#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ৩০
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
সকাল সকাল সাজ্জাদ আদ্রিতার বাসায় এসেছে। উদ্দেশ্য কলেজে যাওয়া৷ সাজ্জাদ শতভাগ নিশ্চিত এই কাজটি নওশিন করেছে। প্রিন্সিপাল স্যারকে ফোন করে বলে দিয়েছে আজকে সবাই যেনো কলেজে থাকে। স্বাধীন আসতে চেয়েছিলো কিন্তু সাজ্জাদ না করে দিয়েছে। খু*নের ব্যাপারটা স্বাধীন দেখছে।
সামিরা আদ্রিতা কোথায় আর কতক্ষণ লাগবে ওর আসতে? ( সাজ্জাদ)
ওকে সেই সকাল থেকে ডাকছি উঠার কোনো নাম নেই। ( সামিরা)
কালকে যেই একটা ধকল গেলো না উঠারই কথা। (সাজ্জাদ)
না আদুরি সব সময় একটু বেশি ঘুমাই। ( সামিরা)
ওহ। ( সাজ্জাদ)
আপনি বসেন আমি নাস্তা তৈরি করছি। ( সামিরা)
কেনো আন্টি কোথায়? ( সাজ্জাদ)
বাবা অফিসে আর আম্মু একটু কাজ ছিলো দাদুর বাসায় গিয়েছে আসতে আসতে দুপুর হয়ে যাবে। ( সামিরা)
ও আচ্ছা। তুমি একটা কাজ করো আগে আদ্রিতাকে উঠাও ঘুম থেকে। ( সাজ্জাদ)
আমার ডাকে ত উঠছে না। আপনি একটু যেয়ে উঠান আমি কাজ গুলো সেরে নেই। ( আদ্রিতা)
ওকে। ( সাজ্জাদ)
কথাটি বলে সাজ্জাদ আদ্রিতার রুমে গেলো। গিয়ে দেখলো একটি বালিশ নিচে পড়ে আছে। আদ্রিতা ও খাটের একদম কিনারে আর একটু হলেই পড়বে।
মেয়েটা আর বড় হলো না। ( সাজ্জাদ মনে মনে কথাটি বললো)
আদ্রিতার বেডের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো।
এই আদ্রিতা উঠো। ( সাজ্জাদ)
না দি আর একটু পর ( আদ্রিতা)
আমি কি তোমার দি নাকি? ( সাজ্জাদ)
হুম দি ( আদ্রিতা)
সাজ্জাদ হাত দিয়ে আদ্রিতার মুখের উপর থেকে চুল সরিয়ে দিলো। হাতের আঙুল ঠোঁটে স্পর্শ করলো। হঠাৎ আদ্রিতা ঘুমের মধ্যেই সাজ্জাদের হাত ধরে। আদ্রিতার এমন কাজে সাজ্জাদ কিছুটা চমকে যায়। পরে বুঝতে পারে ঘুমের মধ্যেই হাত ধরেছে।
দি Love you আদ্রিতার এমন কথা শুনে সাজ্জাদ বিষম খেলো। দ্রুত আদ্রিতার থেকে হাত সরিয়ে নিলো। আদ্রিতা ঘুম ঘুম চোখে দেখলো এটি সামিরা না সাজ্জাদ। সাজ্জাদকে দেখা মাএ সাথে সাথে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়লো। তাড়াতাড়ি দাঁড়াতে গিয়ে খেয়াল করে নি যে আদ্রিতার কাছে এখন ওরনা নেই।
এই আপনি এতো সকালে আমার রুমে কি করেন? ( আদ্রিতা)
মাএ ঘুম থেকে উঠা চুলগুলো এলোমেলো। ওরনা নেই। সব কিছু মিলিয়ে সাজ্জাদকে খুব টানছে আদ্রিতার দিকে।
কি হলো কথা বলছেন না কেনো? ( আদ্রিতা)
