কথা দিলাম 🌸❤️
||পর্ব ~ ১৪||
@কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা
সিয়ারা আধভিকের থেকে সরে এসে চলে যেতে নেয়। দু পা এগোতেই আধভিক বলে ওঠে….
আধভিক: তাই জন্য তুমি আবার আমাকে একা করে দেবে সিয়ু! মায়ের মতো তুমিও আমাকে ছেড়ে চলে যাবে?
সিয়ারা ভাষা হারিয়ে ফেলে আধভিকের কথা শুনে। সে স্পষ্ট দেখতে পায় আধভিকের চোখে জল। আজকে সকালেই সে বুঝতে পেরেছিলো আধভিকের মনে কষ্ট আছে কিন্তু এতটা গভীরে সেটা, এটার আন্দাজ ছিলো না।
আধভিক: আমি কখনও কাওর সাথে ঠিক ভাবে মিশে উঠতে পারিনি। কারণ আমি পারিনা সবার সাথে মিশতে। আর দেখো, যাদের সাথে আমি মিশতে চাই, যাদের আকড়ে ধরে বাঁচতে চাই তারাই আমাকে ছেড়ে চলে যায়। (তাচ্ছিল্য হেসে) মা কে হারানোর পর থেকে যেই মানুষটাকে সব থেকে পাশে পেতে চেয়েছিলাম তাঁরই আমার জন্য সময় ছিলো না। কাছে টেনে নেওয়ার বদলে দূরে ঠেলে দিয়েছে আমাকে।
সিয়ারা এগিয়ে আসে আধভিকের দিকে। আধভিক মাথা তুলে সিয়ারার দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করে,
আধভিক: সেই থেকে আমার একা পথ চলা শুরু। এতগুলো বছর পর তোমায় প্রথম যেদিন দেখেছিলাম সেদিনই তোমার একটা প্রতিচ্ছবি আমার মনে তৈরী হয়। আমি নিজেও জানি না আমি কেন তোমার দিকে সেদিন তাকিয়ে ছিলাম, তুমি চলে যাওয়ার পরে আমার শুধু তোমাকেই দেখতে ইচ্ছা হচ্ছিলো। আগে কখনও এমনটা হয়নি। পাগলের মতো খুঁজেছি তোমাকে সব জায়গায়।
আধভিক চুপ করে যায়। তাঁর কথাগুলো জড়িয়ে আসছে। সে নীচের দিকে তাকিয়ে থাকলে হঠাৎই নিজের বাহুতে সিয়ারার হাতের স্পর্শ পায়। সিয়ারার দিকে তাকালে সিয়ারা বলে,
সিয়ারা: মিশতে পারেন না কিন্তু এইসব ছাইপাশ কে সঙ্গী ঠিকই বানাতে পারেন।
আধভিক: এইগুলো কখনও ছেড়ে যায়নি আমাকে।
সিয়ারা: আপনার একাকীত্ব কাটাতে কি পেরেছে?
আধভিক: এমন কিছু এক্সিস্টই করে না পৃথিবীতে। আমার জন্য আমার মা ছাড়া না কোনোদিন কেউ ছিল, আর না কোনোদিন থাকবে।
সিয়ারা: (রেগে) তাহলে কেন এসেছেন আমার কাছে? এতক্ষণ এইসব কেন বললেন?
আধভিক: তু..তুমিই তো বললে আমাকে চলে যেতে। আর ফিরে আসতে না তোমার কাছে। (বাচ্চাদের মত করে)
আধভিককে বাচ্চাদের মত ভয় পেতে দেখে সিয়া রার হাসি পেলেও সে হাসলো না। রাগী কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
সিয়ারা: অমনি আমার দোষ তাই না? আপনিই তো আমাকে বললেন যে আমি আপনার প্রায়োরিটি পাওয়ার যোগ্য নই।
আধভিক: আমি বলতে চাইনি বিশ্বাস করো। তোমার কথাগুলো শুনে মাথা ঠিক রাখতে পারিনি। অনেক চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু…
সিয়ারা: থাক! হয়েছে। আগে বলুন, এই অবস্থায় আপনি গাড়ি কেন চালাচ্ছেন? ড্রাইভারের অভাব হয়েছে আপনার?
আধভিক: (মুচকি হেসে) আমি নিজের গাড়ি নিজেই ড্রাইভ করতে পছন্দ করি।
সিয়ারা: সেই। তারপর কোনো দুর্ঘটনা ঘটে গেলে? কতোটা নেশায় রয়েছেন আপনি জানেন?
