বিন্দু থেকে বৃত্ত পর্ব -১৫+১৬

#বিন্দু_থেকে_বৃত্ত
#পার্ট_১৫
জাওয়াদ জামী

” আম্মু জানো তাহমিদ ভাইয়া ঐ কুহুর সাথে কথা বলে। সে নাকি কুহুকে বিয়ে করতে রাজি হয়নি? তাহলে সব সময়ই কুহুর আশেপাশে থাকে কেন? আবার আজ বেড়াতে যাওয়ার সময় তাহমিদ ভাইয়া কুহুর পাশে বসেছিল। পরে তাহমিদ ভাইয়া ওকে ঝালমুড়িও কিনে দিছে। ” দৃষ্টি শিউলি আক্তারের কাছে এসে ফিসফিস করে বলে। আরও বেশকিছু কথা বানিয়ে বলল, যেগুলো কুহু করেইনি। দৃষ্টির মাথায় ছোটবেলা থেকেই শিউলি ঢুকিয়ে দিয়েছে কুহু ওর সৎ বোন। তাই সময় পেলই দৃষ্টি সুযোগের সঠিক ব্যবহার করেই কুহুকে হেনস্তা করে।
শিউলি আক্তার মেয়ের কথার উত্তর না দিয়ে চিন্তার মাঝে ডুব দিয়েছে। সে ঢাকা আসার পর থেকেই কুহুকে নিয়ে সবার মাতামাতি দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে গেছে। সে ভেবেই পায়না ঐ কালীর মাঝে কি আছে যে সবাই ওকে মাথায় তুলে রাখে৷
” হের পাখনা গজাইছে। তাই এত উড়তাছে। সময় বুইঝা হেই কালীর পাখনা আমি কা’ই’টা দিমু। তহন কেম্নে উড়ে তা দেহা যাইব। হের ঢাকায় পড়নের সাধ আমি না মিটাইলে আমার নামও শিউলি না। এইখানে আসনের পর থাইকাই ওরে নিয়া সকলের আল্লাদ দেখতাছি। নিকুচি করি সকলের আল্লাদের। ” একদলা থুতু জানালা দিয়ে বাইরে ফেলল শিউলি।

সকালে নাস্তা করেই কুহু কলেজের জন্য বের হয়। যাওয়ার আগে শিউলি আক্তারের সাথে দেখা করে।
” ছোটমা, আজ বাবা আমার কলেজে যাবে। তুমিও যেও বাবার সাথে। আমার কলেজ দেখে আসবে। দৃষ্টি, শিহাবকেও সাথে নিও। ” উচ্ছ্বসিত হয়ে কুহু ওর ছোটমাকে বলে।
” কেন রে কালী, তর কলেজে আমার যাওন লাগব ক্যান? তুই কি এমন রাজরানী আইছস? আর তর কলেজে কি রাজভোগ আছে যে আমার যাওন লাগব? আমি দেখতাছি ঢাকায় ভর্তি হইয়া পা লম্বা হইছে তর। যেহানে ইচ্ছা সেহানে যাইতাছস। এত বাড়িসনা, তাইলে পা কা’ই’টা লু’লা বানায় দিমু।” কুহুর সকল আনন্দে জল ঢেলে খেঁকিয়ে উঠে শিউলি আক্তার।
নিমেষেই কুহুর মুখ চুপসে যায়। অবনত মস্তকে বেরিয়ে আসে রুম থেকে। ফুপুকে বলে বেরিয়ে আসে বাসা থেকে। গেইট পেরুতেই একটা সিএনজি দেখল। সেই দিনের সেই চাচা। যাকে রাস্তাঘাটে কুহু মাঝেমধ্যেই দেখতে পায়। চাচাও কুহুকে দেখে স্নেহের হাসি দেয়। কুহু উঠে বসে সিএনজিতে।
সারা রাস্তা কুহু ভাবতে ভাবতে যায়। কেন ছোটমা ওকে এত ঘৃণা করে? একটু মিষ্টি করে কথা কেন বলেনা ওর সাথে? ছোটবেলা থেকেই জেনেছি সৎ মানে ভালো, মহৎ। তবে সৎমা কেন ভালো বা মহৎ হয়না? সৎমা ডাকটা শুনলেই কেন বুকের ভিতর একদলা ভ’য় এসে হামলে পড়ে? সৎমা যদি ভালোই না হবে তবে এই ডাক কেন আবিস্কার হল? কেন সৎয়ের জায়গায় অন্য ডাক আসলনা?

