কালোরাত পর্ব ৪+৫ ও শেষ

#কালোরাত
( ৪র্থ র্পব )
লেখকঃ নিঝুম জুনায়েদ

.. সকালে ফ্রেশ হয়ে উনি অফিসে চলে গেলেন আর আমি রুমে একা একা বসে আছি আর তখন তুবা রুবার উপহারের কথা মনে পড়ে গেলো ।

প্রথমে ওপরে খাপ খসিয়ে দেখলাম একটা ডাইরি আর ওপরে লেখা আছে বড় অক্ষরে জুনায়েদ ।
আর
আমি যেই পৃষ্টা উল্টিয়েছি তখন অবাক হয়ে গেছি কারন প্রথম পৃষ্টায় আমার ৮ বছর আগের একটা ছবি বাধানো আর পাশে যেই চোখ পড়েছে আরো অবাক হয়ে গেছি ……

..

আমি এতো যে অবাক হয়েছি এই ছবি টা দেখে কারন এটা জুনায়েদের ছবি আচ্ছা আমি তো আমার স্বামীর নাম আজ পর্যন্ত জানি না তাহলে কিএ এই সেই জুনায়েদ যে আমার চোখের সামনে তার হাত কেটে আমার নাম লিখেছিলো আর আমি ভয়ে সেন্স হারিয়ে ফেলেছিলাম ।

আমি যখন ৮ম শ্রেনিতে পড়তাম তখন একটা ছেলে আমার জন্য পাগল ছিলো আমি যা বলতাম তাই করতো আমার ভালোবাসার পাওয়ার জন্য । খুব ভালো বাসতো আমায় । প্রতিদিন সেই ঢং দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতো আমায় দেখার জন্য । আমি যদি একটু চোখ রাঙ্গাতাম তখন ও চোখ নামিয়ে নিতো ।
… হ্যা এই ছেলে টার প্রেমে আমি ফেঁসে গেছিলাম । যখন এস এস সি দিবো তার আগে তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায় ।

আমামদের ভালোবাসা এমন টাই ছিলো তাহলে শুনেন
……
ফারজানাঃ আমাকে কত টা ভালোবাসো ?
জুনায়েদঃ যদি কারোর কলিজা টা বের করে নেও তখন কেউ বাছেনা তখন আমি তোমায় ছাড়া বাছবো না ।
ফারজানাঃ এতো ভালোবাসো কেনো আমায় ?
জুনায়েদঃ হিহি জানিনা তোমায় কেনো এতো ভালোবাসি উম্মম্মাহহহহ ।
ফারজানাঃ এই এই তুমি কোথায় যাচ্ছো হু আমাই পাপ্পি দিয়ে ?
জুনায়েদঃ একটু দূরে সরে বসতেছি ।
ফারজানাঃ কেনো ?
জুনায়েদঃ আমি পাপ্পি দিলে তো তোমার পাপ্পির নেশা জেগে যায় তাই ।
ফারজানাঃ হু তুমি পাপ্পি দিবা আর আমি বসে বসে দেখুম নাকি ।
জুনায়েদঃ তুমি একবারে বিয়ের পরেও দিও হিহি ।
ফারজানা; কাছে আসেন বলছি ( রেগে গেলে আপনি করে বলে )
জুনায়েদঃ নাহ যামুনা আমার পুরা মুখ লাল করে দিবানি ।
ফারজানাঃ কাছে আসেন বলছি ।
জুনায়েদঃ আচ্ছা আসলাম একটু অল্প করে পাপ্পি দিও ।
ফারজানাঃ আরো কাছে আসো ।
জুনায়েদঃ আসলাম তো আর কত আসুম ।
ফারজানাঃ আরো কাছে লুচ্চা বেডা উম্মম্মম্মম্মমাহহহহহহহহহহহহহহহহহ ।
জুনায়েদঃ উরিম্মা এতোক্ষন কেউ পাপ্পি দেই আর সারা গাল আর ঠোট লিফস্টিকে ভরে গেছে ।
ফারজানাঃ হিহি ।
জুনায়েদঃ আর পাপ্পি দিতে দিমুনা যাও ।
ফারজানাঃ পাপ্পি দিতে দিবেন না মানে উম্মম্মম্মম্মাহহহহহহহ আজকের মত শেষ ।
জুনায়েদঃ এভাবে অত্যচার না করলেই পারো ।
ফারজানাঃ ওরে আমার ময়না টিয়া খুব কষ্ট হচ্ছে ?
জুনায়েদঃ হু ।
ফারজানাঃ কাছে আসো পাপ্পি দিয়েদি ।
জুনায়েদঃ এই নাহ আমার কোনো কষ্ট হচ্ছে না ।
ফারজানাঃ হিহি ভয় পাইছে ।
জুনায়েদঃ আমি ভয় পাবো কেনো আমি ভয় পাই না ।
ফারজানাঃ হুম ভিতু আমি চিনি ।
জুনায়েদঃ তোমার কোলে একটু মাথা রাখবো ।
ফারজানাঃ জী নাহ ৪টা বাজতে আর ৫ মিনিট আছে আর স্কুল ছুটি দিবে বাড়ি চলে যেতে হবে । আর এভাবে কত দিন স্কুল ফাকি দিয়ে তোমার সাথে দেখা করব ।
জুনায়েদঃ ধুর মন টা খারাপ করে দিলা ।
ফারজানাঃ উম্মাহ জান আমার তোমার মন খারাপ হলে তো আমারো মন খারাপ হয় হয় ।
জুনায়েদঃ হিহি আমার মন খারাপ নেই দেখো ।
ফারজানাঃ হুম বুঝলাম এবার চলো যাওয়া যাক ।
জুনায়েদঃ হুম চলো ।

