ক্রাশ ডাক্তার বউ পর্ব ১৬+১৭

16+17
#ক্রাশ_ডাক্তার_বউ
#Writer_Sarjin_Islam [সারজীন]
#Part:16
মাহি সারা কে জড়িয়ে ধরলে সারা ছাড়িয়ে নিয়ে রুমে সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়। সারার পাপা মাথা নিচু করে বসে আছে। রিয়া আর খালার চোখে খুশির ঝিলিক দেখা যাচ্ছে। মাহির আর মাম্মা রেগে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। সারা ওদের দিকে তাকিয়ে অদ্ভুত এক হাসি দিয়ে পা বাড়ায় অন্ধকার রাস্তায় দিকে।
.
সারার কষ্ট আজ আকাশ সমান।ওর ভালোবাসার মানুষ ওকে বিশ্বাস না করে সামান্য কয়েকটা ছবি দেখে ওকে এভাবে অবিশ্বাস করতে পারলো।সারার চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়তে শুরু করে। এতক্ষন ওদের সামনে অনেক কষ্টে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখ মুছে অন্ধকারে হেঁটে চলেছে সারা। কোথায় এসেছে সারা তা অন্ধকারে বুঝতে পারছে না সারা। রাস্তার ওপাশের তাকিয়ে দেখে কিছু পথশিশু খাবার ভাগাভাগি করে খাচ্ছে। সারা এই মূহুর্তে মনে করে ওদের থেকে সুখি এই দুনিয়াতে কেউ নেই। সারা গুটি গুটি পায়ে ওদের পাশে গিয়ে বসে। ওদের ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা করে। সারা বুঝতে পারে ওরা অনেক যুদ্ধ করে এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে বেঁচে আছে। ওরা সবাই খোলা আকাশের নিচে ঘুমিয়ে পড়লে। সারা কালো মেঘাছন্ন আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ আগের মাহিরের বলা কথা গুলো মনে করে ওর ভালোবাসার প্রতি ঘৃণা জন্মাতে শুরু করে। সারা শুধু এখন একটাই চিন্তা ওর অনাগত সন্তানকে নিয়ে ওকে বাঁচতে হবে।সারার চোখে ঘুম নেই। চারদিকে নিস্তব্ধতা। দূর থেকে আজানের শব্দ ভেসে আসছে। সারা পাশে তাকিয়ে দেখে পথশিশুদের মধ্যে কিছু ছেলে মেয়ে ঘুম থেকে উঠে পড়েছে। ওরা পাশের একটা কল থেকে ওযু করে নিয়ে ছেলেরা পাশের মসজিদে চলে যায়।আর দুটো মেয়ে রাস্তার ফুটপাতে বসে নামাজ পড়তে শুরু করে। সারা চিন্তা করে আল্লাহ যাদের না চাইতেই সব দিয়েছে তারা তাদের উগ্র জীবনধারণ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে।তারা আল্লাহ তায়ালা কথা বোধহয় ভুলেই গেছে।আর এদের মত যারা অবহেলিত, দুবেলা ঠিক মত খেতে পারে না, তারা ঠিকই আল্লাহ তায়ালা ইবাদত করতে ভুলে না। সারা এসব ভাবনা বন্ধ করে পাশের কল থেকে ওযু করে এসে ওখানের একটা মেয়ের কাছ থেকে একটা কাপড় নিয়ে ফুটপাতে বিছিয়ে নামাজ আদায় করে নেয়। সারা নামাজ পড়ে উঠে দেখে ওরা কাজের জন্য বেরিয়ে যাচ্ছে। সারা আটার দিকে একটা হোটেলে ওঠে।ফ্রেশ হয়ে একটু বেলা করে কলেজে যায় সারা ওখান থেকে সব কাগজপত্র গুছিয়ে নেয় সারা। কলেজ থেকে বেরিয়ে শপিং মলে যায় সারা নিজের কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য,কাল‌ দুপুর থেকে একটা ড্রেস পরে আছে সারা। এরপর ব্যাংকে গিয়ে সারার স্কলারশিপের টাকা তুলে নেয়। সাতদিন পর সারা সব কাগজপত্র ঠিক করে ইউকের ফ্লাইটে বসে আছে। সারা ইচ্ছে করে রাজ আর মিথিলাকে ওর কথা জানায়নি তাহলে ওরা কিছুতেই ওকে ওদের থেকে দূরে যেতে দেবে না। কিন্তু এখানে থাকলে তো মাহিরের স্মৃতি ওকে বাঁচতে দিবে না। সারা ফ্লাইটে বসে নিজো ভাবনায় ব্যস্ত। ঘটনা চক্রে সারার পাশের সিটটা মাহিনের থাকে। মাহিন বড়ো মিশুক একটা ছেলে। যেখানেই যায় সবাইকে আপন করে নেয়।