সেইদিন বিকেলে আনানের সাথে কায়েস আর শিহাব এল কুহুর হোস্টেলে। বাবাকে দেখে কুহু সে কি খুশি। বান্ধবীদের ডেকে এনে বাবা ও ভাইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। বাবা-মেয়ে বেশ কিছুক্ষণ কাটায় হাসি-আনন্দে। এরপর ওরা যায় আফরোজা নাজনীনের বাসায়। সেখানে শিউলিকে রেখে কায়েস মেয়ের কাছে এসেছে। কায়েস চলে গেলে কুহু কোচিং-এ যায়।

আফরোজা নাজনীন আজ খুব খুশি। কতদিন পর তার ভাই এসেছে। তিনি ও তাহমিনা আক্তার মিলে নানানরকম রান্না করেছেন।
শিউলি এর আগে একবার ঢাকায় ননদের বাসায় এসেছিল। সে ঘুরেফিরে ‘ কুঞ্জছায়া’র প্রতিটি কোন দেখছে। এতবড় বাড়ি, এত ধনী এরা ভাবলেই শিউলির হিং’সা হয়। কতবার সে কায়েসকে বলেছে ওদের পুরোনো বাড়ি ভেঙে দোতলা করতে কিন্তু কায়েস সেকথা শুনেইনা। এ নিয়েও কম অশান্তি সে করেনি।
” কত বড়লোক এরা! ঐ কালীর বিয়া এহানে হয়নি ঠিক হইছে। ঐ কালীর আবার রাজরানী হবার কপাল আছে নাকি। ঐ কালীর কপালে কুন ফকির/মিসকিনই আছে। ঐ কালী হা’রা’ম’জা’দি আবার ঢাকায় পড়বার আইছে। শখ কত, ভাবছে ঢাকায় পইড়া কোন না’গ’র জুটাইবো। হেই কালীর দিকে কোন কু’ত্তা’য়ও ফিরা তাকাইবোনা। ” শিউলির চোখমুখ ঘৃণায় কুঁচকে আসে।
রান্না শেষ করে আফরোজা নাজনীন আনানকে দিয়ে কুহুর জন্য খাবার পাঠিয়ে দেন। সেটা দেখে শিউলি ভেতরে ভেতরে ফুঁসছে।
নাজমা পারভিন তার পরিবারসহ এবং শাহনাজ সুলতানার পরিবারও এসেছে আফরোজা নাজনীনের বাসায়। সবাই মিলে ড্রয়িংরুমে নাস্তা করছে সেই সাথে জমপেশ আড্ডায় মেতেছে।
তাহমিদ সন্ধ্যায় বাসায় আসলে সবাইকে দেখে তাদের কাছে এগিয়ে এসে সালাম দেয়। কিছুক্ষণ তাদের সাথে কথা বলে নিজের রুমে আসে।
ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয়। আজ সকাল থেকে ক্লাস এরপর বাকিটা সময় হসপিটালে যেয়ে টিচারের সাথে কাটিয়ে বাসায় ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। খুব ক্লান্ত লাগছে।
” তাহমিদ ভাইয়া, তুমি কি করছো? ” শিহাব দরজার বাইরে থেকে ডাক দেয়।
” শিহাব, ভেতরে এসো। ”
” ভাইয়া, তুমি নাস্তা করবেনা? তোমার ক্ষুধা লাগেনি? ”
” একটু পর খাব। তুমি খেয়েছ? ”
” খেয়েছি ভাইয়া। তোমার রুম কত্ত বড়! আর কি সুন্দর! ”
” তোমার পছন্দ হয়েছে? তুমি ঢাকায় থাকবে? আমাদের এখানে থেকে পড়াশোনা করবে। তোমার আপুও আছে। তার সাথেও দেখা করতে পারবে। ”
” আপুও আমাকে বলেছে, ঢাকায় পড়ার কথা। আমি একটু বড় হলেই এখানে ভর্তি হব। কিন্তু ভাইয়া, আপুর বিয়ে হয়ে গেলে তখন কিভাবে প্রতিদিন দেখা করব? ” ভাবুক ভঙ্গিতে প্রশ্ন করে শিহাব।
শিহাবের মুখভঙ্গি দেখে তাহমিদ হেসে দেয়।
” শোন তোমার আপু বিয়ের পরও ঢাকায়ই থাকবে। তুমি তখন তোমার আপুর কাছে থাকতে পারবে। সবাই একসাথে থাকব। খুব মজা হবে তাইনা? ”
তাহমিদের কথা শুনে মাথা ঝাঁকায় শিহাব।

