এক মুঠো কাঁচের চুরি পর্ব -১৭

#এক_মুঠো_কাঁচের_চুরি
#পর্ব_১৭
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

বেশ কিছুদিন পরের কথা।সবকিছু সুন্দর ভাবে চলছিল।ইফাদে’র পরিবারে অর্থের অভাব থাকলে-ও নেই সুখের অভাব।দিনশেষে চারটি মানুষকে সবথেকে সুখী বলে মনে হয়।ইফাদ আর তানহার সম্পর্কটা বন্ধুর মতো হয়ে গেছে।এখন দু’জন মন খুলে কথা বলতে পারে।একে অন্যের সমস্যা বুঝতে পারে।সময়ের সাথে ভালোবাসাটা-ও কাজ করতে শুরু করেছে।ইফাদ তানহা’কে বলেছিল।আজকে বিকেলে ঘুরতে নিয়ে যাবে।সব কাজ আগে শেষ করে রাখতে।তানহা বাসার কাজে লেগে পড়লো।

আবির এই কয়দিনে চৈতালির মন গলিয়ে ফেলছে।মেয়ে মানুষে’র মন সাথে যদি হয় প্রিয় মানুষ।কি করে রাগ করে থাকবে।চৈতালি মাঠে আড্ডা দিচ্ছিল।আবির ক্লাস শেষ করে বাহিরে যাচ্ছিল।আবির চৈতালি’কে মেসেজ করলো।মেসেঞ্জারের টং শব্দ শুনে,চৈতালি ফোনের দিকে তাকালো।সেখানে আবিরে’র নাম জ্বলজ্বল করছে।আবির লিখেছে।

–চৈতালি একটু বাহিরে এসো।তোমার সাথে আমার দরকারি কথা আছে।

–ফোনের কি’ দেখছিস।তোকে এত সারাদিন কে মেসেজ দেয়।আমি তো’ তোর কাছে।বলল আফরিন।

–ভাবি মেসেজ দিয়েছে।বাসায় লবণ শেষ হয়ে গিয়েছে।তাই আমাকে নিয়ে যেতে বলল।

–কেনো রে’ তোর ভাই নাই।তোর ভাবি তোর ভাইকে না বলে,তোকে বলে কেনো।

–ভাইয়া কাজ করে না।নতুন চাকরি পেয়েছে।কাজ ফেলে বউয়ের জন্য লবন নিয়ে আসতে গেলে,ভাইয়ার চাকরি আস্ত থাকবে।

–তাহলে এখন বাসায় চলে যাবি।

–হ্যাঁ যেতে হবে।না হলে ভাবি রান্না করবে কি করে?

–আচ্ছা দেখেশুনে যাস।আজকে একটু ঘুরতে যেতে চাইলাম।কালকে তাড়াতাড়ি আসিস।আর না আসলে বলে দিস।তুই না আসলে আমি’ও আসবো না।

–ওকে বেইবি আপনি যা’ বলবেন তাই হবে।আজকে তাহলে আসি।বলেই চৈতালি চলে গেলো।

কলেজ থেকে বেশ খানিকটা দুরে এসে দাঁড়িয়ে আছে আবির।ক্লান্ত পায়ে হেঁটে আসছে চৈতালি।জীবনে এত মিথ্যা কথা কোনোদিন বলে নাই।আজকে আবিরের জন্য বলতে হলো।মিথ্যা কথা বলে চৈতালির বেশ খারাপ লাগছে।

–কি বলবেন বলুন।আমাকে বাসায় যেতে হবে।

–আজকে আমার সাথে একটু ঘুরতে যাবে চৈতালি।আবিরের কথা শুনে চৈতালি চোখ বড় বড় করে আবিরের দিকে তাকালো।

–স্যার আপনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে।ভাইয়া দেখলে আমার জীবন শেষ।এসব আমি পারবো না।

— তুমি চাইলেই পারবে।এটা তোমার কাছে আমার আবদার বলতে পারো।

–কেউ দেখে যদি আমার বাসায় বলে দেয়।

–কেউ দেখবে না।খুব তাড়াতাড়ি চলে আসবো।

–আমি যাব না স্যার।আমার অনেক ভয় লাগে।আমি মুখে যতই কথায় বলি না কেনো?এইসব দিকে আমি শূন্য।

–শূন্য বলতে কিছু নেই চৈতালি।সবকিছু কোনো না কোনো জিনিস দিয়ে পরিপূর্ণ আছে।তুমি পারো না আমাকে পরিপূর্ণ করতে।

–কিন্তু আপনি তো’ ভাবিকে ভালোবাসেন।একজনকে মনে রেখে আরেক জনের সাথে কি ভাবে সংসার করবেন?