আধভিক: এইসব আমার রোজকার সিডিউল সিয়ু। বরং অন্যদিনের তুলনায় আজকে একটু বেশিই খেয়েছি। কিন্তু তারপরে তোমাকে এভাবে দেখে সব নেশা কেটে যাচ্ছে কেমন জানো। (সিয়ারার গালে আঙুল রেখে)
আধভিক হঠাৎ করে এভাবে কাছে চলে আসবে এটা বুঝতে পারেনি সিয়ারা। বুকের ধুকপুকানি এতোটাই বেড়ে গেছে যার ফলে সিয়ারার মনে হচ্ছে ওর হার্টটা বোধহয় এক্ষুনি বাইরে বেরিয়ে আসবে।
সিয়ারা: আপনি আমার বাড়ি চিনলেন কীভাবে?
আধভিক: যেখানে তোমার নাম না জেনে, ছবি না থাকা সত্বেও তোমাকে খুঁজে পেয়ে গেছি সেখানে তোমার ঠিকানা পাওয়াটা আমার কাছে বড়ো বিষয় না। এইবার তো তোমার ঠিকানা আমার মাঝে হবে, এখানে।
আধভিক হাত দিয়ে বাম পাশের বুকে রেখে ইশারা করলে সিয়ারা লাজুক হেসে মাথা নামিয়ে নেয়। তৎক্ষণাৎ নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,
সিয়ারা: এতটাও সোজা না মিস্টার আর সি কোলা। আমি এতো সহজে আপনাকে একসেপ্ট করবো ভাবলেন কীভাবে?
আধভিক: তা..তাহলে? (কাচুমাচু করে)
সিয়ারা: আপনাকে এখনও অনেক পরীক্ষা দিতে হবে। পাশ করলে তবেই আমাকে পাবেন নাহলে…
আধভিক: নাহলে আমার মুখ তুমি কখনও দেখতে পাবে না। কথা দিলাম!
সিয়ারা: বড্ড আজে বাজে কথা বলেন আপনি। আপনাকে দেখতে না পেলে শাস্তি দেব কীভাবে হ্যাঁ? পরীক্ষায় পাশ না করলে শাস্তি পেতে হবে। এতো ভালো ভালো কথা বলে পরীক্ষায় পাশ না করলে শাস্তি দেবো না ভাবছেন? দিন এবার হাতটা দিন।
আধভিকের হাতটা নিয়ে সিয়ারা কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে ওর হাতের দিকে। এখন ঘরে গিয়ে ফার্স্ট এইড বক্স বার করতে গেলে সময় লাগবে। তাই নিজের ওড়নাটা ছিড়ে, আধভিকের হাতে বেঁধে দিলো।
সিয়ারা: দয়া করে এবার এক হাত দিয়ে ড্রাইভ করবেন না আর বাড়ি গিয়ে ড্রেসিং করে নেবেন মনে করে। নিন, এবার যান। কেউ দেখতে পেলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।
আধভিক বাধ্য ছেলের মতো কথা শুনে গাড়িতে বসতে নিলে সিয়ারা বলে ওঠে,
সিয়ারা: আপনার নাম্বারটা দেবেন?
আধভিক অবাক চোখে সিয়ারার দিকে ফিরলে সিয়ারা একটু ইতস্তত বোধ করে। কেন জানো ওর মন চাইছে না আধভিককে কোনরকম অজুহাত দিতে। আবার সত্যিটা বলতেও ওর লজ্জা লাগছে।
আধভিক: তোমার নাম্বারে কল করো। (নিজের ফোনটা এগিয়ে)
সিয়ারা কিছু না বলে চুপচাপ নিজের নাম্বার ডায়াল করে কল করে। একবার রিং করেই ছেড়ে দেয়। আধভিককে ফোনটা ফেরত দিতে গিয়ে আধভিকের চাহুনি দেখে চোখ নামিয়ে নেয় আর বলে,
সিয়ারা: যান এবার। সাবধানে যাবেন। পৌঁছে টেক্সট করবেন।
আধভিক: এইটাই তো চাইছিলাম আমি সিয়ু!