আফরোজা নাজনীন তার ভাই, বোনদের সামনে একের পর এক খাবার দিচ্ছেন। তারা খেতে না পারলেও তিনি ধ’ম’কে, জোর করে খাওয়াচ্ছেন।
” শিউলি, তোমরা কাল আমাদের সাথে চিটাগং চলো। কয়েকদিন থেকে এসো। এমনিতে তো ওমুখো হওনা। এই সুযোগে বেরিয়ে এস?।” নাজমা পারভিন মন থেকে বলেন শিউলিকে৷
” আমি কি কই আপা। আপ্নের ভাই জানে। হেয় আমারে চিটাগং নিলে আমি যাব। ”
” কায়েস আমাদের সাথে চল। কয়েকদিন থেকে আসবি। ” নাজমা পারভিন কায়েসকে বললেন৷
” আপা, এখন যাওয়ার সময় নেই। বুঝোইতো আমি একদিন না থাকলে ব্যবসার কত ক্ষতি হয়। আমি আগামীকালই যেতে চাচ্ছিলাম কিন্তু বড় আপা নিষেধ করছে। তবে দৃষ্টির পরিক্ষা শেষ হলে ওদের নিয়ে তোমার ঐখানে যাব। ”

” বড় বউমা, তুমি কি কুহুর কাছে ফোন করেছিলে? সে কি খাবারগুলো পেয়েছে? আনানও তো এখনো আসলোনা। ” আয়েশা সালেহা চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন আফরোজা নাজনীনকে।
বৃদ্ধার কথা শুনে ওরা ভাই-বোন কথা বন্ধ আছে সেদিকে তাকায়।
” হুহ, বুড়ির ভালোবাসা দেইখা কইলজাডা জ্ব’ই’লা যাইতাছে। দুনিয়ায় ভালোবাসার মানুষের অভাব পরছে যে ঐ কালীরেই ভালোবাসতে হইব! ” বিরবির করে বলে শিউলি।
” বিকেলেই কুহুর কাছে খাবার পৌঁছে দিয়েছে আনান। কুহুই আমাকে ফোন দিয়ে জানিয়েছে। ”
শাহনাজ সুলতানা উঠে যেয়ে বৃদ্ধাকে ধরে নিয়ে এসে সোফায় বসালেন।
” বুঝলে বাবা কায়েস, তোমার ঐ মেয়েটা একটা হীরা। লাখে একটা ওমন মেয়ে পাওয়া যায়। ”
বৃদ্ধার প্রশংসা শুনে কায়েস মৃদু হাসেন।
” দোয়া করবেন আম্মা আমার মেয়েটার জন্য। ” কায়েসও বৃদ্ধার কথার প্রত্যুত্তর করে।
” মা শিউলি, মেয়েটাকে দেখে রেখ। তোমার বড় মেয়ে ও। তুমি প্রথমেই ওর মুখে মা ডাক শুনেছ। জ্ঞান হওয়ার পর মা হিসেবে তোমাকেই জেনেছে ও। বড় লক্ষ্মী মেয়েটা। তোমাকে যেমন ভালোবাসে, তেমন সম্মানও করে। ওর ফুপুরা ওকে যতই ভালোবাসুক, ওর মা বলতে শুধু তুমিই আছো। আজ তুমি ওকে একগুণ ভালোবাসা দিলে ভবিষ্যতে ও তোমাকে দশগুণ ভালোবাসায় ভরিয়ে দিবে। ” আয়েশা সালেহা নিজের সবটুকু দিয়ে বোঝান শিউলিকে৷
শিউলিও বৃদ্ধার কথায় মুখে মুখে সায় দেয়৷
” জ্বি আম্মা, আপ্নে দোয়া করবেন। সেও যেমন আমারে ভালোবাসে, আমিও তারে তেমনই ভালোবাসি৷ ” কিন্তু শিউলির মন বলছে অন্য কথা।

” দেখেছো আম্মু, দিদুনও কেমন করে তোমাকে উপদেশ দিল। এই বাসারও সবাই কুহু বলতে পা’গ’ল! আমিও যে আব্বুর মেয়ে তা যেন কেউ মনেই করেনা! যেন কুহুই সব! ”
” এহন সকলরেই কুহু কুহু করবার দে। সময় হইলেই ঐ কালীরে আমি সকলের মন থাইকা সরাই দিমু। আমার এত সুন্দরী মাইয়া থাকতে সকলরে ঐ কালীর নাম নেওয়ামু। একটু সহ্য কর। আমি এহন খালি দেইখা যাইতাছি। সময় হইলেই ফোঁ’স কইরা ঐ কালীরে ছো’ব’ল দিমু। সেই দিন আর খুব দূরে নাই । ”
দুই মা-মেয়ে উন্মাদের ন্যায় হাসতে থাকে। কিন্তু সেই হাসির শব্দ ‘কুঞ্জছায়া’র এই রুমেই গু’ম’রে ম’রে৷

