ক্রাশ পর্ব -১০

#ক্রাশ
#পর্ব_১০
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ
সাগর মোহনাকে দুই হাত দিয়ে এমন ভাবে জড়িয়ে ধরে আছে যে মোহনা একটুও নড়াচড়া করতে পারছে না।
এদিকে অনেক বেলা হয়ে গেছে।
তাকে তো উঠতে হবে।
তাই মোহনা সাগর কে ডাকতে লাগলো।
কিন্তু সাগর যেভাবে ঘুমিয়ে আছে মনে তো হয় না মোহনার ডাক তার কানে গিয়ে পৌঁছবে???
তাছাড়া মোহনারও ইচ্ছা করছে না সাগরের আরামের ঘুম টা নষ্ট করতে।
তাই মোহনা সাগর কে না ডেকে তার হাত টা আস্তে আস্তে সরিয়ে দিলো।
কিন্তু সাগর আবার তাকে জোরে করে জড়িয়ে ধরলো।
মোহনা তাই আর চুপ করে থাকলো না।
এবার সাগরের ঘুম টা নষ্ট করতেই হবে।
তা না হলে সে উঠতে পারবে না।
মোহনা তাই সাগরের গা ধরে ঝাকাতে লাগলো আর বললো আমাকে একটু ছাড়ুন।
বাহিরে যাবো আমি।
সাগর ঘুম ঘুম চোখ নিয়ে বললো ছাড়ার জন্য কি বিয়ে করেছি?
ছাড়বো না।
মোহনা তখন বললো সবাই মনে হয় বাহিরে আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
আপনি একা একা ঘুমান।
আমাকে যেতে দেন প্লিজ।
সাগর তখন বললো ঠিক আছে।
তবে তার আগে একটু আদর করে দাও।
তা না হলে কিছুতেই যেতে দিবো না।
মোহনা সেই কথা শুনে সাগরের কপালে একটা কিস করলো আর বললো এখন অন্তত ছাড়ুন।

সাগর সে কথা শুনে বললো তোমার আত্নাটা এতো ছোট কেনো?
মন টা একটু বড় কর?
আর আমি কি তোমার থেকে ভিক্ষা চাচ্ছি?
যে দিতে কিপটামি করছো?
আমি আমার প্রাপ্য জিনিস চাচ্ছি।
যেটা আমার অধিকার।

মোহনা সেই কথা শুনে হাসতে হাসতে শেষ।
তার হাসি থামছেই না।
এই ছেলে নাকি আনরোমান্টিক!!!
এ নাকি প্রেম ভালোবাসার কিছুই বোঝে না!!!
এদিকে বউ কে একা পেয়ে কি সব বলছে!!!
তখন মোহনা বললো,
তা ছদ্মবেশে থাকা সহজ সরল ভালোবাসার পাগল ছেলে,
আপনি যে এমন লুচু একটা ছেলে সেটা কি আপনার ফ্যামিলির লোক জানে?
আপনার বন্ধুরাও তো মনে হয় জানে না।
সাগর লুচুর কথা শুনে রেগে গেলো,

–তা ম্যাডাম আপনি যে আমাকে লুচু বললেন, আপনি কি লুচুর মানে জানেন?
লুচু কাকে বলে সেটা বোঝেন?
মোহনা তখন বললো অতো বিশ্লেষণ করে বলতে পারবো না আমি।
আপনি এভাবে একটা মেয়ের উপর অত্যাচার করতে পারেন না।
আমি উঠতে চাচ্ছি আপনি উঠতে দিচ্ছেন না।
আবার আদর করতে চাচ্ছেন?
তাহলে লুচু বলবো না তো কি বলবো?
আপনি মোটেও ভদ্র সহজ সরল ছেলে নন।
কারন আপনি আমার সাথে যেরকম করতেছেন তাতে আর আপনাকে ভদ্র বলা যাচ্ছে না।

সাগর সেই কথা শুনে মোহনার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো আর বললো,
আমি অভদ্র!!
দাঁড়াও আজ তোমাকে রুম থেকেই বের হতে দেবো না।
অভদ্রের খেতাব যখন পেয়েছি তখন আর ভদ্র সাজতে যাবো না।
মোহনা বুঝতে পারলো একে রাগানো যাবে না।
কারন একে চড়া চড়া কথা বললে এ তো কোন কথা শুনবেই না উলটো আরো রেগে যাবে।
সেজন্য মোহনা নরম সুরে বললো,

