–তোমার বোনের বিয়েটা হবে না যদি না আজ তুমি আমাকে বিয়ে করো।
হটাৎ নিরবতা ভেঙে কথাটা বলে উঠলো মেহমেত।
–মানে?
–মানে পরিস্কার। আজ এই পিঁড়িতে দুটো বিয়ে হবে তুমি প্রস্তুত হয়ে নেও।
–কি বলছেন এগুলা আমি করবো না বিয়ে আপনাকে।
–তাহলে আপুর বিয়েটাও হবে না।
–কেন হবে না অবশ্যই হবে।
–তুমি কি জান এই বাড়ির প্রতিটা মানুষ আমার ইশারায় চলে আমি যেটা বলবো সেটাই হবে বাবার মৃত্যুর পর আমি আমার পরিবারকে সামলেছি সো আহম্মেদ তোমার বোনকে বিয়ে করবে না যদি না তুমি আমাকে বিয়ে করো। ক্লিয়ার কথা ৷
–আপনি আমার আপুর ভাসুর হন আমি কি করে ।
–এতো কিছু বোঝার বিন্দু মাত্র সময় আমার কাছে নেই চুপচাপ যা বলি মেনে নেও৷ নিজের বোনকে সুইসাইড করতে বাদ্ধ করো না তুমি। ভালো করে জান তোমার বোন প্রেগনেন্ট।
–আপনি (কান্নায় ভেঙে পরি আমি কিছুতে কথা বার হচ্ছে না মুখ দিয়ে কি বলবো। কি করবো এখন৷ উনি ঠিকই বলছেন উনি না বললে ভাইয়া বিয়েটা করবে না সে যতো ভালোইবাসুক না কেন আপুকে।)
–সময় আছে ৫ মিনিট ভেবে নেও এখানের এই সারি পরে রেডি হয়ে থাকো।
মেহমেত কথাটা বলেই রুম ত্যাগ করলো।
সামনে থাকা লাল বেনারসী আর গয়না দেখে বসে বসে কাঁদতে লাগলাম।
আমি “মালিহা আফরোজ কেয়া”। অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্রী। বাবা মায়ের দুই মাত্র সন্তান। আমার বড়ো আপু ” আলিহা আফরোজ তোবা”। ও এবার অনার্স শেষ করেছে। বাবা মা আর আমরা দুই বোন মিলে সুন্দর একটা পরিবার। আপুর সাথে আহম্মেদ ভাইয়ার রিলেশন ৪ বছরের৷ অবশেষে এটাকে পূর্ণতা দিতে আপুর বিয়ে ঠিক হয় প্রায় ১ মাস পর কিন্তু কালকে হটাৎ আপু টেস্ট করে জানতে পারে ও প্রেগনেন্ট তাই ভাইয়া বিয়েটা আজ নিয়ে আসে।
“আহম্মেদ খান” “মেহমেত খানের ‘ এক মাত্র ছোট ভাই। শুনেছি অনেক আগেই নাকি আঙ্কেল মারা গেছেন। তার পর থেকে মেহমেত খান গ্রুপে নিজের কোম্পানি বাংলাদেশে স্থাপন করে আজ অনেক বড়ো মাপের এক জন বিজনেসম্যান।
কিন্তু মেহমেত এর মধ্যে এমন কিছু আছে আমি বুঝি না কি আছে বাট এমন কিছু আছে যার জন্য আমি ওনাকে জোমের মতো ভয় পায়। ওনার চোখ দুটো ব্রাউন সেডের৷ যেটার দিকে তাকালে কখনো বেশি ভয় করে৷
কাল আপুর হবু শাশুড়ী এসে আমাকে মেহমেত এর জন্য চান। আমি একটুও রাজি না কখনো না। কারন আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি বাবাকে কথাটা বলার মতো সাহস আমার নাই। আপুরে বলছি আপু আমার উপর খেপে গেছে ও এখন আমাকে জোর করে বিয়েটা দিবে।কারন আদহাম (আমার bf) সে বেকার 😑। সব মিলিয়ে মোট কথা সবাই রাজি শুধু আমি রাজি ছিলাম না। কিন্তু এখন না হয়ে উপায় নাই।
কিছু সময় আগে বাইরে থেকে মেহমেত আমাকে ডেকে আনে। কারন শুনতে চাই নাই ওনাকে এমনি ভয় করে৷
