#ও আমায় ভালোবাসেনি
২০
.
অনেক গুলো পানির ঝাপটায় চেতনা ফিরে আমার ।
চোখ খুলে দেখি আবছা আলো অন্ধকারাচ্ছন্ন একটা রুমে আমি , হাত নড়ানোর চেষ্টা করতেই দেখি আমাকে বেঁধে রাখা হয়েছে এবং আমার ঠিক সামনেই শব্দ বসে আছেন ।
আমি তাকে দেখে ভীতু কন্ঠে বলি_ আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে এসেছেন?
— তোমার আসল ঠিকানায় বেবী ।
শব্দ উঠে দাঁড়ায় । আমার কাছে এসে হাঁটুর ওপর ভর দিয়ে বসে ।
— কত্ত অপেক্ষা করেছিলাম এই দিনটার জন্য যানো তুমি? সেই প্রথম দেখা থেকেই পাগল হয়ে আছি আমি তোমায় পাবার জন্য ।
মাঝে কত কিছু করলাম , তুমি বড় হয়ে গেলে ।
জানো বড় হয়ে কতখানি সুন্দর দেখতে হয়েছ তুমি?
কিউট বাচ্চাটা ।
সে আমার মুখের দিকে হাতটা নিয়ে আসলো ।
আমি মাথা পেছনে করে বললাম_ আপনি এরকম কেনো করছেন? আমি আপনার ফ্রেন্ডের বউ এটা কি ভুলে গেছেন আপনি? লজ্জা বলতে কিছু নেই?
— নাহ্ নেই । নেই আমার লজ্জা , ভালোবাসতে কোনো লজ্জা নেই । ঐ রাইদের জন্য ছোট্ট থেকে আমায় কত কিছু স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছে ড্যু ইয়ূ হ্যাভ এনি আইডিয়া? সব হাসিমুখে কুরবান ছিলো শুধু মিথিকে ছাড়া ।
আমি তো শুধু তোমায় চেয়েছিলাম ওর থেকে, কিন্তু ও দেয়নি তাই ছিনিয়ে নেবো এখন আমি ।
মিথির সাথে আমাকে ছাড়া আর কাউকে যায় না । সব গুলোকে আমি পথ থেকে সরিয়ে দিয়েছি ।
সেই তোমার কলেজ লাইফ থেকেই । মনে আছে কতগুলো ছেলে তোমার বন্ধু হতে এসেছিলো?
ওদেরকে এলাকা ছাড়াই করেছি ।
তারপর ঐ ট্যাস্কি ড্রাইভার? ওকে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দিয়েছি । আমার মিথির উপর যে নখের আঁচড়ও কাটবে তাকে তো আমি পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিবো ।
ভালোয় ভালোয় রাইদকে সরিয়েছিলাম , ফয়সালকে সরিয়েছিলাম কিন্তু যে মুহুর্তে তুমি আমার হতে শালা রাইদ আবার ব্যাক করলো ।
এমনটা জানলে মা কে বলে আমি তখনি তোমায় নিজের করে নিতাম , বাট চিন্তা নেই এখন করে নিবো । অল ক্রেডিট গোজ টু মা ।
আফটার অল সে ই আমায় একমাত্র শুরু থেকে হেল্প করেছে।
,
আমি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করি_ মা কে?
শব্দ পেছন ঘুরে ডাকে_ মা??
অন্ধকার থেকে একটা অবয়ব আস্তে আস্তে হেঁটে আসতে শুরু করে ।
সেটা যতই দৃশ্যমান হয় ততই আমার বুকের মাঝে অজানা কষ্ট হানা দিতে শুরু করে ।
চোখ দিয়ে অনর্গল পানি পড়ে , আপনা আপনিই উচ্চারিত হয়_ মা তুমি?
শব্দ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলে_ হু মা ।
মা ই তো সেই শুরু থেকে আমায় হেল্প করে এসেছে ।
জান তুমি জানো? মা তোমায় কতটা লাভ করে?
