#কাছে_দূরে 💙👩❤️💋👨
#moumita_meher
#পর্ব___৫২ (অতিরিক্ত পর্ব)
—-‘ ভাবছিলাম।’
—-‘ কি ভাবছিলে?’
সাবাব হীরকে ছেড়ে দাঁড়ালো। হীরের গলায় লকেটটা পড়িয়ে দিতে দিতে বলল,
—-‘ ভাবছিলাম তোমার এই প্রিয় জিনিসটা আমার কাছে কি করে এসেছিলো।’
লকেটটা পড়ানো শেষ হতেই হীর সাবাবের দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
—-‘ কি করে গিয়েছিলো?’
সাবাব বাঁকা হাসলো। হীরের কোমড় জড়িয়ে কাছে টেনে রোমান্টিক কন্ঠে বলল,
—-‘ সেদিন সানির বিয়ের শপিং করে লেট নাইট তো আমরাই ফিরেছিলাম। আসার পথে তুমি গাড়িতেই ঘুমিয়ে গেলে। তোমার ঘুমন্ত মুখখানা দেখে আর ইচ্ছে হয়নি তোমাকে জাগাতে। তাই তোমাকে কোলে তুলে নিয়ে এলাম বাসার ভেতর। সোজা তোমার রুমে এসে তোমাকে নামালাম। তখনও তুমি গভীর ঘুমে। যখন তোমায় বিছানায় শুইয়ে দিয়ে উঠতে যাচ্ছিলাম ঠিক তখনই-
সাবাব থেমে গেলে হীর অধৈর্য্য কন্ঠে বলল,
—-‘ ঠিক তখনই.. ঠিক তখনই কি?’
সাবাব ঘোর লাগা কন্ঠে হাসলো। হীরের কোমড় জড়িয়ে রাখা হাতদুটো উপরে এনে হীরের দু’গালে আলতো করে রাখলো।গালে সাবাবের আলতো স্পর্শে চোখজোড়া বন্ধ করে নিয়ে আবারও খুললো হীর। সাবাবের চোখ জোড়া আজ অনেক কিছু বলছে। চোখের মাঝে ভালোবাসাকে আলিঙ্গন করার নেশা দেখা দেখা যাচ্ছে। মুহুর্তেই হীরের বুকের ভেতর ঢোল পেটাতে আরম্ভ করলো কেউ। সাবাব একটু ঝুকে এসে হীরের গলার নীচের তিলটার উপর ভালোবাসার পরশ আকলো। হীর শিহরনে কেঁপে উঠে একহাতে শাড়ির আঁচল চেপে ধরলো। অন্যহাতে সাবাবের মাথাটা চেপে ধরে নিঃশ্বাস আঁটকে নিলো। সাবাব দু’হাতে জড়িয়ে ধরেছে হীরকে। খানিক বাদে মুখ তুলতেই লকেটের চেইনে আঁটকে গেলো সাবাবের শার্টের বোতাম। সাবাব উঠতে নিয়েও আঁটকে পড়লো। হীর চমকে গিয়ে দেখতে লাগলো চেইন আর শার্টের বোতামে রহস্য। সাবাব মৃদু হেসে লকেটের চেইন আর শার্টের বোতামকে ছাড়িয়ে দিয়ে গাঢ় কন্ঠ বলল,
—-‘ সেদিনও সেইম জিনিসটাই হয়েছিলো।’
সাবাবের কথায় যেন লজ্জার পাহাড়ে চাপা পড়লো হীর। লকেটটা ছাড়িয়ে দিতেই সাবাবের সামনে থেকে ছুটে পালাতে চাইলো লজ্জায়। কিন্তু যেতে পারল না। সাবাব ক্ষপ করে হাত ধরে ফেললো হীরের। একটু একটু করে টেনে নিজের কাছে আনতে আনতে ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে বলল,
—-‘ আজ তো কোথাও পালাতে দিচ্ছি না ম্যাডাম!’
