Your_love_is_my_Addiction পর্ব ১১+১২

#Your_love_is_my_Addiction
#Season_2
#সুমাইয়া_সিদ্দিকা_আদ্রিতা
#পর্ব_১১
.
ইচ্ছে মাথা নিচু করে দেয়ালের সাথে লেগে দাঁড়িয়ে আছে। ও বুঝতে পারছে যে আয়াশের মনে এখন ঠিক কী চলছে। তা-ও কিছু বললো না সে। ইচ্ছেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে আয়াশ। মেয়েটা খুব একটা আহামরি সুন্দর নয়, তবে তার চোখে ইচ্ছেকেই সবচেয়ে সুন্দর রমণী বলে মনে হয়। একেবারে ফর্সাও নয় আবার শ্যাম বর্ণেরও নয়, এর মাঝামাঝি গায়ের রঙটা পেয়েছে ইচ্ছে। আয়াশ বেশ কিছুক্ষণ ইচ্ছেকে দেখে গম্ভীর গলায় বললো,
-“গাড়িতে বসে তখন কী যেন বলছিলে?”

প্রশ্ন শুনে গলা শুকিয়ে গেল ইচ্ছের। সে তো ইচ্ছাকৃতভাবে আয়াশকে রাগানোর জন্যই বলেছিল কথাগুলো। এই কথাটা তো আর আয়াশকে বলতে পারবে না সে। অনেক চিন্তা-ভাবনা করে নার্ভাস হয়ে গেল সে। তা দেখে আয়াশ বললো,
-“থাক তোমাকে কষ্ট করে মনে করতে হবে না আমিই বলছি। আমি তোমাকে চাই নাকি তোমার শরীরটা চাই এই প্রশ্নটাই তুমি আমাকে করেছিলে। মনে পড়েছে এবার!”
-“(….)”
-“আমি জানি না কী করলে তুমি আমাকে একটু বুঝবে। এতদিন আমার সাথে থেকে কী তোমার এটাই মনে হয়েছে যে আমার শারীরিক চাহিদা বেশি! বলতে পারবে কোনোদিন আমি তোমাকে সেভাবে স্পর্শ করেছি! কোনোদিন আমাকে তুমি ব্যতীত অন্য কোনো মেয়ের সাথে দেখেছো? হ্যা আমি মানছি আমি বিয়ের আগে থেকেই তোমার অনেকটা কাছে এসেছি। কিন্তু সেটা শুধু তোমাকে লিপ কিস আর নেক কিস করা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রেখেছি আমি। তারপরও কী করে তুমি এই কথাটা ভাবতে পারলে যে আমি তোমার শরীরকে ভালোবাসি?”

চুপ করে রইলো ইচ্ছে। আসলেই আয়াশ লয়্যাল ছিল। ইনফ্যাক্ট এখনো সে লয়্যাল। ইচ্ছে ব্যতীত অন্য কোনো মেয়ের দিকে এতটা গভীরভাবে কখনো তাকায়নি সে। যে নেশা মদ খেয়ে করে মানুষ, সেই নেশা ইচ্ছেকে দেখলে আয়াশের এমনিতেই হয়ে যায়। একটা মানুষকে কতটা ভালোবাসলে এই ধরনের অনুভূতি হতে পারে! ইচ্ছে নিচুস্বরে বললো,
-“স্যরি! আসলে তখন আমি কী বলেছি তা আমি নিজেই বুঝতে পারিনি।”
-“সেটা ঠিক আছে। কিন্তু আমি একটা কথা ভেবে পাচ্ছি না যে তুমি আমাকে ঘৃণা কর সেই তুমি আমাকে এত সহজে বিয়ে করতে রাজি কীভাবে হলে? ইনফ্যাক্ট তুমি নিজে থেকেই বিয়ের প্রপোজাল দিয়েছো। এর কারণ কী?”

ভয় পেয়ে গেল ইচ্ছে। সে কী বলবে ভেবে পাচ্ছে না। আয়াশ যে হুট করে এই প্রশ্নটা করে বসবে বুঝতে পারেনি সে। জিহ্ব দিয়ে ঠোঁটটা ভিজিয়ে নিয়ে কয়েকটা ঢোক গিলে নিলো। মুহূর্তেই তার কপালে হালকা হালকা ঘাম জমে গেল। ইচ্ছে আমতা আমতা করে বললো,
-“আমি মানে আপনি… আসলে আপনি যখন তখন আমার কাছে এসে আমাকে কিস করেন আবার জড়িয়েও ধরেন। এই জিনিসগুলো আমার ঠিক পছন্দ ছিল না। কিন্তু আপনার ভয়ে কিছু বলতেও পারতাম না। তাই তখন যখন আপনি আমাকে আপনার ভালোবাসার কথাটা বললেন তখন আমি আপনাকে আমায় বিয়ে করে নিতে বলি যাতে এরপর থেকে আপনি আমার কাছে আসলে আমার অস্বস্তিটা একটু কম হয়।”

