এক জীবনে অনেক জীবন পর্ব ১৭

#এক_জীবনে_অনেক_জীবন(১৭)
**********************************

জারা জিজ্ঞেস করলো –

এখান থেকে বের হয়ে কোথায় যাবো সেটা বলো ।

আপাতত উত্তরা । ওখানে আমার বন্ধুরা অপেক্ষা করছে ।

কারা ?

তানভীরের কথা তো তুমি জানো ই । ও আছে আর কাফি, রুদ্র আছে ।

তোমার প্ল্যান কী আদি ? আমি এভাবে মা’কে না জানিয়ে বের হয়ে এসেছি, মা খুব রাগ করবেন ।

এখন ঐ সব টেনশন বাদ দিয়ে দাও । একদম রিলাক্স মুডে থাকো । এখন থেকে নো টেনশন ।

বাসায় যখন ফিরবো সেই সময়ের কথা ভাবছি ।

বাসায় তো আজ ফিরছো না তুমি জারা ।

মানে কী ! বাসায় না ফিরে কোথায় যাবো ?

আমি যে তোমাকে একেবারে চলে আসতে বলেছি, তুমি বুঝতে পারোনি ?

জারা একটু ঘাবড়ে গিয়ে বললো –

আমি কিছুই বুঝতে পারছি না কী হচ্ছে আমার সাথে !

তোমার আর কিছুই বুঝতে হবে না । এখন থেকে সব টেনশন আমার । আমরা আজকে বিয়ে করবো জারা ।

বিয়ে !

হুম বিয়ে ।

সিএনজির ঘ্যানঘ্যানে শব্দকে ছাপিয়েও যেন জারা তার হৃদকম্পন শুনতে পেলো । আদিত্যর হাতটা শক্ত করে ধরে বললো –

আমি তো বিয়ের কথা চিন্তাই করিনি ।

এখন চিন্তা করো । এখনই ডিসিশান নিতে হবে জারা । আমি তো তোমাকে বলেছিলাম দু’জন মিলে ডিসিশান নেবো । তুমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছো । এমন সুযোগ আর পাবে না । আমি সিওর তুমি বাসায় থাকলে তোমার ফ্যামিলি জোর করে ধরে তোমার বিয়ে দিয়ে দেবে । আমি তোমাকে কিছুতেই হারাতে চাই না জারা । জারা’র উড়তে থাকা এলো চুলে হাত বুলিয়ে কথাগুলো বললো আদি ।

আমার খুব বেশি ভয় হচ্ছে আদি । যদি কিছু হয়ে যায়?

কিচ্ছু হবে না । কী আবার হবে ? দু-একদিন রাগ করবে বাসায় তারপর দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে ।

কিন্তু এভাবে কেন আমরা বিয়ে করবো ?

কারণ আজ বিয়ে না করলে আমি তোমাকে সারা জীবনের মতো হারিয়ে ফেলবো ।

হঠাৎ জারা কান্না শুরু করলো । বললো –

প্লিজ আদি আমাকে আরেকটু সময় দাও । মা’কে আমি ঠিক রাজি করিয়ে ফেলবো ।

পারবে না জারা, পারবে না । ওনারা যদি তোমাকে সত্যিই ভালোবাসতেন তাহলে তোমার সাথে এগুলো করতে পারতেন না । তুমি নিজেই ভেবে দেখো, আজ কতোদিন হলো তোমাকে ঘরের ভেতর আটকে রেখেছে । নিজের সন্তানকে কেউ এভাবে আটকে রাখে আজকের দিনে ? তুমি কী ক্লাস টু তে পড়া কোনো ছোট বাচ্চা ? এভাবে আটকে রেখেই তোমার বিয়ে দিয়ে দিতো । কেন তোমার খালা বলেনি বিয়ের কথা, বলেছে কি-না বলো ?

হুম , কিন্তু. …

আবার কিন্তু ? আইডি কার্ড এনেছো ?

এনেছি ।

লক্ষী মেয়ে । শোনো এখন আমরা প্রথমে উত্তরায় যাবো । ওদের সাথে মিট করবো তারপর সেখান থেকে সোজা কাজী অফিস ।

জারা কী বলবে বুঝতে না পেরে আদির দিকে তাকিয়ে থাকলো ।

তুমি এভাবে তাকিয়ে আছো কেন জারা ? আবারো চোখে পানি ! আচ্ছা ঠিক আছে চলো তোমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসি । বাসায় যেয়ে তুমি তোমার মা-বাবার ঠিক করা পাত্রের জন্য বউ সেজে বসে থাকো । আজকের পর এই আদিত্য আর কোনোদিন তোমার সামনে আসবে না । আজই আদিত্যর শেষ দিন ।

জারা কাঁদতে কাঁদতেই বললো –

তুমি বারবার কেন মরে যাওয়ার কথা বলো ? তুমি জানো না যে তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না । তুমি বলেছো দেখেই আমি মা’র কথার অবাধ্যতা করে বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেছি ।

আমি জানি তো জারা তুমি আমাকে কতো ভালোবাসো । তোমার ওপর এই বিশ্বাসটুকু আমার আছে, আমি জানি আমি তোমাকে যেখানে, যেভাবে নিয়ে যাবো তুমি আমার সাথে যাবে । কী যাবে না ?

