অব্যক্ত ভালোবাসা পর্ব -০১ || আরভি আহিয়াদ তিহু

অব্যক্ত_ভালোবাসা
লেখনীঃআরভি_আহিয়াদ_তিহু/
#Love_Stories_Writer ( Our Page )
সবাই দয়াকরে একটা করে কমেন্ট করবেন প্লিজ 😖🙏
প্রথম_পরিচ্ছেদ
সূচনা_পর্ব

–“ডিরেক্টর শাওন আহমেদের বিয়েতে এসে ড্রাঙ্ক অবস্থায় মডেল ইতির গায়ে হাত তুললেন সুপারস্টার আয়াশ দেওয়ান।”

কথাটা মিডিয়ার কানে যেতেই বিয়ে বাড়ির গেটের সামনে এসে হুমড়ি খেয়ে পড়ল জার্নালিস্ট’রা। গার্ড’রা এসে যথা সম্ভব তাদেরকে আটকানোর চেষ্টা করেও সবাইকে আটকাতে পারল না। কয়েক জন ফাক ফোকর দিয়ে ঠিকই হনহন করে ভিতরে ঢুকে গেল। গার্ড’রা কোনো রকম সবাইকে ঠেলে ঠুলে বাইরে বের করে গেটটাকে লক করে দিল। এর মধ‍্যেই আয়াশের পার্সনাল অ‍্যাসিটেন্ট ভিতর থেকে হন্তদন্ত হয়ে গার্ডদের কাছে ছুটে এসে বলল,

–“ভিতরের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আয়াশ স‍্যারকে সামলানো যাচ্ছে না। তোমরা কেউ তাড়াতাড়ি রুশানি ম‍্যামকে কল করো। ম‍্যাম ছাড়া এই মূহুর্তে স‍্যারকে আর কেউ শান্ত করতে পারবে না। ডু ইট ফাস্ট।”

রোহানের কথায় একজন গার্ড দ্রুত তার পকেট থেকে ফোন বের করে একটা নম্বরে ডায়াল করল। দুটো রিং হওয়ার পরেই ফোনটা রিসিভ হলো। গার্ড ফোনটা কানে দিয়ে এদিকের পরিস্থিতি জানিয়ে ফোনের অপর পাশের ব‍্যাক্তিকে দ্রুত এখানে আসতে বলল। অপর পাশের ব‍্যাক্তিটি সম্মতি জানিয়ে ফোনটা কেটে দিল। ফোন কাটতেই রোহান এগিয়ে এসে ব‍্যতিব‍্যস্ত স্বরে লোকটাকে উদ্দ‍্যেশ‍্য করে জিজ্ঞেস করল,

–“ম‍্যাম কি বললেন?”

–“দশ মিনিটের মধ‍্যেই এখানে এসে পৌছাবেন বললেন।”

লোকটার কথা শুনে রোহান একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ওদের সবগুলো গার্ডকে হাতের ইশারায় এক জায়গায় ডেকে গম্ভীর কণ্ঠে বলল,

–“রুশানি ম‍্যাম আসলে সবাই ওনাকে কভার করে ভিতরে নিয়ে আসবে। খবরদার মিডিয়ার লোকেরা কেউ যেন ওনার মুখ দেখতে না পারে। ম‍্যামের ফেস জার্নালিস্টদের কাছে রিভিল হলে স‍্যার আমাদের সবাইকে কিক মে*রে ম‍্যানহলের মধ‍‍্যে ফেলে ওটার ঢাকনা আটকে দিবেন।”

সিরিয়াস সময়েও রোহানের এমন কথায় গার্ডরা সবাই ফিক করে হেসে দিল। রোহান পকেট থেকে নিজের ভাঙা স্কিনের ফোনটা বের করে ফোনের দিকে তাকিয়ে কাঁদো কাঁদো স্বরে বলল,

–“আপনি এটা কি করলেন স‍্যার? রাগ উঠেছে ভালো কথা। আপনি আমার একটা হাত ভে*ঙে দিতে পারতেন। বিশ্বাস করেন আমি একটুও মাইন্ড করতাম না। কিন্তু সেটা না করে, আপনি আমার গার্লফ্রেন্ডের দেওয়া ফোনটাকে কেনো ভাঙতে গেলেন স‍্যার? এইবার আমি ওকে কি জবাব দিব? ওর দেওয়া এই ফোন ভাঙার অপরাধে ‘ও’ তো সত‍্যি সত‍্যি আমার সাথে ব্রেকআপ করে চলে যাবে। তখন আমার কি হবে স‍্যার?”

