#এক_মুঠো_কাঁচের_চুরি
#পর্ব_২৫
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu
রোকেয়া বেগম তানহার কাছে আসলো।তানহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল।
–তুমি আমার ওপরে রাগ করেছো মা।কাল থেকে তোমার সাথে ভালো করে কথা বলি নাই।ডাকলে ফিরিয়ে দিয়েছি।আসলে চৈতালির এমন ব্যবহার আমি মেনে নিতে পারি নাই।আমার ছেলেমেয়ে গুলো এমন ছিল না।তবে আমার মেয়েটা এমন হয়ে গেল কি করে।চৈতালির ব্যবহার আমাকে খুব করে কষ্ট দিচ্ছে।নিজের মেয়ে হয়।কিছু বললে-ও নিজের কাছেই খারাপ লাগে।
–আম্মা আপনার ওপরে আমি রাগ করি নাই।চৈতালি ছোট মানুষ আবেগে বশীভুত হয়ে এমন করছে।যখন সত্যিটা উপলব্ধি করতে পারবে।তখন বুঝতে পারবে।নিজেই কষ্ট পাবে।জীবনে কতবড় ভুল করেছে।আপনি মনে কষ্ট নিয়েন না।ওকে ডেকে নিয়ে এসে,খেতে দিন।
রোকেয়া বেগম চৈতালির রুমের কাছে এসে,নরম কণ্ঠে বলল।
–মা চৈতালি দরজা খোল।সারাদিন না খেয়ে আছিস।খেয়ে নিবি মা আয়।
চৈতালি ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে বলল।
–আম্মু তুমি যাও।আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
হাজারটা ভুল করার পরে-ও সেই ভুলগুলো মাফ করে দিয়ে,বুকে টেনে নেওয়ার নামই হলো পরিবার।
সন্ধ্যার নামাজ শেষ করে,ড্রয়িং রুমে আসলো তানহা।ইফাদ মসজিদে গিয়েছে।রোকেয়া বেগম ড্রয়িং রুমে বসে মেয়ের মাথায় তেল দিয়ে দিচ্ছে।মেয়েটার মুখখানা একদম মলিন হয়ে গেছে।দু-চোখে কি অসহায়ত্ব।চোখের কোণে পানি জ্বলজ্বল করছে।চৈতালির মুখের দিকে তাকিয়ে তানহার খুব মায়া হলো।ইচ্ছে করছে,সবকিছু ভুলে চৈতালিকে বুকে টেনে নিতে,মনের আশা মনে রেখে রোকেয়া বেগমকে বলল।
–আম্মা নাশতায় কি তৈরি করবো।
–তোমার যা ভালো লাগে মা।তানহা রান্না ঘরের দিকে যাবে।এমন সময় দরজায় কলিং বেল বেজে উঠলো।ইফাদ এসেছে ভেবে,খুশি হয়ে দরজা খুলতে গেল।দরজা খুলে রীতিমতো মতো অবাক হয়ে গেল তানহা।
–চাচা আপনি।
–হ্যাঁ রে মা তোকে দেখতে আসলাম।
–আপনি আসবেন আগে বলবেন না।
–মেয়ের বাসায় আসবো বলা লাগবে নাকি।আমার যখন ইচ্ছে হবে আমি আসবো।
–আমি কি নিষেধ করেছি।এত বছর পরে বুঝি মেয়ের কথা মনে পড়ল।
–কোন মুখ নিয়ে আসতাম বল।
–বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকবেন নাকি ভেতরে আসবেন।মাহতাব সাহেবের হাতে মিষ্টির ব্যাগ গুলো।তানহার হাতে ধরিয়ে দিল।
–এসবের কি দরকার ছিল চাচা।
–আমার মেয়ের জন্য নিয়ে আসবো না।
–এসবের কোনো দরকার ছিল না।
কথা বলতে বলতে দু’জন ভেতরে আসলো।রোকেয়া বেগমকে দেখে মাহতাব সালাম দিয়ে বলল।
–কেমন আছেন ভাবি।আপনাকে ভাবি বলেই সম্মোধন করলাম।কিছু মনে করবেন না।আপনার স্বামীকে আমরা বড় ভাই মেনেছি।
–আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আপনি কেমন আছেন।আপনি আমাকে ভাবি বলে ডাকতে পারেন সমস্যা নেই।দাঁড়িয়ে না থেকে বসুন।খুব খুশি হব।
–ভাবি রাগ না করলে আপনার থেকে একটা অনুমতি চাই।
–কিসের অনুমতি ভাই।
–আমার আবিরের বিয়ে,তাই তানহা আর ইফাদকে কয়টাদিন আমাদের বাসায় রাখতে চাই।বিয়ে হয়েছে কতগুলো দিন।একটা দিন বাসায় নিয়ে যেতে পারি নাই।লজ্জায় বলতেও পারি না।আপনি যদি অনুমতি দিতেন।
রোকেয়া বেগম একবার চৈতালির দিকে তাকালো।চৈতালি উঠে নিজের রুমে চলে গেল।রোকেয়া বেগম দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল।
–নিয়ে যান কোনো সমস্যা নেই।মেয়েটা আমার সারাদিন বাসায় থাকে।আপনাদের বাসায় গেলে,তানহার-ও ভালো লাগবে।
–আমি তানহা ও ইফাদের সাথে আপনাদের-ও নিয়ে যেতে চাই।আবিরের বিয়ের সাতটা দিন আপনারা আমাদের বাসায় থাকবেন।
–দুঃখিত আমরা এত আগে যেতে পারবো না।বিয়ের দিন অবশ্যই যাব।আপনি ইফাদ আর তানহাকে আগে নিয়ে যেতে পারেন।
–অনুমতি দিলে আজকে নিয়ে যেতে পারবো।
–কিন্তু রাত করে কেনো?
–তানহার চাচি তানহা আর জামাইয়ের জন্য পিঠেপুলির আয়োজন করেছে।
–আচ্ছা ইফাদ আসলে কথা বলে নিয়ে যাবেন।তানহা তুমি আমার সাথে এসো।বলেই রান্না ঘরে নাশতা তৈরি করতে আসলো।একটু পরে তানহা নাশতা নিয়ে চাচার সামনে হাজির হলো।
–এসবের কি দরকার ছিল মা।আমরা এখনই চলে যাব।
–আপনার জামাইকে তো’ আসতে দিবেন।উনি আসুক।না জানি আবার পারার মোরে আড্ডা দিতে বসে গিয়েছে।
–তুই গিয়ে জামাকাপড় গুছিয়ে নে।
–আচ্ছা চাচা।বলেই নিজের রুমে আসলো।
রোকেয়া বেগম চৈতালির জন্য নাশতা নিয়ে চৈতালির রুমে আসলেন,মেয়ে বালিশে মুখ গুঁজে কান্না করছে।দেখে বুকের ভেতরটায় চিনচিন করে ব্যথা করে উঠলো।মেয়ে যতই খারাপ হোক যতই অন্যায় করুক।মা হয়ে মেয়ের চোখের পানি সহ্য করা খুবই কষ্টকর।রোকেয়া বেগম মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিল।স্নেহের হাত মাথায় পেয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না করে দিল চৈতালি।রোকেয়া বেগম মেয়েকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলল।লেখিকা ফাবিহা বুশরা নিমু।
–কান্না করিস না মা।আমরা তোর সাথে এমনি এমনি খারাপ ব্যবহার করি নাই।মা হয়ে এত বড় মেয়ের গায়ে হাত তোলা কতটা কষ্টকর তুই যদি বুঝতি।তুই আজকে বুঝবি না।যেদিন মা হবি।সেদিন বুঝতে পারবি।তুই যে,আমাদের খুব আদরের,আমরা কি করে তোর জীবনটা নষ্ট হতে দিতে পারি বল।রোকেয়া বেগম মেয়েকে বুঝিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে আসলো।
ইফাদ বাসায় এসে মাহতাব সাহেবকে দেখে সালাম দিল।দু’জন কুশল বিনিময় করলো।মাহতাব সাহেব ইফাদকে উদ্দেশ্য করে বলল।
–যাও বাবা তৈরি হয়ে নাও।আমাদের রওনা দিতে হবে।
–রওনা দিতে হবে মানে?
