Marriage_With_Benefits part 4

#Marriage_With_Benefits
#Part_4
Writer::Shaanj Nahar Sanjida
.
.
তাহলে তুমি ওর মা বাবাকে বলতে পারতে যে তুমি ওকে বিয়ে করতে চাও(আভি)

উনারা কখনও আস্থার বিয়ে আমার সাথে দিবে না।আর আমার পরিবার ও আস্থাকে মেনে নিবে না।(ভাইয়া)

কেনো?মেনে দিবে না।(আভি অবাক হয়ে)

শিট।আমার ব্যাপারে আমি কাউকে জানতে দিবো না।আর ওদেরকে তো ভুলেও না।
(আমি মনে মনে)

কারণ আস্থা,,,,
ভাইয়া কিছু বলার আগেই আমি গিয়ে উনাকে থাপ্পড় কিল ঘুষি মারতে শুরু করলাম।পাশে থাকা ঝাড়ু দিয়ে উনাকে পিটাতে শুরু করলাম।যে করেই হোক।আমি আমার ব্যাপারে এখানের কাউকে কিছু জানতে দিবো না।এখন ওর মুখ যে করেই হোক আমাকে বন্ধ করতে হবে,,(আমি মারছি আর ভাবছি)

মুখ খুললেই শুধু বাজে কথা বের হয় তোর।আর আমার ব্যাপারে কিছু বলার সাহস কই পাস তুই?আমার মান সম্মান নিয়ে খেলা করার অধিকার তোকে কে দিয়েছে?তুই কি বলেছিস আমাকে বদনাম করলে আমি তোকে বিয়ে করে ফেলবো?আর আমার বাবা মা আমাকে বিয়ে দিয়ে দিবে?এইটা ভাবলি কি করে তুই?আমি তোকে বড় ভাই হিসেবে সম্মান দেই কিন্তু তুই সেই সম্মানের যোগ্য না। আমার জীবন কারো খেলার পুতুল না।না তোর না অন্যর।আমার জীবন শুধু আমারই।
বলেই বেধম পিটাতে শুরু করলাম।আমার মাথা ঠিক ছিলো না।আমার ঘায়ে আঘাত দিয়েছে।আর এইটা আমি কিছুতেই সহ্য করবো না।

আমার এই অবস্থা দেখে আভি অবাক হয়ে গেলো
এই মেয়ে কি করছে?ওর মাথা ঠিক আছে?এতো রাগ কেনো ওর মনে?যেনো ও শুধু সুযোগ খুচ্ছে ওর মনের রাগ কারো উপর ফেলানোর জন্য।দূর একে আটকাতে হবে।নাইলে ওকে মারতে গিয়ে নিজের ক্ষতি করে বসবে এই মেয়ে
বলেই আভি আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।

ছাড়।আমায় ছেড়ে দে।ওদের কি মনে হয় আমার জীবন ছিনিমিনি খেলার জন্য।ওরা ছিনিমিনি খেলবে আর আমি দেখবো!(আমি মোচরা মুচরি করতে করতে)

চুপ।চুপ একদম চুপ।আমি আছি না?আমার উপর নির্ভর করতে পারো।(আভি)

আমি উনার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে উনার কলার ধরে নিজের দিকে ঝুঁকিয়ে বললাম
আস্থা কারো উপর আস্থা রাখে না।তাই আপনার উপর নির্ভর হাওয়ার কথা আমাকে বলবেন না।

আভি আস্থার কথা শুনে অবাক হয়ে গেলো।পরেই নিজেকে সামলে আস্থাকে বললো
এখন চুপ না করলে সত্যিই তুলে নিয়ে নর্দমায় ফেলে আসবো।

আভি প্রচন্ড রেগে আছে।
আমাকে ভরসা করতে পারে না।কতো সাহস ওর আবার আমার কলার চেপে ধরে।আজ শুধু একটা সমস্যায় ব্যাস্ত বলে নয়ত এই মেয়েকে বুঝিয়ে দিতাম আভি চৌধূরী কি জিনিস!

