I’m Mafia lover পর্ব -১৩

#i_m_mafia_lover
#part_13
#sabiha_kh

ইসান ছবির দিকে তাকিয়ে মাথা ঝুকিয়ে বললো- হমম চিনি।।। মেরান এটা।। ছয় বছর আগে কলেজের ক্যান্টিনে সবার সামনে অপদস্ত করেছিলাম।।

আকাশ- এটা সেই মেরান???( অবাক চোখে ইসানের দিকে তাকিয়ে)

ইসান- হমমম।।। (ছবির দিকে তাকিয়ে গম্ভীর সুরে)




ইসান ফোন আকাশের হাতে দিয়ে মাহিমের দিকে তাকিয়ে বললো- আচ্ছা বল ইমাকে ফাসালি কেন?? ও তো তোর বন্ধু তাই না!!

মাহিম ভীতু সুরে বললো- হমম ইমার আমার একজন ভালো বন্ধু!!! কিন্তু কি করবো মাহাবুব স্যার আমাকে এতো গুলো টাকা দিয়েছে কাজের জন্য আর আমি করবো না তা তো হয়না!!! তাই কাজটা করতে আমি বাধ্য হয়েছি৷

ইসান মাফিয়া স্টাইলে পায়ের উপর পা তুলে বসে বললো- এগুলো কি ভাবে করলি বলতো শুনি।।

মাহিম- তিন দিন আগে আমি মাহাবুব স্যারের কথা অনুযায়ি বিষাক্ত ইনজেকশন নিয়ে মিঃ মিনহাজের ক্যাবিনের দিকে গেলে মিঃ ইসান চৌধুরীর বডিগার্ডরা আমাকে ভিতরে ঢুকতে দেয় না।। আমি অবাক হয়।। ওরা বললো এই রুমে এক মাত্র ইমা ছাড়া আর কেও ঢুকতে পারবে না।।। আমি এই কথা মাহাবুব স্যারকে জানায়।। স্যার কথাটা শুনে খুব খুশি হয়।।। স্যার আমাকে বললো ইনজেকশন টা ইমাই দিবে মিঃ মিনহাজকে।। আমি শুধু ইনজেকশনের ঔষধের বোতলের লেবেল টা যেন বদলে দিয়৷৷ আমি বুঝতে পারছিলাম না কি ভাবে করবো!!! তারপর গতকাল রাতে সুযোগ পাই।।। ইমার সাথে থাকা নার্স কে ইমা বাড়ি চলে যেতে বলে আর সেই সুযোগে আমি আমার কাজ টা শেরে ফেলি।। আমাদের প্ল্যান মতো ইমা সেটাই করে।।। ইমা সেই ইনজেকশন মিঃ মিনহাজ কে পুশ করে।।।

ইসান উঠে মাহিমের বুকে দিলো এক লাথি।।। মাহিম উল্টে পরলো।।। ইসান মাহিম বুকের উপর পা রেখে রাগান্বিত সুরে বললো- তুই কেমন মানুষ।।। টাকার জন্য একজন মেয়ের ক্যারিয়ার নষ্ট করে দিলি।।।

মাহিম মিনতি সুরে বললো- স্যার আমাকে মারবেন না আমাকে মাফ করে দিন প্লিজ।।। আমার বাবা মা আছে।। তাদের আমিই ভরসা।।।

ইসান- ইমার ক্ষতি করার আগে এই কথাটা মনে হয়নি যে ওর একটা মেয়ে আছে।। ওই মেয়েটার কি হবে।।।

মাহিম- আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি আর কখনো এমন করবো না আমাকে ছেড়ে দিন স্যার।।।( কান্না করে মিনতি সুরে)

ইসান মাহিমের বুকের উপর থেকে পা সরিয়ে মাহিমের কলার ধরে রাগান্বিত সুরে বললো-

ইসান- তোর সাথে আর কে কে জোরিত আছে বল???

