Love Treatment পর্ব -৩৯+৪০

#Love_Treatment
Part- 39
Writer- Tanzin Islam Ishika [ Jannat ]

তান্নাজ রুমে গিয়ে দেখে নিশম আধশোয়া হয়ে শুয়ে আছে,, আর চোখ বন্ধ করে এক হাত মাথায় দিয়ে রেখেছে,, তান্নাজ আর কিছু না সোজা গিয়ে নিশমকে জরিয়ে ধরে ওর বুকের উপর শুয়ে পরে,,, নিশমের নিজের বুকের উপর ভাড়ি কিছু অনুভব করে সেদিকে তাকায়,, তাকিয়ে যেন আকাশ থেকে পরে,, তান্নাজ গাবটি মেড়ে ওর উপর শুয়ে আছে,, যে তান্নাজ কিনা নিশমের কাছ থেকে শুধু দুরে দুরে ভাগত,, সে আজ নিজ থেকে নিশমের বুকে এসে শুয়ে আছে,,, ভাবা যায়,,, সেই মুহূর্ত নিশমের ভাল লাগলেও পরবর্তীতে তার তান্নাজের দেওয়া কষ্টের কথা মনে পরে,, তাই সে তান্নাজকে সরিয়ে দিতে চাইল,, কিন্তু তান্নাজও নাছোরবান্দা সে তহ ছাড়ার নামই নেই,, উল্টো আরও শক্ত করে তাকে জরিয়ে ধরলো,,,, তা দেখে নিশম কিছু রাগি ভাব নিয়ে বললো,,

নিশমঃ কি হচ্ছে এইসব,,,

তান্নাজঃ কোন সব,, না জানার ভ্যান করে,,,

নিশমঃ তুমি আমার বুকে কেন হা,, আর তুই আমার রুমে কেন,,, তোমাকে না অন্য রুম দেওয়া হয়েছে,, যাও নিজের রুমে যাও,,,

তান্নাজঃ এহহহ ওই রুম অনেক ছোট,, আমি ওই রুমে থাকতে পারব না,,, তারউপর ওই রুমে একটা টিকটিকি আছে,, আমার ভয় করে,,আমি যামু না ওই রুমে,, আমি তোমার সাথে এই রুমেই থাকুম,, আল্লাদি সুরে,,,

নিশমঃ তহ তুমি থাক আমি ওই রুমে গেলাম,,,

তান্নাজঃ এহ এহ,,, বললেই হইলো,, জানো ওই টিকটিকি ইয়ায়ায়া মোটা,, তোমারে যদি ওই খাইয়া ফেলে,, আমার ৫ টা না ১০ টা না একটা মাত্র জ্বামাই,,, তোমার কিছু হইয়া গেলে আমার চুন্নু মুন্নুর কি হইবো,,, কাদো কাদো ভাব নিয়ে,,

নিশমঃ লাইক সিরিয়াসলি,, টিকটিকি আমারে খাইয়া ফেলব,,,তোমার কি মাথা ঠিক আছে,,এন্ড বাই দ্যা ওয়ে,, হু ইজ চুন্নু মুন্নু,,,

তান্নাজঃ ইয়ে মানে,,,

নিশমঃ ইয়ে মানে কি,,

তান্নাজঃ চুন্নু মুন্নু হলো আমাদের বেবি এর নাম,,, লজ্জায় লাল হয়ে,,,

এই শুনে নিশম বড় বড় চোখ করে তান্নাজের দিকে তাকায়,,, নিশম ভালো ভাবে তান্নাজকে পর্যবেক্ষন করছে,, তা দেখে তান্নাজ বলে,,

তান্নাজঃ আমারে এইভাবে কি দেখতাস,,ওহহ বুঝছি আমারে আজকে অনেক সুন্দর লাগতাসে তাই না,, তাই আমাকে তোমার আদর করতে মন চাচ্ছে,,, লজ্জা পাওয়ার এক্টিং করে,,

নিশম তহ যেন আকাশ থেকে পড়লো,, কয় কি মাইয়াই,,, এতদিন নিশম তান্নাজকে জোর করে আদর করত,, আর আজ তান্নাজ নিজ থেকে আদরের কথা বলতাসে,, নিশম এইবার মুখ খুলে বলে,,,

নিশমঃ এতখুন তহ সন্দেহ হয়তাসি,, এখন তহ আমি পাক্কা সিউর,, এই মাইয়া এই,,, কি উল্টা পাল্টা খাইসো বলো তহ,,নেশা করসো তাই না,,, আর পাইসো কই এইসব,,,