আমি আভির কথা শুনে চুপ হয়ে আছি।কারণ কেনো জানি ওর চেহারা দেখে একটু ভয় করছে।এখন যদি সত্যি নর্দমায় ফেলে দেয়।তাই আমি চুপ হয়ে আছি।এছাড়া এখন ভাইয়া কোনো কথাই বলতে পারবে না।উনি কোনো কথা বলার পরিস্থিতিতেই নেই।যেই মার পড়ছে।এখন আমি নিশ্চিত আমার সম্পর্কে এখন আর কেউ কিছু জানতে পারবে না।

এখন তুই বল।তোর কাহিনী কি?(আভি অন্য ছেলেকে জিজ্ঞেস করে)

ওই ছেলে মারার আগেই সব স্বীকার করে নিল।কারণ ও দেখেছে কেমন মাইর ভাই খেয়েছে।এখন এমন মার না খেতে চাইলে সত্য কথা বলে দিতে হবে।তাই ও সত্য কথা বলাই শ্রেও মনে করলো।

আমি নিহাকে ভালোবাসি।কিন্তু যখন আমি ওকে সবার সামনে প্রপোজ করি তখন ও আমাকে সবার সামনে অপমান করে রিজেক্ট করে দিলো।তাই সেই অপমানের বদলা নিতে আমি এইসব করেছিলাম।(ছেলেটা)

তাহলে তুই আস্থার ছবি কেনো ব্যাবহার করলি?(আভি)

আস্থার ভাই আমার বন্ধু।যখন আমি ওকে আমার প্ল্যান বলি তখন ও বললো যে ও আস্থার ছবি দিয়ে একাউন্ট বানিয়ে নিহাকে ব্ল্যাক মেইল করবে।আর এতে আমাদের ধরা পড়ার চান্স কম থাকবে।(ছেলেটা)

মাঝখান দিয়ে আমার স্বভাব মতো বাম হাত ঢুকিয়ে দিয়ে বললাম,,
মি: কোবরা আমি এই বার ওকে(ছেলেটাকে) একটু কেল্যাই প্লিজ।(আমি কিউট ফেস করে)

What is kelani?(আভি ভ্রু কুঁচকে আমাকে প্রশ্ন করলো)

একটু আগে আমি ভাইকে যা দিছি ওইটা কেলানি!(আমি হাত ভাঁজ করে)

নাহ।(আভি চোখ রাঙিয়ে)

আমি চুপ করে দাড়িয়ে রইলাম।আর ভাবতে লাগলাম আস্থা তুই কি করে এতো বাধ্য হয়ে গেলি?উনি বললো না আর তুইও শুনে নিলি।এক দিনে এই কোবরার ছোবলে পরে গেলাম আমি।

ওদের পুলিশে দাও।এইবার বাকিটা পুলিশ করবে।(আভি)

ওদের নিয়ে যাও(নিহাল ওই চার জন গার্ড কে বললো)

যাওয়ার আগে ভাইয়া আমাকে বললো
বাসায় যদি জানি আমি তোর কারণে জেলে তাহলে তুই ভাবতে পারছিস তোর কি হাল হবে?খালামণি তোর কি হাল করবে?(আমাকে থ্রেট দিয়ে ভাইয়া কথা গুলো বললো)

আমি টেবিলে থাকা পেপার হোল্ডার দিয়ে ওর কপাল বরাবর ছুড়ে মারি।ওইটা সাথে সাথে ওর কপালে লেগে কপাল ফেটে রক্ত বের হতে লাগলো,,,,
আমি ওর কাছে গিয়ে ওর চোখে চোখ রেখে বললাম
আমাকে থ্রেট দিয়ে কেউ কথা বলুক এইটা আমার পছন্দ না।

তারপর গার্ডদের উদ্দেশ্য বললাম,,,
এই অবর্জনা গুলোকে আমার চোখের সামনে থেকে নিয়ে যান।প্লিজ।


আভি,নিহাল আর নিহালের মা আমার কান্ড দেখে অবাক হয়ে গেলো।

এই মেয়ে একদম তোর কার্বন কপি।তুই যেমন দয়ামায়াহীন তেমনি এই মেয়ে ও দয়ামায়াহীন।একদম পারফক্ট তোর জন্য।(নিহাল আভির কানে কানে ফিসফিস করে কথা গুলো বললো)

আভি চোখ রাঙিয়ে নিহালের দিকে তাকাতেই ও চুপ হয়ে গেলো।

পরেই আভি আস্থার দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো,,
এই মেয়ের নাম আস্থা হলে কি হবে এই মেয়ের সত্যি এর উপর আস্থা রাখা মুশকিল।এই মেয়ে বাহিরে এক রকম ভিতরে এক রকম।

