real love পর্ব ৩২

#Real_Love♥
#Oniya_Chowdhury
Part: 32
.
.
আমি মুখ থেকে উনার হাতটা সরিয়ে বললাম,
– এতক্ষণ দেখেও না দেখার ভান করছিলেন,তাই না?
উনি আমাকে আরো কাছে টেনে বললেন,
– ইয়েস মিসেস চৌধুরী!সিড়ি দিয়ে নামতে নিয়ে দেখলাম তুমি উপরে ছাদের দিকেই আসছো!আমি দ্রুত আবার ব্যাক করে চুপচাপ দাড়িয়ে পরলাম!
উনার কথা শুনে আমি উনার বুকে কিল দিয়ে বললাম,
– আব্বু আম্মু যে আবার ব্যাক করেছে বিয়ের কথাটা পাঁকা করতে,জানেন?
আমার কথা শুনে উনি চোখ বড় বড় করে বললেন,
– সত্যিই?আমি তো ভাবলাম যাওয়ার সময় আমার সাথে দেখা করতে তুমি ছাঁদে এলে!
– উহু!আব্বু আম্মু নিচে আন্টি আঙ্কেলের সাথে কথা বলছে!
– বিয়েটা তাহলে খুব শীঘ্রই হতে চলেছে!
কথাটা বলেই উনি আমাকে ছেড়ে আমার শাড়ির আঁচল টেনে আমার মাথায় দিয়ে বললেন,
– আমার বউ!আমার একশবেবির মা!আমার হার্ট!
কথাটা বলেই আমার পেটে হাত রেখে বললেন,
– বেবিরা তোমাদের আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না!খুব শীঘ্রই তোমাদের আনার ব্যবস্থা করছি!
বলেই কপালে একটা চুমো দিয়ে আমাকে উল্টো ঘুরিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলেন!সাথে সাথেই মাথার কাপড় পড়ে গেলো!উনি চুলে মুখ গুঁজে বললেন,
– টিয়াপাখি!
আমি অস্ফুটোস্বরে বলে উঠলাম,
– হু…
– কিছু নাহ্!
কতক্ষণ ওভাবে থেকে উনি ঘাড়ে একটা চুমো দিয়ে আচঁমোকা আমাকে কোলে তুলে রেলিং এর উপর বসালেন!আমি যতই কাঁপাকাঁপি থামানোর চেষ্টা করছি উনার কান্ড দেখে আমার হাত পা ততই জোরে জোরে কাঁপছে!
উনি একহাতে আমার কোমড় জড়িয়ে ধরে অন্যহাতের বৃদ্ধাঙ্গুল আমার ঠোঁটে স্লাইড করতে করতে বললেন,
– তোমার এই তুলতুলে মাখনের মতো চিকন ঠোঁটগুলোর উপর প্রথমদিনই যে আমার নজর পরেছিলো সেটা কি তুমি জানো?
উনার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে আমার ঠোঁট থেকে উনার হাতটা সরিয়ে দিয়ে বললাম,
– খবরদার,ওসব করার চেষ্টাও করবেন না!
আমার কথা শুনে হো হো করে হেসে উঠে বললেন,
– তুমি মানা করার কে,শুনি?এখনো তো তোমার কোনোকিছুতে আমার অধিকার হয়নি!আগে অধিকারটা আদায় করি তারপর দেখবো কে কার মানা শোনে!বাসর রাতে তোমার ওই ঠোঁটজোড়ায় হামলা করা হবে then প্লাষ্টিক সার্জারি করে মোটা বানানো হবে!
কথাটা বলেই উনি পুরো ছাঁদ কাঁপিয়ে হেসে উঠলেন!উনার হাসি দেখে আমার আত্মার পানি শুকিয়ে গেলো!
আমি উনাকে ধাক্কা দিয়ে লাফ দিয়ে নিচে নেমে দ্রুত হাঁটা শুরু করলাম!উনি দৌড়ে এসে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
– বাব্বাহ্!সামান্য কথা শুনেই দেখি পুরো শরীর কাপঁছে তোমার!বাসর রাতে এমার্জেন্সি ডক্টর ঠিক করে রাখতে হবে দেখছি!
.
উনার কাছে আর একমুহূর্তও থাকা যাবে না!কথা শুনিয়েই আমাকে ভয় পাইয়ে দিচ্ছেন!
আমি দ্রুত উনার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে নিচে নেমে ইয়াশের রুমে চলে এলাম!আপু হাতের উপর ভর করে ঘুমন্ত ইয়াশের মাথায় বিলি কেটে দিচ্ছিলেন! আমাকে দেখেই মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বসতে বললেন!আমি ইয়াশের মাথার কাছে বসে ইয়াশের পিঠে হাত বুলাতে লাগলাম!আমি আপুকে আস্তে করে জিঙ্গেস করলাম,
– মাহিন কোথায় আপু?
– মনির কাছে।ঘুমোচ্ছে মনে হয়।
– তোমাকে ছাড়া থাকতে পারে?
– হুম!ওর বাবার কাছেই বেশি থাকে!
– ওহ্!