তান্নাজঃ ছি ছি,, আমি আবার নেশা করব কেন,, আমাকে তেমন মনে হয়নি,,,

নিশমঃ আমি ১০০% সিউর তুমি নেশা করসো,, তা না হইলে কখনোই আমার কাছে আসতা না,, আর না এইসব কথা বলতা,,,

তান্নাজঃ আজিব তহ,, আমি আমার বরের কাছে আসবো না তহ কার কাছে যাব বল,, আর আমার চুন্নু মুন্নুর পাপাকে যদি আমি এইসব না বলি তাহলে কাকে বলব শুনি,,, অসহায় ফেস নিয়ে,,,

নিশম এইবার রেগে গিয়ে বলে,,
নিশমঃ যাকে ইচ্ছা তাকে বল গিয়ে এখন আমাকে ছাড়,,, আমি তোমার সাথে এক রুমে থাকব না,,,

এই বলে নিশম উঠতে নিলে তান্নাজ নিজের মুখ নিশমের ঘারে নিয়ে অনেক জোরে একটা কামড় দেয়,,, তাতে নিশম ব্যথায় আহহ করে উঠে,, আর রাগে ফুসতে ফুসতে বলে,,

নিশমঃ এইটা কি হইল,,, তুমি কি রাক্ষসনী হইয়া গেস নি,, যে আমায় এমনে কামর দিলা,,

তান্নাজঃ আমাকে সরাইয়া দিতে চাইলা কে,,, আরেকবার যদি উঠার চেষ্টা করছ,, কামর দিয়া রক্ত বের করে ফেলব,,,

নিশমঃ যা ইচ্ছা কর,,
এই বলে উঠতে নিলে,,, তান্নাজ আবার তার ঘারে জোরে একটা কামর দেয়,, এইবার একটুর জন্য রক্ত পরেনি,, কিন্তু পুরো জায়গা একদম গোর্ত হয়ে যায়,, আর লাল হয়ে থাকে,,

তান্নাজঃ আরেকবার যদি উঠার চেষ্টা করছ না,,, এইবার পুরা মাংস উঠায়া ফেলুম,,, হুহ,,,

নিশমঃ রাক্ষসী একটা,,, আমার পুরা ঘারটারে শেষ কইরা দিল,,, বিরবির করে,,

তান্নাজঃ কিছু বললা,,

নিশমঃ কই কি বলসি,,, কানে কি বেশি শুন নাকি,,

তান্নাজঃ না মানে মনে হলো যে কিছু বললা আরকি,, আচ্ছা যাই হক আমায় এখন আদর কর,,,

নিশম তহ এখন ৮২০ ভোল্টের শোকড খেল,,, তান্নাজের মাথা ঠিক আছে তহ,,, আমি সিউর এইসব কিছু ওই নিতে না পেরে পাগল হয়া গেসে,, কি সব বলতাসে ওই,,,

নিশমঃ লা হাওলা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিউর আজিম।
এইসব কি বলতাসো তুমি,, মাথা ঠিক আসে তহ,,,

তান্নাজঃ আমি আবার কি বললাম,, শুধু বললাম আদর করে মাথায় হাত বুলাইয়া দাও,,,

এইবার নিশম হাফ ছেড়ে বাচলো,,, নিশম আর কিছু না বলে এক রাশ বিরক্তি নিয়ে তান্নাজের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে,, একসময় তান্নাজ ঘুমিয়ে পরে,, তখন নিশম তান্নাজের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে,,

