জানি দেখা হবে পর্ব ২১+২২

#জানি_দেখা_হবে ❤
Israt Jahan Tanni ✍
#Part_21
..
তারা দুটানায় পরে গেছে। কি করবে বুঝতে পারছেনা ও। সীমা আর মা খুব রেগে আছে ওর উপর। শুধুমাত্র বাসা ছেড়ে চলে যাবে বলে। তারা যখন চিন্তায় মগ্ন তখনই আকাশের আগমন ঘটলো। এইসময় আকাশকে দেখে খুব অবাক হলো তারা। তারা স্বাভাবিকভাবেই বললো.
– অফিস থেকে চলে এলেন যে?
– তোমার কোনো সমস্যা হয়েছে আমি আসাতে?
– তা কেন হবে। এমনিতেই জিজ্ঞাসা করছি।
কিছুক্ষন নিরব রইলো ওরা দুজনেই। তারা বুঝতে পারলো আকাশের মনে কিছু একটা চলছে। কিন্তু কি চলছে সেটা বুঝার চেষ্টা পর্যন্ত করলোনা ও। কিছুক্ষন নিরব থাকার পর তারা রুম থেকে বেরোতে নিলেই আকাশ বললো..
– যেওনা। কথা আছে।
আকাশের কথায় পিছু ফিরে তাকালো তারা। স্বাভাবিকভাবেই বললো
– কি কথা?
– তোমাকে এভাবে অনুরোধ করার পরেও চলে যেতে চাইলে কেন?
– আপনি কিভাবে জানলেন?
– আমার উত্তর টা দাও।
– পরের উপর বোঝা হয়ে থাকতে ইচ্ছা করছেনা।
আকাশ উঠে দাড়ালো তারার কথায়। কিছু একটা বলতে চাইবে তখনই মা ডাকলো তারাকে।
তারা একবার আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো..
– আন্টি ডাকছে। হয়তো জরুরী কিছু। আমি যাচ্ছি এখন।
তারা চলে গেলো। আকাশ সেখানেই দাড়ানো এখনো। কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে সেও চলে গেলো নিজের রুমে।
..
সন্ধ্যা গড়িয়ে এসেছে। কিছুক্ষন আগে বাসায় ফিরেছে ধ্রুব। মা কিচেনে রান্না নিয়ে ব্যাস্ত। রাতের ট্রেনে সিলেন রওনা করবেন উনার স্বামী। রাতে ভালো কিছু খাইয়ে দিবে নিজের স্বামীকে। আর এতো দুরের জার্নিতে কিছু নাস্তা দিয়ে দিবেন সাথে। ধ্রুব অবশ্য বলেছিলো ফ্লাইটে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি নারাজ। এবার উনি ফ্লাইটেও যাবেন না আর নিজের গাড়িতেও না। একদম ট্রেন জার্নি করার শখ যাকে বলে।
ধ্রুব ফ্রেশ হয়ে এসে হাত মুখ মুচ্ছে তাওয়াল টা দিয়ে। এমন সময় কলিংবেল বেজে উঠলো। কিচেন থেকে মা বললেন..
– দেখ তো ধ্রুব কে এলো।
– যাচ্ছি মা।
তাওয়াল টা সোফায় ছুড়ে ফেলে দরজা টা খোলতে গেলো ও। কিছুক্ষন কপাল কুঁচকে তাকিয়ে থেকে তারপর বললো..
– আপনারা?
কিচেন তাওয়ালে হাত মুছতে মুছতে মা বেরিয়ে এসে বললো..
– কে এসেছে?
এতোক্ষনে ধ্রুব দরজার কাছ থেকে চলে এসেছে। তুরিনের বাবা মা ভিতরে ঢুকলে মা বললেন..
– হটাৎ এই অসময় আপনারা এখানে? কি মনে করে?
.
তারার বাবা কিছুটা সংকোচ বোধ করে বললো.
– আমাদের আসাতে হয়ত আপনারা খুশি হননি। কিন্তু ..
শেষ কথাটা বলার আগে ধ্রুবর মা বললো..
– একি বলছেন বিয়াই সাহেব। খুশি হবোনা কেন। ভিতরে আসুন।
তুরিনের বাবা মা ভিতরে এসে সোফায় বসলো। ধ্রুব কপট রাগে নিজের রুমে চলে গেলো। বাবা কিছুক্ষন ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে তারপর ধ্রুবর মাকে বললো..
– ও এভাবে চলে গেলো যে?
– মাত্রই অফিস থেকে ফিরেছে। ক্লান্ত হয়ে আছেতো, তাই।
তুরিনের বাবা একটা লম্বা শ্বাস নিলো। কিছু বললো না। তুরিনের মা কি বলে যে কি শুরু করবে বুঝতে পারছেনা। শেষে অস্থিরতা কাটিয়ে বললো..
