Love Treatment পর্ব -৩৭+৩৮

#Love_Treatment
Part- 37
Writer- Tanzin Islam Ishika

পুরো রুম অন্ধকার,, বাইরে থেকে রাস্তার সোডিয়াম লাইট গুলো থেকে আপছা আলো আসছে,, তান্নাজ একটা বেডে শুয়ে আছে,,, কিছুক্ষন আগেই তার জ্ঞান ফিরেছে,, কিন্তু চোখ খুলতে পারছিল না,, অনেক কষ্টে সে আদো আদো করে চোখ মেলে,, চোখ খুলে সে বসার চেষ্টা করে,, কোনমতে সে উঠে বসে,,, তারপর মাথায় হাত দিয়ে বসে,,, মাথাটা একদম ভার হয়ে আছে,,, তারপর সে চোখ ঘুরিয়ে চারদিক পর্যবেক্ষন করতে থাকে,, অন্ধাকার হওয়ায় তেমন বুঝা যাচ্ছে না,, বাইরে আপছা আলোতে এতটুকু বুঝতে পারছে সে কোন রুমে শুয়ে আছে,, তান্নাজ মনে করার চেষ্টা করতে থাকে সে এইখানে কিভাবে এলো,, তখন তার মনে পরে সে তহ মিতু আর হৃদয়ের সাথে ছিল,, পরে কিছু লোক এসে,তাদের ঘিরে ধরে আর পরে কি হয় তা তার মনে নেই,,
যখন সে এইসব চিন্তা করছিল তখনই সে দরজা খুলার আওয়াজ পায়,, তান্নাজ ও সেই দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকায়,, দরজা খুলে কেউ যেন লাইটটা অন করলো,, সামনে থাকা ব্যক্তিটিকে দেখে তান্নাজ আতকে উঠে,,, সে অবাক হয়ে সামনে থাকা ব্যক্তিটির দিকে তাকিয়ে আছে,, আর বলে,,

তান্নাজঃ নিশম,,,

হা সামনে থাকা ব্যক্তিটি নিশম,, সেই কিডন্যাপ করেছে তান্নাজকে,,, কিন্তু কেন তা আস্তে আস্তে জানতে পারবেন,,, নিশম তান্নাজের সামনে এসে তার পাশে বসে,, তান্নাজ কিছুটা স্বরে বসে,, এতে নিশম এক তাচ্ছিল্য হাসি দেয়,, তা দেখে তান্নাজের গা জ্বলে যায়,, সে বলে,,

তান্নাজঃ কেন এনেছ তুমি আমায় এইখানে,, তুমি না বলেছে আমার মুখও তুমি দেখতে চাও না,, তাহলে কেন আমাকে আবার তোমার সামনে নিয়ে আসছো,,, আর কি চাই আমার কাছ থেকে তোমার,,

নিশমঃ তোমার সাথে যে আমার এখনোও অনেক বোঝাপড়া বাকি আছে,, এখনও এমন অনেক কিছু আছে যা তোমার অগোচরে হচ্ছে,, তোমার জানার সত্যির পিছনে যে আরেক সত্যি আছে তা তহ তোমার জানা দরকার তাই না,,,

তান্নাজঃ আর কি বাকি আছে শুনি,,, সবই তহ ক্লিয়ার হয়েই গেছে,, সব সত্যি তহ বেরিয়েই গেছে,, আর কোন সত্যি আছে শুনি,,,

নিশমঃ যে সত্যি তুমি জানো তার পিছের সত্যি জানবে না তা কিভাবে হয়,,, এখন চল আমার সাথে,,

তান্নাজঃ না আমি কোথাও যাব না,, আমাকে নিয়ে খেলে কি মন ভরে নি যে আবার আসছো,, নাকি মন ভরে নি কোনটা,, যে আবার আসছো আমার কাছে,,

নিশম এতক্ষণ শান্ত ভাবে সব হ্যান্ডেল করতে চেয়েছিল,, কিন্তু তান্নাজের কোথায় তার রাগ উঠে যায়,, সে গিয়ে তান্নাজের চুলের মুঠি ধরে নিজের সামনে নিয়ে আসে,, আর বলে,,

নিশমঃ হা মন ভরে নি আমার,, তোকে আমার আবার লাগবে বুঝলি,, এখন কোন কথা না বলে চল আমার সাথে,,,

এই বলে নিশম তান্নাজ চুল ছেড়ে তাকে টানতে টানতে নিয়ে যেতে থাকে,, তান্নাজ নিজেকে ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না,, আর বার বার বলছে তাকে ছাড়তে,, কিন্তু নিশমের ছাড়ার কোন নামই নেই,, সে তান্নাজকে টানতে টানতে একটা রুমে নিয়ে আসে,, আর তাকে সামনে ছুড়ে মারে,, তান্নাজ নিজেকে সামলিয়ে সামনে চমকে উঠে,,, কেননা তার সামনে রুহান আর সামিরাকে চেয়ারের সাথে বেধে রাখা হয়েছে,, তাদের মুখে একটা রুমাল দিয়ে বাধা,, তারা ছুটার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে কিন্তু বার বার ব্যর্থ হচ্ছে,, তান্নাজ কিছু বলতে যাবে তার আগে নিশম বলে,,

নিশমঃ তুই আজ কিছু বলবি না,, চুপচাপ শুনবি,, আজকে তোর সব জানা সত্যির পিছনের সত্যি জানবি তুই,,, অনেক হয়েছে আর না,, অনেক লুকোচুরি খেলা হয়েছে,, এইবার আসল ঘটনা আসার পালা,,, এই হৃদয় রুহানের মুখটা খুলে দে তহ,,,