নিশমঃ তুমি কি জান তোমার থেকে রাগ করে থাকা আমার জন্য বড্ড দায়,, তোমার এইসব বাচ্চামো স্বভাব যে আমাকে একদম পাগল করে ফেলে,,, কই ভেবেছিলাম তোমার থেকে দূরে থাকব,, তোমায় একটু কষ্ট দিব,, কিন্তু তা আর তুমি হতে দিচ্ছ কোথায়,, তোমাকে নিজের এত কাছে পেয়ে তোমাকে আপন করে নিতে ইচ্ছা কিন্তু এত সহজে তহ তোমায় আপন করা যাবে না,,, আমি যে কষ্ট পেয়েছি তার আংশিক তহ তোমায় বুঝতেই হবে,, তা না হলে তুমি তোমার ভুল উপলব্ধি করতে পারবে না,,, আর তাই আমাকেও তোমার প্রতি কঠোর হতে হবে,,, কিন্তু আপাতত আমি এই মুহুর্তটাকে মিস করতে চাই না,,,
এই বলে নিশম তান্নাজকে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরে,,,
সকালবেলা,,,
সূর্যের আলো তান্নাজের উপর পড়তেই তান্নাজের ঘুম হাল্কা হয়ে আসে,, আজ অনেক দিন পর তার এত ভালো ঘুম হলো,, আর হবেই বা না কেন,, সে আজ নিশমের বুকের মধ্যে শুয়েছে,, সেখানে সে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকতে পারে,, যেখানে তার কোন ভয় নেই,, তান্নাজ জানে যে সেই বুকের মালিক তাকে সব সময় আগলে রাখবে,,, তান্নাজ ঘুম থেকে উঠে দেখে নিশম বাচ্চাদের মত শুয়ে আছে,, অনেক কিউট লাগছে তাকে,, তান্নাজ কিছুক্ষণ নিশমের দিকে তাকিয়ে থেকে পরে ফ্রেশ হতে চলে যায়,, ফ্রেশ হয়ে এসে তান্নাজ মাথার পানি ঝাড়ছিল,, তখন তান্নাজের মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি খেলে,, সে আস্তে আস্তে নিশমের কাছে গিয়ে নিজের চুল ঝারতে থাকে,, এতে পানি গুলো নিশমের মুখের উপর গিয়ে পরে,, নিশম চোখ মুখ কুচকিয়ে আদো আদো করে চোখ খুলে,, আর খুলে দেখে তান্নাজ তার সামনে দাড়িয়ে মিটিমিটি করে হাসছে,, নিশম কিছু বলতে যাবে তার আগেই সে তান্নাজকে দেখে থ,,, তান্নাজ আজ একটা ডার্ক নেভি ব্লু কালার একটা শাড়ি পরেছে,, আর চুল গুলো ছাড়া,, ভিজা চুল গুলো দিয়ে টুপটুপ করে পানি পরছে,, নিশমের যেন এক ঘোর লাগা কাজ করছে,, সে নেশা ভরা চাহনিতে তান্নাজের দিকে তাকিয়ে আছে,, তা দেখে তান্নাজ একটু কেশে উঠে,, তাতে নিশমের ঘোর ভেংগে যায়,, তখন মুখে একটা বিরক্তিকর ভাব নিয়ে বলে,,

নিশমঃ কি সমস্যা কি,, আমাকে এইভাবে ঘুম থেকে তুললে কেন,, এখন কি শান্তি মত ঘুমাতেও পারব না নাকি,,,

তান্নাজঃ তা পারবা,, কিন্তু দেখ কয়টা বাজে অফিসে যেতে দেরি হয়ে যাবে,, তুমি যাও ফ্রেশ হয়ে আসো আমি তোমার জন্য নাস্তা তৈরি করছি,,,

এই বলে তান্নাজ চলে যায়,, নিশমও আর কিছু না বলে ফ্রেশ হতে চলে যায়,,, ফ্রেশ হয়ে এসে সে রেডি হতে থাকে,, তারপর যখন টাই পড়তে যাবে তখন তান্নাজ এসে টাই টা বাধতে শুরু করে,,, তা,দেখে নিশম স্বরে দাড়ায়,, তান্নাজ আবার নিশমের কাছে গিয়ে টাই বাধতে থাকে,,,

নিশমঃ কি হচ্ছেটা কি,, আমার কাজ আমি করতে পারি,, তোমাকে আমার কাজ করতে হবে না,,

তান্নাজঃ আমার ইচ্ছা আমি কি করবো তাতে তোমার কি,,, এখন চুপ চাপ দাড়াইয়া থাকো তা না হলে কালকের কামর মনে আছে তহ,,

এই শুনে নিশমের হাত তার ঘারে চলে যায়,, ইসস কিভাবেই না কামড়িয়ে ছিল,, তা ভেবেই নিশম আতকে উঠে,, নিশম আর কামর খেতে পারবে না,, তাই চুপচাপ দাড়িয়ে থাকে,, তারপর ডাইনিং এ চলে যায় নাস্তা করতে,,, টেবিলেই নাস্তা সাজানো আছে,,, নিশম প্লেট নিয়ে নাস্তা করতে গেলেই তান্নাজ এসে নিশমের কোলে বসে পরে,,, তা দেখে নিশম বলে,,,

নিশমঃ এইটা কি ধরনের অসভ্যতা,,, নিজের চেয়ারে গিয়ে বস,, আমার কোলে বসছো কেন,,

তান্নাজঃ ইসস,, এইটা তোমার কোল নি,, এইটা আমার কিউট এন্ড সুইট বরের কোলে বসছি তাতে তোমার কি,,, এখন আমায় খাইয়ে দাও,,

