#Marriage_With_Benefits
#Part_5
Writer::Shaanj Nahar Sanjida
.
.
আমি আর নিহাল গাড়িতে বসে আছি।নিহাল ড্রাইভে করছে আর আমি উনার পাশে বসে আছি।আজ কতকিছু হয়ে গেলো আমার জীবনে।মানুষের জীবনের গতি কখন কোন দিকে চলে যায় তা কারোরই জানা নেই।আজ সকাল অব্দি আমি ভাবি নাই যে কেউ আমাকে কিডন্যাপ করবে আর এতো কিছু হবে।সত্যিই আমার জীবনটা এইসব অভিজ্ঞতা দিয়ে ভরপুর।বাসায় গিয়ে জানি আবার আমাকে কি দেখতে হয়?মা নিশ্চয়ই এতো ক্ষণে জেনে গেছে আমার জন্য উনার বোনের ছেলে এখন জেলে। হয়ত বাড়িটা মাথায় করে রেখেছে।আমি গেলেই ইচ্ছা মত আমাকে কথা শুনাবে।আমার কাছ থেকে উনার কাছে উনার বোনের ছেলেই বড়। হয়ত আমি উনার আপন মেয়ে না তাই।তাই তো উনি কখনও আমাকে নিজের মেয়ের মতো আদর ভালোবাসা দেননি।আজ হতে পারে আমার সেই বাড়িতে শেষ দিন।সেই বাড়িতে শুধু বাবার জন্য পড়েছিলাম।উনিই এক মাত্র ব্যাক্তি যিনি আমাকে বুঝতে দেননি আমি এতিম। হয়ত আজ উনিও আমাকে মার হাত থেকে বাঁচাতে পারবে না।আজ উনি আমাকে বাসা থেকে তাড়ানোর একটা উপযুক্ত কারণ পেয়েছে।আর এইটা উনি কিছুতেই হাতছাড়া করবে না।আমাকে তাড়ানোর এর চেয়ে ভালো আর কোনো সময় নেই।আর এইটা হলে সব থেকে বেশি খুশি আমি হবো।ওই নরক থেকে বের হওয়ার চেষ্টা আমার অনেক দিন আগেই ছিলো।শুধু বাবার কারণে আসতে পারি নি।কিন্তু আজ thanks to that,, মি:কোবরা।উনি এই কাজটা করতে আজ আমি ওই বাড়ি থেকে বের হতে পারবো। সত্যিই উনার সাথে দেখা হওয়ার পর থেকেই আবার লাভ আর লাভই হচ্ছে।so much beniefits,,
আমি বাহিরের দিকে তাকিয়ে কথা গুলো ভাবছিলাম।তখনই নিরবতা ভেঙ্গে নিহাল আমাকে প্রশ্ন করলো,,
আমি ভাবতে পারি নি তুমি টাকা গুলো নিবে?
আমি তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে
কেনো?নাটকের নায়িকাদের মতো বলবো,,”চাই না আপনার নোংরা টাকা।নিয়ে যান এই গুলো কে”,,এই সব বলবো ভেবেছিলেন?
নিহাল মুচকি হাসি দিয়ে বলল
ঠিক। হয়ত এইটাই এক্সপেকটেড ছিলো তোমার কাছে।
আমি গাড়ির জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে বললাম
ওইটা রীল লাইফ আর এইটা রিয়েল লাইফ। দুইটা তে শুধু নামে নয় সব ক্ষেত্রে পার্থক্য।এই লাইফে টাকাই সব।
আমার কথা শুনে নিহাল কিছু ভাবতে শুরু করলো।আমি জানি উনি হয়তো ভাবছেন আমি কতো অদ্ভুত।কিন্তু এইটাই সত্যিই এই জীবনে টাকার গুরুত্ব অনেক।আমার মা আমাকে উঠতে বসতে খোটা দেন।আমার খাওয়া,,কাপড় পড়া নিয়ে।আর আমার লেখাপড়া নিয়ে তো উনার সব চেয়ে বেশি মাথা ব্যাথা।তাহলে আমি কি করে ভাববো না যে টাকাই সব।আজ পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে একটা শব্দ সরি কিনে নিলো মি:কোবরা।আর অন্যদিকে হাজারও কথার কেউ এক পয়সার মূল্য দেয় না। এখানেও একটা শব্দের জন্য লাখ টাকা আর হাজার শব্দ মূল্যহীন।
আমি বাহিরের অট্টালিকার দিকে তাকিয়ে কথা গুলো ভাবছি।এখন রাত সাড়ে বারোটার বাজে।রাস্তা গুলো অনেক ফাঁকা হয়ে গেছে।তবুও অনেক জায়গাতে কিছু মানুষ অবশিষ্ট আছে।আসলে শহর বলে কথা যদি পুরো ফাকা থাকে তাহলে কেমন দেখায় না?