–যাও তোমার যেতে হবে না।তখন থেকে একটা কথা ভালোভাবে বুঝিয়ে যাচ্ছি।নাটক শুরু করছে।

আবিরের কথা শুনে চৈতালির মন খারাপ হয়ে গেলো।এক মুহুর্ত দাঁড়ালো না উল্টো দিকে হাঁটা শুরু করলো।আবির বুঝতে পারলো রেগে কি বলে ফেলছে।দৌড়ে চৈতালির সামনে দাঁড়ালো।

–চৈতালি স্যরি আমি তোমার সাথে উচ্চ স্বরে কথা বলতে চাই নাই।তুমি কষ্ট পেও না।এই দেখো আমি কান ধরে স্যরি বলছি।চৈতালির আবিরের দিকে তাকালো না।পাশ কাটিয়ে চলে যেত লাগলো।আবির আবার পথ আঁটকে দাঁড়ালো।

–তুমি শুধু শুধু আমার ওপরে রাগ করছো।একটা কথা ভেবে দেখো তো’।তোমার আর আমার কথা তোমার পরিবার জানলে,আমি শিওর ওরা আমাদের মেনে নিবে না।এখন যদি আমরা বিয়ে করে ফেলি।তাহলে কয়দিন মেনে নিবে না।একদিন-দুইদিন সর্বোচ্চ এক বছর।তারপরে ঠিক মেনে নিবে।তুমি ওদের এক মাত্র মেয়ে।মেনে না নিয়ে কোথায় যাবে?আর যদি পরিবারের জন্য নিজের প্রিয় মানুষটাকে হারিয়ে ফেলো।সারাজীবন আফসোস করতে হবে।এখন তুমি বলো তুমি কি করতে চাও।

–পৃথিবীতে যতই ভালোবাসা মানুষ আসুক না কেনো স্যার।পরিবারের মতো কেউ আমাকে ভালোবাসতে পারবে না।আর না পারবে তাদের মতো ভালো রাখতে।আমি তাদের যে,পরিমানে জ্বালাই।ওরা আমার সবকিছু চুপচাপ সহ্য করে।রাগ করে দু’কথা শোনালে।আমি রাগ করে যদি না খাইয়ে থাকি।দিনশেষে আদর করে বুকে টেনে নেয়।রাত দু’টো বাজলে-ও তুলে আদর করে খাইয়ে দেয়।আপনি তাদের কষ্ট দেওয়ার কথা বলছেন।আমি পারবো না।আমার প্রিয় মানুষ আর পরিবার দু’জনকেই চাই।

–আমাকে পেতে হলে,একজনকে বেছে নিতে হবে।

–তাহলে আমি কাউকেই বেছে নিব না।আমি নিজেকে বেছে নিব।আমি চাকরি করবো।বিয়ে করবো না।নিজের মন মতো বাঁচতে পারবো।এখানে আপনি-ও কষ্ট পাবেন না।আর আমার পরিবার-ও কষ্ট পাবে না।আমি কাউকেই কষ্ট দিতে পারবো না।

–চামরার মুখে অনেক কথা বলা যায় চৈতালি।সমাজ তোমাকে তোমার মনের আশা পূর্ণ হতে দিবে না।পরিবার পরিবার করছো।একদিন তোমার পরিবারই তোমাকে কষ্ট দিবে।তুমি চাইলে-ও তোমাকে তোমার মনের আশা পূর্ণ হতে দিবে না কেউ।তুমি এখনো অনেক ছোট চৈতালি।তাই বুঝতে পারছো না।আচ্ছা এসব কথা বাদ দাও।চলো না আমরা ঘুরতে যাই।