আমাকে ক্ষমা করে দিও মা।আমি না জেনেই তোমার উপর আরোপ করেছি!(নিহালের মা)

আন্টি কি যে বলেন?আপনি আমার গুরুজন আপনি প্লিজ এমন করে ক্ষমা চাইবেন না?(আমি)

বাহ!এই মেয়ে ভালো করে কথাও বলতে জানে?জানতাম না তো যে এই ঝাল মরিচ আবার মিষ্টিও হতে পারে।এই হচ্ছে এর আরেক রূপ।ভাবতেই অবাক লাগে।কিন্তু কিসের জন্য ও তখন এতো অস্বাভাবিক আচরণ করেছিলো?কি আছে ওর মনে ভিতর আর ওর এই বাহিরের এই রূপের ভিতর?খুব রহস্যময়ী মেয়ে তুমি আস্থা।(মনে মনে আভি কথা গুলো বললো)

আন্টি আপনি কিছু করেন নি। তাও কি সুন্দর ভাবে আমাকে সরি বলছেন!আর একজন আছে যে আমাকে কতো ইনসাল্ট করেছে,,কতো ছোটো করে কথা বলেছে,,আমাকে নর্দমায় ফেলে দিবে বলে হুমকিও দিয়েছে,,আর সবচেয়ে বড় কথা উনি আমাকে কিডন্যাপ করে এখানে এনেছে।কিন্তু দেখুন উনি আমাকে সরিও বলছে না।একটু অনুতপ্তও হচ্ছে না।আজকাল কেমন,,কেমন মানুষ আছে তাই না আন্টি!ভুল করতে ঠিকই পারবে কিন্তু ক্ষমা চাইতে গেলে উনাদের ইগোতে গিয়ে লাগে।এইসব মানুষদের না সাহারা মরুভূমি তে পাঠিয়ে দেয়া দরকার।ওই মুরুভুমির গরমে যদি এদের মন গলে। অবশ্য আমার মনে হয় না এদের মন গলবে।এদের মন তো পাথর দিয়ে তৈরি।
আমি আভিকে শুনিয়ে শুনিয়ে কথা গুলো বললাম।

উনি আমার দেখি রাগী লুক দিয়ে তাকিয়ে আছে।উনার মায়াবী চোখ দুটো বলে দিচ্ছে।আজকে আমার রক্ষে নেই।কিন্তু আমার তো এই মি:কোবরা কে রাগাতে ভালো লাগে।তাই একে আমি রাগাইও।


আভি আস্থার কথা গুলো শুনে সত্যিই সাপের মতো ফুস ফুস করছে,,
এই মেয়েকে যাও একটু ভালো বলছিলাম।এই মেয়ে তাও ভালো না।কাকে কোন সময় কথা শুনিয়ে দেয় এই মেয়ে ঠিক নাই।এখন এই মাথা ব্যাথাটাকে বের করতে পারলে আমার শান্তি।সারাদিন আমার মাটি করে ফেলেছে।
(আভি মনে মনে)

হইছে তোমার?(আভি আমার উদ্দেশ্যে করে দাঁত চেপে বললো)

আমিও মুখ ভেংচি দিলাম।আমার কান্ড দেখে যে উনার মাথার রগ ফুলছে আমি তা হারে হারে টের পাচ্ছি।উনি আমার দিকে রক্ত চক্ষু দিয়ে তাকিয়ে নিহাল ভাইয়ার উদ্দেশ্য বললো
নিহাল একে(আমাকে) বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আয়।এখানে থাকলে আমার মাথা ব্যাথার কারন হবে।(আভি)

আভি বাবা।থাক না ও।আজ আমাদের বাড়িতে চলো।আমার মেয়ে আর নিহালের বাবা তোমাকে দেখে অনেক খুশি হবে(নিহালের মা)

নাহ।আন্টি এই পেঁচাল কে নিলে আরো আপনাদের ক্ষতি হবে।(আভি হটাৎ করে বলে ফেললো)

আপনি(আভি)চুপ করুন তো।আন্টি আজ না আরেক দিন।আজ আমি অনেক ক্ষন ধরে বাসায় যাই না।সবাই অনেক চিন্তা করবে আরেক দিন আমি সত্যি আপনাদের বাসায় যাবো।(আমি আন্টির হাত ধরে)