যাবো ।

তাহলে এবার চোখ মুছে ফেলো । আর কেঁদো না প্লিজ । এভাবে যদি কাঁদতে থাকো তাহলে দেখো শেষে কিন্তু লোকজনের হাতে মার খেতে হবে আমাকে । সবাই ভাববে আমি তোমাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যাচ্ছি ।

জারা কান্না থামিয়ে আদিত্যের ঘাড়ে মাথা রাখলো । তার মনে হচ্ছে সে যেন একটা ঘোরের মধ্যে আছে । নিজের ইচ্ছায় কোনো কাজ করতে পারছে না সে । হঠাৎ তার মনে হলো আদি যেভাবে চাইছে, যা করতে চাইছে করুক । তার এখন আর কিছু ভাবতে ভালো লাগছে না । একমাত্র আদিই আছে যে তাকে এতো ভালোবাসে ।

.
.

তাবাসসুম গোসল সেরে এসে রান্নাঘরে উঁকি দিয়ে শিল্পীর কাজের কতদূর হলো তা দেখলেন । শিল্পী তখনো মনোযোগ দিয়ে মাছ কুটতে ব্যস্ত । তিনি এরপর নিজের রুমে এসে সেদিনের পত্রিকাখানা নিয়ে বসলেন । সকাল থেকে পত্রিকাটা দেখাই হয়নি কাজের ঝামেলায় । পত্রিকা পড়ার মাঝখানে তাঁর বুটিক হাউজের মেয়েটা ফোন দিলো । তাবাসসুম বেশ কিছুদিন ধরে অনিয়মিতভাবে বুটিকসে সময় দিচ্ছেন । রামিসা মেয়েটা অবশ্য খুবই কর্মতৎপর । দোকানে আরো দুজন ছেলে-মেয়ে কাজ করে । ওদের দু’জনকে নিয়ে কেনা-বেচাসহ বাকি দিকগুলো রামিসা গুছিয়ে করছে দেখে তিনিও ইদানীং একটু নিশ্চিন্ত থাকেন । ফোন ধরতেই রামিসা সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করলো –

আন্টি এই সপ্তাহে একদিনও দোকানে আসলেন না যে ?

আসব । তুমি তো আছো ই ।

গত মাসের হিসেব তো আপনাকে দেয়া হলো না ।

অসুবিধা নেই , তোমার কাছে তো হিসেব আছেই । সময় করে এসে দেখে নেবো ।

আন্টি গোপাল বসাক দাদা এবার যে শাড়িগুলো এনেছেন ওগুলোর কোয়ালিটি ভীষণ ভালো । বিশ পিস রেখেছিলাম । পাঁচ দিনেই সবগুলো সেল হয়ে গেছে ।

হুম আমার কথা হয়েছে গোপালের সাথে । আমি কাল পরশুর মধ্যে আসবো দোকানে । আর টাই-ডাই এর চাদর দেয়ার কথা ছিলো রোকসানার, দিয়েছিলো ?

জ্বি আন্টি সাতটা চাদর রেখেছি ।

আচ্ছা ঠিক আছে । আমার কাছে এখন কোনো দরকার নেই তো ?

না না । কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে আমি আপনাকে জানাবো । তিন চার দিন কথা হয়নি তো তাই ভাবলাম আপনি অসুস্থ কি-না ।

সুস্থ আছি আলহামদুলিল্লাহ । ঠিক আছে কাজ করো । পরে কথা হবে ।

রামিসার ফোন রেখে তাবাসসুমের মনে পড়লো যে জারা’র সাথে তিনি কথা বলতে চেয়েছিলেন । কথা কী তিনি এখনই বলবেন না-কি কায়সার ফিরলে বলবেন ঠিক বুঝতে পারছেন না । কায়সার সামনে থাকলে একটা সুবিধা আছে, কায়সার সবসময় মাথা ঠান্ডা রাখতে পারেন কিন্তু এই গুণটা তাঁর নেই । এতোটা সময় ধরে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারেন না তিনি । শুরু করেন ঠিকই মাথা ঠান্ডা রেখে কিন্তু যখন দেখেন বাচ্চারা অবাধ্যতা করছে তখনই তাঁর মেজাজটা খারাপ হয়ে যায় । শাফিন আর রোজা অবশ্য কখনোই তাঁর সাথে এমন আচরণ করেনি, যেমনটা জারা করছে । এইসব সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে তিনি জারা’র রুমের দিকে গেলেন । তিনি কায়সারকে কথা দিয়েছেন মাথা ঠান্ডা রেখে মেয়ের সাথে কথা বলবেন । চেষ্টা করতে তো দোষ নেই ।