আয়াশ চুপচাপ গভীরভাবে কিছুক্ষণ ইচ্ছেকে পর্যবেক্ষণ করলো। সে বুঝতে পেরেছে ইচ্ছের মাথায় কিছু একটা চলছে। নাহলে তাকে এত সহজে বিয়ে করে নিতো না। তা-ও আবার ইচ্ছে নিজে থেকেই বিয়ের প্রপোজাল দিয়েছে তাকে। আয়াশ বাঁকা হাসলো। মেয়েটার সব বুদ্ধি আসলেই লোপ পেয়েছে। নাহলে ব্যাঙ্গালোর সিটির কিং দ্যা গ্রেট গ্যাংস্টার আয়াশ খানের সাথে কি’না একটা সামান্য মেয়ে চালাকি করার চেষ্টা করে! মনে মনে এসব ভেবে প্রচুর হাসলো আয়াশ। কিন্তু বাইরে তার মুখটা এখনো গম্ভীর।
-“ওয়েল! বিয়ে যখন হয়েই গিয়েছে তখন রোমান্স করা তো জায়েজ। তার উপর আবার আজই আমাদের বিয়ে হয়েছে। সো মিসেস ইচ্ছেময়ী আয়াশ খান! আপনি কী প্রস্তুত?”
ইচ্ছের বুকের ভেতরটা ক্রমশ কেঁপে কেঁপে উঠছে আয়াশের কথা শুনে। কাঁপা কাঁপা গলায় সে বললো,
-“কি..কিসের জন্য?”
-“আজকে আমাদের ফার্স্ট নাইট। এই রাতটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত। আই হোপ তুমি প্রস্তুত থাকবে।”

ইচ্ছের কানে ফিসফিস করে কথাগুলো বলে বাঁকা হাসলো আয়াশ। চমকে উঠলো ইচ্ছে। আয়াশের কথা শুনে শরীরের পশম সব দাঁড়িয়ে গিয়েছে তার। চোখ বন্ধ করে দু’হাতে নিজের জামা শক্ত করে আঁকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে সে। আয়াশ তার ডান হাত ইচ্ছের এক গালে রেখে অপর গালে নিজের নাক ঘষতে লাগলো। ডান হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে ইচ্ছের ঠোঁটে স্লাইড করতে করতে ইচ্ছের গালে চুমু খেয়ে তার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিল। বেশ কিছুক্ষণ তাকে চুমু খেয়ে সরে এলো আয়াশ। বুড়ো আঙুল দিয়ে ঠোঁটটা মুছে পেছনে যেতে যেতে বললো,
-“বি রেডি ফর টুনাইট সুইটহার্ট।”

ইচ্ছে আয়াশের দিকে তাকাতেই আয়াশ একটা ফ্লাইং কিস দিয়ে বেরিয়ে গেল রুম থেকে। ইচ্ছে ধপ করে নিচে বসে পড়লো। নখ কামড়াতে লাগলো সে। আয়াশের কথাগুলো এখনো তার কানে বাজছে। “আজকে আমাদের ফার্স্ট নাইট। এই রাতটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত। আই হোপ তুমি প্রস্তুত থাকবে।” “বি রেডি ফর টুনাইট সুইটহার্ট।” ভয়ে কাঁপতে লাগলো ইচ্ছে। সত্যিই কী আজকে আয়াশের সাথে রাত কাটাতে হবে তার! বড় বড় কয়েকটা ঢোক গিলে নিলো সে। তার এসব ভাবনার মাঝেই হঠাৎ কিছু একটার শব্দ ভেসে এলো তার কানে। ইচ্ছে বুঝতে পারলো তার ফোন বাজছে তাই ভাইব্রেশনের আওয়াজ আসছে। দ্রুত উঠে গিয়ে দরজা লক করে এসে ফোনটা তোশকের নিচ থেকে বের করে দেখে শোভন কল দিচ্ছে। কল রিসিভ করে বিছানায় বসলো ইচ্ছে।
-“মিস ইচ্ছেময়ী!”

