Game 2 পর্ব -৪৯+৫০

#Game_2
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )
#পর্ব_৪৯+50

মেহেরিন পুরো কাকভেজা হয়ে বসে আছে। বৃষ্টি থেমে গেছে কিন্তু তার কান্না এখনো থামে নি। সে কাঁদছে! কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি উঠে গেছে তার। পুরো শরীর কাঁপছে তার। মেহেরিন কাঁপা কাঁপা গলায়..

– মা! মা তুমি চলে গেলে। আমাকে একা রেখে কেন চলে গেলে তুমি। আমাকে নিয়ে যেতে তোমার সাথে। তাহলে আমি এতো কষ্ট পেতাম না। তোমার আম্মু ভালো নেই মা। ওরা তোমার মেয়েকে ভালো থাকতে দেয় না। তুমি জানো আমি কাকে ভালো বেসেছি! ওই আরমানের ছেলেকে! তোমার খুনির ছেলেকে। মা আমি এমনটা কেন করলাম বলো না। ওকে কেন ভালোবাসলাম আমি। আমি তো খুব বড় ভুল করে ফেলেছি। একটা গোলক ধাঁধা’য় আঁটকে গেছি ‌আমি। তুমি বলো না মা কিভাবে বের হবো আমি এখান থেকে!

অতঃপর কিছুটা থেমে একটা শ্বাস নেয় মেহেরিন। অতঃপর চোখের পানি মুছতে থাকে। তার হাত কাঁপছে! সে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে..

– না মা এটা হতে পারে না। তোমার খুনির ছেলেকে আমি ভালোবাসতে পারি না। সে প্রতিশোধ নিতে এসেছে। তাহলে আমি কেন বসে থাকবো। আমিও আমার প্রতিশোধ নিবো। আমার ফ্যামিলি কিছু করলে আমি কেন চুপ করে থাকবো। মা! মা আমি ঠিক বললাম তো বলো না। তুমি কথা বলছো না কেন? আমি কি করবো এখন!

মেহেরিন দু’হাত মাথা ধরে খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। বলতে থাকে…

– কি করবো আমি মা। বলো না! ঠিক কিভাবে শুরু করবো বলো না! বলো না তুমি!

মেহেরিন আবারো দুই হাটুর উপর উপর মাথা ভর দিয়ে বসে পড়ে। চোখ দুটো বন্ধ করতেই নির্ঝর আর তার কিছু স্মৃতি তার চোখের সামনে ভেসে উঠে। অতঃপর সে চট করে চোখ মেলে ফেলে। চোখ মেলে আকাশের দিকে তাকাতেই আকাশের দিকে তার মায়ের মুখ ভেসে উঠে। মেহেরিন’র চোখে আবারো জল এসে ঠেকে। কিন্তু এবার সে কাঁদে না। না এখন আর কাঁদবে না বলে সে ঠিক করবে।

মেহেরিন দু’চোখে হাত দিয়ে কান্না থামানোর চেষ্টা করে। অতঃপর নিচে নেমে আসে। ঘরে আসতেই তার চোখের সামনে পুরো ঘরের চারদিকে নির্ঝর আর তাকে দেখতে পায়। সে নির্ঝর কে ভালোবাসছে, জরিয়ে ধরে আছে নির্ঝর কে। এসব দেখে মেহেরিন মাথায় হাত দিয়ে চিৎকার করে বলে..

– বন্ধ করো এসব! বন্ধ করো! আমি ভালোবাসি না নির্ঝর কে, বুঝলে তোমরা আমি ভালোবাসি না নির্ঝর কে!

বলেই আয়নার দিকে ফুলদানি টা ছুড়ে মারে সে। আয়না ভেঙে নিচে পড়ে যায়। কিন্তু তার রাগ কমে না। সে আরো জিনিসপত্র এইভাবেই ভাঙতে থাকে। উষা চৌধুরী আর তিশা এসব শুনতে পায়। উষা চৌধুরী দ্রুত নির্ঝর কে কর করে। কিন্তু নির্ঝর ফোন তুলে না।

নির্ঝর পাবে বসে আছে। তার ফোন সাইলেন্ট করা! নির্ঝর ড্রিংক করছে আর একজনের অপেক্ষা করছে আজ তার আসার কথা এখানে! পুরো পাব খালি শুধু নির্ঝর একা বসে আছে। কিছুক্ষণ পর কেউ আসে পাবে। সে এসেই নির্ঝরের সামনে বসে পড়ে। নির্ঝর বলে উঠে…

– এতোক্ষণ লাগলো তোর আসতে আমান!

আমান একটা ড্রিংক হাতে নিয়ে বলল..
– কি হলো এতো তোরজোর করে ডাকলি কেন আমায়।

– তুই আগে আমাকে বল তুই এটা কেন করলি।

– কি করেছি আমি!

