#ঝিলের_ওপারে_পদ্মফুল
তন্বী ইসলাম -০৮
শ্রাবণ হাসলো। আবেশে তাকালো পদ্ম’র দিকে। মৃদুস্বরে বললো
“আজ নাহয় তোর জন্য আমি মাঝিই হলাম। আল্লাহ সহায় হলে শুধু নৌকার মাঝি না, তোর জীবনের মাঝিও আমিই হবো।
শ্রাবণে কথাই লজ্জা অনুভব করলো পদ্ম। মুখ লুকোতে ব্যস্ত হয়ে গেলো সে। শ্রাবণ খেয়াল করলো সবটাই। ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসি তার। পদ্ম’র এলো চুলগুলোতে আবারও নজর গেলো তার। চুলগুলো বড্ড জ্বালাচ্ছে তার পদ্মফুল কে। শ্রাবণ তার হাতের আঙ্গুলের সাহায্যে পদ্ম’র চুলগুলো কানের পিছনে গুজে দিলো, পদ্ম’কে প্রশ্ন করলো ক্লিপ আছে কিনা। পদ্ম লজ্জায় সংকুচিত হয়েই মাথা নাড়িয়ে বললো
“নাহ।
শ্রাবণ ভাবতে লাগলো কি করা যায়। শ্যাম্পু করা চুল, তাই একটু বেশিই উড়াউড়ি করছে৷ শ্রাবণ তার প্যান্টের পকেটে হাত দিলো, কিছু খুঁজে পায় কিনা সেই আশায়। পকেটে হাত দিতেই তার হাতে একটা কলম ঠেকলো। শ্রাবণের ঠোঁটের কোনে আবারও হাসি। কলমের ক্যাপটা খুলে সেই ক্যাপ দিয়ে পদ্ম’র চুলগুলোতে ক্লিপের মতো করে লাগিয়ে দিলো সে। পদ্ম তাকালো শ্রাবণের দিকে। শ্রাবণ হাসলো, পদ্ম’ও লাজুক হাসি হাসলো।
কিছুটা সময় এভাবেই কেটে গেলো৷ শ্রাবণ পদ্ম’র এক হাত নিজের হাতের মুঠোয় পুরে নিয়ে বললো
“পদ্মফুল…
“হু.!
“এখানে ভালো লাগছে তোর?
“হুম।
“পদ্মফুল..
“হু!
“আমি চলে গেলে আমায় মিস করবি না?
“হু।
শ্রাবণ খানিক রাগী চোখে তাকালো পদ্ম’র দিকে। পদ্ম যেনো লজ্জায় নুইয়ে যাচ্ছে। সামান্য ঝাঝালো গলায় শ্রাবণ বললো
“কি তখন থেকে শুধু হু হু করে যাচ্ছিস! হু হু ছাড়া আর কিছু বলতে পারিস না? পদ্ম থতমত খেয়ে তাকালো শ্রাবণের দিকে। এতোক্ষণ তো হু হু করেছে, কিন্তু এখন কি বলবে? সত্যি বলতে কিছু বলার মতো ভাষা সে খুঁজে পাচ্ছেনা। লজ্জা তার সমস্ত ভাষাকে ভুলিয়ে দিয়েছে৷ পদ্ম অসহায়ের মতো তাকিয়ে রইলো শ্রাবণের দিকে। শ্রাবণের এবার হাসিই পেলো। পদ্ম’কে এইরুপে দেখতে তার ভালোই লাগছে। সে নির্বাক চাহনিতে তাকিয়ে রইলো পদ্ম’র দিকে। পদ্ম চোখ সরিয়ে নিলো। আমতা-আমতা করে বললো
“আমরা বাড়ি যামু কখন শ্রাবণ ভাই?
শ্রাবণ তার হাতের ঘড়িটার দিকে চোখ বুলালো। দুপুর পেরিয়ে গিয়েছে ততক্ষণে। সে আবারও পদ্মকে ইশারা করে বলল
“তোর ভালো লাগছে না আমার সাথে থাকতে?