হৃদয়কে দেখে তান্নাজ শোকড হয়ে যায়,, হৃদয় এইখানে কেন,, আর কেনই বা নিশমের কথা শুনছে,, সে এইসব ভাবতে থাকে তখন রুহানের কথায় তার ধ্যান ভাংগে,,

রুহানঃ এইসব কি নিশম,, আমাদের এইভাবে বেধে রাখার মানে কি,, কেন এনেছিস আমাদের এইখানে,,,

নিশমঃ তোদের সত্য ফাস করতে,, সেই সত্য যা তুই আমার জীবনে বিষ হিসাবে ঢেলে দিয়েছিস,, যার কারনে আজ আমার ভালবাসা আমায় ঘৃণার চোখে দেখে,, আমার থেকে দুরে যেতে চায় সে,, আজ তোর জন্য আমি আমার ভালবাসার মানুষের কাছে একজন প্রতারক,,, ঠকবাজ,,,

রুহানঃ ক,,ক,,কি,, ব,,,ল,,ছি,,স এইসব,, আমি কি করেছি,, আমতা আমতা করে,,

নিশমঃ কি করোস নি তাই বল,,, আজ তোকে সব সত্য বলতেই হবে,,, তোর জন্য আমি যা যা হারিয়েছি তার মাশুল তহ তোকে দিতেই হবে,, আর আজ কোন মিথ্যা বলবি না,,, কারন আমার কাছে সব প্রুভ আছে,, কেন করলি এমন,, কেন আমার ভালবাসার মানুষের কাছে আমায় খারাপ বানালি,, কেন কেড়ে নিলি আমার ভালবাসার মানুষকে,,আজ তোর জন্য আমি আমার ভালবাসা মানুষের ভালবাসা থেকে বঞ্চিত হয়েছি,,, বল কেন করলি এইসব,, বল,,

রুহানঃ কি বলছিস এইসব,, পাগল হয়ে গিয়েছিস,, আমি এইসব কিছুই করি নি,, তুই ভুল বুঝছিস আমায়,,

নিশমঃ তাই না,, তুই সহজের নিজের কথা বলার মানুষ না,, দ্বারা এই মিতু ফাইলটা নিয়ে আস তহ,,
মিতু এসে কিছু ফাইল দেয় নিশমকে,, নিশম তা রুহানের সামনে ধরে বলে,,

নিশমঃ এই নাম্বারটা তহ ভালো করে চিনিস তাই না,, এই নাম্বার থেকেই তহ তান্নাজের মোবাইলে সেই ছবি আর ভিডিওটা আসছিল তাই না,, যার মালিক কিনা তুই,, এখন বলিস না যে এই নাম্বার তোর না,, কেননা তুই আর আমি এক সাথেই এই সিমটা কিনেছিলাম কিছু কাজে,, কিন্তু পরে আর ব্যবহার করা হয় নি,, তাও যদি অশিকার করোস তাহলে এই দেখ,, তোর নামেই সিমটা রিজেস্টার করা,, আর তান্নাজকে যে কল আসতো সেই নাম্বারও তোর,, তুই যে আমার আর তান্নাজের সম্পর্ক ভাংগার জন্য এমন করেছিস তা আমি জানি,,, আর তুই যে আমার অগোচরে আমার কোম্পানির লস করছিস তাও আমি জানি,,, তোকে আমি যে কোম্পানি দেখা শুনা করতে দিয়ে গিয়েছিলাম,, তুই সেখানে পুরো ঘাবলা করে বসে আছিস,, কেন করলি এমন বল,, কেন করলি এমন,,

এইসব শুনে রুহান হু হু করে হেসে দেয়,, আর বলে,,

রুহানঃ সব যখন জেনেই গিয়েছিস তাহলে আর লুকিয়ে কি লাভ,, তাহলে শুন,, হা আমি এই এইসব করেছি,, কেন করেছিস জানিস,, তোর জন্য,,

