#এক_শ্রাবণ_হাওয়ায়
#লেখিকা – কায়ানাত আফরিন
#পর্ব – ৬+৭
-‘কি ম্যাডাম? এভাবে আমার দিকে ঝুঁকে ছিলে কেনো? গতবারের মতো এবারও আমার ঘুমের ফায়দা উঠাতে ইচ্ছে হয়েছে?ইয়া মাবুদ ! এই মেয়ে আবারও আমায় নাপাক বানিয়ে দিলো।’
আমার মাথা ঘুরাচ্ছে এবার উনার কথা শুনে। এই মানুষটা যে কতটা অসভ্য হতে পারে তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। লজ্জায় না পাচ্ছি সরতে না পারছি কিছু বলতে। আনভীরের সদ্য ঘুম থেকে উঠা মুখটাতে কৌতুহলতার ছাপ। আল্লাহ ! আমায় তুলে নিয়ে যাও।
আমায় এতটা বিব্রত হতে দেখে আনভীর ভ্রু নাচালো এবার। সাথে সাথেই সরে আসলাম আমি। আমার বুক রীতিমতো ধুকধুক করছে এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতির জন্য। আমি আমতা আমতা করে বললাম,,
-‘উল্টাপাল্টা কথা বলা বন্ধ করুন। আমি কেনো আপনার ফায়দা উঠাবো? আমি তো শুধু আপনাকে ডাকছিলাম।’
আনভীর সরু কন্ঠে বললেন,,
-‘তাই বলে আমার ওপর ঝুঁকে এভাবে ডাকবে?ইন্টেরেস্টিং প্রক্রিয়া তো!’
আমি চুপ হয়ে গেলাম এবার। এই মানুষটা রীতিমতো জব্দ করার চেষ্টা করছে আমায়। একটু আগে করা নিজের উদ্ভট কাজের জন্য এবার নিজেকেই আমার গালি দিতে ইচ্ছে করলো। তখন ওভাবে না দেখলেই তো আর এখন হাতে-নাতে ধরা পড়তাম না। আনভীর উঠে দাঁড়ালেন এবার। এলোমেলো চুলগুলো ঠিক করতে করতে বলে ওঠলেন,,,
-হয়েছে।এখন উল্টাপাল্টা জিনিসে ভাবাভাবি করতে হবে না।পড়াশোনায় মন দেওয়াটাই তোমার জন্য বেটার। আমি আজ ভার্সিটির পর নীলক্ষেত যাবো তোমার জন্য বই আনতে।
আমি বললাম, ‘আপনি না বলেছিলেন যে আমিও যাচ্ছি?’
-‘এখন আর যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আমি এনে দিবো নে।’
আনভীরের কথার বিনিময়ে কিছু বললাম না আমি।উনি দ্রুতপায়ে লাইব্রেরি থেকে বেডরুমে চলে গেলেন এবার। হয়তো আজ দ্রুতই ভার্সিটি চলে যাবেন বা অন্যকোথাও। তবে সেরাতের ঘটনার পর থেকে আমি আর কখনোই উনাকে কোথায় যান,,,কখন আসবেন এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করিনি। মনে যেন অজান্তেই ভয়ে জেঁকে ওঠে উনার বিক্ষোভ ব্যাবহারে। প্রথম প্রথম কষ্ট হতো অনেক যে মানুষটা এমন কেনো,,,,,হ্যাঁ মানছি যে আমাদের তাৎক্ষণিক বিয়ের সময় উনার প্রতি যে ব্যবহারটা হয়েছিলো সেটা অনুচিত,এটাও মানছি যে আমি ভুল করেছিলাম তাই বলে আমায় ঘৃণার তালিকায় রাখবেন ? যদিও এখন এসব ব্যাপারে আমি অভ্যস্ত। আগের মতো তেমন একটা কাদায় না। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম। সময় দ্রুত পার হয়ে যাচ্ছে। তাই এবার নুড়ী আপার কাজে সাহায্য করার জন্য আমি রান্নাঘরে চলে গেলাম।