মা জানে তুমি আমার সাথে হ্যাপি থাকবে , দ্যাটস হোয়াই সে ঐ বিয়ে বাড়ি থেকে তোমায় নিয়ে গেলো বাসায় ।
তোমায় আমার হাতে তুলে দেবার ওয়াদা করলো ।
সিরিয়াসলি সে খুব ভালো মা ।
মা যখন আমার সামনে এসে দাঁড়ালো আমি তার চোখের দিকে তাকালাম ।
ঐ দুই চোখে স্পষ্ট ঘৃণা ।
শব্দ উঠে মায়ের পাশে দাঁড়াতেই মা বললো_ শুভ কাজে দেরী করতে নেই বাবা । কাজি ডাকো তোমাদের চার হাত এক করে দিতে পারলেই আমার শান্তি ।
আমি চিৎকার করে বললাম_ আমি মরে গেলেও তোকে বিয়ে করবো না ।
কাজি ডাকলে , বিয়ের কথা বললে আমার লাশ দেখতে হবে তোকে ।
এই মিথি শুধুই রাইদের আর কারো নয় ।
সে সম্পূর্ণই রাইদের হয়ে গেছে আর কেউ তাকে পাবে না ।
,
শব্দ রেগে আমার দু গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো ।
টেনে হেঁচড়ে হিজাবটা খুলে নিয়ে চুলগুলো মুঠো করে ধরলো তারপর রাগী গলায় বললো_ তোকে তো আমার হইতেই হবে বাই হুক অর বাই ক্রুক ।
তারপর আমার হাতের বাঁধন খুলে টেনে হিঁচড়ে একটা ঘরে নিয়ে যাওয়া হলো ।
ওখানে নিয়ে আবার হাত বেঁধে বিছানায় ফেলে রাখা হলো ।
আমি শুধু চিৎকার করছিলাম , দোয়া পড়ছিলাম ।
মায়ের জন্য সমস্ত শ্রদ্ধা উঠে গেছিলো আমার ।
কতক্ষণ পর জানিনা শব্দ আবার আসলো ।
আমাকে বিয়ের জন্য ফোর্স করছিলো কিন্তু আমি কিছুতেই বিয়ে করবো না ।
শেষে আমি যখন ওকে জারজ বলে গালি দিয়েছিলাম ঠিক তখন ও প্রবল রেগে শার্টের বাটন খুলতে খুলতে বলছিলো_ বিয়ে করা লাগবে না , এমনিতেই তুই আমার হবি ।
তোর গর্ভে যখন আমার বাচ্চা থাকবে তখন দেখবো তাকে তুই কি বলিস!
আমি এর আগেই চেষ্টা করার ফলে আমার হাতের বাঁধন ধিলে হয়েছিল ।
শব্দ আমার কাছে আসবার পূর্বেই আমি হাতের বাঁধনটা খুলে ফেলেছিলাম ।
ছাড়া পেয়ে ওকে ধাক্কা দিয়ে বেরিয়েছি শুধু ।
এলোপাথাড়ে দৌড়ে গেছি বাঁচবার আশায় ।
সিঁড়িগুলো পেঁচানো ছিলো , সেই সিঁড়ি ঘরে আসার সাথেসাথে কার সাথে যেন প্রবল ধাক্কা খেয়ে পড়ে যেতে নিচ্ছিলাম কিন্তু পড়ে যাইনি ।
ভয়ে বন্ধ হওয়া চোখ মিটিমিটি করে খুলতেই বুঝতে পেরেছি আমি শূন্যে ভাসছি ।
তারপর সামনে তাকাতেই রাইদ দৃশ্যমান হয় , হাত বাড়িয়ে ওকে ছোঁয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করতেই ও আমায় কোলে তুলে নেয় ।
ওর বুকেই নেতিয়ে পড়ি আমি ।
ও আমায় বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলে_ আমি এসে গেছি জান । ভয় নেই ।
এর পরের ঘটনাগুলো ধোঁয়াশা ।
,
হাতে থাকা ডায়েরি টা বন্ধ করে উঠে বসে জাফরিন ।
ঘরের লাইট জ্বালিয়ে দরজা খুলে বের হয় ।
উদ্দেশ্য উপরে মামাণির ঘর ।
সিমিরা শুয়ে পড়েছে মাত্র , এমনসময় দরজায় নক ।
রামিম হেসে বলে_ ঐ যে ভাগ্নি আমার বাকি ঘটনা শুনতে চলে এসেছে ।
সিমিও হেসে বলে_ দরজা খোলো ওকে আসতে দাও ।
রামিম গিয়ে দরজা খুলে দিতেই জাফরিন ঝড়ের বেগে ঘরে প্রবেশ করে ।
সিমির পাশে বসে বলে_ মামানি এর পর কি হলো? মিথি আন্টি কোথায় এখন?