আধভিকের মুখ থেকে নিজের নামটা নতুন রূপে শুনে বেশ ভালোই লাগছে সিয়ারার। সেই ভালো লাগা নিজের মনে মধ্যে চেপে রেখেই আধভিককে সে জোর করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। আধভিক বেরিয়ে গেলে চারপাশটা একবার দেখে দৌঁড়ে নিজের ঘরে গিয়ে বালিশে মুখ গুঁজে ফেলে সিয়ারা। কানে বাজছে, ওর জন্য আধভিকের অনুভূতির বিশ্লেষণ।
সিয়ারা: আজ যেই ঘটনাটা ঘটেছে, তাতেই তুমি পাশ করে গেছো আধভিক। আমি তোমাকে কথাটা বললাম কারণ আমি তোমার বিষয়ে সম্পূর্ণ জানতে চাই, তোমাকে পুরোপুরি চিনতে চাই। সম্পর্কে যাওয়ার পর জানতে গেলে তুমি কষ্ট পাবে। আমি তোমাকে আর কোনো কষ্ট দিতে চাই না। তোমার কষ্টগুলো জেনে, ভাগ নিতে চাই সেই কষ্টের।
সিয়ারার মনটা ভালো হয়ে যাওয়ায় সিয়ারা কাগজ পেন্সিল নিয়ে ড্র করা শুরু করে। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ মেসেজের নোটিফিকেশন আসলে দেখে আধভিক এসএমএস করেছে, সে বাড়ি পৌঁছে গেছে। আধভিককে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পরতে বলে সিয়ারা নিজের ড্রয়িং কমপ্লিট করে নেয় তারপর গিয়ে শুয়ে পরে।
পরেরদিন,
সিয়ারা এনজিও তে বাচ্চাদের টাস্ক দিয়ে ফোন হাতে নিয়ে বসে আছে। ভাবছে আধভিককে কল করবে কি না। সেই যে রাতে মেসেজ করেছিলো তারপর “হম” বলার পর আর কোনো মেসেজ আসেনি আধভিকের তরফ থেকে। সিয়ারা সকালে একবার হাতের খোঁজ নিয়ে মেসেজ করার পরেও কোনো রিপ্লাই আসেনি। তাই সে ভাবছে কল করাটা ঠিক হবে কি না। সেই সময় হঠাৎ করে একটা বাচ্চা বলে ওঠে,
“দিদি দেখো আগের দিন যে দাদাটা এসেছিলো সেই দাদাটা এসেছে।”
সিয়ারা সামনে তাকাতেই দেখে আধভিক দাঁড়িয়ে আছে ওর দিকে তাকিয়ে। আস্তে আস্তে ওর দিকে এগিয়ে এসে বলে,
আধভিক: আমাকে মিস করছিলেন নাকি ম্যাডাম?
সিয়ারা: আপনাকে আমি কেন মিস করতে যাবো? এমন, এমন কিছুই না। (অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে)
সিয়ারা অন্যদিকে ফিরে ঠোঁট চেপে নিজের হাসি আড়াল করলো। আধভিক ওর সামনে এসে দাঁড়ালে ও স্বাভাবিক হয়ে বলে,
সিয়ারা: আজকে আমি ওদের পড়িয়ে তবেই বেড়াবো।
আধভিক: হ্যাঁ, তো আমি কখন বললাম তুমি আমার সাথে বেড়াবে? (মুচকি হেসে)
সিয়ারা: (মনে মনে জিভ কেটে — উফ সিয়া তুইও না। উত্তেজনার বশে কি যে বলে ফেলিস।) আমি কখন বললাম আপনার সাথে বেড়াবো। আমি তো আমার বাড়ি যাওয়ার জন্য বেড়ানোর কথা বলছিলাম।
আধভিক: তাই বুঝি?
সিয়ারা: হ্যাঁ তাই! (জোর দিয়ে) উফ! যান তো। কাজ আছে আমার।
কোনো মতে আধভিককে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যায় সিয়ারা। আধভিক সবটা বুঝেও চুপটি করে থাকে। সিয়ারার পড়ানো হয় গেলে সে সিয়ারাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যায় কিন্তু সিয়ারার তা পছন্দ নয়, যা আধভিক জানতো। কিন্তু অনেকবার জিজ্ঞেস করার পরেও যখন সিয়ারা নিজের পছন্দের জায়গার নাম বললো না তখন আধভিক এই কায়দা বার করলো। আধভিকের প্ল্যান সফল হলে সিয়ারা আধভিককে নিয়ে চলে যায় বাগবাজার ঘাটে। সেখান সময় কাটিয়ে সিয়ারাকে বাড়ির কাছে ছেড়ে দিয়ে নিজে বাড়ি ফিরে আসে।
এক মাস পর,
এই এক মাসে সিয়ারা আর আধভিক একে অপরকে জেনেছে, চিনেছে। আধভিক যা বুঝতো না তা বুঝতে শিখেছে আর সিয়ারা আধবিকের সাথে, আধভিকের জীবনের সাথে একটু একটু করে জড়িয়ে পরেছে। এরই মাঝে একদিন হঠাৎ করেই সিয়ারার এনজিও তে আধভিকের বাবা আভাস বাবু এসে উপস্থিত হন।
সিয়ারা: স্যার আপনি? আপনি এখানে?
আভাস বাবু: হ্যাঁ। তোমার সাথে কিছু জরুরী কথা ছিলো। তোমার কি এখন সময় হবে?
