#Marriage_With_Benefits
#Part_17
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
নিহাল মাথায় হাত রেখে মলে বসে আছে।
আপনি,,,আপনি নিহাল না?(ডালিয়া)
আপনি,,?(নিহাল)
আরে আমি ডালিয়া।ঐযে অনাথ আশ্রমের।(ডালিয়া)
এইরে এই মেয়ে আবার কি করছে এইখানে?(নিহাল মনে মনে)
এইযে কি ভাবছেন?(ডালিয়া)
কিছু না কিছু না।(নিহাল জোরপূর্বক হাসি দিয়ে)
ওহ।আমি এখানে বই কিনতে এসেছিলাম।(ডালিয়া)
ওহ।(নিহাল অন্যমনস্ক হয়ে)
কি হলো কি?উনার ধ্যান অন্য দিকে মনে হচ্ছে!(ডালিয়া মনে মনে)
কি করা যায়?ওয়েট ডালিয়া তো আস্থার বান্ধুবি।আমাকে তো ওই সাহায্য করতে পারে।(নিহাল মনে মনে)
তাহলে আমি যাই,,
বলেই ডালিয়া যেতে নেবে তখনই নিহাল ওর হাত ধরে বললো
এই শোনো।দাড়াও আমাকে একটা হেল্প করতে পারবে?
ডালিয়া জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে
ওহ। সরি ভুলে তোমার হাত ধরে ফেললাম।কিছু মনে করো না।
নিহাল ডালিয়ার হাত ছেড়ে দিয়ে।
না না।কিছু মনে করবো না।আপনি বলুন আপনার কি সাহায্য লাগবে?(ডালিয়া)
আসলে আমার এক ভাবির জন্য কিছু কাপড় কিনতে হবে।কিন্তু আমার মেয়েদের কাপড় চোপড় সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা নেই।আর আমিও কখনও মেয়েদের কাপড় চোপড় কিনি নাই।তুমি যদি একটু সাহায্য করতে?(নিহাল)
আপনার ভাবির সাইজ কতো?আর কে আপনার ভাবি?(ডালিয়া কৌতূহল নিয়ে)
আস্থা।(নিহালের মুখ ফসকে বেরিয়ে গেলো)
আস্থা?(ডালিয়া ভ্রু কুঁচকে)
আরে আস্থার মতো সাইজ।আর আস্থার মতই দেখতে।তুমি আস্থার যেই কাপড় পছন্দ ওই কাপড়ই কিনে দাও।(নিহাল কোনো মতে সামলে)
কিন্তু আমার দুটো শর্ত আছে!(ডালিয়া ভাব নিয়ে)
কি শর্ত?(নিহাল সন্দেহর দৃষ্টিতে)
আজ আমার সাথে আপনার কফি খেতে হবে আর একটা হলো আপনার নম্বরটা আমাকে দিতে হবে।(ডালিয়া)
কিহ!আমি আমার নম্বর দিবো না।কফি ঠিক আছে কিন্ত নম্বর না।(নিহাল)
বাবারে। এতো দিন শুনতাম মেয়েরা নম্বর দিতে চায় না।এখন দেখি ছেলেরাও।(ডালিয়া ভ্রু কুঁচকে)
তাহলে ওইটা বলো যে এত দিন শুনে আসলাম ছেলেরা নম্বর চায় এখন দেখি মেয়েরা চায়।(নিহাল)
কেনো চাইবো না?আমি আপনাকে হেল্প করবো।তার বদলে কি আমি কিছু নিবো না?(ডালিয়া মুখ ভেংচি দিয়ে)
দুই বান্ধবী এক। বেনিফিটস্ ছাড়া কেউ এক পাও আগায় না!(নিহাল বিড়বিড় করে)
কিছু কি বললেন?(ডালিয়া)
নাহ(নিহাল)
এখন বলেন কি করবেন?(ডালিয়া)
অন্য কোনো উপায় আছে?(নিহাল)
নাহ।নেই।(ডালিয়া)
তাহলে চলো।আমি রাজি।(নিহাল এক সাগর হতাশা নিয়ে)
নিহাল আর ডালিয়া মিলে শপিং করলো। শপিং শেষ করে কফি খেলো।তারপর নিহাল থেকে ওর নম্বরটা নিয়েই ছাড়লো ডালিয়া।
।
।
বর্তমান
আভি চল একসাথে নিচে নামি।
বলেই নিহাল আস্থা আর আভির সাথে নিচে নামছে।
আস্থা তোমার কোনো ভয় পাওয়ার দরজার নেই।তোমার ফুল পাওয়ার আছে।(আভি)
আমি মুচকি হাসি দিলাম।কারণ আমি জানি আমি কি করবো?