নিশমঃ আমার জন্য,, অবাক হয়ে,,

রুহানঃ হা তোর জন্য,, সেই কলেজ লাইফ থেকে আমরা দুইজন এক সাথে,, সব কিছুতেই আমরা সেম ছিলাম,,, যেমন পড়ালেখায় তেমন স্পোর্টসেও,, এমন না যে আমি তোর থেকে দেখতে কম হেন্ডসাম বা কম চার্মিং,, কিন্তু তাও টিচারস থেকে শুরু করে কলেজের সব মেয়েরাই তোর উপর ফিদা,, আর তোর তারিফে প্রঞ্চমুখ,, আমি যত ভালোই পারফোমেন্সই করি না কেন,, তাও সব জায়গায় তোরই নাম,,, আমি টাইয়ার্ড হয়ে গিয়েছিলাম এইসব থেকে,, আমি আমার আইডেন্টিটি বানাতে চেয়েছিলাম,,,কিন্তু তোর জন্য কখনো পারি নি,, দেখতে দেখতে আমরা ভারসিটিতে উঠি,, সেখানেও একই সিচুয়েশন,, বরং কলেজ লাইফে আমার যা একটু দাম ছিল তাও এইখানে নেই,, সব জায়গায় খালি তোরই নাম,, তোরেই গুনগান,, আমার আর সহ্য হচ্ছিল না,, তাও চুপ ছিলাম কেননা আমার করার কিছুই ছিল না,, এভাবেই দিন যেতে থাকে,, কিন্তু যেদিন আমি প্রথম তান্নাজকে দেখি,, রায়ানের সাথে ঝগড়া করতে,, ওর এটিটিউড,, এর স্টাইল সবকিছুর প্রেমে পরে যাই আমি,, আমি রায়ানের থেকে বেশ দুরেই ছিলাম তাই সে আমায় দেখেনি,, কিন্তু আমার চোখ যেন তার উপর থেকে উঠছিলই না,,, তাই আমি তান্নাজের সব ইনফরমেশন কালেক্ট করতে থাকি,, কিন্তু এর মাঝেও তুই বিপত্তি হয়ে দাড়ালি,, যাকে কিনা আমি ভালবেসে ফেলেছিলাম তুই তার পিছেই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য উঠে পরে বসেছিলি,, তুই যেদিন প্রথম তান্নাজকে দেখোস তখন আমি সাথে ছিলাম না,, আমার ফোন আসায় আমি অন্যদিকে চলে যাই,, আমি থাকলে কথাটা এত দুর যেতে দিতাম না,, কিন্ত যা হওয়ার হয়ে যায়,, তুই ওর পিছে পরে যাস,, তান্নাজ যখন তোকে রিজেক্ট করে তখন আমার থেকে খুশি কেউ ছিল না,, কিন্তু তুই যখন সবার সামনে তান্নাজকে কিস করিস তখন আমার রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছিল,,, শুরু থেকেই তুই সব আমার থেকে কেড়ে নিয়েছিস,, যা যা আমি বিলং করি তা তোর জন্য কখনো পাই নি,, এখন নিজের ভালবাসাও যখন তুই কেড়ে নিলি তখন আমার সব সীমার বাধ ভেংগে যায়,, আর তখন থেকে তোর সব থেকে ক্লোস ফ্রেন্ড হতে শুরু করি,, ভালো বন্ধুর আড়ালে তোকে আমি তান্নাজ থেকে দুর করতে চেয়েছিলাম,, তাই ওই দিন আমি ইচ্ছা করে তোকে ওই রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাই যেখান দিয়ে তান্নাজ অনাথ আশ্রম যায়,, আমি জানতাম ওই এই টাইমেই সেখান দিয়ে যাবে,, এন্ড আমিও ওই টাইমেই যাই,, যাতে তুই ওকে এইভাবে দেখস আর নিজের প্রতিশোধের ভাবনা ভুলে ওর থেকে দুরে স্বরে যা,,, কিন্তু তা করলি না,, উল্টা ওর আরও কাছে চলে গেলি,, তাই অন্য উপায় বের করি,, আমি তান্নাজের সাথে ক্লোস হওয়াত ট্রাই করি,, যাতে ওই আমাকে ট্রাস্ট করতে পারে,, এইভাবে আমি তোদের দুইজনের ট্রাস্ট অর্জন করতে থাকি,, আর ঠিক টাইমের জন্য ওয়েট করতে থাকি,, কিন্তু এর মধ্যে তুই সত্যি তান্নাজকে ভালবেসে ফেলিস,, আর তান্নাজের জন্য মরিয়া হয়ে উঠিস,, যা আমার একদম সহ্য হচ্ছিল না,, আর যখন তুই তান্নাজকে প্রাপোস করিস আর ওই এক্সেপ্ট করে বিশ্বাস কর তোকে সেখানেই মেরে ফেলতে ইচ্ছা করে,, কিন্তু পারি নি,, তাই তোদের কিভাবে আলাদা করা যায় সেই চিন্তা করছিলাম,,, আর এর মাঝেই রায়ান আর নিয়ানের সাথে তুই তান্নাজের জন্য মিসবিহ্যাভ করস,, তাই ওরা তোর উপর ক্ষেপে থাকে,, তাই ওদের সাথে মিলে আমি তোদের আলাদা করার প্লেন করি,,, কিন্তু সঠিক দিন খুজে পাচ্ছিলাম না,, আর সেই দিনটা তোর বার্থডে ছিল,, আমরা জানতাম যে তান্নাজ আসবে শুধু তুই বাদে,,, তাই আমরা ওইদিন এই প্লেনটা করি,, আমি আগেই স্বরে যাই সেখান থেকে যাতে তান্নাজ আমায় ভুল না বুঝুক,, আর এইদিকে রায়ান আর নিয়ান ইচ্ছা করে ওইসব কথা বলে,, কেননা আমি ওদের এসএমএস করে দেই যে তান্নাজ উপরে আসতাসে,, আমি চাচ্ছিলাম যে ওই তোকে ভুল বুঝুক,, আর তেমন হলোও,, তাই তান্নাজ যাওয়ার পর আমি আসি আর তোকে ওর পিছে যেতে বাধা দেই,, কেননা আমি জানি তান্নাজ একটু ইমোশনাল,, তাই তুই বার বার বুঝালে ওই বুঝে যাবে,, তাই তোকে যেতে দেই নি,, কিন্তু তাও আমার মনে ভয় ছিল ওই মেবি তোর কাছে ফিরে আসবে তাই আমি অন্য এক প্ল্যান করি,,
আমার কাছে তোর আর সামিরার কিছু পিক ছিল আমি সেগুলাই কাজে লাগাই,, তুই তহ এস আ ফ্রেন্ড ছবিটি তুলেছিলিস,, কিন্তু আমি তা অন্য কাজে লাগাই,, আমি তোর আর সামিরার কিছু পিক এডিট করি,, আর ভিডিওটা তৈরি করি,, যেহুতু তুই আর আমি দেখতে প্রায় সেম,, আমাদের বডিও প্রায় সেম,, তাই পিছন থেকে কেউ দেখলে বলতে পারবে না কোনটা আমি কোনটা তুই,, আর তুই তহ জানিস আমি যে কাউরো কন্ঠ হুবহু কপি করতে পারি,, আমি সেটাই কাজে লাগিয়ে এই কাজটা করি,, সাথে রায়ান আর নিয়ানকে নিয়ে,, কেননা তুই সেইদিন যে ইন্সাল্ট তাদের করিছিস তাতে ওদের ইগো হার্ট হয়,, তাই ওরা আমার সাথে হাত মিলায়,,তারপর আমি ছবি আর ভিডিও তান্নাজকে সেন্ট করি,, আর আমি যা ভেবেছিলাম,, ওই তোকে পুরো পুরি ভুল বুঝে এন্ড তোকে ছেড়ে চলে যায়,, কিন্তু আমি চেয়েছিলাম ওর পাশে দাড়াতে ওকে সাপোর্ট করতে কিন্তু বেড লাক এর আগেই ওই গায়েব হয়ে যায়,, আর তুই এইদিকে দেবদাস,, আমি ইচ্ছে করেই তোকে ডিপ্রেশনে রাখি,, যাতে তুই তিলে তিলে মরোস,, কিন্তু তোর বাপ তা হতে দেয়নি,, তোকে সাইকেট্রিসের কাছে নিয়ে যায়,, আমি তোকে পাগল করতে চেয়েছিলাম,, যাতে আমি কথার ছলে তোর সব সম্পত্তি নিতে পারি,, কিন্তু পারলাম না,, কিন্তু তোকে এইভাবে ছটফট করতে দেখে নিজের মনে এক আলাদা শান্তি অনুভব করছিলাম,,,এর মাঝে তোর বাপ সব জেনে যায়,, আমার উদ্দেশ্য কি,, তাই তাকে রোড এক্সিডেন্ট করে মেরে ফেলি,, আমি মনে করেছিলাম এতে তুই পুরাই ভেংগে পরবি আর পাগল হয়ে যাবি,, আর তোর সব সম্পত্তি আমি নিয়ে নিব,, কিন্তু তা আর হলো না,,
এর মধ্যে তুই আবার তান্নাজকে ফিরে পাস,, আর ওকে বিয়ে করে ফেলস,, তখন আমি কানাডাতে ছিলাম তাই কিছু করতে পারি নি,, কিন্তু ভাগ্যের কি খেল সেখানে আমার সামিরার সাথে দেখা হয়,, আর যখন ওই তোর বিয়ের কথা শুনে রাগে ফুসতে থাকে,, কেননা ওই তোকে অনেক ভালবাসত তা আমি জানতাম,, আর সেইটাই আমি আমার নিউ অস্ত্র হিসাবে কাজে লাগাই,, আমি তান্নাজকে ব্লেংক কল করতাম,,, কিন্তু তান্নাজ তখন পাত্তা দিত না,, কিন্তু যখন আমি সামিরাকে পাঠাই তখন থেকে আমার কথা গুলো তান্নাজকে ইফেক্ট করতে থাকে,, আমি সামিরাকে বার বার তোর সাথে ক্লোস হতে বলতাম৷ আর সামিরাও তোকে পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে যায়,, তাই ওই আমার সব কথা শুনত,,সামিরা তোকে তান্নাজ দুরে রাখত আর আমি তান্নাজকে উসকাতে থাকতাম,, আর এইদিক দিয়ে তোর কোম্পানির লোস করিয়ে নিজের বিজন্যাস এগিয়ে নিয়ে যাই,,, এন্ড দেখ আমি তোকে আর তান্নাজকে আলাদাও করি এন্ড তোর বিজন্যাস ও লোস করাই,,,