– আমার মেয়েটাকে মাফ করে দেন বিয়ান সাহেব। জানি ও যা করেছে অন্যায় করেছে। আমিও ওকে শাষণ না করে ওকে আরও প্রশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু বিশ্বাস করেন, আমার মেয়েটা আর আগের মেয়ে নেই। যেদিন থেক জেনেছে ও প্রেগনেন্ট, সেদিন থেকে ও যেনো নতুন তুরিন হয়ে জন্মেছে। সারাক্ষন কান্নাকাটি করে। জিনিসপত্র ভাংচুর করে। খাওয়া দাওয়া করেনা ঠিকমতো। আপনারাই বলুন, এই অবস্থায় এমন করলে হয়?
..
ধ্রুবর মা কিছুটা চিন্তিত হয়ে বললো..
– ওর শরীর কেমন এখন?
– ভালোনা।
ধ্রুবর মা উঠে বললেন.
– আপনারা বসুন, আমি আসছি। ধ্রুবর রুমে গেলো মা। খাটের একপাশে পা ফ্লোরে স্পর্শ করে বসে আছে ধ্রুব। মা বললেন..
– একটু আয় তো বাবা।
ধ্রুব কপাল কুঁচকে বললো..
– কেন?
– রেগে থাকিস না বাবা প্লিজ। আয় আমার সাথে। ধ্রুব আর কথা বাড়ালোনা। মায়ের পিছু পিছু গিয়ে সোফায় বসলো মায়ের পাশে।
তুরিনের বাবা মা দুজনই নিরব। ধ্রুব একপাশে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বললো..
– আমাকে কেন ডাকা হয়েছে এখানে?
– বাবা, তুমি আমার মেয়েটাকে ফিরিয়ে আনো। এতো বড় শাস্তি দিওনা ওকে। মেয়েটা আমার মরেই যাবে। আকুতি করে বললেন তুরিনের বাবা। ধ্রুব কিছু বলার আগেই ধ্রুবর মা বললো..
.
– শাস্তি মানে?
– ধ্রুব তুরিনকে ডিভোর্স পেপার পাঠিয়েছে।
– কিহহ!! অবাক হয়ে তাকালো ধ্রুবর দিকে। ধ্রুব নিশ্চুপ। মা অবাক হয়ে বললেন..
– এসব কখন করলি ধ্রুব? আমাদের তো জানাস নি।
– ও আমাকে জালাচ্ছিলো। বার বার মানা করা স্বত্বেও আমাকে ফোন করে বিরক্ত করছলো।
– যা হয়েছে সেটা ভুলে যা বাবা। মেয়েটাকে নিয়ে আয়। আর তাছাড়া ও এখন গর্ভবতী। মা হতে যাচ্ছে বেচারি।
ধ্রুব এবার রেগে গেলো। বললো..
– গর্ভবতী? গর্ভবতী তো তারাও ছিলো। কিন্তু তারাকে তো বাড়িছাড়া হতে হয়েছে এই মেয়েটার জন্যই। বিনা কারনে তারাকে শাস্তি দিয়েছে ও। এখন ওর পাপের শাস্তি ওকে পেতেই হবে।
– প্লিজ বাবা একটু বুঝার চেষ্টা কর। তারাকে হারিয়ে আমরা কষ্ট পাচ্ছি। ও তারার সাথে অন্যায় করেছে। কিন্তু তাও বলছি ওকে নিয়ে আয়। তারাকে নাহয় আমরা সবাই মিলে খোজবো।
– না মা, তারাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি আমি। ওর প্রতি অবিচার করেছি। ওকে আমি খোঁজে বের করবোই। ওর সাথে একদিন না একদিন আমার দেখা হবেই। তুরিনকে আমি কখনো ফিরিয়ে আনবো না। ও পরে থাকুক ওর মতো।
– আর তোর বাচ্চা??
মায়ের মুখে নিজের বাচ্চার কথা শুনে কিছুটা তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো ধ্রুব। ধ্রুবর এই মুহুর্তে এমন হাসায় সবাই অনেকটাই অবাক হলো।
ধ্রুবর মা বললো..
— এভাবে হাসছিস যে।
— হাসার মতো কথা বললে তাই হাসলাম।
— এমন কি বললাম যে তোর হাসি পেলো?
— ওইযে বললে তুরিনের পেটে আমার বাচ্চা।
— তো?
— ওর পেটে আমার কোনো বাচ্চা নেই মা। যেটা আছে সেটা তুরিন আর তুষারের পাপের ফসল।
ছেলের কথায় ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলেন ওর বাবা মা। সাথে তারার বাবা যেনো আকাশ থেকে পড়লেন। পড়ে রইলো তুরিনের মা। উনি রীতিমতো কাপতে লাগলেন৷ এই বুঝি ধরা পড়ে গেলেন। তবুও মনে যথেষ্ট সাহস সঞ্চয় করে বললেন৷