চলবে…#বিন্দু_থেকে_বৃত্ত
#পার্ট_১৬
জাওয়াদ জামী

পরদিন সকালে নাজমা পারভিন স্বামী-সন্তান নিয়ে চিটাগং রওনা দেন। শাহনাজ সুলতানাও পরিবারসহ নিজ বাসায় চলে আসেন। কায়েসও দুপুরের খাবার পর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ফুলতলা চলে আসে। ঢাকা ছাড়বার পূর্বে কায়েস তার বড় মেয়ের সাথে দেখা করে।
কুহুর পড়ার চাপ বেড়েছে। নিয়মিত ক্লাস, কোচিং, পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেছে। তাহমিদের সাথে ওর আর দেখা হয়নি। অবশ্য তাহমিদ ইচ্ছে করেই ওর সামনে আসেনি। নিয়ম করে প্রতিদিন বিকেলে কুহুর কোচিং-এর পাশের দোকানে চুপটি মেরে বসে থাকে।

বেশ কিছুদিন যাবৎ একটা ফুলওয়ালী মেয়ে বিকেলে কোচিং-এ যাবার সময় কুহুকে ফুল দেয়। ফুল কে পাঠিয়েছে তা জানতে চাইলে মেয়েটা বলেনা। কুহুও অবশ্য ফুলগুলো নেয়না। মেয়েটা অনেক সাধাসাধি করলেও নেয়না কুহু।
কুহু লক্ষ্য করেছে কিছুদিন যাবৎ কয়েকটা ছেলে কোচিং-এর সামনে ঘুরাঘুরি করে। কুহুকে দেখলে ইশারা-ইঙ্গিতে কিছু বলে। কিন্তু কুহু ওদের পাত্তা দেয়না। আজ সেই দলেরই একটা ছেলে কুহুর সামনে এসে ওর নাম জানতে চেয়েছে। কুহু নাম না বলে ভয়ে এক দৌড়ে হোস্টেলে চলে আসে।
তাহমিদ সেই দোকান থেকে সব দেখে। কুহু চলে গেলে ও বেরিয়ে আসে।
” ঐ মেয়েটার সাথে কি এত কথা? জানিস ও কে? ” কুহুর সাথে কথা বলতে আসা ছেলেটার কাঁধে হাত রেখে জানতে চায় তাহমিদ।
” আব্বে শা”লা তুই কে বে? আমি কার সাথে কথা বলব তা তোকে জানাতে যাব কোন সুখে? তুই কোন হা’রা’মি’র’পু’ত আইছস? ঐটা আমার পাখি। আমার খাঁ’চা’য় তাকে আ’ট’কা’ব চিরদিনের জন্য তু…. ” ছেলেটা কথা শেষ না হতেই তাহমিদ তার নাকে ঘু’ষি মা’রে। জবরদস্ত ঘু’ষি’তে তাল রাখতে না পেরে দুইহাত দূরে ছি’ট’কে পরে ছেলেটা। নাক দিয়ে গ’ল’গ’ল করে র’ক্ত ঝরছে। নিজের সঙ্গীর এমন বেহাল অবস্থা দেখে দলের বাকিরাও ছুটে আসে। ততক্ষণে ওদের হাতে বেরিয়ে এসেছে অ’স্ত্র। ওরা তাহমিদকে ঘিরে দাঁড়ায়। প্রত্যেকেই রা’গে ফুঁ’স’ছে। রা’গে তাহমিদকে গা’লি’গা’লা’জ করছে। একজন হাতের ছো’রা উঠিয়েছে তাহমিদকে মা’রা’র জন্য। কিন্তু তাহমিদ সেদিকে পাত্তা না দিয়ে কোথাও ফোন করে। চার থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে কয়েকটা বাইকে করে কিছু ছেলে আসে।
বাইকে থাকা ছেলেগুলোকে দেখে তাহমিদকে ঘিরে দাঁড়ানো ছেলেগুলো অবাক হয়।
” কি রে এখানে কি? এভাবে ওকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? ” বাইক থেকে নেমে একজন জিজ্ঞেস করে তাহমিদকে ঘিরে দাঁড়ানো ছেলেগুলোকে।
” ভাই, এই শা’লা’য় রাকিবরে মা’র’ছে। ওর নাক ফা’টা’য় দিছে। ”
” কি করছে ঐ শা’লা’য়, যে ওর নাক ফাটাতে হলো? আর জানিস ও কে? ”
” রিল্যাক্স আমির, ও একটা মেয়েকে ডিস্টার্ব করছিল। কয়েকদিন থেকে লক্ষ্য করেছি ওরা মেয়েটার পিছু করছিল। তুমি শুধু ওদের বলে দাও ওরা যেন মেয়েটাকে ফলো না করে। ” তাহমিদ এগিয়ে এসে আমির নামের ছেলেটাকে বলে।
” এই তোরা শুনে রাখ ভাই যে মেয়েটার কথা কইল তার দিকে চোখ তুলেও তাকাবিনা। আর ভাইরে চিনে রাখ। তার সাথে কখনোই বেয়াদবি করবিনা। ” আমিরের কথা শুনে ছেলেগুলো মাথা নাড়ায়।
তাহমিদ ওয়ালেট থেকে কিছু টাকা বের করে আ’হ’ত ছেলেটার হাতে দেয় চিকিৎসার জন্য।
” কিন্তু ভাই, মেয়েটা কে? যার জন্য আপনি ঝামেলা করলেন? ” আমির আবার কথা বলে।
” সে তোমাদের ভাবি। এদের আবারও বলে দাও ওর আশেপাশে যেন এরা না থাকে। এটাই শেষ ওয়ার্নিং দিচ্ছি। ”
আমির আবারও ছেলেগুলোকে সাবধান করে দেয়। ওরা সায় জানিয়ে আ’হ’ত ছেলেটার চিকিৎসার জন্য চলে যায়।
ওরা চলে গেলে তাহমিদ তিন হাজার টাকা আমিরের কাছে দেয়৷
” এগুলো রাখ। সবাই মিলে চা খেও। ধন্যবাদ আমার ফোন পেয়ে এখানে আসার জন্য। ”
” না ভাই, টাকা লাগবেনা। যদি ইরফান ভাই শুনে আপনার কাছ থেকে টাকা নিছি তাহলে সে আমাকে থা’প্রা’ই’ব। ”
” আমি ইরফান ভাইয়ের সাথে কথা বলব। তুমি টাকাটা রাখো। সে কিছুই বলবেনা৷ ” আমির মুখ কাঁচুমাচু করে টাকা হাতে নেয়।
তাহমিদ ওদের থেকে বিদায় নিয়ে বাসার দিকে ফিরে।
” ভাই, এই ছেলেটা কে? ইরফান ভাইয়ের সাথে এর কি সম্পর্ক? ” আমিরের দলেরই একটা ছেলে আমিরকে জিজ্ঞেস করে।
” ইরফান ভাইয়ের, ছোট ভাই এর ক্লোজ ফ্রেন্ড। সেই ছোটবেলা থেকেই একই স্কুল, কলেজে পড়েছে এরা। আবার দুইজন একসাথে মেডিকেলেও পড়ে। দুই পরিবারের সম্পর্কও ভালো। ”
” তাই বলি, ইরফান ভাইয়ের মত প্রভাবশালী এমপির সাথে কথা বলার সুযোগ যেখানে সবাই পায়না আর এই ছেলে কি সহজেই বলে দিল ভাইয়ের সাথে কথা বলবে। যাহোক চিনে রাখলাম ছেলেটাকে। ”
” শুধু ইরফান ভাই নয় এর বড় চাচারও ব্যাপক পাওয়ার। ইরফান ভাইকে কেনার ক্ষমতাও তার আছে। ”