আর এই ভাবেই চলে থেকে আমাদের ভালোবাসা ।
প্রাই দিন আমি স্কুল ফাকি দিয়ে জুনায়েদের সাথে দেখা করতাম । আমিও যে ওকে অনেক ভালোবাসি তাই যা বলতো তাই করতাম । কেনো জানিনা ওকে অনেক টা ভালোবেসে ফেলেছিলাম । …
এভাবে চলতে থাকলো দিন । কিছু দিন পর আমার এস এস সি পরীক্ষা শুরু হয়ে গেলো ।
পরিক্ষার পরে আবার আগের মত আমরা দেখা করলাম এক জাগায় বসে হাজার গল্প করলাম ।

যেই দিন আমার পরীক্ষার রেজাল্ট বের হয় সেই আমার বাবা আমাকে অনেক মেরেছিলো । কারন আমার রেজাল্ট খারাপ হয়েছিলো । খারাপ হলে কিছু যায় আসতো না যদি আমায় ক্লাস রোল ১ না হতো । আমার স্কুলের মধ্যে আমিই সব চেয়ে মেধাবি ছাত্রী ছিলাম । …
সবাই অনেক কথা বলতে লাগলো । তখন খুব রাগ হচ্ছিলো ।
জুনায়েদ আমাকে দেখা করতে বলে আমি দেখা করতে চাইনি তাও জোর করে তাই দেখা করলাম ।

ওর সাথে কথা হতে হতে এক পর্যায়ে আমি অনেক টা রেগে যায় তখন ওকে চড় মেরে বলি ।

ফারজানাঃ তোর জন্য আজকে আমার এমন হয়েছে ( কান্না করতে করতে)
জুনায়েদঃ আমি কি করলাম ?
ফারজানাঃ তুই যদি আমায় প্রেমে না ফাসাতিক তাহলে এমন টা হতো না ।
জুনায়েদঃ আমি তো তোমায় শুধু ভালোই বেসে গেছি পড়াশুনাই তো বাধা দেইনি ।
ফারজানাঃ আমি কিছুই জানি না তোর জন্য এমন হয়েছে তুই আমার সামনে আসবিনা ।
জুনায়েদঃ প্লিজ ফারজানা তুমি বোঝার চেষ্টা করো ।
ফারজানাঃ আমি কিছুই বুঝতে চাইনা তুই আমার সামনে থেকে চলে যা ।