আমি চলতেছি এক দম বাসায় বোনের বিয়ে হলে যেমন চলে তেমন। ববা মা অনেক বুঝালেন কিন্তু বুঝি নাই আমি৷ এরি মধ্যে বর চলে আসে৷ তার পর উনি হটাৎ বিয়ে পড়াবার আগ মূহুর্তে আমাকে ডেকে আনে। বেশ কিছু সময় চুপ থেকে এই কথা বলে চলে যায়।
কেউ বুঝলো না আমাকে। শেষ বারের মতো আদহাম কে একটা ফোন করি৷
যে-ই ভাবা সেই কাজ উঠে বসলাম। ফোনটা পাচ্ছি না। সব জায়গায় খুজলাম৷
পেলাম না৷ হটাৎ চোখ পড়লো পাশে থাকা টেবিলে কারোর ফোন। আমি সাত পাঁচ না ভেবে ফোনটা নিয়ে ফোন করি আদহাম কে৷
ফোন বেজে যাচ্ছে,
–হ্যালো। ।
ওর কন্ঠ শুনে মুখ চেপে কাঁদতে লাগলাম৷
–হ্যালো কে বলছেন।
–আ…আদ
–কেয়া তুমি কি হইছে কাঁদছো কেন এটা কার নাম্বার।
–আদহাম বাসায় বিয়ে আমাকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে।
–কেয়া তুমি৷
এটুকু শুনতে পারলাম হটাৎ কেউ ছো মেরে আমার থেকে ফোনটা নিয়ে নিলো পেছনে তাকিয়ে দেখি মেহমেত।
ওনাকে দেখে ভয়ে আমার কলিজার পানি শুকিয়ে গেছে। হাত পা কাঁপতে শুরু করেছে।
কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে উনি বললেন,
–সময় চলে যাচ্ছে দ্রুত রেডি হয়ে নেও।
বলেই চলে গেল।
আমার কাছে আর কোন উপায় নাই বাদ্ধ হয়ে বিয়ে করে নি।
চোখের পানি শুকিয়ে গেছে পাথরের মতো সব কাজ করছি সব মেনেও নিছি৷ এখন এ বাসা ত্যাগ করার পালা। মা এসে আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে বললেন,
–মারে দুঃখ করিস না আমি যা করছি সব তোর জন্য করছি। শুখি হবি।
আমি শুনলাম শুধু কিছু বললাম না৷
ওখান থেকে রওনা দিয়ে শ্বশুর বাড়ি চলে এলাম। আমি কারোর সাথে কোন প্রকার কথা বলি নাই বলবোও না৷
এখানে এসে কিছু ফর্মালিটি পুরোন করে আমাকে বসিয়ে দিয়ে গেল একটা গোলাপে সজ্জিত খাটে।
মাঝখানে বৌ সাজে বসে আছি আমি। ওরা আমাকে একা রেখে চলে গেল আমি নিজেকে অনেক শক্ত করে সব কাজ করেছি কিন্তু এখন আমার চোখের সামনে শুধু আদহামের চেহারা ভেসে আসছে। পর কথা মনে পড়তে কান্না করে দেয়।
হটুতে মুখ গুঁজে কাঁদছি আর ভাবছি কতো স্বপ্ন ছিলো আমার ওকে নিয়ে আজ এই দিনটার জন্য। সব কিছু সেই স্বপ্নের মতো হচ্ছে কিন্তু পাশে থাকা লোকটি চেঞ্জ।
মেহমেত আমার থেকে ১০ বছরের বড়ো৷ তার উপর আমারি বড়ো আপুর ভাসুর বাবা মা কি করে পাড়লো৷ রাজি হতে। নাহ এতো ভাবতে পারছি না। কষ্ট বুকের মধ্যে চাপ অনুভব করছি।
কিছু সময় পর দরজা খোলার শব্দ পেলাম।
বুঝলাম মেহমেত এসেছে।
চুপ করে আছি আমি মেহমেত কাছে এসে বললেন,
–সারিটা চেঞ্জ করে নেও৷
আমি মুখ তুলে তাকায়৷
ওনার হাতে একটা বাসন্তী colour এর সারি৷
–এই মুখের ময়দা গুলো ধুয়ে এসো।
এতো সময় বুঝতে পারি নাই এখন বুঝতেছি আমার কেমন ঠান্ডা লাগতেছে।
আমি এতো না ভেবে ওনার থেকে সারিটা নিয়ে বাথরুমে চলে যায়৷
ফ্রেস হয়ে বেরতে,
চলবে,
#Black_Rose
#The_dark_Prince_of_vampire_Kingdom♚.
#Megh_La
Part:01