মাহিন ই প্রথম সারার সাথে কথা বলতে শুরু করে। সারা শুধু হু,হ্যা, না এসবের মধ্যেই উত্তর দিচ্ছে। মাহিন এইটুকু সময় নিজের জীবনের অর্ধেকর বেশি গল্প করে ফেলেছে। সারা ও মাহিনের সাথে কথা বলে ভালো লাগে। সারা এয়ারপর্টের সমস্ত ফর্মালিটি পূরণ করে বাইরে এসে দাঁড়ায় গাড়ির জন্য। হঠাৎ করে সারার চারদিকে অন্ধকার হতে শুরু করে কিছু বুঝে ওঠার আগেই সারা মাথা ঘুরে পড়ে যায়। একে তো প্রেগন্যান্ট তার উপরে সাতদিন ধরে ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করে নি, শুরু কফি আর কিছু শুকনো খাবার খেয়ে ছিলো।সারা জ্ঞান ফিরে দেখে ও একটা হসপিটালে বেডে শুয়ে আছে। সারা জানতে পারে মাহিন নামের ছেলেটা ওকে হসপিটালে নিয়ে এসেছে। সারা ওকে ধন্যবাদ জানায় ওকে এই অবস্থায় সাহায্য করার জন্য। মাহিন সারা কে দেখে বেশ বুঝতে পারে ও কোনো সুবিধা পড়েছে না হলে একটা মেয়ে এই অবস্থায় কখনো একা একা জার্নি করতো না। মাহিন সারা কে জিজ্ঞাসা করলে সারা এরিয়ে যেতে চায় কিন্তু মাহিনের জোরাজুরির কারনে আর পারে না। অবশেষে সারা মাহিন কে ওর জীবনের সব ঘটনা খুলে বলে। মাহিন কি বলবে বুঝতে পারছে না। মাহিন সারা কে ওর সাথে ওর বাড়িতে নিয়ে যেতে চায় কিন্তু সারা কিছুতেই রাজি হয় না। মাহিন কাঁদো কাঁদো মুখ করে বলে আমি যদি তোমার ভাই হতাম তাহলে কি আমার সাথে যেতে না। সারা শেষ মেষ রাজি হয়। মাহিন সারা কে নিয়ে ওর বাড়িতে যায়।মাহিনের আর কোনো ভাই বোন না থাকায় সারা কে নিজের বোনের থেকেও বেশি ভালোবাসে মাহিন। এরমধ্যে মাহিন ওর বাবা মা কে ডেকে পাঠায় ইউকেতে একটা সারপ্রাইজ দেবে বলে।ওরা এলে মাহিন ওর বাবা মা কে তাদের মেয়ে হিসেবে সারা কে উপহার দেয়। মাহিনের বাবা মার খুশি দেখে কে ওরা সব সময় চাইতো আল্লাহ যে নো একটা মেয়ে সন্তান দেন কিন্তু তা আল্লাহ পূরণ করে নি। মাহিন সারার অতীত সম্পর্কে ওর বাবা মা কে বস বলে। ওদের এক কথা অতীত ভুলে সারা কে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাবে।সারাও খুশি নতুন বাবা মা ভাই পেয়ে। কিছুদিন পর সারা ইউকের একটা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে যায়। মাহিন ওকে নতুন একটা সিম কার্ড কিনে দিয়েছে সেটা ফোনে সেট করতে গিয়ে ফোন অন‌ করে দেখে মাহি,জারা, আরফিন,আরাফ এরা অনেক ফোন আর মেসেজ করেছে। না আছে ওর বাবা মা কোনো ফোন, না আছে মাহিরের কোনো ফোন। সারা একটা তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে পুরনো সিম কার্ড টা ভেঙে ফেলে। শুরু হয় সারার নতুন পথ চলা। প্রেগন্যান্সির সময় মাহিন আর ওর মা সারার অনেক খেয়াল রেখেছে। রোদ আর রোদ্রি পৃথিবীতে আসে। সারা বেঁচে থাকার নতুন মাধ্যম খুঁজে পায়। দেখতে দেখতে পেরিয়ে যায় পাঁচ বছর। সারা কে ইউকের নামকরণ ডাক্তার হিসেবে কম বেশি সবাই চিনে। এরমধ্যে আলাপ হয় হিয়ার সাথে সারার এসিস্ট্যান্ট। মেয়েটা খুব ভালো।সারার মত ও ওর ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে দোকা খেয়েছে। হিয়া প্রেগন্যান্ট হলে ওর সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে চলে যায়। হিয়া ওর মেয়ে দিয়া কে নিয়ে নতুন করে বাঁচতে শুরু করে।দিয়া কে ওর নানুর কাছে রেখে হিয়া সারার সাথে বাংলাদেশে আসে। সারা তো অগোছালো জীবনটাকে গুছিয়ে নিয়ে তো ভালোই ছিলো।কি দরকার ছিলো আর মাহিরের মুখোমুখি হবার। সারা এসব ভেবে চিৎকার করে কেঁদে উঠে।সারার কান্না শোনার মত এখানে কেউ নেই।চারিদিকে নিস্তব্ধতা। শুধু প্রকৃতির সারা কান্না গুলো উপভোগ করছে।
.