নির্ঝর রেগে দাঁড়িয়ে গেল। অতঃপর আমানের কাছে এসে তার কলার ধরে বলল..

– জানিস না কি করেছিস তুই! ভুলে গেলি! সকালের মেহু পাখি’র উপর অ্যাটাক‌ করিয়ে ছিলি তুই।

– আরে এতো রেগে আছিস কেন।
বলেই কলার ছাড়াল সে। অতঃপর আবার বলতে শুরু করল..

– আমি তো শুধু তোর হেল্প করতে চেয়েছিলাম।

– আমি তোর থেকে হেল্প চেয়েছি। তোর সাহস হয় কিভাবে আমাকে না বলে মেহু পাখি’র উপর হামলা করানোর।

– মেহু পাখি ( জোরে হেসে ) এই মেহু পাখি মেহু পাখি! তোর মাথাটা খেয়ে ফেলেছে মেহু পাখি। তুই ভুলে যাচ্ছিস ও শুধু তোর মেহু পাখি না মেহেরিন বর্ষা খান। যার জন্য তুই আজ বাবা থাকতেও অনাথ বুঝলি।

– আমান!

– চিৎকার করিস না। চিৎকার করলেই সত্য পাল্টে যাবে না। তুই ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে যাচ্ছিস নির্ঝর। ভুলে যাচ্ছিস তোর ‌লক্ষ্য‌ কি।

– আমার লক্ষ্য কি সেটা এখন আমার তোর কাছ থেকে শিখতে হবে।

– হ্যাঁ হবে। কারন তুই বার বার ভুল করছিস আর আমি সেটা শুধরানোর চেষ্টা করছি ‌

– বাহ প্রতিশোধ আমার আর তুই এসব কথা আমাকে বলছিস।‌

– কারন তুই তোর প্রতিশোধের কথা ভুলে যাচ্ছিস। মেহেরিন’র ভালোবাসার কাছে নিজেকে নত করছিস।

– ওর ভালোবাসায় আমি নিজেকে নত করছি না আমান। আমি ভালোবাসি না ওকে।

– মিথ্যে বলিস না। তোর চোখ কিন্তু সত্যি বলছে আর যদিও মেনে নিলাম তুই সত্যি মেহেরিন কে ভালোবাসিস না তাহলে ওকে এতোদিনেও মারছিস না কেন। কি সমস্যা তোর ওকে মারতে। মায়ায় আটকে যাচ্ছিস!

– হ্যাঁ হ্যাঁ আমি স্বীকার করছি আমি ভালোবাসি ওকে। ‌অনেক ভালোবাসি তো..

– একবার কি এটাও ভেবেছিস! মেহেরিন তোর সত্যি টা জানলে কি হবে? তোকে বেঁচে থাকতে দিবে তো।

– সেটা আমি দেখে নিবো কিন্তু একটা কথা তুই মেহেরিন কে কিছু করবি না। ও আমার! ওকে ভালোবাসবো আমি আর কষ্ট ও দেবো আমি। এটা শুধু আমার অধিকার। এই অধিকার আমি কাউকে দেয় নি। এমনকি তোকেও না!

– রিলেক্স নির্ঝর রিলেক্স। কিন্তু আমার একটা কথা শোন! তুই যা ভাবছিস তা একদম ভুল। মেহেরিন ততদিন’ই তোকে ভালোবাসবে যতদিন তোর সত্যি টা সে জানে না। আর যখন জানবে তখন তোর পুরো ফ্যামিলি শেষ করবে সে। আবারো একবার সবকিছু হারাবি তুই!

নির্ঝর রেগে আমানের কলার ধরে বলে..
– কি বলতে চাস তুই হুম কি বলতে। মেহু পাখি ভালোবাসে না আমায়।

আমান হেসে বলে..
– সেটা তো এখন বুঝতে পারবি কারন এতোক্ষণে সে তোর সত্যি টা জেনে গেছে।

আমানের কলার ছেড়ে দিয়ে..
– মানে কি বলছিস তুই!

– এটাই যে নির্ঝর চৌধুরী মেঘ আপনি এবার হেরে যাবেন। আবারো একবার হারবেন আপনি। আর এবার আর কেউ না মেহেরিন বর্ষা খান নিজে হারাবে আপনাকে। কারন অভ্র তোর ব্যাপারে সব কিছু জেনে গেছে।

নির্ঝর অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল‌ আমানের দিকে। এসব কি বলছে আমান। আমান বলে উঠে..

– গত ১ মাস ধরে অভ্র নিখোঁজ! জানো এসব! খবর রাখো কিছু। অভ্র তোমার সত্যি টা জানতে গিয়েছিল। আর তোমার সত্যি টা জেনেও ছেড়েছে সে। তুমি আরমান চৌধুরী’র ছেলে এটা সে জানে। আর এখন সে বাংলাদেশে! তাই নির্ঝর চৌধুরী আমাকে না সামলে তোমার মেহু পাখি’র কাছে যাও।‌ কারন তার এখন তোমাকে খুব দরকার!