কুহু হোস্টেলে এসে বিছানায় বসে ভয়ে কাঁ’প’ছে। ছেলেগুলোকে দেখলেই ওর কাছে ব’খা’টে মনে হয়। সেই ব’খা’টে’রা’ই ওর পেছনে লেগেছে। যদি এভাবে বিরক্ত করতে থাকে তবে ও কোচিং করবে কিভাবে! ফুপুরা এসব শুনলে কি বলবে! এসব ভাবতেই বুক শুকিয়ে আসছে কুহুর। আনান ভাইয়াকে কি একবার জানাবো? যদি এটা নিয়ে আরও বড় কিছু ঘটে যায়! ভাবনার কোন কুল কিনারা হয়না। রাতে না হয় ঠিকমত খাওয়া, না হয় পড়াশোনা।
পরদিন বিকেলে ভয়ে ভয়ে কুহু কোচিং-এ আসে। চোরাচোখে চারপাশে তাকিয়ে দেখে ছেলেগুলো আছে কিনা। ওদের আশেপাশে না দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। চিন্তামুক্ত হয়ে ক্লাস করে। কোচিং শেষ করে বেরিয়ে আসতেই সেই ফুলওয়ালী মেয়েটা এসে আবারও একটা গোলাপ এগিয়ে দেয়। কুহু বিরক্ত হয়ে না করে দেয়। কালকের ঘটনার পর কুহু ধরেই নিয়েছে এতদিন ধরে ঐ ছেলেগুলোই ফুল দিয়েছে। কুহু ফুল না নিয়েই সামনে পা বাড়ায়।
” নেন না আপু। ভাইয়াডা প্রতিদিনই আপনারে ফুল দিবার কয় কিন্তু আপনে চাইয়াও দেখেননা। কাইলকা হেই ছেলেগুলার মইধ্যে একটারে কি পিডানিই না দিল ভাই। খালি আপনারে বিরক্ত করছিল হেইডা দেইখা ভাইয়া এমন কাম করছে।”
কুহু মেয়েটার কথা শুনে থমকে দাঁড়ায়।
” কে তোমার সেই ভাইয়া? আমাকে দেখাও তো। ” এক পা পিছিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে কুহু।
” ভাইয়ার মানা আছে তারে দেখাইতে। তবে শুইনা রাখেন সেই ভাইয়া হেব্বি সুন্দর। এক্কেবারে নায়কের মতন। আপনে ফুল নেননা কিন্তু সে আমারে টাকা ঠিকই দেয়। ”
কুহু অনেক জোড়ার করেও সেউ অজানা লোকের সন্ধান জানতে পারেনা।