.
.
বর্তমানে 🍁
সারা : তুমি তো আমাকে বলেছিলে আমি যেনো তোমার জীবন থেকে চলে যাই।তাই তো গেছিলাম। তাহলে কেনো তুমি এই খারাপ মেয়েটা জীবনে ফিরে আসতে চাইছো। রিয়া তখন বললো তোমাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।আর এদিকে তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছো। আমি কার কথা বিশ্বাস করবো বলতে পারো?ও আল্লাহ তুমি আমাকে এই যন্তনা থেকে মুক্তি দেও।
.
সারার চোখ যায় পাশে রাখা ফোনটা দিকে। সারা ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে ৩:৫৪ বাজে,তার পাশে কিছু নোটিফিকেশন চোখে পড়ে তাতে দেখে মাহির, মাহি, মাহিন, আরফিন,জারা,আরাফ,আরো কিছু অপরিচিত নাম্বার থেকে অগনিতবার ফোন এসেছে। কিছুদিন আগে মাহির সারার ফোন নাম্বার নিয়েছিল রোদ আর রোদ্রি কে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিল আসতে রাত হয়ে যাওয়ায় কারনে। সারা এখন কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। সারা ফোনটা হাতে নিয়ে ক্লান্ত শরীরে উঠে দাঁড়িয়। রাস্তায় তেমন গাড়ি ঘোড়া না থাকায় সারা খুব জোরে গাড়ি ড্রাইভ করতে শুরু করে। সারা গাড়ির পাশ‌ দিয়ে একটা মাইক্রো চলে গেলে সারার গাড়ির গ্লাস খোলা থাকায় রাস্তার পাশের পাশের ধুলো বালি সারার চোখে ডুকে যায়। সারা চোখে ভালো ভাবে কিছু দেখতে পাওয়া না। সারা উল্টো পাল্টা ড্রাইভ শুরু করে। সারা কোনো মতে চোখ খুলে দেখে ওর গাড়ির দিকে একটা ট্রাক দেয়ে আসছে।সারা কোনো ভাবে গাড়ি থামানোর চেষ্টা করছে। হঠাৎ একটা বিকট শব্দে পরিবেশ স্তব্ধ হয়ে যায়। সারা এক অন্ধকার জগতে হারিয়ে যাচ্ছে। বারবার রোদ,রোদ্রি আর মাহিরের মুখটা ভেসে উঠছে সারার চোখের সামনে। চোখ খুলে রাখতে বড়ো কষ্ট হচ্ছে সারার। সারা আস্তে আস্তে চোখ বন্ধ করে অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে।
.
