What a হাসবেন্ড পর্ব -০৩

#What_a_হাসবেন্ড
#Tamanna_Tabassum(লেখনীতে)
#পর্ব-৩
শ্যাম্পুর বোতল দিয়ে কয়েকটা ধা ম ধা ম করে বা রি দিলাম। ম্যাজিস্ট্রেট প্রথমে আউ উউ শব্দ করে হঠাৎ আমার হাত ধরে ফেলল। আমি অন্য হাত দিয়ে থা প্প ড় দিতে চাইলে সে আবার ও হাত ধরে ফেলল। আমাকে ধা ক্কা দিয়ে সরিয়ে উঠে বসলো। সে আশেপাশে তাকিয়ে কী যেন খুজতেছে,আমি অবাক হলাম। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ কি হউছে?’
সে কিছু বলল না। আমি যে তারে এতক্ষণ পি ডা ই লা ম সে তার কোনো প্রতিক্রিয়াই দেখাইলো না। বিষয়টা অবাক হওয়ার মতো! আচ্ছা ধরেন আমি আপনাকে ইচ্ছা মতো পি ডা ই লা ম, এরপর আবার বালিশ দিয়ে চা পা ও দিলাম।
.
.
তাকে এতো ব্যস্ত দেখে আমি কিছুক্ষণের জন্য সব ভুলে গেলাম। খাটের উপর বে ক্কে লের মতো বসে আছি আর ম্যাজিস্ট্রেট বালিশ মালিশ উল্টায় পালটায় কী জানি খুজতেছে। শত খোজাখুজির পরও যখন কিছু পেলো না তখন খাট থেকে নেমে টেবিলের কাছে চলে গেলো। আজব তো! এই বেডা খুজে কী?
টেবিল থেকে কী যেন একটা নিলো এরপর ওয়াশরুমে চলে গেলো। আমার খানিকটা খটকা লাগলো এর মাথায় চলে কী? শান্তশিষ্ট মানুষদের অসহায় ভাবা বো কা মি, আমি এতোটাও নই। আর এই ম্যাজিস্ট্রেটকে হারে হারে চিনি। বেটা ব জ্জা ত। মাথায় কী খিচুড়ি পাকাইতেছে আল্লাই জানে! নিশ্চয়ই ওয়াশরুমে গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়ায় ষ ড় য ন্ত্র করতেছে। আমাকেও প্রস্তুত হতে হবে। নারীজাতির সম্মান আজ আমার হাতে। যে করেই হোক আমাকে জিততে হবে। শ্যাম্পুর বোতল রেখে আরো মজবুত কিছু খুঁজতেছি, এরে আজ যদি আমি চান্দের দেশে আমি না পাঠাইছি তো আমার নাম ও মুন না। অনেক খোজাখুজির পর খাটের নিচে ঝা ড়ু পাইলাম। ঘরটায় কিচ্ছু নাই। শান্তি মতো পি ডা ই তেও পারি না, ধুরো!

কিছুক্ষণ পর সে ওয়াশরুম থেকে বের হলো। আমি এক হাত পেছনে লুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। সামনে তাকিয়ে দেখলাম কালো ফ্রেমের চশমা পড়া একটা কুমড়াপটাশ দাড়ায় আছে। ওও তারমানে তখন চশমা জন্যই য দ্ধের মাঝ পথ থেকে চলে গেছিলো।