নির্ঝর দু পা পিছনে গেল। তখন মনে পড়ল ফোনের কথা। নির্ঝর ফোন টা বের করে দেখল উষা চৌধুরী অনেকবার কল করেছে। এসব দেখেই সে দৌড়ে সেখান থেকে বের হয়ে গেল। আমান সেখানেই দাঁড়িয়ে হাসতে লাগলো।
.
নির্ঝর গাড়ি থামিয়ে চৌধুরী বাড়িতে ঢুকে দেখে উষা চৌধুরী আর তিশা সোফায় বসে আছে। দুজনেই অনেক চিন্তিত। নির্ঝর কে দেখে তারা দুজনেই দাঁড়িয়ে গেল।

– কোথায় ছিলি এতোক্ষণ! কখন থেকে কল করছি তোকে!

– কি হয়েছে মা!

– জানি না। আমাদের সাহস হয় নি উপরে যাবার। তবে উপর থেকে অনেক ভাঙচুর’র শব্দ আসছে। ডেভিল কে পাঠিয়েছিলাম সে গিয়ে আবার বের হয়ে গেল। কিছু বললো না!

নির্ঝর আর দাঁড়ালো না। সে দৌড়ে উপরে গেল। দেখল ঘরের দরজা ভেরানো।‌ সে দরজা টা খুলে তাকিয়ে দেখল ঘরের সমস্ত জিনিসপত্র লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে ঝড় উঠেছিল এই ঘরে। নির্ঝর এদিকে ওদিক তাকিয়ে মেহেরিন’কে খুঁজতে লাগলো। দেখতে পেল এক কোনে মেহেরিন বসে আছে। চোখ দুটো বন্ধ করে দেওয়ালের সাথে মাথা ঠেকিয়ে রেখেছে। দুই হাত দু পাশে রাখা। রক্ত ঝরছে হাত থেকে। কাঁচের টুকরো এখনো হাতে লেগে আছে।

নির্ঝর সামনে আগাতে আগাতে ডাক দিলো..
– মেহু পাখি! মেহু পাখি!

মেহেরিন চোখ খুলছে না। নির্ঝর ওর সামনে বসে ওর গালে হাত রাখল। মেহেরিন’র চোখ কেমন মিনিমিনি করতে লাগলো। নির্ঝর খেয়াল করলো মেহেরিন পুরো ভিজে আছে।‌ এছাড়া শরীর ও কেমন ঠান্ডা। নির্ঝরের ভয় হলো কিছু হয় নি তো আবার।

সে ‌মেহেরিন’র গাল ধরে তাকে ডাকতে লাগল। অনেকবার ডাকার পর মেহেরিন চোখ মেলল। কিন্তু নির্ঝরের দিকে তাকাল না। তাকাল সামনে! বলে উঠল..

– দি!

নির্ঝর পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখল নিহা আর ডেভিল দাঁড়ানো। মেহেরিন’র চোখ দুটো ফুলে লাল হয়ে গেছে। মেহেরিন যে এতোক্ষণ কেঁদেছে নিহা’র এতে বিন্দু মাত্র সন্দেহ নেই। নিহা সেখানেই শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। মেহেরিন উঠে দাঁড়াল।‌ কিন্তু একবার ও নির্ঝরের দিকে তাকাল না।

মেহেরিন নিহা’র সামনে গেল। তার কাছে হাত পাতল। নিহা’র চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে। চোখেল কোনে পানি জমল। মেহেরিন রক্তাক্ত হাতে নিহা একটা পেপার দিল। নিহা’র চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ল। মেহেরিন সব জেনে গেছে। এখন কি বলে সান্ত্বনা দেবে সে মেহেরিন কে!

মেহেরিন পেপার টা হাতে নিয়ে বিছানায় বসল। অতঃপর এই রক্তাক্ত হাতেই পেপারে সাইন করতে লাগলো।‌

– মেহু পাখি! কিসে সাইন করছো তুমি!

– …

– মেহু পাখি..

অতঃপর মেহেরিন নির্ঝরের সামনে পেপার ধরে দিল। নির্ঝর পেপার টা হাতে নিয়ে বলে উঠল..

– ডির্ভোস পেপার!

মেহেরিন নির্ঝরের দিকে তাকাল না।‌ সে সামনে হেঁটে চলে গেল। নির্ঝর দাঁড়িয়ে মেহেরিন কে দেখতে লাগলো। নির্ঝর বারবার তাকে ডাকল। কিন্তু মেহেরিন একবার ফিরেও তাকাল না।‌ নিহা আর ডেভিল মেহেরিন কে নিয়ে চলে যাচ্ছে!

