অবুঝ_পাখি পর্ব ২২

#অবুজ_পাখি
#নাম_না_জানা_পথিক
পাট:২২
দীঘ ১৯ ঘন্টা অপারেশনের পরে ডাক্তার অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে আসে।
রিফাত দৌড়ে ডাক্তারের কাছে যায়।
রিফাত: স্যার আমার স্ত্রী কেমন আছে।
ডাক্তার: মিষ্টি আনেন আগে মা-মেয়ে দুজনেই আল্লাহর অশেষ রহমতে সুস্থ আছে।
রিফাত: সাথে সাথে ডাক্তারকে জড়িয়ে ধরে আমি কি করে যে আপনাকে ধন্যবাদ দিবো আমার কাছে ভাষা নাই।
ডাক্তার: আমরা তো শুধু চেষ্টা করতে পারি বাকিটা আল্লাহর রহমত।
রুকু: এই নেও মিষ্টি হাজির সবাই মিষ্টি মুখ করো এখন আর কোনো কান্নাকাটি নাই আমাদের পরিবারে নতুন সদস্য শুধু কান্না করবে আর কেউ কান্না করবে না বলে দিলাম।
দাদি: কই আমি আমার নাতীর ঘরের পুতিকে দেখতে যাবো।
ডাক্তার: কেবিনে শিফট করার পর সবাই দেখা করতে পারবেন কিন্তু বেশি হইচই কইরেন না পেসেন্টের মাথার ক্ষতটা অনেক মারাত্মক তাই তার মাথায় যাতে কোনো প্রকার পেশার না পড়ে সেই দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখবেন।
রিফাত: আচ্ছা আমার সেইদিকে খেয়াল রাখবো যাতে পরির মাথায় চাপ না পড়ে।
ডাক্তার: Take care বলে চলে গেলো।
প্রায় ১ঘন্টা পর পরিকে কেবিনে শিফট করা হলে। সবাই পরিকে দেখতে যায় কিন্তু শুধু রিফাত ভিতরে যায় না। বাহিরে বসে থাকে।
আম্মু: পরি মা এখন তোর কেমন লাগতেছে?
পরি: জ্বি আম্মু ভালো। পরির সবার সাথেই কথা বলতেছে কিন্তু পরির চোখ দুটি শুধু রিফাতকে খুঁজতেছে। রিফাত কী পরিকে দেখতে আসেনি।
রুকু: ভাবি তোমার মেয়ে তো একদম রিফাত ভাইয়ার মতোই দেখতে হয়েছে।
পরি: রুকু আমার মেয়েকে আমার পাশে শুয়িয়ে দেও।
আম্মু: দাঁড়া আমি দিচ্ছি রুকু ছোট মানুষ ফালিয়ে দিলে।
রুকু: আমি ছোট না আমি এখন বড় ডাক্তার দেখো নাই অপারেশনের সময় আমিও ছিলাম।
আম্মু: আচ্ছা তুই বড় ডাক্তার কিন্তু ছোট মেয়ে যা খুশি।
রুকু: নাক ফুলিয়ে বলে হু সাথে সাথে সবাই হেসে দেয়।
পরি আর রিফাতের মেয়েকে পরির পাশে শুয়িয়ে দেয়। পরি তার মেয়েকে দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পরি মেয়ের ছোট ছোট আঙ্গুল নিয়ে খেলতেছে আর হাসতেছে। মায়ের হাসি দেখে মেয়েও হাসতেছে।
রিফাত পরির কেবিনে ঢুকে দেখে পরি মেয়ের সাথে কি জেনো করতেছে আর হাসতেছে।
পরি: দেখ তোর হাত কত ছোট আর আমার হাত কত বড় বলেই পরি হাসতে লাগলো আর মেয়ে টলটল করে পরির দিকে তাকিয়ে আছে।
রিফাত: অবাক হয়ে পরির দিকে তাকিয়ে আছে। আজকে জন্ম হওয়া শিশুকে কোনো মা এসব বলতে পারে।
রিফাত: পরি এসব কেমন কথা আজকে জন্ম হওয়া মেয়ের হাত তো ছোট হবেই তাই বলে কি নিজের মেয়েকে কেউ এইভাবে বলে?
পরি: হটাৎ রিফাতের গলা শুনে চমকে উঠে তাকিয়ে দেখে কেবিনে শুধু রিফাত আছে আর কেউ নাই। পরি বাচ্চা পেয়ে বাচ্চার ভিতরে ডুবে গেছিলো। কখন যে কেবিন থেকে সবাই গিয়ে রিফাত ঢুকছে সেই দিকে পরির খেয়ালই নেই। তুমি কখন আসলা।
রিফাত: এখনি আমাকে ভুলে গেছে। বাচ্চা আসলো ১দিন হলো না জামাইকেই ভুলে গেছো।
পরি: নিজেকে ভুলিতে পারি তবুও ভুলিতে পারিবো না তোমায়।
রিফাত: কিছু না বলে মেয়ের দিকে এগিয়ে গেলো। রিফাত এক নজরে মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। রিফাতের চোখ দিয়ে হটাৎ কয়েক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে।
পরি: দাভাই তুমি কান্না করতেছো কেনো?
রিফাত: সেটা তুই বুঝবিনা বাবা হওয়া পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অনুভূতি বলে তাদের মেয়েকে কোলে তুলে নিলো। আজ থেকে আমার মেয়ের নাম তাসফিয়া আক্তার আরশিন।
পরি: বাচ্চার আম্মুকেও একটু কোলে নেও শুধু বাচ্চাকে নিলে হবে।
রিফাত: বাচ্চাকে শুয়িয়ে দিয়ে পরির পাশে বসে এক হাত দিয়ে পরিকে জড়িয়ে ধরে পরির কপালে একটা ডিপ কিস দেয়।
পরিও রিফাতকে জড়িয়ে ধরে।
ঐদিনই পরিকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে সবাই বাসায় চলে আসে।
(এখনো একটা প্রশ্ন থেকে যায় পরি পড়ে যায় কিভাবে)
চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here