— জামাইবাবা, কি বলছো এইসব? জানি মেয়েটা আমার অন্যায় করছে। তাই বইলা আমার অবুঝ মেয়েটারে এতোবড় কলংক দিওনা৷ আমার নিষ্পাপ মাইয়াটার নামে এতোবড় অপবাদ দিওনা।
— আপনার মেয়ে নিষ্পাপ? ভ্রু কুচকে বললো ধ্রুব।
তারার বাবা কিছু বলছেনা। শুধু বোকার মতো ওদের কথা গিলছে।
তুরিনের মা বললো..
— আমার মেয়েটা নেহাত একটা বাচ্চা। তাই ভুল করছে। এখন ও তোমার বাচ্চার মা। সবকিছু ভুলে এখন ওরে নিয়া সুখে সংসার পাড়ি দাও বাবা।
ধ্রুব কোনো প্রতিউত্তর করেনি। ধ্রুবর বাবা মা বসে আছে। উনারাও কিছু বলছেনা৷ কি হচ্ছে বুঝতে চাইছে উনারা। ধ্রুব পকেট থেকে ফোনটা বের করে একটা রেকর্ডিং চালু করলো।
মাথায় বাজ পড়লো তুরিনের মায়ের। একসময় পুরো রেকর্ডিং টা শেষ হলো। তুরিনের মা ছাড়া বাকিদের সবার চোখ মুখ অগ্নিবর্ণ হয়ে আছে। তুরিনের মা ফাসির আসামীর মতো চুপসে আছে। ধ্রুবর মা কিছু বলতে যাবে এর আগেই ধ্রুবর বাবা বললো..
— বাহঃ আপনি আর আপনার ওই অবুঝ নিষ্পাপ মেয়ে মিলে তো ভালোই প্ল্যান করেছেন।
তুরিনের মা একটু নড়াচড়া করে বলতে চাইলো..
— না মানে, ম্ম মানে হলো গিয়ে..
কিছু বলার আগেই তারার বাবার চোখচোখি হয়ে গেলো উনার। যেনো এখনই উনাকে গিলে খাবেন। একটা ঢোক গিলে নিচের দিকে তাকিয়ে চুপ করে গেলেন তিনি।
ধ্রুবর মা বললেন…
— মানুষ কতোটা নিচে নামতে পারে সেটা আপনাকে আর আপনার মেয়েকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না আমরা। সত্যিই আপনারা পারেন বটে। ধ্রুবর মায়ের চোখ দিয়ে শুধু ঘৃণার লেলিহান বের হচ্ছে।
.
ধ্রুবর বাবা ধ্রুবকে বললেন..
— তুই এই অডিও টা পেলি কোথায়?
— এই ধ্রুব এতো কাচা কাজ করেনা বাবা। কাল মায়ের মুখে যখন শুনলাম তুরিন প্রেগন্যান্ট তখনই আমার সন্দেহ হয়। তাই আজ সকালে ডিভোর্স পেপার আর অডিও রেকর্ডার টা দিয়ে রবির বউকে মানে তারার খালাতো বোনকে পাঠায় ওদের বাসায়। রবির বউ সুযোগ বুঝে তুরিনের রুমে রেকর্ডার টা একটা নিরাপদ জায়গায় লুকিয়ে রাখে, আর তাতেই ধরা পরে ওদের মা মেয়ের চাল। বলে রাগিচোখে তুরিনের মায়ের দিকে তাকায় ধ্রুব।
তারার বাবা বসা থেকে উঠে এক হ্যাচকায় টান মারে তুরিনের মাকে। আজ এর একটা হেস্তনেস্ত করবেনই উনি। বার বার উনাকে অপদস্ত করছে এই মা মেয়েতে মিলে। তুরিন উনার নিজের সন্তান কিনা সেটাই ভাবাচ্ছে উনাকে। নিজের সন্তান কি কখনো নিজের বাবাকে বার বার এভাবে অপমানিত করতে পারে?
তারার বাবা যাওয়ার আগে ধ্রুব আর ওর বাবা মায়ের কাছে নিজের মেয়ে আর বউএর কাজকর্ম নিয়ে মাফ চাইতে গেলে উল্টো ধ্রুব উনার কাছে মাফ চায়। কারণ, সেই বিয়ের পর থেকে ধ্রুব নানাভাবে উনাকে অপমান অপদস্ত করে গেছে। তারার বাবা কিছুক্ষন ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে থেকে তুরিনের মাকে নিয়ে টানতে টানতে বের হয়ে যায়।
ধ্রুবর মা ছেলের দিকে এগিয়ে এসে বলে..
— ভাগ্যিস এই বুদ্ধিটা করেছিলি। নয়লে আমিও কিনা ওর জ্বালে জড়িয়ে যাচ্ছিলাম। অবাক হয়ে বললেন উনি।
বিনিময়ে ধ্রুব মুচকি হাসলো।

