কলেজের বড় আপু
Sumon Al-Farabi
3⃣য় পর্ব
⬇⬇
⬇
আম্মু বার বার ডাকছে কিন্তু কানে কিছুই যাচ্ছে না ।
– উহহহ আম্মু কি করছো? লাগছে তো। 😒😒
– লাগার জন্য তো ধরছি
– খুব লাগছে কিন্তু । কেউ এভাবে কানে ধরে ।
– হ্যা এভাবেই ধরে।
– তাহলে নিজের কানটা রেখে আমার টা ধরছো কেন ?
– হারামজাদা কখন থেকে তোরে ডাকছি । কথা তো কানেই যায় নি
– ওহহ শুনতে পাই নি।
– মন খারাপ
– না।
– তাহলে কি ভাবছিস
– ভাবছি কতো টা দজ্জাল মেয়ে বিয়ে করলে তোমাকে জ্বালাতে পারবে ।
– হারামজাদা তোর বউ আমায় জ্বালাবে
– অবশ্যই
– সেটা পরে দেখা যাবে এখন আয় এসে খেয়ে নে।
– তুমি যাও। আমি আসছি ।
– তাড়াতাড়ি।
– আচ্ছা ।
এরপর খাওয়া করলাম । সেদিন আর তেমন কিছু ভাবতে পারলাম না ।
পরের দিন সকাল বেলা কলেজে গেলাম। আজকেও গেইটে দেখলাম নীলাদ্রি আপু দাড়িয়ে আছে । আমি কোনো কথা না বলে পাশ করে চলে যেতে লাগলাম । পাশে একটা ছেলে খুব তাড়াতাড়ি করে কোথায় যেন যাচ্ছিল। তার সাথে ধাক্কা লেগে আমি নীলাদ্রির উপর পরে যাই ।
– ঠাসসসসসস।
– তোর সাহস হয় কি ভাবে তুই আমায় টাস করিস?
– আসলে ঐ ছেলেটা
– ঐ ছেলেটা ? কি ঐ ছেলেটা ? নিজে এসে প্লান করে সব করছিস আর এখন ঐ ছেলেটা ।
– আসলে আমি
– কি আমি
– সরি।
– ওকে । যা ক্ষমা করলাম ।।।।
– ধন্যবাদ ।
ক্লাসে চলে আসলাম । না এমন আর মানা যায় না। এর তো জীবনেও কোনো বুদ্ধি হবে না মনে হচ্ছে । একটা মেয়ের এতো রাগ থাকতে পারে ? আচ্ছা এটা রাগ নাকি অহংকার ? যাই হোক এর শেষ তো দেখতেই হবে ।
ক্লাস শেষ করে বাইরে আসলাম
– এই ক্যাবলা কান্ত
– আমায় বলছেন?
– তুই ছাড়া কি আর কেউ আছে ক্যাবলা কান্ত।
– দেখুন আমার একটা নাম আছে
– তো কি হইছে ?
– সিনিয়র বলে আপনারা যা খুশি তাই করতে পারেন না ।
– ওলে বাবালে ভ্যাবলা কান্তের মুখে যে বুলি ফুটেছে
– সাবধান করে দিচ্ছি কিন্তু । আর এসব বলবেন না।
– কি রে কি হইছে এতো চিল্লাচিল্লি কিসের।
-এই ক্যাবলা কান্তকে দেখ মুখে বুলি আসছে ।
– সকালেই তো থাপ্পড় খেলি এখন আবার আসছোস
– মানে আজ সকালেও মারছিস তুই আমাদের জিজুকে
– ওহহ। তাই তো । ও তো আবার তোদের জিজু। আমার bf । সরি জানু লাগছে তোমায়
( সব কয়টা হাসতে লাগলো)
– আমি গেলাম ।
– কি বলো জানু গেলাম মানে কী বসো একটু গল্প করি ।
– কেন
– তুমি আমার bf না বলো।
– তাই তো। আপনার একটু কাছে আসি।
– আচ্ছা ঠিক আছে আমার পাশেই বসো।
( এরপর পুরো ক্যাম্পাসের সামনে আমি নীলাদ্রি কে কিস করলাম )
– ঠাসসসসসসসসসস
– জানোয়ার তোর সাহস হয় কি করে তুই আমায় কিস করিস।
– আমি তো তোমার bf তাই না
( গালে হাত দিয়ে বললাম । ব্যাথাও হচ্ছে আবার আনন্দ ও হচ্ছে )
– তোরে আমি দেখে নিবো।
– পড়ে দেখা যাবে ।
– তোর জীবন আমি হেল করে দিবো।।।
– যা পারো করো।
নীলাদ্রি আর কোনো কথা না বলে চলে গেল । সবাই কেমন যেন আমার দিকে তাকিয়ে আছে । মনে হয় আমি এই মাত্র এভারেস্ট জয় করে আসলাম ।।।।।
বন্ধুদের কাছে আসলাম ।
– মামা তুই তো পুরাই ফাটিয়ে দিলি।
– আমার সাথে পাঙ্গা। বুঝবে এবার।
দূর থেকে হাবীব দৌড়ে এসে
– সুমন তুই এটা কি করলি?
– কেন দোস্ত ? খুব ভালো লাগছে নাকি তোর ।
– রাখ তোর ভালো লাগা। জানিস ও কে?
– কোন মন্ত্রীর মেয়ে রে?
– এই এলাকার কমিশনারের মেয়ে
– তো আমি কি ভয়য়য়য়য়য়য়……. কি বললি তুই কার মেয়ে ?
– কমিশনারের
– ক ক কমিশনারের মেয়ে। আগে বলবি না?