মাহিম- আমার সাথে কেও নেই।। স্যার আমাকে একাই এগুলো করতে বলেছে।।।

ইসান- তোর মাহাবুব স্যার এখন কথায়??

মাহিম আমতা আমতা করতে লাগে।। ইসান মাহিমের মুখে জোরে একটা ঘুসি মারে।। মাহিম কান্না করে ভীত সুরে বললো-

মাহিম- স্যার আজ সকালেই USA চলে গেছে।।।

ইসান- USA !!! (কাপাল কুচকে) মাহাবুব USA এ কি করে ???( একটু রেগে)

মাহিম- আমি জানিনা আমি সত্যি বলছি আমি জানিনা।। শুধু এটুকু জানি মাহাবুব স্যার নিজেও একজন ডাক্তার।।।।

ইসান মাহিমের মুখে দুই তিনটা ঘুসি মেরে রাগান্বিত সুরে বললো-

ইসান- তোকে এখন কে বাচাবে বল?

মাহিমের ইসানের কথা শুনে ভয়ে আত্মা শুকিয়ে গেলো।। মাহিম ভয়ে জোরে জোরে কান্না করে মিনতি সুরে বললো-

মাহিম- আমাকে ছেড়ে দিন আপনার পায়ে ধরি।। আমার বুড়া বাপ মার কথা একটু ভাবেন।। আমাকে প্লিজ ছেড়ে দিন।।। আমি সত্যি বলছি আমি আর এমন কিছু করবো না কখনো।।৷

ইসান মাহিমের কলার ছেড়ে দিয়ে চেয়ারে গিয়ে বসে শান্তু সুরে বললো- ছেড়ে দিবো এক শর্তে।।

মাহিম কান্না সুরে বললো- বলুন কি শর্ত??।

ইসান- আমি যা বলবো তাই করতে হবে।।। যদি চালাকি করার চেষ্টা করিস তাহলে,,,, (বলে মোবাইলের রেকর্ড চালু করে দিলো।।। মাহিম- আমিই সব করেছি।।,,,,,,,,,,,,,,,) (মাহিম রেকর্ড শুনে বড় বড় চোখ করে ইসানের দিকে তাকালো)

ইসান- এইটা পুলিশকে দিবো।। তারপর তোর লাইফ শেষ।। মনে রাখিস।।।

মাহিম উত্তেজিত সুরে কান্না করে বললো- না না,, না,, প্লিজ এমন করবেন না।। আপনি যা বলেবেন আমি তাই করবো।।। সত্যি বলছি।।।

ইসান- হমমম।। ওকে ছেড়ে দাও।।। ( আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো)

আকাশ গিয়ে মাহিমের হাত খুলে দিলো।।।

ইসান- এখন যা বাড়ি গিয়ে নিজের চিকিৎসা কর।। আর আমার ফোনের অপেক্ষা করবি।।। যদি তোর মাহাবুব স্যারকে কে কিছু বলার চেষ্টা করিস তাহলে বুঝবি আমি কে!!!

বলে ইসান উঠে চলে গেলো এবং জনি কে বললো- মাহিমকে তার বাড়িতে পৌছে দিতে।।।

Time skip

পরের দিন সকালে,,,,

ইমা ইসমাকে স্কুলের জন্য রেডি করে দিলো।।। এমন সময় ইমার ফোন আসে।। ইমা হাতে ফোন নিয়ে দেখে রুহি কল করেছে।। ইমা ফোন রিসিভ করে কানে ধরলো।।

ইমা- বলো রুহি??