আমার ভাবনা তে বেঘাত ঘটিয়ে নিহাল আবার বলা শুরু করলো।
তুমি জানো একদম আভির মত।
ও প্লিজ।ওই কোবরার সাথে আমার জোড়া দিবেন না।ওই কিছু না কিছু হলেই সাপের মতো ফুস ফুস করতে থাকে।(আমি বিরক্তি নিয়ে)
নিহাল আমার কথা শুনে এক হাসতে হাসতে শেষ।উনি না পারে গড়িয়ে গড়িয়ে হাসতে
হ্যা হ্যা।তুমি,,তুমি একদম আভি।আমি ভুল কিছু বলি নি।তোমাদের কথা বার্তা সব এক।তুমিও কাউকে ছেড়ে কথা বলো না।আর আভি কাউকে ছাড় দেয় না।
তা আমি উনাকে দেখেই বুঝতে পারছি।উনি কেমন মানুষ?
ও তাই নাকি? অবশ্য তুমি ওকে যতটা খারাপ ভাবো ও অতোটা খারাপও না।
আমি জানি আমি উনাকে যতটা খারাপ ভাবি উনি ততটা খারাপ না।তার চেয়ে বেশি খারাপ।
নিহাল আবারও হেসে উঠলো
তোমাদের জমবে ভালো। জানো?
না।ব্রো।ওর সাথে আমার জমার কোনো ইচ্ছা বা আকাঙ্খা নেই।
তুমি জানো।অনেক মেয়েরা ওর জন্য পাগল?
মেয়েরা হই পাগল।
তুমিও তো মেয়ে।
আরে 60 পার্সেন্ট পাগল হয় যারা উনার পিছনে ঘুরে,,না জানি কে দেখে। আর 40 পার্সেন্ট পাগল হয় না যেমন আমি উনার কোনো ভালো দিক বা পাগল হওয়ার মত কতো দিক খুঁজে পেলাম না। হা মানলাম উনি দেখতে হ্যান্ডসাম যে কেউ দেখেই ক্রাশ খাবে কিন্তু উনি শো কেজে সাজিয়ে রাখার মত।ব্যবহার করার মত না।
আভি যদি জানে তুমি ওকে এইভাবে বলছো ও তোমাকে কিমা বানিয়ে খাবে।
দূর।উনি আমাকে কিমা বানানোর আগে আমি উনাকে বিরিয়ানী বানিয়ে খাবো।
হায়।
বলেই নিহাল হাসতে শুরু করলো
ওহ হা।তোমার,, ফোনটা আমার কাছে ছিলো।অনেক গুলো কল আসছিলো।আমার দিতে মনে নেই।এই নাও
বলেই নিহাল ভাইয়া আমাকে আমার মোবাইলটা দিলো।
আমি মোবাইল হতে নিয়ে দেখি বাবা অনেক গুলো কল দিয়েছে।কিন্তু আমাকে পায়নি।আর এই জন্য উনি আমাকে ম্যাসেজ দিয়েছে।ম্যাসেজটা এই রকম
মা।তুই আজ ভুলেও বাসায় আসিস না।আমি জানি না তোর আর তোর ভাইয়ের মধ্যে কি হয়েছে।কিন্তু তোর মা অনেক রেগে আছে তুই ওর বোনের ছেলেকে জেলে দিছিস বলে।এখন ও বাসায় আসলেই তোকে ধরবে।ওরা গেছিলো জাবিনেন জন্য কিন্তু জাবিন হইনি।এই জন্য আরও বেশি রেগে আছে তোর মা।তুই আসলেই আজ তোকে কিছু একটা করে বসবে।তুই আসিস না মা। দয়া করে আসছিস না।
আমি ম্যাসেজ দেখে কি রিয়াকশন দিবো বুঝতে পারছি না।উনার বোনের ছেলে আমার নামে এতো জঘন্য একটা কাজ করলো,,আমাকে বদনাম করার চেষ্টা করলো।কিন্তু উনি সেই আমাকেই দোষ দিলো।আমাকেই দায়ী করলো।আমি সব কিছুর জন্য দায়ী।শুধু এই জন্য কারণ আমি উনার মেয়ে না।আচ্ছা উনার মেয়ে হলে কি উনি আমার সাথে এমন করতে পারতো।উনার মেয়ের এইরকম হলে কি উনি ছেলেটাকে ছেড়ে কথা বলতো?বলতো না।কিন্তু আজ শুধু মেয়েটা আমি বলে উনি এতো তেজ দেখাচ্ছে।
ভেবেই তাচ্ছিল্য হাসি দিলাম।আমার জীবনের উপর এই হাসি আমি হেসেই থাকি।এইসব কথা ভাবতেই ফোনের স্ক্রিনে ভেসে উঠলো ডালিয়া নামটা।আর মুখের অজান্তেই ঠোঁটের কোণে হাসি বেরিয়ে আসলো। ফোন টা ধরতেই ওপাশ থেকে কেউ খুব চিন্তিত সুরে বলতে শুরু করলো