সিয়ারা ঘাবড়ে গেলো আভাস বাবুর গম্ভীর গলায় স্বর শুনে। ভয় পেতে শুরু করলো ও এই ভেবে যে, হয়তো ওর আর আধভিকের সম্পর্ক নিয়ে কিছু বলবেন। হয়তো কি? উনি সেটাই বলতে এসেছেন নাহলে আর কিবা দরকার থাকতে পারে ওর সাথে আভাস বাবুর। তাহলে কি, তাহলে কি উনি আধভিকের থেকে দূরে সরে যেতে বলবে ওকে?
সিয়ারা: হ্যাঁ। আসুন আমার সাথে।
সিয়ারা বাচ্চাদের একটা ঘরে নিয়ে গিয়ে বসালেন আভাস বাবুকে। জলের গ্লাসটা ওনার হাতে দেওয়ার পর আঙুল কচলাতে শুরু করলো সিয়ারা। আভাস বাবু এক ঢোঁক জল গিলে নিয়ে বললেন,
আভাস বাবু: এতো ভয় পাওয়ার কিছু হয়নি সিয়া মা। আমি তোমার কাছে কিছু চাইতে এসেছি।
সিয়ারা: আ..আমি আপনাকে কি দিতে পারি? আপনাকে কিছু দেওয়ার মতো সামর্থ্য যে আমার নেই।
আভাস বাবু: নেই কি বলছো? তুমি যে আমাকে দিয়ে ফেলেছো।
সিয়ারা: ম..মানে? আমি বুঝতে পারছি না আপনার কথা।
আভাস বাবু: (কিঞ্চিৎ হেসে) তুমি আমাকে আমার ছেলে ফিরিয়ে দিয়েছো। আমার ভিকিকে ফিরিয়ে দিয়েছো।
সিয়ারা অবাক হয়ে যায় আভাস বাবুর কথা শুনে। ও ভেবেছিলো কি আর আভাস বাবু বললেন কি।
আভাস বাবু: বিশ্বাস করো, এর আগে আমি ওকে এতটা খুশি দেখিনি। যেদিন থেকে তুমি এসেছো সেদিন থেকে আমার ছেলেটার মুখে সবসময় হাসি লেগেই রয়েছে। আজ অবধি যেই কাজের ধারে কাছেও যায়নি সেই কাজ ও করছে। আবার যা ওর নিত্যদিনের অভ্যেস ছিলো। হাজার বলেও যা আমি ছাড়াতে পারিনি সেটা তুমি করে দেখিয়েছো। তুমি বুঝতে পারছো নিশ্চয় আমি কি বলছি?
সিয়ারা হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়তেই আভাস বাবু হাসি মুখে উঠে দাঁড়ালেন। সিয়ারার দিকে এগিয়ে গিয়ে ওর মাথায় হাত রেখে হাসিমুখে বললেন,
আভাস বাবু: ও যে এভাবে কখনও বদলে যাবে তার ধারণা আমার ছিলো না, বলতে পারো কল্পনা করিনি কখনও। তোমার কাছে আমার একটাই অনুরোধ, তুমি ওকে ছেড়ে যেও না কখনও। তাহলে হয়তো ও আবার আগের মত হয়ে যাবে, একা। আমার ছেলেটা বড়ো একাচোরা। এতদিনে তুমি বুঝে গেছো ওকে ভালো ভাবে তা আমি জানি। তাই তোমাকে আজকে বলতে এসেছি, ভেবোনা আমি তোমাকে জোর করছি।
সিয়ারা হাসিমুখে কিছু বলতে যাবে তার আগেই দরজার কাছ থেকে প্রশ্ন আসে,
আধভিক: তুমি এখানে কি করছ ড্যাড? (সন্দিহান দৃষ্টিতে)
[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে🥀]কথা দিলাম 🌸❤️
||পর্ব ~ ১৫||
@কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা
সিয়ারা হাসিমুখে কিছু বলতে যাবে তার আগেই দরজার কাছ থেকে প্রশ্ন আসে,
আধভিক: তুমি এখানে কি করছ ড্যাড? (সন্দিহান দৃষ্টিতে)
আভাস বাবু আধভিককে দেখে কিছুটা ঘাবড়ে যান। আমতা আমতা করে বলেন,
আভাস বাবু: আমি দিয়ারাকে নিয়ে কথা বলতে এসেছিলাম। দিয়ারা সত্যি খুব ভালো কাজ করছে। আমি তো জানি না সিয়ারার ফোন নাম্বার বা বাড়ির অ্যাড্রেস তাই এখানেই এলাম।
সিয়ারা: এমনি দেখা করতে আসলেই বা ক্ষতি কি?