–আমি যেতে পারবো না স্যার।

–বিয়ে তো’ করবে না।আমার ছোট ছোট আবদার গুলো তো’ পূর্ণ করে দিতে পারো।

চৈতালির খুব ভয় হচ্ছে।আবিরকে সে,যতই ভালোবাসুক না কেনো?আবির এখনো চৈতালির কাছে অপরিচিত একটা ছেলে।এভাবে অপরিচিত একটা ছেলের সাথে একা একটা মেয়ে যাবে।ভাবতেই চৈতালির গায়ে কাটা দিয়ে উঠলো।

–তুমি ভয় পাচ্ছো চৈতালি।ঐ’ ওপর আলার কসম তোমার এতটুকু ক্ষতি করবো না।আর এতটুকু ক্ষতি হাতে-ও দিব না।সময় নষ্ট করো না।প্লিজ আমি বেশি সময় নিব না।অনেক বুঝিয়ে চৈতালিকে রাজি করালো আবির।চৈতালির ভয়ে পুরো শরীর কাঁপছে।আবির বাইকে উঠে বসলো।চৈতালি ধীর পায়ে আবিরের পেছনে বসলো।আবিরকে ধরলো না।বাইকের পেছনে শক্ত করে ধরে আছে চৈতালি।

ত্রিশ মিনিট পরে শহর থেকে একটু গ্রামের দিকে এসে আবির বাইক থামিয়ে দিল।ধানকাটা ফসলের ফাঁকা মাঠ পড়ে আছে।গ্রামের চিকন আঁকাবাকা রাস্তা।রাস্তা দিয়ে দু-এক জন মানুষ হেঁটে যাচ্ছে।

–চলো।

–কোথায়?

–গেলেই দেখতে পাবে।

আবির হাঁটতে শুরু করলো।চৈতালি আবিরের পেছনে পেছনে গেলো’।দুই মিনিট পরে একটা বিশাল মাঠের সামনে এসে দাঁড়ালো দু’জন।পুরো মাঠে মানুষ গিজগিজ করছে।হরেকরকমের দোকান বসেছে।চারিদিকে বাচ্চারা ছুটোছুটি করছে।বাহারি রকমের ফুলের গাছ।নাগরদোলা থেকে বাচ্চাদের চিৎকার শোনা যাচ্ছে।বড়রা মজা করে হৈচৈ করে উঠছে।চারদিক থেকে গরম জিলাপির সুঘ্রাণ ভেসে আসছে।ফুচকা আলার দোকানে জমেছে ভিড়।বসেছে বাহারী রকমের সাজসজ্জার দোকান।চৈতালির সব চিন্তা নিমিষেই উবে গেলো’।উৎফুল্ল হয়ে মেলার মধ্যে প্রবেশ করল।

–স্যার এটা গ্রামীন মেলা তাই না।এটা কোন স্কুল।আমার এক বান্ধবী আমাকে গ্রামীণ মেলা সম্পর্কে বলেছিল।আমকে কিছু ছবি দেখিয়েছিল।তাই আমার বুঝতে বাকি রইলো না।এটা গ্রামীণ মেলা।আমার অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল জানেন।আমি গ্রামীন মেলাতে আসবো।ভেবেছিলাম।আমি ভাইয়া ভাবিকে নিয়ে আসবো।

–আমি ছোট বেলায় তানহাকে নিয়ে আসছিলাম।কাঁচের চুড়ি কিনে নেই নাই বলে,মাটিতে গড়াগড়ি করে কান্না করেছিল।

চৈতালির কেন জানি আবিরের কথায় মন খারাপ হলো না।আগ্রহ নিয়ে বলল।

–আমি বুঝি না ভাবি এত কাঁচের চুড়ি কাঁচের চুড়ি করে কেনো?কি আছে কাঁচের চুড়ির মধ্যে।সারাদিন কাঁচের চুড়ি,কাঁচের চুড়ি করে ভাইয়ার সাথে ঝগড়া করে।আজকে ভাবির জন্য কাঁচের চুড়ি কিনে নিয়ে যাব।

–,একদম না।ও মেয়ে চুড়ি ভেঙে হাত কেটে ফেলবে।ইফাদ একদম ঠিক কাজ করে।তানহাকে চুড়ি না কিনে দিয়ে।তুমি চুড়ি নিবে।