দোস্তওওওও।তুই কই?তুই জানিস তোকে আমি কতো খুঁজেছি?বিয়ে সময় ময়দা সুন্দরী হতে গিয়ে পেত্নীর মত হাওয়া হয়ে গেলি কেনো?আচ্ছা তোর আর ভাইয়ের মধ্যে কি হয়েছে রে?ওকে বিয়ে বাড়ি থেকে ধস্তাধস্তি করে কয়টা লোক নিয়ে গেলো পরে শুনি উনি নাকি জেলে।আর তোর জন্য নাকি এইসব হয়ছে তোর মা মানে ওই শাকচুন্নি মহিলা।আমাকে বাসায় এসে হুমকি দিয়ে গেছে।আমার পুরো বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে গেছে। তোকে খুঁজছে।কিন্তু না পেয়ে আমাকে হুমকি দিয়ে গেছে তোকে সাহায্য করলে নাকি আমার খুব খারাপ হবে।আমিও অনেক কথা শুনিয়ে দিয়েছি।আমার বেস্ট ফ্রেন্ড কে কিছু বলার সাহস কারো নেই।
আমি ফোন কানে নিয়ে ওর কথা গুলো ভাবছি।ডালিয়া আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। ও আর বাবাই আমার লাইফে এই দুটো মানুষ আমার জীবনে ভালো।আর বাকি সব খারাপ।ওরা দুই জনেই আমাকে মানুষ বলে ভাবে।আর বাকি সবাই আমাকে পশুও ভাবে না।আমার কাছ থেকে দূরে থাকার জন্য ওকে অনেক কথা শুনিয়ে আমার মা।কিন্তু ও আমার কাছ থেকে দূরে থাকে নেই।ওর মাকে অনেক কান পড়া দিয়েছিলো। ও নাকি আমার সাথে মিশলে খারাপ হয়ে যাবে।কিন্তু এই সব কিছু ওকে আর আমাকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে নি।আর ডালিয়ার মাও আমাকে যথেষ্ট ভালোবাসে।উনি কখনও আমার মার কথায় কান দেন নি।(আমি মনে মনে)
কিরে আমিই তো বক বক করে যাচ্ছি।আর তুই?তুই তো মুখ থেকে টু শব্দ পর্যন্ত করছিস না!দোস্ত তুই ঠিক আছিস তো?তুই কোথায় বল আমি তোকে নিতে আসছি।মা আমি আসুকে নিতে গেলাম।
আরে আরে থাম।বের হসনা বাসা থেকে।আমি এতো ক্ষন কথা বলছিলাম কারণ তোর বকবকানির মধ্যে কথা বলার সুযোগই পাই নি।এখন শুন আমি একদম ঠিক আছি।ভালো আছি।আর বাড়ির মধ্যে যা হবে তার জন্যও প্রস্তুত আমি।এই সুযোগটাই আমি চাইছিলাম।আর শুন তোর চিন্তা করিস না।আস্থার উপর আস্থা রাখ।আমি যা করার করছি।এখন তুই ঘুমা।অনেক রাত হয়েছে নাহলে আবার তোর মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যাবে।
কথা গুলো বলে আমাকে হালকা করলি আসু!খুব চিন্তায় ছিলাম।তোর উপর আমার আস্থা আছে তুই সামলে নিবি।আর শুন বেশি বাড়াবাড়ি হলে আমি কিন্তু আছি।
হুম।আমি জানি তুই আছিস।আচ্ছা রাখি।
এই শুন শুন।
বল আবার কি হয়েছে?
তুই যেই পার্ট টাইম জব এর জন্য এপ্লাই করেছিলি ওইটা কনফার্ম হয়ে গেছে। বারো হাজার টাকা বেতন। খুব ভালো।আর শুন graduation করার পর তুই ঐখানেই পার্মেন্ট হতে পারবি।যদি তুই ভালো পারফরম্যান্স করিস।
ইয়াহহু।আঙ্কেলকে ধন্যবাদ দিস।উনার জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে।উনি যদি উনার কোম্পানিতে আমার জন্য কথাটা না বলতো তাহলে হয়তো জবটা আমি পেতাম না।
আরে বাবা তো শুধু তোকে বলেছিলো যে সে যেই কোম্পানিতে জব করে ওই কোম্পানিতে পার্ট টাইম লোক নিয়া হবে।তাই তো উনি তোকে বলেছিলো।কিন্তু তুই তোর যোগ্যতা দিয়ে এই জব অর্জন করেছিস।
যাই হোক।তবুও আঙ্কেল thank you দিস।
আর আংকেলের মেয়েকে?(ডালিয়া কাদো কাদো হয়ে)
তুই কি করেছিস হা?(আমি মজা নিয়ে)
ওই আমি তোর ভার্সিটির সব নোট করে দিসি।যাতে তুই ভালো করে ইন্টারভিউ দিতে পারিস। হুহ(ডালিয়া ভাব নিয়ে)
আচ্ছা।তাহলে মহারানী এখন আপনার জন্য কি করার যেতে পারে?