নিশমঃ হুহ,,, পারবো না,, নিজের হাত নাই,, নিজের হাত দিয়ে খাও,,

তান্নাজঃ না তুমি খাইয়ে দাও,,,

নিশমঃ বললাম তহ পারব না,,

তান্নাজ এইবার রেগে গিয়ে বলে,,
তান্নাজঃ ওই বেটা লুংগি চোর,, উগান্ডার প্রেসিডেন্ট,, ভিমরুলের ডিম,, আমার চুন্নু মুন্নুর বাপ,, তুই আমারে খাওয়াইয়া দিবি নাকি না,,, আমারে খাওয়াইয়া না দিলে আজকের তোর
ঘার আমি আস্ত রাখুম না,,মরিচ লবণ ছাড়া কাচা খাইয়া ফেলুম। রাগে ফুসতে ফুসতে

নিশম এবার শুকনো গলায় ঢোক গিলে,,,কেন না তান্নাজ কখনো এমন করেনি,, এই মাইয়ার মাথায় নির্ঘাত সিট আছে,কখন যে কি কইরা বসে আল্লাহই জানে,,, নিশম আর কিছু না বলে তান্নাজকে খাইয়ে দিতে থাকে,, আর নিজেও খেয়ে নেয়,,, যখন নিশম উঠতে নেয় তখন তান্নাজ তাকে বাধা দিয়ে বলে,,

তান্নাজঃ মিষ্টি খাবা না,,

নিশমঃ এইখানে তুমি মিষ্টি কই দেখতাসো,,,

তান্নাজঃ তোমার সামনেই তহ মিষ্টি আছে,,,

নিশমঃ কই,,,
নিশম কিছু বুঝার আগেই তান্নাজ নিশমের চুল আকড়ে ধরে ওকে কিস করে, এই দেখে নিশম তহ শোকের শোক খেল, বেচারা নিশম মনে হয় শোক খেতে খেতেই শহিদ হয়ে যাবে,,, প্রায় কিছু ক্ষন পর তান্নাজ স্বরে এসে বলে,,

তান্নাজঃ এই নাও মিষ্টি,,
এই বলে এক দোড়ে রুমে চলে যায়,, আর নিশম বেকুবের মত চেয়ে থাকে,,, অতঃপর নিশমের ঠোঁটের কোনে এক হাসি ফুটে উঠে,,,

।#Love_Treatment
Part- 40
Writer- Tanzin Islam Ishika [ Jannat ]

তান্নাজ সোফায় বসে বসে ভাবছে কিভাবে নিশমের রাগ ভাংগানো যায়,,, আজ তান্নাজ অফিসে যাবে না বলে নিশম একা চলে যায়,, আর তান্নাজ সে তহ নিজের ভাবনায় মগ্ন,, তখন সে ইন্টারনেটে সার্চ দেয় কিভাবে স্বামীর মন জয় করা যায়,,,( আর কিছু পাইলি না সার্চ দেওয়ার জন্য😒) তখন সে দেখে,, পাতিকা দিলকা রাস্তা উসকে পেট সে হো যাতা হে,,, তাই তান্নাজ ঠিক করলো ওই আজ নিশমের জন্য তার ফেভরিট খাবার রান্না করবে,,, কিন্তু এখন তান্নাজ পরলো মহা মুশকিলে,, সে তহ জানেই না নিশমের ফেভরিট খাবার কি,, তাই ভাবতে থাকে ওর প্রিয় খাবার কি হতে পারে,,,

তান্নাজঃ তুই কেমন বউ বলতো,, নিজের বরের প্রিয় খাবার এই জানোস না,, তুই বউ নামে কলংক,, ( একদম ঠিক,,, আমি জানি নিশমের প্রিয় খাবার কি,,, আর তুই বউ হইয়া জানলি না,, ছি,,,) এখন কারে জিগাই,,, তারপর ভাবতে থাকে কাকে জিজ্ঞাস করা যায়,, তখন তান্নাজের মনে পরে,,
অহহহ আমার ওয়ান এন্ড অনলি শ্বাশুড়ি মা আছে না,, তাকে একটা ফোন দেই,, সে নিশ্চয়ই জানে নিশমের প্রিয় খাবার কি,,,

তান্নাজ তারাতারি ফোন হাতে নিয়ে তার শ্বাশুড়ি মাকে ফোন দেয়,,, ফোন ধরতেই তান্নাজ সালাম দেয়,,, রাহেলা বেগল সালামের উত্তর দিয়ে বলে,,

রাহেলা বেগমঃ কিরে আজ আমার কথা কিভাবে মনে পড়লো শুনি,, ঢাকায় গিয়ে তহ আমায় ভুলেই গিয়েছ,,,( ঢাকায় আসার পর ৩-৪ বার কথা হয়েছিল,, কিন্তু মাঝে এত কিছু হয়ে যাওয়াতে আর কথা হয় নি)