এদিকে মাহির অনেক কষ্টে রোদ আর রোদ্রি কে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে।রোদ্রি তো সারার বুকে মাথা না দিয়ে কখনো ঘুমায় না।রাত সাড়ে বারোটায় অনুষ্ঠান শেষে হলে তখন সারার খোঁজ পড়ে। অনেক খোঁজাখুঁজি পরও সারা কে রিসোর্টের কোথাও পাওয়া যায় নি।আরাফ রিসেপশন থেকে জানতে পারে সারা গাড়ি নিয়ে কোথায় যেনো বেরিয়ে গেছে। মাহির আর মাহিন আশেপাশে খোঁজ করে কিন্তু সারার খোঁজ পায় না। এতক্ষন সারার মাম্মা,পাপা ছোট মাম্মা,ছোট পাপা,মাহিরের মামনি,বাবাই,মাহি, আরাফ,আরফিন,জারা,রাজ আর মিথিলার পরিবারের কিছু লোক ছিলো সবাই রিসোর্টের বাগানে বসে সারার জন্য চিন্তা করছিল। মাহির ওদের বুঝিয়ে ওদের রুমে পাঠিয়ে দেয়। মাহির আর মাহিন দুজনেই সারার অপেক্ষায়।রাজ আর মিথিলাকে সারার কথা বলেনি কেউ আজ ওদের বাসর রাত বলে। মাহিন টেবিলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে দূর থেকে আজানের শব্দে মাহিন হকচকিয়ে উঠে। মাহিন মাহিরের দিকে তাকিয়ে দেখে ও এখনো ফোনে ট্রাই করে যাচ্ছে। নামাজ পড়ে সবাই আবার বাগানে চলে আসে।কারো চোখেই ঘুম নেই। ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। পাখিরা ডানা মেলে মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে। নিস্তব্ধ পরিবেশ সমুদ্রের ঢেউর শব্দ শোনা যাচ্ছে।শেষ কিছুক্ষণ ধরে আরাফ সারার‌ ফোনে ট্রাই করে যাচ্ছে।ঘড়ির কাঁটা তখন ৬:৩৮ বাজে।আরাফের ফোনে একটা ফোন আসে।সবাই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আরাফের ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে।আরাফের ঠোঁটে হাসির রেখা ফুটে উঠে সারার ফোন থেকে কল এসেছে। ফোন কানের কাছে নিয়েই হাসি মুছে যেতে শুরু করে, আস্তে আস্তে কালো মেঘ এসে ভর করে আরাফের মুখে ফোনের ওপাশের ব্যাক্তির কথা শুনে।সবাই ওকে প্রশ্ন করে যাচ্ছে কে ফোন করেছে?কি হয়েছে?আরাফ নিচের দিকে তাকিয়ে নিতেজ কন্ঠে বলে।
.
আরাফ : আপুর গাড়ি কাল রাতে এক্সিডেন্ট করেছে।যেখানে এক্সিডেন্ট হয়েছে ওখানকার লোকরা আপুকে আর ট্রাক ড্রাইভারকে হসপিটালে ভর্তি করে। আপুর ফোন ঐ লোকরা পেয়ে হসপিটালে রিসেপশনে জমা দেয়। রিসেপশন থেকে ফোন করে আমাকে জানায়। আপুর অবস্থায় খুব খারাপ যে কোনো সময় যে কোনো কিছু হয়ে যেতে পারে। আপু মাথায়,বাম পায়ে,ডান হাতে খুব বাজে ভাবে আঘাত পায়। আপু বাঁচবে কি না তা ডাক্তার নিশ্চয়তা দিতে পারছে না।
.
একথা শুনে সারার মাম্মা চিৎকার করে কেঁদে উঠে। মাহির পাথরের মুতির মত দাঁড়িয়ে আছে। কেউ বিশ্বাস করতে পারছে না এই ঘটনা। মাহির আর মাহিন আরাফের কাছ থেকে হসপিটালে ঠিকানা নিয়ে দৌড় লাগায় হসপিটালে উদ্দেশ্যে।

To be continue…🍁

#ক্রাশ_ডাক্তার_বউ
#Writer_Sarjin_Islam [সারজীন]
#Part:17
মাহির আর মাহিন আরাফের কাছ থেকে হসপিটালে ঠিকানা নিয়ে দৌড় লাগায় হসপিটালে উদ্দেশ্যে।
.
হসপিটালের করিডোরে কেউ পাইচারি করছে টেনশনে আর কেউ এক মনে আল্লাহ কে ডেকে যাচ্ছে।রাজ মিথিলা ও ছুটে এসেছে সারার এ অবস্থায় শুনে। ওরা একসাথে ছোট থেকে বড় হয়েছে। একজন আরেকজনের আত্মার সাথে মিশে আছে। মিথিলার চোখে পানি।রাজ মিথিলা কে বারবার শক্ত হাতে বলছে। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার সারার কেবিন থেকে বেরিয়ে এলে সবাই ডাক্তার কে ঘিরে ফেলে উত্তেজিত হয়ে একটা কথাই জিজ্ঞাসা করছে, সারা কেমন আছে?ডাক্তার সবাইকে শান্ত করে বলে।
.