..
বাবাকে সিলেটের ট্রেনে তুলে দিয়ে এইমাত্র বাসায় ফিরেছে ধ্রুব। অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় না খেয়েই শুয়ে পরলো ও। যদিও বাবার সাথে সিলেট যাবার কথা ছিল,, কিন্তু অফিসের একটা কাজের জন্য যেতে পারেনি। তবে দুদিন পর যাবে।
রাত ১১:৩০
ছাদে পায়চারি করছে তারা। আকাশকে নিয়ে ভাবছে তারা। তারা জানে, নিজের প্রিয়জনকে হারানো কতটা কষ্টের। আর সেই কষ্টটা আকাশ পেতে যাচ্ছে। সেটা ভেবেই কষ্ট হচ্ছে তারার। কিন্তু ওও যে নিরুপায়, ওর যে কিছু করার নেই৷ নিজের অবচেতন মনটা না চায়তেও যে ধ্রুবকে খুব বেশি ভালোবেসে ফেলেছে৷ যদিও সেটা একতরফা। তাতে কি? ওতো ভালোবাসতেই পারবে ধ্রুবকে।
.
অনেক সুযোগ খোঁজার পরেও তারার সাথে কথা বলার সুযোগ পায়নি আকাশ। রাতে খাবার পরে যখন তারার রুমে গেলো তখন তারাকে রুমে পেলোনা ও। ভাবলো ওয়াশরুমে হয়তো গেছে। ছাদে যাবেনা এটা সে নিশ্চিত। কারণ, আকাশটা আজ মেঘাচ্ছন্ন। যেকোনো সময় বৃষ্টি নামতে পারে। তাছাড়া, আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণ ঝড়ো বাতাস বইছে বাইরে। এই অবস্থায় আর যাইহোক, ছাদে যাবেনা ও। এটা ভেবে কিছুক্ষন অপেক্ষা করলো তারার জন্য। অনেক্ষণ পেরিয়ে গেলেও যখন তারার হুদিশ পেলোনা, তখন ভাবলো একবার ছাদে দেখা যাক। তারার মন বুঝা বড় দায়। যেতেও পারে। ধীরে ধীরে সেও ছাদে গেলো। ছাদের এক কোনায় পাথরের মতো দাড়িয়ে আছে তারা। তারাকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে সেও কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকলো। অনেক কিছু ভাবলো আকাশ। এ মেয়েটাকে ছাড়া চলবেনা ওর। যেভাবেই হোক, ওকে ও নিজের করে নিবেই। আস্তে আস্তে তারার দিকে এগিয়ে গেলো ও। তারার থেকে সামান্য দূরত্ব রেখে ওর পিছনে দাড়ালো আকাশ। তারা এখনো আগের মতোই দাড়িয়ে আছে। আকাশ শুধু পিছন থেকে তারাকে দেখছে। কেন যেনো তারাকে ডাকতে মন চাইছেনা। এভাবে তারার দাড়িয়ে থাকাটা বেশ ভালোই লাগছে ওর কাছে।