আপনি হলেন আমার ভালোবাসার ক্রাশ বর।
আপনি সবসময় আমাকে আদর করবেন এটা তো আমিও চাই।
কিন্তু অন্যদিকেও তো খেয়াল করতে হবে।
বাহিরে নিশ্চয় নতুন বউ দেখার জন্য সবাই এসেছে।
এখন যদি কেউ আমাকে এসে দরজা ধাক্কা দিয়ে উঠায় সেটা একটা লজ্জার ব্যাপার না?
তখন শাওয়ার নিবো কখন?
রেডি হবো কখন?
তার চেয়ে বরং নিজেই রেডি হয়ে বাহিরে যাই।

সেই কথা শুনে সাগর বললো তাহলে সবার সাথে দেখা করে রুমে আবার আসবে কিন্তু।
মোহনা সেই কথা শুনে সাগরের কপালে আরেকবার একটা কিস করলো আর বললো,
আপনি ঘুমান।
আমি শাওয়ার টা সেরে নিয়ে ফ্রেশ হয়ে বাহিরে যাই?
সাগর তখন বললো,
আমি আর একা একা শুয়ে থেকে কি করবো?
চলো দুইজন একসাথে গোসল করি????
মোহনা সেই কথা শুনে বললো আপনি আসলেই একটা লুচু ছেলে???
এই বলে সাগর কে জোর করেই সরিয়ে দিলো।
তারপর বিছানা ছেড়ে উঠে সোজা বাথরুমে গেলো।

এদিকে সাগরও বিছানা থেকে উঠে মোহনার পিছু পিছু চলে গেলো।
গিয়ে দেখে মোহনা দরজা লাগায় দিছে।
সাগর সেজন্য জোরে জোরে দরজা ধাক্কাতে লাগলো।
মোহনা কোন উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকলো।
সাগর তখন বললো, দরজা খোলো বলছি।
তা না হলে দরজা ভেংগে ফেলবো।
মোহনা তখন বললো যা মন যায় করো।
কারন মোহনা ভেবেছে সে এমনি এমনি বলছে।
কিন্তু সাগর সত্যি সত্যি দরজা টা ভাংগার জন্য জোরে জোরে লাথি দিচ্ছে।
মোহনা তখন আর চুপ করে থাকতে পারলো না।
দরজার ছিটকিনি খুলে দিয়ে অল্প একটু ফাঁক করে বললো এমন করতেছেন কেনো?
দরজা ভেংগে গেলে কি হবে?
সাগর তখন পুরো দরজা টা খুলে ভিতরে প্রবেশ করলো।
এদিকে মোহনা সাগর কে ঢোকা দেখে চিৎকার করতে লাগলো।
আর তার শরীর ঢাকার চেষ্টা করলো।
কারন সে অর্ধ বস্ত্র অবস্থায় গোসল করছে।
সাগর তখন বললো এতো ন্যাকামো না করে তাড়াতাড়ি গোসল করো।
দেরী হয়ে যাচ্ছে।
মোহনা তখন বললো আপনি গোসল করে বের হয়ে যান তারপর আমি করবো।
সাগর সেই কথা শুনে বললো,
ওকে নো প্রবলেম।
এভাবে ভিজা শরীরেই দাঁড়িয়ে থাকবে?
পরে অসুখ হলে আমাকে কিছু বলতে পারবে না।
মোহনা সেই কথা শুনে টাওয়াল টা নিয়ে মোছা শুরু করলো।
আর বাথরুম থেকে বের হয়ে যেতে ধরলো।
সাগর তখন টাওয়াল টা কেড়ে নিয়ে হ্যাংগারে রাখলো।
আর বললো,
গোসল না করেই শরীর মুছতে বলি নি?
এই বলে সাগর নিজেই মোহনার গায়ে পানি ঢেলে দিলো।
তারপর যেই তার কাপড় ধরে টান দিলো মোহনা সাথে সাথে সাগর কে জড়িয়ে ধরলো।
আর বললো কি করতেছেন?
আপনার লজ্জা শরম না থাকতে পারে কিন্তু আমার আছে।
মোহনার কথা শুনে সাগর বললো ইতোমধ্যে আমরা কিন্তু প্রেম ভালোবাসার স্বাদ নিয়ে ফেলছি।
so লজ্জা করার প্রশ্নই আসে না।
মোহনা তখন আর কোন কথা না বলে টাওয়াল টা আবার নিতে ধরলো।
হঠাৎ সাগর মোহনার হাত ধরলো আর তাকে এক ঝাটকায় কোলে তুলে নিলো।
আর বাথরুম থেকে বের হয়ে সোজা বিছানার দিকে নিয়ে গেলো।
মোহনা তখন বললো কি করছেন?
পুরো শরীর ভেজা কিন্তু!!!
বিছানা ভিজে যাবে।
সাগর তখন মোহনার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে নিলো।
মোহনা সাগরের আদর পেয়ে একদম ঘোরে চলে গেলো।
তাই সে আর বারন করছে না সাগর কে।
সাগর মোহনাকে বিছানায় শুয়ে দিলো।
তারপর নিজেও শুয়ে পড়লো।
এদিকে দুইজনের শরীর যে ভেজা ছিলো সেদিকে কারো খেয়ালই ছিলো না।
হঠাৎ দরজায় ঠকঠক শব্দ হলো।
সাগর এখনো ঘোরের মধ্যেই আছে।
মোহনা সাগরের আদরে মাতোয়ারা হয়ে থাকলেও নিজেকে সামলিয়ে নিলো,
আর বললো থামুন।
কে যেনো ডাকছে।
কত করে বললাম কেউ ডাকার আগেই আমি আগে রুম থেকে বের হবো।
কিন্তু সেটা হতে দিলেন না আপনি?
সাগর তখন ও ঘোরের মধ্যেই আছে।
সে বললো এই কই যাচ্ছো?
যেও না।
মোহনা আর একটা কথা না বলে তাড়াতাড়ি করে দরজার কাছে গেলো।
আর বললো কে?