শোভনে মুখ থেকে ইচ্ছেময়ী নামটা শুনে ভ্রু কুঁচকে ফেললো ইচ্ছে। এই নামটা শুধু আয়াশের মুখেই মানায়। কতটা আবেগ আর অনুভূতি মিশিয়ে ইচ্ছেময়ী বলে ডাকে তাকে আয়াশ ভাবতেই মুখে হাসি ফুটে উঠলো তার। ফোনের ওপাশ থেকে চোভন আবারও তার নাম ধরে ডেকে উঠলো। ইচ্ছে বেশ শান্ত গলায় বললো,
-“আপনি আমাকে ইচ্ছে বলে ডাকবেন। ইচ্ছেময়ী বলার দরকার নেই। নেক্সট টাইম থেকে খেয়াল রাখবেন আশা করি।”
-“আচ্ছা ঠিক আছে। এবার আমার কথা শুনো।”
-“বলুন।”
-“কিছুক্ষণ আগেই আয়াশের লোকেরা এল বিজনেসম্যানকে মেরে তার হাতে থাকা ব্রিফকেসটা নিয়ে গিয়েছে। আমি যদি ভুল না হই তাহলে ব্রিফকেসটা এতক্ষণে আয়াশের কাছে পৌঁছে গিয়েছে।”
-“হুম তো! আর তাছাড়া কী এমন আছে ওই ব্রিফকেসে যে লোকটা মেরেই ফেললো ওরা?”
-“ওই ব্রিফকেসের ভেতরে ওই বিজনেসম্যানের সমস্ত প্রপার্টির পেপার আর কিছু শেয়ারের পেপার আছে যার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা।”
-“৫০ কোটি!”
ইচ্ছে যেন আকাশ থেকে পড়লো। শোভন হেসে বললো,
-“হ্যা ৫০ কোটি। কিন্তু এগুলো আয়াশ নিজের জন্য নেয় নি। ওকে অন্য একজন এই কাজটা দিয়েছিল। আগামীকাল ওই লোক এখানে আসছে। ব্রিফকেসটা তখন আয়াশ ওই লোককে দিয়ে দিবে।”
-“কিন্তু এসব আপনি আমায় কেন বলছেন?”
-“কারণ আজ রাতে তুমি ওই ব্রিফকেসটা পাল্টে দিবে। একই রকম দেখতে অন্য একটা ব্রিফকেস ওখানে রেখে ওই ব্রিফকেসটা তুমি আমাকে দিয়ে দিবে। তারপর আয়াশকে কালকে ওই লোকের সামনে হেনস্তা হতে হবে। আর তার সাথে সাথে ওই লোকের সঙ্গে আয়াশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটা শত্রুতায় রূপান্তরিত হবে। ওই লোক খুবই ভয়ংকর। উনার সাথে শত্রুতা করা মানে নিজের মৃত্যু ডেকে আনা। বুঝেছো!”
-“হ্যা কিন্তু আসল ব্রিফকেসের কী করবেন আপনি?”
-“এগুলো সব অরফানেজে ডোনেট করে দিব। অসৎ মানুষের অসৎ টাকাগুলো কিছু সৎ কাজে লাগালে যদি তাদের পাপ কিছুটা কমে তাতে ক্ষতি কী!”
-“আপনার চিন্তাভাবনা অনেক উত্তম। ঠিক আছে আমি দেখছি। ওহ আরেকটা কথা! সেম দেখতে আরেকটা ব্রিফকেস কোথায় পাবো আমি?”
-“বাসার ছাদে যেয়ে যেদিকটায় দোলনা আছে ঠিক সেই দোলনার নিচে একটা ছোট্ট কাগজ মোড়ানো আছে। আমার লোক রেখেছে ওটা। ওই কাগজের ভেতরে ড্রাগস আছে। চিন্তা করো না এই ড্রাগস শুধু একটা মানুষকে ১০-১২ ঘন্টা ঘুম পাড়িয়ে রাখে। ওই ড্রাগসটা তুমি আয়াশের ড্রিংকের সাথে মিশিয়ে দিবে। তারপর আয়াশ ঘুমিয়ে যাওয়ার পর ব্রিফকেসটা খুঁজে বের করবে। আয়াশের রুমের সামনেই আমার লোক অন্য ব্রিফকেস হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। তাকে আসল ব্রিফকেস দিয়ে তুমি নকল ব্রিফকেসটা সেখানেই রেখে দিবে যেখান থেকে আসলটা তুমি নিয়েছিলে। তাহলে কাজ হয়ে যাবে।”
-“ওকে ডান। কিন্তু….”
-“আমি বুঝতে পারছি তুমি কী বলতে চাইছো। কিন্তু তোমাকে একটু স্যাক্রিফাইস করতেই হবে আয়াশের থেকে বদলা নিতে চাইলে।”
-“(….)”
-“কী হলো! পারবে না তুমি?”
-“হুম পারবো।”
-“দ্যাট’স লাইক এ গুড গার্ল।”

