প্রেমাধিকার পর্ব ১৫

#প্রেমাধিকার💝[ The_Egoistic_Love ]
#Written By: Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr[ Mêhèr ]
Part: 15….

রাজ: তোমার ড্রেস মহিলা স্টাফ এসে চেঞ্জ করেছে কারন তাতে ময়লা আর তোমার রক্ত লেগেছিল। এতটা ঘৃনা কেউ কিভাবে কাউকে করতে পারে যার জন্য নিজের সাথে এমন করবে….. [ ভাবতেই ফুপিয়ে কেদে উঠে ও ]
,
তারপর রাজ ওর পোড়া জায়গায় বরফ কাগিয়ে মলম লাগিয়ে দেয়। ফর্সা শরীরে এই দাগ আদো কোনোদিন মিটবে কিনা জানা নেই রাজের৷ ওর ভালোবাসার প্রথম ছোয়ার পরিনাম যে এতটা ভয়াবহ সেটা জানা ছিল না ওর…….. রাজ ওকে শুইয়ে বেড়িয়ে যায় রুম থেকে।

,
,
,
,
,

,
,
,
,
সারাটা রাত রাজের নির্ঘুম হয়ে কাটলেও ভোরের দিকে চোখ লেগে যায় ওর। রাজ বেলকনিতে ইজি চেয়ারে বসে ছিল।

সকালে ঘুম ভেঙে গেলে রাজ আরিয়াকে দেখতে রুমে যায়। কিন্তু আরিয়ার কোনো নাম নিশানা পায় না বুঝতে বাকি থাকে না আরিয়া চলে গেছে। রাজ একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে অফিসের জন্য তৈরি হয়ে চলে যায়।

সাদ: স্যার আজ সন্ধ্যায় একটা পার্টি আছে।

রাজ: আমি যাব না আমার ভালো লাগছে না।

সাদ: [ ভালো না লাগারি কথা। ] কিন্তু স্যার আপনাকে এটেন্ড করতেই হবে।

রাজ: প্লিজ সাদ যাও…..

সাদ: স্যার এটা খুব দরকারী। আমাদের ডিলের জন্য। বাকিটা আপনার উপর৷

রাজ কিছু বলতে পারল না। কিছুই ভালো লাগছে না ওর। সব কিছুতেই মেজাজ বিগড়ে যাচ্ছে। আর কাল রাতের পর মাথাটা কাজ করতেই চাচ্ছে না।
,

,
,,

,
,
,
,

,,
,
সন্ধ্যার পর রাজ কি মনে করে পার্টির জন্য তৈরি হয়ে নেয়। ভেবেছে ওখানে গেলে হয়ত কিছুটা টেনশন ফ্রি হবে। রাজ ওখানে সবার সাথে কোনো রকম কথা বলে এককোনে বসে ড্রিংক করতে থাকে।

ঠিক তখনি ওর দরজার দিকে চোখ যায়। আর যা দেখে তাতে ও বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায়। কারন আরিয়া দরজা দিয়ে ডুকছে।

আরিয়াকে দেখে রাজ অবাকের শীর্ষে। আরিয়া এখানে আসবে সেটা হয়তো কল্পনাও করতে পারেনি। আরিয়া পার্টিতে গিয়ে ওর ক্লায়েন্টের সাথে দরকারী কথা বলে নিল।

কথা শেষ করে একটা জুস নিয়ে চারদিকে দেখতে লাগল। পার্টির অনেকেই আড়চোখে আরিয়াকে দেখছে। আর দেখবে নাই বা কেন আরিয়া ব্লাক কালারের একটা শাড়ি পরেছে। সিল্কি চুল গুলো খোলা তাই উড়ছে। সাজ তেমন না কিন্তু যা আছে তাতে সেখানে যে কাউকে হার মানাবে ওর রুপে। এতে বলতে বাকি রাখে না যে কারো চোখ আরিয়ার দিকে যাবে। আরিয়া রাজকে খেয়াল না করলেও আরিয়ার এভাবে আসাটা রাজের কেন জানিনা পছন্দ হলো না।

