#এক্সিডেন্টলি_প্রেম♥
#পার্ট-১৩♥
#Ayanaa_Jahan(Nusraat)♥
ঘড়িতে ৮ টা’র ঘরে ঘন্টার কাটা পৌঁছোতেই এক প্রকান্ড চিৎকারে ফেটে পড়লো বেড টেবিলের ওপরে থাকা এলার্ম ক্লোকটা। ঘুমের ঘোরেই কপাল কুঁচকে এলো নিশান্তের, সারারাত জেগে থাকার পর দিনের প্রয়োজনীয় ঘুমের বেলায় ডিস্টার্বনেস মোটেও পছন্দ নয় তার তবু নিরুপায় সে।
নিশান্ত আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে এলার্ম ক্লোকটায় বা হাত দিয়ে টোকা মেরে থামালো। সূর্যের তীর্যক রশ্মি চোখে পড়তেই কপাল কুঁচকে হাত সামনে উঠিয়ে ঢাল বানিয়ে রোদের মোকাবেলায় নেমে পড়লো সে। ওভাবেই কয়েক সেকেন্ডের মতো বসে থাকা অবস্থাতে তার কানে ভেসে আসতে লাগলো কোনো এক শ্রুতিমধুর কন্ঠে ছন্দময় গানের পসরা। অন্বিতা গাইছে,
” তুমি জানো না
তুমি জানো না রে প্রিয়
তুমি মোর জীবনের সাধনা…(!!)
তোমায় প্রথম যেদিন দেখেছি
মনে আপন মেনেছি,
তুমি বন্ধু আমার মন মানো না
ও….তুমি জানো না,
তুমি জানো না রে প্রিয়
তুমি মোর জীবনের সাধনা!”
নিশান্ত চোখ দুটো বুজে নিলো আবারও। অন্বিতার শ্রুতিমধুর গলায় যতোবারই গান শুনেছে ততোবারই অজানা এক ভালোলাগায় ছেয়ে গেছে তার মন। কেনো যেনো অন্বিতার গাওয়া গানগুলো তাকে টানে, খুব করে টানে। তার মুগ্ধতায় মিলেমিশে একাকার করে ফেলতে চায় প্রতিনিয়ত। নিশান্ত আনমনেই ভাবে, “ইশশশ! মেয়েটার কতো গুণ, আর আমি কিনা আস্ত আহাম্মক একটা!” পর মুহূর্তে নিজের মনে করা উক্তিতে নিজেই বিরক্ত হয়ে পড়ে সে। জোড় করে মনকে বোঝাতে চেষ্টা করে, “কে বলেছে আমি আহাম্মক, যে বলেছে সে নিজেই একটা আহাম্মক! আমি কতো ব্রিলিয়ান্ট, হ্যান্ডসাক হাংক, কতো শত মেয়ে ঘুরঘুর করে আমার পেছনে। জুনিয়রেরা লাইন ধরে টিউশনির আবদারে! আর আমি নাকি আহাম্মক! হাহ!”
নিশান্তের ভাবনার মাঝেই দরজার ওপাশ থেকে টোকা পরলো। নিশান্ত ভাবনা জগতের পর্দা ভেদ করে বেড়িয়ে এলো তৎক্ষনাৎ। বিছানা থেকে নেমে তড়িঘড়ি করে কাথা ভাঁজ করতে করতে বললো,
—- এসো আম্মু, দরজা ভেতর লাগানো নেই, চাপানো আছে মাত্র।
দরজার করাঘাত থেমে গেলো মুহুর্তেই। দরজা ঠেলে মায়ের বদলে অন্য একজন নয় বরং দু দুটো মানবের প্রবেশে ভ্রু কুঁচকালো নিশান্ত। দাঁত কেলিয়ে ভেতরে ঢুকেই উচ্ছ্বসিত গলায় রিভান বললো,
—- দোস্ত তুই কেবল উঠলি! ভালো হয়েছে, এটলিস্ট বাচ্চাদের কোলাহল থেকে তো রক্ষা পেলি।
নিশান্ত ভেতরে ভেতরে কিঞ্চিৎ বিরক্ত হলেও মুখে প্রকাশ করলো না। মুচকি হেসে বললো,
—- সাত সকালে বাড়ি এলি যে তোরা! কিছু হয়েছে নাকি?