এইসব শুনে নিশমের পায়ের রক্ত মাথায় উঠে যায়,, তার বাবার খুনি ওর সামনে বসা,, শুধু ওর জন্য ও এত সাফার করেছে,,,তার বিশ্বাস করতেও ঘৃণা হচ্ছে যে এমন একজন ওর বন্ধু ছিল,, যাকে সে তার সবচেয়ে ভাল বন্ধু মনে করেছে,, নিশম গিয়ে রুহানের কলার ধরে ইচ্ছা মত ঘুষি দিতে থাকে,,, আর লাথি দিতে থাকে,, রুহানে অবস্থা খারাপ হয়ে যায়,, তা দেখে হৃদয় এসে ওকে থামায়,, কিন্তু নিশম এখনো ওকে মারার জন্য তেড়ে আসছে,, আর বলছে,,

নিশমঃ তোকে তহ আমি ছাড়বো না,, আজ তোর জন্য আমার বাবা আমার পাশে নেই,,তোর জন্য আমি বাবা হাড়া,,, আমার ভালবাসার মানুষ আমাকে প্রতারক,, আমায় ঠকবাজ মনে করে,, সে আমাকে সবসময় দূরে সরিয়ে দিয়েছে,, তোকে তহ আমি ছাড়ব না,, জানে মেরে ফেলব তোকে,,, তোর জন্য আমি আমার সব কিছু হারিয়েছি,,