_______
বরাবরের মতো সবাই একে একে বসে পড়েছি ডাইনিং টেবিলে। বাবা ইতিমধ্যে পেপার পড়া শেষ করে ডাইনিং রুমে চেয়ারে এসে বসলেন। আনভীর চুপচাপ ব্রেকফাস্ট খাচ্ছে আমার পাশে। ঘড়ির দিকেও তাকাচ্ছে বারবার। হয়তো আজকে উনার দেরি হয়ে গিয়েছে। আজরান ভাইয়া হঠাৎ খাওয়ার মাঝে বাবাকে বললেন,,,
-‘বাবা গতরাতে তোমায় বলতে ভুলে গিয়েছিলাম যে আমাদের ক্লায়েন্ট শাহজাহান আঙ্কেলের মেয়ের বিয়ের দাওয়াত দিয়েছে আমাদের সবাইকে।’
-ওহ তাই নাকি? তাহলে তো ভালোই।
আজরান ভাইয়া অপ্রস্তুত কন্ঠে বললেন,,
-আসলে বিষয়টা হলো যেদিন বিয়ের ডেট পড়েছে সেদিন মায়ের চেকআপ আছে হাসপাতালে। ডাক্তার অ্যাপয়েনমেন্ট দিয়েছিলো। আর তুমি তো জানোই যে ডাঃ জাহিদা কত ব্যস্ত মানুষ। একটা অ্যাপয়েনমেন্ট মিস হয়ে গেলে পরে আরেকটা অ্যাপয়েনমেন্ট পেতে প্রায় সপ্তাহখানেক লাগবে। আর এতে যদি মায়ের শরীরের কন্ডিশনের কোনো সমস্যা হয়?
মা আজরান ভাইয়াকে বাধাঁ দিয়ে নীরব কন্ঠে বললেন,,,
-আরে কোনো সমস্যা হবে না। তোমরা সবাই যাও। ড্রাইভারকে শুধু বলে দিও যে সেদিন আমায় ডাঃ জাহিদার চেম্বারে নিয়ে যেতে। আমি নিজেই যেতে পারবো।
আজরান ভাইয়া কিছুতেই প্রসন্ন হলেন না এতে। বললেন,,
-না মা। তোমায় আমি একা কিছুতেই ছাড়বোনা। বয়স তো কম হয়নি। তার ওপর আবার হাড়ের সমস্যা।
বাবা ভাবলেন কিছুক্ষণ। তারপর বললেন,
-‘ঠিক আছে,,,,আমি আর তোমার মা তাহলে যাবোনা বিয়েতে। আমি তোমাদের মা’কে নিয়ে হসপিটালে যাবো । আজরান-শিউলি , আনভীর-আহি ; তোমরা সবাই একসাথে যেও।’
আজরান ভাইয়া সম্মতি জানাতেই যাচ্ছিলেন আনভীরের শুকনো কাশির শব্দে দমে গেলেন উনি। আনভীর খাওয়া ছেড়ে শীতল দৃষ্টিতে তাকালেন বাবার দিকে। এতক্ষণের কথা বার্তার আমেজের অবাসান ঘটে হঠাৎ পুরো ডাইনিং রুম হয়ে গেলো নির্বার্ক। আনভীর মৌনতা কেটে বলে উঠলেন,,
-আজরান ভাইয়া আর ভাবি যাক অনুষ্ঠানে,,আমি যাবো না।
বাবা সরু চোখে উনার দিকে তাকিয়ে আছেন। তবে উনি নির্বিকার। আমি প্লেটের খাবারে আঙুল নাড়িয়ে যাচ্ছি বারবার। বাবা গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করলেন,,,
-কেনো তোমরা যাবে না?
-আমি বলেছি যে আমি যাবো না ,, ভাইয়া-আর ভাবির সাথে যদি আহি যেতে চায় যাক,,দ্যাটস নট মাই ম্যাটার।
আনভীরের এমন কথায় ক্ষিপ্ত হয়ে পড়লেন বাবা। ক্ষুব্ধ গলায় বলে উঠলেন,,
-হোয়াটস নট ইউর ম্যাটার আনভীর? আহি তোমার ওয়াইফ। কিভাবে তুমি ওকে হেয় করতে পারো?
