Love With Dragon part -17

#Love_With_Dragon
#Episode_17(২য়_খন্ড)
[✖️গল্পটি কাল্পনিক দয়া করে কেউ বাস্তব এর সাথে তুলনা করবেন না✖️]

সকালবেলা অধরা ঘুম থেকে ওঠে বাড়ি থেকে বের হয়ে বাবার কবরের সামনে অনেকক্ষণ কান্না করে।তারপর সেখান থেকে ওঠে মন খারাপ করে রাস্তা দিয়ে হাঁটছে। হঠাৎ করেই একজন বয়স্ক মহিলা অধরাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না শুরু করে।অধরা ভয় পেয়ে যায়।

— কে আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছেন কেন…..(অধরা)

— তুই আমায় চিনতে পারছিস না রিদিয়া আমি তোর মা।(মহিলাটি কান্না করতে করতে বললো)

— রিদিয়া….. রিদিয়া কে আমার নাম অধরা আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে আন্টি।(অধরা)

মহিলাটি অধরার দু গালে হাত দিয়ে বলে,,,,

— তুই আমার মেয়ে ভুলে গেছিস সব কিছু মনে নেই তোর মা।(মহিলাটি)

মহিলাটিকে দেখে অধরার মাথায় ব্যাথা শুরু হলো।ঝাপসা ঝাপসা কিছু মানুষ তার চোখের সামনে ভাসছে।

তখনি একটা মেয়ে দৌঁড়ে এসে মহিলাটিকে অধরার কাছ থেকে সরিয়ে নিল।

— কিছু মনে করবেন না আসলে……ওপরের দিকে তাকাতেই অবাক হলো মেয়েটি।

— র….রিদিয়া…।

— মিহি দেখ আমার রিদিয়া আমায় চিনতে পারছে না।

— মা কিন্তু রিদিয়া তো বেঁচে নেই। (মিহি)

রিদিয়া মাথা ঘুরে পরে যাওয়ার আগেই রোহিত রিদিয়াকে ধরে পেলে।

— আপনি এখানে।আর মেয়েটি কে……(মিহি)

— মিহি তোমায় পরে সব বলবো এখন আমায় যেতে হবে।তুমি ফুপিমণিকে বাড়ি নিয়ে যাও।(রোহিত)

রোহিত অধরাকে নিয়ে চলে গেল।আর মিহি কিছুই বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে এসব। মিহি অনেক কষ্টে বুঝিয়ে মিসেস মেহেরকে বাড়ি নিয়ে গেল।
_____________________

— তোমাকে কতবার বলেছি রিদিয়াকে দেখে রাখবে তা না করে তুমি পরে পরে ঘুমুচ্ছিলে।(রোহিত)

— সরি স্যার কখন ঘুমিয়ে পরেছি বুঝতে পারিনি।(মেঘলা)

— তুমি যদি এই ভুল না করতে তাহলে রিদিয়া আবার জ্ঞান হারাতো না।আগের জন্মে ওর যারা সবচেয়ে বেশি প্রিয় ছিল তাদের সামনে গেলেই তার অস্পষ্ট সবকিছু চোখের সামনে ভাসবে আর ও জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে।আমি এইজন্য রিদিয়ার সামনে আসিনা। সময় হলে ও নিজেই সবকিছু বুঝতে পারবে। আজকে রিদিয়া ফুপিমণির সামনে পরেছে।ফুপিমণিকে দেখে ওর মাথা ব্যাথা শুরু হয় আর ও জ্ঞান হারিয়ে পেলে।(রোহিত)

— সরি স্যার। রিদিয়া যেমন আপনার ভালোবাসা তেমনি ও আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আগের জন্মে আমাদের ভুলের কারনে রিদিয়াকে হারিয়েছি এবার আর সে ভুল করবো না।আমরা যদি সঠিক সময়ে সব বন্ধুরা যুদ্ধের ময়দানে পৌঁছাতাম তাহলে আমাদের কলিজার টুকরা বান্ধবীকে হারাতাম না।সরি স্যার। (মেঘলা কান্না করতে করতে বলে)
______________________🌼🌼

(সেদিন রাহুল রিদিয়াকে উদ্ধার করতে ভাম্পায়ার রাজ্যে গিয়েছিল। কিন্তু রাহুলকে বন্দী করে পেলে। আদর,আকাশ – মেঘলা,নীল – অনিমা রাহুলকে সাহায্য করতে এসে তারা ও বন্দী হয়ে গেল।সবাইকে ম্যাজিকেল শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে রেখেছে। কেউই কিছু করতে পারছিলো না।সবাইকে যে কক্ষে বন্দী করা হয়েছে রবিন সেখানে প্রবেশ করলো।