হৃদয়ঃ পুলিশ অফিসার,, আপনি এদের এখনোই নিয়ে জান,,,

পাশের রুম থেকেই পুলিশরা এসে রুহান আর সামিরাকে নিয়ে যায়,, যেহুতু সামিরা রুহানের সাথেই ছিল তাই তাকেও শাস্তি পেতে হবে,, নিশম নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে,, এইদিকে তান্নাজ মূর্তির মত দাড়িয়ে আছে,, এত বড় ষড়যন্ত্র,, তান্নাজ আজ পর্যন্ত বিনা দোষে নিশমকে শাস্তি দিয়ে আসছে,, নিশম সত্যি তাকে ভালবাসে,,, সে কিভাবে পারলো নিজের ভালবাসার মানুষকে এইভাবে কষ্ট দিতে,, নিশম বার বার বলেছে সে তান্নাজকে ভালবাসে,, কিন্তু তান্নাজেই বিশ্বাস করতো না,, আচ্ছা তার কাছে কি নিশমের কথার চেয়ে সেই ছবি আর ভিডিও বড় ছিল,, এইটা কেমন ভালবাসা যেখানে বিশ্বাস বলতে কিছুই নেই,, ভালবাসার মূল বিত্তি হলো বিশ্বাস,, যেখানে বিশ্বাস নেই সেখানে ভালবাসাও নেই,, তাহলে কি তান্নাজ কোনদিনও নিশমকে ভালবাসিনি,, নিশমই শুধু ভালোবেসে গেছে,,, এইসব ভাবনায় তান্নাজ বিভর ছিল,, তখন নিশমের কথায় তান্নাজের ধ্যান ভাংগে,,

।#Love_Treatment
Part- 38
Writer- Tanzin Islam Ishika [ Jannat ]

তান্নাজ বিভর ছিল,, তখন নিশমের কথায় তান্নাজের ধ্যান ভাংগে,,
নিশমঃ কি জেনেছ তহ সত্যির পিছে লুকিয়ে থাকা সত্যিটাকে,,,

তান্নাজঃ সব বুঝলাম কিন্তু তুমি সেইদিন এমন কেন করলে,,আর কেনই বা এইসব করলে,, আর কিভাবেই বা তুমি এইসব জানলে,,,

নিশমঃ তুমি যখন আমায় ছবি আর ভিডিওটা দেখাও তখন আমি শোকড ছিলাম,,, এইসব আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছিল,, তখন আমার নজর সেই নাম্বারটির দিকে যায়,, আর সেখানেই আমার নজর আটকে যায়,, আমার তখন বুঝতে দেরি নি এইটা কে করেছে,, কিন্তু তোমাকে তখন কিছু বললেও বিশ্বাস করতে না,, উল্টা আরও রিয়েক্ট করতে,, তাই তুমি যা বিশ্বাস করতে চাইছিলে আমি তোমায় সেটাই বিশ্বাস করাই,, আমি জানতাম তোমাকে বুঝিয়ে লাভ নেই,, তাই তোমার সাথে এমন বিহ্যাভ করি,,, ওর পিছে আরেক কারন ছিল যে তুমি আর আমি আলাদা না হলে রুহান বেরিয়ে আসত না,, তাই তোমায় ঘর থেকে বের করে দেই,, আর তোমার মোবাইল আমার কাছে রেখে দেই,, তোমাকে বের করে আমি সাথে সাথে মিতুকে ফোন করে বলি তোমায় পিক করতে,, কেননা তুই যে সেন্সিটিভ কখন কি কর বুঝা মুশকিল,, আমার ভয় ছিল তুমি উল্টা পাল্টা কিছু করবে তাই ওদের আসতে বলি,, পরে আমি তোমার মোবাইল চেক করি,, তার মধ্যে কিছু কল রিকডিং ছিল,, সেগুলো শুনে বুঝতে পারি তোমায় কেউ আমার নামে উসকাচ্ছিল,, আমি পরে নাম্বার ট্রেস করি,, আর যা ভাবছিলাম তাই,, রুহানই ছিল এইসবের পিছনে,, আমি তোমার সাথে যোগাযোগ অফ রাখি কেন না ওরে যদি বুঝে যায় যে আমি কিছু টের পেয়েছি তাহলে ওরা এলার্ট হয়ে যাবে,,

তান্নাজ এইসব শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে যায়,, নিশম যা যা বলছে সব সত্য,, কেন না তখন তান্নাজকে সে যা বলতো তাই সে মানতে অশিকার করত,, কিন্তু নিশম,, সে তহ সব সময় ওকে ভালবেসে এসেছে,,, এর মধ্যেও ওর কথাই ভেবেছে,, আর সে কি করেছে,, শুধু মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গিয়েছে,, নিজের থেকে দুরে সরিয়ে দিয়েছে,,, অনেক কষ্ট দিয়েছে,,, কিন্তু এখানে তার করার ছিল,, তাকে যা দেখানো হয়েছে সে তাই বিশ্বাস করেছে,,, এখন তান্নাজের মধ্যে এক অনুতপ্ততা কাজ করছে,,, সে কি করবে বুঝতে পারছে না,, তখন নিশম বলে,,