রুহি- I sm sorry ইমা।। আমি তোমার জন্য কিছুই করতে পারলাম না।।৷

ইমা- কি করবে তোমার হাতে কিছু আছে বলো?? (মন খারাপ করে)

রুহি- আমি একটু পর তোমার বাসায় আসছি। কথা আছে।।

ইমা- ওকে।।। (বলে ফোন কেটে দিয়ে বিছানায় বসলো।)

ইসমা ইমার মন খারাপ দেখে ইমার হাত ধরে বললো- আম্মু তুমি মন খারাপ করো না।।। তোমার মন খারাপ দেখলে আমার খুব কষ্ট হয়।। ( মুখ ভার করে)

ইমা ইসমাকে জোরিয়ে ধরে বললো- আমি একটুও মন খারাপ করিনি মা।।।

বলে ইসমার গালে চুমু দিলো।। ইমা রোকসানার দিকে তাকিয়ে বললো-

ইমা- ইসমার খেয়াল রেখো।।

রোকসানা-ওকে ম্যাডাম।।। চলো ইসমা মামুনি৷ (মুচকি হেসে)

ইসমা ইমাকে টাটা দিয়ে চলে গেলো স্কুলে।।। ইমা সোফায় বসে মাথা নিচু করে মুখে হাত দিয়ে কান্না করতে লাগে এবং বলে-

ইমা- কি হয়ে গেলো এগুলো।। কেন হলো কেন???

Time skip

রুহি ইমার হাতের উপর হাত রেখে বললো- ইমা মানুষ তো অনেক কথায় বলে সব কথায় কান দিতে নেই।।

ইমা- রুহি খারাপ লাগছে খুব।।। আমি কখনো কল্পনাও করিনি আমার সাথে এমন একটা ঘটনা ঘটবে।। টিভিতে বার বার একি নিউজ দেখাচ্ছে।। (মন খারাপ করে)

রুহি- ইমা মিঃ ইসান,,,,,,,

বলতেই দরজার কলিংবেল বেজে উঠলো।। ইমা দরজা খুলার জন্য উঠতে গেলে রুহি ইমাকে বসতে বলে এবং নিজে গেলো দরজা খুলতে।। রুহি দরজা খুলতেই দেখে ইসান।।। রুহি অবাক চোখে ইসানের দিকে তাকিয়ে থাকে।। ইমা কনো সারা শব্দ না পেয়ে উঠে গেলো।।।

ইমা- কে এসেছে!!!( বলে দরজার সামনে আসতেই দেখে ইসান।।)

ইসান- হাই ইমা।।। হাই ডাঃ রুহি।। ( মুচকি হেসে)

রুহি – স্যার আপনি!!! (অবাক চোখে)

ইসান ইমার দিকে তাকিয়ে বললো- আমি ইমার সাথে একটু কথা বলতে এসেছি।।

রুহি হেসে বললো- আসুন স্যার আসুন। ভিতরে আসুন।।। (ইসান ভিতরে আসলো)

রুহি এক্সাইটেড সুরে বললো- বসুন স্যার।। এখানে বসুন।।।

ইসান- না বসবো না।। ইমা আমরা একটু আলাদা কথা বলতে পারি!!(ইমার দিকে তাকিয়ে)

ইমা- তুমি রুহির সামনে বলতে পারো। রুহি আমার ভালো বন্ধু।।

ইসান- আ,,,,ওকে।।

ইমা- বসো ইসান।।

ইসান বসলো এবং পকেট থেকে ফোন বের করে ইমা রুহিকে মাহিমের বলা কথার রেকর্ড শুনালো।।।

ইমা- এটা মাহিম!!!( হতবাক হয়ে বিষ্ফরিত চোখে ইসানের দিকে তাকিয়ে বললো)

ইসান- হমম।। আমি বলেছিলাম না!!!!

রুহি- মাহিম এমন একটা কাজ কি ভাবে করলো?? (একটু রাগান্বিত সুরে বললো)

ইসান- টাকার জন্য করেছে।। তুমি জানো এগুলো কাজ কার কথায় করেছে??( ইমার দিকে তাকিয়ে)

ইমা – কার কথায়???