আমি এবার গুটিশুটি মেরে বসে আছি টেবিলে। আজরান ভাইয়া বাবাকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন আর ইশারায় বারবার আনভীরকে বলছেন থামতে। কিন্ত আনভীর দমে যাওয়ার পাত্র নন। সে কিছুতেই যাবেন না। আমি স্পষ্টত বুঝতে পেরেছি কারনটি। বাবা এবার জিজ্ঞেস করলেন,,
-‘তোমার এমন অবাধ্য হওয়ার কারনটা কি জানতে পারি আনভীর? একটা মেয়ে তার পরিবার ছেড়ে তোমার সাথে এজন্য থাকতে এসেছে যে তুমি ওকে হেয় করো?’
আনভীর এতক্ষণ চুপ থাকলেও আর চুপ থাকতে পারলেননা। ক্ষিপ্ত কন্ঠে বলে ওঠলেন,,
-‘কোন দিক দিয়ে আহিকে আমি হেয় করেছি বাবা? তোমার কথামতোই ওর পড়াশোনার সব ব্যবস্থা করলাম আমি,,,,একটা টু শব্দও করিনি। তারপরও তুমি বলবে ওকে হেয় করা হচ্ছে?,,,,,,,,,,(কিছুক্ষণ থেমে) তুমি এখন যাই ভাবো না কেনো,,,,আই ডোন্ট কেয়ার। এই ভাবাটা আমাদের বিয়ে দেওয়ার আগে তোমার ভাবা উচিত ছিলো যে আমার সাথে বিয়ে হওয়ার পরে ওর কি হতে পারে।’
একথাটা বলে খাওয়া শেষ না করেই টেবিল ছেড়ে উঠে দাড়ালেন আনভীর।হাত ধুয়ে আমার দিকে একটা শীতল চাহিনী নিক্ষেপ করে চলে গেলেন বাসা থেকে। মা বহুবার প্রচেষ্টা চালালেন ছেলেকে খাওয়াটা শেষ করে বাইরে যাওয়ার জন্য। কিন্ত পারেননি। আমি মাথা নিচু করে টেবিলে বসে আছি। সিক্ত চোখ আড়াল করার চেষ্টা করছি বারবার। মা একটু রেগে বাবাকে বললেন,,
-‘আহির জন্য ছেলেটার সাথে এমন করতে পারলে তুমি? একদন্ড ওকে শান্তিতে খেতে দিতে দিতে তো পারতে!’
বিষন্ন হলেন বাবা। মায়ের দিকে স্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললেন,,
-‘তোমার ছেলের মতো আহিও কারও মেয়ে সেলিনা। সবাইকে সম্মান দিতে শিখো।’
নাস্তা শেষ করলেন বাবা। তারপর রেডি হয়ে কারও সাথে কথা না বলেই আজরান ভাইয়ার সাথে কাজে চলে গেলেন। আমি চুপচাপ ভাবির সাথে রান্নাঘরে কাজ সামলাচ্ছি। ভাবি কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারলো । কি বলবে ভাবি? সে তো এখনও বুঝতে পারছে না আমার আর আনভীরের মধ্যকার সম্পর্কটা ঠিক কেমন। এই আনভীর সবার সামনে আমার সাথে ভালো ব্যবহার করে আর এই আমায় নিয়ে কারও সাথে কোনো কথা বললে দ্বন্দ লেগে যায়।
আমি শুধু একটা বিষয়ই ভাবলাম,,,,আনভীর তাহলে স্বেচ্ছায় আমাকে পড়াতে চাননি। উনি যা করেছেন সবটা করেছেন বাবার কথামতো। ভাবতেই বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো আমার।
______________
সন্ধ্যার সময় শিউলি ভাবির সাথে কথা বলছিলাম বসে বসে তখনই দরজায় কলিংবেল বাজলো হঠাৎ। আমি আর ভাবি একে অপরের দিকে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে তাকালাম এবার। কেননা এ সন্ধ্যার সময় তো কেউই আসেন না। আমি এবার দরজা খুলতেই দেখি আনভীর দাঁড়িয়ে আছে। উনাকে এতটা জলদি আসতে ধেখে আমি অবাক। যদিও উনি বরাবর বিকেলেই আসতেন তবে সেটা বিয়ের আগে। বিয়ের পর উনি কখনও রাত আটটার আগে বাসায় ফিরেননি। মা এই বিষয়টা নিয়ে খানিকটা অসন্তুষ্ট আমার প্রতি। যদিও এটাই স্বাভাবিক। আমি আনভীরকে মৃদু সরে বললাম,,
-‘আপনি,,,,,,আজ এত জলদি আসলেন?’