আগে নিজেকে ঠিক করো। কথাটি বলে সাজ্জাদ অন্যদিকে ঘুরে দাঁড়ালো। আদ্রিতা কথাটি বুঝতে পেরে খেয়াল করে দেখলো ওর গায়ে ওরনা নেই। দ্রুত ওরনা পড়ে নিলো। তারপর সাজ্জাদের সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললো,
আপনার সাহস ত কম নয় কেনো আমার রুসে এসেছেন? ( আদ্রিতা)
আদ্রিতার কথা শুনে সাজ্জাদ দুষ্টু হাসি দিয়ে বললো,
কেনো আবার তোমার সাথে রোমান্স করতে। কথাটি বলে সাজ্জাদ আদ্রিতার কোমর জড়িয়ে বিছানায় নিজে পড়ে গেলো। সাজ্জাদের উ*পর আদ্রিতা। আদ্রিতা নামার জন্য ছটফট করতে থাকলে সাজ্জাদ আদ্রিতার ঠোঁট স্পর্শ করে দিলো। আর ও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আদ্রিতা ও যেনো স্তব্ধ হয়ে গেলো। শান্ত হয়ে গেলো। কিছুক্ষণ পর সাজ্জাদ আদ্রিতাকে ছেড়ে দিলো।
আরো বলবো নাকি কেনো এসেছি? ( সাজ্জাদ)
বের হোন রুম থেকে ( আদ্রিতা)
যদি বের না হয়? কথাটি বলে সাজ্জাদ আদ্রিতার দিকে এগোতে লাগলো।
আআপনি কি করবেন? ( আদ্রিতা)
হঠাৎ সাজ্জাদ আদ্রিতাকে কোলে তুলে নিলো। আর বললো চলো তোমাকে ফ্রেশ করিয়ে নিয়ে আসি। আচমকা এমন কথায় আদ্রিতা বিষম খেলো।
কথা শুনেই বিষম খেলে তাহলে ফ্রেশ করিয়ে আনলে কি অবস্থা হবে তোমার? ( সাজ্জাদ)
ছাছাড়ুড়ুননন আমাকে। ( আদ্রিতা)
আদ্রিতার ছটফটানি দেখে সাজ্জাদ আদ্রিতাকে কোল থেকে নামিয়ে দিলো। আদ্রিতা দৌঁড়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো। সাজ্জাদ হেসে উঠলো।
সাজ্জাদ নিচে নেমে আসলো।
ভাইয়া আদুরি উঠেছে? ( সামিরা)
হ্যাঁ, আসছে ( সাজ্জাদ)
ওকে ( সামিরা)
কিছুক্ষণ পর আদ্রতা রেডি হয়ে নিচে নেমে আসলো।
দি আমি গেলাম। ( আদ্রিতা)
খেয়ে যা , সাজ্জাদ আপনি ও খেয়ে নিন। ( সামিরা)
সাজ্জাদ আদ্রিতা সামিরা ৩জনই নাস্তা করে নিলো। পরে আদ্রিতা আর সাজ্জাদ বেরিয়ে পড়লো কলেজের উদ্দেশ্য।
ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছে। সাজ্জাদ আর আদ্রিতা পিছনে বসা। আদ্রিতা বাইরে তাকিয়ে আছে।
আদ্রিতা ( সাজ্জাদ)
হুম বলেন। ( আদ্রিতা)
নার্ভাস ফিল করছো? ( সাজ্জাদ)
ওরা যদি আবার আমার সাথে খারাপ কিছু করার চেষ্টা করে? ( আদ্রিতা)
তুমি মনে হয় ভুলে গেছো ওদের খু*ন করা হয়েছে। ( সাজ্জাদ)
আচ্ছা ওদের কে খু*ন করেছে? ( আদ্রিতা)
এখনো ও জানা যায় নি। ( সাজ্জাদ)
আদ্রিতা আর কিছু বললো না। সাজ্জাদ জানে কে খু*ন করেছে কিন্তু আদ্রিতাকে জানানোর প্রয়োজন মনে করে নি।
সাজ্জাদ আদ্রিতার কানের সামনে এসে বললো কোনো ছটফট করবে না। যা করবো চুপচাপ সহ্য করো। কথাটি বলে আদ্রিতাকে আরো কাছে টেনে নিলো এবং জড়িয়ে ধরে বসলো। আদ্রিতা ও বাঁধা দিলো না। চোখ বন্ধ করে সাজ্জাদের গায়ে হেলান দিয়ে শান্তিতে বসলো।