মেহেরিন সিঁড়ি দিয়ে নামল। তখন হুট করেই নির্ঝর দৌড়ে এসে এক টানে মেহেরিন কে নিজের কাছে টেনে নিল। নিহা আর ডেভিল তাকে ছাড়াতে গেলে নির্ঝর মেহেরিন’র ঘাড়ে ইনজেকশন পুশ করল। মেহেরিন সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে গেল।

– নির্ঝর পাগল হয়ে গেছো কি করছো এসব। আদুরী কে ছাড়ো।

– না দি! মেহু পাখি কোথায় যাবে না।

– এসব কথা তোমার মুখে মানায় না। ভুলে যেও না তোমার বাবা আর তুমি কিভাবে প্রতারনা করেছো আমাদের সাথে।

দূর থেকে উষা চৌধুরী আর তিশা এসব শুনছে। তিশা এসব শুনে চমকে উঠলো। কিছুই তার মাথায় ঢুকল না। এদিকে নিহা ডেভিল কে বলল মেহেরিন কে নিয়ে আসতে। নির্ঝর তখন’ই মেহেরিন’র মাথায় গান ধরল। নিহা আর ডেভিল দুজনেই ‌চমকে উঠলো। অতঃপর নির্ঝর ওদের মেহেরিন’র কে মারার হুমকি দিয়ে তাকে নিয়ে গেল!

মেহেরিন কে গাড়িতে বসে সে চলে গেল। আর তখনই অভ্র আর নীল এলো। নির্ঝরের গাড়ির পাশ দিয়েই তাদের গাড়ি গেল। অভ্র নির্ঝর কে দেখল কিন্তু মেহেরিন কে দেখতে পেলো না। অতঃপর বাড়ির কাছে আসতেই নিহা সব বলল। অতঃপর তারা সবাই গাড়ি নিয়ে বের হলো নির্ঝর কে খুঁজতে!

এদিকে নির্ঝর আবার গাড়ি চেঞ্জ করলো যাতে কেউ তাকে খুঁজে না পায়। অতঃপর তার কোলে মেহেরিনের মাথা রাখে। মেহেরিন’র দিকে তাকিয়ে বলে..

– তুমি আমার ভালোবাসা মেহু পাখি! আমি এতো সহজে তোমাকে হারাতে পারবো না। সম্ভব না আমার পক্ষে। আমি সব বলবো তোমাকে। সব! এরপর দেখবো আমার ভাগ্য আমাকে কোথায় নিয়ে যায়।

অতঃপর নির্ঝর গাড়ি স্টার্ট দেয়!

#চলবে….

[ রাতে আরেকটা পর্ব দেবার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ সবাইকে! ]#Game_2
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )
#পর্ব_৫০

মেহেরিন জ্ঞান ফিরল! সে আস্তে আস্তে চোখ খুলল। অনুভব করলো তার হাত বাঁধা! মেহেরিন ভালো মতো তাকিয়ে দেখল তাকে একটা চেয়ারে তাকে বেঁধে রাখা হয়েছে। তার হাত পা সব বাঁধা এমনকি মুখেও কাপড় দেওয়া। মেহেরিন ছটফট করছে আর “উমম উমম” করছে।

কিছুক্ষণ এরকম করার পর হঠাৎ নির্ঝর পেছন থেকে এসে ওর মুখের কাপড় সরিয়ে দিল। অতঃপর তার সামনে বসে বসে আপেল খেতে লাগল! মেহেরিন শান্ত চোখেই দেখছে তাকে। কেউই কিছু বলছে না। মেহেরিন ও চুপ আর নির্ঝর ও চুপ!

– কথা বলবে না মেহু পাখি!

মেহেরিন হেসে বলে…
– কি বলবো!

– যা মন চায় বলো!

– আপনি বলার মতো করে কি রেখেছেন। আসলে কি শুনতে চান আপনি!
বলেই সে হাত গুলো ছাড়ানোর চেষ্টা করে। নির্ঝর বলে উঠে..

– মেহু পাখি! আস্তে তোমার হাতে ব্যান্ডেজ করা।

মেহেরিন তাকিয়ে দেখল আসলেই তার হাতে ব্যান্ডেজ। মেহেরিন হেসে বলে উঠে..

– এটা আবার কোন নাটক! আর কতো অভিনয় করবেন আপনি এখন আর কি বা বাকি আছে।‌

– অনেককিছু!

– নির্ঝর! আপনি এখানে আমাকে শুধু বসিয়ে রাখতে পারবেন আর না হলে মেরে ফেলতে পারবেন এ ছাড়া আর কিছু না। আপনার বাবা কে আমি আরো ১১ বছর আগেই মেরে ফেলেছি তাহলে আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন কেন আপনি!