জুনায়েদ অনেক কান্না করেছিলো কিন্তু আমি কোনো কথায় শুনি নাই । ওকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিছিলাম ।
… কিছু দিন ধরে আমি রুমে মধ্যে একাই ছিলাম বাইরে বের হতাম না । আস্তে আস্তে জুনায়েদের কথা মনে পড়তে লাগলো আর খুব কষ্ট হতে লাগলো কারন আমি যে জুনায়েদ কে অনেক বড় আঘাত করেছিলাম ।
… হ্যা জুনায়েদ আমার এই কথা সে এই শহর ছেড়ে কোথায় যেনো হারিয়ে যায় অনেক খুজেছি কিন্তু কোথাও পাইনি ।
পুরা কুষ্টিয়া খুজেছি এক জাগায়ও যেতে বাদ দিনাই কিন্তু কোথাও পেলাম না । তার বন্ধুদের কাছেও জিজ্ঞাসা করেছি কিন্তু কোথাও পাইনি কারন জুনায়েদ তার বাসা কোনো দিন বলে নাই কি পরে বলবে বলে । অনেক জোর করেছিলাম কিন্তু জানতে পারি নাই ।

আমার দিন গুলো খুব কষ্টে কাটতে লাগলো । সব সময় মন মরা হয়ে থাকতাম তারপর আব্বু কে আর আম্মু কে সব খুলে বললাম তারা সান্তন দিয়ে বললো সে যদি তোমার থাকে সেই তোমারই হবে । হ্যা সে আমার হয়েছে কিন্তু অনেক কষ্ট পেয়েছি ।


জুনায়েদ কে হারিয়ে যখন আমি কষ্ট পেতে ছিলাম তখন আব্বু আম্মুই বলেছিলো যে তারা চেষ্টা করবে জুনায়েদ কে ফিরিয়ে দেওয়ার । কিন্তু একটা শর্ত দিয়ে দেই যে আমাকে ভালোভাবে পড়াশুনা করতে হবে । আমিও মেনে নিই । ভালোভাবে আবার পড়াশুনা শুরু করি । । \…

বিয়ের কিছু দিন আগেই এক জাগায় ইন্টাভিও দিয়ে আসছি আর এটাই আমার প্রথম চাকরির আবেদন ।

যাকে আমি ৮বছর ধরে খুজছিলাম সেই এখন আমার স্বামী তাকে আমি কতই না খারাপ কথা বলেছি । সব সময় অমানুষ বলে গালি দিয়েছি তার খারাপ চাইছি । নাহ আমি আর এখন থেকে উনাকে অনেক জুনায়েদ কে অনেক ভালোবাসবো । …


আর জুনায়েদের ডাইরিতে যে কথা গুলো লেখা ছিলো সব আমাকে নিয়ে । তার প্রতিটা অক্ষরে অক্ষরে আমার চোখ থেকে পানি পরেছে ।


ডাইরি টা তুবা আর রুবা আমাকে দিলো কেনো তাহলে কি তুবা রুবা সব জানে । …
ডাইরি পড়তে পড়তে অনেক বেলা হয়ে গেছে ।
ভাবছি আজকে আমার সব প্রিয় রান্না করে খাওয়াবো যেই গুলো জুনায়েদ কে ৮ বছর আগে খাওইয়ায় ছিলাম । আর তখন জুনায়েদ বলতো আমার বউ এর রান্না পৃথিবীর সেরা রান্না । আমিও নিজেকে খুব সুখি মনে করতাম তার
কথায় ।