হীর লজ্জায় মাথা নীচু করে রেখেছে। সাবাব নীচু হয়ে হীরের লজ্জায় মোড়ানো মুখখানা দেখার চেষ্টা করে বলল,
—-‘ লজ্জায় তো লাল হয়ে উঠেছো। এটুকুইতেই এতো লজ্জা। তাহলে-
সাবাব কথা শেষ করতে পারলো না। হীর চটজলদি সাবাবের মুখে হাত চেপে তার কথা থামিয়ে দিলো। অসহায় কন্ঠে বলল,
—-‘ আমার লজ্জা লাগছে।’
সাবাব গাঢ় চোখে দেখলো হীর লাল টকটকে ঠোঁট।ঘোর লাগা কন্ঠে বলল,
—-‘ লজ্জা পেলে যে তোমাকে আরও বেশি সুন্দর লাগে। ইচ্ছে করে রসগোল্লার মতো টুপ করে গিলে খেয়ে নেই।’
হীর ঠোঁট নেড়ে বলল,
—-‘ ইশশ আমি কি রসগোল্লা নাকি হুম।’
সাবাব ঢোক গিলল। গলা ভেজালো। ঘোর থেকে বের হতে চেষ্টা করে আরও ঘোরে তলিয়ে যাচ্ছে সে। হীর বকবক করে যাচ্ছে… সাবাব মৃদু হেসে ধীরেধীরে হীরের খুব কাছে চলে এলো। হীর সাবাবকে নিজের এতোটা কাছে আবিষ্কার করতেই আবারও লজ্জায় মুড়িয়ে গেলো। সাবাব আরেকটু এগোতেই হীর তার চোখ জোড়া বন্ধ করে নিলো। যা দেখে সাবাবের মনের ভেতরে তোলপাড় শুরু হলো। দু’হাতে হীরের কোমড় জড়িয়ে হীরকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে হীরের উষ্ণ ওষ্ঠদ্বয় নিজের দখলে নিয়ে নিলো। সাবাবের গভীর ছোঁয়ায় হীর কেঁপে উঠলো। সাবাবকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরলো। সাবাব হীরের ওষ্ঠদ্বয়কে বিরতি দিয়ে হীরের গলায় মুখ ডুবালো। গলায়,ঘাড়ে,নাকে,চোখে সব স্থানেই সাবাব তার পবিত্র ছোঁয়ায় ভরিয়ে তুলল হীরকে। হীরের ভেতরেও ঝড় উঠেছে। মনের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সে সহ্য করতে না পেরে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো সাবাবকে। সাবাব হীরকে আগলে নিয়ে বলল,
—-‘ ভালোবাসি হীরপাখি। আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি।’
সাবাবের গাঢ় কন্ঠ হীরের মনকে আরও তোলপাড় করে তুলতেই হীর তাকে আরও শক্ত করে ধরে ঘোর লাগা কন্ঠে বলল,
—-‘ খুব বেশি ভালোবাসি তোমায়।’
হীরের এই ছোট্ট বানীটিতে ধন্য হলো সাবাব। যেন কতকাল এই ছোট্ট কয়টা শব্দ শোনার জন্য অধীর আগ্রহে পার করেছে। সাবাব আর কিছু না বলে হীরকে পাঁজা কোলে উঠিয়ে নিলো। হীর মোহনীয় দৃষ্টিতে দেখতে লাগলো ভালোবাসার মানুষটিকে। সাবাবও একই দৃষ্টিতে দেখছে তার হীরপাখিকে। ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে ভরে থাকা বিছানার দিকে। যেতে যেতে হীর তার পেছনে হাত বাড়িয়ে চারপাশের ঝাঁক ঝমক লাইট গুলো বন্ধ করে দিলো। সাবাব হীরকে বিছানায় শুইয়ে দিতেই চাঁদের আলো উপচে পড়ল হীরের মুখশ্রীতে। যা দেখে সাবাব মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে বলল,
—-‘ মোবারক হো হীরপাখি। আমাদের মিলনের সাক্ষী স্বয়ং চাঁদ হবে।’
হীর তার কাঁপা কাঁপা হাত দুটো তুলে সাবাবকে কাছে টেনে নিয়ে কম্পিত স্বরে বলল,
—-‘ পবিত্র মিলনের সাক্ষী কেবল চাঁদ নয় জনাব এই পুরো সংসার থাকবে।’
সাবাব মৃদু হেসে কাছে টেনে নিলো হীরকে। খানিক সুখ আর খানিক বেদনায় পরিপূর্ণ হলো তাদের ভালোবাসা। তাদের পবিত্র মিলনের সাক্ষী হলো চাঁদ, হাজার হাজার অজস্র তারা,ফুল… আর সেই সাথে পুরো সংসার।
#চলবে_ 💙
[ বিঃদ্রঃ আগের পর্বে জায়গা হয়নি বলেই বাকি টুকু লিখতে পারিনি। আজকের এই লেখাটুকুকে কেউ পুরো একটা পর্ব হয়নি কেন বলিয়া ভুল করিবেন না। ধন্যবাদ।]