জারা’র রুমের দরজা বন্ধ । মেয়েটাকে বলে বলে আর পারলেন না তিনি । সকাল বেলায় খালি বাড়িতে সে যে কেন দরজা বন্ধ করে বসে আছে ! দরজা খুলে রুমে উঁকি দিয়ে জারাকে দেখতে পেলেন না তাবাসসুম । ভাবলেন জারা হয়তো ওয়াশরুমে আছে তাই আর ডাকলেন না ৷ বের হোক তারপর কথা বলবেন । রান্নাঘরে এসে দেখলেন শিল্পী কাজ শেষ করে রান্নাঘর পরিস্কার করছে । তাবাসসুম শিল্পীকে বকলেন –

আমাকে এক কাপ চা দিও তো শিল্পী ।

খালাম্মা একটু পরে তো ভাত খাওয়ার টাইম । এহন চা খাইবেন ?

দাও এক কাপ, ক্লান্তি লাগছে খুব । চা খেলে একটু ফ্রেশ লাগে ।

আচ্ছা দিতাসি ।

তাবাসসুম বারান্দায় এসে দাঁড়ালেন । পাশের বিল্ডিংয়ের কাজ চলছে । বিল্ডিংটা উঠে গেলেই তাঁদের এই বারান্দাটা ঢাকা পড়ে যাবে । বারান্দা থেকে সামনের রাস্তার অনেকটুকু দেখা যেতো । উপচে পড়া ফুলে কৃষ্ণচূড়ায় যেন আগুন ধরে থাকে ফুলের মৌসুমে, সন্ধ্যায় অস্তাচলে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে তাপের তীব্রতা হারানো সূর্যটার দিকে কতোদিন এই বারান্দায় দাঁড়িয়ে তিনি মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থেকেছেন । এসব কিছুই আর কখনোই দেখা যাবে না এই বারান্দা থেকে । মনটাই খারাপ হয়ে গেল তাবাসসুমের ।

বারান্দা থেকে এসে শিল্পীর কাছ থেকে চা নিয়ে ডইনিংয়ে যেয়ে বসলেন তাবাসসুম । রান্নাঘরের জিনিসপত্র কোনটা আছে, কোনটা আনতে হবে তার খোঁজ নিচ্ছেন শিল্পীর কাছে থেকে । টুকটাক কথাবার্তা শেষ করে ওপরে উঠে এলেন তিনি । জারা’র রুমে এসে দেখলেন রুম ফাঁকা । ওয়াশরুমের দরজার কাছে এসে নক করে বললেন –

জারা তোমার আর কতক্ষণ লাগবে ?

একটু অপেক্ষা করে কোনো উত্তর না পেয়ে আবারো নক করলেন দরজায় । এবারো কোনো সাড়া নেই । তাবাসসুম একটু অবাক হলেন মেয়ের আচরণে । সে অন্তত উত্তর তো দেবে । একটু খেয়াল করে শুনতে চেষ্টা করে বুঝলেন ভেতরে কোনো রকম শব্দই হচ্ছে না । দরজার নবটা ঘোরাতেই দরজাটা খুলে গেল । ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখলেন সেখানে জারা নেই । নিজের বোকামিতে হাসলেন মনে মনে কিন্তু জারা গেল কোথায় ? তাঁদের রুমে কী গেল ? তাবাসসুম নিজের রুমে এসে দেখলেন সেখানেও জারা নেই । নিচ থেকে তো তিনি মাত্রই উঠে এলেন । জারা নিচে থাকলে তো দেখতেই পেতেন । তাবাসসুম আবার নিচে নেমে এসে শিল্পীকে জিজ্ঞেস করলেন –

জারা কোথায় গেল শিল্পী ? উপরে তো নেই ।

শিল্পীর যেন হঠাৎ মনে পড়েছে এমন ভাব করে বললো –

ওহহো জারা আপু তো নিচে গেল পার্সেল আনতে ।

কিসের পার্সেল ?

আমি কী জানি ? জারা আপুর তো কতো কসমিটিক আসে পার্সেলে । ঐগুলাই কিছু হইবো ।

কখন গেল, আমি কোথায় ছিলাম ?

এই তো একটু আগেই তো গেল । আপনি তো উপরেই ছিলেন । ক্যান আপনারে বইলা যায় নাই ?

না তো ।

নিচে যাইয়া দেইখা আসুম?