বাহিরে থেকে সামিরা বললো ভাবি আমি।
তাড়াতাড়ি বাহিরে এসো।
সবাই নতুন বউ দেখার জন্য সেই কখন থেকে বসে আছে।
মোহনা তখন বললো,
আমি একটু রেডি হয়ে নেই।
তারপর যাচ্ছি।
সামিরা সে কথা শুনে বললো জমিদার টা মনে হয় ওঠেই নি?
১০ টার আগে তো উনি কিছুতেই ওঠেন না।
মোহনা তখন বললো হ্যাঁ,
তোমার ভাই ঘুমায়তেছে আর আমি ফ্রেশ হচ্ছি।
সেই কথা শুনে সামিরা চলে গেলো।

সাগর আবার এসে মোহনাকে ধরলো।
মোহনা তখন বললো প্লিজ না,
আর না।
অনেক শয়তানি করেছো।
শুনতে পেলে না বাহিরে সবাই wait করছে।
আমাকে সবার সামনে আর লজ্জিত করো না।

সেই কথা শুনে সাগর একটু রাগই হলো।
বার বার এতো করে বলার পরও তুমি আমার ফিলিংস বুঝতেই পারলে না?
সাগর আর কোন কথা না বলে ড্রেস চেঞ্জ করে নিয়ে বাহিরে চলে গেলো।
মোহনা বুঝতে পারলো মনে হয় সাগর তার কথায় মন খারাপ করেছে।
কিন্তু কিছু করার নাই তার।
কারন বাহিরে তার জন্য সবাই অপেক্ষা করছে।
এইজন্য মোহনা আর দেরী না করে রেডি হতে লাগলো।

কিছুক্ষন পর সামিরা জোরে করে এক চিৎকার দিয়ে রুমে ঢুকলো।
আর বললো,
ভাবী,ই,ই?
এখনো হয় নি তোমার?
মোহনা তখন বললো এই তো আর একটু।
সামিরা তখন মোহনাকে এদিক ওদিক ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে বললো যা হয়েছে এটাই যথেষ্ট।
এতেই হবে।
এই বলে মোহনাকে ডাইনিং রুমে নিয়ে গেলো।
গিয়ে দেখে সবাই নাস্তা নিয়ে বসে আছে।
ভদ্র ছেলে সাগর, নিষ্পাপ ছেলের মতো চেয়ারে বসে আছে।
মোহনাকে দেখে ওর শাশুড়ী বললো,
মা আগে নাস্তা করে নাও।
কখন খাবে?
মোহনা তখন বললো আপনারা কেউই এখন পর্যন্ত খান নি?
আমার জন্য কেনো বসে আছেন?
মোহনার দাদী শাশুড়ী তখন বললো তুমিও এখন থেকে আমাদের পরিবারের একজন সদস্য।
আর আমরা সবাই একসাথেই খাই।
এই বলে মোহনাকে একটা চেয়ারে বসালো।
মোহনা চেয়ারে বসলো আর সাগরের দিকে তাকালো।
সাগর মোহনার এভাবে তাকিয়ে থাকা থেকে নাস্তা খাওয়া আরম্ভ করে দিলো।
পাঁচ মিনিটের মধ্যে খাওয়া শেষ করে চেয়ার থেকে উঠলো।
সাগরের মা তখন বললো,
বাবা আর কিছু নিলি না?
খাওয়া শেষ ও হলো?