বিরক্ত হলেন উনি। একে তো বাইরের তাপদাহ গরমে অবস্থা খারাপ তার ওপর আমার কথায় তটস্থ গলায় বললেন,,
-‘এই মেয়ে নিয়ে মহা ঝামেলায় পড়েছি তো ! দেরি করে আসলেও জিজ্ঞেস করো আবার জলদি আসলেও জিজ্ঞেস করো এখন কি মধ্যরাতে বাসায় আসবো?’
আমি চোখ মুখ ছোট ছোট করলাম। বিরক্তিকর ব্যাটা আমি নাকি আপনি?এমনিতেও আটটার আগে হদিস পাওয়া যায় না,,,,,এখন জলদি আসলে জিজ্ঞেস করাটা আমার স্বাভাবিক নয় কি? আবার মা প্রশ্ন করলে যদি উত্তর দিতে না পারি তখন আবার রেগে যাবেন। সবদিকে আমার হয়েছে জ্বালা। আমায় দরজায় সামনে পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে উনি কপাল ভাঁজ করে বললো,,,
-আমায় ফুল দিয়ে বরণ করা ইচ্ছে আছে?,,,,,,, ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছো না কেনো?
পেছনে শিউলি ভাবি চাপা হাসি হাসলো। আমি মুখ ফুলিয়ে সরে আসতেই উনি জুতো খুলে ভেতরে ঢুকলেন। উনার চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ। হাতের একটা বইয়ের বিশাল প্যাকেট দেখেই আমার মাথা ঘুরপাক খেতে লালো। আল্লাহ ! এই এত বই কি উনি আমার জন্য নিয়ে এসেছেন? আমি তো তবে পড়তে পড়তেই শহীদ হয়ে যাবো।
আনভীর সময়বিলম্ব না করে গম্ভীর কন্ঠে বললো,,
-রুমে আসো এখনই।
বলে উনি বড়ো বড়ো পা ফেলে রুমে চলে গেলেন।শিউলি ভাবি দুষ্টু কন্ঠে বললো,,,
-‘যাও,,,,,বরসাহেব তোমায় ডাকছে।’
আমি উনার দিকে সরু চোখে একপলক তাকিয়ে রুমে গেলাম। আনভীর নিজের বইগুলো স্টাডি টেবিল থেকে সরিয়ে আমার জন্য কেনা বইগুলো একে একে টেবিলে রাখছেন। মেডিক্যালের ভর্তি প্রস্তুতির জন্য এত বড়ো বড়ো গাইড দেখে আমার চোখ যেন রীতিমতো বেরিয়ে গিয়েছে। আনভীর এবার বললেন,,
-‘তোমার প্রয়োজনীয় সব বইপত্র এখানে রাখা আছে। আর তোমায় বলেছিলাম না আমার এক ফ্রেন্ড মেডিকেলের এডমিশন টেস্ট এর জন্য কোচিং করায়। সেখানে আগামীকাল থেকে যাবে তুমি।’
আমি কোনো কথা বললাম না। আনভীর আমায় এমন নির্বাক থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করলেন,,
-‘হোয়াট হ্যাপেন্ড?’
আমি শুকনো গিলে বললাম,,,
-‘ভাবছি আবার পুরোদমে পড়ালেখা শুরু করতে হবে।’
আনভীর টেবিলে হেলান দিয়ে বললেন,,
-‘ইউ আর রাইট। তাই এখন থেকে কাজকর্ম থেকে একটু সরে এসে পড়ালিখায় মন দেওয়া শুরু করো। তুমি টার্গেট রাখবে ডি এম সি’তে চান্স পাওয়ার জন্য। আর এজ ইউজুয়াল তুমি জানোই যে এটা এতটা সহজ না। বাংলাদেশে হাজার হাজার স্টুডেন্ট আছে যাদের মধ্যে মাত্র কয়েক পার্সেন্ট চান্স পায় ডিএমসিতে। তাই হার্ড ওয়ার্ক করতে হবে। বুঝেছো?’