না ঠিক আছে তুমি কাজ করো, আমি দেখছি ফোন করে ।

দ্রুত পায়ে উপরে উঠে এলেন তিনি । বাইরে থেকে ফেরার সময় এত্ত এত্ত কসমেটিকস নিয়ে এসেছেন , জারা নিজেই পছন্দ করে কিনলো সবগুলো অথচ এখন আবার সব হাবিজাবি অনলাইন প্রোডাক্ট কেন যে কিনছে মেয়েটা, তিনি বুঝতে পারছেন না ।

রুমে এসে জারাকে ফোন করলেন । রিং হয়ে হয়ে থেমে গেল, জারা ফোন রিসিভ করলো না । প্রয়োজনের সময় কেউ ফোন না ধরলে তাঁর ভীষণ বিরক্ত লাগে । কয়েকবার ফোন করার পর জারা’র রুমে এলেন তাবাসসুম । এখান থেকে সামনের রাস্তাটা দেখা যায় । জানালার কাছে এসে উঁকি দিয়ে দেখলেন রাস্তা একদম ফাঁকা । আবারো ফোন করতেই জারা’র ফোনের রিংটোন শুনতে পেলেন তিনি । রিং হচ্ছে কিন্তু ফোনটা কোথাও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না, শব্দটা কোনো কিছুর ভেতর থেকে আসছে । বারবার ফোন করে শব্দটা ধরে এগিয়ে গিয়ে ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার খুলে ফোনটা দেখতে পেলেন তাবাসসুম । খুব বিরক্ত হয়ে তাবাসসুম বললেন –

উহ, মেয়েটা যে কী সব কান্ড করে না । এভাবে ড্রয়ারের ভেতরে কেউ ফোন রেখে যায় ? বাইরে বেরিয়েছে, ফোনটা তো হাতে রাখবে । হঠাৎ তাঁর মনে হলো, নিচে যেয়ে পার্সেল আনতে এতো সময় কেন লাগবে ? তাড়াতাড়ি নিচে এসে শিল্পীকে বললেন –

একবার নিচে গিয়ে দেখে এসো তো জারা আছে কি-না ।

ক্যান জারা আপু ফোন ধরে না ?

ফোন বাসায় রেখে গেছে ।

মিনিট পাঁচেক পর শিল্পী ফিরে এসে বললো –

জারা আপুর তো কোনো পার্সেল আসে নাই ।

কে বললো, জারা আছে নিচে ?

না জারা আপু তো নিচে নাই । কাদের ভাই কইলো যে জারা আপু তো সরাসরি বাইরে চইলা গেছে । কোনো পার্সেলআলা আইতে দেখে নাই তারা কেউ । তাইলে কী পার্সেল আনতে অন্য কোথাও গেল ?

আরে পার্সেল আনতে অন্য কোথাও যাবে কেন ? তোমাকে কী বলে গেছে বল তো ?

আমারে তো কইলো নিচে পার্সেল আইসে ।

আচ্ছা ঠিক আছে কাজ করো তুমি ।

তাবাসসুম তাড়াতাড়ি উপরে উঠে এসে কায়সারকে ফোন করলেন । কায়সার ফোন ধরতেই তাবাসসুম চিন্তিত গলায় বললেন –

জারা তো বাসায় নেই ।

বাসায় নেই মানে কী ?

আমি তো গোসল করছিলাম, তখন বেরিয়ে গেছে । কোথায় যেতে পারে বলো তো ?

আমি কী করে বলবো কোথায় যেতে পারে ? ফোন করে দেখো কী বলে ।

মোবাইল তো বাসায় । শিল্পীকে বলে গেছে যে ওর পার্সেল এসেছে ৷ সেটাই আনতে যাচ্ছে ।

তাহলে হয়তো পার্সেল আনতেই গেছে । আর কোথায় যাবে তোমাকে না বলে ।

আমার যেন কেমন অস্থির লাগছে ।

আচ্ছা তুমি সব সময় অল্পতেই এতো অস্থির হয়ে যাও কেন বল তো ? একটা কাজে মেয়েটা নিচে গেছে, একটু অপেক্ষা করো । একটু পরেই চলে আসবে । আমি রাখছি এখন । মিটিংয়ের মাঝখান থেকে উঠে এসে তোমার সাথে কথা বলছি । টেনশন করো না, জারা চলে আসবে ।

হুম ।

.
.