তারাতারি একটা দুলাভাই খুঁজ যার একটা হ্যান্ডসাম ভাই আছে।আর শোন দুলাভাই হ্যান্ডসাম না হলে কোনো সমস্যা নেই।উনার ভাই হ্যান্ডসাম হতে হবে।
ওই মাইয়া।ফোন রাখ। কইতেছি।
ওকে।হিহি।
বলেই ফোনটা কেটে দিলো।
যাক ভালোই হলো।একটা জব পেয়ে গেলাম।এখন আর আমাকে ওই নরকে থাকতে হবে।এইটা দিয়ে নিজের খরচ অনায়সে চলে যাবে।সত্যিই মি:কোবরা আমার জন্য অনেক লাকি।উনার আসাতেই আমার লাইফে সব কিছু শুধু ভালোই হচ্ছে। এইসব ভেবেই
আমি মুচকি হাসি দিচ্ছি।আমার হাসি দেখে নিহাল প্রশ্ন করলো
কে ফোন করেছিলো?(নিহাল)
আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।
খুব ভালো বন্ডিং মনে হয়!
হুম।খুব খুব ভালো।
ও আচ্ছা। তা কেমন তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড আমিও শুনি।
ওর লাইফে শুধু একটাই স্বপ্ন আর টা হলো কোনো এক হ্যান্ডসাম দেখে বিয়ে করা।কিন্তু আজ পর্যন্ত বিয়ে কি প্রেম পর্যন্ত যেতেই পারে নি।
হা হা।তোমার মত তোমার ফ্রেন্ডও অদ্ভুত।
আমিও উনার কথায় হাসলাম। সত্যিই তো।আমরা দুটোই অদ্ভুত।
আপনি ওই মি:কোবরার মতো না।খুব ভালো।
নিহাল আমার কথা শুনে বললো
তুমিও খুব ভালো।হা একটু তর্ক করো।একটু রাগী।কিন্তু ভালো।
আচ্ছা এইখানেই রেখে দেন।বাকিটা আমি চলে যেতে পারবো।
তোমাকে বাসায় দিয়ে আসি।আর তোমার ফ্যামিলির সাথে কথা বলে আসি।যদি উনারা কিছু মনে করে যে তুমি এত রাতে কোথায় ছিলে এইসব নিয়ে চিন্তিত থাকে।
আমার ফ্যামিলি,,?উনারা কি সত্যিই চিন্তিত? আমি মরে গেলে বলবে ভালো হয়েছে একটা বোজা মাথা থেকে কমলো।
আমি আনমনে এইটা ভাবছি তখন নিহাল আবার বলে উঠলো
কি হলো?চলো আমি তোমাকে দিয়ে আসি।(নিহাল)
না।থাক লাগবে না।আমি একাই যেতে পারবো।
বলেই গাড়ি থেকে নেমে গেলাম।
তুমি একাই যেতে পারবে,,?(নিহাল)
কিছু পথ একাই চলতে হয়!
বলেই বাড়ি নামক নরকের উদ্দেশ্য হাটা দিলাম।
নিহাল আস্থার যাওয়ার পর বললো
যদি কিশমতে থাকে তাহলে আমাদের আবার দেখা হবে।
বলেই গাড়ি ঘুড়িয়ে ড্রাইভ করে নিজের গন্তব্যে রওনা দিলো।
যতই বাড়ির পথ কমে আসছে ততই মনটা ভারী ভারী লাগছে।জানি আজ কপালে শনি থেকে শুরু করে সব বার আমার সাথে হাত মিলিয়ে যাবে।তবুও কেনো যেনো একটু সংশয় মনের ভিতর আছে। ভয়ও আছে।আসলে যে ভয় পায় না সে কখনো মানুষই না।তেমনি আমিও ভয় পেলে মনে হয় আমি মানুষ।কি অদ্ভুত জিবনটা।এইসব ভাবতেই বাসায় চলে আসলাম।
দেখি মা বাহিরে সিড়িতে বসে আছে,,পাশেই বাবা হুইল চেয়ারে বসে আছে।আর মার পাশেই বসে আছে আমার বড় বোন আর তার জামাই। শশুর বাড়ী কুডনামি করার জন্য বের করে দিয়েছে।তারপর থেকে উনি আর উনার হাজব্যান্ড এইখানেই পরে থাকে।উনার স্বামীর একটা কাজও করে না।বাবা সরকারি হসপিটালে ওয়ার্ড বয় ছিলো।এখন সেখান থেকে পেনশন পায়।সেই পেনশন দিয়ে আমার মা,,বোন আর তার হাসবেন্ড চলে।তাছাড়া আমার শিক্ষা বৃত্তির টাকা গুলো সব নেয়।আর যা টিউশনি করে জমাই টাও এই বাড়িতে থাকি বলে দিতে হয়।এছাড়া বাবার ঔষুধের দোহাই দিয়ে নিয়ে যায়।এতো কিছু মুখ বুঝে সহ্য করে গেছি শুধু বাবার জন্য কিন্তু আজ আর না আজ এদের বুঝিয়ে দিবো আস্থা কি আস্থাহীন জিনিস।
মা ওই দেখো,,মুখ পুরি আসছে।(বোন)
আমি মুখ পুরি না তুই মুখ পুরি।সব সময় আমায় নিয়ে হিংসা করতো।ছোটো বেলায় আমার চেহারা দেখে আর বড়ো হাওয়ার পর আমার মেধা দেখে। পাড়ার সব ছেলেদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করেছিল পরেই তো মান সম্মানের ভয়ে বাবা তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দেয়।(আমি বোনকে দেখে মনে মনে ওর কুকীর্তি ভাবছি)
.