-‘হুম।’
-‘গুড !!!’
আনভীর এবার ক্লোজেট থেকে গেন্জি ট্রাউজার নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলেন। আমি তারপর রুম থেকে বেরিয়ে এলাম।একেবারে খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে আসলাম আমি। এসে দেখি আনভীর স্টাডি টেবিলে বসে কিছু একটা করছেন। আমি কৌতুহলবশত উনার দিকে এগিয়ে গেলাম আমি। দেখে আমি হতবাক। আমার পাসপোর্ট সাইজ ছবি,,এনআইডি,,সবমিলিয়ে হুলস্থূল অব্থা। আমি অবাক হয়ে বললাম,,
-‘এগুলো কোথা থেকে আনলেন?’
-‘তোমার মারু আপু দিয়ে গিয়েছে।’
আনভীরের গম্ভীর কন্ঠ।মারু আপুর নাম শুনে আমি দ্বিধায় পড়ে গেলাম। এই সেইই মারুআপু যে আনভীরকে লাভ লেটার দিতে গিয়ে আমায় পাঠিয়েছিলো।আমি জিজ্ঞেস করলাম,,,
-এগুলো কেনো আনলেন?
-মাথাটা তোমার গিয়েছে একেবারে। তুমি মেডিকেলে অ্যাপ্লাই করবে কিভাবে করবে প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন ছাড়া?তোমার মুখ দেখেই কি কাজ হয়ে যাবে?স্টুপিড!!
আমি চুপ হয়ে গেলাম এবার। আনভীর এগুলো গুছিয়ে ডেস্কে রেখে দিলেন সন্তর্পণে। তারপর কিছু একটা ভেবে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালেন। আমি ঘুমানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম । দেখি উনি আলমারিতে কিছু একটা খুঁজছেন আনমনে। আমি জিজ্ঞেস করলাম,,,
-‘কিছু লাগবে আপনার?’
-‘তুমি যেটা করছো ওটা করো।’
উনার কড়া কন্ঠ শুনেই আমি চুপ। আমি বিছানা করে শুয়ে পড়লেও উনি তখনও আলমারি হাতাচ্ছেন তাও আবার আমার ক্লোজেটের মধ্যে। একপর্যায়ে একটা সবুজ জর্জেটের শাড়ি বের করতেই আমি হতভম্ব হয়ে উঠে বসলাম। চিল্লিয়ে বললাম,,
-‘আস্তাগফিরউল্লাহ! আপনি ছেলে হয়ে শাড়ি পড়ছেন কেন?’
আমার কথা শুনে আনভীর স্তব্ধ হয়ে আমার দিকে তাকালো। যেন এমন কথা কখনোই উনি শুনেননি। আমি ঠোঁট চেপে উনার দিকে তাকিয়ে আছি। উনি তাজ্জব হয়ে বললেন,,,,
-‘সিরিয়াসলি আহি? তোমার এটা মনে হচ্ছে যে আমি শাড়ি পড়বো?’
-‘তা নয়তো কি?তাহলে বলুন যে শাড়ি নিয়ে কি করছেন আপনি?’
আনভীর ক্ষিপ্ত হয়ে টেনে উঠালেন আমায়। উনার কাজকর্ম আমার সব মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। উনি আমার কাছাকাছি এসে দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,,,
-‘ছেলেদের হাতে শাড়িটা শুধুমাত্র বউকে পড়ানোর জন্য থাকে। নিজে পড়ার জন্য নয়। এন্ড আমি চাইলে এক্ষুণি তোমায় শাড়ি পড়াতে পারি ,,তাও আবার নিজ হাতে।ওয়ানা সি ইট?’
.
.
.
.
~চলবে,,,,,,,,,ইনশাআল্লাহ