আগে থেকেই আদিত্যের বন্ধুরা একটা রেস্তোরাঁয় অপেক্ষা করছিল ওদের জন্য । আদি জারাকে নিয়ে এসে ওদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো । আদি তিন জন ছেলের কথা বললেও জারা দেখলো তাদের সাথে একটা মেয়েও রয়েছে । তানভীরকে আজই প্রথম দেখলো জারা আর বাকিদের তো নামই শোনেনি আগে । ওদের স্বতস্ফুর্ত আড্ডা দেওয়া ভালো লাগলো জারা’র । ওরাও জারাকে সহজেই নিজেদের আড্ডার ভেতর শামিল করে নিলো । আড্ডার মাঝখানে থেকে ধীরে ধীরে তার টেনশন কমে এলো অনেকটুকু । তানভীর বললো –

আজকের লাঞ্চ হবে জারা’র অনারে । জারা’র পছন্দের খাবার অর্ডার করা হবে ।

মেন্যু বুকটা জারা’র দিকে এগিয়ে দিয়ে তানভীর বললো –

নাও জারা তুমি অর্ডার করো ।

তাকে সবাই গুরুত্ব দিচ্ছে দেখে জারা’র ভালো লাগলো বিষয়টা । সে তার পছন্দের সব খাবার অর্ডার করলো ।

খাওয়াদাওয়ার মাঝখানে টুকটাক কথাবার্তা হচ্ছে । জারা বুঝতে পারলো তাদের বিয়ে নিয়েই কথা বলছে সবাই । জারা’র বেশ ভালো লাগছে এখন ৷ কেমন একটা থ্রিল কাজ করছে ভেতরে ।

বিয়ের জন্য কাজী অফিসে যাওয়ার প্ল্যান থাকলেও সেই প্ল্যান বাতিল করা হলো । কাফি আর রুদ্র মিলে উত্তরার যে বাসাটায় ভাড়া থাকে, ওরা সবাই ওখানেই চলে আসলো । বিন্তী নামের মেয়েটাকে দেখে ভীষণ অবাক লাগছে জারা’র, ভালোও লাগছে । মেয়েটা তার বয়সী ই হবে । কী সুন্দর করে সারাদিন বন্ধুদের সাথে কাটাচ্ছে ! বিন্তীর জায়গায় সে হলে মা অন্তত দশবার ফোন করতেন এর মধ্যে । কী করছো, কোথায় আছো, কার সাথে আছো আরো কতো কী হাবিজাবি । বিন্তীর তো কোনো ফোন এলো না এতক্ষণেও । ইশ কী স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে পারে বিন্তী !

দুই বেডরুমের ছোট ফ্ল্যাটটা খুব সুন্দর করে সাজানো । ছেলেরাও যে এতো সুন্দর করে ঘর সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে পারে, কোনো ধারণা ই ছিলো না জারা’র । ওদের আড্ডার মাঝখান থেকে উঠে আদি আর জারা রুদ্র’র রুমে চলে এলো । দরজাটা চাপিয়ে দিয়ে এসে আদি জারা’র হাত ধরে বললো –

কেমন লাগছে বলো ?

বুঝতে পারছি না । বাসায় যে ……

আবার বাসা ? বলেছি না বাসার চিন্তা এখন বাদ । তুমি তো একবারও জিজ্ঞেস করলে না যে আমার কেমন লাগছে ?

জারা কিছু না বলে আদিত্যর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলো ।

আমার ভীষণ ভালো লাগছে জারা । মনে হচ্ছে খুশিতে আমি পাগল হয়ে যাবো । তোমাকে যে সত্যিই আমি পাবো এটা শুধু আমার কল্পনায় ছিল । আজ সেই কল্পনাটা বাস্তব হচ্ছে জারা । আমি খুব খুশি জারা, খুব খুশি । আচ্ছা এই বাসাটা অনেক সুন্দর না ?

হুম অনেক সুন্দর । আমার অনেক ভালো লেগেছে ।

এরকম ছোট্ট, সুন্দর একটা ফ্ল্যাট আমাদের হলে খুব ভালো হয়, তাই না জারা ?

জারা কোনো কথা বললো না, শুধু হাসলো ।

.
.

দুপুরে খাওয়া হয়নি তাবাসসুমের । কায়সারের কথা শুনে তিনি জারা’র জন্য অপেক্ষা করছিলেন এতক্ষণ । এখন তাঁর খুব টেনশন হচ্ছে । কোথায় গেল মেয়েটা ? এতো সময় কেন লাগবে ? তিনি প্রথমে রোজাকে ফোন করলেন । রোজা ফোন রিসিভ করে বললো –

জ্বি মা বলো ।

রোজা জারা তো বাসায় নেই ।

বাসায় নেই মানে ! কোথায় গেছে?

আমি জানি না । আমাকে বলে যায়নি । শিল্পীকে বলে গেছে যে ওর পার্সেল এসেছে, সেটাই আনতে যাচ্ছে ।

তাহলে হয়তো পার্সেল আনতেই গেছে । একটু অপেক্ষা করো ।

অনেকক্ষণ হয়ে গেছে রোজা । আমার এখন খুব টেনশন হচ্ছে ।

মা তুমি একদম টেনশন করবে না । ওকে ফোন দাও না ।

ফোন তো বাসায় ।

তুমি ওর সাথে কথা বলেছিলে, কোনো বকাবকি করোনি তো ?

