ঝিলের ওপারে পদ্মফুল পর্ব -০৯

#ঝিলের_ওপারে_পদ্মফুল
তন্বী ইসলাম -০৯

রাতে বৃষ্টি হওয়ার দরুন ভোরের পরিবেশটা খুবই স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে। বৃষ্টির পানি চারিদিকটা ধুয়ে সাফ করে দিয়ে গেছে। গাছের পাতাগুলোকেও আগের তুলনায় প্রাণবন্ত দেখাচ্ছে। পাতার আড়ালে ছোট ছোট পাখিগুলো উড়ে বেড়াচ্ছে আর গুনগুন করে গান গাইছে। সবমিলিয়ে বেশ লাগছে পদ্ম’র কাছে। ভোরে উঠে দুইবোন মিলে আজকের সকালটা উপভোগ করতে লাগলো। যদিও সচরাচর শাপলা এতো ভোরে বাইরে বের হয় না। ঝিলের পাড়ে গিয়ে মাচার উপর গিয়ে বসলো শাপলা। পাশে গিয়ে পদ্ম’ও বসলো। ঝিলের পানিটা আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। পদ্ম’র ঠোঁটের কোনে হাসি, অসম্ভব ভালো লাগছে তার। শাপলা পদ্ম’র দিকে তাকালো, হেসে বললো
“আজ তো তোর মন খাওয়া থাকার কথা ছিলো, কিন্তু তোর তো মন খারাপ নেই।
পদ্ম অবাক হয়ে বললো
“কেন? আমার মন খারাপ থাকবো কেন?
শাপলা হাসলো। বোনের মাথায় আঙ্গুল বুলিয়ে দিয়ে বললো
“তুই কি মনে করিস, আমি কিচ্ছু বুঝিনা? শ্রাবণ ভাই আর তোর মধ্যে কি চলছে আমি সব জানি।

শ্রাবণ ভাইয়ের কথা বলতেই লজ্জায় মুখ লাল হয়ে গেলো পদ্ম’র। বড় বোন সবটা জানে সেটা ভেবে আরো গুটিয়ে গেলো সে। কিন্তু তার মাথায় প্রশ্ন খেলছে অন্য কথা, মন খারাপ থাকবে কেন? সে প্রশ্নভরা দৃষ্টিতে তাকালো শাপলার দিকে। বলল
“সে নাহয় জানিস মানলাম, কিন্তু মন খারাপ হবে কেন?
“আজ তো সে চলে যাবে নাকি।
শ্রাবণ ভাইয়ের চলে যাবার কথাটা বেমালুম ভুলে গেছিলো পদ্ম। নেহাৎ শাপলা সেটা মনে করিয়ে দিয়ে মন খারাপ করে দিলো। মুখ ভার করে বসে রইলো সে। পদ্ম’কে মন খারাপ করতে দেখে মৃদু হাসলো শাপলা। বললো
“যাক, অবশেষে তোর মন খারাপ হলো তাহলে।
“আমার মন খারাপ হইলে তুই খুশি আপা?
আবারও বোনের কথায় হাসি পেলো শাপলার। বললো
“একদমই না। তবে কোনো কোনো পরিস্থিতিতে মন খারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিক। তখন মন খারাপ না হলেই বরং ব্যাপারটা অস্বাভাবিক লাগে।
মায়ের ডাকে আড্ডা ভঙ্গ হলো দু’বোনের। বাড়ির ভেতর থেকে আলেয়া বেগম বলছেন
“কিরে পদ্ম শাপলা, তো’গো কি পড়ালেখা নাই আইজ? হাত পা তুইলা বইসা আছিস যে। ঘরে আইসা বই নিয়া বসবি নাকি আমার আসা লাগবো?
পদ্ম’র দিকে তাকালো শাপলা। মৃদু গলায় বললো
“আয়, ক্লাসের পড়া রাতে শেষ করিস নাই, পড়তে বসবি।