****** কলেজে ******
সাজ্জাদ আর আদ্রিতা কলেজে প্রবেশ করলো। আদ্রিতার চোখ ছলছল করছে কালকে একটুর জন্য হলে ওর সব মান সম্মান নষ্ট হয়ে যেতে। হঠাৎ কেউ দৌড়ে এসে আদ্রিতাকে জড়িয়ে ধরলো।
ঠিকাছিছ তুই জানিস কালকে কতো ভয় পেয়ে গেছিলাম? ( আলো)
হুম ঠিক আছি। ( আদ্রিতা)
আবির আর তানহা ও আসলো।
জানিস কালকে কতো ভয় পেয়ে গেছিলাম। ( তানহা)
হ্যাঁ কালকে কি হয়েছিলো আর তুই চেয়ারে বসে ছিলি ওই রুমে কিভাবে গেলি? ( আবির)
দাঁড়া দাঁড়া সব বলছি তোদের। আদ্রিতা সব খুলে বললো ওদের।
এটা নিশ্চয়ই ওই নওশিনের কাজ। ( আলো)
হ্যাঁ ঠিক বলেছিছ নওশিনই এমন কাজ করতে পারে। (তানহা)
কিন্তু প্রমাণ কি? ( আবির)
সিসিটিভি ফুটেজ ( সাজ্জাদ)
এতোক্ষণ তারা যেন ভুলেই গিয়েছিল সাজ্জাদ ও তাদের সাথে দাঁড়িয়ে আছে।
জ্বি ভাইয়া ঠিক বলেছেন। এখনি যেয়ে চেক করতে হবে। ( আবির)
হুম। (সাজ্জাদ)
এমন সময় আরিয়ান স্যার আসলো।
আদ্রিতা কেমন আছো? ( আরিয়ান)
জ্বি স্যার আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। (আদ্রিতা)
জানিস আদ্রিতা কালকে ত ভয়ে আলো ও জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলো। ( তানহা)
কি তারপর? ( আদ্রিতা)
তুই যেই রুমে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে ছিলি সেই রুমেই আলো জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলো আমরা কিভাবে অন্য রুমে নিয়ে যাবো বুঝতে পারছিলাম না। কিন্তু আরিয়ান স্যার পরে আলোকে কোলে করে অন্য রুমে নিয়ে গেলো। ( তানহা)
কথাটি শুনে আলো আর আরিয়ান দু’জনই লজ্জায় লাল হয়ে গেলো।
কালকের কথা বাদ দেও সবাই কম্পিউটার রুমে চলো ফুটেজ দেখতে হবে। ( আরিয়ান)
আরিয়ানের কথায় সবাই সহমত প্রকাশ করলো। আদ্রিতা, সাজ্জাদ, তানহা,আবির সবাই কম্পিউটার রুমের দিকে এগোলো। আলো দাঁড়িয়ে আছে।
কি হলো তুমি যাবে না? ( আরিয়ান আলোা উদ্দেশ্য কথাটি বললো)
ধন্যবাদ স্যার কালকে সাহায্য করার জন্য। (আলো)
একজন মানুষ হিসেবে অন্য একজনের সাহায্য করেছি শুধু। ( আরিয়ান)
হুম। ( আলো)
যদি রাগ না করো একটা কথা বলবো? ( আরিয়ান)
জ্বি স্যার বলুন। ( আলো)
একটু বেশি চিকন তুমি। বিয়ের পর তোমার বর চাইলে সারাক্ষণ তোমাকে কোলে নিয়ে ঘুরতে পারবে।( আরিয়ান)
আরিয়ান কথাটি বলে চলে গেলো। আলো স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এ কি কথা বলে গেলো আরিয়ান স্যার?