রোহানের বিরবির করে বলা এসব প্রলাপের মধ‍্যেই একটা গাড়ি এসে গেটের সামনে থামল। গাড়িটা দেখতেই গার্ডরা বুঝে গেল এটা রুশানির গাড়ি। ওরা দ্রুত গেট খুলে কয়েকজন গাড়ির দিকে এগিয়ে যেতেই জার্নলিস্টরা সবাই আবারও ভিতরে ঢোকার প্রচেষ্টা করতে লাগল। কিন্তু এবারেও বাকি গার্ডদের চালাকির সাথে ওরা পেরে উঠল না। ব‍্যর্থ হয়ে সবাই গেটের বাইরেই দাড়িয়ে রইল। এর মধ‍্যেই গাড়ির ব‍্যাক সাইডের দরজা খুলে একটা মেয়ে বাইরে বের হয়ে আসলো। মেয়েটার পড়নে হোয়াইট চুরিদার পড়া। গায়ের ওড়নাটা দিয়ে ফেস’টা ঢেকে রাখা। মেয়েটা গাড়ি থেকে নামতেই গার্ড’রা তাকে চারপাশ থেকে কভার করে ভিতরে নিয়ে আসতে লাগল। আয়াশের পার্সনার গার্ড’রা একটা মেয়েকে প্রটেকশন দিয়ে নিয়ে আসছে দেখে জার্নালিস্ট’রা এবার তাদের ক‍্যামেরা নিয়ে ছুট লাগাল মেয়েটার দিকে। কিন্তু কোনো প্রশ্ন করে উঠার আগেই মেয়েটা দ্রুত গেটের মধ‍্যে ঢুকে গেল। গেটের ভিতরে এসে রোহানের কাছে এগিয়ে গিয়ে ব‍্যগ্র কণ্ঠে বলল,

–“আয়াশ কোথায়?”

রুহান নরম স্বরে বলল,
–“স‍্যার ভিতরে আছেন ম‍্যাম।”

রোহানের কথা শুনে মেয়েটার কপালে ভাজ পড়ল। সে খানিকটা রাগি কণ্ঠে রোহানকে উদ্দ‍্যেশ‍্য করে বলল,

–“ওকে ওখানে একা রেখে আপনি বাইরে দাড়িয়ে কী করছেন মিঃ রোহান? আপনার তো ওর সাথে থাকা উচিৎ ছিল, তাইনা?”

রোহান মিনমিন করে বলল,
–“স‍্যার নিজেই আমাকে ওনার চোখের সামনে থেকে চলে যেতে বলেছেন ম‍্যাম। আমার কি দোষ?”

রোহানের কথায় রুশানির রাগের মাত্রাটা আরো বেড়ে গেল। ‘ও’ কণ্ঠে আরো খানিকটা তেজ নিয়ে বলল,

–“আয়াশ আপনাকে চলে যেতে বলল, আর আপনিও ওর কথা মতো ওকে ওখানে একা ফেলে চলে আসলেন? আপনি জানেন না রেগে গেলে ‘ও’ যা তা বলে?”

রোহান কিছু বলল না। মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইল। রুশানি আর সময় নষ্ট না করে দ্রুত পায়ে ভিতরে চলে গেল।
_________________________

কিছুক্ষণ আগ অবদি এই বাসার ছাদের উপর বসে পাত্রের গায়ে হলুদ দেওয়া হচ্ছিল। গায়ে হলুদ উপলক্ষ্যে ছাদটাকে বেশ সুন্দর করে সাজানো হয়েছিল। কিন্তু সেই সাজ এখন একটা ধংস স্তুপে পরিনত হয়েছে। চারপাশের যত সাজ-সজ্জা ছিল সব এখন ফ্লোরে গড়াগড়ি খাচ্ছে। রুশা ছাদে আসতেই ওর পাঁ জোড়া থমকে গেল। চারপাশের এই ভাঙাচোরা জিনিস পত্রের মধ‍্যে ছাদের এক কর্নারের দেয়াল ঘেশে ফ্লোরের উপর বসে আছে আয়াশ। নেশায় সে এতটাই বুথ হয়ে আছে যে ঠিকভাবে স্থির হয়ে বসে থাকতেও পারছে না। তারপরেও হাতে থাকা ড্রিঙ্কসের বোতলটা থেকে একটার পর একটা সিপ দিয়ে যাচ্ছে আর রাগে ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলছে। আয়াশকে এমন অবস্থায় দেখে রুশানির মাথা গরম হয়ে গেল। ‘ও’ ধুপধাপ পাঁ ফেলে আয়াশের দিকে এগিয়ে গিয়ে রাগি কণ্ঠে বলল,