তান্নাজঃ তা না মা,, আসলে নিউ একটা প্রোজেক্ট নিয়ে বিজি ছিলাম একটু তাই ফোন দিতে পারি নি,, কিছু মনে করবেন না মা,,

রাহেলা বেগমঃ হুম,, বুঝি,, আমি তহ এখন পুরোনো হয়ে গিয়েছি,, আমাকে কি আর তোদের মনে পরবে,, এখন তহ আমাকে বিদায় করতে পারলেই তোরা বাচিস,,,( এইযে শুরু হইসে ট্রিপিকাল শ্বাশুড়িদের কথা,,,)

তান্নাজঃ আরেহ মা কি বলছেন এইসব,, আপনি কেন পুরানো হবেন,, জানেন আপনাকে দেখলে কেউ বলবেই না আপনার দুইটা ছেলে মেয়ে আছে,,, আর ছেলের ঘরে বউ আছে,,, আপনি এখনো কত ইয়াং লাগে জানেন,,, দুই এক সময় আমারেই হিংসে হয় আপনার থেকে,, যে আপনি এই বয়সে নিজেকে কিভাবে এত গুছিয়ে রেখেছেন,,, আর আপনি না থাকলে আমরা কিভাবে চলবো বলেন,, বাসায় গুরুজন না থাকলে ছোটদের সঠিক পথ দেখাবে কে বলেন,,, আর আপনি চলে গেলে আপনার এই বউমার কি হবে শুনি,,, আমি যে আমার শ্বাশুড়ি মাকে খুব ভালোবাসি,, তাকে ছাড়া কি আমি থাকতে পারব বলেন,,,
( আল্লাহ গো 😱😱 কত পাম মারে গো,,,, এত পাম দিস না বোইন শ্বাশুড়ির কাছে ধরা খাইয়া যাবি,,, বাই দ্যা রাস্তা,, তোমরা তান্নাজের কাছ থেকে কিছু শিখ,, যে কিভাবে শ্বাশুড়িকে পাম মেরে ফুলাতে হয়,, ভবিষ্যতে কাজে লাগব,,)

রাহেলা বেগমঃ হইসে হইসে আর পাম দিতে হবে না,, এখন বল কিসের জন্য ফোন দিয়েছিস,,,( বলছিলাম যে এত পাম মারিস না,, ধরা খেয়ে যাবি,, খেলিত ধরা,,)

তান্নাজঃ ইয়ে মা মানে,, উনার প্রিয় খাবার কি,,

রাহেলা বেগমঃ এমা তুই জানিস না,,

তান্নাজঃ না মা আসলে কখনো জিজ্ঞেস করা হয়নি,,, তাই আরকি,, বলেন না মা,,

রাহেলা বেগমঃ ওর ভুনা খিচুরি অনেক প্রিয়,, সাথে কালো ভুনা,,,

তান্নাজঃ আচ্ছা মা,,

তারপর আরও কিছুক্ষণ কথা বলে রেখে দেয়,, আর তান্নাজ যায় রান্নাঘরের দিকে,, গিয়ে ভুনা খিচুরি আর কালো ভুনা রান্না করতে থাকে,, ১. ৩০ টার দিকে তান্নাজের রান্না শেষ হয়,, সে ফ্রেশ হয়ে এসে একটা কালো কালার কামিজ পরে,, সাথে চোখে কাজল,, আর ঠোঁটে হাল্কা কালারের লিপস্টিক,,, তারপর রান্না করা খাবার টিফিন বক্সে করে নিয়ে রওনা দেয় অফিসের উদ্দেশ্যে,,
অফিসে এসে তান্নাজ নিশমের কেবিনে চলে যায়,, গিয়ে দেখে নিশম খুব মনযোগ সহকারে একটা ফাইল চেক করছে,, তান্নাজ কিছু না বলে চুপচাপ গিয়ে টিফিনের বাটিটা টেবিলের উপর রাখে,, তারপর নিশমের কাছে গিয়ে ওর কোলে বসে পরে,, এতে নিশম একটু হচকিয়ে উঠে,, সে খেয়াল করেনি কখন তান্নাজ এসেছে,, আর এমন হুট করে যে কোলে বসে পরবে তা বুঝেনি,,, নিশম এইবার ওকে দেখে রেগে গিয়ে বললো,,

নিশমঃ তুমি এইখানে কি করছো,, তুমি জানো না বসের কেবিনে আসার আগে পারমিশন নিতে হয়,,

তান্নাজঃ উহুম,, আজ আমি তোমার পিএ হিসাবে আসি নি,, তোমার বউ হিসাবে আসছি,, আর বউকে নিজের বরের কেবিনে আসতে পারমিশন লাগে না বুঝলা,,,