সিমি ওর ফোলা পেটে হাত রেখে আস্তে করে উঠে বসে ।
তারপর বলতে থাকে_ মিথির পায়ের নুপুরে লোকেশন ট্র্যাকার চিপ লাগানো ছিলো , শব্দ ওকে নিয়ে যাওয়ার আধ ঘন্টা পর যখন সবাই ওর খোঁজ করছিলো তখন রাইদ ভাই বলেন নিশ্চয়ই শব্দ মিথিকে কিডন্যাপ করেছে ।
তারপর পুলিশ সমেত ফোনে দেখানো লোকেশনে পৌঁছে যায় সবাই ।
পেঁচানো সিঁড়ির কাছে মিথিকে পায় রাইদ ভাই ।
রাইদ ভাইকে দেখে ও জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলো পুনরায়৷
ওকে কোলে তুলে নিতেই পেছনে শব্দ এসে যায় ।
ও রাইদ ভাইয়ের উপর আ্যাটাক করেছিলো বাট সাথে তো রামিম ফয়সাল দু’জনেই ছিলো ।
আর ছিলো পুলিশ ।
শব্দ কে আর মিথির মা কে পুলিশি হেফাজতে নেয়ার পর জানা যায় এ যাবৎ যতকিছু হয়ে এসেছে সবকিছুর পেছনে এই দু’জন মানুষই দায়ী ।
শব্দ এসব কাজে চারুকেও ইয়ূজ করেছে ।
যাহোক চারু তো ভালো হয়ে গেছিলো কিন্তু শব্দ ভালো হয়নি ।
সে আসলে আমাদের ডিপার্টমেন্ট হেড ম্যামের ছেলে, যে মিথিকে ম্যামের বাসাতেও হ্যারাস করার ট্রাই করেছিলো ।
যার আরেকটা নাম স্মরণ ।
এমনকি সে ফয়সাল ভাইয়ের নরমাল মাথা ব্যাথাকে পুঁজি করে ডাক্তার দেখিয়ে অযথা টেস্ট করিয়েছিলো এবং ডাক্তারকে টাকা খাইয়ে একটা ফেইক রিপোর্ট বানিয়েছিলো যেটাতে লেখা ছিলো ফয়সাল ভাইয়ের ব্রেইন টিউমার এবং তার হাতে বেশী সময় নেই ।
তাকে এসব কাজে হেল্প করেছিলো মিথির মা ।
মিথির মায়ের মিথির ওপর রাগের অন্যতম কারণ মিথি ওনার নিজের সন্তান না ।
মিথিকে আঙ্কেল রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছিলো ।
তানভীর ভাইয়ের পর প্রায় অনেকবছর আন্টির বেবী না হওয়ায় আর ছোট্ট একটা বাচ্চাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে আঙ্কেলের মনে মমতা জাগে , উনি মিথিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন ।
মিথিকে আন্টিও বেশ ভালোই বাসতো কিন্তু বিপত্তি হলো যখন উনি পূনরায় প্রেগন্যান্ট হলেন ।
মিথির ওপর থেকে ওনার মমতা কমে আসলো , অনুরোধে ঢেঁকি গেলার মতো উনি মিথিকে দেখছিলেন বাট সেদিনের ঘটনায় যখন ওনার মিসক্যারেজ হয়ে গেলো ঠিক তখন থেকে উনি মিথিকে দেখতে পারেন না ।
ওনার সন্তানের খুনি উনি মিথিকেই মনে করতেন আর তাই উনি মিথিকে রাস্তা থেকে সরানোর প্ল্যান করছিলেন সেই ছোট থেকেই ।
সুযোগ আসলো শব্দের মাধ্যমে আর উনি এটা কাজে লাগালেন ।