আমি আর আভি গিয়ে বসলাম। ডাইনিং টেবিলে গিয়ে দেখি শুধু দাদু বসে আছে আর তার এক পাশে আরিফ আর মিস:সাবিনা দাড়িয়ে আছে।
বাড়ির বাকি লোক কোথায়?(আমি কৌতূহল নিয়ে)
মিস:ঈশানি বাহিরে গেছে।রোহান স্যার(আভির চাচা) অফিসে গেছে।আর আয়ুশ স্যার(আভির ছোটো চাচার ছেলে)কলেজে গেছে।আর আর্শি মিস(ছোটো চাচার মেয়ে)কোথায় গেছে জানি না।(মিস সাবিনা)
উনি?(আমি মিস সাবিনাকে উদ্দেশ্য করে)
উনি হচ্ছে মিস সাবিনা।আমার মায়ের মত।আর উনি হচ্ছে আরিফ।আরমান চৌধূরীর সেক্রেটারি।(আভি)
ওহ।আচ্ছা সবাইকে কি এক সাথে খায় না?(আমি)
না।যে যার যার রুমে খায়।এক সাথে খেলে তো তাদের খাবার হজম হবে না।(আরিফ ফট ফট করে সব বলে দিলেন)
এই কথা শুনেই দাদু আরিফের দিকে রাগী চোখে তাকালো।
আর সাথে সাথেই আরিফ চুপ।উনিও(আরিফ)মজার মানুষ মুখ ফসকে আসল কথা বের করে ফেলেছে।
ডাইনিং টেবিলে খাবার দেওয়ার পর আমি,আভি আর দাদু খেলাম।দাদু আমার সাথে একটা কথাও বলে নি।যতটুকু বুঝতে পারছি এইবাড়িতে কারো সাথে কারো সম্পর্ক নেই।যা আছে তা নামে মাত্র।কিন্তু আমি এখন কিছু করতে চাইছি না।আগে পরিস্থিতি দেখে কাজ করতে হবে ঠান্ডা মাথায়।আগে সবাই বাসায় আসুক।তারপর বুঝবে সবাই কতো ধানে কত চাল।এক সাথে খাবি না আবার।তোরা তো খাবি তোদের চৌদ্দ গুষ্টি শুদ্ধু খাবে।আর যদি না খাওয়াতে পারি তবে আমি আস্থা না।
আমি আর আভি খাবার শেষ করে।রুমে গিয়ে বাহিরে যাওয়ার জন্য তৈরি হলাম।আমি এখন আমার পার্ট টাইম কাজে যাবো আর আভি অফিসে।আভির সাথে দাদুও যাবে।কিন্তু তাদের সাপে নেউলে সম্পর্ক কিনা?এক সাথে তো ভুলেও যাবে না।তাই দুই জনে একই গন্তব্যে গেলো দুই গাড়ি দিয়ে।বড়ো লোকের এলাহি কারবার।আমাকে আভি নামিয়ে দিয়ে গেলো।আমার অফিস ওর অফিসের রাস্তায় পড়ে।তাই সহজই।
আমি গিয়ে সরাসরি ভিতরে ঢুকলাম।