নির্ঝর হেসে বলল..
– মেহু পাখি! গেম টা তোমার হতে পারে কিন্তু আমি এই গেম এ অতোটা খারাপ প্লেয়ার না। আমার বাবা বেঁচে আছে আমি এটা জানি। কিন্তু কোথায় আর কিভাবে এটাই জানি না।

– বাহ! কি ভালো তাহলে যান বাঁচিয়ে নিন।

– যদি এটাই করতে পারতাম তাহলে আর এতো কিছু করতাম না।

মেহেরিন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল..
– কতো কিছু! কতো কিছু করলেন এই একটা মানুষ কে বাঁচানোর জন্য। কতজন কে ধোঁকা দিলেন! কিন্তু আপনি পারবেন না নির্ঝর, আপনি যা চাইছেন তা পাবেন না।

– এই ১১ বছর আমি কম কিছু করে নি, অনেক কিছু করেছি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় নি।

– জানি জানি! যতবার আমার উপর বিপদ এসেছে ততোবার’ই আপনি আমাকে বাঁচিয়েছেন এটা আমি ভাবতাম। কিন্তু সত্যি হলো বিপদ গুলোই আপনি নিজে আমার উপর করাতেন আর পরে নিজেই বাঁচাতেন যাতে আমি আপনাকে বিশ্বাস করি কি এটাই তো!

– মেহু পাখি! এটা প্রায় ১১ বছর আগের ঘটনা। তখন আমরা ভাই বোনরা ১৫ দিন পর হসপিটাল থেকে ফিরছিলাম। প্রায় পনেরদিন! আমাদের কারোই মনে ছিল না যে কি হয়েছিল আমাদের সাথে কারন একটাই আমাদের সবার মেমোরি লস হয়েছিলো! আম্মু আব্বু যতটুকু বলেছিল তা হলো আমারা সবাই পিকনিক করতে যাচ্ছিলাম তখন আমাদের গাড়ির এক্সিডেন্ট হয়। আর এ কারনেই এই অবস্থা। মা বাবা দুজনেই ইনজুরি ছিল কিন্তু ওদের মেমোরি লস হয় নি। যাই হোক এটা নিয়ে কখনো এতো ভাবি নি কারন এটা আমার ভাগ্য ছিল। তবে মা বাবা একটা কথা বলেছিল! বলেছিল এটা যে এক্সিডেন্ট টা আমাদের উপর যেনে বুঝে করানো হয়েছে যাতে আমরা মারা যাই! কিন্তু জানো এই প্ল্যান’টা কার ছিল, তোমার! তুমি আমাদের মারার প্ল্যান করেছিলে কিন্তু আমরা সবাই ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলাম। তখন আমার বয়স ছিল ১৫ আর তিশা’র বয়স ছিল ০৯।

মেহেরিন খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছে নির্ঝরের কথা। নির্ঝর আবার বলল..

আমি আমার লাইফের ১৫ টা বছরের অতীত হারিয়ে ফেলেছিলাম মেহেরিন ১৫ বছর আর তিশা ৯ বছর। এটা সহজ ছিল না আমাদের পক্ষে। তবুও খুব হ্যাপি ছিলাম। কারন এটা যে আমরা ফুল ফ্যামিলি একসাথে ছিলাম। কিন্তু সেই খুশি বেশিদিন টিকল না। হসপিটাল থেকে রিলিজ দেবার পর সেদিন আমরা আবার ফুল ফ্যামিলি বাসায় যাচ্ছিলাম। তখন ও আমাদের সামনে একটা গাড়ি এসে পথ আটকালো। বাবা গাড়ি টা পিছনে নিতে যাবে তখন ও গাড়ি এসে পথ আটকালো। এভাবে চারদিক থেকে পথ আটকানো হলো।

আমি গাড়িতে বসে ছিলাম। তিশা শক্ত করে আমাকে ধরে রেখেছিল। আমি দেখলাম একটা হেলিকপ্টার আসছে। সেখান থেকে কয়েকজন মেয়ে হলো। কে কে ছিল জানো, ডেভিল, দা আর দি ছিল। তাদের সাথে আরেকটা মেয়ে ছিল। আর জানো সেই মেয়েটা কে ছিল?

নির্ঝর মেহেরিন’কে গালে হাত রেখে বলে..
– তুমি! তুমি ছিলে সেই মেয়ে। তোমাকে দেখা মাত্র মা বাবা দুজনেই অনেক ভয় পেলো। আমি তাদের চোখ ভয় দেখতে পেলাম। বাবা আমাদের বাইরে বের হতে না বলে নিজে বেরিয়ে গেল। আর তখন তুমি বাবা কে নিয়ে চলে গেলে। মা আমরা সবাই সেদিন কেঁদেছিলাম কিন্তু বাবা ফিরে আসে নি।

মেহেরিন হেসে বলল..
– খুব ভালো গল্প বললেন আপনি।

– তোমার এটা গল্প মনে হচ্ছে!

– হ্যাঁ খানিকটা!

– কেন? তুমি কি বলতে চাও সে মেয়েটা তুমি ছিলে না।

– ছিলাম! আমিই ছিলাম। তবে..

– তবে!

– কিছু না। কেরি অন! শুনতে চাই আপনার অতীত!