আমি তার দিকে নিষ্পাপ চোখে তাকায় আছি, সে আমার দিকে ভ্রুঁ কুচকে তাকায় আছে। আমি মুচকি হাসলাম। সে চমকালো। আমি আরেকটু হাসলাম। সে আবারও চমকালো। আমি আমার বত্রিশপাটি দাঁত বের করে হেসে পেছন থেকে ঝা ড়ু বের করলাম, সে হকচকিয়ে তাকালো। আমি ঝা ড়ু উঁচু করলাম, সে ভড়কালো। ঝা ড়ু আরেকটু উঁচু করে ‘ইয়া’ বলে তার উপর হা ম লা করবো তখনই ” বাস বাস ” বলে আমাকে থামিয়ে দিলো। আমি ভ্রুঁ নাচিয়ে বললাম, ‘কী? ‘
সে বলল, ‘ কী? ‘
আমি বললাম, ‘ থামালেন কেন? ‘
সে বলল, ‘ঝা ড়ু নিয়ে আসছো কেন?’
আমি বললাম, ‘ আপনাকে মা র তে ‘
তার মুখো ভঙ্গি এমন হলো যেন আমি অনেক বড় কিছু করে ফেলেছি । সে বলল, ‘ ল জ্জা করে না? বিয়ের রাতে জামাইকে মা র তে? ‘
আমি বললাম,’ আপনার ল জ্জা করে না বিয়ের রাতে বউকে খাট থেকে ফেলে দিতে?’
-‘ শুরুটা কে করেছিলো?’
-‘ কে আর আপনি!'( ভাব নিয়ে)
-‘ ওও, ঘরে আমি ঢুকেই দরজার পেছনে গিয়ে তোমাকে ক্যারাটে দেখিয়েছিলাম না?’
-‘ যাই হোক! আমাকে বিয়ে কেন করলেন?কতোবার বলবো? আরে ভাই আমি আপনাকে পছন্দ করি না। ‘
সে মুখ ছোট করে বলল, ‘ বয়ফ্রেন্ডকে ভালোবাসো বলে আমাকে বিয়ে করতে চাওনি। ‘

বিয়ে ভাঙ্গার জন্য তাকে অনেক কিছু বলেছিলাম এরমধ্যে যখন কোনোটাই কাজে আসলো না তখন বললাম, ‘ আমি সাগরকে ভালোবাসি’। সাগর আমার সিনিয়র+ হাল্কা-পাতলা ক্রাশ, কিন্তু তাকে কিছুই আমার বলা হয় নি। আন্তাজে সাগরের নাম যখন বললাম তখন ভ য় হতে লাগলো। এই ম্যাজিস্ট্রেট যদি সাগরকে জিজ্ঞেস করে তাহলে তো আমি শেষ 😫😫 আল্লাহ দড়ি ফালাও পিলিস 🥹

তবে এই কথা বলে যে অনেক লাভ হয়েছে এমনও না, সেই ওনাকেই তো বিয়ে করতে হলো৷ আমার হাবলা ফ্রেন্ডগুলোও কিছু করতে পারলো না। অন্য কাউকে ভালোবাসি বলার পরও বিয়ে ভাঙ্গলো না। বিয়ে ভাঙ্গার জন্য আমি কী না করছি? নিজেকে রাস্তাঘাটে অপমানও করছি। প্রথম যেদিন আম্মু আমাকে তার সাথে রেস্টুরেন্টে দেখা করতে পাঠালো সেদিনেরই ঘটনা এটা!