#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ৩১
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
সাজ্জাদ কম্পিউটার রুমে বসে আছে বাকিরা ও আছে। সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে রিজভী ওই রুমে সেই গ্যাস টাইপ জিনিসটা ফেলেছিলো। এখন সবাই সিউর কাজটা যে ওরা করেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই সাজ্জাদের চোয়াল শুক্ত হয়ে আসলো।
আমার আগে থেকেই মনে হয়েছিলো নওশিন যুক্ত আছে। (আলো)
একটা মেয়ে হয়ে কিভাবে একটা মেয়ের এতো বড় ক্ষতি করতে পারে? ছিহহ ( তানহা)
নওশিন কাজটা ঠিক করে নি খুব খারাপ করেছে শাস্তি পেতেই হবে। ( আবির)
অবশ্যই শাস্তি পাবে। যা করেছে ক্ষমার অযোগ্য। ( আরিয়ান)
আদ্রিতা নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
এই আদ্রিতা কিছু বল। (আলো)
আদ্রিতা কিছু বলছে না দেখে সাজ্জাদ আলোকে ইশারায় বললো আদ্রিতাকে এখন যেনো কেউ কিছু জিজ্ঞেস না করে।
সবাই প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে চলো নওশিনের আজকেই শাস্তি দেওয়া হবে। ( আরিয়ান)
আরিয়ানের কথায় সবাই সহমত প্রকাশ করলো। সবাই প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে গেলো।
নওশিন যেই কাজটি করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য। ওকে ও এখনি আমার রুমে আসতে বলো। ( প্রিন্সিপাল স্যার)
তানহা যেয়ে নওশিন রাইসা আর রিজভী ওদের উদ্দেশ্য বললো প্রিন্সিপাল স্যার তোমাদের অফিস রুমে যেতে বলেছে কথাটি বলে তানহা আবার অফিস রুমে চলে গেলো।
এদিকে ~
ফেঁসে গেছি মনে হয়।( রাইসা)
যেভাবেই হোক তাদের বুঝতে দেওয়া যাবে না। ( নওশিন)
আমার ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। ( রিজভী)
একদম নরমাল ভাবে থাকতে হবে। যেনো আমরা এই সম্পর্কে কিছুই জানি না। ( নওশিন)
তারপর নওশিনরা অফিস রুমে গেলো। সাজ্জাদের পাশে আদ্রিতাকে দাঁড়াতে নওশিন রাগ বেড়ে যাচ্ছে।
রিজভী আমি কি তোমার কাছে গিফটের প্যাকেটটি চেয়েছিলাম? ( আরিয়ান)
না স্যার মানে আর কি….. ( রিজভী)
একদম চুপ সত্যি করে বলো আদ্রিতাকে কেনো ওই রুমে পাঠিয়েছো? ( আরিয়ান)
স্যার গিফট এর জন্য… ( রিজভী)
একদম মিথ্যে বলবে না। সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তুমি ওই রুমে গ্যাসের মতো কিছু একটা ফেলেছো। আর একটা মিথ্যে কথা বললে গায়ে হাত পড়বে। বলো কেনো করেছো? ( আরিয়ান)
সিসিটিভির কথা৷ নওশিন রাইসা ভুলেই গিয়েছিলো।
স্যাস্যার নওশিনের কথায় করেছি। ( রিজভী)
না স্যার আমি বলি নি। আমি কিছু জানি না। ( নওশিন)
আর একটা ও কথা না দোষ শিকার করবে নাকি তোমার বাবাকে ডাকবো? ( আরিয়ান)
বাবাকে বড্ড ভয় পায় নওশিন তাই নিজের দোষ শিকার করে নিলো।
আমার ভাবতে ও খারাপ লাগছে এতো জগণ্য একটি কাজ তুমি করতে পারো। ( প্রিন্সিপাল স্যার)
আদ্রিতা তুমি এখন যা বলবে সেই শাস্তি দেওয়া হবে। (আরিয়ান)
আলো নওশিনের উদ্দেশ্য বললো তুই নিজে একটি মেয়ে হয়ে অন্য একটি মেয়ের সাথে এরকম করিছ কি করে?