আমার কাজ রিসেপশনে সব খবর পৌঁছে দেয়া।আর রিসেপশনে আশা সব খবর বিভিন্ন জায়গা পাঠানো।
আমি যখন আমার কাজ করছিলাম।তখনই একটা মহিলা আমার সাথেই কাজ করে সে কান্না করছিলো।
কি হলো আপনি কান্না করছেন কেনো?কোনো সমস্যা আপনার?আপনি চাইলে আমাকে বলতে পারেন(আমি)
আমার স্বামী তার অফিসের সহকর্মীর সাথে পরকীয়াতে লিপ্ত।
বলেই মহিলা কান্না করতে শুরু করলো।
আপনি কি করে জানলেন উনি পরকীয়াতে লিপ্ত?(আমি অবাক হয়ে)
আমার স্বামী আমাকে আর আগের মত ভালবাসে না।সারাক্ষণ ফোন নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করে।আমার আর আমাদের সন্তানের একটু খেয়ালও রাখে না।বাসায় কোনো খরচ দেয় না।আমাকে এড়িয়ে এড়িয়ে চলে।আজ অফিসে যাওয়ার নাম করে বেরিয়েছে কিন্তু অফিসের বদলে পার্কে গিয়ে বসে ছিলো ওই মহিলার সাথে।আমি ফোন করে জিজ্ঞেস করার সময় উনি বলেছেন উনি নাকি অফিসে কাজে ব্যাস্ত এখন কথা বলতে পারবে না।
বলেই মহিলা আবার কান্না করতে শুরু করলো।
পরেই আবার বলা শুরু করলো।আমি ওকে অনেক ভালোবাসি। ও যদি আমাকে ছেড়ে খুশি থাকে তাহলে থাকুক।আমি এইসব মাইন্ড করবো না।আমি ওর থেকে অনেক দূরে চলে যাবো।(মহিলা)
কোথায় যাবেন আপনি?(আমি)
আমি আত্মহত্যা করবো।যখন আমি মারা যাবো তখন ও বুঝবে আমি ওর জন্য কি ছিলাম?(মহিলা)
আশ্চর্য তো।আপনি মরতে যাবেন কেনো?ভুলটা করেছে আপনার স্বামী।আর আমি তো শিওর না যে উনি এইসব করেছেন?আগে উনাকে জিজ্ঞেস করুন।যদি উনি স্বীকার করে তাহলে উনাকে উনার কৃতকর্মের জন্য শাস্তি দিবেন।(আমি)
আমার মৃত্যুই ওর জন্য শাস্তি।(মহিলা)
কোনো মতেই না।যে জীবিত অবস্থায় আপনাকে কষ্ট দিচ্ছে।সে যে মৃত্যু হলে আপনার কথা ভাববে এইটা তো নাও হতে পারে।আপনি আপনার সন্তানের কথা ভাবুন উনি কি উনার বাবার দায়িত্ব পালন করতে পারবে??।(আমি)
আমি কি করবো?