–“আবারও এটা গেলা শুরু করেছিস আয়াশ? তুই না আমাকে বলেছিলি, তুই আর কখনো এসব ছাই-পাশ গিলবি না। তাহলে আবারও কেনো এটায় হাত লাগিয়েছিস?”

পাশ থেকে চিরচেনা কণ্ঠস্বর টা কানে ভেষে আসতেই নিভু নিভু চোখে আয়াশ মাথা উঠিয়ে রুশানির দিকে তাকাল। রুশানিকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ‘ও’ মুচকি হেসে জড়িয়ে যাওয়া কণ্ঠে বলল,

–“তুই এসেছিস রুশ? আমি তো জানতাম তুই আসবি? আয় আমার পাশে বস। তোর সাথে আমার অনেক কথা আছে।”

রুশানি দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
–“তোর পাশে বসে আড্ডা দেওয়ার জন‍্যে আমি এখানে আসিনি। তোকে নিয়ে যেতে এসেছি। চুপচাপ উঠে আমার সাথে চল। অনেক সিনক্রিয়েট করেছিস, আর না। এনাফ ইজ এনাফ।”

রুশানির কথা শুনে আয়াশ ড‍্যাবড‍্যাব করে কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর দেয়াল ধরে ধরে কোনো রকম উঠে দাড়িয়ে ঘোর লাগা গলায় বলল,

–“মিথ‍্যা কথা। আমি কিচ্ছু করিনি। যা করার ওই মেয়েটা করেছে। সবকিছু ওই মেয়েটা করেছে। আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। আমাকে নিঃশেষ করে দিয়েছে।”

রুশানি ভ্রু কুচকে বলল,
–“কার কথা বলছিস?”

আয়াশ এলোমেলো পায়ে রুশানির দিকে এগিয়ে এসে ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে বলল,

–“ওই যে ওই মেয়েটা। যে মেয়েটা পিংক কালারের লেহেঙ্গা পড়েছিল। ওই মেয়েটা। জানিস ‘ও’ আমার কাছে এসে যখন ওই কথা গুলো বলছিল না? তখন আমার বুকের বাম পাশটায় ভীষন ব‍্যাথা লাগছিল। কেমন যেন জ্বলে জ্বলে যাচ্ছিল। আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম। এরকম কেন হচ্ছিল রুশ? আমার এত কষ্ট কেন হচ্ছিল?”

আয়াশের এমন খাপছাড়া কথা শুনেও রুশানি খুব সহজেই বুঝে গেল আয়াশ কার কথা বলছে। অজান্তেই রুশানির ভিতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে আসলো। আয়াশের চোখ জোড়া ভয়ংকর লাল হয়ে আছে। চুলগুলো এলোমেলো হয়ে কপালে লেপ্টে আছে। ‘ও’ ঠিকভাবে স্থির হয়ে দাড়াতেও পারছে না। কথা সব জড়িয়ে যাচ্ছে। রুশানি বুঝতে পারল এখানে আর বেশি সময় থাকা যাবে না। ওকে যত দ্রুত সম্ভব আয়াশকে নিয়ে এখান থেকে বের হয়ে যেতে হবে। নিচের যা পরিস্থিতি দেখল তাতে আয়াশকে নিয়ে এখানে বেশিক্ষণ থাকাটা সেফ বলে মনে হলো না ওর। যেকোনো সময় একটা অঘটন ঘটে যেতে পারে ভেবেই রুশানি আয়াশের এক হাত ধরে বলল,

–“আর একটা কথাও বলবি না আয়াশ। চুপচাপ আমার সাথে চল। বাসায় গিয়ে আমি তোর সব কথা শুনব।”
_________________________