ফোন রেখে দিল শোভন। ইচ্ছে বিছানায় চুপ করে বসে তার সামনে বরাবর ড্রেসিং টেবিলের আয়নার দিকে তাকালো। আচ্ছা সে কি কোনো ভুল করতে যাচ্ছে? কেন তার মনে হচ্ছে সে যা করছে তা ঠিক নয়! কেন তার মনে হচ্ছে সে খুব শীঘ্রই একটা ধাক্কা খেতে চলেছে! ইচ্ছে একধ্যানে আয়নার দিকে তাকিয়েই রইলো।

রাত আটটার দিকে আয়াশ ইচ্ছের রুমে এসে কিছু শপিং ব্যাগ দিয়ে গেল। এগুলো পড়ে তাকে তৈরি হয়ে থাকতে বলেছে আয়াশ। ইচ্ছে ব্যাগগুলো খুলে দেখতে লাগলো। প্রথম ব্যাগেই রয়েছে কালো রঙের খুব সুন্দর একটা অফ সোল্ডার ব্যাকলেস গাউন। অন্য একটা ব্যাগে রয়েছে গাউনের সাথে ম্যাচিং করে কিছু সিম্পল ডায়মন্ডের জুয়েলারি। আরেকটায় কিছু মেকাপের জিনিসপত্র রয়েছে। এবং শেষের ব্যাগটায় রয়েছে একজোড়া ক্রিস্টাল পেন্সিল হিল শু। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো ইচ্ছে। তারপর দেরি না করে ধীরে ধীরে তৈরি হতে শুরু করলো সে।
ঘন্টা খানেক পর আয়াশ রুমে এসে দরজা খুলতেই ইচ্ছেকে দেখে তার পা জোড়া থমকে গেল। ইচ্ছে তখন কানে দুল পড়ছিল। আয়নায় তাকিয়ে পেছনে আয়াশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ওর শরীর শিউরে উঠলো। ভেতরে ভেতরে একরাশ জড়তা কাজ করছে। ভয়ে বারবার হাত ঘেমে যাচ্ছে তার। আয়াশ ধীর পায়ে তার দিকে এগিয়ে এসে কাঁধে নাক ডুবিয়ে ঘ্রাণ নিয়ে আলতো করে একটা চুমু খেলো ইচ্ছের কাঁধে। ইচ্ছের হাত ধরে হাতের উপরে একটা চুমু খেয়ে কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে আয়াশ বললো,
-“ইউ আর লুকিং গর্জিয়াস সুইটহার্ট।”

ইচ্ছে কিছু না বলে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো। সে প্রচন্ড নার্ভাস হয়ে আছে। আয়াশ ইচ্ছের হাত ধরে তাকে নিয়ে ছাদে চলে এলো। ছাদের দরজার সামনে থেকে কালো গোলাপ ফুলের পাপড়ি দিয়ে সুন্দর করে সাজানো রয়েছে। সেই ফুলের উপর দিয়ে হেঁটে ভেতরে ঢুকলো তারা দু’জন। সম্পূর্ণ ছাদ শুধু কালো গোলাপ আর কালো রঙের বেলুন দিয়ে সাজানো। ইচ্ছে এসব দেখে মনে মনে বললো, ‘এই লোকটার কালো রঙ এত প্রিয়! একটা মানুষের কালো রঙ এত পছন্দ হতে পারে তা উনাকে না দেখলে জানতেই পারতাম না। তবে সত্যি কথা বলতে আসলেই লোকটাকে লালোতে ভীষণ মানায়। কালো রঙটা যেন তার জন্যই তৈরি। এক কথায় ব্ল্যাক প্রিন্স।’ ইচ্ছে একধ্যানে আয়াশের দিকে তাকিয়ে আছে। আয়াশের পরনে রয়েছে কালো রঙের একটা পাতলা শার্ট আর কালো জিন্স। শার্টে প্রথম তিনটা বোতাম খোলা থাকায় তার উম্মুক্ত ফর্সা বুকটা দৃশ্যমান হয়ে আছে। চেয়েও সেখান থেকে চোখ ফেরাতে পারছে না ইচ্ছে। আয়াশ তার সামনে এসে তার কপালে ঠোঁট ছোঁয়ালো। ইচ্ছের হাত ধরে তাকে আরেকটু সামনে নিয়ে গেল। সেখানে একটা ছোট টেবিল রয়েছে। টেবিলের কভারটাও কালো রঙের। এমনকি টেবিলের উপরে থাকা প্লেট, গ্লাস, মোমবাতিগুলো পর্যন্ত কালো রঙের। ইচ্ছের মুখে হাসি ফুটে উঠলো এবার। টেবিলের মাঝে একটা কেক রাখা আছে। ডার্ক চকলেট কেক এটাও কালো রঙের। এবার ইচ্ছে একটু জোরেই হেসে ফেললো। তার হাসির কারণ বুঝতে পেরে আয়াশ নিজেও মুচকি হাসলো। ইচ্ছের দিকে একটা ছুরি এগিয়ে দিল আয়াশ। সেটা নিয়ে আয়াশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো ইচ্ছে। আয়াশ তার পেছনে যেয়ে একহাত তার কোমড়ে রেখে অপর হাত ইচ্ছের হাতের উপরে রেখে কেক কাটলো তারা। আয়াশ ইচ্ছেকে কেক খাইয়ে দিলেও ইচ্ছে আয়াশকে কেক খাওয়াতে ইতস্ততবোধ করছিল। তাই আয়াশও তাকে জোর করলো না আর। ইচ্ছের হাত ধরে অন্য দিকে যেতে গেলে আয়াশকে থামিয়ে দিল ইচ্ছে। এক পিস কেক নিয়ে আয়াশের মুখের সামনে ধরতেই আয়াশের মুখের হাসিটা চওড়া হলো। সে কেকটা খেয়ে নিলো। ইচ্ছে টিস্যু দিয়ে হাত মুছতে গেলে আয়াশ তাকে থামিয়ে দিয়ে টিস্যুটা ফেলে দিল। ইচ্ছের হাত ধরে তার আঙুলে লেগে থাকা কেকের চকলেটগুলো চুষে খেয়ে নিলো। ইচ্ছে কেঁপে উঠে অন্য হাতে শক্ত করে নিজের জামা আঁকড়ে ধরলো। আয়াশ মুচকি হেসে তাকে নিয়ে অন্য টেবিলের সামনে চলে গেল। সেখানে খাবার ঢাকা রয়েছে। চারপাশে মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখা। ইচ্ছেকে একটা চেয়ারে বসিয়ে আয়াশ নিজে তার সামনে বরাবর একটা চেয়ারে বসলো। খাবারের ঢাকনা উঁচু করে চাউমিন দেখে ইচ্ছে মনে মনে প্রচন্ড খুশি হলো। তার খিদে পেয়েছিল আরও আগেই। এখন চাউমিন দেখে আরও বেশি খিদে পাচ্ছে। আয়াশ ইচ্ছের মুখ দেখে তার মনের কথাটা বুঝতে পারলো। মুচকি হেসে ইচ্ছের প্লেটে চাউমিন তুলে দিল সে। ইচ্ছেকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে বললো,
-“খাওয়া শুরু করো।”