“ভালো তো লাগছে, কিন্তু…
শ্রাবণ নিরবে হাসলো। বললো
“যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আর কোনো কিন্তু নেই। আর একটু সময় থাক আমার সাথে।
শ্রাবণ পদ্ম’কে নিজের দিকে আরেকটু টানলো। একহাতে জড়িয়ে ধরে বললো
“নদীর স্বচ্ছ পানির দিকে তাকা পদ্মফুল, আর আমাকে অনুভব কর।
পদ্ম তাই করলো, দৃষ্টি নদীর দিকে নিক্ষেপ করলো সে।
বাড়ি আসতে আসতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়ে গেছে৷ এই টাইমে পদ্ম’কে বাড়ি ফিরতে দেখে বেশ অবাকই হলেন আলেয়া বেগম। তিনি ঘরের কাজকর্ম সাড়ছিলেন। শাপলা রান্নাঘরে বসে চুলোয় লাকড়ির আগুনে রান্না করছে। এমন সময় পদ্ম ঘরে ঢুকলে আলেয়া আগে বাইরে উঁকি দেন। দেখার জন্য সেলিম তার বউকে নিয়ে চলে এসেছে কিনা। বাইরে কাউকে দেখতে না পেয়ে উনি পদ্ম’কে প্রশ্ন করেন
“কি রে? তুই কার সাথে আইলি?
“শ্রাবণ ভাইয়ের সাথে আম্মা।
আলেয়া খানিক সরু দৃষ্টিতে তাকালেন পদ্ম’র দিকে। বললেন
“তুই একাই আসছোস ওর সাথে?
“হু আম্মা।
“কেন? বেড়াইতে যাওয়ার জন্য তখন নাচ শুরু করছিলি, এখন আইসা পরলি কেন?
মায়ের চোখেমুখে স্পষ্ট সন্দেহ। পদ্ম কিভাবে ব্যাপারটা এড়িয়ে যাবে সেটা নিয়ে চিন্তায় পরে গেলো। শাপলা রান্নাঘরে বসে থেকেও সবটা খেয়াল করলো। বোনকে বেকায়দায় দেখে সে জলদি করে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলো। পদ্ম অসহায় ভাবে শাপলার দিকে তাকালো। শাপলা সবটা বুঝতে পেরে মায়ের দিকে তাকিয়ে জোরপূর্বক হেসে বললো
“ও আম্মা, তুমি অরে এইভাবে জেরা করতাছো কেন? ওর বোধহয় ওই বাড়ি ভালো লাগতেছিলো না, কোনোদিন তোমারে আমারে রাইখা কি কোথাও থাকছে নাকি?
পদ্ম নিজেও এবার শাপলার কথায় জোরপূর্বক হাসলো। বললো
“হো আম্মা, আমার সত্যিই তোমাগোরে ছাড়া ভাল্লাগতেছিলো না। পদ্ম আহ্লাদীপনা করে মাকে জরিয়ে ধরলো। আলেয়ার মন মুহুর্তেই নরম হয়ে গেলো। তিনি পদ্ম’ মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো
“পাগলি মাইয়া আমার! এখনই কোথাও গিয়া এক রাইত থাকতে পারিস না, বিয়ার পর শশুরবাড়ি গিয়া থাকবি কেমনে! তখন তো ইচ্ছে করলেও যখন তখন আসতে পারবি না আমাগো কাছে। কথাটা বলার সময় আলেয়ার মুখটা কিঞ্চিৎ বিষন্ন হয়ে গেলো। পদ্ম লাজুকভাবে হেসে মৃদুস্বরে বললো
“আমি এ বাড়ি ছাইড়া কোত্থাও যামু না আম্মা। আলেয়া আবারও হাসল। শাপলা এবার পদ্ম’র দিকে তাকিয়ে বললো
“হাতমুখ ধুইয়া আয় পদ্ম। কিছু খাবি নে। খিদা লাগছে তো বোধহয় তাইনা।
পদ্ম বিষন্নমুখে মাথা নাড়িয়ে জানান দিলো তার সত্যিই খিদে পেয়েছে।
হালকা কিছু খেয়ে ঝিলের দিকে হাঁটা ধরলো পদ্ম। আলেয়া পেছন থেকে ডেকে বললো
“এই সন্ধ্যাবেলা যাস কই?