সব আইটেমের রান্না করে আমার শাশুড়ি মা আর তুবা রুবা কে ডাকলাম আর জুনায়েদের জন্য বসে আছি ।
দেখি কিছুক্ষন পরে জুনায়েদ আসে তাকে ফ্রেশ হয়ে খেতে আসতে বলি ।
তারপর সবাই খাওয়াদাওয়া করে উপরে চলে যায় । তার আগে তুবা আর রুবা কে অনেক গুলো পাপ্পি দিয়ে যায় আমাকে এত্তো গুলো সাহায্য করার জন্য ।
……
জুনায়েদ একটু ছাঁদে চলে যেতে বললাম । ৩০ মিনিট পর যেনো রুমে আসে । ও চলে যাওয়ার পরে আমি রুম টাকে প্রথম দিনের মত সাজালাম । মনে হচ্ছে আজকে আমার প্রথম বাসর ঘর । তারপর তার দেওয়া সেই নীল শাড়ি টা পরি। কিছুক্ষন পরে জুনায়েদ আসে আর ও অবাক হয়ে যায় ।

আমি নিজের নিজের শাড়ি খুলে ফেলি আর জুনায়েদের মুখে সিগাড়েট জালিয়ে দেই …
তারপর …
……#কালোরাত
( ৫ম ও শেষ র্পব )
লেখকঃনিঝুম জুনায়েদ


জুনায়েদ একটু ছাঁদে চলে যেতে বললাম । ৩০ মিনিট পর যেনো রুমে আসে । ও চলে যাওয়ার পরে আমি রুম টাকে প্রথম দিনের মত সাজালাম । মনে হচ্ছে আজকে আমার প্রথম বাসর ঘর । তারপর তার দেওয়া সেই নীল শাড়ি টা পরি। কিছুক্ষন পরে জুনায়েদ আসে আর ও অবাক হয়ে যায় ।

আমি নিজের নিজের শাড়ি খুলে ফেলি আর জুনায়েদের মুখে সিগাড়েট জালিয়ে দেই …
তারপর …



জুনায়েদঃ এই তুমি কি করতেছো ?
ফারজানাঃ কি করছি ?
জুনায়েদঃ শারি খুলে ফেলছো আবার মুখে সিগারেট দিয়ে জালিয়ে দিচ্ছো ।
ফারজানাঃ যেটা করছি সেটাই করো ।
জুনায়েদঃ আমি আর পারবো নাহ ।
ফারজানাঃ কেন পারবানা ( দুই হাত দিয়ে গলা জড়িয়ে)
জুনায়েদঃ সিগারেট খেতে ভালো লাগছে না আজ ।
ফারজানাঃ এটা ছাড়া তো কিছুই হবেনা ।
জুনায়েদঃ আমি এই সব করতে পারবনা ।
ফারজানাঃ তোমাকে পারতেই হবে ।।
জুনায়েদঃআমার খুব কষ্ট হবে তো ।
ফারজানাঃ তাহলে এর আগে সিগারেটের আগুনের ছাপ কিভাবে দিতে ?
জুনায়েদঃ তখন তো মদ খাইতাম ।
ফারজানাঃ আজকেও খাবে এই যে মদ ( আলমারি থেকে বের করে )
জুনায়েদঃ কোথায় পেলে ?
ফারজানাঃ সেটা তোমাকে জানতে হবেনা তুমি তোমার কাজ করো এই আমি শুয়ে পড়লাম ।
জুনায়েদঃ প্লিজ এমন করো না অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমায় ।
ফারজানাঃ আর একদিন কষ্ট দিলে কিছুই হবেনা ।
জুনায়েদঃ এটা কেনো করছো ?
ফারজানাঃ কারন তোমার নামে এখনো ২টা অক্ষর বাদ আছে তাই ।
জুনায়েদঃ ধুর বাল এই সব করতে পারবনা ।
ফারজানাঃ তোমাকে পারতেই হবে ।
জুনায়েদঃ প্লিজ ।
ফারজানাঃ তুমি যদি আমাকে এক বিন্দু ভালোবেসে থাকো তাহলে আমার বুকে তোমার নামে ঐ দুইটা অক্ষর এখন লেখবে ।
জুনায়েদঃ ব্ল্যাকমেইল করছো ।
ফারজানাঃ এটা ভালোবাসা বুঝেছো ।
জুনায়েদঃ ধুর ।
ফারজানাঃ তুমি না করলে আমি কিন্তু ছুরি দিয়ে অনেক বড় করে লেখবনি ।
জুনায়েদঃ এই নাহ নাহ তুমি এমন করবেনা আমিই করতেছি ।
ফারজানাঃ আমার লক্ষী বর উম্মম্মম্মাহহহহ
জুনায়েদঃ হুম ।
……
আমি এখন শুয়ে আছি আর জুনায়েদ আমার বুকে সিগারেটের ছাপ দিচ্ছে । কেমন কষ্ট হচ্ছে সেটা যে এই সিগারেটের ছাপ নিজের শরীরে দেই সেই বুঝে । কিন্তু আজকে এটা করছি ভালোবেসে । আমার বুকে শুধু ওর নামই থাকবে আর কারোর নাহ ।
আর ওহ তো ওর সারা শরীরে আমার নাম লেখেছে এমন ভাবে ।