— ভালোই লাগছে তোদের এইভাবে দেখে। তোরা ড্রাগন কিং এর একটা বড় অংশ তাই তোদের বন্দী করে রেখেছি।আগে থেকেই বুঝতে পেরেছি তোরা রিদিয়াকে নিয়ে যেতে আসবি তাই আমি আগে থেকেই তোদের বন্দী করার ব্যাবস্থা করে রেখেছি। তোরা চেষ্টা করলে এখান থেকে বের হতে পারবি তবে তখন অনেক দেরি হয়ে যাবে। কারন এই শিকল আমি না বলা পর্যন্ত দশ মিনিট তোদের আঁটকে রাখবে কারো কোনো ম্যাজিকে কাজ করবে না।কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে যাবে।তোদের ড্রাগন কিংকে বাঁচাতে পারবি তো।ড্রাগন কিং এর প্রাণভোমরা ড্রাগন কিংকে মারার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তোরা কিছুই করতে পারবি না। তোরা কিছু করার আগেই সবকিছু শেষ হয়ে যাবে।হা হা হা।
এইসব বলে রবিন কক্ষ থেকে বের হয়ে গেল।

— এখন কি হবে কিভাবে ড্রাগন কিং কে কিভাবে বাঁচাব আমরা…..(অনিমা)

— এইখানে কোনো শক্তি কাজ করছে না আমাদের।(নীল)

— আমরা সবার শক্তি একসাথে করলে শিকলগুলো ভেঙে পেলা সম্ভব হবে।(রাহুল)

রাহুলের কথায় সবাই চোখ বন্ধ করে স্পেল পড়া শুরু করলো। স্পেল পড়ার সাথে সাথে একেকজনের কপালের মাঝখান থেকে একেক রঙের রশ্মি বেরুতে লাগলো। রশ্মিগুলো সব একসাথে মিশে শিকলগুলোর ওপর পরতে লাগল।আস্তে আস্তে শিকলগুলো ফাটা ধরলো। সবাই চোখ খুলে শিকলগুলোকে ভেঙে যেতে দেখে অনেক খুশি হলো।

— তাড়াতাড়ি এখান থেকে আমাদের যুদ্ধের ময়দানে যেতে হবে রিদিয়াকে বাঁচাতে হবে…(আকাশ)

— রিদিয়ার বাঁচাতে হবে মানে রিদিয়া কিংকে মারতে যাচ্ছে। (অনিমা)

— তুই যে এত বোকা আমি জানতাম না অনিমা।রিদিয়া কিংকে ভালোবাসে রিদিয়া মারবে সেটা তুই কি করে ভাবলি।বরং ও নিজেকে শেষ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সবাই তাড়াতাড়ি চলো আমাদের কিং আর রিদিয়া দুজনকেই রক্ষা করতে হবে। (মেঘলা)

— আমার একটা বিষয়ে অনেক অবাক লাগছে।তোমরা আমাদের শএু পক্ষ হয়ে আমাদের সাহায্য করছো।(রাহুল)

— ওরা অনেক লোভী ড্রাগন রাজ্যকে ওরা নিজেদের দখলে নিলেই পুরো মনস্টার দের শক্তি ওদের দখলে চলে আসবে ওরা আরো শক্তিশালী হয়ে যাবে।পুরো মনুষ্যজাতিও ওরা শেষ করে দিবে।ওরা ধ্বংস ছাড়া কিছু বুঝে না।কিন্তু আমরা শান্তি চাচ্ছি। আমরা চাই পুরো মনস্টার ওয়ার্ল্ড মিলেমিশে থাকুক কিন্তু কিং হিউগো আর কিং পিটাস সেটা কখনোই চায় না।তারা শক্তিশালী হতে চাচ্ছে অত্যাচার করতে।(আকাশ)

— তোমাদের সবাইকে ধন্যবাদ। এখন চলো সবাই। (রাহুল)

যুদ্ধের ময়দানে যেতে দেরি করে ফেললো সবাই ।তার আগেই রিদিয়া নিজের জীবন শেষ করে ফেললো তার কিউট ড্রাগন কিং এর জন্য।
(প্রথম খন্ড যারা পড়েছেন তাদের বুঝতে সুবিধা হবে।আস্তে আস্তে সবকিছু ক্লিয়ার করে দেওয়া হবে।)
________________________

বর্তমান…….

— কান্না করো না তুমি বাড়ি যাও আমি দেখছি এইদিকটা।(রোহিত)

— না স্যার আমি এখানে থাকব।(মেঘলা)

(রিদিয়াকে দেখেশুনে রাখার জন্য রোহিত মেঘলাকে রিদিয়ার বাড়ির ডানপাশে একটা ছোট্ট বাড়ি বানিয়ে দিয়েছে সারাক্ষণ রিদিয়ার ওপর নজর রাখার জন্য।রিদিয়া মেঘলাকে প্রতিবেশী হিসেবে জানে। কিন্তু মেঘলার একটু বেখেয়ালি রিদিয়ার ক্ষতি হয়ে যায়।)

— তোমার বন্ধুরা তোমায় যেতে বলেছে…. (রোহিত)

— ঠিক আছে স্যার যাচ্ছি। (মেঘলা)

মেঘলা যেতেই রোহিত রিদিয়ার পাশে বসলো।রিদিয়ার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে। রোহিত রিদিয়ার হাত নিজের বুকের সাথে রেখে বলে,,