ডাক্তার : দেখুন রোগীর বাম পা,ডান হাতে খুব বাজে ভাবে আঘাত পেয়েছে। মাথায় যে কাঁচ গুলো ঢুকেছিল আমি কাঁচ গুলো বের করে দিয়েছি কিন্তু ওনার মাথায় বেশ কয়েকটি খুব ছোট ছোট কাঁচের টুকরো রয়ে গেছে।তা অপারেশন করে বের করতে হবে। কিন্তু আমাদের এখানে এই বিষয়ে অপারেশন করার মত কোনো ভালো ডাক্তার নেই। আমার পরিচিত একজন ডাক্তার আছে ঢাকা মেডিকেলে নাম ডাক্তার রিয়াজ। আমি ফোনে তার সাথে এই ব্যাপারে আলোচনা করেছি তিনি বলেছেন রোগীকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঢাকায় নিয়ে ট্রিটমেন্ট শুরু করতে। এখন বাকিটা আপনাদের সিদ্ধান্ত।
.
মাহির ওর বাবাই কে বলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঢাকায় ফেরার ব্যবস্থা করতে।ওর বাবাই ও দুই ঘণ্টার মধ্যে প্লেনের টিকিট বুক করে ফেলে।রাজ মিথিলা ডাক্তারের কাছ থেকে সব কিছু ভালো ভাবে বুঝে নিয়েছে।সারার পাপা রিসোর্টে ফোন করে সবাইকে বলে দিয়েছে তাড়াতাড়ি জামাকাপড় গুছিয়ে নিতে বলছে দুই ঘণ্টা পর তাদের ফ্লাইট। মাহির ধীর পায়ে সারার কেবিনে ঢুকে। সারার মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো। কেমন শান্ত ভাবে ঘুমিয়ে আছে। মাথায় ব্যান্ডেজ করা,বাম পায়ে আর ডান হাতে ও ব্যান্ডেজ করা। সারা কে এমন ভাবে দেখতে মাহিরের মোটেও ভালো লাগছে না। মাহির আস্তে আস্তে গিয়ে সারার কপালে একটা চুমু দেয়।মাহিরের খুব ইচ্ছে করছে ওকে বুকের সাথে জড়িয়ে নিতে। কিন্তু এখন সারার এই অবস্থায় তা করা যাবে না।
.
এদিকে রিসোর্টে সবাই খুব তাড়াতাড়ি সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছে। রোদ আর রোদ্রি কে মাহিরের মামনি আর সারার মাম্মা সামলানোর চেষ্টা করছে। রোদ সামলানো গেলেও।রোদ্রি কে সামলানো যাচ্ছে না।মেয়েরা সাধারণত বাবার পাগল হয় কিন্তু রোদ্রি উল্টো ও ওর মাম্মার পাগল। সারার মাম্মা অনেক কষ্টে নিজের কান্না চেপে রেখে রোদ্রি কে বোঝাতে সক্ষম হন।আপাদত সারার পরিবার,মাহিরের পরিবার, মাহিন,রাজ আর মিথিলা এক ফ্লাইটে যাবে। টিকেটের সমস্যা হওয়ার কারণে রাজের পরিবার ও মিথিলার পরিবারের সবাই পরের ফ্লাইটে আসবে।জারার সবাই এয়ারপর্টে চলে এসেছে। হসপিটাল থেকে এখনো কেউ আসেনি। কিছুক্ষণের মধ্যে একটা অ্যাম্বুলেন্স এসে এয়ারপর্টের সামনে দাঁড়ায়। সারা কে স্টেচে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভাগের কি পরিহাস কক্সবাজার এসেছিল দুই সন্তানকে কোলে নিয়ে আর যাচ্ছে জীবন্ত লাশ হয়ে। রোদ আর রোদ্রি সামনে দিয়ে সারা কে নিয়ে যাওয়ার সময় ওরা দুজন মাম্মা বলে জোরে চিৎকার দেয়। ওদের চিৎকারে পুরো পরিবেশ নিস্তব্ধতা বিরাজ করে। রোদ আর রোদ্রি ছিলো‌ জারা আর আরফিনের কোলে।ওরা কোনো মতে কোল থেকে নেমে ছোট ছোট পায়ে সারার স্টেচের পিছনে দৌড়ে যায়।এ দৃশ্য দেখে মাহিরের মামনি আর সারার মাম্মা শাড়ির আঁচলে মুখ ঢেকে কান্না করে। মাহির নিজেকে শক্ত করে রোদ আর রোদ্রি কে বুকে জড়িয়ে ধরে। রোদ আর রোদ্রি মাহির কে ছাড়ালোর চেষ্টা করছে সারার কাছে যাবে বলে।রোদ্রি মাহির কে বলে।
.