……
জুনায়েদ লেখছে আর কান্না করছে । জানি ওর অনেক কষ্ট হচ্ছে কিন্তু এটাই যে আমার চাই আমার বুকে শুধু ঐ থাকবে ।

একবার করে লেখছে আর সেই জাগায় পাপ্পি দিচ্ছে কান্না করতে করতে ।

অনেকক্ষণ পরে পুরা লেখা হয় JUNAID নাম টা ।
লেখা শেষে আমাকে জরিয়ে ধরে আর ছাড়তেই চাইছে না । তখন আমি বললাম …

ফারজানাঃ এভাবে জড়িয়ে ধরে রাখবে নাহ পোড়া জাগায় মলম লাগিয়ে দিবে ?
জুনায়েদঃ এইরে ভুলে গেছি দাড়াও নিয়ে আসছি ।
ফারজানাঃ আমি দাড়াতে পারব না শুয়ে আছি তো ।
জুনায়েদঃ তোমাকে উঠতে বলছে কে । আমি তো কথার কথা বলেছি পাগলী উম্মম্মাহহ ।
ফারজানাঃ হুম ।
জুনায়েদঃ ওমা এমন করছো কেনো ?
ফারজানাঃ কি করছি ?
জুনায়েদঃ এই যে আমাকে বিছানায় ফেলে দিয়ে আমার বুকের ওপর উঠলে । মলম দিতে হবে তো ।
ফারজানাঃ ঐ টা আর লাগবেনা এখন যে আমার ভালোবাসা টা আছে এইতে সেরে যাবে ।
জুনায়েদঃ ধুর সারবেনা তুমি উঠো আমি লাগিয়ে দিচ্ছি ।
ফারজানাঃ লাগবেনা যাওতো ( জানালা দিয়ে মলম টা ফেলে দেই )
জুনায়েদঃ এই টা কি করলে তুমি ।
ফারজানাঃ হিহি ঠিকি করেছি ।
জুনায়েদঃ হুর ।
ফারজানাঃ তোমাকে একটা কথা বলি ?
জুনায়েদঃ হুম ।
ফারজানাঃ আমাকে এতো ভালোবাসো তাহলে কেনো এতো কস্ট দিলা আর তোমাকেই বা চেনা যাচ্ছিলো না কেনো ?
জুনায়েদঃ ওই সব কথা বাদ দাও তো ।
ফারজানাঃ নাহ বলতেই হবে ।
জুনায়েদঃ আচ্ছা বলব তাহলে আমাকে একটা জিনিস দিতে হবে ।
ফারজানাঃ কি ?
জুনায়েদঃ পাপ্পি দিতে হবে ।
ফারজানাঃ উম্মম্মম্মম্মাহহহহহহহহহহ এবার হয়েছো বলো ।
জুনায়েদঃ হুম খুব হয়েছে ।
ফারজানাঃ তাহলে এবার বলো ।
জুনায়েদঃ আসলে তোমাকে খুব ভালোবাসি তাই তুমি যদি দূরে চলে যাও আমায় ছেড়ে তাই তোমার বুকে শুধু আমার নাম লেখেছি ।
ফারজানাঃ ওহ আচ্ছা আর তোমাকে চিনতে না পারার কারন ?
জুনায়েদঃ এই ৮ বছরে আমি অনেক চেঞ্জ হয়েগেছি আমার মা বাবা ছাড়া কেউ চিনতে পারে না ।
ফারজানাঃ ওহ ।
জুনায়েদঃ হুম ।
ফারজানাঃ এবার একটু আদর করে দাও তো ।
জুনায়েদঃ আদর কিভাবে করে ?
ফারজানাঃ কেনো প্রতি রাতে যেভাবে আদর করে ।
জুনায়েদঃ ধুর আমি তো মদ খেয়ে থাকতাম ।
ফারজানাঃ এখন এমনেই করো আমি কি মানা করব নাকি । সবই তো তোমার ।
জুনায়েদঃ পারবনা আদর করতে ।
ফারজানাঃ পারবিনা মানে নে আদর কর উম্মম্মম্মম্মম্মম্মাহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহ
জুনায়েদঃ উহ দম বন্ধ হয়ে গেলো মুখ ছাড়াও আদর করছি ।
ফারজানাঃ উম্মাহ ভালো ছেলে ।