– আমি একটু আগেই জানতে পারলাম ।
– ভাই তুই কে? আমি তোরে চিনি না । ঐ আমাগো সুমন নামের কোনো বন্ধু আছে ?
– কই না তো
– আগে ছিলো?
– সুমন নামের কাউরে আমরা চিনিই না
– ওরে শালা হারামীর দল। তোদের জন্য তো আমি এসব করলাম ।
– আমরা কি তোরে কিস করতে বলছি ।
– তা বলিস নি।
– তাহলে তুমি এতো রোমান্টিক হতে গেলা কেন।।।।।
– আমি কি জানতাম ও কমিশনারের মেয়ে
– এখন বসে বসে আঙুল চোশো
– তোরা কই যাস?
– কলেজ শেষ হইছে তো যাবো না কি এখানে বসে বসে ……
– থাক পরের গুলো বলতে হবে না আমি জানি।
বাসায় চলে আসলাম। এসে আগে আম্মুর কাছে গেলাম ।
– আম্মু
– কি হইছে ??
– ভালো আছো?
– মতলব কি?
– কিসের মতলব ? কোনো মতলব নাই ।
– এতো ভনিতা না করে যা বলবি তাড়াতাড়ি বল।
– আমি কলেজ টা চেঞ্জ করবো
– কিহহ? কেন ?
– ভালো লাগে না তাই ।
– এই কলেজে পড়ার জন্য তো দিন রাত এক করে দিছলি
– এখন আর ভালো লাগে না ।
– না লাগলেও পড়তে হবে ।
ধূর ভালো লাগে না । কিন্তু কিছু তো একটা করতে হবে । কি করবো কি করবো ?? আইডিয়া ! কিছু দিন কলেজে যাবো না । হিহিহিহি🤣🤣 আমি কতো বুদ্ধি মান।
– আম্মু
– আবার কি?
– আমি
– তুই কি?
– আমি কিছু দিন আন্টির বাসায় যাই ?
– কেন?
– অনেক দিন থেকে কোথাও যাই না ।
– যাওয়ার দরকার ও নাই ।
অনেক কষ্ট করে আম্মু কে রাজি করালাম । এরপর আমি গো টু আন্টির বাড়ি 😎😎 । আমায় আর পায় কে 🤣🤣
বেশ কিছু দিন আন্টির বাড়িতে থাকলাম । প্রায় ১৫ দিন পর বাসায় আসলাম। বাসায় এসেই
– আম্মু কেউ আমায় খুঁজতে আসছিলো?
– কই না তো
– সত্যি 🤣🤣🤣🤣
আমি তো মহা খুশি । তার মানে নীলাদ্রি আপু সব কিছু ভুলে গেছে । হাহাহিহিহুহু 🤣🤣🤣। কত্ত ভালো লাগে ।
পরের দিন কলেজে গেলাম ।
– কি রে কই হারাইছিলি এতো দিন ?
– আন্টি বাসায় গেছিলাম ।
– কমিশনারের মেয়ের ভয়ে ?
– কে রে ? আমি কাউকে ভয় পাই না ।
– পিছনে নীলাদ্রি আপু আসছে
– কি বলিস? শয়তানের নাম নেওয়া আর শয়তান হাজির হওয়া।।।।
– এই সুমন
– সুমন তোরে ডাকে
– বল আমি কলেজে আসি নি
– কি হলো তোমায় ডাকছি শুনছো না
– ওহহ আপু আপনি? শুনতে পাই নি ।
– ওকে । আসো
– কোথায় ?
– আসো না একটু
( সুমন আজ তুই গেলি। কমিশনারের মেয়ের সাথে পাঙ্গা? এবার বুঝবি)
নীলাদ্রি আপু আমায় একটা নির্জন এলাকায় নিয়ে গেল
যাক বাবা আমি তো লোকালয়ে যা করার করেছি এ আবার এখানে আমায় পিটাবে নাকি ? কি করে করুক কেউ না দেখলেই হলো…
– সুমন তোমায় আমি এখানে নিয়ে আসছি কেন জানো?
– না আপু।
– কি আপু আপু করছো?
– তো কি বলবো আপনাকে ?
– তুমি করে বলবে
– কিন্তু আপনি তো সিনিয়র
– সিনিয়র কে তুমি বলা যায় না
– ঠিক তা না ।
– তো বলতে সমস্যা কোথায়
– ওকে । কিন্তু এখানে আমায় নিয়ে এসেছো কেন ?
– তেমায় আমি কিছু বলতে চাই
– তো ওসব কথা তো ক্যাম্পাসেও বলা যেত ?
– না। এসব কথা শুধু নিরবে বলা লাগে ।
– কি এমন কথা ।
– আমায় ক্ষমা করে দিও
– কেন ? এতো দিন তোমায় অনেক মারছি তাই ।
– আরে আমি কিছু মনে কর নি।
– আমরা বন্ধু হতে পারি তো।
– তুমি তো সিনিয়র না।
– তো কি হইছে
– ওকে।।।
এরপর আমরা দুজন গল্প করতে করতে কলেজে আসলাম । সবাই আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে । আমরা কারো দিকে না তাকিয়ে হাসতে হাসতে চলে গেলাম । যার যার ক্লাসে।।।
তবে বুঝলাম না মেয়েটা এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে এতো পরিবর্তন হলো। আসলে কি পরিবর্তন হয়েছে নাকি অন্য কিছু । কলেজ শেষে বাসায় আসার সময় আবার আমার ফোন নাম্বাও নিলো। এর মতিগতি কিছুই তো বুঝতে পারছি না……..
.
.
.
.
.
.
.
To be continue