নিশমঃ তুমি সব সময় যখন যা মন চেয়ে তাই করেছ,, আজ যে সত্য বেরিয়ে এসেছে সেখানে আমি শুধু ভিক্টিম,, আর তোমরা সবাই অপরাধী,, হা তান্নাজ তুমিও অপরাধী,,, তুমিও সবার মত আমাকে শুধু কষ্টই দিয়েছ,, কি কমতি ছিল আমার ভালবাসায় বলো,, কি কমতি ছিল,, তুমি সেই ছবি আর ভিডিও গুলাই বিশ্বাস করলে,, আমার বলা কথা বিশ্বাস করলে না,, তুমি শুধু এই ছবি আর ভিডিওই চোখে দেখলে,,,আমার ভালবাসা,, আমার অনুভুতি,, তোমায় পাওয়ার আকাংখা,,আমার চোখে তোমার জন্য ভালবাসা,, এইগুলা দেখলে না,,আমি যে তোমায় বার বার বলেছিলাম যে আমি তোমায় বড্ড ভালবাসি,, তুমি সেই কথায় বিশ্বাস না করে ওই ভিডিওতে বলা কথাই বিশ্বাস করলে,, এ কেমন ভালবাসা তোমার,, তুমি কি আদো আমায় ভালবাস,, কেননা যেখানে ভালোবাসা থাকে সেখানে বিশ্বাস থাকে,, আর তুমি তহ আমায় বিশ্বাসই করো না,, একবার কি আমায় এসে জিজ্ঞেস করা যেত না যে এইগুলো আদো সত্যি কিনা,, না তুমি তা করলে না,,, বরং আমাকেই অপবাদ দিয়ে গেলে,,আমার ভালবাসাকে অপমান কিরে গেলে,, আজ পর্যন্ত তুমি আমায় বলেছ আমি তোমার ভালবাসা পাওয়ার যোগ্য না,, আজ আমি বলছি তুমি আমার ভালবাসা পাওয়ার যোগ্য না,,

তান্নাজ চুপচাপ তার কথা শুনছে আর নিজের চোখের জল ফেলছে,,, হা সত্যি তহ সে নিশমের ভালবাসা পাওয়ার যোগ্য না,, সে নিশমের সাথে অনেক বড় অন্যায় করেছে,, যার কোন ক্ষমা নেই,, দিন দিন তাকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে,, তার ভালবাসাকে অপমান করেছে,, সে পুরা সত্যি না যেনে অনেক বড় ভুল করে ফেলেছে,,, এখন সে কোন মুখে নিশমের সামনে দাড়াবে,, আদো কি দাড়াতে পারবে,,, তান্নাজ বুঝতাসে না সে কি করবে,, এর মাঝে নিশম আবার বলে,,,

নিশমঃ আমি না একবার ভুল করেছি তার শাস্তিও তুমি আমায় দিয়েছ,, বরং যে অপরাধ করেনি তারও শাস্তি পেয়েছি,, এখন তুমি যখন ভুল করেছ তারও শাস্তি তোমায় পেতে হবে,, আমার ভালবাসাকে অপমান করার শাস্তু পাবে তুমি,, তুমি না আমায় সহ্য করতে পারো না,, যাও আজ থেকে আর তোমাকে আমায় সহ্য করতে হবে না,,, আজ থেকে তুমি মুক্ত,, আমার #love_Treatment থেকে মুক্ত তুমি,, মানে
আমরা এক বাসায় থেকে এক সাথে থাকব না,, আমাদের মাঝে কোন স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক থাকবে না,, এক ছাদের নিচের মধ্যে থেকেও কোন কথা বলবো না,, আর না আমি কোন দিন যাব আমার ভালবাসা নিয়ে তোমার কাছে,, নিজের ভালবাসা যখন পেয়েও তাকে মন থেকে না পাওয়ার যন্ত্রণা বুঝবে তুমি,, ভালবাসার মানুষ যখন দূরে সরিয়ে দেয় তার কষ্ট বুঝবে তুমি,,এখন থেকে তুমি তোমার মত থাকবে আর আমায় আমার মত থাকতে দিবে,,
এই বলে নিশম চলে যায়,,, আর তান্নাজ সেখানেই স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে থাকে,,, হঠাৎ সে মাটিতে বসে পরে সে,, আর ডুকরে কেদে উঠে,,

তান্নাজঃ এ আমি কি করলাম,, নিজের অজানতে নিশমকে এত কষ্ট দিয়ে ফেলেছি,, আজ নিজের ভুলের জন্য সে আমার থেকে এইভাবে দূরে চলে গেল,,, আমায় কিনা মুক্ত করে দিল,, আমি এখন কি করব,, কোন মুখ নিয়ে ওর সামনে যাব,,, কোন মুখ দিয়ে তাকে ভালবাসা কথা বলবো,,
এইসব ভেবে তান্নাজের কান্না আরও বেরে যায়,, মিতু আর হৃদয় এতক্ষণ চুপচাপ দর্শকের মত সব দেখছিল,, কিন্তু তান্নাজকে এইভাবে কাদতে দেখে মিতু ওর কাছে গিয়ে ওর কাধে হাত রাখে,, তান্নাজ নিজের কাধে কাউরো হাতের স্পর্শ পেয়ে উপরে তাকিয়ে দেখে মিতু,, সে মিতুকে জরিয়ে কান্না করতে থাকে,, তা দেখে মিতু ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে,,, আর বলে,,

মিতুঃ তোকে আগেই বলেছিলাম ভাইয়া তোকে সত্যি ভালবাসে,, কিন্তু তুই শুনলি না,, তুই যা বিশ্বাস করতে চেয়েছিস তাই বিশ্বাস করেছিস,,, আচ্ছা একবার না হয় ভাইয়ার সাথে কথা বলে দেখতি,, জানিস লিজা আর রিয়াজের সাথে ভাইয়া কি করেছে,,

তান্নাজঃ কি,,, কান্না করতে করতে,,

তারপর মিতু তাকে সব বলে,,, এইসব শুনে তান্নাজ অবাক হবে নাকি খুশি হবে তা সে বুঝতে পারছে না,, কিন্তু এতটুকু বুঝে গেছে যে নিশম তাকে কতটা ভালবাসে,,, কিন্তু সে কি আদো স্বি ভালবাসার যোগ্য,, যে নিজের ভালবাসাকে বিশ্বাস করতে পারেনি,, সে কি আসলে কাউরো ভালবাসা পাওয়ার যোগ্য,,, মিতুর কথায় তান্নাজের ধ্যান ভাংগে,,