সাগর কোন উত্তর না দিয়ে রুমে চলে গেলো।

সাগরের দাদী তখন বললো,
সাগর দেখি একটুও চেঞ্জ হয় নি?
সেই আগের মতোই আছে।
সাগরের মা তখন বললো,
একদিনেই আর কি চেঞ্জ হবে?
চেঞ্জ হতে একটু সময় লাগবে তো?
সামিরা তখন বললো দেখলে না তোমার ছেলের ব্যবহার?
নতুন বউ এর সামনে কেমন ব্যবহার করলো?
আর তুমি বলছো ঠিক হয়ে যাবে?
ও কিছুতেই আর ঠিক হবে না।
তোমরা কেনো যে ওকে জোর করে বিয়ে দিয়ে আমার মিষ্টি ভাবীটার ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিলে?

মোহনা তখন বললো আপনারা সবাই আমাকে নিয়ে অযথা টেনশন করছেন।
উনি যথেষ্ট ভালো ছেলে।
আর কাল থেকে আমার উপর তো একটুও রাগ করেন নি?
তখন সামিরা বললো,
বউ যখন নিজেই স্বামীর প্রশংসা করছে তখন আমরা আর ওর নিন্দে কেনো করি?
এই বলে সামিরা মুখ ভ্যাংচালো।
আর বললো,ভাবী ওর প্রশংসা করে কোন লাভ নেই।
আমরা জানি ও কেমন?

মোহনা হাত ধুয়ে উঠতে ধরলো।
আর বললো আমি একটু রুম থেকে আসি?
সামিরা তখন বললো না যেও না।
বারান্দায় গিয়ে দেখো পুরো গ্রামের লোক দেখার জন্য বসে আছে।
তখন সাগরের দাদী বললো সামিরা তুই একটু চুপ কর তো?
বেশি কথা বলিস?
এই বলে মোহনাকে বললো আচ্ছা যাও।
তবে বেশি দেরী করো না।
মোহনা সেই কথা শুনে রুমে চলে গেলো।

সাগর বিছানায় শুয়ে আছে।
মোহনা তাই সাগরের পাশে গিয়ে বসলো।
আর বললো,
তখন ওভাবে চলে আসলেন কেনো?
সবাই যা নয় তাই বলছে।
তোমার বাড়ির লোক তো ভাবছে তুমি আমাকে ছুঁয়ে দেখা তো দূরের কথা কথা পর্যন্ত বলো নি।
কি বিশ্বাস তোমার প্রতি তাদের???
এদিকে তো তুমি সব সীমা পার করে বসে আছো।
তারা তো আর জানে না তাদের ছেলে কত বড় লুচু?
সাগর কোন উত্তর দিলো না।
অন্য পাশ হলো।

তখন মোহনা হঠাৎ করে বললো সরি!!!
সরি!!!!
আর বলবো না।
সাগর এবার ও চুপ।
মোহনা তখন বললো সকালের জন্যও সরি।
আর কখনোই এভাবে বারন করবো না।
আপনার যখন মন চায় তখনই আদর করবেন।
এই বলে মোহনা কান ধরে আবার সরি বললো।
সাগর এবার ও কিছু বললো না।
তাই মোহনা সাগর কে একটা লিপ কিস করলো।
সাগরের কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে অনবরত করতেই থাকলো।

হঠাৎ পিছন দিক থেকে সামিরা বললো,
আমি কিন্তু কিছু দেখি নি।
ভাবী তোমাকে দাদী ডাকছে।
এই বলে সামিরা দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
মোহনার সে কি লজ্জা!!!
ছিঃ!!”
সামিরা তাকে এইভাবে লিপ কিস করতে দেখলো।
এখন কেমন করে সে তার মুখ দেখাবে।
আর এদিকে এতো কিছু হয়ে গেলো সাগর তবুও চুপ করেই আছে।

মোহনা এখন কি করে সামিরা কে তার মুখ দেখাবে এই ভেবে রুমের মধ্যেই পায়চারি করতে লাগলো।
হঠাৎ তার দাদী শাশুড়ী রুমে ঢুকলো।
আর বললো মোহনা দেরী করছো কেনো?
তাড়াতাড়ি এসো।
মোহনা তাই লজ্জা শরম ত্যাগ করে বাহিরে চলে গেলো।
কিন্তু গিয়ে দেখে সামিরা নাই সেখানে।
কারন মোহনার চাইতে সে নিজেই বেশি লজ্জা পাইছে।
তাই নিজেই মোহনার থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
সামিরা মনে মনে ভাবছে কেনো সে ওই রুমে গেলো?
এখন ভাবী যে কি ভাবছে আল্লাহই ভালো জানে।
আমি কিছুতেই এই মুখ আর দেখাবো না।
এই বলে সামিরা নিজের রুমে গেলো।

চলবে,,,,,,,
পরবর্তী পর্ব পড়তে চাইলে অবশ্যয় লাইক কমেন্ট করতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here