সবটা শোনার পর রাইদ ভাই খুব কেঁদেছিলেন , মিথির তো চেতনা ছিলো না নইলে মেয়েটা সব শুনে পাথর হয়ে যেত ।
শব্দ আর আন্টিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করার পর পরদিনই খবর আসে শব্দ কোথাও পালিয়েছে আর আন্টি সুইসাইড করেছেন ।
আজ তিন তিনটে বছর পেরিয়ে গেলো , শব্দের খোঁজ আমরা আজ অবধি জানিনা ।
আর মিথি , সে তো আছে লন্ডনে পড়াশোনা কাম্প্লিট করছে সে ।
দিনশেষে সবাই হ্যাপি থাক মা , এই তো চাওয়া ।
,
সবটা শুনে অদ্ভুত হাসি ফুটে উঠলো জাফরিনের ঠোঁটে । বিড়বিড় করে বললো_ মিথি আন্টি তুমি খুব সুখী হও ।
,
ইন লন্ডন_
রাত বারোটা , সাড়ে বারোটার দিকে মিথি বইয়ে চোখ বুলাচ্ছিলো ।
আজ তার চোখে ঘুম নেই দু’টো কারণে ১. আজ তার আর রাইদের আ্যানিভার্সিরি এবং ২. আজ তার জন্মদিনও ।
আজকের দিনেও রাইদ তার সাথে যোগাযোগ করবে না?
বড্ড অভিমানে মিথির চোখ দিয়ে পানি পড়তে শুরু করলো ।
বইটা বন্ধ করে সে বেলকোণীতে গিয়ে দাঁড়ালো ।
সুন্দর হিমেল হাওয়া শরীর ছুঁয়ে দিচ্ছিলো তার
, সে চোখ বন্ধ করে যখন এটা উপভোগ করছে তখন কানে কিছু সুক্ষ ভয়েস ভেসে আসলো _ হেই চার্মিং লেইডি হ্যাপি বার্থডে ।
কাট কাট ইংরেজি ভাষায় একটা বাচ্চা মানুষের গলার ভয়েস ।
কিঞ্চিৎ ভ্রু কুঁচকে মিথি ঘরের ভেতরে গিয়ে খুঁজতে থাকে কিন্তু পায়না ।
শব্দর উৎস খুঁজতে খুঁজতে ও ড্রয়িংরুমে এসে পড়ে ।
ড্রয়িংরুমে প্রচন্ড অন্ধকার অথচ মিথির পাক্কা মনে আছে সে এখানে লাইট জ্বালিয়ে শুতে গেছিলো যেটা সে প্রতিদিনই করে ।
মিথির ব্যাপারটা খটকা লাগে , ভয় পেয়ে সে এক পা এক পা এগোয় আর আস্তে আস্তে জিজ্ঞেস করে_ কে এখানে? কথা বলছেন না কেনো? কে?
এভাবে এক পা এক পা করে এগোতে গিয়ে আচমকা একবার কিসের সাথে পা লেগে হুড়মুড় করে উপুড় হয়ে পড়তে নেয় মিথি কিন্তু মেঝেতে পড়বার আগে কেউ দু’হাতে জড়িয়ে ধরে তাকে ।
সাথেসাথে লাইট জ্বলে ওঠে , তীব্র আলো চোখে পড়ায় মিথির চোখ বন্ধ হয়ে যায় মুহুর্তে ।
কিছুক্ষণের মাঝে আলো এডজাস্ট হলে সে চোখ খুলে হাত জোড়ার মালিককে দেখে চমকে যায় ।
ভ্রু কুঁচকেই বলে_ আপনি?
লোকটা বলে_ বউ যেখানে সেখানে থাকা কি অস্বাভাবিক? অন্য কাউকে এক্সপেক্ট করেছিলি বুঝি?
মিথি মুখ বাঁকিয়ে অভিমানরত গলায় বলে_ হ্যাঁ আপনার তো সবসময় এটাই মনে হয় রাইদ । আমার ভালোবাসা কি বোঝেন আপনি?