“ঝিলের পাড় যাই আম্মা।
“এই অটাইমে ওইখানে যাওনের কোনো দরকার নেই পদ্ম, ঘরে থাক।।
“ও আম্মা, আমিতো সবসময়ই যাই। কিছু হইবো না তো। পদ্ম মায়ের নিষেধ অমান্য করেই ঝিলের দিকে দৌড় দিলো। ততক্ষণে শাপলার রান্নার কাজও শেষ হয়ে গেছে। ভাত তরকারির হাড়ি গুলো যথাস্থানে রেখে কলপাড়ে গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে নিলো সে। আলেয়া মাগরিবের নামাজ পড়ার জন্য জায়নামাজ বিছিয়ে বসেছে সবেমাত্র। শাপলা ঘরে বসে না থেকে পদ্ম’ কাছে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো।
মাচার উপর বসে কাচা জলপাই কামড়ে কামড়ে খাচ্ছে সে। টকের চোটে একেক কামড়ে চোখমুখ খিচে বন্ধ করে ফেলছে সে। বোনের এমন কান্ড দেখে হাসলো শাপলা। শাপলার হাসির আওয়াজে ফিরে তাকালো পদ্ম। বললো
“এখানে বস আপা।
শাপলা বোনের পাশে গিয়ে বসলো। মিহি গলায় বললো
“এই সন্ধ্যেবেলায় জলপাই খেতে ইচ্ছে করলো যে!
“হু আপা! দুইদিন ধইরা খাই না।
“দুইদিন কই! গেলিই তো গতকাল।
“তো দুইদিন হইলো না? কাল আর আজ মিলাইয়াই তো দুইদিন।।
শাপলা হাসলো। খানিক চুপ থেকে বললো
“চলে এলি কেন?
পদ্ম জলপাইয়ে কামড় বসাতে বসাতে বললো
“কইলাম তো ভাল্লাগতাসে না তাই।
“ওটা তো আমি বলছিলাম। আসল কারনটা তো বলিস নাই।
পদ্ম জলপাই খাওয়া বাদ দিয়ে ভাবলো সত্যিই তো, ওকে মায়ের হাত থেকে বাচানোর জন্য আপাই তো ঐ কথা বইলা কথা ঘুরাইছে।
শাপলা আবারও ওকে তাড়া দিয়ে বললো
“কি’রে, বললি না তো কেন চলে আসছিস?
পদ্ম মৃদু হাসলো। বললো
“ভাবীর একটা ভাই আছে জানিস তো। যখন তখন আমার কাছে আসে, বিভিন্ন ধরনের কথা কয়। অনেক ধরনের খাওন আইন্না দেয় আমারে। গতকাল থেকে আইজ পর্যন্ত যা যা আনছে সবই খাইছি। অতো অতো বাইরের খাওন খাওয়ার লাইগা আজ আমার পেট খারাপ করে ফেলছে। ভাবলাম আরো দুইদিন থাকলে যদি আরো এইসব ছাইপাঁশ আইনা খাওয়ায়, তখন যদি আরো বেশি অসুখ করে, সেই চিন্তা কইরাই আইলাম। পরে অসুখ হইলে তোগো আবার টাকা খরচ হইবো।
শাপলা বুঝতে পারলাম কথাগুলো সবটাই বানানো, তবুও বোনের এমন যুক্তি শুনে তার বেশ হাসিই পেলো।
ঘন কালো মেঘে আকাশটা ছেয়ে আছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃষ্টি নামবে মনে হচ্ছে। গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়তেও শুরু করেছে এর মাঝে। জানলার ফাঁক দিয়ে বাইরের অপরুপ দৃশ্যটা উপভোগ করতে করতে শ্রাবণের মনে হল, ‘ইশ, আজ যদি পদ্ম’র সাথে বৃষ্টিবিলাশ করতে পারতাম। আবারও বাইরে তাকালো শ্রাবণ। এতোক্ষণ দমকা বাতাশ বইছিলো, তবে সেটা কমে গিয়ে বৃষ্টির ফোঁটা পরছিলো আরো আগে থেকেই। এর মধ্যে বৃষ্টির বেগ বেড়ে গেছে। টিনের চালের উপর বৃষ্টির ঝোপঝাড়ের শব্দ যেভাবে মনে এক অজানা আনন্দের সৃষ্টি করছে ঠিক সেইভাবেই পদ্মকে কাছে পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষাও মনের মধ্যে জেঁকে বসেছে৷ মুহুর্তেই মনের মধ্যে তীব্র আলোড়ন তৈরি হয়েছে তার। যদিও পদ্ম’কে সে এখন কাছে পাবেনা, তবে দেখতে তো পারবে।