রুশানির কথায় রোহান আর গার্ডরা মিলে আয়াশকে ধরে পিছনের গেট দিয়ে বাইরে বের করে নিয়ে গেল। তারপর ওরা গাড়ি নিয়ে বাসার উদ্দ‍্যেশে রওনা দিল। এইদিকে রুশানি স্বাভাবিক ভাবেই আগের মতো ফেসটাকে কভার করা অবস্থায় সামনের গেট দিয়ে বের হয়ে গেল। জার্নালিস্ট’রা অন‍্যান‍্য সেলিব্রিটিদের থেকে ভিতরের ঘটনা জানায় ব‍্যস্ত। সেই সুযোগে ‘ও’ নিজের গাড়ি নিয়ে ওখান থেকে প্রস্থান করল।

আজকে এখানে দ‍্যা ফেমাস ডিরেক্টর শাওন আহমেদের হলুদ সন্ধ‍্যা ছিল। সেখানেই আয়াশকে গেস্ট হিসেবে ইনভাইট করা হয়েছিল। শাওন আহমেদের পরিচালনায় বেশ কয়েকটা মুভিতে অ‍্যাক্টিং করেছে আয়াশ। সেই সুবাদে দুজনের বেশ ভালোই সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু অনুষ্ঠানের শুরুতে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও এখানে নিজের দু-বছর পুরনো এক্স কে দেখে মাথা বিগরে যায় আয়াশের। তাও নিজেকে যথা সম্ভব সামলে নিয়ে নিজের রাগটাকে কন্ট্রোলে রাখার চেষ্টা করে আয়াশ। কিন্তু ইতি আগ বাড়িয়ে এসে ওকে এমন কিছু কথা বলে যার জন‍্যে ওর পুরনো ক্ষতগুলো আবারও তাজা হয়ে উঠে। ‘ও’ ছাদের এক পাশে থাকা বার কাউন্টারে গিয়ে একের পর এক ড্রিঙ্কস করতে থাকে। এরমধ‍্যে ইতি আবারও এসে আয়াশের মনে জ্বলে উঠা আগুনের মধ‍্যে ঘি ঢালতে থাকে। আয়াশ নিজের কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলে। মাতাল অবস্থায় রেগে ওখানে উপস্থিত সবার সামনে ইতির গালে চড় বসিয়ে দেয়। আকষ্মিক ঘটনায় ওখানে উপস্থিত সবাই থমকে যায়। ইতিকে আয়াশ চ!ড় মা!রা!য় ইতি রেগে বো!ম হয়ে যায়। ‘ও’ নিজেও আয়াশকে চ!ড় মা!রা!র জন‍্যে আয়াশের দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু চ!ড়টা মা!রার আগেই আয়াশ ইতির গলা চেপে ধরে। কিছু লোক ব‍্যস্ত হয়ে যায় সেই দৃশ‍্যটা ক‍্যামেরা বন্ধি করতে। আর কিছু লোক এসে ইতিকে আয়াশের থেকে ছাড়িয়ে নেয়। আয়াশ আবারও ইতিকে মারার জন‍্যে ওর দিকে তেড়ে যায়। কিন্তু শাওনের পার্সনাল গার্ডরা এসে আয়াশকে ধরে ফেলে। অবস্থা বেগতিক দেখে ইতি সুযোগ বুঝে ওখান থেকে বের হয়ে চলে যায়। কিন্তু যেই আগুনে ‘ও’ ঘি ঢেলে গেছে সেই আগুন মূহুর্ত্তের মধ‍্যে দাবানলে রূপ নেয়। আয়াশ হিংস্র মানবের ন‍্যায় একে একে সব কিছু ভেঙে গুড়িয়ে দিতে থাকে। শুরুতে শাওনের গার্ডরা এসে আয়াশকে আটকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু উল্টে ওরা নিজেরাই আহত হয়ে শাওনের ইশারায় ওখান থেকে বের হয়ে যায়। অনুষ্ঠানে আসা সমস্ত আত্মীয়-স্বজন সেলিব্রিটিরা সবাই ধীরে ধীরে ছাদ থেকে নিচে নেমে যায়। রয়ে যায় শুধু আয়াশ একা। যে তখনও সবকিছু ধ্বংসের খেলায় মেতে ছিল।

