আবছায়া
writer::প্রিয়া
১০
অজান্তার এরকম কান্ড দেখে ইনায়া অবাক হলো।পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে আইজান ওর দিকে তাকাচ্ছে।
ঘুম শেষ আপনার
-কি করলে এইটা
‘কি করলাম।
-কোথায় ভেবেছিলাম সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে রোমান্স করবো তা না তুমি উঠে চলে গেলে।
‘রোমান্স করবে না আচ্ছা।
ইনায়া দরজা আটকে ধীর পায়ে আইজানের দিকে এগিয়ে আসে।আইজানের একদম কাছাকাছি এসে ওর দিকে ঝুকে ওর ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যায়।
আইজান ও এগিয়ে আসে, ইনায়া তখনি উল্টে আইজানের মুখের উপর ভেজা চুল ছেড়ে দিলো।
আইজানের নাকে মুখে পানির ছিটে পড়তেই আইজান লাফিয়ে উঠে।
ইনায়া তখন খিলখিল করে হাসতে থাকে।আইজান রাগী দৃষ্টিতে তাকালে ও ইনায়ার হাসি দেখে সব রাগ উড়ে যায়।
একপলকে তাকিয়ে থাকে আইজান।
-এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো।
‘দেখছি এতো সুন্দর করে কিভাবে হাসো।
-ধ্যাত।
‘হাসি থামাবেনা।
-থেমে গেলে কি করবো।
‘আবার হাসবে।
‘তুমি ও না।
-আমি কি দেখবে।
‘কি?
আইজান খাট ছেড়ে উঠে ইনায়ার দিকে এগিয়ে আসে।ইনায়ার একদম কাছাকাছি গিয়ে একহাত দিয়ে ওর কোমর জড়িয়ে ধরে ঠোঁটের মধ্যে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।
অজান্তা চায়ের কাপ নিয়ে এসে দরজা খুলেই এই দৃশ্য দেখে হাত থেকে কাপ পেলে দেয়।
আইজান ইনায়াকে ছেড়ে দিতে দৌঁড়ে পালিয়ে যায় অজান্তা।
-কি নির্লজ্জের মতো হলো এইটা।আমি দরজা লক করতে ভুলে গেছিলাম।
‘ওর কি দরকার ছিলো এখানে আসার হুটহাট সব জায়গায় চলে আসে।মা কে বলতে হবে যাতে বিদায় করে।
-এরকম কথা বলছো কেনো হয়তো বুঝতে পারেনি। আমি উঠে গেছি দেখে চা নিয়ে এসেছে।
‘দিলো সব নষ্ট করে।আমি ফ্রেশ হতে গেলাম।
অজান্তার প্রতি আইজানের এই বিরক্তি ইনায়ার খুব খারাপ লাগলো।
আইজানের টাওয়াল আর জামা বের করে বিছানার উপর রেখে ইনায়া দরজা লক করে বাইরে চলে গেলো।
ফুফির রুমের দিকে উঁকি দিয়ে দেখে উনি তাসবীহ পড়ছেন।
ইনায়া বাইরে থেকে বললো।
-আম্মু চা বানিয়ে আনবো।
‘তুমি উঠে গেছো মা।
-আমাকে তুই করে বলবা আম্মু।
‘আচ্ছা তুই চা খেয়েছিস।
-না আম্মু মাত্র উঠলাম।
‘দু কাপ চা বানিয়ে এখানে নিয়ে আয়।
ইনায়া চা বানাতে গিয়ে দেখে অজান্তা নাস্তা বানিয়ে টেবিলে দিচ্ছে।
-অজান্তা সরি আমাদের ভুলের জন্য তোমাকে এরকম পরিস্থিতিতে পরতে হলো।
‘এ আর কি নতুন বিয়ে হয়ছে তো তাই যেখানে সেখানে ঝাঁপিয়ে পরছো।
ইনায়া একটু লজ্জা পেলো।চা বানিয়ে আম্মুর রুমে নিয়ে গেলো।
-আম্মু একটা কথা বলি।
‘বল।
-অজান্তা তোমাদের কি হয়।
‘অজান্তা আইজানের চাচাতো বোন।
-এখানেই থাকে।
‘ওর মা মারা গেছে বাবা আবার বিয়ে করছে তাই আইজানের মা ওকে আমাদের এখানে নিয়ে আসে।
-ওহ।
ইনায়া সবার সাথে বসে নাস্তা খায়। টেবিলে আইজানের ফুফি ওদের হানিমুনে যাওয়ার কথা বলেন।
আইজান দেশের বাইরে যেতে চায়।কিন্তু ইনায়া বান্দরবান যেতে চায়।
ইনায়ার কথামতো বান্দরবান যাওয়া ঠিক হলো।দু দিন পর ওরা যাবে।
অজান্তা আড়াল থেকে সব শুনছে।নাস্তা করে আইজান বেসিনে হাত ধোয়ার পর অজান্তা টিসু এগিয়ে দেয়।আইজান দাঁতে দাঁত চেপে কি যেনো বলছে অজান্তা ইনায়া খেয়াল করলে ও কি বলছে বুঝতে পারেনি।
আইজান কিছুক্ষণ পর বাইরে চলে যায়।
পুরোদিন কেটে গেলো আইজান ফিরছে না। সবার সাথে কথা বললে ও আইজানের জন্য অস্থির লাগছে।
ইনায়া অনেকবার অজান্তার সাথে কথা বলতে চাইলে ও অজান্তা এড়িয়ে যায়।
বিকেলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে ইনায়া হুট করে নিচে চোখ যেতেই দেখতে পায় আবেগ দাঁড়িয়ে আছে।আবেগকে দেখে ইনায়া আশ্চর্য হয় ও এখানে।
ইশারা করতে চাইলেই আবেগ দ্রুত যেনো পালিয়ে যায়
ইনায়া ভাবছে হয়তো আবেগ কোনো কাজে এসেছিলো আর ওকে নিশ্চয় চিনতে পারেনি রাস্তা থেকে উপরের বারান্দায় কাউকে না চেনা টা-ই স্বাভাবিক।
সন্ধ্যে হয়ে গেছে পাখিরা সব নীড়ে ফিরে গেছে ইনায়া তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে সূর্যের শেষ হয়ে যাওয়া আকাশের সৌন্দর্য দেখছে।
একটা গাড়ি এসে বাড়ির গেইটে থামলো।ইনায়া দেখছে কে আসছে।
একটুপর গাড়ি থেকে আইজান বাইরে আসলো।
গ্লাসের উপর দিয়ে কেউ হাত নাড়িয়ে বিদায় নিচ্ছে।মেয়েদের হাত বুঝাই যাচ্ছে।
কে সেই মেয়ে ভাবছে ইনায়া।আইজান গেইটের ভিতরে এসে বারান্দার দিকে তাকিয়ে চমকে যায়।
চলবে