আয়াশের বলতে দেরি ইচ্ছের হামলে পড়তে দেরি হলো না। হাসলো আয়াশ। সে নিজেও নিজের প্লেটে চাউমিন নিয়ে খেতে লাগলো। খাওয়ার মাঝে বারবার ইচ্ছের দিকে তাকাচ্ছে সে। এই মেয়েটা তার সবকিছু। এই পুরো পৃথিবীতে যদি আয়াশের আপন কেউ থেকে থাকে তবে সেটা হলো তার ভাই মুহিব আর তার ইচ্ছেময়ী। যে এখন তার স্ত্রী। মুগ্ধ দৃষ্টিতে ইচ্ছের দিকে তাকিয়ে আছে আয়াশ। মেয়েটার প্রতিটা কাজ এতটা নিখুঁত যা বলার মতো না। এই যে এখন যেভাবে সে খাচ্ছে দেখে মনে হচ্ছে এটাই সবথেকে সুন্দর দৃশ্য। এত সুন্দরভাবেও কেউ খেতে পারে? আয়াশের মুখে এক মনোমুগ্ধকর হাসি লেগে আছে।
#Your_love_is_my_Addiction
#Season_2
#সুমাইয়া_সিদ্দিকা_আদ্রিতা
#পর্ব_১২
.
মিউজিক প্লেয়ারে একটা রোমান্টিক গান ছেড়ে পরিবেশটাকে আরও রোমাঞ্চকর করে তুললো আয়াশ। ইচ্ছে চুপচাপ বসে সবকিছু দেখছে। তার হাতে রয়েছে শোভনের দেওয়া ড্রাগ যেটা সে খুব সন্তর্পণে লুকিয়ে রেখেছে যাতে আয়াশের নজরে না পড়ে। আয়াশ এগিয়ে এসে ওয়াইনের বোতল থেকে দু’টো গ্লাসে ওয়াইন ঢেলে নিলো। ইচ্ছে আশেপাশে তাকিয়ে একটা ছোট ইটের টুকরো পেয়ে সেটা নিচ থেকে তুলে নিলো। গোপনে ইটের টুকরোটা সে ছাদের দরজার দিকে ছুঁড়ে মারলো। দরজায় বারি খেয়ে শব্দ হতেই আয়াশ ভ্রু কুঁচকে সেদিকে দেখতে গেল। এই সুযোগে ইচ্ছে তার হাতে থাকা ড্রাগ আয়াশের ওয়াইনের সাথে মিশিয়ে দিল। তারপর আবারও নিজের জায়গায় এসে দাঁড়ালো সে। ওদিকে আয়াশ কাউকে খুঁজে না পেয়ে ফিরে এলো ইচ্ছের কাছে।
একটা ওয়াইনের গ্লাস ইচ্ছের দিকে এগিয়ে দিল আয়াশ। ইচ্ছে সেটা নিলো আর যে গ্লাসে ইচ্ছে ড্রাগ মিশিয়ে ছিল সেটা আয়াশ নিলো। ইচ্ছে আয়াশের দিকে তাকিয়ে সামান্য ওয়াইন খেয়ে নিলো। তা দেখে হাসলো আয়াশ। ইচ্ছের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে পুরো ওয়াইনের গ্লাস এক নিমিষেই শেষ করে ফেললো আয়াশ। ইচ্ছের হাতের গ্লাসটা নিয়ে সেটাও এক নিমিষে খেয়ে নিলো সে। গ্লাস দু’টো টেবিলে নামিয়ে রেখে ইচ্ছের হাত ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে এলো। গানের তালে তালে কাপল ডান্স করতে লাগলো তারা।
নাচার মাঝে আয়াশের স্পর্শে কেঁপে কেঁপে উঠছে ইচ্ছে। সে যতই দূরে ভাগতে চাইছে আয়াশ তাকে ততই আরও বেশি করে নিজের কাছে টেনে নিচ্ছে। ইচ্ছে নিজেও আর পারছে না আয়াশকে দূরে সরিয়ে দিতে। তার মাথা থেকে হুট করেই বেরিয়ে গেল যে সে আয়াশকে তার শত্রু ভাবে। ইচ্ছে সবকিছু ভুলে গিয়ে দু’হাতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো আয়াশকে। হাসলো আয়াশ। একহাত ইচ্ছের থুঁতনিতে রেখে তার মুখটা উঁচু করলো। চোখ বন্ধ করে রেখেছে ইচ্ছে। এক আঙুল দিয়ে ইচ্ছের ঠোঁটে স্লাইড করে তার চুলে হাত ডুবিয়ে আয়াশ তাকে আরও নিজের কাছে টেনে নিলো। চোখ মেলে তাকালো