রোদ্রি : পাপা থারো আমি মাম্মার কাতে দাবো।মাম্মা দুমিয়ে আথে তেনো?মাম্মা ব্যাথু পেয়েথে কি কলে?
.
রোদ : অহহহহ।পাপা বোন থিক বলথে। আমলা মাম্মার কাথে দাবো।
.
মাহির : তোমাদের মাম্মা ঘুমিয়ে পড়েছে। পড়ে গিয়ে অল্প ব্যাথা পেয়েছে। চিন্তা করো না তোমাদের মাম্মা খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে।
.
রোদ,রোদ্রি : ছতি?
.
মাহির : হ্যা সত্যি। এখন তোমরা দিদা আর নানুর কাছে থাকো। একদম দুষ্টুমি করবে না।
.
রোদ আর রোদ্রি মাথা নেড়ে ওদের দিদা আর নানুর কোলে উঠে বসে। নির্ধারিত সময়ে ফ্লাইট ছেড়ে দেয় ঢাকার উদ্দেশে। দুপুর একটার মধ্যে সারা কে হসপিটালে ভর্তি থেকে শুরু করে সব পরিক্ষা নিরিক্ষা সব হয়ে যায়। অপারেশনের সময় দেওয়া হয়েছে সন্ধ্যা ছয়টায়। এখনো অনেক সময় বাকি অপারেশনের তাই মাহির আর মাহিন সবাইকে জোর বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় কিছুক্ষণ বিশ্রাম করার জন্য।রাজ আর মিথিলা যেহেতু ডাক্তার তাই তারা অপারেশন থিয়েটারে থাকার অনুমতি পেয়েছে। মাহিন ওর বাবা মা কে সারার বেপারে এখনি কিছু জানায়নি, অপারেশনের পর জানাবে বলে ঠিক করে। মাহিন মাহির কে দেখে ভেবে পায়না যে মাহির সারা কে এত ভালোবাসে সে কেনো ঐ দিন সারা কে অবিশ্বাস করে ছিলো। মাহির আইসিইউর দরজার কাঁচের সামনে দাঁড়িয়ে সারার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আপাতত আইসিইউতে যাওয়ার কারো অনুমতি নেই। কাঁচটুকু দিয়ে সারা কে দেখার চাহিদা পূরণ করছে মাহির।কি শান্ত মনে ঘুমিয়ে আছে। না আছে কোনো চিন্তা, না আছে কোনো ঝামেলা। দেখে মনে হচ্ছে সারা কতো বছর ধরে ঘুমায় না,আজ কি শান্তিতে ঘুমাচ্ছে। মাহির এ সারা কে মেনে নিতে পারছে না। আগেই তো ভালো ছিলো মাহির সারার কাছে ক্ষমা চাইলে সারা মাহির কে কিছু কড়া কড়া কথা শুনিয়ে দিতো। তবুও তো সারা তখন ওর সাথে কথা বলতো। কিন্তু এখন? পুরুষ মানুষ না কি কাঁদতে জানে না। কিন্তু মাহির সারার কিছু হলে ও নিজেই কেঁদে দেয়।সেই কখন থেকে মাহির দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সারা কে দেখে যাচ্ছে। না আছে কোনো ক্লান্তি, না আছে মুখে কোনো বিরক্তির ছাপ। মাহিন কিছুক্ষণ পর পর ডাক্তারের সাথে কথা বলে আসছে। মাহিন হিয়া কে ফোন করে ইমারজেন্সি বাংলাদেশ বেক করতে বলে। হিয়া ওর মামার বাড়ি থেকে একদিন পর ফিরে আসে। একথা সারা কে ফোনে বলে। সারা বলে সারার ইউকে ফিরতে কিছুদিন দেরি হয়ে।তার থেকে বরং হিয়া আগেই ইউকে ফিরে যায়।ওর মেয়ে তো ছোট এতদিন ওকে ছাড়া থাকবে কি করে।তাই হিয়াও পরেরদিন ইউকে ফিরে যায়। মাহিন এও বলে ওর মেয়ে আর মাকে যেনো সাথে করে নিয়ে আসে।আছরের আজান মাহিরের কানে আসে।মাহিরের তখন সারার কথা মনে পড়ে যায়। সারা একদিন মাহির কে বলেছিল নামাজ পড়ে মোনাজাতে পবিত্র মনে যদি কিছু চায় তাহলে আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই মনের ইচ্ছে পূরণ করে। সারা মাহিরের জীবন থেকে চলে গেলে মাহির আর কখনো নিয়মিত নামাজ পড়েনি। মাহির মাহিন কে বলে হসপিটালে থেকে বেরিয়ে যায় নামাজ পড়তে। মাহির মোনাজাতে আল্লাহ তায়ালা কাছে ক্ষমা চেয়ে সারার জন্য দোয়া প্রার্থনা করে। বিকালে পাঁচটা পর একে একে সবাই আসতে শুরু করে।