সানি চট করে অগোছালো বিছানাটায় বসে পড়লো। মুখে লম্বা হাসির রেশ ফুটিয়ে বললো,
—- আই লাভ ইউ মাম্মা!
নিশান্ত চমকালো। চোখ বড়বড় করে বললো,
—- আবে ওয় সানি লিওন! আসার পথে কোনো এক্সিডেন্ট ঘটিয়ে আসিস নি তো?
সানি ঠোঁট উল্টালো। নিজের নামের প্রতি নিজেই চরম বিরক্ত সে। কি ভেবে যে তার বাবা-মা ছেলের নাম “সানি” রাখতে গেলো ভেবে পায় না কোনো লজিক দেয়েই। কি একটা বিশ্রী কারবার! কেউ নাম জিজ্ঞেস করলে উত্তর স্বরূপ “সানি” বলতেই প্রশ্ন ছুড়ে মারা ব্যক্তিগুলো বরাবরই মুখ টিপে হাসে। ফ্রেন্ড সার্কেলে তো তাকে “সানি লিওন” ছাড়া ডালাই চলে না। যার দরুন বড্ড হতাশাগ্রস্ত সানি৷ সানিকে জবাব দেওয়ার সুযোগ না দিয়ে রিভান এসে নিশান্তের কাধে হাত রাখলো। ঘুনের দরুন নিশান্তের এলোমেলো হয়ে যাওয়া চুলগুলো আরো এলোমেলো করে দিয়ে বললো,
—- আরে তুইও হয়েছোস একখান! বেচারি থুক্কু বেচারা তোকে “আই লাভ ইউ” বললো তার বিপরীতে কোথায় “আই লাভ ইউ টু” বলবি তা না শুধু শুধু টেনশনে ফেলতাছোস।
নিশান্ত কপাল কুঁচকালো। নিজের ব্রাউন সিল্কি চুলগুলোতে হাত চালিয়ে বললো,
—- টেনশনে ফেলছি মানে? হঠাৎ উদ্ভট সব কথাবার্তা এসে বললে নেচে নেচে আমিও সেন্টি হবো নাকি?
সানি মাথা চুলকোতে চুলকোতে আবারও একতরফা দাঁত কেলালো, বোকাবোকা গলায় বললো,
—- আরে আমি তো জাস্ট প্রাকটিস করছিলাম ভাই, নাথিং এলস!
রিভান মুহুর্তেই লাল-নীল-বেগুনী বর্ণ মুখে ফুটিয়ে তুলে চোখ রাঙালো। সানি রিভানের চোখ রাঙানো তে থতমত খেয়ে আমতাআমতা করতে নিলেই নিশান্ত বিস্মিত কন্ঠে বললো,
—- ওয়েট আ মিনিট! প্রাকটিস মানে? কিসের প্রাকটিস?
রিভান জিহ্ব দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিলো। পরিস্থিতি সামাল দেবার তাগিদে চটজলদি বলে উঠলো,
—- আরে কিসের আবার, প্রপোজ করার প্রাকটিস! বুঝোস না সানির একটা দিয়ে হয় না। আজকে রাস্তায় আসার পথে একটা মাইয়ারে ভালো লেগে গেছে ওর তাই আর কি প্রপোজাল দেওয়ার প্রাকটিস করতাছে। কিরে সানি লিওন তাইতো?
সানি সম্মতি সূচক মাথা নাড়ালো। নিশান্ত কপাল চাপড়ে বললো, “তুই আজীবনেও শোধরাবি না!”