ইচ্ছে। নিজেকে আয়াশের এত কাছে দেখে দু’হাতে আয়াশের গলা জড়িয়ে ধরে আবারও চোখ বন্ধ করে ফেললো ইচ্ছে। আয়াশের মাথাটা এতক্ষণ ঝিমঝিম করছিল চোখ বন্ধ করে কপাল কুঁচকে রেখেছিল সে। গলায় কারও হাতের স্পর্শ চোখ মেলে তাকিয়ে দেখলো ইচ্ছে তার গলা জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। নিমিষেই তার কুঁচকে যাওয়া কপাল স্বাভাবিক হয়ে গেল। এই মেয়েটার মধ্যে এমন কী আছে ভেবে পায় না আয়াশ। মেয়েটা তাকে সবসময় এত আকৃষ্ট কেন করে? এই যে এই মূহুর্তে তার নেশাটা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে মেয়েটা। আয়াশ আর অপেক্ষা করতে পারলো না তার ইচ্ছেময়ীর ঠোঁটে ডুবে যাওয়ার জন্য। অপর হাত ইচ্ছের কোমড়ে রেখে তার ঠোঁট দ্বারা আঁকড়ে ধরলো ইচ্ছের ইচ্ছের ঠোঁটজোড়া। ইচ্ছে তাকে কোনো বাঁধা দিল না। বরং ইচ্ছে নিজেও আয়াশের তালে তাল মিলিয়ে চুমু খেয়ে চলেছে আয়াশকে। আজ ইচ্ছের মাতলামো দেখে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে আয়াশের। চুমু খেতে খেতেই ইচ্ছেকে কোলে তুলে নিলো আয়াশ। ছাদে চিলেকোঠার মতো একটা রুম ছিল। যেটা আয়াশ আগে থেকেই খুব সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছিল। ইচ্ছেকে নিয়ে সেই রুমে ঢুকে গেল সে। তখনও তারা একে অপরের ঠোঁটে ডুবে ছিল। ইচ্ছেকে কোল থেকে নামিয়ে দিতেই চোখ মেললো ইচ্ছে। ইচ্ছের ঠোঁটে গভীর এক চুমু খেয়ে আয়াশ তাকে ছেড়ে দিল।
ইচ্ছে মাথানিচু করে অন্যদিকে ঘুরে গেল। আয়াশের মুখে একটা বড় হাসি ঝুলে রয়েছে। ইচ্ছে সামনে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেল। রুমটা এত সুন্দর করে সাজানো যে চোখ সরাতে পারছে না সে। ফ্লোরিং বেডের দিকে তাকিয়ে ইচ্ছের মন চাইলো নিজের কপাল চাপড়াতে। বেডশিটটা পর্যন্ত কালো! রুমের জানালায়ও কালো পর্দা টাঙানো। ইচ্ছে একহাতে নিজের মাথাটা চেপে ধরলো। সবকিছু কেমন যেন ঘোলা ঘোলা লাগছে তার কাছে। কিন্তু কেন? সে তো ড্রিংক করে নি। আয়াশ তাকে ওয়াইন দিয়েছিল তা-ও সেটার থেকে মাত্র এক সিপ খেয়েছিল সে। তবে এমন কেন লাগছে তার? দরজা লাগানোর শব্দে গায়ে কাটা দিয়ে উঠলো ইচ্ছের। মাথা থেকে হাত সরিয়ে পেছন ঘুরে তাকালো সে। আয়াশ তার সামনে দিয়ে সিঙ্গেল সোফাটার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে এক এক করে গায়ের স্যুট, টাই, শার্ট খুলে সোফায় নামিয়ে রাখলো। হাতের ঘড়িটা খুলে সাইড টেবিলে রেখে দিল। বড় বড় কয়েকটা ঢোক গিলে নিলো ইচ্ছে। আয়াশকে এই মূহুর্তে কতটা আকর্ষণীয় লাগছে সেটা শুধু ইচ্ছেই বুঝতে পারছে। চোখে চোখ পড়তেই তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নিলো ইচ্ছে। বাঁকা হাসলো আয়াশ। ধীর পায়ে ইচ্ছের দিকে এগিয়ে এলো সে। ফিসফিস করে বললো,
-“মিসেস ইচ্ছেময়ী! আর ইউ রেডি?”