রুশানির গাড়ি এসে বিশাল একটা বাংলোর পিছনের সাইডে স্টপ হয়। ‘ও’ গাড়ি থেকে নেমে খুব সাবধানে পিছনের গেটের সামনে এসে দাড়ায়। সিকিউরিটি গার্ড রুশানিকে দেখে গেট খুলে দেয়। রুশানি ভালো করে নিজের ফেসটাকে কভার করে গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ে। এই বাসার সামনের গেটেও জার্নালিস্ট’রা ভিড় করে দাড়িয়ে আছে। রুশানি তাদের থেকে বাঁচতেই পিছনের গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকেছে। ‘ও’ খুব সাবধানে সবার নজর এড়িয়ে বাসার সামনের দরজায় এসে কলিংবেল বাজাল। বাজানোর সাথে সাথে রোহান এসে দরজা খুলে দিল। রুশানি ব‍্যস্ত ভঙ্গিতে ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখতে পেল পুরো ড্রইং রুমের উপর দিয়ে ছোট খাটো একটা টর্নেডো বয়ে গেছে। চেয়ার-টেবিল, ফুলদানী-শপীজ সবকিছু খণ্ড বিখণ্ড হয়ে এদিক সেদিক ছড়িয়ে আছে। রুশানি হতবম্ভ হয়ে রোহানের দিকে তাকিয়ে বলল,

–“এসব কিভাবে হলো?”

রোহান অসহায় দৃষ্টিতে রুশানির দিকে তাকিয়ে বলল,
–“আমরা গাড়ি নিয়ে ভিতরে ঢোকার সময় সব জার্নালিস্ট’রা গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ে ছিল। তারপর তারা আয়াশ স‍্যারকে ওনার আর মিস ইতির ব্রেকআপের ব‍্যাপারে একটার পর একটা প্রশ্ন করতে থাকে। এতে আয়াশ স‍্যারের নিভে যাওয়া রাগ’টা আবারও জ্বলে উঠে। আর উনি ভিতরে এসে আবারও এসব ভাঙচুর করা স্টার্ড করে।”

রোহানের কথা শুনে রুশানি বিরক্তির স্বরে বলে,
–“উফফ, এদের খেয়ে দেয়ে কি কোনো কাজ-কর্ম নেই নাকি? যেকোনো একটা বিষয় পেলে সেটাকে এমন ভাবে টানা হেচড়া করে, মনে হয় এটা ছাড়া জগতে আর কোনো ইম্পরটেন্ট নিউজ-ই নেই।”

কথাটা বলে রুশানি ফোশ করে একটা নিঃশ্বাস ছাড়ল। তারপর আবারও রোহানকে উদ্দ‍্যেশ‍্য করে চিন্তিত ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করল,

–“আয়াশ এখন কোথায় আছে?”

রোহান উপরের দিকে ইশারা করে বলল,
–“উপরে ওনার রুমের দিকে যেতে দেখেছিলাম। বোধহয় এখন সেখানেই আছে।”

রুশানি আর কিছু না বলে উপরে আয়াশের রুমে যাওয়ার জন‍্যে অগ্রসর হলো। রুমের সামনে এসে দেখল দরজাটা একদম খুলে রাখা। ‘ও’ আর বেশিকিছু না ভেবেই রুমের মধ‍্যে ঢুকে গেল। গিয়ে দেখল আয়াশ খালি গায়ে নিজের বেডের উপর চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। কিছুক্ষণ আগে গায়ে পড়ে থাকা পাঞ্জাবী’টা ফ্লোরের এক পাশে ফেলে রাখা। রুশানি পাঁ টিপে টিপে আয়াশের দিকে এগিয়ে গিয়ে দেখল আয়াশ চোখ বন্ধ করে রেখেছে। ‘ও’ ভাবল আয়াশ হয়ত ঘুমিয়ে গেছে। তাই নিঃশব্দে ‘ও’ আবারও পিছন ঘুড়ে পাঁ টিপে টিপে বাইরে বের হওয়ার উদ্দ‍্যেশে সামনের দরজার দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। দু-কদম এগিয়ে যেতেই রুশানি হাতে টান অনুভব করল। আকষ্মিক ঘটনায় ‘ও’ পিছনে তাকিয়ে কিছু বুঝে উঠার আগেই আয়াশ ওর হাত ধরে টেনে ওকে বেডের উপরে ছুড়ে মারল। আয়াশের এমন কান্ডে রুশানি পুরোই হতবাক হয়ে গেল।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here