কেটে গেছে আরও ছয়মাস। কুহুর প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শেষ। ও দ্বিতীয় বর্ষে উঠেছে। ক্লাসও শুরু হয়েছে। এরমধ্যে দুই ঈদ পার হয়েছে। কুহু দুই ঈদেই সাতদিন করে গ্রামে থেকেছে।
তাহমিদ মেডিকেলে তৃতীয় বর্ষে পড়ছে। ওদের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ খুব কম হয়। তবে তাহমিদ ওর কোচিং-এর সামনে নিয়মিত যায়। যদিও রাস্তায় কয়েকবার কুহু-তাহমিদ মুখোমুখি হয়েছে কিন্তু কুহু ততবারই ওকে দেখেই মাথা নিচু করে সরে গেছে। তাহমিদ দুই-একবার কুহুকে ডাক দিয়েছে কথা বলার জন্য কিন্তু কুহু প্রতিবারই
তাহমিদের ডাক উপেক্ষা করে চলে এসেছে।
কুহু ভেবে পায়না যেই মানুষ ওকে একদিন চরম অপমান করেছিল সেই মানুষ এখন কেন ওকে এভাবে পিছু ডাকে! সে কি তার ভুল বুঝতে পেরেছে! কিন্তু সে যতই তার ভুল বুঝতে পারুক কুহু আর কখনোই তার সাথে কথা বলবেনা।
তাহমিদ ভেতরে ভেতরে গু’ম’রে ম’র’ছে। কুহুর ইগনোর ও সহ্য করতে পারছেনা। কিভাবে কুহুকে মানাবে এই চিন্তায় অস্থির থাকে সে।

সামনের মাসে সুপ্তির বিয়ে। বিয়ে উপলক্ষে রাশেদিন পরিবারে হুলুস্থুল আয়োজন চলছে। বিয়ের সাতদিন আগে থেকে সকল আত্মীয়দের ‘ কুঞ্জছায়া’য় আসতে বলা হয়েছে। কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করা হয়েছে সাতদিনের জন্য। আফরোজা নাজনীনের বড় দুই মেয়ে রীতি, দূত্যি পনের দিন আগেই বাবার বাড়িতে আসবে। নাজমা পারভিন এব শাহনাজ সুলতানার পরিবারও সাতদিন আগেই আসবে তাহমিনা আক্তারের বাবার বাড়িতে দাওয়াত করেছেন আফরোজা। তাদেরও সাতদিন আগেই আসতে বলা হয়েছে। এমনকি তাহমিনা আক্তারের তিন বোনেদের দাওয়াত করা হয়েছে।
এমনকি সামিউল রাশেদিনের শ্বশুর বাড়ির সবাইকে দাওয়াত করা হয়েছে।
সামিউল রাশেদিনও বিয়ে উপলক্ষে দেশে আসছেন পরিবার নিয়ে।