.#Marriage_With_Benefits
#Part_6
Writer::Shaanj Nahar Sanjida
.
.
মা আজ ওকে নিয়ে একটা হেস্ত নেস্ত করেই ছাড়বেন।(আমার বোনের জামাই)
তোকে আমার কাছে ঘেঁষতে দেই না।তোর শরীরের চাহিদা আমার শরীর দিয়ে পূরণ করি না বলে আজ আমাকে নিয়ে হেস্তনেস্ত করার কথা বলছিস?শালা।কাপুরুষ।নিজের কামনা বউএর দিয়ে পুষে না বলে শালীকে জ্বালাস আর যখন শালী পাত্তা দেয় না তখন ওকে নিয়ে হেস্তনেস্ত করুন।(আমি মনে মনে)
কথায় ছিলি মুখ পুরি এতো ক্ষন!(মা)
আমি ডন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে রুমে ঢুকে পড়লাম।সোজা গিয়ে নিজের রুমে ঢুকে পড়লাম।সেখান থেকে আমার দরকারি জিনিস পত্র সব নিলাম।আমার সার্টিফিকেট আর বৃত্তির কাগজ গুলো আমি ডালিয়ার বাড়িতে রেখে ছিলাম।কারণ জানতাম হয়ত কোনো দিন খালি হাতে এই বাড়ি ছাড়তে হবে।তাই আগেই সব প্রস্তুতি নিয়ে নিচ্ছিলাম।এখন রুমে ঢুকে নিজের কিছু কাপড় আর জমানো কিছু টাকা।সাথে বাবা আর আমার একটা ছবি নিয়ে বেড়িয়ে যাবো তখন মা আমাকে ধরলো,,
কোথায় ছিলি তুই?(মা)
যেখানে ছিলাম ভালো ছিলাম(আমি)
তোর কারণে আমার বোনের ছেলে এখন জেলে।(মা আমার হাত ধরে)
উনি আমার কারণে জেলে না উনি উনার কুকর্মের জন্য জেলে।(আমি উনার হাত ছড়িয়ে)
তুই গিয়ে কেস তুলে নিবি।(মা)
আমি কেস করি নি তাই তোলার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।আর যদি করতামও তবুও তুলতাম না।কারণ ও যা করেছে তার জন্য ওকে উচিত শিক্ষা দেওয়া উচিত।(আমি)
তুই মার মুখের উপর কথা বলিস।
বলেই আমার বড়ো বোন আমাকে থাপ্পড় দিতে আসে।কিন্তু আমি ওর হাতটা ধরে ফেলি,,
আহহ(বোন)
তোকে একবার বলেছিলাম।আমার গায়ে হাত তুলবি না।একবার হাত ভেঙেছি মনে নেই তোর?আবার আসলি হাত ভাঙ্গতে।
বলেই হাত মুচড়ে ধরলাম।
আহহ। ছাড় আস্থা।(বোন)
কেনো?খুব চলে না তোর হাত?এই হাত যদি তোর না ভাঙছি তো আমিও আস্থা ইয়াসমিন না।
বলেই আরো জোরে মোচড় দিতে লাগলাম।
মা ওকে আটকান ও পাগল হয়ে গেছে।(বোনের জামাই)
আমি ওর দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বললাম
মার আঁচলে লুকাতে পারিস নি বলে এখন শাশুড়ির আঁচলের নিচে লুকাছিস।কাপুরুষ কোথাকার।
এই তুই কিন্তু বেশি কথা বলছিস!আমি এই বাড়ির জামাই তোর কোনো সাহস নেই আমাকে কথা শুনানোর।(দুলাভাই)
আমি বোনকে ছেড়ে উনার কাছে গিয়ে কষিয়ে একটা চোর মারলাম,,
এইটা এত দিন আমাকে বিরক্ত করার জন্য।তোর মত মেরুদনডহীন মানুষ আমাকে কথা শুনানোর যোগ্য না।আর ঠিকই বলেছিস তোকে কথা শুনাবো না তোকে কষে চোর দিবো।
আস্থা মা থাম।কি করছিস?(বাবা)
বাবা। থেমেই তো ছিলাম এতো বছর।বুঝার পর থেকেই তোমাকে বাবা আর এদেরকে আপনজন ভেবে আসছি।কিন্তু এরা আমাকে আপন তো দূরের কথা মানুষও ভাবে নেই।এতো দিন চুপ করে থাকার জন্যই আজ ভাইয়া সাহস পেয়েছে এতো কিছু করার।আজ ভাইয়া আমার সম্মান নিয়ে খেলেছে কিন্তু মা কি ভাবে আমাকে দোষ দিলো।তুমি দেখছো বাবা?