উপযুক্ত শাস্তি তুমি পাবে। ( প্রিন্সপাল স্যার)
আর রিজভী আর রাইসা ও যেহেতু সাথে ছিলো তারা ও শাস্তি পাবে। ( আরিয়ান)
প্রিন্সিপাল স্যার আরিয়ানের উদ্দেশ্য বললো ওদের বাবাকে এখনি খবর দেও আর আসতে বলো।
আদ্রিতা এতোক্ষণ নিরব দর্শকের৷ মতো সব শনে যাচ্ছিল। আদ্রিতার পাশেই সাজ্জাদ দাঁড়ানো ছিলো। আদ্রিতা নওশিনের সামনে এসে দাঁড়ালো।
ঠাঁ*স করে নওশিনকে একটি চড় মারলো। সাজ্জাদ আদ্রিতার এমন কাজে অবাক হওয়ার পাশাপাশি অনেক খুশি হলো। আলো, তানহা, আবির ওরা ও খুশি হলো। নওশিন যা করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য। তাই আদ্রিতার কাজে প্রিন্সিপাল স্যার কিংবা আরিয়ান কেউ কিছু বললো না।
একটি মেয়ের কাছে সব থেকে সব সম্পদ হচ্ছে তার সম্মান। একটি ছেলে একটি মেয়ের সম্মান নষ্ট করতে পারে। কিন্তু তুমি একটি মেয়ে হয়ে কিভাবে পারলে আমার সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করতে? কিসের এতো রাগ ছিলো আমার উপর যে তুমি এমন করলে? কেনো করলে? আর রাইসা তোমার বান্ধবীর সাহায্য করতে যেয়ে তুমি যা করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য। তোমরা নিজেরা ও মেয়ে একটা মেয়ে আরেকটি মেয়ে সর্বনাশ করতে চেয়েছিলে। মেয়ে হওয়ার যোগ্যতা কি তোমাদের আছে? আর রিজভী শুনেছি তোমার নাকি একটি ছোট বোন আছে। আজ তোমার বোনের সাথে কেউ এইকাজ করতে আসলে কেমন লাগতো তোমার? ( আদ্রিতা)
আদ্রিতা কথাগুলো বলে থামলো গলা ধরে আসছে।
বাদ দে অমানুষদের এইসব কথা বলে লাভ নেই। ( আলো)
উপযুক্ত শাস্তি তোমরা পাবে। ( তানহা)
****** বেশ কিছুক্ষণ পর *******
নওশিনের বাবা এসেছে সব কথা শুনে নওশিনেকে সবার সামনেই চড় মারে। অনেক বকা দিয়ে প্রিন্সিপাল স্যারকে বলে দেয় যেই শাস্তি ওদের দেওয়া হবে তা মেনে নিবে। ওদের যেনো উপযুক্ত শাস্তি যেওয়া হয়। রাইসা আর রিজভীর বাবা ও একই কথা বলেছে। প্রিন্সিপাল স্যার বলেছে কালকে ওদের শাস্তি দেওয়া হবে। আরিয়ান,আবির,সাজ্জাদ আলো, তানহা,আদ্রিতা সবাই অফিস রুম থেকে বের হয়ে আসে।
তোমরা এখন ক্লাসে যাও সবাই। ( আরিয়ান)
আদ্রিতা আজকে ক্লাস করবে না। ১,২ দিন পর থেকে ক্লাসে আসবে। ( সাজ্জাদ)
ওকে ( আরিয়ান)