শ্রাবণ ঝর বৃষ্টির মধ্যে বাইরে বেরোনোর জন্য পা বাড়ালো।৷ মাঝঘরের মেঝেতে বসে খাঁচা বুনছিলেন জুবেদা খাতুন। ছেলেকে এই বৃষ্টির মধ্যে বেরোতে দেখে তিনি কিঞ্চিৎ অবাক হলেন। বিস্মিত কন্ঠে বললেন
“কই যাস বাপ?
শ্রাবণ মায়ের দিকে তাকিয়ে হাসলো। বললো
“এইতো মা, একটু বাইরে যাই।
“এই বৃষ্টির মইধ্যে বাইরে কি করতে যাবি?
শ্রাবণ কথা ঘুরানোর জন্য বললো
“আব্বা কই গেছে মা?
জুবেদা খাঁচা বুনানোতে মন দিয়ে বললো
“তোর বাপের খবর আমি কেমনে যানমু। আছে মনে হয় কোনো চায়ের দোকানে।
“ওহ।
মাকে কাজে মনোযোগী হতে দেখে শ্রাবণ ধীরপায়ে বাইরের দিকে পা বাড়ালো। খুবই সতর্কতার সহিত সে বেরিয়ে এলো ঘর থেকে। বারান্দায় এসে খেয়াল করলো বৃষ্টির বেগ আগের তুলনায় আরো বেড়েছে৷ মনে মনে ভাবলো এই বৃষ্টির মধ্যে পদ্ম’র কাছে সে যাবে কি করে! আর যদিও এই বৃষ্টি পানি অতিক্রম করে ভিজে যায়ও তবে চাচী কি ভাবতে? চাচী যা বুদ্ধিমতী, ঠিক বুঝতে পারবে কিছু একটা মতলবে সে গিয়েছে।
বৃষ্টি থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই বিদ্যুৎ চলে গেলো। মুহুর্তেই চারিপাশ অন্ধকার হয়ে গেলো। জুবেদা খাতুন হাতড়ে হাতড়ে চার্জ লাইটটা জ্বালিয়ে দিলো। এ লাইটটা তার ছোট ছেলে শ্রাবণই নিয়ে এসেছিলো শহর থেকে। বিদুৎ চলে গেলে হারিকেনের আলোতে মায়ের দেখতে সমস্যা হয় বিধায়। যদিও এ লাইটটা আনার সময় পদ্মদের জন্যও একটা লাইট নিয়ে এসেছিলো সে। কিন্তু এটা দিতে গেলে চাচী কি ভাববে না ভাববে সেটা ভেবেই আর দেওয়া হয় নি।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে থেকেই শ্রাবণ খেয়াল করলো ওদিকে পদ্মদের ঘরে টিমটিম করে হারিকেনটা জ্বলছে। হারিকেনের সামনে থেকে পদ্মকে সরে যেতেও দেখেছে সে। বোধহয় সেই জ্বালিয়েছে বাতিটা। শ্রাবণের মুখে হাসি ফুটলো। বুকে ঝর বইলো, এই মুহূর্তে পদ্মকে কাছ থেকে দেখতে না পেলে বোধহয় সে মরেই যাবে।
শ্রাবণ সাথে সাথেই ঘরে ঢুকে গেলো। তার ব্যাগে সেই লাইটটা এখনোও আছে। চাচী যা ভাবার ভাবুক, সে এটা নিয়েই এখন যাবে। শ্রাবণ তার ব্যাগ থেকে লাইটটা বের করে আবারও ঘর থেকে বেরিয়ে পরলো। একদন্ড দেরি না করে পদ্মদের ঘরের দিকে দৌড় দিলো সে।
এই ঝড়বৃষ্টির মধ্যে শ্রাবণকে ঘরে ঢুকতে দেখে অবাক হলেন আলেয়া বেগম। ভাবলেন কোনো দরকারে বুঝি এসেছে। তিনি এগিয়ে গেলেন শ্রাবণের কাছে।
“ভিইজ্জে আইলা যে বাজান। কিছু কইবা?