হ্যা।আমি তোকেই দোষী।কারণ তুই সব নষ্টের মূল।তোর বাবা মার পাপের ফল তুই আর তোকে আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে আমার স্বামী।কার না কার জানি পাপের ফসল??।তোকে আপন জন ভাববো?তুই ভাবলি কি করে?তোকে তো আমি আমার বাড়ির কুকুরও ভাবি না।
ব্যাস।উনার এই কথাই যথেষ্ট আমার মাথা খারাপ করার জন্য।আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো আর সাথে সাথেই আমি উনার গাল চেপে ধরলাম আর বললাম
ভালোই বলেছেন।আমাকে কুকুর ভাববেন ও না।কারণ কুকুর প্রভু বক্ত হয়।আমি কিন্তু টা না।আমি প্রভু বক্ত না।তাই আপনার গলা টিপে দিতেও আমার হাত কাপবে না।কিন্তু আমি করবো না।আপনি আমাকে নিজের মেয়ে না ভাবেন কিন্তু আমি আপনাকে একদিনের জন্য হলেও মা ভেবেছিলাম।যদিও আপনি তার যোগ্য না।তাই আমি আপনাকে ছেড়ে দিলাম।আর আপনি এই বাড়ি থেকে আমাকে কি তাড়াবেন আমি নিজেই এই বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছি।
বলেই উনাকে ছেড়ে বাবার কাছে গেলাম।
বাবা।এতো দিন শুধু তোমার কারণে এইখানে পরে ছিলাম।কিন্তু এখন আমার দেয়াল এ পিঠ ঠেকে গেছে।আগে এই চার দেযালের ভিতর আমার মান সম্মান নিয়ে কথা হতো।কিন্তু এখন এর বাহিরে আমার মান সম্মান নিয়ে খেলা হচ্ছে।আমি সব কিছু সহ্য করতে পারবো।কিন্তু কেউ আমাকে ছোটো করে কথা শুনাবে টা আমি সহ্য করবো না।তাই আজ এই বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছি।কিন্তু চিন্তা করো না একদিন নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে তোমাকেও এই নরক থেকে নিয়ে যাবো।
বাবা আমার কথা গুলো শুনে আমার হাত ধরে কান্না করছে।আমি কান্না করি না।কখনও করি না।কান্না করলে কেমন লাগে আমি টাও জানি না।কিন্তু চাই একদিন কান্না করতে চাই।খুব চাই।চিৎকার করে কান্না করি কিন্তু পারি না।
আমি বাবার থেকে হাত ছাড়িয়ে।মা,, বোন আর দুলাভাইয়ের সামনে গিয়ে বললাম।
আজ গলা টিপে ধরিনি।কিন্তু বাবার কিছু হলে গলা টিপে ধরবো না গলা কেটে রেখে দিবো।আর হা তুই(বোন)একবার তোর হাত ভাঙছি।আজ মোচকে দিসি।বাবার খেয়াল করার মধ্যে একটু কমতি থাকলে তোর হাত আর হাতের জায়গাতে থাকবে না।কেটে ঠাকুর বানিয়ে দিবো।আর এই যে আমার দুলাভাই।একটু বউএর আঁচল থেকে বের হয়ে আসেন।আর কত শুশুড়ের কামাই খাবেন।আর হা আপনাকেও বলছি বাবা শুধু অযত্ন হলে আপনি শেষ।
বলেই হাঁটতে শুরু করলাম।আবার অর্ধেক পথে থেকে ওদের উদ্দেশ্য করে বললাম,,
এখন আমার বৃত্তির টাকা আর টিউশিন করার টাকা খাওয়া কপালে জুটবে না।
বলেই অজানা গন্তব্যে রওনা দিলাম।
মা এখন কি হবে?একটা মোটা অংকের টাকা চলে গেলো?(বোন)
ভেবেছিলাম।ওকে যাই কিছু বলি ও এই বাড়ি থেকে যাবে না।কিন্তু এখন নিজের চাল নিজের উপরই পরে গেলো।(মা দাঁত চেপে চেপে)
কোনো চিন্তা করবেন না।এই মেয়ে একা কখনও বাঁচতে পারবে না।তাই কিছু দিন পরে ঠিকই চলে আসবে।(দুলাভাই)
তোমরা এতো খারাপ। মেয়েটা চলে গেলো সেইটা নিয়ে তোমাদের মাথা ব্যাথা নেই। মেয়েটা র টাকাই তোমাদের কাছে ভর হয়ে গেছে।
বলেই বাবা কাদতে কাদতে বাসার ভিতরে ঢুকে গেল।
অন্য দিকে আভি,,
কিরে পেঁচালকে নামিয়ে দিয়ে আসলি?(আভি)
হুম।ওকে পেঁচাল বলিস না। ও খুব মিষ্টি একটা মেয়ে।(নিহাল চাবি রেখে সোফাতে বসতে বসতে)