কিছু বললো না ইচ্ছে। কোনো জবাব না পেয়ে আরও একবার হাসলো আয়াশ। একহাতে ইচ্ছের চুলের খোঁপা খুলে দিল সে। সিল্কি চুলগুলো ঝরঝর করে ইচ্ছের সারা পিঠময় ছড়িয়ে পড়লো। ইচ্ছের মুখের সামনে আসা চুলগুলো একহাতে তার কানের পেছনে গুঁজে দিল আয়াশ। আবারও ইচ্ছের ঠোঁটে চুমু খেতে লাগলো সে। এবারও তাকে কোনো বাঁধা দিল না ইচ্ছে। একটু অবাক হলেও প্রচন্ড খুশি হলো আয়াশ। সে ভাবছে ইচ্ছে তার মনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত ভালোবাসা থেকে তাকে কাছে টেনে নিচ্ছে। আয়াশ ইচ্ছের কোমড় ধরে তাকে পেছনে ঠেলে বিছানায় ফেলে দিল। তাতেও কোনো ভ্রুক্ষেপ করলো না ইচ্ছে। তার চোখ দু’টো ভারি হয়ে আসছে। আয়াশ বিছানায় বসতেই ইচ্ছে একহাতে তাকে কাছে টেনে নিলো।
সোনালী রোদের হালকা আলো মুখে এসে পড়তেই ঘুম ভেঙে গেল ইচ্ছের। নিভু নিভু চোখে তাকিয়ে দেখে সকাল হয়ে গিয়েছে। তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে এটা দেখে। গতকাল তো ব্যাগ এক্সচেঞ্জ করে দেওয়ার কথা ছিল তার। সে কীভাবে পারলো ঘুমিয়ে পড়তে? পুরোপুরি ভাবে চোখ মেলে তাকাতে গিয়েও সে তাকাতে পারলো না। মাথাটা ব্যাথায় ছিঁড়ে যাচ্ছে। কোনোমতে নিজেকে একটু ঠিক করে উঠে বসতেই কেমন যেন অস্বস্তি হতে লাগলো তার। পাশে তাকিয়ে দেখে আয়াশ উবু হয়ে শুয়ে আছে। সে যে এখনো গভীর ঘুমে মগ্ন সেটা তার ঘন ঘন শ্বাস ফেলা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। কী হয়েছিল কাল রাতে ঠিক মনে করতে পারছে না সে। আয়াশ তাকে এই রুমে নিয়ে এসেছিল। তারপর তাকে খুব নিবিড়ভাবে চুমু খাচ্ছিল আয়াশ। তারপর! তারপর কী হয়েছিল? কিছু উল্টো পাল্টা করে বসে নি তো সে? প্রচন্ড অস্বস্তি নিয়ে আয়াশের দিকে একবার তাকালো। বিছানা ছেড়ে উঠতে গেলে চমকে উঠলো সে। এতক্ষণ যা ভয় পাচ্ছিল তাই হয়েছে। তার মানে কাল রাতে সে আয়াশের সাথে…. নাহ! আর ভাবতে পারছে না ইচ্ছে। এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না। শোভন বলেছিল ড্রাগটা খেলে আয়াশ ঘুমিয়ে যাবে। তাহলে কী করে হলো এসব? আর সে নিজে কী করে ঘুমিয়ে গেল? সে তো ড্রিংক করে নি। কেন হলো এমনটা? মাথায় হাত দিয়ে কিছুক্ষণ সেভাবেই বসে রইলো ইচ্ছে। সে হিসাব মেলানোর চেষ্টা করছে কিন্তু মেলাতে পারছে না। আয়াশের দিকে আরও একবার তাকিয়ে উঠে গাউনটা গায়ে জড়িয়ে বের হয়ে গেল চিলেকোঠার ঘর থেকে। ছাদ থেকে নেমে সোজা নিজের রুমে চলে এলো ইচ্ছে।
শোভনের নম্বরে একনাগাড়ে কল দিতে লাগলো ইচ্ছে। গতকাল রাতে সে শোভনের দেওয়া কাজটা করে নি আর তাতে শোভনেরও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই? একবারও কেন কল দেয় নি সে? এসব ভেবে ইচ্ছের মাথা গরম হতে লাগলো। সে আয়াশের সাথে এত গভীর সম্পর্কে জড়াতে চায় নি। কিন্তু কীভাবে জড়িয়ে গেল সেটাই ভেবে পাচ্ছে না সে। ৫০+ কল দেওয়ার পরও যখন শোভন কল রিসিভ করলো না তখন ইচ্ছে রেগে ফোনটা ছুঁড়ে মেরে ভেঙে ফেললো। না তার কান্না পাচ্ছে না। রাগ লাগছে তার। বিছানায় বসে রাগ কমাতে চাদর আঁকড়ে ধরলো সে। আধঘন্টা একভাবে বসে থাকার পর উঠে গিয়ে ফোনের টুকরো গুলো কুড়িয়ে নিয়ে তোশকের নিচে রেখে জামাকাপড় নিয়ে ফ্রেস হতে গেল।
আয়াশের ঘুম ভাঙতেই সে তার পাশে ইচ্ছেকে খুঁজলো কিন্তু পেলো না। উঠে বসে সম্পূর্ণ রুমে চোখ বুলালো আয়াশ। কোথাও ইচ্ছে নেই। আয়াশের মুখে একটা বাঁকা হাসি লেগে আছে। সে উঠে গিয়ে জামাকাপড় পড়ে নিচে নেমে গেল। ইচ্ছের রুমের দরজা খোলাই ছিল। তাই অনায়াসে তার রুমে ঢুকে পড়লো আয়াশ। ইচ্ছে তখন সবেমাত্র গোসল করে বেরিয়েছে। তা দেখে আয়াশ তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না ইচ্ছে।
-“গুড মর্নিং সুইটহার্ট।”
-“গুড মর্নিং।”
ইচ্ছের এমন চুপসে যাওয়া গলা শুনে আয়াশ জিজ্ঞেস করলো,
-“আর ইউ ওকে?”
-“হুম।”
-“না বলে চলে এসেছো কেন? সকাল সকাল তোমার মুখটা দেখে ঘুম থেকে উঠতে পারলাম না আজ।”