আরিয়ার যার জন্য এসেছিল সেই কাজ শেষ তাই ও ফিরে যাওয়ার জন্য পা বাড়াল। ঠিক তখনি কেউ আরিয়ার সামনে এসে দাঁড়ায়।

লোকটা: হায় বিউটিফুল লেডি। আমি অরন চৌধুরী। আপনি যে কোম্পানির সাথে ডিল করতে এসেছেন আমি তার ওনারের ছেলে। [ আরিয়ার দিকে হাত বাড়িয়ে ]

লোকটাকে দেখে আরিয়ার বুঝতে বাকি রইল না যে এর মতলব কি হতে পারে।

আরিয়া: [ Who care .. একটা মুড নিয়ে ] সরি আমার একটু তাড়া আছে৷ আমাকে যেতে হবে…..

অরন: এত তাড়া কিসের??? সবে তো আসলেন একটু থাকেন। একটু পরিচিত হোন। দেখবেন ভালো লাগবে আপনার। [ বলে আরিয়ার হাতটা ধরে। ]

হাত ধরা মাত্রই আরিয়া নিজের হাতের দিকে তাকায়। তারপর অরনের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে গিয়েও থমকে যায় কারন এতক্ষন পর ও রাজকে দেখল। রাজকে দেখে কিছুটা অপ্রস্তুত হলো আরিয়া। কারন রক্তচক্ষু নিয়ে রাজ ড্রিংক করে যাচ্ছে আরিয়ার দিকে তাকিয়ে……

ইরন: কিহল কি ভাবছ। i think তুমি আমার কথা রাখবে।

অরনের কথায় আরিয়ার ঘোর ভাঙে। ওর দিকে তাকিয়ে ঠোঁটে একটা হাশি আনে।

আরিয়া: সেটা আর বলতে মি…..

আরন: অরন… অরন চৌধুরী।

আরিয়া: আমি আরিয়া । ভালো লাগল আপনার মত কারো সাথে দেখা হয়ে। [ বেশ হেসে হেসে কথা বলছে যা রাজের গায়ে কাটার মত ফুটছে। যতই হোক বউ বলে কথা। ]

অরন: সো আমরা কি ডান্স করতে পারি।

আরিয়া: Why not…

তারপর অরন আরিয়াকে নিয়ে ডান্স ফ্লোরে ডান্স করতে থাকে। আর রাজ ওদের দেখতে থাকে। ওদের দেখে রাজ ওদের কাছে গিয়ে একটু দুরত্ব রেখে দাড়িয়ে থাকে। আরিয়া নিজেই অরনের কাধে হাত রাখে।

এইটা দেখে অরুন বাকা হাসি দেয়।

অরন: ভেবেছিলাম তুমি ফাস্ট কিন্তু এতটা জানা ছিল না। I like it….

আরিয়া: আমি সবকিছুতেই একটু বেশি ফাস্ট।

অরন: You are too hot baby….. [ বলে আরিয়ার কোমরে হাত দেয়। এবার আরিয়া একটু নড়েচড়ে উঠে। রাজ না থাকলে এতক্ষনে যে কয়টা থাপ্পড় মারত তা হয়ত জানা নেই। মাথায় আগুন জলছে। রাজ সামনে তাই কিছু বলতে পারছে না। আরিয়া দাতে দাত চেপে মুখে হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলল। ওকে ছেড়ে দাঁড়ায়… ]

আরিয়া: আমার একটু তাড়া আছে। আমি আসছি…… [ বলে আরিয়া ওখান থেকে চলে আসে। এতক্ষন যাযা হয়েছে সবটাই রাজ দেখেছে। মাথায় ওর আগুন জলছে। রাজ ওকে টাচ করায় আরিয়া যা করেছে আর আজ অন্য একটা ছেলে আরিয়া……… ভাবতেই রক্ত মাথায় উঠে গেছে ওর। ]

এদিকে আরিয়া ওয়াসরুমে গিয়ে চোখে মুখে পানি দিতে থাকে। রাজ যদি না থাকত তাহলে বুঝিয়ে দিত আরিয়া কেমন। হঠাৎ আরিয়া দরজা লাগানোর শব্দ পায়। পিছনে ফিরে মেজাজটাই বিগড়ে যায়। না রাজ নয় অরন দাড়িয়ে আছে।

আরিয়া: দরজা বন্ধ করলেন কেন??? 😡😡😡

অরন: come on baby…. তুমি কি ভাব আমি কিছু বুঝিনা। তুমি এখানে কেন এসেছ???