নির্ঝর আবারো বলতে শুরু করে…

বাবা কে হারানোর পর দীর্ঘ ১০ বছর ধরে আমি এটাই ভেবেছিলাম বাবা আর নেই। হয়তো তুমি তাকে মেরে ফেরেছো। প্রতিশোধ’র নেশায় পাগল হয়ে গেলাম আমি। বাবার হারানোর শোক, মা’র কান্না কিছু্ই সহ্য হচ্ছিল না আমার। শুধু এটাই ভেবেছিলাম তোমাকে আমি বাঁচতে দেবো না। কোনমতে না।

সারাটা জীবন তোমার দুর্বলতা খুঁজতে লাগলাম আমি। কি তোমার দুর্বলতা কি? তোমার বাবা! হ্যাঁ তিনি তবে তাকে আমার হাতে পাওয়া অসাধ্য ছিল। আমি জানতাম না কোথায় সে আর খুঁজলেও তাকে পেতাম না। তাই সেই দুর্বলতা আমি বাদ দিলাম। অন্য কোন দুর্বলতা খুঁজতে লাগলাম। কিন্তু পেলাম না কারন তোমাকে মারা যেরকম দুঃসাধ্য ছিল তেমন দা আর দি কেও।

তবুও তোমাকে মারার জন্য হাজারো চেষ্টা করতাম। ক্যাট কে পাঠালাম, আরো অনেকজন কে পাঠালাম। আবার নিজেও এলাম। তবুও তোমাকে মারতে পারলাম না আমি। তবে হ্যাঁ ক্যাট হয়তো সেদিন তোমায় মারতে পারে নি তবে মারলেও আমার ক্ষতি হতো কারন জানো! কারন এটাই আমি তখন জানতে পারলাম আমার বাবা মারা যায় নি, বেঁচে আছেন। কিন্তু তাকে আমি তখন ও বাঁচাতে পারলাম না। এর আগেই তুমি তাকে সরিয়ে ফেললে। তুমি জেনে গেছিলে কেউ এসেছিল বাবা কে খুঁজতে, তাই তুমি তাকে তখনই সরিয়ে ফেললে। আমি সেদিন এতো বছর পর আমার বাবা কে দেখতে পেরেছিলাম। কিন্তু তাকে ধরতে পারলাম না। এমনকি বাবা আমাকে চিনতে ও পারলো না। খুব কষ্ট পেয়েছিলাম সেদিন আমি।

অতঃপর ভাবতে লাগলাম তোমার কি এমন দুর্বলতা আছে যাকে দিয়ে আমি আমার বাবা কে পেতে পারি। অনেক ভাবলাম! অবশেষে একটা কথা আমার মাথায় এলো। সেটা হলো..

– সেটা হলো আমার ভালোবাসা! আমার ভালোবাসা কে কাজে লাগিয়ে নিজের বাবা কে নিতে চেয়েছিলেন আপনি এই তো! এজন্য’ই এতো দিন ভালোবাসার অভিনয় করলেন আপনি!

– হ্যাঁ আমি হয়তো তোমার ভালোবাসা কে কাজে লাগাতে চেয়েছিলাম কিন্তু এতো মিথ্যা’র মাঝে এই একটাই সত্যি ছিল “আমি তোমাকে ভালোবাসি”!

মেহেরিন জোরে জোরে হেসে দিয়ে বলল..
– হায় আপনার ভালোবাসা!

– মেহু পাখি!

– আচ্ছা বলুন বলুন। এরপর কতো কি করলেন! বার বার আমার প্রাণ বাঁচানো, এসব দা কে দেখানো। আমার মনে আপনার জন্য ভালোবাসা’র একটু একটু অনুভূতি তুলে ধরা সব! সব আপনার প্ল্যানের অংশ ছিল। যাতে আমি আপনাকে বিয়ে করি আর আপনি আমাকে ব্যবহার করতে পারেন।

– মেহু পাখি আমি তোমাকে ব্যবহার করতে চায়নি।

– আপনি এখনো বলবেন এই কথা।

– মেহু পাখি! আমার একদিকে তুমি ছিলে আরেকদিকে আমার ফ্যামিলি। আমার আর কোন উপায় ছিল না। রাতের পর রাত আমার মায়ের চোখের পানি দেখেছি আমি। দেখেছি আমার বোন কে বাবা’র আদর ছাড়া একা থাকতে। এসব সহজ ছিল না আমার জন্য!

– আমার জন্য অনেক সহজ ছিল না। অনেক সহজ ছিল নিজের মা কে নিজের চোখের সামনে আগুনে পুড়ে যেতে দেখা। লাগাতার ৩ দিন মা কে অত্যাচার হতে দেখা। সহজ ছিল খুব!
বলতে বলতে মেহেরিন’র চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরল। নির্ঝর ওর চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল..