ইসান- মেরান এর কথায়।।

রুহি- মেরান কে?? (কপাল কুচকে)

ইমা- আমাদের কলেজের মেরান??? (হতবাক হয়ে)

ইসান- হমম তোমাদের হসপিটালের চেয়ারম্যান এর ছেলে ও।।

রুহি- কিন্তু চেয়ারম্যান স্যারের ছেলের নাম মাহাবুব।। মেরান না।। (বিস্মিত চোখে)

ইসান-ওর নাম মাহাবুব খন্দকার মেরান।। মেরান হলো ডাক নাম।।

রুহি- সবি তো বুঝলাম। কিন্তু মাহাবুব স্যার ইমার কেন ক্ষতি করতে চায়লো?? ( বিস্মিত চোখে)

ইসান- আমি জানি না সে আসলে ইমার ক্ষতি করতে চায় নাকি আমার।।। (চিন্তিত সুরে)

ইমা- আমি বিশ্বাস করতে পারছি না মেরান আমার সাথে এমন একটা কাজ করলো।। আরে আমি মেরান একি মেডিকেল কলেজে পরেছি একসাথে।। আমার সাথে ও ভালোই কথা বলতো।। কিন্তু ও আমার সাথে,,,,,,,,,, (মন খারাপ করে)

ইসান- এখানে নিশ্চয় কনো ঘটনা আছে ইমা।। এটা জানতে হবে।।।

রুহি- কি ভাবে জানবেন?? মাহাবুব স্যার আমেরিকায় থাকে।।

ইমা বোকার মতো হাসি দিয়ে বললো- কি আজব বিষয় আমি জানিই না আমি যেই হসপিটালে চাকরি করি সেই হসপিটালের মালিকের ছেলে মেরান।।।

রুহি ইসানের দিকে তাকিয়ে বললো- স্যার প্রমান তো আপনার হাতে আছে।। এখন পুলিশ কে বলে দিলেই তো পারেন!!! পুলিশ বিষয় টা সামলিয়ে নিবে!! আর ইমার মাথা থেকে এই অপরাধের দোষ টা ও মুছে যাবে।।।

ইসান- না,,, এটাতে তেমন লাভ হবে না।।হমম মাহিমের জেল হবে ইমার মাথার উপরের দোষটা মুছে যাবে। কিন্তু মেরান যে চুপ থাকবে এমন তো না।। ও অন্য ভাবেও তো ইমার ক্ষতি করতে পারে।।। আসলে আমার জানতে হবে মেরান এগুলো কেন করছে?? কি চায় ও।।।

ইমা- হমম আমিও জানতে চায়।।। ও আমার সাথে কেন এমন করলো!!! (একটু রাগান্বিত সুরে)

বলতেই দরজা খুলে রোকসানা ইসমাকে নিয়ে বাড়িতে ঢুললো।।।। ইসমা কনো দিক না তাকিয়ে মুখ ভার করে নিজের রুমের দিকে চলে গেলো।৷ ইসান ইমা রুহি একটু অবাক হয় ইসমা কে এই ভাবে চলে যেতে দেখে৷

ইমা রোকসানার দিকে তাকিয়ে করলো- কি হয়েছে??

রোকসানা – ইসমার ক্লাসমেট রা ওকে বাজে কথা বলেছে আপনাকে নিয়ে।।

ইমা মাথায় হাত দিয়ে একটু রেগে বললো- আমারি ভুল ইসমা কে আজ স্কুলে পাঠানোই ঠিক হয়নি।।।

বলে ইমা যেতে লাগলে ইসান বললো- দাড়াও ইমা।। (ইমা,ইসানের দিকে তাকালো) আমি দেখছি।।৷

ইমা- ওকে।।।( মাথা ঝুকিয়ে)

ইসান ইসমার রুমে গেলো দেখে ইসমা মন খারাপ করে জানালার সামনে দাড়িয়ে আছে।।। ইসান রুমের দরজা ভিরিয়ে দিয়ে ইসমার পাশে গিয়ে দাড়ালো।। এবং বললো- কার মন খারাপ??( ইসমা আর চোখে ইসানের দিকে তাকায়)

ইসান- মনে হচ্ছে আমার বন্ধুর মন খারাপ।। কিন্তু কই আমার বন্ধু টা দেখতে পাচ্ছি না তো!!!( জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে বলে)

ইমা ইসানের দিকে ঘুরে মুখ ভার করে বললো- এই খানে আমি।।।

ইসান- আরে কথাও বলছে তো!! কিন্তু দেখতে পাচ্ছি না কনো?? বন্ধু কথায় তুৃমি??