নিশমঃ তুমি কেন আসছ,,

তান্নাজঃ তোমার জন্য লাঞ্চ নিয়ে আসছি,,

নিশমঃ আমি কেন্টিন থেকে খেয়ে নিব,, তুমি এইসব খাবার নিয়ে যাও,,,

তান্নাজঃ এহহ আমি এত কষ্ট করে রান্না করেছি,,

নিশমঃ তোমাকে কি আমি কষ্ট করতে বলসি নাকি,,, তোমার মন চাইলে নিজের রান্না নিজেই খাও,, আমি খাব না,,

তান্নাজের এখন রাগ উঠে যায়,, সে নিশম কলার টান দিয়ে নিজের সামনে নিয়ে এসে,,

তান্নাজঃ তুই খাবি প্লাস তোর ঘারও খাইব,, আর যদি আরেকবার না করসোস,, তাইলে পুরা অফিসের সামনে গিয়া কমু তুই আমারে মারসোস,,

নিশমঃ আমি কই মারলাম তোমায়,, অবাক চোখে,,

তান্নাজঃ মিথ্যা কমু,,, দাত কেলিয়ে

নিশমঃ যতসব,, যা ইচ্ছা তা করো,, কিন্তু এখন আমার সামনে থেকে যাও,,, এই বলে নিজের কলার ছাড়িয়ে,,

তান্নাজ নিশমকে অবাক করে,, সে নিশমের কলার আবার টান দিয়ে নিজের কাছে আনে,, আর নিশম কিছু বলার আগেই নিশমের ঠোঁট দুটো নিজের আয়েত্তে নিয়ে,, ওর ঠোঁটে জোরে একটা কামর দেয়,,, এতে নিশম ব্যথায় কুকড়িয়ে উঠে,, সে তারাতারি তান্নাজকে নিজ থেকে সরিয়ে নেয়,, আর নিজের ঠোঁট হাত দিয়ে ডলতে থাকে,, আরেকটু হলে ঠোঁট পুরা কেটে যেত,, নিশম তান্নাজের দিকে তাকিয়ে দেখে তান্নাজ দাত কেলিয়ে হাসতাসে,, তা দেখে নিশমের রাগ উঠে যায়,,

নিশমঃ কি করলা এইটা,,আমার ঠোঁটের পুরো হালুয়া বানাইয়া ফেললা,, আরেকটু হলে পুরা কেটেই যেত,,, রাগি কন্ঠে,,

তান্নাজঃ কি বল,, আমি হালুয়া বানাইয়া ফেলসি,, আহারে,, কিন্তু কি হালুয়া বানাইসি,,, টেস্ট করে দেখি তহ,,

এই বলে তান্নাজ কাছে আসতে নিলে নিশম দুই হাত দিয়ে নিজের ঠোঁট চেপে ধরে,, তা দেখে তান্নাজ একটা মুচকি হাসি দেয়,,

নিশমঃ যা করার করসো,, আর কিছু করা লাগবো না তোমার,, কই তুমি না আমার জন্য লাঞ্চ আনসো,, তারাতাড়ি বারও,, আমার খুদা লাগসে,,

তান্নাজঃ এইবার লাইনে আইসো চান্দু,, তোমার মত লুংগি চোররে কিভাবে লাইনে আনতে হয় তা তান্নাজ ভালো করেই জানে,,

এই বলে তান্নাজ পিওন কে বলে প্লেট আনতে আর এখানে নিশম তেলে পুড়ে আগুন,,, কিছুক্ষন পর পিওন প্লেট নিয়ে আসলে তান্নাজ এক প্লেটে খাবার বারে,, নিশম হাত ধুয়ে এসে খেতে বসলে তান্নাজ ওর হাত ধরে ফেলে,, তারপর গিয়ে নিজে হাত ধুয়ে এসে ওর কোলে বসে,, তা দেখে নিশম বলে,,

নিশমঃ কি খাইতে দিবা না নাকি,,

তান্নাজঃ দিব তহ,, কিন্তু আমি খাইয়ে দিব তোমায়,,,

নিশমঃ আমার হাত আছে,, আমি আমার হাত দিয়েই খাব,,

তান্নাজঃ এক কাজ করো কিছু খুনের জন্য সোলে মুভির ঠাকুর হইয়া যাও,, তাইলে তহ তুমি চাইলেও হাত দিয়া খাইতে পারবা না,, আমার হাত দিয়াই খাইতে হইব,,