মিতুঃ ভুল যখন করেছিস তার শাস্তি তহ কে পেতে হবে,, কিন্তু তাই বলে এই না তুই হাল ছেড়ে দিবি,, তোর ভাইয়াকে মানাতে হবে,, মাফ চাইতে হবে তুই যা করেছিস,, আবার আপন করে নিতে হবে তোকে,,

হৃদয়ঃ তুই যে ভুল করেছিস তা তোকেই শুধরাতে হবে,,, নিশমকে তোকে মানাতে হবে,, নিশম যেমন তোকে মানিয়েছে,, তোর অবহেলার পরেও তোকে দুরে সরিয়ে দেয় নি,, বরং ভালবাসা দিয়ে জয় করার ট্রাই করেছে তোকে তোর ভালবাসা দিয়ে ওকে জয় করতে হবে,,, নিশম যে কষ্ট পেয়েছে তা তোর ভালবাসা দিয়ে ভুলাতে হবে,, এর জন্য তোকে আগের তান্নাজ হতে হবে,, যে তান্নাজ নিজের জিনিস কিভাবে আদায় করতে হয় তা ভাল করেই জানে,,,

তান্নাজঃ তুই ঠিক বলেছিস,, আমাকে নিশমকে মানাতেই হবেই,, সে যেমনেই হক,, এত দিন নিশম তার #Love_Treatment দেখিয়েছে,, এখন থেকে ও তান্নাজের #Love_Treatment দেখবে,, ওকে আমি আবার আমার করেই ছাড়ব,, যে ভুল আমি করেছি সেই ভুল আমিই ঠিক করব,,,

মিতুঃ এই না হলো তান্নাজ,, তহ এখন যাওয়া যাক,, শুভ কাজে দেরি করতে নেই

তারপর তারা বেড়িয়ে পরে,,, কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা তান্নাজকে বাসার সামনে চলে যায়,,, তান্নাজ ধীর পায়ে বিল্ডিংয়ের ভিতরে ঢুকে,,
এইদিকে,,
মিতুঃ এখন সব ঠিক হলেই হয়,,,

হৃদয়ঃ তা না হয় হলো,, এখন আমাদের মধ্যে সব ঠিক করা উচিৎ না,,

মিতুঃ মানে,,, অবাক চোখে

হৃদয় গাড়ি ব্রেক করে মিতু কাছে টেনে নিয়ে বলে,,,

হৃদয়ঃ বুঝ না কি বলতে চাচ্ছি,, নাকি না বুঝার ভ্যান করছো,,

মিতুঃ তুমি ই বলছো আমি জানি না,,, নিজেকে ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা করে,

হৃদয়ঃ ভালবাসি তোমায়,,, যেদিন তোমায় প্রথম দেখেছি সেই দিনই তোমার প্রতি এক ভালো লাগা কাজ করা শুরু করে,, বিশ্বাস কর আর নাই কর,, তোমায় নিজের থেকেও বেশি ভালবেসে ফেলেছি,, তুমি কি হবে আমার,,, অনুমতি দিবে কি তোমার হাতটা ধরে বাকি জীবন পার করতে,,,,

মিতু এইসব শুনে স্তব্ধ হয়ে যায়,, সে বিশ্বাস করতে পারছে না যে হৃদয় তাকে ভালবাসার কথা বলেছে,,, সেও যে হৃদয়কে ভালবেসে ফেলেছে,,, মিতুকে কিছু বলতে না দেখে হৃদয় নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে,,

হৃদয়ঃ অনুমতি দিবে কি,,,

মিতু খুশিতে কান্না করে দেয়,, আর নিজের হাত বাড়িয়ে দেয়,, হৃদয় তা দেখে মিতুকে জরিয়ে ধরে,, তার কপালে ভালবাসার স্পর্শ একে দেয়,,,,




এইখানে তান্নাজ বাসায় ঢুকে,, চারদিকে চোখ বুলায়,, তারপর নিজের বেডরুমে যায়,,, দেখে নিশম নেই,,, সে নিশমকে খুজতে থাকে,, নিশম দুই হাত পকেটে ঢুকিয়ে বারান্দায় দাড়িয়ে ছিল,, আর আকাশের পানে তাকিয়ে ছিল,, তান্নাজ বারান্দায় এসে নিশমকে দেখতে পায়,,, সে আর কিছু না ভেবে নিশমকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে,, আর কান্না করে দেয়,, নিশম প্রথমত একটু বিচলিত হলেও পরে নিজেকে সামলিয়ে নেয়,,, কিন্তু কোন কথা বলে না,,, তা দেখে তান্নাজ বলে,,

তান্নাজঃ মাফ করে দাও নিশম,, নিজের অজানতে তোমার সাথে অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি,,, অনেক বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলেছি,,, আই এম সরি,,, আর এমন ভুল হবে না,,, প্রমিস,, আর কোন দিন তোমায় অবিশ্বাস করবো না,, নিজের সবটা দিয়ে তোমায় ভালবাসব,,,

নিশম তান্নাজকে নিজ থেকে ছাড়িয়ে নেয়,, আর তারপর বলে,,,

নিশমঃ কিসের জন্য মাফ চাচ্ছো তুমি,, আমাকে অবহেলা করার,, নাকি আমার ভালবাসাকে বার বার অপমান করার জন্য,, নাকি আমার অনুভুতিগুলো মিথ্যা বলার জন্য,, নাকি আমাকে প্রতিটাদিন নিজের থেকে দুরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য,,, নাকি আমাকে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার জন্য,,, কোনটার জন্য মাফ চাচ্ছো তুমি,,,