আর এক ঘন্টা পর সারার অপারেশন। শুধু মাহিরের মামনি আর সারার মাম্মা বাঁধে সবাই হসপিটালে চলে আসে। রোদ আর রোদ্রি কে সামলে রাখার জন্য তারা দুজন আসেনি। মাহির ফোনে ওদের খোঁজ খবর নিয়েছে। মাহির আর মাহিনের সারাদিনে কিছু খাওয়া হয়নি। কাছের মানুষের এমন অবস্থা দেখলে কারোই খাওয়া কথা মনে থাকে না। সারা কে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার সময় মাহিরের চোখে পানি আজ বাঁধ মানছে না। মাহির সারার কপালে একটা আলতো করে চুমু দেয়।সবার সামনে দিয়ে সারা কে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। মাহির আর এক মিনিট ও ওখানে না দাঁড়িয়ে মাগরিবের নামাজ পড়তে বেরিয়ে যায়। মাহির একেবারে এশার নামাজ পড়ে হসপিটালে চলে আসে। এসে দেখে সারার অপারেশন এখনো চলছে।মাহিরের বড়ো ক্লান্ত লাগছে। পাশের সিটে বসে পড়ে।আজ এই দিনটার জন্য মাহির নিজেকেই দায়ী করছে।ঐ দিন যদি সারা কে অবিশ্বাস না করতো তাহলে আজ হয়তো এই সময় মাহির অফিস থেকে বাড়িতে আসতো আর রোদ,রোদ্রি সারাদিন কি কি দুষ্টুমি করছে তা মাহির কে বলতো। সারা এসে তাড়া দিয়ে মাহির কে ফ্রেশ হতে পাঠাতো।এসব চিন্তা করে মাহির দৈর্ঘ্য শ্বাস ফেলে।ঘড়ির কাঁটায় ৯:২৭ বাজে। অপারেশন থিয়েটার থেকে ডাক্তার রিয়াজ বেরিয়ে এলে,তার পিছন পিছন রাজ আর মিথিলা ও বেরিয়ে আসে।সবাই অস্তির মনে উত্তেজিত হয়ে একই প্রশ্ন সারা কেমন আছে? অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে?ডাক্তার এতক্ষন গম্ভীর হয়ে ছিলো। তিনি এত প্রশ্ন শুনে এক চিল হেসে উত্তর দেয়।
.
ডাক্তার রিয়াজ : চিন্তার কারণ নেই। অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে। কাল সকালে উনার জ্ঞান ফিরবে। খেয়াল রাখবেন উনি যেনো উত্তেজিত হয়ে না পড়ে।হাত পা ঠিক হতে তিন মাসের মত সময় লাগবে। উনাকে টেনশন ফ্রি রাখার দায়িত্ব আপনাদের। উনার পনের দিন পর বাড়ি নিয়ে যেতে পারেন।
.
ডাক্তারের কথা শুনে সবার মুখে হাসি ফুটে উঠে। জারা ফোন করে বাড়িতে এ খবর জানিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর সারা কে কেবিনে দেওয়া হয়। জারা আর আরফিন মাহির এর মাহিন কে জোর করে হসপিটালের পাশের রেস্টুরেন্টে নিয়ে যায় কিছু খাওয়ানো জন্য।ওরা হালকা কিছু খেয়ে নিয়ে আবার হসপিটালে চলে আসে। মাহির সবাইকে বাড়ি চলে যেতে বলে হসপিটালে মাহির আর মাহিন থাকবে রাতে।মাহিরের কথা শুনে সবাই চলে যায়। এরমধ্যে মাহির আর মাহিনের মধ্যে ভালো একটা সম্পর্ক হয়ে গেছে। সারারাত মাহির আর মাহিন সারার কেবিনে থাকা সোফায় কাটিয়ে দেয়। ফজরের আজান দিলে মাহিন কে বলে মাহির মসজিদে চলে যায়। ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। পূর্ব দিকে থেকে সূর্য সবে উঁকি দিতে শুরু করেছে।