আরিয়া: হুমম বুঝলাম। [ কিছুটা মুড নিয়ে একহাতে হেলান দিয়ে দারায়। ]

অরন: আমি জানতাম…. তুমি খুব ফাস্ট। তা আমার ব্যাপারে কি বুঝলে…

আরিয়া: এটাই যে আপনি একটু না অনেকটা বেশি বোঝেন।

অরন: একদম রাইট…

[ বলে আরিয়ার দিকে এগিয়ে ওর গালে টাচ করতে নেয়। তখনি আরিয়া ওর হাত ধরে নেয়। ]

অরন: What baby…

আরিয়া: আমার বেশি বোঝা মানুষ একদম পছন্দ নয়।

অরন: মানে….

আরিয়া: মানে…..😡😡😡

[ আরিয়া অরনকে একটা থাপ্পড় মেরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে একটা ল্যাং মারে যার কারনে ও মুখ থুবড়ে মেঝেতে পরে যায়। আর আরিয়া ওর হাত দুইটা পিঠের উপর চেপে ওর পিঠের উপর চড়ে আরেকহাত দিয়ে ওর চুল গুলো খুব জোরে টেনে ধরে মাথাটা উচু করে ধরে।

অরন: What the hell…

আরিয়া: আগুনে হাত দিলে সেক তো খাবি সে তুই ওনারের ছেলে হো বা নিজে ওনার হো। আরেকদিন যদি বেশি বুঝে কিছু করতে যাস সেদিন দেখবি কি হয়।

অরন: তুমি কিন্তু 😡😡😡

আরিয়া: যদি কারো বিনা অনুমতিতে কোনো মেয়ের শরীরে টাচ করিস তাহলে সেদিন বুঝবি। আমাকে অন্যদের মত ভাবার ভুল ও করিস না….

[ তারপর ওকে ছেড়ে দিয়ে দরজা খুলে বেড়িয়ে আসতেই থমকে যায়।। কারন সামনে রাজ দাঁড়িয়ে আছে।

রাজ: কি করছিলে দুজনে….. তাও দরজা আটকে…. [ দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করে ]

আরিয়া: সেটা বলার প্রয়োজন মনে করছিনা।

রাজ: কিন্তু আজকে আমার সবকিছুর জবাব চাই।

বলেই আরিয়ার মুখটা চেপে ধরে জোর করে একটা রুমের মধ্যে নিয়ে বেডে ছুড়ে মারল।

আরিয়া: আপনার সাহস হয় কি করে এরকম করার…..

আরিয়ার এমন কথা শুনে রাজের মাথায় আগুন জ্বলে উঠে।

রাজ: ভুলে যেওনা আরিয়া তোমার সাথে আমার যেভাবেই বিয়েটা হোক না কেন আমি কিন্তু তোমার স্বামী। আর তা সত্ত্বেও কাল যখন আমি তোমাকে টাচ করেছি তুমি আমার ভালোবাসার প্রথম ছোয়াটা নিজের শরীর থেকে মুছে ফেলার জন্য সেই জায়গাটা নির্মমভাবে পুরিয়েছ। আর আজ অন্য কারো ছোয়া তোমার কাছে ভালো লেগেছে। তা কি করছিলে ওর সাথে ওখানে। ওত ইশাদ ছিল না যে তোমার ভালো লাগবে। মানে আমি ছাড়া সবাইকে………

ঠাসসসসসসসসস………

আরিয়া: আরেকটা বাজে কথা না। আমার ব্যাপারে কোনো কথা বলার কে হন আপনি। আমার যা ইচ্ছা আমি তাই করব। যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে থাকব। আমাকে বাধা দেওয়ার কোনো রাইট নেই আপনার।😡😡😡