তান্নাজ নিশমকে জরিয়ে ধরে বলে,,
তান্নাজঃ সব কিছুর জন্য মাফ চাচ্ছি আমি,,, জানি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি আমি,, যা চেয়েও আমি শুধরাতে পারব না,, অনেক বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলেছি,,, এখন আমার কাছে মাফ চাওয়া ছাড়া আর কিছুই নি,,, প্লিজ মাফ করে দাও আমায়,, আর এমন হবে না,,,

নিশম আবার তান্নাজকে সরিয়ে বলে,,,
নিশমঃ আমিও তহ তোমার কাছে কত বার মাফ চেয়েছিলাম,,, কিন্তু তুমি কি আমায় মাফ করেছিলে,, না করো নি,,, তোমার ভুলের সামনে তহ আমার ভুল অতি সামান্য ছিল,,, কিন্তু তাও তুমি আমায় মাফ করনি,, বরং আমায় দিনের পর দিন কষ্ট দিয়ে গিয়েছ,,, তাহলে আমি তোমায় কিভাবে মাফ করি বল,,,

তান্নাজঃ জানি অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি,, কিন্তু কি করবো বল,, ওইসব আমার মাথায় এইভাবে গেধে গিয়েছিল যে,, আমি চাইলেও সেগুলো ভুলতে পারছিলাম না,,,

নিশমঃ আচ্ছা আমার একটা কথার উত্তর দাও,, আজ যদি আমি তোমায় সব সত্যি না বলতাম বা তুমি নাই জানতে এইসব তাহলে কি আবার ফিরে আসতে আমার কাছে,,, আপন করে নিতে পারতে আমায়,,, তখন নিজের ভালবাসা দেখাতে পারতে আমায়,, আমার সাথে থাকতে চাইতে,, বলো,,,

তান্নাজ এইসব শুনে চুপ হয়ে যায়,, কারন সে জানে এর উত্তর তার কাছে নেই,, সে যে ফিরে আসতো না,, সারাজীবন নিশমের থেকে দূরে চলে যেত,,, তান্নাজকে চুপ থাকতে দেখে নিশম বলে,,
নিশমঃ কি উওর নেই তহ,, আচ্ছা আরেকটা কথার উত্তর দাও,, তোমার জায়গায় যদি আমি থাকতাম,, আর তোমায় এমনই মিথ্যা অপবাদ দিতাম,, তোমায় অবহেলা করতাম,, তোমার ভালবাসা পায়ে ঠেলে দুরে সরিয়ে দিতাম তাহলে কি তুমি আমায় আমার করে ভালবাসতে পারতে,, আমার মত কষ্ট লুকাতে পারতে,,, দিনের পর দিন অবহেলিত হয়ে থাকতে পারতে,,, বল তান্নাজ বল,,,

তান্নাজ চুপ হয়ে থাকে,, আর তার চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে,, তা দেখে নিশম বলে,,

নিশমঃ না পারতে না,, তাহলে কেন আমি তোমায় মাফ করব,, কেন তোমায় আপন করে নিব,,, যেই সম্পর্কে কোন বিশ্বাস নেই সেই সম্পর্ক অর্থহীন,, যেমন আমাদেরটা,,, আচ্ছা একবার কি আমায় এইসব জিজ্ঞেস করা যেত না যে এই ছবি আর ভিডিওটা কি আদো সত্যি কিনা,, আদো এর মধ্যে কোন সততা আছে কিনা,,, আসলেই কি আমি তোমায় ঠকাচ্ছি কিনা,,৷ একবার এসে জিজ্ঞাস করা যেত না,, না তুমি তা করলে না,, বরং আমায় দূরে ঠেলে দিলে,,, এখন আমাদের সম্পর্কে বলতে আছে শুধু খাতায় কলমে লিখা সেই কাবিন নামার বন্ধন,, আর কিছুই না,, আমাদের মধ্যে যা ছিল সব শেষ,,,

এই বলে নিশম চলে যায়,,, আর তান্নাজ সেখানে বসে পরে,,,
তান্নাজঃ জানি অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি,, এখন এর কিস্তি তহ দিতেই হবে,, কিন্তু তাই বলে তোমার আর মাঝের সম্পর্ক আমি শেষ হতে দিব না,, যে সম্পর্ক আমি নষ্ট করেছি তা আমি আবার তৈরি করেই ছাড়ব,, যেই কষ্ট তোমায় দিয়েছি তা আমি আমার ভালবাসা দিয়ে পুষিয়ে দিব,,, তুমি যেমন এই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে নিজের সব দিয়েছ তেমনি আমিও আমার সব দিয়ে এখন এই সম্পর্ক নতুন করে গড়ব,, এতদিন তুমি আমার উপর নিজের জোর খাটিয়েছ,, নিজের অধিকার দেখিয়েছ,, আজ থেকে আমি তোমার উপর জোর দেখাব,, আমার অধিকার খাটাব,, কেননা তান্নাজ কখনো নিজের নিজের হারতে শিখে নি,, যেটা তার সে তা নিজের করেই ছেড়েছে,,, এত দিন তুমি তোমার #Love_Treatment দেখিয়েছ,, এখন থেকে তুমি আমার #Love_Treatment দেখবে,,

এই বলে তান্নাজ নিজের চোখের পানি মুছে দাড়িয়ে যায় আর রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়,,,,




চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here