সবাই সুপ্তির বিয়ে নিয়ে হৈ-হুল্লোড়ে মেতেছে। কিন্তু আফরোজা নাজনীনের মন খারাপ। তিনি কিছুতেই কুহুকে এ বাড়িতে আসতে রাজি করাতে পারেননি। সবাই সুপ্তির বিয়েতে আনন্দ করবে শুধু কুহুই দূরে থাকবে। কয়েকদিন থেকে তাহমিদ লক্ষ্য করছে ওর বড়মার মন খারাপ। অনেকবার সে জিজ্ঞেসও করেছে বড়মাকে কিন্তু তিনি এড়িয়ে গেছেন।
” দিদুন, আসবো? ”
” তুই আমার রুমে আসবি তাতে জিজ্ঞেস করার কি আছে ভাই? ” আয়েশা সালেহা মুচকি হেসে নাতিকে বললেন।
” তবুও প্রাইভেসি নামক একটা কথা আছে। দিদুন, তোমার কাছে কিছু জানার ছিল। ”
” কি জানার আছে ভাই? ”
” কয়েকদিন থেকেই দেখছি বড়মার মন খারাপ। আমি জিজ্ঞেস করেছি কিন্তু সে কোন উত্তর দেয়নি। তুমি কি জানো বড়মার কি হয়েছে? ”
আয়েশা সালেহা খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে মুখ খোলেন৷
” সুপ্তি দিদি ভাইয়ের বিয়েতে সবাই আসছে শুধু কুহু বাদে। সবাই একসাথে আনন্দ করবে শুধু কুহুই থাকবেনা। বড় বউমা, মেজো বউমা সবাই কুহুকে খুব করে অনুরোধ করেছে এখানে আসার জন্য। কিন্তু কুহু রাজি হয়নি। এসব নিয়েই তার মন খারাপ। ”
” আমি মানুষ হিসেবে খুব খারাপ, তাইনা দিদুন? আমার জন্যই আজ কুহু এখানে আসেনা। আমি সেদিন ঐ কথাগুলো না বললে আজ সবকিছু ঠিক থাকত। ” কষ্টে গলা বুজে আসে তাহমিদের। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে চোখের কোনে কয়েক ফোঁটা অশ্রুর আভাস।
” ভুল তুই সেদিন করেছিলিস। কিন্তু তাই বলে তুই মানুষ হিসেবে খারাপ নয় একদমই। তবে কিছু কিছু ভুল আছে যা মানুষকে সারাজীবন অনুশোচনায় পো’ড়া’য়। যেমন আজ তুই পু’ড়’ছি’স। ”
” আমি সব ঠিক করে দিতে চাই দিদুন। কিন্তু কিভাবে কি করব কিছুই বুঝতে পারছিনা। আমিও খুব করে চাই কুহু এখানে আসুক। সবার সাথে আনন্দ করুক। আর পাঁচটা মেয়ের মত বাঁচুক। বিশ্বাস করো আমি খুব করে চাই। ”
বৃদ্ধা কিছুক্ষণ নাতির দিকে তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে থাকেন। তার এত বছরের অভিজ্ঞ চোখে কিছু একটা ধরা পরেছে।
” এটা শুধুই কি আবেগ নাকি ভালোবাসা? তবে আমি যতদূর জানি আবেগের বয়স তুই অনেক আগেই পার করে এসেছিস। তোর চোখে শুধুই মুগ্ধতা খুঁজে পাচ্ছি আমি। হয়তো এই মুগ্ধতার আড়ালেই ভালোবাসা ঘর বেঁধেছে। তবুও আমি চাইনা মেয়েটা আরও একবার কষ্ট পাক, অপমানিত হোক। ”
” আমি প্রমিজ করছি দিদুন তাকে আর কষ্ট পেতে দিবনা। আমি আমার সবটা দিয়ে তাকে আগলে রাখব। অনেক পু’ড়ে’ছি, আর পু’ড়’তে চাইনা। এই দ’হ’ন যে কতটা য’ন্ত্র’ণা’দা’য়’ক তা আমি হাড়েহাড়ে টের পেয়েছি। তুমি শুধু একবার ওকে এখানে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করো। বড়মার কষ্ট আমি দেখতে পারছিনা। আর সেই মেয়েতো আমাকে দেখলে উল্টো রাস্তা ধরে। ”
” উল্টো রাস্তা ধরার মত কাজ কি তুই করিসনি? ও যে তোকে দেখলেই থা’প্প’ড় মা’রে’না সেজন্য শুকরিয়া আদায় কর। দেখি ওর সাথে কথা বলে আসতে রাজি হয় কিনা৷ ”
” শুধু থাপ্পড়! আমিতো তার হাতে ম’র’তেও রাজি। ”
” সেই তো তার মাঝেই ডু’ব’লি তবে শুধু শুধুই ওকে কাঁদালি। হঠাৎ করেই সেই অযোগ্য মেয়েটা হৃদয়ে আসন নিল কিভাবে? ” ফিসফিস করে জানতে চান বৃদ্ধা।
” তোমার কাছে সেদিন ওর ব্যাপারে শুনে একটা সফ্ট কর্নার তৈরি হয়েছিল ওর জন্য। ধীরে ধীরে তা ভালোবাসায় রূপ নেয়। আর আজ সে ছাড়া আমি নিঃস্ব। আমার বেঁচে থাকার কারন সে। ”
” তোকে কোলে পিঠে করে মানুষ করলাম, বড় করলাম, লেখাপড়া করছিস এই আমাদেরই জন্য। কিন্তু আমরা তোর বেঁচে থাকার কারন হতে পারলামনা। বড়ই আফসোস। ” বৃদ্ধা দুষ্টুমি করছেন নাতির সাথে।
” তোমরাতো আমার প্রান দিদুন৷ তোমরা না থাকলে এ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারতামনা। ” দিদুনকে জড়িয়ে ধরে আবেগে আপ্লুত হয়ে যায় তাহমিদ।