কিছুক্ষনের মধ্যে আমার চলে গেলাম ভালোবাসার এক অতল সাগরে ।


ভোরে …

জুনায়েদঃ এই যে মহারানী আপনি কি বুকে থেকে উঠবেন না ?
ফারজানাঃ উম
জুনায়েদঃ কি হলো উঠো ।
ফারজানাঃ উফফ
জুনায়েদঃ সকাল হয়ে গেছে তো ।
ফারজানাঃ আচ্ছা আমি তোমার বুকে একটু ঘুমাইছি তাই তোমার হিংসা হচ্ছে ?( রাগ দেখিয়ে )
জুনায়েদঃ হিংসা হবে কেন এটা তো তোমার জায়গা তুমি সারা জবন এখানেই থাকবে ।
ফারজানাঃ তাহলে এমন শুরু করেছো কেনো ?
জুনায়েদঃ ওকে মহা রানী আর বলছি না ।
ফারজানাঃ উম্মম্মাহহহ ।


কিছুক্ষন পরে …

ফারজানাঃ এই তুমি আমাকে কোলে করে ওয়াশ রুমে নিয়ে যাচ্ছো কেনো ?
জুনায়েদঃ হিহি তোমার সাথে আমি খেলা করুম তো তাই ।
ফারজানাঃ বুঝতে পেরেছি তুমি আমায় নামিয়ে দাও আমি এখন ফ্রেশ হবো না আরেকটু ঘুমাবো ।
জুনায়েদঃ সারা রাত আমার বুকে ঘুমালে তাও শান্তি হয়নি ।
ফারজানাঃ কই সারা রাত ঘুমালাম তুমি দুষ্টুমি করেছো শুধু ।
জুনায়েদঃ মিথ্যা বলবানা আমি না তুমি করেছো ।
ফারজানাঃ ওমাআআআআআআআআআ তুমি কি চিটার কথা বলার মাঝে আমাকে ফেলে দিলে ।
জুনায়েদঃ পানিতে ফেলাইছি অন্য জাগায় না তো ।
ফারজানাঃ ধুর ছাই ।
জুনায়েদঃ ভালো মেয়ের মত ফ্রেশ হয়ে আসো ।
ফারজানাঃ তুমি কই যাও ।
জুনায়েদঃ তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো তারপর আমিও ফ্রেশ হবো ।
ফারজানাঃ ধুর এক সাথ ফ্রেশ হবো ।
জুনায়েদঃ নাহ ।
ফারজানাঃ এএএ
জুনায়েদঃ কান্না করো কেন ?
ফারজানাঃ তুমি আমার কথা শুনতেছো না কেন ।
জুনায়েদঃ আচ্ছা দুজন এক সাথে ফ্রেশ হবো এবার খুশি তো ।
ফারজানাঃ উম্মাহহ খুব খুশি ।