আধভিক: কিছু না।
আধভিক ওখান থেকে বেরিয়ে গেলে সিয়ারা আধবিকের পিছনে যেতে নেয় কিন্তু আভাস বাবু তাতে বাঁধা দেন। সিয়ারা ওনার দিকে তাকালে আভাস বাবু বলেন,
আভাস বাবু: এই নিয়ে কোনো কথা জিজ্ঞেস করো না তুমি ওকে। উত্তর পাবে না এখন। অডিশনের দিন প্রথম যখন তোমাকে আমি ভালো ভাবে দেখেছিলাম তখনই বুঝেছিলাম আমার ছেলের রিল লাইফ আর রিয়েল লাইফ দুটোরই নায়িকা তুমি। তোমাকে ছাড়া ও অন্য কাওকে গ্রহণ করবে বলে মনে হয় না। আজ পর্যন্ত কোনো মেয়ে ওর জীবনে আসেনি এর আগে। ওর সাথে থেকে বুঝেছো নিশ্চয় ও সবার সাথে মিশে যেতে পারে না, যার সাথে মিশতে পারে তাঁকেই আকড়ে ধরে?
সিয়ারা: বুঝেছি আর সেটা অনেক আগেই। (মাথা নীচু করে)
আভাস বাবু: (হালকা হেসে) ধীরে ধীরে সবটা জেনে যাবে তুমি ওর বিষয়ে। সময় আসলে নিজেই তোমাকে জানাবে, তখন যেন এই বুড়ো মানুষটাকে ভুলে যেও না।
আভাস বাবু চলে গেলে সিয়ারা তাঁকে এগিয়ে দিতে যায়। ফিরে এসেই আধভিকের কাছে চলে যায় ও। গিয়ে দেখে সে গাড়িতে হেলান দিয়ে সিগারেট খাচ্ছে। বেশ মাথা গরম হয় এতে সিয়ারার। বারণ করার পরেও আধভিক ওর সামনে সিগারেট খাচ্ছে তার মানে নিশ্চই ওর অগোচরেও এসব চলে।
সিয়ারা: আপনি আমাকে কথা…
আধভিক: ড্যাড কি বলেছে তোমাকে?
সিয়ারা চুপ করে যায় আধভিকের মুখের দিকে তাকিয়ে। এই একমাসে আধভিককে এতটা সিরিয়াস হতে সে দেখেনি যতটা আজ দেখছে। চোখগুলো কেমন জানো লাল হয়ে গেছে। নীচে একটু চোখ নামাতেই দেখলো সিগারেটের দু-তিনটে ফিল্টার পরে আছে। আভাস বাবুকে এগিয়ে দেওয়ার পর পাঁচ মিনিট সময় লেগেছে ওর হয়তো এখানে আসতে। এর মধ্যে তিনটে সিগারেট টেনে ফেললো? আরেকটা ও শেষের পথে। ব্যাপারটা যতটা সহজ ভেবেছিলো এখন মনে হচ্ছে ততটাই জটিল।
সিয়ারা: আরে কোথায় যাচ্ছেন আপনি?
সিয়ারার উত্তর না পেয়ে আধভিক গাড়িতে উঠতে নেয়। এক কথা দুবার জিজ্ঞেস করে না আধভিক কখনও তাই সিয়ারার প্রশ্নে আধভিক ওর দিকে তাকালে সিয়ারা বলে,
সিয়ারা: উনি আমাকে দিয়ার ব্যাপারেই বলতে এসেছিলেন।
আধভিক সিয়ারার কথাটা শুনে এক তাঁর সিগারেটটা শেষ করে নীচে ফেলে পা দিয়ে পিষে ফেলে। ওটা দেখে সিয়ারা ভয়ে ভয়ে আধ ভিকের দিকে তাকালে আধভিকও মাথা তুলে ওর দিকে তাকায়। সিয়ারা একটা ঢোঁক গিলে বলে,
সিয়ারা: উনি বললেন, বললেন যে …
আধভিক: আমাকে ছেড়ে চলে যেতে তাই তো? আর তুমি কি ঠিক করেছো? সেটাই অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে তাই তো? এমনিতেই তো তোমার আমাকে পছন্দ নয়, অবভিয়াসলি তুমি সেটাই করবে। বাট তোমাকে কিছু করতে আমি দেবো না, যা করার আমি করবো এবার।
আধভিক সোজা হয়ে দাঁড়াতেই সিয়ারা বলে উঠলো,
সিয়ারা: ঠিক উল্টোটা বলেছেন উনি।
আধভিক: হোয়াট?