বলেই ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালো সে। যেতে যেতে অন্বিতার গান শুনবার ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো। রিভান-সানির উচ্চস্বরে করা গোসিপের নিচে চাপা পড়েছে অন্বিতার গান! নিশান্ত ম্লান হাসলো। ভার্সিটিতে যেতে হবে বিধায় চটজলদি ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলো সে।
_______________________
আজ শাড়ির বদলে অন্বিতা পড়েছে সাদা আর লালের মিশ্রণে তৈরি সালোয়ার। সাথে নিজের কোমড় পর্যন্ত লম্বা চুলগুলো বাম দিকে এনে গেথেছে বিনুনি! তমা আজ তাদের বাসায় আসার সময় সাথে করে সমিতির বাগানে ফোটা রক্তজবা নিয়ে এসেছিলো, তার আবদার অন্বিতাকে সেই ফুল কানের পিঠে গুজতে হবে। হবেই হবে! অন্বিতাও টকটকে জবা দেখে খুশিতে আত্মহারা! গাছটা এক সময় সেই লাগিয়েছিলো। যাতে এতো সুন্দর ফুল ফুটেছে দেখে চোখ চিকচিক করে উঠে অন্বিতার।
অন্বিতা তৈরি হয়ে চোখে হাল্কা কাজল লাগালো, এতে যেন খাপছাড়া ভাবটা বিলীন হয়ে নিমিষেই ভরপুরতা এসে ভর করলো তার মুখে। নিজেকে আয়নায় দেখে মুচকি হাসলো অন্বিতা। কানে গোজা ফুলটা এদিক-ওদিক ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে দেখতে কানে এলো তার ভাইয়ের ডাক। আনন্দ স্কুল ব্যাগ ঘাড়ে উঠাতে উঠাতে বললো,
—- আপু হলো তোমার? আমি রেডি!
অন্বিতা পাশ ফিরে আনন্দর দিকে তাকালো। বাবার রেখে যাওয়া পকেট মানি থেকে ৫০ টাকার মতো আনন্দর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো,
—- বাড়ি থেকে টিফিন নিয়ে গিয়ে লাভ কি যদি টিফিন বক্স আগের মতো ওজন নিয়ে বাড়ি ফেরে?
অন্বিতার কথার মর্ম নিজের ছোট্ট মস্তিষ্ক দিয়ে খানিক ভাবার চেষ্টা করলো আনন্দ। পরিশেষে কথাটা যে তাকেই উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে বুঝতে পেরে জিহ্ব কামড়ে ধরলো সে। অন্বিতা হাসলো ভাইয়ের চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে বলল,
—- চল, সবগুলো বাচ্চা কেই একসাথে নিয়ে যাই।
আনন্দ চোখ মুখ কুঁচকালো। নিজের এলোমেলো হয়ে যাওয়া চুকগুলোর মাঝে হাত চালাতে চালাতে বললো,
—- উফফফ আপু হেয়ার স্টাইল খারাপ করো না, আমি এখন আর বাচ্চা নেই।
অন্বিতা হু হা করে হেসে উঠলো। আনন্দর পিঠে দুবার চাপড় মেরে বললো,
—- হুম তাতো দেখতেই পারছি, একেবারে আশি সালের বুড়ো।
________________________
—- দেখ সানি, বেশি ওভার স্মার্ট সাজতে জাস না আবার। যা যা শিখিয়ে দিয়েছে তাই ঠিক ঠিক বলে মেয়ের কাছ থেকে তার বফ ওর ফিয়ন্সি টাইপ কেউ আছে নাকি জেনে নিবি। ব্যাস!
রিভানের কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো সানি। হঠাৎ কিছু একটা রিয়ালাইজ করায় মাথা চুলকোতে চুলকোতে বললো,
—- কিন্তু যদি ভাবীর এমন কেউ না থাকে তো?
—- না থাকলে তো হয়েই গেলো। ওটাই তো চাই!
—- আরে তুই আমার কথা বুঝতেছিস না, আমি বলতেছি যে যদি আমি ভাবীরে গিয়া প্রপোজ করি আর তার যদি এমন লাইফ পার্টনার টাইপ কেউ না থাকায় আমাকে এক্সেপ্ট করে ফেলে তো?
সানির যুক্তিতে চিন্তায় পড়ে গেলো রিভান। আসলেই তো যদি এক্সেপ্ট করে ফেলে তাহলে তো সব প্লান মাঠে মারা যাবে তার। এতোক্ষণ পজিটিভলি ভাবলেও নেগেটিভ টাও যে অসম্ভব এমটাও তো নয়। রিভান তবুও জোড় পূর্বক পজিটিভ টাই ভাবতে লাগলো। সানির যুক্তিকে ইচ্ছে করে না মানার ভান করে বললো,
—- ধুর বলদ! তোর মতো মাল্টিপ্লাগ কে অন্বিতা জেনে শুনে থোরি না এক্সেপ্ট করবে?