— ভালোবাসি শ্যামবতী😢…।আগের জন্মে আমি তোমায় ভালোবাসার কথা বলতে পারিনি।এখনোও পারবো কিনা জানিনা।তোমার মনে ভালোবাসার সৃষ্টি করতে পারব কিনা। ভয় লাগছে অনেক তোমাকে হারিয়ে পেলার ভয়।এই জন্মে আমি তোমায় হারিয়ে যেতে দেব না সব শএু থেকে তোমায় আড়ালে রাখব।প্রথম জন্মে তোমার বাবাকে হারিয়েছ মা ছিল।আর এই জন্মে বাবা -মা দুজনকেই হারিয়েছ।আমি কিছুই করতে পারলাম না তোমার জন্য। আমি তোমার খাঁটি প্রেমিক হতে পারলাম না।নিজেকে ব্যর্থ মনে হচ্ছে। শ্যামবতীর সুখের জন্য এই অভাগা কিং কিছুই করতে পারল না৷ শুধু অপেক্ষার প্রহর গুনেছে।তোমার জন্য বিশটি বছর অপেক্ষা করেছি আমি। সারাজীবন তোমার জন্য অপেক্ষা করে কাটিয়ে দিতে পারব আমি তুমি শুধু আমার পাশে থেকে যেও।

রোহিত রিদিয়ার হাত শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে।
________________________

— মিহি….. মিহি আমার রিদিয়া বেঁচে আছে।(মিসেস মেহের)

— মা রিদিয়া বেঁচে নেই। তোমার সামনে ওকে দাফন করা হয়েছে তুমি কি ভুলে গেছ।(মিহি)

— না মিহি আমার মেয়ে সবসময় আমার কাছে বেঁচে আছে।ও মরে গেছে এই কথা মুখে ও আনবি না তুই। (মিসেস মেহের)

দুজনের কথার মাঝে কলিং বেল বেজে উঠল। মিহি দরজা খুলে দিল।

— আম্মু আমি পরীক্ষার ফার্স্ট হয়েছি।আমার ক্লাসে ইংরেজি মেম আমায় হোয়াইট ডল গিফট করেছে এই দেখ।

— আমার ইরা মামনিটা এত ভালো করেছে তাহলে আজকে তোমার পছন্দের খাবারগুলো বানিয়ে তোমায় খাওয়াবো।(মিহি)

(মিহি ইরার মেয়ে।রিদিয়ার মৃত্যুর পর মিসেস মেহের আর মিহি মনের দিক থেকে অনেকটাই ভেঙে পরেছিল।তাদের অবস্থা দেখে রোহিত রাহুলকে বলে মিহিকে বিয়ে করতে । রাহুল ভাইয়ের কথায় না করতে পারলো না।মিহিকে বিয়ে করে যদি রিদিয়াকে ভুলে যেতে পারে তাহলে খারাপ ও হবে না। রাহুল বিয়েতে হ্যাঁ বলে দিল।মিহি বিয়ের পর থেকে আস্তে আস্তে রাহুলকে ভালোবাসতে শুরু করে।রাহুল মিহির সব দায়িত্ব পালন করে।কিন্তু এখনো ও রাহুল রিদিয়াকে ভুলতে পারেনি।বিয়ের চার বছর পর মিহি আর রাহুলের কন্যা সন্তান হয়।মিহি রাহুলের কাছে বেবির জন্য রেগুলার জ্বালাতো।পরে রাহুল ঠিক করে বেবি নিবে।মিহির সব ইচ্ছা পূরনে করলে রাহুলের মনে আলাদা এক প্রশান্তি লাগে।)

(রাহুল রিদিয়ার ব্যাপারে সবটাই জানে। রোহিত মানা করেছে রিদিয়ার ব্যাপারটা কাউকে না বলতে কারন পুরোনো শএুরা এখনো ওঁৎ পেতে আছে রিদিয়ার ক্ষতি
করার জন্য।)

— মিহি ইরাকে রুমে নিয়ে যাও আমি ফুপিমণিকে সামলে নিচ্ছি। (রাহুল)

— চল ইরা ফ্রেশ হয়ে খেয়ে ঘুমাবে।(মিহি)

— চল আম্মু।আম্মু আমার সুপারহিরো এখনো আসছে না কেন। সুপারহিরো না আসা পর্যন্ত আমি কিছু খাব না।(ইরা)

— তোমার সুপারহিরো একটা দরকারি কাজে গেছে একটু পরই চলে আসবে মামনি তুমি লক্ষী মেয়ের মতো ফ্রেশ হয়ে নেও তোমার পছন্দের পায়েস বানাতে যাচ্ছি আমি।(মিহি)

— সত্যি বলছো আম্মু। তোমায় এওগুলো ভালোবাসি আম্মু।(ইরা)
বলেই ইরা মায়ের দু’গালে চুমু দিলো।

চলবে……
#লেখনীতে__ফিহা
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ❌]
____________________

[বানানে ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন]

[গল্প সম্পর্কে গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি পাঠক-পাঠিকাদের কাছ থেকে।যাদের আমার গল্প পড়তে ভালো লাগে না দয়া করে তারা এড়িয়ে যাবেন। গল্প পড়ে কেউ বাজে কমেন্ট করবেন না প্লিজ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here