দুইদিন থেকে তাহমিদ ঠিকমত খাচ্ছেনা। বড়মার দিকে তাকালেই ওর কষ্ট হচ্ছে। দিদুন কথা বলেছিল কুহুর সাথে। তিনি অনেক বুঝিয়েছেন কুহুকে এখানে আসার জন্য। কিন্তু কুহু রাজি হয়নি। ওর একটাই কথা কমিউনিটি সেন্টারে প্রতিটা আয়োজনে সে থাকবে কিন্তু এখানে কিছুতেই আসবেনা৷ এসব ভাবলেই তাহমিদের মনে কষ্ট জেঁকে বসছে।
” বাবু, সেই কখন থেকে তোকে খেতে ডাকছি। সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছে। খেতে আয় বাবু। ” নরম গলায় তাহমিনা আক্তার ডাকেন তার ছেলেকে। তিনি কয়েকদিন থেকেই লক্ষ্য করছেন তার ছেলে কেমন চুপচাপ হয়ে গেছে। ঠিকমত খাচ্ছেনা। এ কয়দিনে ছেলেটা কেমন শুকিয়ে গেছে।
” তোমরা আমাকে ঘৃণা করো মা? বড়মাও বোধহয় আমাকে ঘৃণা করে। ”
” কি বলছিস এসব বাবু! তুই আমার আদরের ধন। তোকে আমি ঘৃণা করব! এ-ও সম্ভব! আর রইল তোর বড়মার কথা। সে না থাকলে তুই বেঁচে থাকতিস! সবকিছুর মালিক যেমন আল্লাহ তেমনি মানুষ থাকে অছিলা। তোর বড়মার অছিলায় আজ তুই বেঁচে আছিস। তোর জন্মের পর আমি মৃ’ত্যু’র মুখে পতিত হয়েছিলাম। তখন সেই তোকে বুকে তুলে নিয়েছিল। তোকে বুকের দুধ খাইয়েছে। সন্তানের মর্যাদা দিয়েছে। সেই মানুষ তোকে ঘৃণা করবে এটা দুনিয়া ধ্বংস হয়ে গেলেও আমি মানতে পারবনা। তোর কি হয়েছে বাবু? আমাকে বল। ”
” বড়মা কয়দিন থেকেই মন খারাপ করে থাকে। আমার ভালো লাগেনা মা। আমি শুধু বড়মার মুখে হাসি দেখতে চাই। ”
তাহমিনা আক্তার ছেলের কথার কি উত্তর দিবেন। তিনি তো জানেন তার বড় জা কেন মন খারাপ করে থাকে। তারও তো মন খারাপ হয়েছে কুহুর জন্য। কিন্তু ছেলেকে কি বলবেন! বেশ কিছুক্ষণ ইতস্তত করে তিনি বলেন,
” জানিসই তো সুপ্তির বিয়েতে সবাই আসবে শুধু কুহু ছাড়া। তাই তোর বড়মার মন খারাপ। মেয়েটাযে বড্ড অসহায়। বাবা থেকেও নেই আর সৎমা সে-তো কুহু না থাকলেই বাঁচে। ”
” আমি যেমন বড়মার মন খারাপের কারন ঠিক তেমনি একদিন তার ভালো হওয়ার কারনও আমিই হব। আর কুহুর পায়ের তলায় দুনিয়ার সকল সুখ এনে দিব। ওর সকল সুখের কারন আমিই হব। ” তাহমিদের চোখমুখে খুশির ঝিলিক।
” বাবু! কি বলছিস তুই! তুই কুহুর সুখের কারন হবি! ”
” তুমি এখনই কাউকে কিছু বলোনা, মা। যাকে তুমি, বাবা ছোট ছেলের বউ হিসেবে চেয়েছিলে সে-ই তোমাদের ছোট ছেলের বউ হবে। অবশ্য এতে একটু খাটুনি হবে। তবে বড়মার মুখে হাসি ফোটাতে একটু খাটুনি তো আমি করতেই পারি। ”
ছেলের কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেছেন তাহমিনা আক্তার। যে ছেলে একদিন কুহুকে বিয়ে করবেনা বলে অশান্তি করেছিল সেই ছেলেই আজ কুহুকে বিয়ে করতে চাইছে! বুকের ওপর থেকে একটা ভারী পাথর নেমে যাওয়ার স্বস্তি অনুভব করেন তাহমিনা আক্তার। অবশেষে ছেলের সুবুদ্ধি হয়েছে। কিন্তু বড় ভাবি বিষয়টি কিভাবে নিবে ভাবতেই আবারও বুকে পাথর চেপে বসার ভার অনুভব করতে থাকেন। তবে তাহমিদ এখন কাউকে কিছু বলতে নিষেধ করেছে বলে তিনি চুপ থাকার সিদ্ধান্ত নেন।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here