নিজেকে মাল্টিপ্লাগ বলে আখ্যায়িত করায় ঠোঁট উল্টালো সানি। প্রতিবাদী গলায় বললা,
—- এই শুন আমি মাল্টিপ্লাগ না, আর যদি হয়েও থাকি তাও ভাবী তো জানে না। আর সবচেয়ে বড় কথা আমি কলুর বলদ টাইপ নই, যথেষ্ট হ্যান্ডসাম! এক্সেপ্ট করে ফেলার চান্সের কিন্তু ৬০/৪০।
সানির কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ মাথায় এক উদ্ভট বুদ্ধি এসে হানা দিলো রিভানের। ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি ফুটিয়ে তুড়ি বাজিয়ে সে বললো,
—- নোপ ড্যুড! এক্সেপ্ট করার চান্সের ০/১০০, হ্যান্ডসাম তো তুই তাইনা, ওয়েট দেখাচ্ছি মজা।
বলেই সু ক্যাভিনেট থেকে জুতোর কালির কৌটাটা হাতে তুলে নিলো রিভান। ক্যাপ খুলে হাতে কালি ঢেলে নিয়ে সানির দিকে রহস্যময় চোখে তাকাতেই চোখ ফুটবলের সমান বড়বড় করে ” না না না….!” বলে পেছাতে লাগলো সানি। তবে শেষ রক্ষে হলো না, ভাগ্যের চরম পরিহাসে নিজের উজ্জ্বল শ্যামলা গায়ের রং কে জুতোর কালি মাখিয়ে কয়লাতে পরিণত করতে হলো তাকে।
_________________________
একদল ছোট বড়, লম্বা-খাটো, সাস্থবান-রোগা বাচ্চা নিয়ে লাইন ধরে বেড় হলো অন্বিতা। নিজের লম্বা বিনুনি আঁকাবাঁকা পথে ঢেউ খেলিয়ে সঙ্গ দিলো তার। রিভান আড়াল থেকে মুগ্ধ চোখে তাকালো। সানি এতোগুলো বাচ্চাকে নিয়ে অন্বিতাকে বের হতে দেখে কপাল কুঁচকালো। রিভানের হাত ঝাঁকিয়ে প্রশ্ন করলো,
—- আচ্চা এতোগুলো বাচ্চা মাত্র ২০ বছ বয়সে হইল কেম্নে ভাবীর?
রিভান হাতের কুনুই দিয়ে সানির পিঠে গুঁতো মেরে বললো,
—- শালা গবেট! এগুলো ওর বাচ্চা হতে যাবে কেনো? ওর বিয়ে হয়েছে নাকি ডাফার! এরা সবাই স্টুডেন্ট।
বলেই সামনে ধাক্কা মেরে কয়েক ধাপ এগিয়ে দিলো সে সানিকে। সানি টান সামলে অসহায় চোখে পেছন ফিরে তাকালো। রিভান তাড়া মেরে বললো,
—- খাড়াস আছোস কিল্লায়? যা…..!
সানি নিরীহ প্রাণীর ন্যায় ঠোঁট উল্টালো। কাঁদো কাঁদো ভাব নিয়ে এক পা এক পা করে এগোতে লাগলো অন্বিতার নিকটে।
হঠাৎ রাস্তার ধারে বিচিত্র ধরণের প্রাণী এসে সামনে দাঁড়াতেই থমকে দাঁড়ালো অন্বিতা। সানি আড়চোখে এদিক ওদিক তাকিয়ে সাহস সঞ্চয় করবার তাগিদে জোড়ে জোড়ে শ্বাস টানতে লাগলো। অন্বিতা বাচ্চাদের পেছাতে বলে সানির দিকে বিস্ময় মাখা চোখ তুলে তাকিয়ে বললো,
—- একি, কে আপনি? এভাবে পথ আটকে দাঁড়ালেন কেনো?
