা*শ যদি কাল সকালে ড্রেনের কাছে পেতেন তাহলে আ*ইনের কিচ্ছু করার থাকতো না, কি থাকতো? ”

” না স্যার ”

বাবার কথায় আমি কিছুটা অবাক হয়ে যাচ্ছি।বাবা কিভাবে জানলেন মিষ্টির ওপর খারাপ কিছু করার ইচ্ছায় ওদের একজনকে আমি মে*রেছি?এটাতো বাবার জানার কথা নয়।বাবা আবারো একটা সিগারেট ধরালেন।গম্ভীর স্বরে বললেন

” অফিসার,এতোরাতে এসেছেন চা খেয়ে যান।কাল সকালে একবার অফিসে আসবেন।আমি ম্যানেজারকে বলে রাখবো ”

” এতোরাতে আর চা খাবো না স্যার,আজকে চলি। ভালো থাকবেন স্যার, আর আপনার যেকোনো সমস্যা হলে আমিতো আছি স্যার, আজ চলি,”

আমার বুঝতে বাকি রইলো না যে বাবা ম্যানেজার কাকুর দ্বারায় অফিসারকে টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিবেন।বাবার ওপর একটু রাগ হলো।কেন তিনি অন্যায়কে প্রশ্রয় দিবেন? তার উচিৎ ছিলো আমায় চ*ড় থা*প্পর দেওয়া,আর কড়া গলায় পুলিশকে বলা যে ” এই কুলা*ঙ্গারকে নিয়ে যান “।কিন্তু বাবা তা কিছুই করলেন না।বাবা হিসেবে তার এই কাজটা কি ঠিক হলো?।এতে আমি আরো বড় বড় অন্যায় করতে পিছুপা হবো না, সেটা কি বাবা বুঝতে পারছেন? হয়তো পারছেন না,পারলে তিনি এতো স্বাভাবিক আচরন করতেন না।বাবা উঠে চলে গেলেন।ওপরের তলায় তাকালাম।দেখলাম মিষ্টি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।আমার মতো সেও নিশ্চই খুব হকচকিয়ে গেছে।

____________

” দাদি,রুমের আলো জ্বালালাম,তোমার কা’পর কি ঠিকঠাক আছে? ”

কথাটা শুনা মাত্রই দাদি অকথ্য ভাষায় গা’লা’গা’লি করতে লাগলেন।সেই গা’লাগা’লির বিষয়বস্তু হলো তার ঘরে ঢুকায় তিনি মহা বিরক্ত হয়েছেন।তিনি কর্কষ গলায় বললেন

” হারা*মজা*দি, খাপর খুইল্লা শুতুম কেন? ”

নীলু হতচকিত হয়ে আমার দিকে তাকালো।দাদির এমন কথায় নীলু আমি দুজনেই মুখে হাত চেপে হাসলাম।দু’জনে ঘরে ঢুকলাম,নীলু ঘরের লাইট অন করলো।চেষ্টা করলাম দাদির দিকে না তাকানোর।সোফা থেকে আমি একটা বালিশ নিলাম।নীলু নিলো দুইটা।নীলুর পেছন পেছন আমি। কেন জানিনা দাদিকে দেখতে ইচ্ছে করছে।দেখবো একবার? নীলু যখন লাইট অফ করছিলো তার এক মুহূর্ত আগে দাদির দিকে তাকালাম।দাদির প*রনে কোনো কা*পর নেই। এটা দেখেই ছুটে পালিয়ে এলাম ঘর থেকে।দাদি চিল্লাতে চিল্লাতে বলছে

” হা*রাম*জাদি কি দেহোস? আইজ কালকার মাইয়াগো লইজ্জা সরম কিচ্চুু নাই।হক্কোল কিচু দেইক্কা ফেলাইলো রে ব*জ্জাত মাইয়াডা ”

কোনোদিকে না তাকিয়েই এক দৌড়ে নীলু আর আমি ছাদে এসে উপস্থিত হলাম।দু’জনই হাসছি।ছাঁদে আমাদের হাসি শুনে ছাদের ওই কোনটায় থেকে একটা মেয়ে কাছে এলো।নীলু বললো

” আরেহ পরী তুমি,”

” হ আপা,”

” এখানে কি করছো?”

” আমি কই থাকবো সেটাই তো জানিনা ”

” তুমি এককাজ করো,আমাদের সাথে ছাঁদেই থাকো,আমরা একসাথে থাকবো ”

” কি বলেন আপা? আপনেরা ছাঁদে ঘুমাইবেন? ”

” আরেহ না,সারারাত আমরা গল্প করবো।আমার দুই বান্ধবী আছে,ওরাও আসবে কিছুক্ষণ পর ”

” আইচ্ছা ”

ছাদে একটা চাঁদর বিছিয়ে তার ওপর আমরা পাঁচজন শু য়ে আছি।পাঁচজন না, চারজন।আমি বসে আছি,এখানে শু তে কেমন যেন লাগছে।এতোক্ষণ নীলু,ঈশা,তিশা মিলে গল্পগুজব করছিলো।পরী চোখ বন্ধ করে শুয়ে ছিলো এতোক্ষণ। এখন সেও ঘুমঘুম চোখ নিয়ে বসে আছে।পরীর সাথে কিছুক্ষণ গল্পগুজব করলে কেমন হয়? ভালোই হয়।