চুপ করে রইলো ইচ্ছে। আয়াশ বুঝলো কাল রাতের ঘটনাটা নিয়ে হয়তো জড়তা কাজ করছে ইচ্ছের মাঝে। তাই সে হেসে ফেললো। আলতো করে ইচ্ছের কাঁধে চুমু দিয়ে আয়াশ বললো,
-“তৈরি হয়ে নিচে এসো। কলেজে যেতে হবে তোমার। আর তার আগে ব্রেকফাস্ট করতে হবে।”

ইচ্ছে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো। তার গালে হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে গেল আয়াশ। ইচ্ছে চুপচাপ আয়াশের কথা মতো তৈরি হয়ে নিচে নামলো। নিচে নামতেই ভ্রু কুঁচকে গেল ইচ্ছের। পুরো বাড়ির নকশা বদলে গেছে। সম্পূর্ণ বাড়ির সবকিছু কালো রঙে সাজানো হয়েছে। হঠাৎ এসবের মানে কী? ইচ্ছে মনে মনে বললো, ‘নিশ্চিত রাতের অন্ধকারে জন্ম নিয়েছিল তাই তো তার সবকিছুই কালো ভালো লাগে। বাড়িটাকে পর্যন্ত ছাড় দিল না!’ এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে ডাইনিং টেবিলের দিকে চলে গেল সে।

চলবে….

“ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।”
চলবে….

“ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here