সানি দূরে আড়ালে লুকিয়ে নজর রাখা রিভানের দিকে আকুতি মিনতি ভরা চোখে তাকাতেই হাত উঠিয়ে ঘুষি দেখালো রিভান। সানি নিরুপায় হয়ে হাল্কা হাসার চেষ্টা করলো। অন্বিতার জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে পলক ফেলে বললো,
—- ইয়ে মানে আপনার মানে তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো।
—- ওয়েট, তার আগে এটা বলুন আপনি এরকম দেখতে কেন? হাত-পা তো ঠিকই আছে মুখ এমন কয়লার মতো হলো কি করে?
নিজেকে তুচ্ছ করে বলায় মুখ কালো করে তাকালো সানি। সে জানে মুখ খুললে চলবে না তাই বুক ফুলিয়ে বললো,
—- এই একদম আমায় কালো বলবে না, আমি কালো নই আমি ব্লাক ডায়ামন্ড!
সানির কথায় কপাল কুঁচকে চোখ বড়বড় করে তাকালো অন্বিতা। গলা খাঁকারি দিয়ে বলে উঠলো,
—- দেখুন আমি আপনাকে কালো বলছিনা, মুখের এরকম বর্ণ কেনো দেখাচ্ছে তাই আস্ক করছি স্রেফ! মনে হচ্ছে কালি মেখে এসেছেন!
সানি থতমত খেয়ে গেলো, কথা ঘুরাবার উদ্দেশ্যে চটজলদি বলে উঠলো,
—- আরে আমি জন্ম থেকেই চকলেট ফ্লেবার, ওসব বাদ দাও। মেইন কথায় আসো। কথাটা হলো গিয়ে…..
অন্বিতার চোখের দৃষ্টি সরু হতেই,
—- কথাটা হলো….আই লাভ ইউ ভা…ভাবী…..!
সাথেসাথেই গালের ওপর পাঁচ আঙুল এর ছাপ পড়লো সানির। অন্বিতা সানির শার্টের কলার ধরে পেটে হাটু দিয়ে আঘাত করে বললো,
—- ব্যাটা ফাজিলের দল, মানুষের চামচা গিরি করিস? আই লাভ ইউ ভাবী? তোর কোন ভাইয়ের বউ লাগি আমি? দাঁড়া তোরে ভাবীর আদর খাওয়াচ্ছি।
বলেই সানির ওপর আক্রমণ শুরু করে দিলো অন্বিতা। অন্বিতার দেখাদেখি বাচ্চারাও চেঁচিয়ে “হাল্লা বোল” বলে সানির উত্তম মধ্যম সাধিত করবার হলো হামলে পড়লো।
সানির এমন দুর্দশা দেখে চোখ ফেটে বেরিয়ে আসার উপক্রম রিভানে। তবে সানিকে এই মুহুর্তে উদ্ধার করাও বিপদ। কি করবে ভেবে পাচ্ছে না রিভান। দূর থেকে সানির আর্তনাদ কানে ভেসে আসছে স্রেফ। আর্তনাদে করা উক্তিগুলো কিছুটা এরকম। “ওরেএএ মাইরালাইচ্ছে রে….! ও বাবা রে গেছি রে…..ভাবী ভুল হয়ে গেছে!”
রিভানকে ঝোপের আড়ালে দাঁড়িয়ে নখ কামড়াতে দেখে কপাল কুঁচকে এলো নিশান্তের। শার্টের কলার ঠিক করতে করতে গ্যারেজ থেকে বেড়িয়ে এসে রিভানের পেছনে দাঁড়িয়ে কিছু আস্ক করতে নিবে তার আগেই চোখ গেলো কালি মাখা সানির রামকেলানি খাওয়ার চলচিত্রে নিশান্ত বিস্ময়ে গোল গোল চোখ করে কপালে হাত চেপে ধরলো। রিভান ঠোঁট উল্টে তাকাতেই নিশান্ত আজকের সকালের প্রপোজাল নিয়ে কেঁচালের দৃশ্য কল্পনা করলো। সে বুঝলো তবে অন্বিতাই সেই মেয়ে। যার দরুন সানির প্রতি মায়া হবার বদলে হু হা করে হাসিতে ফেটে পড়লো নিশান্ত মুহুর্তেই।
.
.
.
চলবে………………💕