আজকে তো কোনো কথা হয়নি ওর সাথে । ওর হাতে আইসক্রিম দিয়ে বললাম যে আমি গোসল সেরে এসে কথা বলবো । ব্যস এটুকুই, তারপর এসে দেখি ও নেই । কোথায় যেতে পারে বল তো তুমি ? ঐ ছেলেটার সাথে দেখা করতে চলে গেল না তো ?

সেই ছেলেটার ফোন নাম্বার জানো ?

না ।

জারা’র মোবাইল থেকে বের করো ।

মোবাইল চেক করলাম কিন্তু আদিত্য নামে তো কোনো নাম্বার সেভ করা নেই ।

আচ্ছা ঠিক আছে । হয়তো কোনো কাজেই বাইরে গেছে , তুমি ছিলে না বলে তোমাকে বলে যেতে পারেনি । এখনই চলে আসবে দেখো । তুমি খেয়েছো ?

না, আমার খুব ভয় লাগছে রোজা । মেয়েটা তো আমাকে না বলে এভাবে কখনো কোথাও যায়নি ।

মা অকারণ টেনশন করা তোমার একটা অভ্যাস হয়ে যাচ্ছে কিন্তু । একটু পরেই জারা চলে আসবে আর মাঝখান দিয়ে চিন্তা করে তুমি প্রেসার বাড়িয়ে ফেলছো । আমি আসছি একটু পরে । তুমি কিছু খেয়ে নাও মা । জারা চলে আসবে ।

রোজার ফোন রাখতেই কায়সার ফোন করলেন । তাবাসসুম ফোন ধরতেই কায়সার বললেন –

আমার মিটিং এইমাত্র শেষ হলো । জারা কী ফেরেনি এখনো ?

না । কী হলো বল তো, কোথায় গেল জারা ?

ফোন করোনি ?

ফোন তো বাসায় ।

ও হ্যাঁ বলেছিলে তো । আচ্ছা ওর বন্ধুদের কারো নাম্বারে ফোন করে দেখবে না-কি ?

তানিশাকে ফোন করেছিলাম, ওরা রাজশাহীতে আছে । আমি তাই আর কিছু জিজ্ঞেস করিনি । রোজাকে ফোন করেছি , বড় আপা, ছোট আপার বাসায় ফোন করেছি । আমার তো মাথায় আসছে না ও কোথায় যেতে পারে । আমি আর কাকে ফোন করবো ?

আর কাউকে ফোন দেয়ার দরকার নেই আপাতত । আমি বাসায় চলে আসছি এখনই ।

কায়সারের সাথে কথা শেষ করে জারা’র মোবাইলটা নিয়ে আবারো চেক করলেন তাবাসসুম । ম্যাসেঞ্জারেও তেমন কিছু পেলেন না । কী একটা ছদ্মনামে ছেলেটার আইডিটা দেখেছিলেন তিনি, এখন সেই নামটাও মনে করতে পারছেন না । জারা কী ঐ ছেলের সাথে দেখা করতে গেল ?

বড় আপাকে ফোন করে তাবাসসুম পড়েছেন আরেক বিপদে ৷ এই পর্যন্ত দশবার ফোন দিয়েছে আপা তার টেনশন আরো বাড়িয়ে দিতে । আবারো বড় আপার ফোন ! তাবাসসুম রিসিভ করে বললেন –

হ্যাঁ আপা বলো ।

কী রে জারা ফিরলো ?

না ফেরেনি এখনো ।

তোকে আমি আগেই বলেছিলাম তখন তো আমার কথাটা শুনলি না । হুজুরের কাছে গেলে আজকে এই বিপদ হতো না ।

কী বিপদ আপা ? কী বলো তুমি ?

তুই আমার ওপর রাগ করিস না তাবাসসুম । আজকালকার মেয়েগুলো ভীষণ বদ হয় একেকটা । আমি শুধু আমাদের জারা’র কথা বলছি না । সবগুলো বাচ্চা ই কেমন জানি । আমার ননদের মেয়েটার কথা তো তোকে বলেছিলাম, ঐ যে লিমা । ঐ মেয়ে তো মনে হতো ডান বাম কিছুই চেনে না অথচ দেখ ভেতরে ভেতরে কী কান্ডটাই না করে বসলো । আমি এই কারণের জাফরিনকে প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়াতে চাইনি । আল্লাহ ই জানেন আমার মেয়ে যে কী খেল দেখাবে আমাকে । আমি তো হুজুরের কাছে গিয়ে আগে থেকেই সব ব্যবস্থা করে রাখবো ।

বড় আপার এইসব পীর হুজুরের কথা শুনতে একদম ইচ্ছে করছে না তাবাসসুমের । তিনি বললেন –

আপা কায়সার ফিরলে আমি তোমাকে একটু পরে ফোন করবো । তুমি বারবার ফোন করো না ।

তোর ফোন করতে হবে না । আমি আসছি তোর বাসায় ।

আচ্ছা ।

.
.