রাইদ বাঁকা হেসে বলে_ বাচ্চাটা বুঝি ভালোবাসতেও শিখেছে?
— ছাড়ুন আমাকে ।
অভিমানী গলায় বলে মিথি ।
ওকে এক ঝটকায় বুকে টেনে নিয়ে রাইদ বলে_ আর কোনো ছাড়াছাড়ি নাই । তিন বছর ওয়েট করছি আর কত?
এই গুলুগুলু গাল দুটো তে কামড় দেবার জন্য আমি পাগল হয়ে আছি ।
— কিহ্ অসভ্য! আপনি কামড় দেবার জন্য এসেছেন?
উঁহু আরো অনেক কিছুই করবো তো ।
মিথিকে কোলে তুলে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে রুমে চলে যায় রাইদ ।
তারপর ওকে নিয়েই বিছানায় গড়িয়ে পড়ে ।
রাইদের পিঠে দু ঘা বসিয়ে মিথি বলে_ ওউফ আটার বস্তা পড়েছে আমার ওপর , নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা আমি ।
রাইদ ওর গালে কামড় দিয়ে বলে_ তোকে আজ মেরেই ফেলবো থাম ।
মিথি যখন পুরোদমে রাইদের ছোঁয়ায় হারিয়ে গেছে তখন ঝট করে রাইদ ওকে ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় ।
মিথি ক্ষেপে চিল্লিয়ে বলে_ রাইদের বাচ্চা উঠলি ক্যান? আবার সেদিনের মতো করলে তোকে চাক্কু মারবো ।
রাইদ শার্টলেস হয়ে মিথির পাশে শুয়ে বলে_ খুব ঘুম পাইছে বুঝলি! মাথাটা টিপে দে তো ঘুমাই ।
মিথি একদম উঠে ওর পেটের ওপর বসে ।
গলা চেপে ধরে বলে_ মাথা ক্যান তোর গলাটাই চেপে ধরি?
রাইদ হেসে বলে_ দস্যি বউ আমার । পরে জেল তোমারই হবে ।
— হইতে দে ।
এটা বলে মিথি রাইদের গলায় জোর সে কামড় বসায় ।
রাইদ মৃদ্যু চিৎকার করে শুধু বলে_ আমার ইজ্জত কাইড়া নিতেছে তো মেয়েটা ।
,
সমাপ্ত
sinin tasnim sara
পরিশিষ্টঃ মিথি আর রাইদের সংসারে নতুন মেহমান এসেছে দু’জন । তাদের সামলাতেই দিন যায় তার পাশাপাশি সে একজন নামকরা এডভোকেট হয়ে গেছে ।
তার সাফল্যের পেছনে রাইদের অক্লান্ত চেষ্টা রয়েছে ।
সিমিরাও বেশ সুখে আছে ।
ফয়সাল আর চারু এখনো বিয়ে করেনি । ধোঁকা দেবার পর আসলে ঐ মানুষটাকে মাফ করা গেলেও সংসার করা যায়না ।
তারা আজও ভালো বন্ধু হয়েই আছে ।
সবাই সবার মতো চলছে কিন্তু শব্দ? সে কোথায়?
সেও আছে ।
নিউইয়র্কের একটা ছোট্ট শহরে একটা আ্যাসাইলেমের অন্ধকার কামরায় সে আছে ।
মিথিকে না পাওয়ার যন্ত্রনা , বন্ধুকে ধোঁকা দেবার গ্লানি তাকে পাগল করে দিয়েছে ।
সপ্তাহে একদিন যখন তার মা তাকে দেখতে আসে , তখন মায়ের হাত ধরে কেঁদে কেঁদে সে পুরোটা সময় বলে_ মা ও আমায় ভালোবাসেনি । ও আমায় ভালোবাসেনি মা ।
শব্দর মা আঁচলে চোখ মুছে শুধু ছেলেকে সান্ত্বনা দেন_ তোকেও ভালোবাসার মতো কেউ আসবে বাবা , একদিন ঠিকই আসবে ।
[সমাপ্ত]