নিশম তহ আকাশ থেইকা পড়লো,, মাইয়া কই কি,, শেষ পর্যন্ত কিনা ওরে ঠাকুর হইতে হইব,, হাইরে কপাল,,, অন্য বউরা কই শারুকখান সাজতে আর আমার বউ কয় কি,,,, নিশম কিছু বলতে যাবে তার আগেই তান্নাজ নিশমের দুই হাত নিয়ে নিজের কোমরে রাখে আর বলে চুপচাপ থাকতে,, তারপর তান্নাজ নিজ হাতে নিশমকে খাইয়ে দিতে থাকে,, সাথে তান্নাজও খায়,, রান্না ভালোই হয়েছে,, খাওয়া শেষে তান্নাজ উঠে যায়,, হাত ধুয়ে এসে কিছুক্ষণ নিশমের দিকে চেয়ে থাকে,,, তা দেখে নিশম একটু নড়ে চড়ে বসে,, আর বলে,,

নিশমঃ কি হইসে,, আমাকে এমনে দেখতাসো কেন,, নতুন দেখতাসো নি আমায়,,,

তান্নাজঃ বেটা খচ্চর,, লুংগি চোরের বাচ্চা,, আসুমের ডিম,, এত কষ্ট কইরা রান্না করসি,, একবার কইলিও না কেমন হইসে,, আর এখন কয় এমনে কি দেখতাসি,, শালা খবিশ একটা,, মনে মনে,,,
কিন্তু মুখে একটা হাসি টেনে বলে,,

তান্নাজঃ তা না,, মানে খাবার যে খাইলা কেমন লাগসে,,,

নিশমঃ তেমন একটা ভালো হয় নাই,, তার উপর একটু লবণ বেশি হইয়া গেসে,, আবার মাংসে তেল বেশি হইসে,,

এই শুনে তান্নাজ রাগে ফুসতে থাকে,, এত কষ্ট কইরা রান্না করলো,,, আর নিশম কয় কি,, হুহ,, আমার কষ্টের দাম নাই,,

তান্নাজঃ ওওও আচ্ছা,, ঠিক আছে,,
এই বলে তান্নাজ বাটি সব ঠিক করে চুপচাপ চলে যায়,, তা দেখে নিশম একটু অবাক এই হলো,, কেননা ওই স্পষ্ট দেখল,, তান্নাজ রেগে ছিল,, রান্নাজ একদম ঠিক ছিল কিন্তু তান্নাজকে তা না বলে ইচ্ছে করেই এমন বলে,, যাতে তান্নাজ একটু কষ্ট পাক,, কিন্তু তা না,, ওই চুপচাপ চলে গেল কেন,, এইটা ঝড় আসার পূর্ব ভাস,, নিশম আর এত মাথা না ঘামিয়ে নিজের কাজ করে,,
রাতেরবেলা,,,
নিশম বাসায় এসে দেখে সব ঠিকঠাক আছে,, নিশম রুমে এসে দেখে তান্নাজ বিছানায় বসে মোবাইল চালাচ্ছে আর মুচকি মুচকি হাসছে,, তা দেখে নিশম ভ্রু কুচকিয়ে তান্নাজের দিকে তাকায়,, তান্নাজ নিশমকে দেখে সাথে সাথে মোবাইল রেখে দেয়,, আর দাড়িয়ে যায়,, তারপর একটা হাসি টেনে বলে,,

তান্নাজঃ আপনি কখন আসলেন,,

নিশম এইবার তান্নাজের দিকে আরও তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তাকালো,, তান্নাজ তহ কখনো নিশমকে আপনি করে ডাকে না,, এত কিছু হয়ে গেল তাও তহ তান্নাজ আপনি ডাকে নাই,, আজ কি হলো,,

নিশমঃ তুমি থেকে আপনি কবে হলাম,,

তান্নাজঃ যবে থেকে আপনি আমার চুন্নু মুন্নু পাপা হইসেন তবে থেকে,,, একটু লজ্জা পাওয়ার এক্টিং করে,,

নিশমঃ কি বার বার খালি চুন্নু মুন্নু লাগাইয়া দিস,, আর কোন কাজ কাম নাই,,, কি একটা আজাইরা নাম পাইসে,,,
এই বলে নিশম ওয়াসরুমে চলে যায়,, আর তান্নাজ একটা মুচকি হাসি দেয়,,, ওয়াশরুম থেকে এসে দেখে তান্নাজ আবার মোবাইলে কি জেন করছে আর মুচকি মুচকি হাসছে,, তা দেখে নিশম কিছুটা খটকা লাগে,, সে তান্নাজ কাছে আসতেই তান্নাজ মোবাইল পাশে রেখে দেয়,, আর বলে,,