বাকিরা ক্লাসে চলে যায়। আর সাজ্জাদ আদ্রিতাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।
আসি ক্লাস করবো না এইটা কেনো বললেন? ওদের সাথে কিছু সময় কাটিয়ে আসতাম। ( আদ্রিতা)
আমার সাথে সময় কাটাও। ( সাজ্জাদ)
আপনার সাথে আমি কি করবো। আপনি থাকুন আমি কলেজে গেলাম। ( আদ্রিতা)
আদ্রিতা যেতে নিলে সাজ্জাদ আদ্রতার হাত ধরে ফেলে হাত ধরে চমকে উঠে, তোমার ত জ্বর অনেক বেড়ে গেছে। বাসায় চলো। ( সাজ্জাদ)
আদ্রিতা ও আর কথা বাড়ালো না। কারন শরীর খারাপ লাগছে। সাজ্জাদ আর আদ্রিতা গাড়িতে উঠতে নিবে এমন সময় নওশিন ওরা বের হয়ে আসলো।
সাজ্জাদ যেয়ে নওশিনের সামনে দাঁড়ালো আদ্রিতা ও সাথে আছে।
সাজ্জাদ নওশিনের উদ্দেশ্য বললো, নেক্সট কথনো যদি আমার আদ্রতার আশে পাশে দেখেছি ছেড়ে কথা বলবো না। কথাটি মনে থাকবে?
হুম মনে থাকবে। ( নওশিন)
কথাটি বলে নওশিন ওরা চলে গেলো।
চলুন বাসায় যায়।( আদ্রিতা)
চলো গাড়িতে উঠো। ( সাজ্জাদ)
সাজ্জাদ আর আদ্রিতা গাড়িতে বসে পড়লো। সাজ্জাদ কতক্ষণ পর খেয়াল করলো। আদ্রিতা জ্বরের ঘোরে ঘুমিয়ে পড়েছে। সাজ্জাদ এক হাত দিয়ে আদ্রিতাকে আঁকড়ে ধরলো।
*****
আদ্রিতার বাসার সামনে এসে গাড়িটি থামলো। সাজ্জাদ নেমে আদ্রিতাকে কোলে তুলে নিলো। আদ্রিতার ঘরের ভিতরে ঢুকলো। সামিরা দেখে বললো ভাইয়া আবার কি হয়েছে?
জ্বর বেড়ে গেছে। আমি ওকে ওর রুমে শুয়ে দিয়ে আছছি। কথাটি বলে সাজ্জাদ আদ্রিতাকে নিয়ে উপরে উঠে গেলো।
সাজ্জাদ আদ্রিতাকে খাটে শুইয়ে দিলো। কম্বল টেনে আদ্রিতার উপর দিয়ে দিলো। আদ্রিতার কপালে ভালোবাসার পরশঁ একে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
সামিরার সাথে কিছু কথা বলে চলে গেলো সাজ্জাদ।
********** ১০ দিন পর *********
সময় প্রবাহমান। সেদিনের পর কেটে গেছে ১০ দিন। নওশিন ওদের কলেজ থেকে টি.সি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আদ্রিতা সম্পূর্ণ সুস্থ। কিন্তু এই কয়েকদিনে সাজ্জাদের সাথে খুব কম দেখা বা কথা হয়েছে। আদ্রিতা মাএ কলেজ থেকে এসেছে।
সামিরার বিয়ের মাএ ৭দিন বাকি। এখন থেকেই সব প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। ( আদ্রিতার মা)
কথাটি শুনে আদ্রিতা থমকে গেলো। তাহলে কি ১ সপ্তাহ পর সামিরার সাথে সাজ্জাদের বিয়ে হয়ে যাবে?
#চলবে
[