.#জানি_দেখা_হবে 💜
Israt Jahan Tanni
#Part_22

মেঘলা আকাশ, ঝিরিঝিরি বাতাশ.. এইরকম ওয়েদার বরাবরই আকাশের বেশ পছন্দ। সাথে যদি পছন্দের মানুষটা থাকে তাহলে তো কথায় নেই।
হটাৎ ই বাতাশের বেগ বাড়তে লাগলো। ফোটা ফোটা বৃষ্টি পরতে শুরু করল। তারা একটু নড়েচড়ে উঠলো। এতো রাতে ছাদে তাও এইরকম আবহাওয়ায়। ভাবতেই ভয়ে গায়ে কাটা দিয়ে উঠলো। গভীর ভাবে চিন্তায় থাকার কারণে এতোটা রাত হয়ে গেছে সেটা তার মাথাতেই আসেনি। এক্ষুনি রুমে চলে যাবে এইরকম কিছু একটা ভাবতেই ছাদের কার্নিশে ধুম করে একটা শব্দ হলো। ভয়ে জমে গেলো তারা। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে শব্দটা আবারও হলো। এবার যেনো শব্দটা আর থামছেই না। ভয়ে গলা শুকিয়ে কাট হয়ে গেলো তারার। হটাৎ ই বাজ পড়ায় চিৎকার করে পিছনে ফিরলো তারা। ফিরতেই দেখলো আকাশ দাড়িয়ে আছে। ভয়ের চোটে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে আকাশকে জাপটে ধরলো তারা। আচমকা আকাশকে এভাবে জড়িয়ে ধরায় কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেলো আকাশ। তারা এখনো গুটিসুটি হয়ে আকাশের বুকে জড়িয়ে আছে, দুহাত দিয়ে আকাশকে আরো শক্ত করে ধরার চেষ্টা করছে ও। আর চোখগুলো খিচে বন্ধ করে আছে।
আকাশ কিছুক্ষন তারার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে মুচকি হাসলো। ওর বুকে তারা, ভাবতেই প্রাণটা জুড়িয়ে গেলো আকাশের। এই মুহুর্তে ওর কাছে মনে হচ্ছে এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষটা হয়তো ও নিজেই। তারার মুখের দিকে তাকিয়ে পরম আবেশে বললো..
– ভয় নেই তোমার তারা। আমি আছিতো তোমার কাছে। তারপর নিজেও যথেষ্ট যত্নসহকারে আষ্টেপৃষ্ঠে ধরলো তারাকে।

সময়টা এখানেই থমকে আছে। বাতাস আপন গতিতে ছুটছে, বৃষ্টির কয়েকটি ফোটা গায়ে স্পর্শ করে চলে যাচ্ছে,,, চারিদিকটা নিস্তব্ধ অন্ধকারে ছেয়ে আছে, শুনশান নিরবতা চলছে চারপাশে,,, ঝিঝি পোকার ডাক ছাড়া আর কিছুই কানে আসছেনা। তারা এখনো আকাশের বুকে। আকাশ তারার মুখপানে তাকিয়ে আছে। যদিও অন্ধকারে তেমন দেখা যাচ্ছেনা। তবুও আবছা আলোয় তারাকে বেশ মায়াবী লাগছে এই মুহুর্তে। এই তারাকে এভাবেই যেনো আকাশের বুকে মানায়। অন্য কোথাও না।

আচমকায় তারার যেন হুশ ফিরলো। একি করছে সে? আকাশকে জড়িয়ে ধরে আছে সেই কখন থেকে। এতোটা নির্লজ্জ সে কবে থেকে হলো। ভাবতেই শরীরে কাটা বিদছে। এক ঝটকায় আকাশকে ছেড়ে সে দুরে গিয়ে দাড়ালো। এমনভাবে সড়লো যেনো এতোক্ষন সে কারেন্ট শক খেয়েছিলো।
আকাশ কিছুটা অবাক হলেও সেটা প্রকাশ করলো না। স্বাভাবিকভাবেই বললো..
— এতো রাতে ছাদে এসেছো কেন?
— এমনি। নিচের দিকে তাকিয়ে জবাব দিলো তারা।
— ভয় পেয়েছিলে?
— নাহ।
— তাহলে জড়িয়ে ধরলে যে? আমি কি ধরে নিবো তোমার মনে আমার জন্য একটা জায়গার সৃষ্টি হচ্ছে।
মুচকি হেসে বললো আকাশ।
— আমার মনে একজনই আছে। আর সারাজীবন সেই থাকবে৷ এই বেহায়া মনে আমি আর কাউকে বসাতে চাই না।
আমি দুঃখিত যে ভয়ের চোটে আপনাকে ধরে ফেলেছি। মাফ করবেন৷
তারা চলে গেলো। আকাশ দাড়িয়ে আছে ছাদে। কি চলছে তার মনে বুঝা দায়। তারা কেন এমন করে? যে মানুষটা তাকে মূল্যায়ন করেনা তাকেই সে ভালোবাসে! এটা কেমন ভালোবাসা? সে কি আমার চোখে ভালোবাসা দেখতে পায়না? কেন দেখতে পায়না? এইসব নানাকিছু ভাবছে আকাশ৷
..
পরেরদিন…
ধ্রুব বিকেলে অফিস থেকে বেশ ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরলো। সারাদিন খুব ধকল গেছে তার। এমনিতে কাজের চাপ, তার উপর তারাকে হারানোর মানসিক যন্ত্রণা,, উফফফ ভাবতে পারছেনা ধ্রুব। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গা টা এলিয়ে দিলো ধ্রুব। চোখ বন্ধ করতেই তারার নিষ্পাপ মুখটা চোখে ভাবছে। তারাতাড়ি চোখদুটো খুলে বিছানায় বসে পরলো ধ্রুব। কত মায়াবী একটা মুখ,, কিভাবে সে ওর সাথে এতো বাজে বিহেভ করতে পারলো? ও কি আর কখনো তারাকে পাবেনা? না না, তাকে যে তারাকে পেতেই হবে।
তারপর নিজে নিজেই বলতে লাগলো..
— আচ্ছা, তারাকে পাওয়ার পর ও কি আমাকে মাফ করবে?
করবে না কেন, অবশ্যই করবে। যদি না করে তাহলে ও তারার সামনে কান ধরে উঠবস করবে৷ দেখি কিভাবে তারা আমাকে ক্ষমা না করে থাকে।
আচ্ছা, আমার বাবুটা কি এতোদিনে হয়ে গেছে? কি হয়েছে? ছেলে নাকি মেয়ে? ভাবতেই মুচকি হাসলো ধ্রুব। আচমকাই মুখের হাসিটা উধাও হয়ে গেলো ধ্রুবর।
এতো কিছু ভাবছে সে, কিন্তু তারা আর ওর সন্তান ওরা ঠিক আছে তো? নাকি কোনো বিপদে আছে।
উফফফ মাথাটা ব্যথা করছে খুব। মাথায় দুহাতে চাপ দিয়ে বসে রইলো ধ্রুব।