– আমি বুঝি তোমার কষ্ট টা।

– না নির্ঝর। আপনি বুঝেন না। আপনি আমার কষ্ট টা বুঝেন না। কারন আপনি কখনো এমনটা দেখেন নি। কিন্তু আই প্রমিস ইউ দ্যাট আপনি এইবার দেখবেন। নিজের বাবা কে নিজের চোখের সামনে মরতে দেখবেন। তখন আপনি এটা ফিল করবেন। এই কষ্ট টা কতো টা ভয়ানক। যা রাতের পর রাত আপনাকে ঘুমাতে দিবে না। আপনি তখন বুঝতে পারবেন।

– তুমি এমন কিছু করবে না মেহু পাখি।

– এর চেয়েও বেশি করবো। কি করবো আপনি ভাবতে পারছেন না।

– আমি করতে দেবো না তোমায় এমনটা। করতে দেবো না। এতবছর পর নিজের বাবা কে কাছে পেয়ে আমি হারাতে দেবো না

– নির্ঝর! আপনার বাবা কে আমি এতোদিন শুধু বাঁচিয়ে রেখেছিলাম কষ্ট দেবার জন্য। তিলে তিলে তাকে শেষ করে দেবার জন্য। যাতে উনি নিজে তার মৃত্যু কামনা করে। আর এই সময়টা চলে আসছে। আপনার বাবার শেষ দিন চলে আসছে।

– মেহু পাখি!

– চেঁচিয়ে লাভ নেই। আপনি আমাকে মেরে ফেললেও তাকে বাঁচাতে পারবেন না। কারন উনার মরে যাওয়া ঠিক হয়ে আছে। আপনি সারাজীবন খুঁজলেও তাকে ফিরে পাবেন না।

নির্ঝর অস্থির হয়ে উঠলো। পায়চারি করতে লাগলো। বার বার ঘাম মুছতে লাগল। মেহেরিন নির্ঝর কে এভাবে দেখে জোরে জোরে হাসতে লাগলো। নির্ঝর রেগে মেহেরিন’র চেয়ারের দুই হাত ধরে তার কাছে গিয়ে বলল..

– হাসছো কেন?

– আপনাকে দেখে, আপনার ভয় কে। আপনার এই অস্থিরতা দেখে হাসছি আমি নির্ঝর! খুব হাসি পাচ্ছে আমার নির্ঝর খুব!

নির্ঝর হেঁসে বলল..
– তবে শেষ হাসি টা আমি হাসবো আদুরী।

মেহেরিন অবাক হয়ে তাকাল। নির্ঝর বলে উঠে..
– আমি ভেবেছিলাম আমি তোমাকে বুঝাতে পারব। আমার ভালোবাসা বোঝাবে তোমাকে। কিন্তু আমি ব্যর্থ। আমি ব্যর্থ হলাম আদুরী।

– আপনি তো দেখি গিরগিটির চেয়েও দ্রুত রঙ পাল্টান।

– কি করবো বলো। আমি কি করবো। আমাকে কেউ বুঝতে চায় না কেন। কেন বুঝতে চাও না তুমি।

– কারন আপনি ভুল। একজন খুনি কে বাঁচাতে চান আপনি।

– উনি আমার বাবা মেহু পাখি। একজন সন্তান হয়ে আমি কিভাবে নিজের বাবা কে হারাতে পারি। বলো! তুমি পারবে!

মেহেরিন খানিকক্ষণ’র জন্য চুপ হয়ে গেল। অতঃপর বলল..

– ওকে ডান। শেষ বার সুযোগ দিলাম আপনাকে। এই গেম এ আপনি আপনার বাবা কে বাঁচানোর চেষ্টা করুন আর আমি আমার মা’র খুনি কে মারার দেখি এই গেম এ শেষ পরিনতি কি হয়।

– তুমি বুঝবে না নাহ।

– আপনি পারবেন না আমাকে বুঝাতে।

নির্ঝর হেসে বলল..
– মেহু পাখি! আমি জানি তুমি নিজের মৃত্যুতে এতো ভয় পাও না। কিন্তু.. কিন্তু যদি তোমার ফ্যামিলির কেউ মারা যায় তখন!

– নির্ঝর..

– ইয়েস মেহেরিন যতদিন আমি চাইবো আমার বাবা ততোদিন তোমার হাত থেকে বেঁচে থাকবে। ভুলে যেও না তোমার ফ্যামিলি তে এখনো আপন ম্যামবার আছে যারা নিজের প্রটেক্ট নিজে করতে পারে না। শান্ত, অরনি আর এখন তো নিশি আর ক্যাট দুজনেই প্রেগন্যান্ট!

মেহেরিন হাত খোলার জন্য ছটফট করতে লাগলো। রেগে বলল..