কিরে ওই মেয়ে কি আন্টির মত তোর উপরও জাদুটাদু করলো নাকি?(আভি ভ্রু কুঁচকে)
আরে কিযে বলিস?ওই মেয়ে মোটেও এমন না।তুই শুধু শুধু ওকে নিয়ে বাজে কথা বলছিস?(নিহাল)
বাহরে বাহ!এক অপরিচিত মেয়ের কারণে বন্ধু কে কথা শুনাচ্ছিস।সেই পিচ্ছি কালের বন্ধুত্ব এই।(আভি নেকামি করে)
আমার কথা ছাড়।তোর কথা বল।আমার থেকে তো আপনি ওর প্রতি বেশি দূর্বল।যেই আভি প্রয়োজন ছাড়া কখন কথা বলতে পছন্দ করে না।সেই আভি,,,আমাদের সেই আভি কি সুন্দর অযথা আজ ওই মেয়ের সাথে বিতর্ক শুধু করে দিলো।আমি তো জাস্ট অবাক যে আমি এই কোন আভি কে দেখছি।এই কি আমাদের সেই আভি চৌধূরী যে গম্ভীর প্রয়োজন ছাড়া যার মুখ থেকে একটা কথাও বের হয় না।যার মুখের কথা এতো মূল্যবান।আজ সেই এইভাবে নিজের কতো কথা অযথাই বললো। তাও নাকি একটা বাচ্চা মেয়ের কারণে।ভাবা যায়।
(নিহাল টিটকারি মেরে)
হুম।বুঝতে পারছি।আমি একটু পঁচাতে চাইছিলাম।কিন্তু তুই আমাকে ধুয়ে দিলি।(আভি মুখ মুড নিয়ে)
এই দেখো।তুই মাইন্ড করলি নাকি।করিস না।আমিই তো,,আমি না বললে কে বলবো বল। আমিই তো বন্ধু।(নিহাল আভিকে তেল মারতে মারতে)
আভি জোরপূর্বক হাসি দিয়ে
আজ তুমি ওভারটাইম করবে।শুধু আজ না পুরো এক মাস ওভারটাইম করবা।
আভি তুই এমন করতে পারিস না।আমি কিন্তু তোর কোম্পানির এমপ্লয়ী না।(নিহাল কাদো কাদো হয়ে)
তা আমি জানি মি:নিহাল আহমেদ।এই জন্যই তো বলছি।তুমি যদি চাও যে আমি তোমার কোম্পানির প্রজেক্টে ইনভেস্ট করি।তাহলে আগে আমার কোম্পানিতে এক মাস ওভারটাইম করো।(আভি ভাব নিয়ে)
ওই মেয়ে ঠিক বলেছে তুই আস্থ একটা কোবরা।যাকে পাশ তাকেই ছোবল দিয়ে বসিস।(নিহাল অভিমান করে)
ওহহ।এখন ওর সাইড নিয়ে কথা বলা হচ্ছে।ওর জন্যই কিন্তু এক মাস ওভারটাইম করার শাস্তি পেয়ে ছিস।যদি এইটা ছয় মাস না করতে চাস তাহলে ভালোয় ভালোয় ওর তারিফ করার বন্ধ কর।
কই করছি?একটু কি সত্য কথাও বলার যাবে না?(নিহাল মুড অফ করে)
ওই মেয়েকে নিয়ে একটা কথাও বলবি না।যদি বলিস তাহলে ছয় মাস?(আভি কে থামিয়ে নিহাল বললো)
হুম।জানি ওভারটাইম করতে হবে।
জানিস যখন যা কাজে লেগে পর।(আভি)
করছি করছি।
বলেই নিহাল চলে গেলো।
নিহাল যাওয়ার পর আমি বসা থেকে দাঁড়িয়ে উঠলাম। কাচের জানালা দিয়ে ব্যস্ততম নগর কে দেখতে লাগলাম।কতো বিচিত্র মানুষ রয়েছে এই পৃথিবীতে।সবার থেকে সবাই আলাদা।আর আস্থার মতোও মানুষ আছে তাহলে এই পৃথিবীতে হয়ত খুব কম।কিন্তু আছে।
আমি কাচের জানালাতে হাত দিয়ে ওর কথা ভাবছি।
।
।
এইদিকে আস্থা,,
বাসা থেকে বের হয়ে সোজা।অনাথ আশ্রমে গেলাম।আমাদের শহরে অনেক বড় এই অনাথ আশ্রম। অবশ্য আমাকে এই অনাথ আশ্রম থেকে নেওয়া হয় নি।আমাকে হসপিটাল থেকে এনেছিলো।বাবা যেই হসপিটালে ছিলো আমাকে সেই হসপিটাল থেকেই এনেছে।যদিও আমার যোগসূত্র এই জায়গা থেকে না কিন্তু শিকড়ের টানে আমি এইখানে বাঁধা।এদের মত আমিও তো অনাথ।শুধু পার্থক্য এইটাই যে ওদের জায়গা এই আশ্রমে আর আমার জায়গা ছিলো ওই নরকে। যবে থেকে জানতে পারি আমি উনাদের আপন মেয়ে না তবে থেকে আমি এই অনাথ আশ্রমে আসতে থাকি।যদিও ওদের জন্য বেশি কিছু করতে পারি না।টাকা দিয়ে সাহায্য করা আমার পক্ষে কঠিন ছিলো কারণ আমার জোগাড় করা সব টাকাই মা নিয়ে যেত বাবার দোহাই দিয়ে।