সিয়ারা: হ্যাঁ। উনি বললেন যে আমি যেন আপনাকে কখনও.. কখনও ছেড়ে না যাই। আজ পর্যন্ত কোনো মেয়ে আপনার জীবনে আসেনি এর আগে কারণ আপনি সবার সাথে মিশতে পারেন না, যার সাথে মেশেন তাঁকে আকড়ে ধরে বাঁচতে চান।
আধভিক: ড্যাড এসব বলেছে? (হতবাক হয়ে)
সিয়ারা: কেন বলবেন না? বাবা-মা কখনও সন্তানের খারাপ চায় না। আপনারা বলা কথাগুলো বলা মানে আপনার খারাপ চাওয়া, এটা জেনেও উনি ওসব কেন বলবেন?
আধভিক প্রতি উত্তরে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে হঠাৎ করেই সিয়ারার দিকে ঝুঁকে ওর কানের কাছে বলে,
আধভিক: যাক, তুমি তাহলে বুঝলে আমার ভালো কিসে।
আধভিক সোজা হয়ে সিয়ারাকে চোখ টিপ দিতেই সিয়ারা অপ্রস্তুত হয়ে পরে। আমতা আমতা করে কিছু বলবে তার আগেই কেউ পিছন থেকে সিয়ারার নাম ধরে ডাকে। সিয়ারা পিছন ঘুরতেই দেখে ওর স্কুলের বন্ধু সূর্য।
সিয়ারা: (মনে মনে– এই রে কাম সেরেছে। এই চিপকু, নারদটা কোথা থেকে এলো? এইবার যদি এ গিয়ে বাড়িতে বলে দেয় তাহলেই হয়ে গেলো।) তু..তুই? আরে…
সূর্য এসে হঠাৎ করেই সিয়ারাকে জড়িয়ে ধরে। ওর কর্ম কাণ্ডে সিয়ারা অবাক। তাড়াতাড়ি ওর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বেশ রাগী সুরে বলে,
সিয়ারা: কি হচ্ছে টা কি সূর্য? এইসব কি? রাস্তার মধ্যে…
সূর্য: সব কিছু পরে আগে তুই চল আমার সাথে।
সূর্য সিয়ারার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে শুরু করলে সিয়ারা আধভিকের দিকে পিছন ফিরে তাকায়। সাথে সাথেই আত্মা শুকিয়ে যায় সিয়ারার।
সিয়ারা: (হাত ছাড়িয়ে নিয়ে) কি হয়েছে টা কি? এভাবে কেন নিয়ে এলি তুই আমায়?
সূর্য: আমি চাকরী পেয়ে গেছি সিয়া, ভাবতে পারছিস তুই?
সিয়ারা: তো এটা এভাবে টেনে এনে বলার কি ছিলো? তুই ওখানেই আমাকে বলতে পারতি। আর ওভাবে হুট করে জড়িয়ে ধরলি কেন? এমন কখনও করবি না আমার পছন্দ না এসব।
সূর্য: আমি ভাবলাম তুই খুশি হবি কথাটা শুনে। বুঝতে পারিনি তোর খারাপ লাগবে আসলে অনেক একসাইটেড ছিলাম তো তাই ভুল হয়ে গেছে। সরি। (মাথা নীচু করে)
সিয়ারা বুঝতে পারে ওর কথায় সূর্যের খারাপ লেগেছে। অনেক কষ্টের পর সে চাকরি পেয়েছে এটা সত্যিই খুশির খবর। তাই সিয়ারা জোর করে মুখে হাসি এনে সূর্যের বাহুতে হাত রেখে বলে,
সিয়ারা: কংগ্র্যাটস সূর্য। আসলে আমি ওভাবে রিয়্যাক্ট করতে চাইনি, সাডেন হয়েছে তো তাই রিয়্যাক্ট করে ফেলেছি। এনজয় ইউর ডে আর ট্রিটটা কবে পাচ্ছি?
সূর্য: খুব তাড়াতাড়ি। (হাসিমুখে)
সিয়ারা: আমার একটু কাজ আছে, আমি আসছি হ্যাঁ?
সিয়ারা ছোট জলদি সরে এসে আড়ালে দাঁড়িয়ে সূর্যের চলে যাওয়ার অপেক্ষা করতে থাকে। সূর্য চলে গেলে সে ছুটে আধভিকের কাছে চলে যায়। কিন্তু আধভিক সেখানে নেই। এটা জানা ছিলো সিয়ারার তাই ও সাথে সাথে সোহমকে ফোন করে বললো,
সিয়ারা: হ্যাঁ সোহমদা, আধভিক আপনার সাথে আছেন?
সোহম: না তো। স্যার তো আসেননি এখানে। কেন কিছু হয়েছে নাকি?
সিয়ারা: আপনি একটু খোঁজ নেওয়ার ব্যবস্থা করুন…
আধভিক: আজকাল একটু বেশিই খোঁজ নিচ্ছো দেখছি তুমি আমার?