=====

দু’দিন হলো ধ্রুবর বাবা সিলেট এসেছে। কিছু কাজ অলরেডি সেড়ে ফেলেছে,, আর কিছু বাকি আছে। ধ্রুব এলেই বাকিটা সাড়বে বাপ বেটা মিলে। ধ্রুবকে ফোন দিলো ধ্রুবর বাবা। দুইবার রিং হওয়ার পরই ফোনটা রিসিভ হলো ওপাশ থেকে।
— হ্যাঁ বাবা, বলো…
— তুই কবে আসবি ধ্রুব। তোর তো আজই আসার কথা ছিলো।
— স্যরি বাবা, অফিসের কাজে আটকে গেছি। তুমি আর দুটো দিন অপেক্ষা করো। আমি দুদিন পরেই আসবো।
— এই দুদিন আমি কি করবো শুনি।
— এক কাজ করো,,, সিলেট যখন আছোই, এই দুইদিন একটু ঘোরাফেরা করো। ওখানে অনেক আকর্ষণীয় জায়গা আছে। ওগুলো দেখলে দেখবে তোমার মুড ফ্রেশ হয়ে গেছে।
— ঠিকাছে, তাই করি নাহয়।
ধ্রুব একটু হাসলো। তারপর ফোনটা কেটে দিলো ও।

আজ একটু বন্ধুদের সাথে দেখা করতে এসেছে ধ্রুব। সেই বটগাছটার নিচে। যেখানে সবাই মিলে আড্ডা দিতো একসময়। অনেক দিন আসা হয়না। বন্ধুদের সাথে মমনোমালিন্য থাকায় এদিকটায় পা মাড়ায় নি ধ্রুব। তবে ওর মনে বন্ধুদের নিয়ে আর কোনো অভিযোগ নেই। আছে শুধু অপরাধবোধ। সেই অপরাধবোধে এখানো ভুগছে ধ্রুব। রাব্বি, রবি, রাফসান, পিয়াস সবার কাছে এক এক করে মাফ চেয়েছে ধ্রুব। বিনিময়ে বন্ধুরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে সব উসল করে নিয়েছে।

তারা যখন নিজের রুমে চুপটি করে শুয়ে ছিল তখনই আশা গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে এলো ওর কাছে। আশাকে দেখে তারা বিছানায় আধশোয়া হয়ে বসে বললো….
— কিছু বলবে আশা..
— এসেছিলাম কিছু বলতে। তোমার বোধহয় শরীর খারাপ।
— আরে না না৷ আমি ঠিক আছি। বলেই তারা সোজা হয়ে বসলো।
আশা একটু মুচকি হেসে বললো৷
— তুমি খুব ভালো তারাপু।
— কি যে বলোনা। আমার চাইতেও তোমরা, তোমার ফ্যামিলি অনেক অনেক ভালো। বলতে গেলে ভালোর উর্ধ্বে।
— সে যাইহোক, যেটার জন্য এসেছিলাম। বলে আশা একটু নড়েচড়ে বসলো। তারা ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আশা বললো.
— তোমাকে নিয়ে একটু ঘুরতে যাবো কাল।
— কোথায়? স্বাভাবিকভাবে বললো তারা।
— আমাদের বাসা থেকে কিছুটা দূরে,, একটা চা বাগান আছে, তার আরেকটু দুরে পাহাড় আছে। জায়গাটা অনেক সুন্দর।
তারা নিজের জায়গা থেকে একটু নড়েচড়ে বসে বললো..
— তুমি গিয়ে ঘুরে এসো আশা। আমি যাবোনা।
আশা খেয়াল করলো,, তারার মুখটা মলিন দেখাচ্ছে।
— তোমার কি মন খারাপ তারাপু?
তারা একটু জোরপূর্বক হাসার চেষ্টা করে বললো
— আমার মন মোটেই খারাপ না আশা।
— তাহলে তো তোমাকে আমার সাথে যেতেই হবে। কোনো ছাড়াছাড়ি নেই। কাল বিকেলে রেডি থেকো।
কথাটা বলে কোনো উত্তরের অপেক্ষা না করেই আশা চলে গেছে। তারার দৃষ্টি এখনো দরজার দিকে।
===