তবুও নিজের জন্য যেই টাকা বাঁচিয়ে রাখতাম সেই টাকা দিয়ে ওদের জন্য।বই, খাতা,কলম, পেন্সিল,খেলনা,জামা কাপড় এনে দিতাম।আর যাদের প্রাইভেট পড়ার কোনো টাকা ছিলো না।তাদেরকে নিজে পড়াতাম।ছোটদের অক্ষর জ্ঞান দেওয়ার চেষ্টা করতাম।মাঝে মাঝে ডালিয়া আমার অনেক ফ্রেন্ডও আসতো।আমাকে সাহায্য করতে।এইভাবে ওই আশ্রমের যে দেখাশুনার দ্বায়িত্বে আছে তাকে আমরা খালা বলি সেই খালার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক হয়ে উঠে।উনি আমাকে উনার নিজের মেয়ের মতো আদর করে।আশ্রমের সকাল বাচ্চাই উনার বাচ্চা বলে উনি মনে করেন।আসলে আশ্রমটা সরকারি।তাই উনাদের তেমন সমস্যা হয় না।এছাড়াও অনেক মানুষ ওদের জন্য দান করে।
আমি আশ্রমে যেতেই বাচ্চারা আমাকে ঘিরে ধরেছে।
আসু আসু।কি আনছো আমাদের জন্য?(আশ্রমের একটা ছেলে বয়স পাঁচ বছর নাম মিন্টু)
ওহ।সরি আজ না আসার সময় সব দোকান পাঠ বন্ধ ছিলো তাই কিছুই আনতে পারি নি।(আমি ওকে কোলে নিয়ে)
কোনো সমস্যা নেই পরে আনবে?প্রমিজ করো?(মিন্টু)
প্রমিজ।
মিন্টুর গাল টেনে।
আচ্ছা।রবেয়া খালা কোথায়?(আমি মিন্টুকে কোল থেকে নামিয়ে)
খালা মনে হয় রান্না ঘরে।(রাবেয়া এই আশ্রমেই থাকে এই বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিবে)
ওহ।তাহলে আমি গিয়ে দেখা করে আসি।(আমি খালার কাছে রান্না ঘরে গেলাম)
গিয়ে দেখি খালা রিনা খানের মত কাপড় গুজে সবাইকে ইনস্ট্রাকশন দিচ্ছে।দেখে দর্জ্জাল শাশুড়ি মনে হচ্ছে।আমি উনাকে দেখে হেসে উঠলো,,
পরেই উনাকে গিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললাম
কি আমার রিনা খান?এখানে দাড়িয়ে ইনস্ট্রাকশন দিচ্ছ?(আমি)
তোর মত একটা দামড়া মেয়ে থাকতে আমাকে কাজ করতে হচ্ছে।(খালা)
ওরে ওরে আমার রিনা খান রাগ করছে।(আমি খালার গাল টেনে দুষ্টামি করে)
তোকে কতো বার বলছি আমার নাম শুধু রিনা।রিনা খান না।(খালা আমার দিকে তাকিয়ে)
কি করবো বলো?তোমাকে দেখে এখন আমার একটা কথাই আসছে আর টা হলো রিনা খান!(আমি এক গাল হেসে)
ও তাই বুঝি
খালা আমার কান টেনে।
আহ্।খালা লাগছে।আচ্ছা খালা এতো রাতে কি হচ্ছে বলতো?(আমি উনাকে প্রশ্ন করে)
আয়।বাহিরে গিয়ে বসি।তারপর তোকে বলি।(খালা আমার হাত ধরে বাহিরে নিয়ে গেলো)
বাগানের চেয়ারে বসে
এখন বলো কি হয়েছে?আশ্রমে কি কোনো মিলাদ মাহফিল হবে?(আমি)
না।কোনো মিলাদ মাহফিল না।(খালা)
তাহলে তুমি যে রান্না ঘরে এতো কিছু রান্না করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলে?(আমি)
আরে ওইটা এক জনের জন্ম দিন!(খালা)
আগে জানতাম জন্ম দিন মানুষ ক্লাবে বা রেস্টুরেন্টে করে।এই প্রথম দেখলাম কেউ অনাথ আশ্রমে আসে করছে।কে সে?(আমি কৌতূহলী হয়ে)
খান গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক আর উনার স্ত্রী।(খালা)
ও ও। তা কার জন্ম দিন পালন করছে শুনি?(আমি অবাক হয়ে)
উনাদের মেয়ের।উনাদের মেয়ের আজ বিশ বছর পূর্ণ হবে।(খালা)
ও।আচ্ছা।এই কথা!(আমি)
কিন্তু কি জানিস ওদের ভাগ্য কতো খারাপ!
কেনো?কি হয়েছে?ভাগ্য খারাপ কেনো?(আমি অবাক হয়ে)
কারণ তাদের ওই মেয়ে মৃত্যু হয়েছে।(খালা)
নাউজুবিল্লাহ।বলো কি?(আমি অবাক হয়ে)
.
.
চলবে…