সিয়ারা ফোনে কথা বলার মাঝেই পিছন থেকে আধভিকের গলার স্বর শুনতে পায়। পিছন ফিরতেই আধভিককে দেখে সোহমকে কোনমতে “রাখছি” বলে ফোন কেটে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে আধভিককে বোঝানোর জন্য।
সিয়ারা: ও সূর্য। আমার পাশের ফ্ল্যাটেই থাক…
আধভিক: তোমার বয়ফ্রেন্ড সেটাও মেনশন করো। শুধু সূর্য বলে ছেড়ে দিলে হবে?
সিয়ারা: কি বলছেন আপনি এসব? ও আমার বয়ফ্রেন্ড কেন হতে…
আধভিক: তার থেকেও বেশি কিছু বুঝি? ফিয়নসে নাকি? আগে বলে দিতে পারতে সিয়ারা। এই চেনা জানার বিষয়ে আমার সাথে হ্যাঁ তে হ্যাঁ মিলিয়ে নাটকটা না করলেই পারতে। তাহলে প্রথমেই নিজের মনকে বুঝিয়ে নিতে পারতাম।
সিয়ারা: এখন বুঝিয়েনিন। (কড়া ভাবে)
সিয়ারার কথাটা বুকে গিয়ে বিঁধল আধভিকের। সত্যি সে এতদিন নাটক করলো ওর সাথে? সিয়ারা কোনদিন ওর হবে না? কথাটা মনে আসতেই বুকের বাম পাশটায় মোচড় দিয়ে উঠলো।
সিয়ারা: যে আমাকে বিশ্বাস করে না সে আর যাই হোক কখনও আমাকে চিনে উঠতেই পারেনি। সূর্য শুধুই আমার বন্ধু, ছোটবেলার বন্ধু। অনেকদিন কষ্ট করার পরে গিয়ে চাকরী পেয়েছে সেই আনন্দেই জড়িয়ে ধরেছে এর থেকে বেশী কিছুই না। আমি যখন বললাম এমন করতে না তখন সাথে সাথে সরিও বলেছে। তাছাড়া বয়ফ্রেন্ড বা ফিয়ন্সে যদি হতো তাহলে নিশ্চয় আমি ওকে সময় দিতাম? না কি আপনার সাথে নিজের ফাঁকা সময়গুলো কাটাতাম। হাহ! (কিছুক্ষণ থেমে)…এই একমাসে না আমি আপনাকে চিনতে পেরেছি আর না আপনি আমাকে। তাই আমাদের মধ্যে আর কোনো সম্পর্ক হওয়া সম্ভব নয় মিস্টার রায় চৌধুরী। আসলাম, খেয়াল রাখবেন নিজের।
সিয়ারা আধভিকের দিকে পিছন ফিরতেই ওর চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরতে শুরু করলো। অনেক কষ্ট করে এতক্ষণ আটকে রেখেছিলো ও নিজের চোখের জল। আর পারছে না। চোখ মুছতে মুছতে একবারও পিছন দিকে না তাকিয়ে একটা অটো ডেকে বেরিয়ে গেলো সিয়ারা। আধভিকই এই একমাস বাড়ি পৌঁছে দিতো তাই স্কুটি আনা ছেড়েই দিয়েছে সে। এখন হয়তো আবার স্কুটির প্রয়োজন হবে।
বাড়িতে এসে সিয়ারা দেখলো সূর্যের মা এসেছেন। কোনরকমে হাসিমুখে কুশল বিনিময় করে ও নিজের ঘরে চলে গেলো।
সিয়ারা: এতোটা ভুল বুঝলেন আপনি আমাকে? কীভাবে পারলেন এভাবে ভুল বুঝতে? একটাবার আমার কথা শোনার প্রয়োজনও মনে করলেন না।
হঠাৎই সিয়ারার আভাস বাবুর কথা মনে পরে। আজই উনি বললেন আধভিককে ছেড়ে না যাওয়ার কথা আর আজই এমন একটা পরিস্থিতি তৈরী হলো যাতে সিয়ারা বাধ্য হলো চলে আসতে।
সিয়ারা: আচ্ছা আমি কী ঠিক করলাম এভাবে চলে এসে? আমিও তো এক মাস আগে এভাবে ওনাকে ভুল বুঝে কত কথা শুনিয়েছিলাম। কই উনি তো মুখ ফিরিয়ে যাননি, আমার ভুল থাকা সত্বেও উনিই এসেছিলেন আমার কাছে।
“আজ পর্যন্ত কোনো মেয়ে ওর জীবনে আসেনি এর আগে। ওর সাথে থেকে বুঝেছো নিশ্চয় ও সবার সাথে মিশে যেতে পারে না, যার সাথে মিশতে পারে তাঁকেই আকড়ে ধরে?”