রাজ: আমি তোমার কে হই তা আজকে তোমাকে কড়ায় গন্ডায় বুঝিয়ে দেব। অনেক ভালো মানুষী দেখিয়ে ফেলেছি। ভেবেছিলাম তোমার থেকে ক্ষমা চেয়ে নিজের ভুলটা শোধরাব কিন্তু না তোমার মত উগ্র স্বভাবের ইগোষ্টিক মেয়ে আসলে সেটা ডিজাভ করে না।

আরিয়া: নিজেকে কি সত্যি সত্যি আমার স্বামী ভাবতে শুরু করেছেন নাকি…..

রাজ: ভাবছি না। আমি তোমার স্বামী আর এটাই সত্যি।

আরিয়া: আমি মানি না….. [ খুব জোরে চিল্লিয়ে ]

রাজ: তোমার কাছে কবুল শব্দটা একটা শব্দ হলেও আমার কাছে না। তাই তুমি বিয়েটা মানতে না পেরে যেমন আমার অধিকার আমাকে দিচ্ছ না। তাতে সমস্যা ছিল না। কিন্তু আমার ওয়াইফকে অন্য কোনো পুরুষ টাচ করবে অন্য দৃষ্টিতে দেখবে। সেটা আর যাই হোক রাজ আহমেদ মেনে নিবে না।

আরিয়া: নিজের স্বামীর অধিকার দেখাচ্ছেন।

রাজের রাগটা আরো বেড়ে গেল। আরিয়াকে আবার বিছানায় ফেলে এক পা বিছানায় তুলে খুব জোরেই আরিয়ার গাল চেপে ধরল। আরিয়ার গাল যেন দাতের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে।

রাজ: স্বামীর অধিকার যদি দেখানোর হত অনেক আগেই পারতাম। সেটা করার হলে এতদিন তোমার কাছে পার্রমিশন চাইতামনা।
তবে আজ তুমি যা করেছে তাতে……. তুমি আমার স্ত্রী হয়ে ওই লোকটার সাথে……..

আরিয়া: বললাম তো আমার লাইফ আমার ইচ্ছা।😡😡😡

রাজ: ওকে তাহলে তুমি তোমার ইচ্ছা পুরন করেছ এবার আমি আমার ইচ্ছা। এবার যা হবে সেটা আমার ইচ্ছায়। [ বলেই নিজের শার্টের বোতামে হাত দিল ]

আরিয়া: মানে….. [ এবার আরিয়া বেশ ভয় পেল। ]

রাজ: অনেক বার বার খালি শুধু অধিকার তাইনা।

আরিয়া: আপনি….

,,
,
,
,
,
,
আর কোনো সুযোগ রাজ আরিয়াকে দিল না। ঠিক নিজের রাগ জিদ দেখিয়ে অধিকার বুঝে নিল আরিয়ার থেকে। রাজের শক্তির কাছে আরিয়া কিছু করতে গিয়েও ব্যর্থ হল।

রাজ: কাল যখন ছুয়েছিলাম তখন তো নিজের শরীরে পোড়া দিয়েছিলে কিন্তু আজ কি করবে। আজ তো তোমার সবটা জুড়েই আমি। তাহলে আজ কি গায়ে আগুন লাগিয়ে দেবে। দিতেই পারো তোমার ইচ্ছে। অনেক সহ্য করেছি আর না। যা ইচ্ছে করতে পারো। নিজেকে শেষ করতে চাইলেও বাধা দিব না। খালি মাথায় রেখ তোমার কিছু হলে…… [ আর কিছু না বলেই রাজ নিজেকে ঠিক করে বেড়িয়ে যায়। আর আরিয়া ওখানেই ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদতে থাকে। ]

আরিয়া: সেটাই করব। শেষ করে দিব নিজেকে। [ প্রচন্ড রেগে ]

আর ঠিক তখনি………

,
,
,
,
,
,
,
[ বাকিটা পরের পর্বে জানবেন ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here