আপু ইয়াশের কপালে একটা চুমো দিয়ে বললেন,
– আমার যেদিন বিয়ে হয়ে গেলো ইয়াশ সেদিন প্রচুর পরিমাণে কান্না করেছিলো।আজ আবার আমি সেই কান্নাটা দেখতে পেলাম!আমি যখন বেড়াতে আসতাম এই বাড়িতে ইয়াশ আমাকে আটকে রাখতো!যেতে দিতো না আমায়!অনেক দিন তো এমনও হয়েছে তোমার ভাইয়া আমাকে রেখেই চলে গিয়েছে!ইফাজ যখন আব্বু আম্মুকে তোমার ছবি দেখিয়ে বললো তোমাকে ইফাজ বিয়ে করতে চায়,তারপর থেকেই ইয়াশ তোমার প্রতি পাগল হয়ে গিয়েছে!মাঝে মাঝে তো কান্না করতে করতে বলতো “ভাবি আমাদের বাসায় কবে আসবে!ভাবিকে আনছো না কেনো?আমি ভাবিকে দেখবো!”তারপর থেকেই আমার প্রতি ওর পাগলামী একেবারেই কমে গেলো।তোমার ভাইয়া এখন যখন তখন আমাকে এখানে নিয়ে আসে!এখন আর ইয়াশ আমাকে আগের মতো আটকে রাখে না!তোমার….
আপু আর কিছু বলতে পারলো না!মাহিন কান্না করতে করতে রুমে ঢুকে পড়লো!পেছন পেছন মনিও ঢুকলো!মাহিনের কান্নার আওয়াজ শুনে ইয়াশ একটু নড়ে উঠলো!আমি যেই জড়িয়ে ধরতে যাবো ইয়াশ মিটমিট করে চোখ খুলে আমাকে দেখেই মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে জড়িয়ে ধরলো!মনি মাহিনকে বেডের উপর তুলে দিলো!আপু হাত বাড়িয়ে মাহিনকে কোলে নিয়ে কান্না থামানোর চেষ্টা করলেন!
.
কিছুক্ষণ পর হঠাৎ উনি রুমে ঢুকে সবাইকে একটা একটা করে মিষ্টি খাইয়ে দিলেন!ইয়াশ চোখ বন্ধ করে এমনি শুয়ে ছিলো!লাষ্ট মিষ্টিটা ওর মুখে ঢুকিয়ে দিয়ে বললেন,
– আজ কিন্তু ভাবিকে যেতে দিতে হবে!আটকে রাখলে কিন্তু ভাবির আব্বু আম্মু রাগ করে ভাবিকে চার বছরের আগে আর এ বাড়িতে আসতে দিবে না!সো আর কান্নাকাটি করা চলবে না!
– আচ্ছা!
ইয়াশ ঘুম ঘুম কন্ঠে খুব কিউট করে আমাকে যাওয়ার পারমিশন দিলো!আমি ইয়াশের কপালে গভীরভাবে একটা চুমো খেয়ে বললাম,
– সত্যি তো?আবার কান্না করলে কিন্তু আমি অনেক রাগ করবো!
– করবো না!
.
– মিষ্টি কেনো?আগে সেটা বল!
পাশ থেকে আপু ইফাজকে জিঙ্গেস করলেন!
আপুর কথা শুনে উনে হেসে জবাব দিলেন,
– সামনের ডিসেম্বরে তোমার ভাই ইফাজের বিয়ে!এটা তার মিষ্টি!
উনার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে বললাম,
– এই ডিসেম্বরে?
– ইয়েস…এই ডিসেম্বরে!ডেট আরো আগানো যেতো কিন্তু ইয়াশের ফাইনাল এক্সাম আর আব্বুর একটা ফোরেইন ট্যুরের জন্য ডিসেম্বরে ফিক্সড করা হয়েছে!
উনি শার্টের কলারটা একটু টেনে বললেন,
– যাক….চার বছর তো আর অপেক্ষা করতে হবে না!
উনার কথাটা শুনে আমি চোখ রাঙ্গিয়ে উনাকে উল্টাপাল্টা কথা বলতে নিষেধ করলাম! আপু আছে,মনি আছে সবার সামনে উল্টাপাল্টা কথা যাতে না বলেন উনি!
.
উনি আমার আর ইয়াশের হাত ধরে বেড থেকে নামিয়ে বললেন,
– আন্টি আঙ্কেল আর একমুহূর্তও অপেক্ষা করতে চাচ্ছেন না!তাড়াতাড়ি তোমাকে যেতে বললো!অলরেডি অনেক রাত হয়ে গিয়েছে!
.
ইয়াশ আমার হাত ধরে হেলেদুলে হাটতে লাগলো!আপু মাহিনকে কোলে নিয়ে মনির সাথে আমাদের পেছন পেছন আসলো!
.
.
সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ইয়াশকে কোলে করে আমি গাড়ি পর্যন্ত আসলাম!আম্মু আমার সাথেই ছিলো!আব্বু আঙ্কেল আর ইফাজ আমাদের পেছনে ছিলো!আমি ইয়াশকে নিয়ে পেছনের সিটে উঠে বসলাম!আম্মু আমার পাশে এসে বসলো!
.
আব্বু ইফাজ আর আঙ্কেলের সাথে হ্যান্ডশেক করে গাড়ীতে উঠে বসলো!ইফাজ এসে আমার কোল থেকে ইয়াশকে নিতেই ইয়াশ দ্রুত আমার গালে একটা চুমো খেয়ে টাটাহ্ দিলো!আমিও ইয়াশকে একটা চুমো দিয়ে বাই বললাম!
.
আমি ইফাজের দিকে তাকাতেই উনি ঠোঁটের ইশারায় ফ্লাইং কিস করলেন!আমি সাথে সাথেই আম্মুর দিকে তাকালাম!আম্মু বাহিরে তাকিয়ে ছিলো,তারমানে দেখে নি!আমি উনার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে হাতের ইশারায় উনার ফ্লাইং কিসটা ধরে বুকে হাত রাখলাম!আমার কান্ড দেখে উনি অবাক হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে হেসে ফেললেন!
.
.
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here