হাতে কোনো কাজ ছিল না । জমে থাকা কাজগুলো সব শেষ করেছে একটু আগেই । সাদাত কিচেনে যেয়ে চা নিয়ে এসে বসলো নিজের সিটে । এমনিতে পিয়ন ছেলেটা সবার টেবিলে চা দিয়ে যায় সকালে আর বিকেলে । এর মধ্যে যদি কারো চায়ের তেষ্টা পায় তখন তাকে বললে আবার চা দিয়ে যায় কিন্তু হৃদয়ের বানানো পাতলা লিকারের চা খেতে একদমই ভালো লাগে না সাদাতের । তাই নিজের পছন্দ মতো দুধ, চিনি আর ডাবল ব্যাগ দিয়ে দুপুরের পরে প্রায়ই চা করে নেয় সে ।

চা শেষ করে মোবাইল হাতে নিয়ে দেখলো মা’র মিসড কল উঠে আছে । সাদাত কল ব্যাক করলো মা’কে ।

নিলুফার আশপাশে কোথাও ছিলেন, ফোন ধরলো সানজিদা –

হ্যালো ভাইয়া ।

হুম মা কোথায় রে ?

মা তো নামাজ পরছেন ।

মা ফোন করেছিল ।

হুম, ভাইয়া জানো জারা আপুকে পাওয়া যাচ্ছে না ।

সাদাতের বুকটা ধুক করে উঠলো । তার মনে হলো সে যেন ভুল শুনলো । বললো –

কী বললি? কী হয়েছে জারা’র ?

জারা আপা কাউকে কিছু না বলে কোথায় যেন চলে গেছে ।

তোকে কে বললো ?

ছোট খালা একটু আগে ফোন করেছিলেন ।

আচ্ছা ঠিক আছে । মা’কে বলিস আমি ফোন করেছিলাম ।

সানজিদার সাথে কথা শেষ করে সাদাত ছোট খালাকে ফোন করলো । তাবাসসুম ফোন ধরে জানালেন, কয়েক ঘন্টা আগে বাসা থেকে পার্সেল আনার কথা বলে বেরিয়েছে জারা । এখনো ফেরেনি । সাদাত খালাকে বললো অফিস শেষে সে সরাসরি খালার বাসায় চলে আসবে ।

সাদাত কায়সারের রুমের কাছে এসে দেখলো রুম ফাঁকা । রিসিপশনে জিজ্ঞেস করতে তারা জানালো কায়সার স্যার আরো এক ঘন্টা আগেই বেরিয়ে গেছেন অফিস থেকে ।

মাঝের সময়টা সাদাতের ভীষণ অস্থিরতায় কাটলো । অফিস থেকে বেরিয়ে সিএনজি নিয়ে সোজা চলে এলো ছোট খালার বাসায় । এরমধ্যে খালাকে ফোন করে জেনেছে জারা তখনো ফেরেনি । খুব খারাপ খারাপ চিন্তা আসছে সাদাতের মাথায় । পার্সেল আনতে গিয়ে জারা’র কোনো এক্সিডেন্ট হয়নি তো আবার ? কোনো ছিনতাইকারীর পাল্লায় কী পড়লো জারা ? উহ, সে আর কিছু ভাবতে পারছে না শুধু মনে মনে প্রার্থনা করছে জারা’র যেন কিছু না হয় ।

সাদাত খালার বাসায় এসে দেখলো বড় খালা এসেছেন ৷ রোজা আর সিয়ামও আছে এখানে । হঠাৎ করে আসার কারণে সে প্রথমে বুঝতে পারলো না সবাই কী নিয়ে কথা বলছে । কিছুক্ষণ পর সে বুঝলো জারা’র সাথে কোনো একটা ছেলের নাম আসছে বারবার । জারা’র কোনো রিলেশন ছিল !