আম্মু আমাকে বলছিলো সুন্দর করে সাজতে, আর একটা সুন্দর জামা পরতে। আমিও পরলাম। আলমারি থেকে সবুজ কালার একটা কামিজ নিলাম। লাল কালার কামিজের লাল সেলোয়ার আর ওরনা নিলাম। পিচ্চিরে দিয়া লাল সবুজ স্টিকার আনাইছিলাম, ওইটাও বের করলাম। এরপর সাজুগুজু করে বের হলাম, গন্তব্য রেস্টুরেন্ট!
রাস্তা দিয়া হাটতেছি নিজের মতো করে। আশেপাশের মানুষজন কেমন করে যেন তাকাইতেছে। কেউ কেউ তো যাইতে যাইতে ঘাড় ঘুরাইতে ঘুরাইতে ঘাড় ম ট কা য় ফেলয়াছে। আমার কী? আমি তো খালি আম্মুর কথাই রাখছি! যতোকিছু হোক মায়ের বাধ্য সন্তান আমি, কী করে কথা ফেলিতে পারি🥹?
গাঢ় সবুজ জামা, লাল টকটকে পায়জামা, লাল-সবুজ ওরনা। সৌন্দর্য আরো বাড়ানোর জন্য ডান গালে লাগাইছি সবুজ স্টিকার, বাম গালে লাল স্টিকার, কপালে লাল-সবুজ স্টিকার। মানে মোটকথা আমি সৌন্দর্যের পাশাপাশি মানুষকে জ্ঞান দিচ্ছি৷ বোঝাতে চাইছি যে লাল-সবুজ কেমন লাগে। লালের সাথে সবুজ মিশালে কী রঙ হয় রাস্তার বাচ্চারা আমাকে দেখে শিখতে পারবে। বাচ্চারা যেন আরো শিখতে পারে তাই আমি মাঝখানে সিঁথি করে চারটা চারটা মোট আটটা বেণি করেছি, এতে করে বাচ্চারা গুনতে পারবে। ঠোঁটে লাল লিপস্টিক দিয়েছি যেন সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পায়।
রাস্তা পাড় হওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছি।রাস্তার ওইপাশেই রেস্টুরেন্ট। অনেক রোদ! এরমধ্যে মানুষগুলো ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। এতে আমার খুবই বিরক্ত লাগছে। এদিক-ওদিক তাকিয়ে সবকিছু দেখছিলাম হঠাৎ সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটাকে দেখে চমকে গেলাম। ম্যাজিস্ট্রেট দাঁড়িয়ে আছে আর আমার দিকেই তাকিয়ে আছে দূর থেকে। আমি জানি সে অঅদ্ভুত চোখে ভ্রঁ কুচকে আমাকে দেখছে। দেখলে দেখুক! তার হবু শ্বাশুড়ির কথায় সুন্দর করে সেজেছি দেখুক একটু। আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে গান গাইতেছি। কিছুক্ষণ পর সামনে আবার তাকালাম। দেখলাম সে আগের মতোই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি এইবার অন্যকিছু করবো৷ অন্য কিছু ভাবতে হবে, যেন সে আমাকে এইখান থেকেই রিজেক্ট করে দেয়। আমি আঙুল দিয়ে নাক খোচানো শুরু করলাম। এক নাক খোচাতে খোচাতে দেখলাম সে এগিয়ে আসছে আমাকে নাক খোচাতে দেখে রাস্তার মাঝেই থেমে গিয়েছে। আমি এইবার আরেক আঙুল নাকে ঢুকালাম। দুই আঙুল দিয়ে ইচ্ছামতো নাক খোচায় তার বিয়ে করার শখ মিটায় দিবো আজকে। নাক খোচাতে খোচাতে আবার তার দিকে তাকালাম। আমার এইসব কাণ্ডে সে বোধহয় আজ অ জ্ঞা ন ই হয়ে যাবে। অ জ্ঞা ন হতে হতেও সে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে, এইবার আমি সেই দুই আঙুল নাক থেকে বের করে মুখে দিয়ে দিলাম। সে আর দুনিয়ায় নেই। উড়ি উড়ি গান করতে করতে পেছন ফিরতেই দেখি সাগর ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছে 🌚। আমার দিকে কেমন করে যেন তাকায় আছে। নিজের কপাল নিজের ভাঙ্গতে মন চাচ্ছে। জীবনে তো মনের কথা বলতে পারলামই না, শেষ সময়ে এমন বে ই জ্জ তি!
তার চেহারা দেখে মনে হচ্ছে সে আমার মতো উজবুক আর জীবনে একটাও দেখে নাই। আমি ল জ্জা য় সেখান থেকে চলে আসলাম। আশেপাশের মানুষজন আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করতেছে। বিষয়টা এখন কেন যেন গায়ে লাগলো, খুব খুব লাগলো 😑।
.
চলবে

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here