রাতের খাবার খেয়ে ধ্রুব সবেমাত্র রুমে এসেছে। এমন সময় একটা কল এলো ওর ফোনে। নাম্বারটা দেখেই ওর মেজাজটা হটাৎ খারাপ হয়ে গেলো। তুরিন ফোন দিয়েছে আবার। কতোটা নির্লজ্জ হলে মানুষ এমন বেহায়াপনা করতে পারে ভাবতেই গা ঘিন ঘিন করতে লাগলো ধ্রুবর। এমন একটা মেয়েকে কিনা সে ভালোবেসেছিলো। নিজের চাইতেও বেশি বিশ্বাস করেছিলো। ছিঃ নিজের উপর রাগ হচ্ছে খুব।
আবারও কল হচ্ছে। ফোনটা এখন সে ভেঙ্গেই ফেলবে বোধহয়। তাও নিজের রাগটাকে সামলে নিয়ে ফোন রিসিভ করলো সে। সাথে সাথেই বাজখাই গলায় বললো…
— সমস্যা কি তোমার? এতোদিন আমাকে ঠকিয়ে আনন্দ পাওনি। কোন সাহসে আমাকে আবার কল করেছো?
— আমাকে মাফ করে দাও না জান প্লিজ। নির্লিপ্ত গলায় বললো তুরিন।
— দেখো আমার মাথাটা এমনিতেই গরম হয়ে আছে। এরপর যদি তুমি তোমার বেহায়াপনা ছাড়তে না পারো তাহলে আমি কিন্তু আর আমার মাঝে থাকবো না। আমি ভুলে যাবো তুমি একটা মেয়ে।
তুরিন কিছুক্ষণ চুপ থেকে তারপর শান্তগলায় বললো…
— আমি যেটা চায় সেটা আমি যেকোনো মুল্যেই পায়৷ তোমাকে হয়তো আমি দাবার চাল হিসেবে ব্যাবহার করেছিলাম এতোদিন। কিন্তু এখন সত্যিই তোমাকে আমি চায়৷ আর আমি যদি তোমাকে না পায়, তাহলে তোমাকে আমি আর কারো হতে দিবোনা,,, কিংবা আর কাউকে আমি তোমার জীবনে ঢুকতেও দিবোনা৷ মাইন্ড ইট ধ্রুব৷ ভুলে যেওনা ধ্রুব, আমাদের এখনো ডিভোর্স হয়নি।
— রাগাবে না বলে দিলাম। ডিভোর্স হয়নি মানে কি? আমি তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছি অনেক আগেই।
— আমি কিন্তু সেটা এক্সেপ্ট করিনি ধ্রুব। by the way… I Love You. I Love You lot. খুব মিস করছি তোমায়।
– সব কিছুর একটা লিমিট থাকে তুরিন। তোমার কি মনে হয়না তুমি তোমার নিজের লিমিট অনেক আগেই ক্রস করেছো? আর এখন যেটা করছো সেটা একটু বাড়াবড়িই হচ্ছেনা কি? খুব ঝঝালো অথচ শান্ত গলায় বললো ধ্রুব।
— তুমি একটু বেশিই হাইপার হচ্ছো ধ্রুব।
— তোমার তুষার কি তোমাকে ছেড়ে চলে গেছে নাকি? ওকে ছেড়ে এভাবে আমার পিছনে পড়ে আছো কেন? ঝাঝালো গলায় বললো ধ্রুব।
— ওর কথা বাদ দাও,,, ওটা তোমার চাপ্টার নয়। ওটা আমি ম্যানেজ করে নিয়েছি। আর ওই বাচ্চাটাকেই এবোর্শন করে ফেলছি। এখন তোমার আর আমার মাঝে কোনো বাধা নেই সোনা৷ বলেই ঠোট কামড়ে একটা নিশ্বব্দ শয়তানি হাসি দিলো তুরিন।
ধ্রুব যেনো বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছে। এতোটা নির্দয় একটা মেয়ে কিভাবে হতে পারে, যে নিজের বাচ্চাকেই মেরে ফেললো, তাও পৃথিবীতে আসার আগেই৷ ও কি আদৌ মানুষ।
— তোমার সাথে কথা বলতে আমার রুচিতে বাধছে।ছিঃ
— এখনই এতো হাইপার হইয়োনা। সামনে আরও কত কি যে বাকি আছে। Just wait and watch….
কথাগুলো বলে ফট করে ফোনটা কেটে দিলো তুরিন।
রাগে ধ্রুবর শরীর কাপছে। পারলে নিজের মাথা নিজেই না ফাটিয়ে দেয়। এই মেয়েকে তো সে ছাড়বেনা। হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দেবে ধ্রুবর সাথে পাঙ্গা নেওয়ার ফল কতোটা কঠিন।