শ্রাবণ চাচীর কথাকে এড়িতে গিয়ে ঘরের ভেতর তাকালো।৷ বিছানার উপর চোখ পরতেই দেখতে পেলো দু’বোন একসাথে শুয়ে গল্প করছে। শ্রাবণ এক পলক সেখানে দেখে চাচীর দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বললো
“আপনার কাছে আসছি চাচী ।
“ঘরে আইয়ো।
শ্রাবণকে নিয়ে ঘরে ঢুকলেন আলেয়া। ওকে ঢুকতে দেখেই ধরফরিয়ে উঠে বসলো দু’বোন। এতক্ষণ শ্রাবণের উপস্থিতি টের পলায়নি তারা। শ্রাবণকে দেখে পদ্ম’র ঠোঁটে মৃদু হাসি দেখা গেলো। তবে সেটা সকলের অলক্ষ্যে । চাচীর দৃষ্টি উপেক্ষা করে শ্রাবণও মৃদু হাসল, একত্রিত হলো শ্রাবণ পদ্ম’র দু’জোড়া চোখ। শ্রাবণ অন্যপাশের বিছানায় গিয়ে বসলো। লাইটটা চাচীর হাতে দিয়ে বললো
“এটা আপনার জন্য এনেছিলাম চাচী। বিয়ের ঝামেলায় দিতে ভুলে গেছিলাম।
আলেয়া খুশিমনেই লাইটটা নিলো। বললো
“এইটা আনতে গেলা কেন বাবা?
“আমি’তো আপনার ছেলের মতই চাচী। আপনার যদি আমার মতো একজন ছেলে থাকতো তাহলে তো ঠিকই এনে দিতো। এই প্রথম শ্রাবণের কথায় আবেগাপ্লুত হলো আলেয়া। শ্রাবণের মাথার হাত বুলাতে বুলাতে তিনি বললেন
“আল্লাহ তোমারে বাচাইয়া রাখুক বাজান।।
পদ্ম’র বেশ আনন্দ লাগলো। মায়ের সাথে শ্রাবণের সম্পর্কটা সুন্দর হলে তারই যে উপকার। শাপলা হেসে বললো
“তুমি যাইবা কবে শ্রাবণ ভাই?
“আগামীকাল চলে যাবো রে শাপলা।
হঠাৎ শ্রাবণ ভাইয়ের চলে যাবার কথা মনে হতেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো পদ্ম’র। সে অন্যদিকে ফিরে কাথামুড়ি দিয়ে বিছানায় শুয়ে পরলো। এই গরমে ওকে কাঁথামুড়ি দিতে দেখে সবাই অবাক। শুধু শ্রাবণ ছাড়া। সে ঠিক বুঝতে পারলো মেয়েটার মন খারাপ হয়েছে। মনে মনে সে ভাবলো, ‘পাগলী, এবার নাহয় কাঁথামুড়ি দিয়েই থাক। সময় হলে সে কাঁথার যায়গায় আমি থাকবো। যত্নসহকারে মুড়িয়ে রাখবো পাজরের ধারে।
চলবে……
গ্রুপ লিংক : “তন্বী’র উপন্যাসমহল”- Tanni Islam✍️