–আমার-ও কাঁচের চুড়ি অনেক পছন্দ।তবে ভাবির মতো এত পছন্দ করি না।

–আমরা ঘুরতে এসেছি।এখন ভাবির কথা বাদ।চলো তোমাকে চুরি কিনে দেই।বলেই সামনের দিকে এগোতে লাগলো।

চৈতালি সবকিছু ঘুরে ঘুরে দেখছে।সবাই তার প্রিয়জনদের নিয়ে ঘুরতে এসেছে।মাঠের এক অংশে স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে।কেউ নাচ করে নেমে যাচ্ছে।কেউ হাসির মজার নাটক নিয়ে হাজির হচ্ছে।চৈতালি সবকিছু উপভোগ করছে।দু’জন মিলে বেশ কিছুক্ষন মেলায় ঘুরলো।

–চৈতালি চলো চলে যাই।

–স্যার আর একটু।

–এখন তোমার দেরি হয়ে যাচ্ছে না।কেউ দেখলে কিন্তু বাসায় বলে দিবে।

–দিলে দিবে।বকা এমনি-ও খাব।ওমনে-ও খাব।শান্তি করে সবকিছু দেখতে দেন।আর একটা নাচ দেখেই চলে যাব।

–পাগল নাকি আমি পারবো না।চলো,না হলে তোমাকে রেখেই চলে যাব।বলেই হাঁটা শুরু করলো আবির। চৈতালি চুড়ির দোকানের সামনে দাঁড়াল,দোকানদারকে বলল।

–মামা আমাকে লাল,নীল আর কালো রংয়ের চুড়ি দু’টো করে দিবেন।চৈতালির কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে আবির পেছনে তাকালো।চৈতালিকে চুড়ির দোকানের সামনে দেখে রেগে গেলো কিছুটা।

–তোমার চুড়ি পড়তে হবে কেনো?যদি হাত কেটে যায়।

–আপনি নিজেই কিনে দিতে চেয়ে ছিলেন।

–চেয়েছিলাম কিন্তু কিনে দেয় নাই।পরে ভাবলাম কাঁচের চুড়ি কিনে দেওয়া ঠিক হবে না।

–কাঁচের চুড়ি নিয়ে আপনাদের এত কিসের সমস্যা।

–কথা কম বলো তাড়াতাড়ি চুড়ি হাতে নাও।দ্রুত বাসায় যেতে হবে।

চৈতালি চুড়ি নিয়ে পাঁচশ টাকার একটা নোট বের করে দোকানদারে কাছে দিল।আবির চৈতালির দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকালো।তারপরে দোকানদারকে বলল।

–মামা ওর টাকা ফিরিয়ে দিন।আমি আপনাকে টাকা দিচ্ছি।

–শুনুন আমরা মধ্যবিত্ত হতে পারি।কিন্তু আমার কাছে সময় টাকা থাকে।আমি অন্যের থেকে কিছু নেওয়া পছন্দ করি না।ঘুরতে এসেছি।নিজের টাকায় জিনিস কিনতে চাই।মামা আপনি টাকা খুচরো করে দেন।চৈতালির কথায় আবির একটু অপমানবোধ করলো।তবু্ও কিছু বুঝতে দিলো না।চুড়ি নিয়ে বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিলো।

ইফাদের কাজ শেষ।খুশি মনে অফিস থেকে বেড়িয়ে আসলো।তানহার সাথে ঘুরতে যাবে।ভাবতেই মনটা ফুরফুরে হয়ে গেলো।তবে বেশি আশা করতে নেই।বেশি আশা করলে তা’ কখনো পূর্ণ হয় না।সেটা কি আর ইফাদ জানতো।চিন্তা করতে করতে কখন যে,রাস্তার মাঝখানে চলে এসেছে।সেদিকে খেয়াল নেই।যখন খেয়াল হলো তখন একটা গাড়ি এসে,ইফাদকে রাস্তার মাঝে ফেলে দিল।মুহূর্তের মধ্যেই রাস্তা রক্তে ভেসে গেলো।আশেপাশের মানুষ জড় হয়ে গেলো।গাড়ি আলা ইফাদকে সরতে বলেছিল।ইফাদ খেয়াল করে নাই।ইফাদের অসচেতনতার কারনে এতবড় দুর্ঘটনা ঘটে গেল।সবাই মিলে,ইফাকে কাছের একটা হসপিটালের নিয়ে গেলো।