সিয়ারা: এই একমাসে আমি বুঝেছি উনি আমাকে কতোটা ভালোবাসেন। হয়তো সে জন্যেই অন্য কোনো ছেলের সাথে আমাকে মেনে নিতে পারেননি। কিন্তু ওনারও তো বোঝা উচিত ছিলো একটু হলেও যে এর আগে কখনও আমি অন্য কোনো ছেলের সাথে কথা বলিনি তাহলে আজ কেন বলবো? (কিছুক্ষণ থেমে) রাগ হলে তো কোনো জ্ঞান থাকেনা মানুষের আর উনি তো মিস্টার আধভিক রায় চৌধুরী। বিষয় যখন রাগ করার তখন সবার আগে ওনার নাম আছে। ধুর! ভালো লাগে না আমার। এই ছেলেটা না আমাকে একটুও শান্তি দেবে না। দেখি কালকে না হয় ফোন করবো।
সিয়ারা নিজের ফোনটা হাতে নিয়ে ব্যালকনিতে চলে গেলো। বারবার নিজের ফোনটার দিকে তাকাচ্ছে আর বাইরে তাকাচ্ছে।
সিয়ারা: ঠিক আছেন তো উনি? রাগ হলেই তো বারে গিয়ে বসে থাকেন মশাই। সোহমদাকে ফোন করে বলবো বারে খোঁজ নিতে যদি না ফিরে থাকে? না থাক।
সিয়ারা আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতে ব্যালকনিতে থাকা চেয়ারে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পরে। বেশি ভাবলেই সিয়ারার ঘুম পেয়ে যায় বরাবর। রাতে হঠাৎ করেই ওর ঘুম ভেঙে যায় মায়ের ডাকে। মা কে বলে দেয় ও খাবে না। বাইরের দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকে,
সিয়ারা: আগেরবার আমার দোষ ছিলো তাও এসে পরেছিলো। আর এইবার নিজের দোষ তাও পাত্তা নেই বাবুর। ধুর, আমাকেই যেতে হবে মনে হচ্ছে কালকে।
সিয়ারা এটা ভাবার পরেও যায়না ব্যালকনি থেকে মনে মনে ভাবতে থাকে যদি আধভিক আসে। কিন্তু না রাত একটা বাজতে যায় আধভিকের পাত্তা নেই। সোহমকে টেক্সট করেছে, কল করেছে কোনো রিপ্লাই নেই। বেশ ভয়ও করছে এবার সিয়ারার। উঠে ঘরে চলে যায় কিন্তু হঠাৎই নিস্তব্ধ রাতে গাড়ির চাকার আওয়াজ পেতেই সিয়ারা নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে উঁকি মারলো আর দেখলো ওটা আধভিকের গাড়ি। সাথে সাথে খুশিতে নেচে উঠলো সিয়ারা। পরমুহুর্তেই ওর মনে হলো যদি আধভিক সত্যি সব সম্পর্ক শেষ করতে এসে থাকে? নিজের বিছানায় ধপ করে বসে পরলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই আধভিকের কল আসলে সিয়ারা একদম শেষে গিয়ে কলটা রিসিভ করে।
সিয়ারা: আপনি…
আধভিক: এক্ষুনি নীচে আসো।
কলটা রেখে দিলে সিয়ারা ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়ায়। আধভিক সাথে সাথে ইশারা করে নীচে আসার জন্য। সিয়ারা না করে দিয়ে চলে যেতে বললে আধভিক বাচ্চাদের মতো না বোধক মাথা নাড়িয়ে গাড়ির বনাটের উপর বসে পরে পা গুটিয়ে, গালে হাত দিয়ে।
সিয়ারা: উফ! এই ছেলেটা আমাকে জ্বালিয়ে খেলো। সকালে রাগ দেখিয়ে কথা শুনিয়ে এখন নেশা করে প্রেম দেখতে এসেছে। ওহ না! উনি তো আবার প্রেম ভালোবাসা বোঝেন না। ঢং করতে এসেছেন ঢং!
বিরক্তি নিয়ে সিয়ারা নীচে নেমে আসে। আশেপাশে একটু ভালো ভাবে তাকিয়ে দেখে নেয় কেউ আছে কি না। তারপর ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে এসে আধভিকের সামনে দাঁড়াতেই নেমে দাঁড়ায় আধভিক। সোজা হয়ে দাঁড়াতে গিয়ে টলে গেলে সিয়ারা রাগী দৃষ্টি নিয়ে ওর দিকে তাকায়, সাথে সাথে আধভিক সটান হয়ে দাঁড়ায়।
আধভিক: (চোখ বন্ধ করে নিশ্বাস নিয়ে) আই লাভ ইউ সিয়ারা!
[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে🥀]