ইসমা ইসানের কোর্ট টেনে বললো- আমি এই যে নিচে৷৷ (একটু রেগে)

ইসান ইমার দিকে তাকিয়ে হেসে বললো- আরে বন্ধু তুমি এখানে আমি তো দেখতেই পাইনি। এসো আমার সাথে।।।
বলে ইসমার হাত ধরে বিছানার উপর বসলো।। এবং ইসান হাঁটু ভেঙে ইসমার সামনে বসলো।।

ইসান- ইসমা আমি তো তোমার বন্ধু ।। তো বন্ধুকে বলবা না কি হয়েছে কেন মন খারাপ তোমার??

ইসমা কান্না ভড়া চোখে মাথা তুলে ইসানের দিকে তাকালো।। ইসমার চোখে পানি দেখে ইসানে বুকের মধ্যে কেমন যেন হয়ে উঠলো।। ইসান ইসমাকে জোরিয়ে ধরে বললো- কি হয়েছে মা।। তোমাকে কে কি বলেছে আমাকে বলো আমি সবাইকে বোকে দিবো।। এভাবে কান্না করে না।।।

ইসমা কান্নার সুরে বললো- বন্ধু আমার বান্ধবী রা বলেছে তোর মা খুনি।। তুই খুনির মেয়ে।।। ওরা খুব বাজে।।

ইসান ইসমাকে ছেড়ে ইসমার চোখ মুছে দিয়ে বললো – তাহলে এই ঘটনা।। এই জন্য তোমার মন খারাপ!! ঠিকাছে মামুনি আমি ওদের অনেক বকা দিবো তুমি কান্না করো না ওকে!!!

এদিকে ইমা আসতে করে ইসমার রুমের দরজা খুলে দেখে ইসান ইসমাকে শান্ত করছে।।।

ইসমা- বন্ধু আমি ওই স্কুলে পরতে চায়না।। আমি আর যেতে চায়না ওই স্কুলে।। (মুখ ভার করে)

ইমা রুমের ভিতরে ঢুকে ইসমা বলে ডাক দিলো।। ইসমা ইমার দিকে তাকিয়ে বিছানা থেকে নেমে দৌড়ে গিয়ে ইমাকে জোরিয়ে ধরলো।। ইসান উঠে দাড়িয়ে ইমার দিকে তাকালো।

ইমা হাটু ভেঙে ইসমার সামনে বসে বললো- কান্না করো না মা।।।

ইসমা- আমি ওই স্কুলে যাবো না মা।।

ইমা- ওকে ঠিকাছে যেও না।।।।

ইসান এসে ইসমার মাথায় হাত দিলে ইসমা ইসানের দিকে তাকায়।।

ইসান ইসমার সামনে বসে বললো- তোমাকে ওই স্কুলে পরতে হবে না। তোমাকে অন্য স্কুলে পড়াবো।।। অনেক বড় স্কুলে।। বড় স্কুলে তুমি পরবে??

ইমা কাপল কুচকে বললো- এগুলো কি বলছো ইসান??