–তোমাকে আর তানহাকে নিতে যেতে এসেছি।কয়টাদিন থাকবে আমদের বাসায়।কথা না বলে,তানহাকে নিয়ে আসো।
–ইফাদ তোর চাচা অনেকক্ষণ ধরে তোর জন্য অপেক্ষা করছে।আজকে থাকতে বলছি।উনি থাকবে না।তোর চাচি নাকি তোদের জন্য পিঠাপুলির আয়োজন করেছে।রাত হয়ে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি বেড়িয়ে পড়।
ইফাদ রুমে এসে দেখলো,তানহা বোরকা পড়ছে।
–তানহা রে আমি শশুর বাড়ি যাব।আমার কি যে,শরম লাগছে।
ইফাদের হঠাৎ চিৎকারে তানহা চমকে উঠলো।
–এটা কেমন ধরনের বেয়াদবি।কথা নেই বলা নেই।হুট করে এসে চিৎকার দেন।ফাজলামি বাদ দিয়ে রেডি হয়ে নেন।বেশি কথা বললে,আপনাকে রেখেই চলে যাব।
–আমাকে না নিয়ে গেলে,তোমাকেও যেতে দিব না।কথা বলতে বলতে ইফাদও তৈরি হয়ে নিল।রোকেয়া বেগমের থেকে বিদায় নিয়ে তিনজন মিলে,বেড়িয়ে পড়ল।রোকেয়া বেগম দরজা লাগিয়ে দিয়ে,মেয়ের রুমে আসলেন।আজকে মেয়ের সাথেই থাকবেন।
ইফাদ আর তানহাকে দেখে বেশ খুশি হলো হাসনা বেগম।বাড়িতে কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন এসেছে।বাসায় খুশির আমেজ লেগেছে।প্রতিটি মানুষের অধরের কোণে হাসি।তানহা নিজের রুমে ব্যাগ রেখে সবার সাথে যোগাদান করল।ইফাদ এখনো রুমে যায় নাই।মাহতাব সাহেবের সাথে বসে গল্প করছে।আবিরের দেখা এখনো মেলেনি।আবিরের রুমের দরজা বন্ধ।আবিরের বিয়ের কথা শুনে,ইফাদ কিছুক্ষণ চুপ ছিল।একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে মাহতাব সাহেবের সাথে বিয়ের প্ল্যান করছে।কাকে কাকে দাওয়াত দিবে।কোথায় কি কি লাগবে।কত খরচ হবে।ইফাদের ব্যবহার মাহতাব সাহেব’কে মুগ্ধ করে তুলেছে।ছেলেটা কত ভালো।একদিনেই কেমন মিশে গিয়েছে।ইফাদকে দেখলে কেউ বলবে,ইফাদ এ বাড়ির জামাই।সবাই মনে করবে ইফাদ আবিরের ছোট ভাই।মাহতাব সাহেব ইফাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করে দিল।ইফাদ মিষ্টি হাসি,মাহতাব সাহেবকে উপহার দিল।তানহা এসে ধুপিপিঠা,
পাকোয়ান পিঠা,শুকনা চিতায় পিঠা দিয়ে গেল।আবির রুম থেকে বেড়িয়ে ইফাদকে দেখে তাদের সাথে যোগদান করল।লেখিকা ফাবিহা বুশরা নিমু।
–ইফাদ যে,কেমন আছো তুমি?
–আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
–রাগ করে আছো আমার ওপরে।
–আমি কেনো আপনার ওপরে রাগ করতে যাব।
–আহ আবির এসব কি কথা হচ্ছে,ছেলেটা প্রথম আমাদের বাসায় আসলো।আগের প্রশ্ন বাদ দাও।
–ইফাদ আমার ভাই হয়।আমি ভাইয়ের সাথে কথা বলতে পারি না।
–আপনি বলুন সমস্যা নেই।
তানহা দুই হাতে দু’টো বালতি নিয়েছে।দুই বালতি ভর্তি পানি।দুটো বালতি টানতে হিমসিম খাচ্ছে।সবার সামনে খুব বাহাদুরি দেখিয়ে বলেছিল পারবে।শশুর বাড়িতে কত বড় বড় বালতিতে পানি টেনেছে।এই বালতি দুটো একদম ছোট।এটা তানহার কাছে কোনো ব্যাপারই না।এখন হারে হারে টের পাচ্ছে।তানহার কষ্ট হচ্ছে দেখে ইফাদ উঠে আসলো।তানহার দু-হাত থেকে বালতি নিয়ে,হাসতে হাসতে বলল।
–কি ম্যাডাম আজকে আবার বাহাদুরি দেখাতে গিয়িছেন।আপনার যে,শরীর এই শরীর নিয়ে বাহাদুরি একদম মানায় না।ভাগ্য ভালো আপনার শরীরটা এখনো মট করে ভেঙে পড়ে নাই।
তানহা রাগী দৃষ্টিতে ইফাদের দিকে তাকালো।
–তোমাকে বলেছি তুমি এসো,আমাকে সাহায্য করো।
তানহার কথা শুনে,ইফাদ চোখ গোল গোল করে তাকালো।
–বউজান তুমি আমাকে তুমি করে বললে,আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।মানুষ না থাকলে এখনই,,
–থামবেন আপনি,রান্না ঘরে পানি গুলো দিয়ে আসুন লাগবে।
–তুমি করে না বললে,যাব না।
–তাহলে এখানেই সারাদিন দাঁড়িয়ে থাকেন।আমি গেলাম।বলেই তানহা হাঁটতে শুরু করলো।ইফাদ মুখ ভার করে তানহার পেছনে পেছনে গেল।
তানহার প্রতি ইফাদের ভালোবাসা দেখে মাহতাব সাহেবের চক্ষু জুড়িয়ে গেল।আবির ইফাদ আর তানহার দিকে তাকিয়ে বলল।
–ইফাদই তানহার যোগ্য।ইফাদের মতো ছেলেরাই পারে,তানহার মতো মেয়েদের মনের রাণী করে রাখতে।আমি কখনো ইফাদের মতো করে তানহাকে রাখতে পারতাম না।তা-না হলে তানহাকে ভালোবেসে বিদেশে গিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করি।মানুষ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয়ে যায়।আমি’ও হয়তো সময়ের সাথে পরিবর্তন হয়ে গিয়েছি।আগে তানহাকে ভালো লাগতো,প্রিয়াকে দেখার পরে আর লাগে না।ভাবতেই দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো।
কাজকর্ম,নামাজ,খাওয়া-দওয়া করতে করতে প্রায় এগারোটা বেজে গেল।তানহা সবে নিজের রুমে আসলো ইফাদকে নিয়ে।মেয়েটা চাচার বাসায় এসে অনেক খুশি হয়েছে।তা তানহার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।মুক্ত পাখির মতো বাসার এদিক-ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছে।দেওয়ালে ঝুলানো লাল কাগজের ফুলগুলো ইফাদকে দেখিয়ে বলল।
–এই দেখুন।এই ফুল গুলো আমি বানিয়েছি।আমি অনেক সুন্দর সুন্দর ঘর সাজানোর ফুল বানাতে পারি।আমার অনেক ইচ্ছে ছিল।আমি বড় হয়ে রোজগার করবো।কিন্তু আমার পড়াশোনায় তো’ হলো না।ইচ্ছেটা মাটি চাপা পড়ে গেল।আমার আরো ফুল আছে দেখবেন।