তানহা ইফাদের জন্য অপেক্ষা করছে।কখন আসবে বিকেল হয়ে আসছে প্রায়।দুপুর গোসল করে নামাজ পরে খেয়ে বসে আছে।ইফাদের কোনো খোঁজ নেই।তানহার মন খারাপ হয়ে গেলো।নিজেই ফোন হাতে নিল।ইফাদের নাম্বারে ফোন করলো।কিন্তু অপরিচিত কণ্ঠে ভেসে আসলো’।

–আপনি যাকে ফোন দিয়েছেন।উনি এক্সিডেন্ট করেছে।আপনি ওনার কে হন।তাড়াতাড়ি হসপিটালে চলে আসুন।তানহা একটা চিৎকার দিল।ফোনটা হাতে থেকে বিছানায় পড়ে গেলো।উঠে শাশুড়ী মায়ের কাছে যাবে।তার শক্তিটুকু পাচ্ছে না।পুরো শরীর অবশ হয়ে আসছে।পা যেনো চলছে না।শরীরের রীতিমতো কাঁপুনি উঠে গেছে।তানহার চিৎকার শুনে রোকেয়া বেগম তানহার রুমে আসলেন।

–কি হয়েছে মা তুমি চিৎকার করলে কেনো?

–আম্মা উঠি এক্সিডেন্ট করেছে।তাড়াতাড়ি উনার কাছে যেতে হবে।চলুন।বলেই পাগলের মতো চলে যেতে লাগলে রোকেয়া বেগম তানহাকে ধরে ফেলে।বিপদের সময় ক’জন মানুষ মাথা ঠান্ডা রাখতে পারে।রোকেয়া বেগম ঠান্ডা মাথায় আছেন।তানহার সাথে যদি সে-ও পাগলামি করে।তাহলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে না।

–চুপ কি হয়েছে কান্না করছো কেনো?একটু দাঁড়াও আমি এখনই আসছি।আমাদের ইফাদের চিকিৎসা এমনি এমনি করে দিবে।খালি হাতে চলে যাব।বলেই নিজের রুমে গেলো।কিছু টাকা হাতে নিয়ে বাসায় তালা দিয়ে হসপিটালের উদ্দেশ্যে রওনা দিল।তানহার বুকের ভেতরে ঝড় বইয়ে যাচ্ছে।মনটা ইফাদকে দেখার জন্য উতলা হয়ে উঠেছে।ছোট বাচ্চাদের মতো কান্না করছে।রোকেয়া বেগম স্তব্ধ হয়ে গেছেন।মুখে নেই কোনো কথা।বাহিরে যতটা শক্ত দেখাচ্ছে।ভেতর থেকে তিনি দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছেন।অবশেষে হসপিটালে পৌঁছে গেলো দু’জন।তারা পরিচয় দিলে,একটা লোক ইফাদের ফোন তাদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে সবাই চলে গেলো।ডক্টর ইফাদকে দেখছে।তানহা আর রোকেয়া বেগম বাহিরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে।এখন অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।তানহা আল্লাহর কাছে ইফাদের জন্য দোয়া করছে।

চৈতালি বাসায় এসে অবাক হয়ে গেলো।তাদের বাসায় কখনো তালা ঝুলানো থাকে না।তাহলে আজকে হঠাৎ কি হলো যে,বাসায় তালা দিতে হলো।চৈতালি তানহাকে ফোন দিলো।কিন্তু ফোন রিসিভ হলো না।তানহা ফোন বাসায় রেখে গেছে।চৈতালি চিন্তায় পড়ে গেলো।ইফাদকে ফোন দিতেই তানহা ফোন ধরলো।কান্না মিশ্রণ কণ্ঠে সবকিছু জানালো।সবকিছু শুনে চৈতালির আত্মা কেঁপে উঠলো।সবকিছু ফেলে দ্রুত হসপিটালের দিকে ছুটে গেলো।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here