এক ফালি রোদ এসে কাঁচের জানালা ভেদ করে সারার চোখে পড়ে। পিটপিট করে সারার চোখ খোলার চেষ্টা করছে। মাহিন সারা কে কি জানি বলছে সারা বুঝতে পারছে না। ঘুমের কারণে সারার চোখ খুলে রাখতে কষ্ট হচ্ছে সারা আবার চোখ বন্ধ করে ফেলে। মাহিন দূত গিয়ে ডাক্তার ঢেকে আনে। সারা কে চেক করে ডাক্তার বলে সারার জ্ঞান ফিরেছে।কড়া মেডিসিনের কারনে সারা ঘুমে আছে।এক বা দেড় ঘণ্টা পর সারা ঘুম থেকে উঠে যাবে। মাহিন খুশি হয়ে ডাক্তারকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাহির কে ফোন করে তাড়াতাড়ি হসপিটালে আসতে বলে। মাহির হসপিটালে এলে মাহিন মাহির কে সারার খবর দেয়। মাহির সারার হাত ধরে কিছুক্ষণ নিঃশব্দে কান্না করে। এরপর বাড়ির সবাই কে সারার খবর জানায়। মাহির এখন সবাইকে আসতে বারন করে কারণ সারা এখন ঘুমিয়ে আছে তারচেয়ে বরং তারা বিকালে আসুক সারার সাথে দেখা করতে।মাহিরের কথায় আর কেউ আপত্তি করেনি।দুই ঘণ্টা পর সারা ঘুম থেকে উঠে। মাহির সারা কে উঠতে দেখে কেবিন থেকে বেরিয়ে যায়। মাহিন সারার কাছে এসে কথা বলতে শুরু করে।
.
মাহিন : আপু এখন তোর কেমন লাগতেছে?
.
সারা আস্তে আস্তে ঠোঁট নেড়ে হালকা আওয়াজ করে বলে।
.
সারা : ভালো। রোদ,রোদ্রি কোথায়?
.
মাহিন একটু হাসে সারার কথা শুনে। ভালো করে কথা বলতে পারছে না অথচ প্রথমেই তার সন্তানদের কথা জিজ্ঞেস করছে। পৃথিবীর সব মায়েরা বোধহয় এমন। মাহিন সারার হাত আলতো করে ধরে বলে।
.
মাহিন : চিন্তা করিস না ওরা ভালো আছে।
.
মাহিনের কথা শুনে সারার মুখে একটু হাসি ফুটে তুলে বলে।
.
সারা : ওদের একটু আমার কাছে নিয়ে আয়।ওরা তো আমাকে ছাড়া বেশিক্ষণ থাকতে পারে না।
.
মাহিন : তুই এখন ঘুমা আমি দুপুরের পর ওদের নিয়ে আসবো।
.
সারা মাহিনের সাথে টুকিটাকি কথা বলতে বলতে আবার ঘুমিয়ে পড়ে। মাহির দরজার আড়াল থেকে সারা কে দেখছিলো। কিন্তু সারা কি কথা বলছে তা শুনতে পায়নি। দুপুরে নার্স সারা কে খাবার খাইয়ে আর মেডিসিন খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে যায়।পড়ন্ত বিকেলে সবাই আসে সারার সাথে দেখা করতে সাথে রোদ আর রোদ্রি কে ও নিয়ে আসে। সারা ঘুম থেকে উঠে দেখে দুই পরিবারের সবাই এবং রাজ আর মিথিলা ও এসেছে ওর সাথে দেখা করতে। সারা সবার সাথে অল্প অল্প কথা বলেও ওর মাম্মার কোনো কথা বলেনি। সারা তাকিয়ে দেখে মাহিনের কোলে রোদ আর রোদ্রি করুন দৃষ্টিতে সারার দিকে তাকিয়ে আছে। সারা ওদের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে মাহিন কে ইশারা করে ওদের নিয়ে কাছে আসার জন্য। সারা আস্তে করে বলে।
.
সারা : ওদের আমার কাছে দে!
.
মাহিন : তোর যে অবস্থা তাতে তো ব্যাথা পাবি।
.
সারা : কিছু হবে না। ওরা আমার কলিজা। ওদের কাছে পেলে আমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবো।
.
মাহিন আর কিছু বলেনি।সারা বাম হাত দিয়ে রোদ আর রোদ্রি কে বুকের সাথে জড়িয়ে নিয়েছে। রোদ আর রোদ্রি ও মাম্মার বুকে চুপ করে শুয়ে আছে।সবাই ওদের তিন জনের দিকে তাকিয়ে আছে।এখন সারা দেখে কেউ বলবে না সারা অসুস্থ। তিনজন কি শান্তিতে চোখ বুজে আছে।

To be continue…🍁

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here