– এমন কিছু ভাববেন না নির্ঝর আমি আপনার প্রাণ নিয়ে নেবো।

নির্ঝর মেহেরিন’র চেয়ার ধরে বলল..
– শান্ত হও মেহেরিন শান্ত হও, আমি শুধু বলেছি এতেই তোমার এই অবস্থা। এখন ভাবো আমার কি অবস্থা।

– ওরা নিষ্পাপ। কোন দোষ নেই ওদের বুঝলেন আপনি।

– মেহু পাখি আমি এটা বলছি না বাবা’র দোষ নেই। আছে তবে এটার টা কি। এমনো তো হতে পারে বাবা কারো ভয়ে এমনটা করেছে।

– সম্পত্তি। আপনার বাবা সম্পত্তি’র কারনে এমনটা করেছে।

– আমি সত্যি টা জানতে চাই। আমি জানি আমার বাবা ভুল করতে পারে না।‌

– বাবার শোকে আপনি অন্ধ হয়ে গেছেন। ঠিক ভুল সব ভুলে গেছেন।

– জানি না। চাই না কোন ভুল বা ঠিক। আমি শুধু আমার বাবা কে চাই ব্যস।

– তাহলে আমাকে হারিয়ে ফেলবেন চিরদিনের জন্য!

নির্ঝরের গলা ভারী হয়ে আসছিল। সে একটা ঢোক গিয়ে বলল..

– আমি ভালোবাসি তোমাকে! কিন্তু..

– তাহলে আর কি? এই গেইম এভাবে চলতে থাকবে। আর এর শেষ পরিনতি হবে একটা অসমাপ্ত প্রেম কাহিনী!

– না এটা হবে না। ( মেহেরিন’র সামনে একটা পেপার রেখে ) সাইন করো এতে!

– কি এটা!

– এগ্রিমেন্ট! আমি ডির্ভোস না দেওয়া অবদি তুমি আমাকে ছাড়তে পারবে না।

– কিহ?

– হ্যাঁ ! মেহেরিন আমি পারবো না তোমার ছাড়া থাকতে আর না পারবো বাবা কে ছাড়া থাকতে। তোমাদের দুজনকেই চাই আমার। আমি চয়েজ করতে পারবো না।

– আমি সাইন করবো না।

– মেহু পাখি সাইন করো নাহলে শেষ করে দেবো আমি তোমায়!

– কিভাবে? আমার সব সিক্রেট গিয়ে পুশিশ কে বলে দিবেন। আর তারা আমাকে ধরে নিয়ে যাবে এভাবে!

– না! আমি জানি তুমি এতোটা বোকা নও। বিয়ের পরদিন তুমি সব কিছু চেঞ্জ করে ফেলেছো।

– তাহলে!

নির্ঝর ফোন বের করে কাউকে কল করল। অতঃপর একটা ভিডিও দেখাল মেহেরিন কে। মেহেরিন দেখল ভিডিও তে শান্ত, অরনি বাড়ির সবাই উপস্থিত! সে অবাক হয়ে নির্ঝরের দিকে তাকাল। নির্ঝর বলল..

– আমি চাইলে এখনি অনেক কিছু করতে পারি। আমার এমন একজন লোক আছে যে তোমার পরিবারের অনেক কাছের। অনেক বিশ্বাস করো তুমি তাকে। আমি বললে সে কিন্তু সব কিছু শেষ করে দেবে।

– আপনি!

– তুমি বললে করবো আর না বললে করবো না। তোমার যখন যেখানে মন চায় তুমি যেতে পারো কিন্তু তুমি তাকে খুঁজে পাবে না। ফলে আমি আমার বাবা কে খুঁজে পেতে সময় পাবো।

– এতো বুদ্ধি ভালো না। গেইম যখন তখন যেখানে সেখানে পাল্টে যাবে। গেইম এখন আপনার হাতে। আমার হাতে আসতে সময় নিবে না।

– সাইন করো!

– আমার হাতটা খুলুন।
নির্ঝরের মেহেরিন এক হাত একটু খোলে পুরোপুরি না। মেহেরিন নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে বলে..

– এতো সচেতন আগে হলে ভালো হতো!

অতঃপর মেহেরিন পেপারে সাইন করল। নির্ঝর তাকে খুলে দিল। মেহেরিন দাঁড়াতে গিয়েও পড়ে যেতে নিল। নির্ঝর ওকে ধরতে যাবে মেহেরিন না করলো। অতঃপর কোনমতে দাঁড়াল। না খাওয়ার ফলে এমনটা হচ্ছে।

– খুব জেদি তুমি!

– জলন্ত আগুন আমি!

– আর এই আগুন কে ভালোবাসি আমি।

– মনে রাখবেন, আগুনের ধর্ম সবকিছু জ্বালিয়ে দেওয়া। শেষমেষ না এই আগুনেই জ্বলতে হয় আপনাকে।

– গাড়িতে গিয়ে বসো!

মেহেরিন রেগে চলে গেল সেখান থেকে। নির্ঝর দাঁড়িয়ে ওর চলে যাওয়া দেখতে থাকে।

#চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here