আচ্ছা। মা তুমি যাই বলো।কিন্তু একদিন কিন্তু আমাদের বাড়ি যাবে এইটা তো শিউর?(আন্টি)

হ্যা।পাক্কা।আস্থার উপর আস্থা রাখতে পারেন।(আমি)

ভুলেও না আন্টি ওর উপর আপনি একটুও আস্থা রাখবেন না।(আভি)

ওই। মি:কোবরা।সবাই কি আপনার মত সাপ নাকি?কিছু মানুষ ভালোও আছে।যেমন আমি!(আমি ভাব নিয়ে)

ইউ,,,
আভি কিছু বলতে যাবে তার আগেই নিহাল থামিয়ে বললো
আভি আজ থাক।অনেক সাও আর নেউলে ঝগড়া দেখছি আজ আর না।

আভি চুপ হয়ে গেল।
এক লোককে দিয়ে নিহালের মাকে বাসায় পাঠিয়ে দিলো।মহিলাটা অনেক ভালো। আমার অনেক ভালো লাগলো তার ব্যবহার।এখন আমার যাওয়ার পালা আমাকে নিহাল বাসায় দিয়ে আসবে।

এই মেয়ে শুনো।(আভি আমাকে উদ্দেশ্য করে)

হুম।এই লোকটা তখন কোন ভুলে যেনো আমার নাম নিয়েছিলো।এখন আবার এই মেয়ে ওই মেয়ে শুরু করে দিয়েছে। হায়রে।
(আমি মনে মনে হতাশা নিয়ে বললাম)

কি হলো কথা কানে যায় না?(আভি)

আমি দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে উনার সামনে গিয়ে বললাম,,
জ্বি।বলুন।

এই নাও।(আভি আমার দিকে একটা চেক এগিয়ে দিয়ে)

এইটা কি?(আমি অবাক হয়ে)

এই চেক টাতে পাঁচ লাখ টাকা আছে।আজ যা যা হলো তার ক্ষতিপূরণ।আমি কারোর কারো কাছে সরি বলি না।তাই আজ তোমার যা যা ক্ষতি হয়েছে টা আমি টাকা দিয়ে পুষিয়ে দিচ্ছি।(আভি আমার সামনে এসে দাড়িয়ে কথা গুলো বললো)

আমি উনার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বললাম
চেক টা আসল তো?

আভি চৌধূরী কোনো কাচা কাজ করে না।(আভি)

আমি উনার কাছ থেকে চেক টা নিলাম।উনি অবাক হয়ে গেলো।কারণ উনি হয়ত ভাবে নেই আমি,,যে প্রতি পদে পদে লড়াই করি সে কি করে চেক নিই।

গুড ওয়ে টু say সরি।
বলেই যেতে লাগলাম।একটু যেতেই আবার ফিরে এসে উনার সামনে দাড়ালাম।

জানেন হিন্দিতে একটা কথা আছে “”ইয়আহ্ মিলনা লেকিন উপার মাত মিলনা।””কিন্তু আমার কাছে এইটা একটু ভিন্ন।আপনার আমার সাথে সব সময় দেখা হয় এইটাই দোয়া করি।কারণ আপনার এক দেখায় আমার পাঁচ লাখ টাকা লাভ হলো।
পরেই আভির কানে কানে ফিসফিস করে বললাম
We Meet,,,,with beniefits

বলেই মুচকি হাসি দিয়ে চলে আসলাম।আর উনি সেখানেই দাড়িয়ে আছে।

আস্থা চলে যাওয়ার পর আমি সোফাতে পরলাম।
তোমার সাথে যেনো আমার আর কখনও দেখা না হয় আস্থা।আমি এইটাই চাই।তুমি এই এক দেখাতেই কয়েক ঘন্টায় আমার লাইফে ঝড়ে নিয়ে এসেছো।পরের দেখাতে আমার জীবনে তুমি সুনামি নিয়ে আসবে তা আমি শিউর।তাই আল্লাহ যাতে তোমার সাথে না দেখা করাই তাই আমি চাই।
.
.
চলবে…
অনেকের কৌতূহল হচ্ছে যে কি beniefits বা লাভ আছে বা স্টোরির সাথে নামের মিল কোথায়??তাদের বলছি একটু ধৈর্য্য ধরুন ধীরে ধীরে সব পরিস্কার হয়ে যাবে।ইনশাআল্লাহ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here