” পরী ”

” বলেন আপা ”

” ঘুমাওনি? এতোক্ষণ তো দেখলাম ঘুমাচ্ছিলে ”

” ঘুমাচ্ছিলাম না আপা,আপনেরা গল্প করছেন,আমি জেগে থাকলে মন খুলে গল্প করতে পারতেন না ”

মেয়েটির কথায় আমি বিস্মিত হয়ে যাচ্ছি।মেয়েটার চিন্তাভাবনা আলাদা।পরীকে বললাম

” আচ্ছা পরী তুমি এতোদিন কোথায় ছিলে? বিষন্নের সাথে দেখা হয়েছে কোথায়? ”

” আপা আমি তো রাস্তায় থাকি,রাস্তাই আমার ঘর”

” মানে? ”

” আপা আমি খারাপ মাই”য়া।রাতে আমাদের মতো মাইয়ারা পরপুরুষের চাহিদা মেটায় ”

পরীর চোখে জল।ওকে দেখে আমারো এখন খারাপ লাগছে।এতো মিষ্টি চেহারার একটা মেয়ের এই অবস্থা কেন হবে?।চোখের জল মুছে পরী বললো

” সেদিন ওই লোকগুলা আপনেরে যে গলিটায় নিয়ে গেছিলো সেই গলিতেই আমি থাকি ”

” পরী শোনো,তুমি এখন থেকে এই বাড়িতেই থাকবে।এই বাড়ির লোকগুলি খুব ভালো মনের।দেখবে তোমার জীবনটাই পাল্টে যাবে।তুমি ঘুমিয়ে পড়ো,আমায় সঙ্গ দিতে হবে না তোমার।চোখ দেখে মনে হচ্ছে তোমার ঘুম পেয়েছে খুব ”

পরী কিছু বললো না।চুপচাপ গিয়ে শুয়ে পড়লো।এখন কেন জানি আমারো খুব ঘুম পাচ্ছে।দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে রইলাম।চোখ কিছুতেই খোলা রাখতে পারছিনা।

ক’পালে কিছু একটার স্পর্শ বুঝতে পারছি। সেই স্পর্শ কখনো ক’পালে কখনো গা’লে নেমে আসছে।চোখ মেলতেই কেউ একজন আমার মুখে হাত রেখে চেপে ধরলো।ফিসফিস করে বললো

” এই আমি বিষন্ন,ভয় পেও না ”

কথাটা বলে বিষন্ন আমার ঠোঁ*টের ওপর থেকে নিজের হাত সরিয়ে নিলো।আমি হকচকিয়ে নীলু,তিশা,ঈশার দিকে তাকালাম।ওরা দিব্যি ঘুমাচ্ছে। বিষন্ন আমার হাত ধরে ছাঁদের এক কোনে নিয়ে গেলো।নিয়ে গিয়ে আমার কো*মড়ে দুই হাত রাখলো।হাত রাখতেই পুরো শরীর কেমন যেন অবশ হয়ে আসছে।আমি হাত সরিয়ে দিতে চাইলাম কিন্তু পারলাম না।বিষন্ন ওর আরো কাছে আমায় টেনে নিলো।ফিসফিস করে বললো

” তোমায় খুব দেখতে ইচ্ছে করছিলো ”

” মানে কি? এতো রাতে তুই এখানে কেন এসেছিস,কেউ দেখলে তো ”

” ধুর,তুমি এতো ভয় কেন করো বলোতো,কেউ দেখবে না ”

” দেখা তো হয়েছে,এখন যা ”

” না যাবো না, তোমায় খুব আদর করতে ইচ্ছে করছে ”

বিষন্নের কথা শুনে আমার মাথা ভনভন করছে।আদর করতে ইচ্ছে করছে মানে কি? কিছুটা চেচিয়ে বললাম

” কিসব বলছিস তুই বিষন্ন,!”

বিষন্ন আমার মুখ চেপে ধরে চাপা স্বরে বললো,”

“আস্তে কথা বলো,কেউ জেগে যাবে,”

” না বলবো না।এক্ষুনি না গেলে আমি চেঁচামিচি শুরু করে দিবো ”

” তুমি চেঁচামিচি আর যাই করো না কেন,আমি আজকে ভয়ঙ্কর কিছু একটা করে ফেলবো ”

বলেই বিষন্ন আমার কপালের চুলগুলি সরিয়ে দিতে লাগলো।বিষন্নের প্রতিটি স্পর্শে আমার শ রীরের ভেতর উথালপাতাল হচ্ছে। বিষন্ন ওর ঠোঁ*ট আমার আরো কাছে আনছে,আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করলাম।এরমধ্যে বিষন্নের একটা হাত কোম*ড় ছাড়িয়ে আমার গালে রেখেছে।আমিও নিজেকে আর সামলাতে পারছি না।উত্তপ্ত শরী রে একটা ছেলের স্পর্শ আমিও আর উপেক্ষা করতে পারছি না।মূহূর্তেই ঠোঁ*টে উষ্ণ একটা ছোঁয়া পেলাম।

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here