তাপর দুজন এক সাথে ফ্রেশ হয়ে নিচে এসে নাস্তা করলাম সবার সাথে ।


কিছু দিন পরে …

আমার নামে একটা টেলিগ্রাম আসে আর সেটা হলো আমি যে বিয়ে আগে চাকরির আবেদন করেছিলাম সেটা হয়ে গেছে । অনেক খুশি ;লাগছে কিন্তু জুনায়েদ তো আমায় অনেক ভালোবাসে ও কি বাইরে আমাকে জব করতে দিবে । এটাও ভেবে মন খারাপ লাগছে । …
রাতে যখন জুনায়েদ বাসায় ফিরে ঘুমানোর সময় তার বুকে মাথা রেখে এই এই কথা গুলো বলছি …
ফারজানাঃ একটা কথা বলব ?
জুনায়েদঃ হুম বলো ।
ফারজানাঃ নাহ থাক ।
জুনায়েদঃ আমার বউ টার মন খারাপ কেনো বলে ফেলো কথা টা কিছু মনে করব না ।
ফারজানাঃ রাগ করবে না তো ।
জুনায়েদঃ নাহ ।
ফারজানাঃ বিয়ের আগে আমি একটা জব আবেদন করেছিলাম সেটা হয়ে গেছে ।
জুনায়েদঃ এটা তো খুশির খবর ।
ফারজানাঃ খুশি না ছাই তুমি তো করতে দিবা না ।
জুনায়েদঃ আমি কি বলেছি করতে দিবো নাহ ।
ফারজানাঃ তার মানে তুমি জব করতে দিবা ( অনেক খুশি হয়ে )
জুনায়েদঃ হুম ।
ফারজানাঃ উম্মম্মম্মম্মম্মম্মম্মাহহহহহহহহহহহহহহ ( পাক্কা ৩মিনিট জুনায়েদ কে পাপ্পি দেই )
জুনায়েদঃ এইরে তোমাকে তো আর খুশি করানো জাবেনা ।
ফারজানাঃ কেনো ?
জুনায়েদঃ এই যে খুশি থাকলেই পাপ্পির ঝড় তুলে দাও ।
ফারজানাঃ উম্মম্মাহহহ হিহি আরো দিমু ।
জুনায়েদঃ এবার ঘুমাও ।
ফারজানাঃ আমার একটু আদর খাইতে মন চাচ্ছে ( ভয়ে ভয়ে চোখ টা বুঝে )
জুনায়েদঃ মারব একটা ঘুমাও কাল ত তোমার নতুন অফিসে যেতে হবে ।
ফারজানাঃ হুম ।
জুনায়েদঃ তাহলে ঘুমাও ।
ফারজানাঃ উম্মম্মাহহহহহ ।
জুনায়েদঃ উম্মম্মম্মাহহহ ।

আজ খুব সকালে উঠেছি কারন আজকে অফিসের আজ প্রথম দিন ।
তাই জুনায়েদ কে খাইয়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি রেডি হলাম তারপর জুনায়েদ বলে ও নাকি আমার সাথে যাবে ওর অফিস নাকি আমার অফিসের কাছে । ভালোই হলো দুজন এক সাথেই প্রতিদিন যেতে পারবো আর আসতে পারবো ।

আমার অফিসের আগেই জুনায়েদ নেমে গেলো ।

অফিসে যাওয়ার পরে ম্যানেজার সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো । তারপর যেই মালিকের রুমে প্রবেশ করেছি অবাক না হয়ে পারছি না কারন জুনায়েদ বসে আছে । আর আমাকে দেখে জুনায়েদ মিট মিট করে হাসছে ।