তান্নাজঃ কি ফ্রেশ হইসো,,

নিশমঃ এই না আপনি বললা এখন আবার তুমি,, গাঞ্জা টাঞ্জা খাইসো নাকি,,,

তান্নাজঃ আমার ইচ্ছা আমি কি ডাকুম না ডাকুম,, তোমার এত সমস্যা কে,,, খাবার দিসি টেবিলে চল,,,


নিশম আর কিছু না বলে খেতে চলে যায়,, খেতে বসে দুই লোকমা মুখে নিতেই দেখে সে বান্দরের মত লাফাতে থাকে,, খাবারে সেই পরিমানে ঝাল ছিল,, আর নিশম বেশি একটা ঝাল খেতে পারে না,, তা তান্নাজ ভালো করেই জানে,, আজ দুপুরে ওর খাবার ভালো না বলার শাস্তি এইটা,, নিশম ইচ্ছা মত পানি খাচ্ছে আর লাফাচ্ছে,, সে তান্নাজের দিকে তাকিয়ে দেখে তান্নাজ মিটি হাসছে,, তা দেখে নিশমের রাগ যেন আরও বেরে গেল,, হঠাৎ নিশমের তান্নাজের ঠোঁটের দিকে নজর যায়,, একদম গোলাপি ঠোঁট,, নিশমের এক ঘোর লাগা কাজ করলো,, সে আর কিছু না ভেবে তান্নাজকে নিচের কাছে এনে তান্নাজের ঠোঁট দুটো নিজের ঠোঁটের ভাজে নিয়ে নিল,, তান্নাজ এইবার বড় বড় চোখ করে নিশমের দিকে তাকায়,, কিন্তু পরে বুঝে তারও ঝাল লাগতাসে,, তান্নাজ নিজেকে ছাড়াতে চাইলে নিশম আরও শক্ত করে ওকে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়,, পাক্কা ১৫ মিনিট পর নিশম তান্নাজকে ছাড়ে,, নিশমের ঝাল কমলেও তান্নাজের মুখ জ্বলছে,, আর তান্নাজ নিশমকে বকতে থাকে,,

তান্নাজঃ বদের হাড্ডি,, খবিশের খবিশ,,, লুংগি চোরের বাচ্চার মাইয়ার পোলা,, আমারে ঝাল লাগাইয়া দিলি কে,,, শয়তান পোলা,, কি জ্বলতাসে এখন,,

নিশমঃ হুহ,,, তুমি আমারে ঝাল খাওয়াইসো কে,, আমাকে ঝাল খাওয়ানোর আগে মনে ছিল না,, আর তোমার কি হইসে হা,, এই আপনি তহ এই তুমি,, আবার এই তুই,, মাথায় কি সিট পরছে নাকি,,

তান্নাজঃ ইয়ে না মানে,, আমি নিজেও জানি না আমি এমন কেন করি,, মাঝে মধ্যে এমন তহ হয়ই,, তুমি কিছু মনে কইরা না ঠিক আছে,, লজ্জা পেয়ে,,

নিশম অবাক হয়ে তান্নাজের দিকে তাকিয়ে আছে,, এই মেয়েটা হলো কি,, ওই তহ এমন কিছু বলে নাই যে তান্নাজ এত শরম পাবে,, আল্লাহই জানে হইসে কি,,, নিশম আর কিছু বলে রুমে চলে যায়,, আজ তার খাওয়ার স্বাদ মিটে গেছে,, নিশম রুমে গিয়ে শুয়ে পরে,, কিছুক্ষণ পর তান্নাজও রুমে আসে,, এসেই নিশমের বুকের উপর মাথা রেখে শুয়ে পরে,, নিশম উঠতে চাইলে তান্নাজ ওকে শক্ত করে ধরে বলে,,

তান্নাজঃ প্লিজ এইভাবে থাক না,, আমার না একা থাকতে বড্ড ভয় করে,, মনে হয় কেউ আমাকে তোমার থেকে দূরে নিয়ে যাবে,, আমি না তোমার থেকে দুরে যেতে চাই না,, আমি তোমার সাথে থাকতে চাই,, তোমার চুন্নু মুন্নুর আম্মু হইতে চাই,, আমাকে কি তোমার এই হৃদয়ের মাঝে একটু জায়গা দিবে,, থাকতে দিবে কি তোমার হৃদয় ঝুরে,,

এমন আকুতি ভরা কন্ঠ শুনে নিশম আর না করতে পারলো না,, নিশম আর কিছু না বলে তান্নাজের মাথায় বিলি কেটে দিতে থাকে,, আর তান্নাজ আবেশে চোখ বন্ধ করে ফেলে,, আর তলিয়ে যায় ঘুমের দেশে,,,,




চলবে,,
😁

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here