ইসান- ঠিকি বলছি।।। (ইমা একটু রেগে উঠে দাড়ালো)

ইসমা ইসানের কথা শুনে খুব খুশি হয়ে এবং ইসানকে জোরিয়ে ধরে বলে- তুমি খুব ভালো বন্ধু।।।

রোকসানা রুহি দরজার কাছে দাড়িয়ে দেখছে আর মুচকি হাসছে।।।

ইমা মুখ টা গম্ভীর করে রুম থেকে বের হতেই দেখে রুহি রোকসানা দাড়িয়ে আছে।। ইমা ওদের পাশ কাটিয়ে বের হয়ে চলে গেলো।।। রুহি ইমার পিছে গেলো।। রোকসানা রুমে ঢুকে বললো-

রোকসানা- মামুনি।।। ( ইসমা রোকাসানার দিকে তাকায়৷ ) স্কুল পোশাক চেঞ্জ করতে হবে তো।।

ইসান- হমম ইসমা তুমি স্কুল পোশাক চেঞ্জ করে নাও আমি বসার রুমে যাই।। ঠিকাছে।। (মুচকি হেসে)

ইসমা- আজ কিন্তু চলে যেও না।।

ইসান – ওকে সুইটহার্ট।।। ( মুচকি হেসে ইসমার কপালে চুমু দিলো)

ইসান ইসমার রুম থেকে বের হয়ে বসার রুমে আসে দেখে ইমা মুখ ভার করে একাই বসে আছে।।।

ইসান- ডাঃ রুহি!!!

ইমা- চলে গেছে ওর হসপিটাল থেকে ফোন এসেছে।।

ইসান বসলো এবং ইমার দিকে তাকিয়ে বললো- sorry ইমা।।

ইমা ইসানের দিকে ভ্রুক্ষেপ করে তাকিয়ে বললো- কেন ইসান,,, কেন ইসমাকে এই কথা বলতে গেলে?? ইসান আমার এখন চাকরি নেই।। আমি কি করে সংসার চলাবো তাই জানিনা। আর তার উপর তুমি ওকে বড় স্কুলের কথা বললে এতো টাকা,,,,,,,

বলতেই ইসান বললো-

ইসান- ইমা আমি আছি,, আমি ইসমাকে ভালো স্কুলে পড়াতে চায়।।। প্লিজ এটা নিয়ে আর না বলো না।।।

ইমা- ইসান তুমি,,,,,,

বলতেই ইসান বললো- আমি জানি আমি বাইরের মানুষ।।। কিন্তু,,,,, (বলে চুপ হয়ে গেলো) ইমা আমাকে তো বন্ধু ভাবতে পারো।। নাকি তোমার বন্ধু হওয়ার অধিকার টাও আমার নেই!!!

বলতেই ইসমা আসলো।।।

ইসমা ইসানের পাশে বসে বললো- তুমি আমার সাথে খেলবে???

ইসান- হমম খেলবো তবে আজ না।। আমার একটু তোমার আম্মুর সাথে কথা আছে।।

রোকসানা- মামুনি তুমি চলো আমি তোমার সাথে খেলি।।।( হেসে)

ইসমা- ওকে চলো।।। বাই বন্ধুু।।। (হেসে)

ইসান মুচকি হেসে- বাই।।।( ইসমা উঠে রোকসানার সাথে চলে গেলো।।)

ইসান- ইমা আসল কথা বলা হয়নি।। আমি ঠিক করেছি আজ রাতেই USA যাবো।।। মেরানকে ধরতে হবে।। তুমি কি যাবে আমার সাথে???

ইমা- আমার তো পাসপোর্ট করা নেই।। আর এখন এই মুহুর্তে এতো টাকাও নেই।।।

ইসান- এগুলো নিয়ে ভেবো না আমি প্রাইভেট প্লেনে যাবো।। তুমি শুধু তৈরি থেকো।। তাহলেই হবে।।

ইমা- কিন্তু ইসমা!!!!