জুনায়েদঃ ওমন করে হা করে আছো কেনো ?
ফারজানাঃ তুমি ?
জুনায়েদঃ হুম এটার এই কোম্পানির মালিক আমিই ।
ফারজানাঃ একটা চিমটি মারো তো ।
জুনায়েদঃ কেনো ?
ফারজানাঃ মারতে বলেছি মারো ।
জুনায়েদঃ আচ্ছা ( বলেই অনেক চিমটি মারে )
ফারজানাঃ উম্মাআআআআ এতো জোরে চিমটি মারে
জুনায়েদঃ হিহি এবার বিশ্বাস হয়েছে ।
ফারজানাঃ হুম ।
জুনায়েদঃ চলো আরেক বার তোমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই ।
ফারজানাঃ হুম ।

তারপর সবার সাথে আবার পরিচয় করিয়ে দিলো ।

পরে যেনেছিলাম জব আবেদনের দিনে আমাকে দেখে চিনতে পারে আর পরে সব খবর নিয়ে আমার বাবাকে বিয়ের জন্য রাজি করাই ।


৭ বছর পর


মারিয়াঃ আম্মু ঘুমাবো আমি ঘুমাবো ভাইয়া দেখো বিছানা উল্টিয়ে ফেলেছে ।
মূসাঃ না আম্মু আপু মিথ্যা কথা বলছে ।
মারিয়াঃ নাহ আম্মু তুমি দেখে যাও ।
মূসাঃ নাহ আম্মু তুমি ঘুমাও আমরাও ঘুমাই ।
মারিয়াঃ ভাইয়া তুমি এমন করো কেনো বার বার ?
মূসাঃ আপু তুমি বুঝোনা এমন করলে প্রতিদিন আম্মু আমাদের অনেক গল্প শোনায় ।
মারিয়াঃ হ্যা ভাইয়া ঠিক বলেছো ।
মূসাঃ তাহলে আপু জোরে জোরে চিল্লাও ।
মারিয়াঃ আম্মু দেখো ভাইয়া আবার শুরু করেছে ।

ফারজানাঃ কি ব্যপার মূসা তুমি এলোমেলো করেছো কেনো ?
মূসাঃ বিছানায় কেমন জানি ঘুম হচ্ছে না তাই ।
মারিয়াঃ হিহি ।
ফারজানাঃ মারিয়া তুমি হাসতেছো কেনো ?
মারিয়াঃ এমনি আম্মু ।
ফারজানাঃ মুসা তুমি যদি বিছানা আবার ঠিক করো । তাহলে আজ গল্প শোনাবো ।
মূসাঃ দাড়াও আম্মু ঠিক করতেছি ।

মারিয়া আর মুসা দুই মিনিটে সব ঠিক করে ফেলে তারপর ওদের গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে নিজের রুমে আসি ।

মারিয়া আর মূসা আমার আর জুনায়েদের ভালোবাসার পরশ । আমাদের লক্ষী মনি শোনা দুটা । মারিয়া আর মূসা তারা যমজ তাই তারা আপনি আপনি বা ভাইয়া আপু বলেই তাদের ডাকে । কেউ বলতে পারেনি কে আগে হয়েছে তাই ।

জুনায়েদঃ আমি একা রুমে আছি ভয় করেনা বুঝি ।
ফারজানাঃ ওহ তাই নাকি ?
জুনায়েদঃ হুম ।
ফারজানাঃ বলোনা দুষ্টুমি করার ধান্দা ।
জুনায়েদঃ সব বুঝো যখন কথা বলছো কেনো হু ।
ফারজানাঃ হিহি তুমিই তো আমার সব তোমার সব আব্দার আমি ছাড়া কে পূরণ করবে শুনি ।
জুনায়েদঃ আমার লক্ষী বউ উম্মম্মম্মম্মাহহহহ ।
ফারজানাঃ উম্মম্মম্মাহহহহ ।
…।
..

স্বামী সন্তান নিয়ে আমাদের সংসার ভালো চলছে আমরা এখন খুব সুখিই আছি আর মারিয়া মুসা আমাদের খুশি দ্বিগুন বাড়িয়ে দিয়েছে ওদের সব ছোট ছোট আবদারে । …
…।

সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here