===

আশা, সীমা আর তারা তিনজনে মিলে বিকেলে ঘুরতে বেরিয়েছে। সীমা একটা সবুজ রং এর শাড়ি পড়েছে। তারার চোখে সীমাকে আজ অসাধারণ লাগছে। সারাটা বিকেল চা বাগান, আর পাহাড়ে ঘুরে বেরিয়েছে ওরা। সন্ধ্যায় আযান দেওয়ার কিছু আগ মুহূর্তে তারা বলল…
— এবার আমাদের যাওয়া উচিত।
— ঠিক বলেছো তারা৷ সন্ধ্যায় এই পাহাড়ি এলাকায় না থাকাটায় ভালো। চল চলে যাই। পাশ থেকে সীমা বললো।
ওরা তিনজনে মিলে কিছুটা পথ চলে এসেছে। এমন সময় চা বাগানের এক কোনা থেকে কিছুটা গোঙ্গানির মতো শব্দ পেলো ওরা। তিনজনই কিছুটা ঘাবড়ে গেছে। সাথে কিছুটা ভয় জেকে বসেছে ওদের ঘাড়ে। গোঙ্গানোর শব্দটা ক্রমশই বেড়ে চলেছে। ওরা কি করবে বুঝতে পারছেনা। একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে। একবার যদি ভাবছে সামনে এগুবে, পরক্ষণেই আবার মন বিপরীত কথা বলছে। তবুও এই মনটা মানতে চাইছেনা। এক পর্যায়ে তারা বললো…
— চলো, আমরা তিনজনে মিলে গিয়ে দেখি ওখানে কিসের আওয়াজ হচ্ছে।
আশা কিছুটা ঢোক গিলার মতো করে বললো
— যদি কোনো খারাপ কিছু হয়!!! কোনো বিপদ হবেনা তো আমাদের? আমার খুব ভয় করছে তারাপু।
— আল্লাহ যদি আমাদের কপালে বিপদ লিখে থাকেন তাহলে সেটা কোনোভাবেই আমরা এড়াতে পারবোনা আশা। আর যদি আল্লাহর উপর আমরা ভরসা করি তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ উনার বান্দা বান্দীকে ঠিক রাখবেন।

তারা, সীমা আর আশা তিনজনই গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে এলো পাহাড়েই কোনাটায়। যেখান থেকে এতক্ষণ আওয়াজ আসছিল। হটাৎ করেই আওয়াজ টা বন্ধ হয়ে গেলো। এবার আরো কিছুটা ভয় জেকে বসেছে ওদের মনে। তাও মনে সাহস সঞ্চয় করে সামনে এগিয়ে গেলো ওরা। তারা সবার সামনে। আশা আর সীমা ওর পিছনেই কাধে কাধ মিলিয়ে এগুচ্ছে৷ আর কিছুটা এগুতেই খব অবাক হলো তারা। সাথে আশা আর সীমাও। সামনেই একটা লোক উপুড় হয়ে পড়ে আছে৷ বুঝা যাচ্ছে লোকটার কোনো হুশ নেই । এবার সত্যিই ভয় পেয়ে গেলো ওরা৷ একে অপরের দিকে ভয়ার্ত চোখে তাকাচ্ছে আর ভাবছে এখন এই মুহুর্তে ওদের কি করা উচিত।
তারা এবার লোকটার একদম কাছে চলে গেছে। পিছন থেকে সীমা বললো…
— সাবধানে তারা…
তারা একবার ওদের দিকে তাকিয়ে পরক্ষণেই আবার লোকটার দিকে তাকালো। তারপর মনে মনে আল্লাহর নাম জপ করতে করতে লোকটাকে কিছুটা কাত করলো মুখটা দেখার জন্য। সাথে সাথেই যেনো খুব বড়সড় একটা ধাক্কা খেলো তারা। মাথাটা চিনচিন করছে, চোখ দুটো ভিজে গেছে ওর৷ সীমা আর আশা অবাক হয়ে তারাকে দেখছে।

To be Continue…….
To be Continued ….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here