ইসান- ইসমা আমাদের সাথে যাবে।। সাথে তোমার মেড রোকসানা ও।।।

ইমা- কিন্তু,,,,,

ইসান- কনো কিন্তু না।। তুমিও জানতে চাও মেরান কেন এমন করলো আমি জানতে চায় ও কেন এমন করলো।৷ আর এটা জানতে হলে একটাই পথ USA যেতে হবে।।। তুমি চিন্তা করো না আমি তোমার, ইসমার, রোকসানার পাসপোর্টের ব্যবস্থা করে নিবো।।। রাত ৯ টাই আমার গাড়ি আসবে তোমাদের নিতে।। তৈরি থেকো।। এখন আমি আসি।।। ( বলে ইসান উঠে দাড়ালো)

ইমা উঠে দাড়িয়ে বললো- ওকে।।।

Time skip

সন্ধ্যা ,,,,,

ইমা ইসমার কাপড় নিজের কাপড় গোছিয়ে ব্যাগে তুলছে।।

ইমা মনে মনে ভাবছে – আমি ঠিক করছি ইসানের সাথে যেতে রাজি হয়ে!!!

ইসমা এসে ইমার হাত ধরলে ইমা চমকে ইসমার দিকে তাকায়।।।

ইসমা- আমরা কথাও যাচ্ছি আম্মু???

ইমা- হম তোমার বন্ধু আমাদের বেড়াতে নিয়ে যেতে চায়।। (মুচকি হেসে)

ইসমা- বন্ধু!!! সত্যি।।( আনন্দিত সুরে)

ইমা- হমমম। তোমার রোকসানা আন্টি ও যাবে।।

ইসমা আনন্দিত সুরে হাত তালি দিয়ে লাফাতে লাফাতে বললো- কি মজা আমরা বেড়াতে যাবো কি মজা,,,,,,

ইমা মুচকি হেসে ইসমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।।।

রাত ৯ টা,,,,,,

ইসান ইমাকে ফোন করলো। ইমা ফোন রিসিভ করে কানে ধরে।

ইসান- ইমা গাড়ি পাঠিয়েছি।। নিচে ওয়েট করছে।।

ইমা জানালা দিয়ে নিচে তাকালো দেখে কালো রং এর গাড়ি দাড়িয়ে আছে।।৷

ইমা- হম আমরা বের হচ্ছি।।

ইসান- ওকে আমি এয়ারপোর্টে আছি।।। তুমি আসো।। বাই।।।
বলে ফোন কেটে দিলো।। ইমা জানালা দিয়ে নিচে গাড়ির দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো-

ইমা- আমি কনো ভুল করছি না তো।।। এমন তো হতে পারে ইসান আমাকে মিথ্যা বলছে।। হয়তো ছয় বছর আগের রাগ খোবের প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছে। এই জন্য এগুলো প্ল্যান করেছে।। আমার ইসমার ক্ষতি করার জন্য।।।।

ইমা এসে বিছানায় বসলো এবং দীর্ঘ শ্বাস ছেরে নিজের গালে আসতে আসতে বারি দিয়ে বললো- এগুলো কি ভাবছি।। ওর যদি আমার ক্ষতি করার থাকতো তাহলে আমাকে জেল থেকে কেন বের করলো??? না না,,,,, উফফ আল্লাহ আমার মাথা কাজ করছে না।। কেন এতো ভয় লাগছে???

ইমা উপরে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে বললো- আল্লাহ তুমি আমার শেষ সম্বল আমাকে আমার মেয়েকে রক্ষা করো।। ইসান যা প্রমাণ শুনালো আমি তার উপর ভিত্তি করেই আমেরিকা যেতে রাজি হয়েছি।।।

বলতেই ইসমা রোকসানা আসলো

ইসমা- আম্মু!!!

ইমা চোখ খুলে ইসমা রোকসানার দিকে তাকালো।।

ইমা হেসে বললো- চলো এবার যাওয়া যাক।।।
( তিনজন বের হয়ে চলে গেলো।।)

Time skip

ইসান এয়ারপোর্টে আসে এমন সময় তার বাবা কল করে।। আকাশ ফোন রিসিভ করে ইসানের হাতে দেয়।।

ইসান- হ্যা বাবা বলো???