–আমারো একটা ফুল আছে।অনেক সুন্দর ফুল।একবার দেখলে সারাজীবন দেখতে ইচ্ছে করবে।
–কোথায় আপনার ফুল।আমাকে কোনোদিন দেখান নাই তো।
–কাউকে দেখাবো না।ফুলটা আমার খুব প্রিয়।ফুলটাকে শুধু আমি একা দেখবো।
–কোথায় দেখান আপনার ফুল।যত সুন্দর ফুলই হোক না কেনো?আমার থেকে সুন্দর ফুল আপনি বানাতে পারবেন না।
–এদিকে এসো আমি তোমাকে দেখাচ্ছি।পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর আমার ফুলটা।তোমার ফুলের থেকে-ও বেশি সুন্দর আমার ফুল।তানহা ইফাদের পাশে এসে দাঁড়াল।ইফাদ তানহার হাত ধরে টেনে নিজের কোলে বাসালো।তানহার ঘাড়ে থুতনি রেখে বলল।
–এই যে,এটা আমার ফুল।তোমার ফুলের থেকে আমার ফুলটা বেশি সুন্দর না।আমার চোখে দেখা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সুন্দরী নারী হলো আমার বউজান।আমার চোখে আমার বউজানের মতো সুন্দর কেউ না।
ইফাদের কথায় তানহা লজ্জা পেয়ে,মাথা নত করে ফেলল।ইফাদ তানহার ঘাড়ে অধর ছুঁইয়ে দিল।তানহা কিছুটা কেঁপে উঠলো।তানহার হাতের ভাজে নিজের হাত এক করে দিয়ে বলল।
–এটা কিন্তু ঠিক না।তুমি তোমার ডায়েরিতে আমাকে তুমি বলে সন্মধোন করো।কিন্তু বাস্তবে আমাকে আপনি করে বলো।এটা কিন্তু একদম ঠিক না।তোমার মুখে আপনি ডাক শুনতে ভালো লাগে না।তখন কি সুন্দর করে তুমি করে বললে,প্রাণটা আমার জুড়িয়ে গিয়েছিল।তুমি আমাকে ডায়েরিতে ভালোবাসো বাস্তবে না।
–এটা কিন্তু একদম ঠিক না।কাউকে না বলে,কারো জিনিসে হাত দেওয়া ঠিক না।
–আমি ঘুমিয়ে গেলে,আমাকে না বলে আমার ফোন চেক করো কেনো?
–আমার অধিকার আছে।তাই আমি আমার স্বামী ফোনে হাত দেই।
–আমরাও অধিকার আছে।তাই আমি আমার বউয়ের ডায়েরিতে হাত দিয়েছি।আমাকে নিয়ে তার লেখা অজস্র শব্দ,আমার হৃদয়ে দাগ কেটেছে প্রতিটি শব্দ,তার লেখার প্রেমে পড়েছি নতুন করে।তার মনের অনুভূতি গুলো তার মতোই স্নিগ্ধ আর সুন্দর।আমি তোমার ভালোবাসা খুঁজতে গিয়ে আমি তোমাতেই হারিয়ে গিয়েছি বারংবার।
তানহা এক হাতে ইফাদের চুলে হাত দিয়ে খুশিতে উৎফুল্ল হয়ে বলল।
–বাবা বাহ আপনি এত সুন্দর কথা বলতে,কবে থেকে শিখলেন।
–যেদিন থেকে তোমাকে দেখেছি।
–হয়েছে এবার আমাকে ছাড়ুন।
–তুমি করে না বললে,ছাড়বো না।তখন ছেড়ে দিয়েছি।এবার তোমাকে কে বাঁচাবে।
–আচ্ছা তুৃমি করে বলবো।তবে আমার একটা শর্ত আছে।
–কি শর্ত?
–আমাকে কোলে নিয়ে এই রুমে গোল গোল হয়ে ঘুরতে হবে।তাহলে আমি আপনাকে তুমি করে বলবো।
–তোমর মতো হাড্ডি মন্ত্রীকে কোলে নেওয়া ওয়ান-টু এর বিষয়।বলেই তানহাকে কোলে তুলে নিল।
–আপনি আমাকে অপমান করলেন।আপানকে তুমি করে বলবো না।
–তাহলে আমি’ও তোমাকে নিচে নামাবো না।
তানহা ইফাদের গলা জড়িয়ে ধরলো।এক দৃষ্টিতে ইফাদের দিকে তাকিয়ে আছে।মানুষটাকে কাছে থেকে দেখলে,তানহার খুব লজ্জা লাগে।একবার তাকাচ্ছে।আরেকবার চোখ নামিয়ে নিচ্ছে।
–যত ইচ্ছে খুশি দেখো।তোমারই তো বর।ইফাদের কথা শুনে লজ্জায় ইফাদের বুকে মুখ লুকালো তানহা।
চলবে…..
(