বলেই মহিলা আবার কান্না করতে শুরু করলো।
আপনি প্রথমে আপনার স্বামীর সাথে খুলে কথা বলুন।তারপর যদি সত্যি আপনার স্বামী পরকীয়া করে থাকে।তাহলে নিজের সন্তানের কথা ভেবে বুক উচু করে বাঁচুন।(আমি)
মহিলা মনে হয় আমার কথা শুনে।একটু আশ্বস্থ হলো।
আস্থা আর মহিলার সব কথা আড়াল থেকে একজন শুনলো সে আর কেউ না কলি।
কলি খান গ্রুপে ম্যানেজিং ডিরেক্টর।আর খান গ্রুপের মালিক হলো জিসান।ভাগ্যক্রমে আস্থাও এই কোম্পানিতে চাকরি করে।আজ কলির একটা ইম্পর্ট্যান্ট মিটিং ছিলো বলে তাড়াতাড়ি যেতে ছিলো।তখনই রিসেপশন থেকে কারো কান্নার আওয়াজ আসলো।তাই সেখানে গিয়ে আস্থা আর মহিলার কথোপকথনটি শুনতে পেলো।
আস্থা।সত্যিই তুমি আমাকে প্রতি পদে পদে আমাকে মুগ্ধ করো।এইটুকু বয়সে তুমি কতো কিছু বুঝতে পারো।আমি ভেবছিলাম আমাদের এমনি এমনি শুধু দেখে হয়েছে।কিন্তু কোনো ঘটনাই কাকতালীয় না।ভাগ্য তোমাকে আমার সাথে মিলিয়ে দিয়েছে।আমাকে আজই জিসানের সাথে কথা বলতে হবে।
।
।
কেবিনে
জিসান জিসান।(কলি হন্তদন্ত হয়ে ঢুকলো)
কি হলো কলি এইভাবে ঢুকলে যে?কিছু কি হয়েছে?(জিসান ঘাবড়ে গিয়ে)
জিসান।আমার একটা কথা রাখবে প্রমিজ করো?(কলি)
কি কথা?আমি তোমার সব কথাই রাখি।(জিসান)
আমি একজনকে দত্তক নিতে চাই।(কলি)
কি?কাকে দত্তক নিবে?আর এখন?(জিসান)
হ্যা।আমি জানি প্রথমে আমার মেন্টাল হেলথ নিয়ে সমস্যা হয়েছিল।তারপর সুস্থ হওয়ার পর তুমি বলেছিলে দত্তক নেওয়ার কিন্তু আমিই আমার মেয়ের জায়গা কাউকে দিতে পারি নি।অন্য কাউকে আমার মেয়ের জায়গাতে বসাতে পারি নি।কিন্তু এখন আমার কেনো জানি ওকে দত্তক নিতে মন চাচ্ছে।আমি ওকে দত্তক নিবো।যে করেই হোক তুমি না করবে না।প্লিজ।(কলি খুব এক্সসাইটেড হয়ে)
আমি কি কোনো কিছুতে তোমাকে মানা করি?আচ্ছা আমরা কালকেই অনাথ আশ্রমে গিয়ে ওই বাচ্চাকে দত্তক নিয়ার প্রস্তুতি নিবো।,(জিসান)
ও বাচ্চা না তো।ঐযে অনাথ আশ্রমে যেই মেয়েটা নেচে ছিলো। ও সেই মেয়ে।(কলি)
ও।কিন্তু তুমি ওর দেখা কথা থেকে পেলে বলতো?(জিসান)
ও আমাদের কোম্পানিতে পার্ট টাইম জব করে।(কলি)
আচ্ছা।তাহলে কালকেই আমি আর তুমি মিলে ওর সাথে কথা বলবো কেমন?(জিসান)
যদি ও আমাদের মেয়ে হতে রাজি না হয়?(কলি চিন্তিত হয়ে)
জিসান ওকে জড়িয়ে ধরে বললো
আমরা ওকে মা বাবার এতো আদর দিবো।যতক্ষণ না ও রাজি হচ্ছে ততক্ষণ আমরা হাল ছাড়বো না।(জিসান)
।
।
অন্যদিকে
আমি এখন আভিদের কোম্পানিতে যাবো।আরিফ ফোন দিয়েছে দাদু নাকি কি ইম্পর্ট্যান্ট কথা বলতে চান?আমি যেনো আভি কেও কিছু না বলি।ছুটির পর এখন আমি আভিদের কোম্পানিতে যাচ্ছি রিকশা করে।তাড়াতাড়িই পৌঁছে গেলাম।আমি দাদুর কথা মত আভিকে কোম্পানিতে যাওয়ার কথা কিছু বলি নি।কারণ আমি জানি আমার দাদা শশুরকে আমি ঠিক সামলে নিবো।😁এখন শুরু হলো চৌধুরী বনাম আস্থা।দেখা যাক কে জিতে?
।
।
চলবে,,,
এখন guess করুন।দাদু আস্থাকে কি বলতে পারে?