জহির- এগুলো কি হচ্ছে??( একটু জোরে)

ইসান- বাব টেনশন নিয়ো না।। হসপিটাল হবে।। এগুলোর সব কিছুর পিছনের মাথা কে তাকে খুজে পেয়েছি।। আমি যাচ্ছি তাকে ধরতে।।।

জহির- ওকে ভালো খবর শুনতে চায় ইসান।।।

ইসান- ওকে বাবা।।। (হেসে)

ইসান ফোন কেটে দিয়ে ফোন আকাশের হাতে দিলো।। এদিকে ইমাদের গাড়ি চলে আসে।। ইসানের বডিগার্ড রা গাড়ির দরজা খুলে দিলো।। ইমা, ইসমা, রোকসানা বেরহলো।। বডিগার্ড রা তাদের সাথে নিয়ে ভিতরে চলে গেলো।। রোকসানা অবাক হয়ে দেখছিলো সব কিছু।।

ইসান দেখে ইমা ইসমাকে কোলে নিয়ে আসছে। ইসান মুচকি হাসি হাসলো।।। কিন্তু এদিকে ইমার মনে সেই ভয়টা কাজ করছিলো তখনো।। ইসমা ইসানকে দেখে ইমার কোল থেকে নামতে চায়লো।। ইমা ইসমাকে নামিয়ে দিলে ইসমা দৌড়ে ইসানের কাছে গেলে ইসান ইসমাকে কোলে তুলে নেই। এবং ইসমার গালে চুমু দেয়।।।

ইসান- তুমি ভালো আছো মামুনি।।( হেসে)

ইসমা- হমম। বন্ধু আজ তোমাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।।( হেসে)

ইসান- তোমাকেও খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।।৷ (হেসে) ইসান ইমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো- হাই ইমা।। কনো সমস্যা হয়নি তো??

ইমা- না।।।

ইসান- ওকে চলো যাওয়া যাক।।

আকাশ- স্যার দিন আমি ইসমাকে কোলে নিচ্ছি।।

ইসান- না ঠিকাছে।।

ইসমা- আমি হেটে যাবো।। আমি বড় হয়েছি না!! (হেসে)

ইসান হেসে বললো- ওরে বাবা। ইসমা বড় হয়ে গেছে।। ওকে চলো হেটেই চলো।। (বলে ইসমা কে কোল থেকে নামিয়ে হাত ধরে ভিতরে নিয়ে চলে গেলো।।।)

সবাই প্লেনে উঠে বসলো।। ইমা ইসানের সামনের সিটে বসলো।৷ ইসমা ইসানের পাশে।।
রোকসানা আলাদা সিটে।।

ইসান ইমার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো- কেন যেন মনে আনন্দ লাগছে এতো বছর পর তুমি আমার সামনে বসে আছো আমার সাথে যাচ্ছো।

ইমা ইসানের দিকে তাকালো।

ইমা- কিছু বললে??

ইসান চমকে – কই নাতো কিছু বলিনি।।( মুচকি হেসে)

ইসমা – বন্ধু এটা কি তেমার প্লেন??

ইসান- হমম।। তোমার পছন্দ হয়েছে?? (হেসে)

ইসমা- হমম।। (হেসে)

এমন সময় জনি আসলো।৷

জনি- স্যার!!!

রোকসানা জনির কন্ঠ শুনে পিছনে ঘুরে তাকায়।। রোকসানা জনির পিছনে থেকে দেখে সামনে চেহারা দেখতে পাইনা।।

জনি- স্যার সব ঠিকাছে।।

ইসান- ওকে।।।

জনি ঘুরতেই রোকসানার উপর চোখ পরে।। জনি চোখ বড় বড় করে তাকায় রোকসানার দিকে।। রোকসানাও বড় করে জনির দিকে তাকায়।।।

,,,,,,,,,,,,,continue,,,,,,,,,,,,,

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।।।।।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here