খালু খুব ব্যস্ত হয়ে এখানে ওখানে ফোন করছেন । ছোট খালা বারবার বলছেন পুলিশকে জানাতে । খালু খুব চেষ্টা করে যাচ্ছেন খালাকে শান্ত রাখতে । খালু বললেন তিনি সরাসরি থানায় ইনফর্ম করতে চাচ্ছেন না । ওনার এক ক্লোজ ফ্রেন্ড পুলিশের বড় কর্তা । খালু তাঁকেই ফোন করে জানালেন জারা’র বিষয়টা ।

সাদাতের মনটা যেন কেমন করে উঠলো । এতক্ষণ সে ভাবছিল একরকম আর এখানে এসে এখন শুনলো অন্য কিছু । জারা’র রিলেশন থাকতে পারে এটা তার মাথায়ই আসেনি কখনো । আচ্ছা জারা যদি ঐ ছেলেটার সাথে দেখা করতে যায় তাতে সবার এতো উত্তেজিত হওয়ার কী আছে ? এর জন্য থানা-পুলিশ করতে হবে কেন ? দেখা করে তো বাসায়ই ফিরে আসবে । এর মধ্যে আরো কোনো ঘটনা আছে না-কি ? সে মন দিয়ে সবার কথা শোনার চেষ্টা করলো ।

বড় খালা বলছেন –

তুই ছেলেটার কিছুই জানিস না ?

সেভাবে তো জানি না । জারা’র মুখে যতটুকু শুনেছি ততটুকুই জানি ।

কোথায় থাকে, নাম ঠিকানা কিছু ….

নাম তো আদিত্য, এর বেশি আর কিছু জানি না । সেদিন ছেলেটার সাথে দেখা হয়েছিল আমার কিন্তু সে খুব তাড়াহুড়ায় ছিল তাই বেশি কথা হয়নি ।

কোথায় দেখা হলো, বাসায় এসেছিল ?

না যমুনায় দেখা হয়েছে । গত বৃহস্পতিবারে ।

সাদাতের মনে পড়লো গত বৃহস্পতিবারে সে-ও তো যমুনায় গিয়েছিল । খালা আর জারাকে দেখেছিল সে কিন্তু কথাটা এখন বললো না ।

তাবাসসুম বললেন –

আমি ছেলেটাকে দেখলেই চিনতে পারবো । চেহারাটা আমার মনে গেঁথে আছে । স্বামীর দিকে তাকিয়ে বললেন –

কোনো খোঁজ পেলে তুমি ?

না । আমার মনে হয় আমাদের একটু অপেক্ষা করা দরকার । যদি জারা চলে আসে এর মধ্যে ।

না না আর কতক্ষণ অপেক্ষা করবো ? অনেকক্ষণ তো হয়ে গেল । দুপুরের আগে বেরিয়েছে আর এখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে ।

সাদাত বুঝতে পারলো না সবাই ঐ আদিত্য ছেলেটাকে নিয়ে এতো টেনশন কেন করছে ! এমন কিছু কী হয়েছে বাসায় যার কারণে…. কী জানি সাদাত আর কিছু ভাবতে পারছে না । জারা’র রিলেশনটাই তার জন্য একটা ধাক্কা তার ওপর এগুলো কী সব জটিলতা রে বাবা !

হঠাৎ সাদাতে’র কথাটা মনে পড়তেই সে তাবাসসুমকে জিজ্ঞেস করলো –

ছোটো খালা তুমি রফিককে কীভাবে চেনো ?

রফিক কে ?

খালা সেদিন তোমাকে আর জারাকে আমি যমুনায় দেখেছিলাম ।

কবে বৃহস্পতিবারে ? কই আমি তো তোমাকে দেখলাম না ।

আমি বড় খালার জন্য আতর নিতে গিয়েছিলাম ।

তাবাসসুম বড় বোনের দিকে তাকাতেই ইয়াসমিন বললেন –

হুম খুব ভালো আতর, হারামাইন এর সব আতর আর পারফিউম ই অনেক ভালো ।

তাবাসসুম বললেন –

তুমি যখন আমাদের দেখলে তখন কাছে আসলে না কেন ?

কারণটা এড়িয়ে গেল সাদাত । বললো –

খালা বললে না তুমি রফিককে কীভাবে চেনো ?

রফিক কে? আমি তো কোনো রফিককে চিনি না । কেন বলো তো ?

আমি তো দেখলাম তুমি আর জারা রফিকের সাথে কথা বলছিলে ।

কোথায় ?

যমুনায় ।

না তো । আমরা তো আদিত্যের সাথেই শুধু কথা বলেছি । সেদিন তো আর কারো সাথে কথা হয়নি আমাদের ।

তোমরা আড়ং থেকে একটু সামনে একটা কোনায় দাঁড়িয়ে কথা বলছিলে ।

হ্যাঁ হ্যাঁ ওটাই তো আদিত্য ।

সে কীভাবে আদিত্য হয় !! ওর নাম রফিক ।

ওর অবশ্য আর কোনো নাম আছে কি-না আমি জানি না । তুমি কী ওকে চেনো ? তোমার কী কোনো ভুল হচ্ছে সাদাত ?

খুব ভালো করে চিনি আর এটাও জানি ওর নাম আদিত্য না, কখনোই না ।………………………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here