পদ্ম মনমরা হয়ে মাচা থেকে নামলো। গুটিগুটি পায়ে মাটির দিকে তাকিয়ে শাপলার পিছু পিছু হাঁটতে লাগলো সে। কয়েক কদম এগিয়েই থেমে গেলো শাপলা। পদ্ম সামনের দিকে না তাকিয়েই বিরক্তিকর গলায় বললো
“দাঁড়াইলি কেন আপা? ঘরে যাবি তো চল।
শাপলা ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকালো। পদ্ম’র মুখটা এখনো নিকষ কালো অন্ধকারে ছেয়ে আছে। মৃদু গলায় সে বললো
“আমি ঘরে গেলাম পদ্ম, তুই জলদি ফিরে আসিস।
শাপলা দ্রুত পায়ে চলে গেলো বাড়ির ভেতরে। হঠাৎ বোনকে তারাহুরো করতে দেখে অবাক হলো পদ্ম। সামনে তাকিয়েই দেখলো শ্রাবণ দাঁড়িয়ে আছে। বুঝতে পারলো শাপলার দ্রুত পায়ে চলে যাবার কারণ। শ্রাবণকে দেখে আবারও মন খারাপ হয়ে গেলো পদ্ম’র। চোখমুখ ভার করে নিচের দিকে তাকিয়ে পায়ের আঙ্গুল দিতে মাটি খুড়তে লাগলো সে। শ্রাবণ অপলক নয়নে দেখছে তার পদ্মফুল কে। পদ্মফুলের মন খারাপ দেখে তার নিজেরও কষ্ট লাগছে।

কিছু সময় পর শ্রাবণ ডাকলো পদ্ম’কে।
“পদ্মফুল।
পদ্ম নিচের দিকে তাকিয়ে পা দিয়ে মাটি খুড়তে খুড়তে বললো
“হু।
“আমার দিকে তাকা।
পদ্ম তাকালো না। সে আগের মতই দাঁড়িয়ে রইলো। শ্রাবণ খানিক ঝুকে পদ্ম’র মুখটা দেখার চেষ্টা করলো এবার। পদ্ম মাথাটা এমন করে নিচের দিকে রেখেছে যে শ্রাবণ ওর মুখটা ভালো করে দেখতেও পারছে না। শ্রাবণ আরেকটু ঝুকলো, সে যতই ঝুকছে পদ্ম ততই মুখ লুকানোর চেষ্টা করছে৷ ওকে এমন করতে দেখে মুচকি হাসলো শ্রাবণ। ওভাবে ঝুঁকে থেকেই বললো
“আমাকে দেখবি না তো পদ্মফুল! পরে কিন্তু আমি চলে গেলে আফসোস করবি না।
পদ্ম এবার ভ্রু বাকিয়ে তাকালো শ্রাবণের দিকে। শ্রাবণ হেসে বললো
“যাক, অবশেষে তাহলে আমার পদ্মফুলের মুখ দেখার ভাগ্য আমার হলো।
পদ্ম অন্যদিকে তাকিয়ে রইলো এবারেও। অভিমানী গলায় বললো
“যাইবা যাও, আমার মুখ দেখা লাগে কেন। কত বারই তো গেছো, তখন তো আমার মুখ দেইখা যাও নাই।
শ্রাবণ হেসে বললো
“প্রতিবারই তোর মুখটা দেখে তবেই আমি বাড়ি থেকে বেরোই পদ্মফুল। তুই হয়তো সেটা খেয়াল করিস না।
পদ্ম মনে মনে ভাবলো, সত্যিই যখন শ্রাবণ ভাই বাড়ি থেকে চলে যায়, তখন কোনো কোনো বাহানায় তার সাথেই দেখা করেই যায়। তবুও পদ্ম’র মন ভালো হলো না। সে আবারও বললো
“অন্যবার তো এমনে কইতে আসো না, আজ এতো বলা লাগে কেন।
“অন্যসময়ের চাইতে আজকের সময়টা স্পেশাল যে।
পদ্ম’র এবার কান্না পাচ্ছে। ইচ্ছে করছে শ্রাবণ ভাইয়ের মুখের উপর বলে দেক, সে যেনো না যায়। নতুবা গেলেও তাকে নিয়ে যায়।

কিন্তু এটা তো বলা যাবে না। শেষে তাকেই লজ্জা পেতে হবে।
পদ্ম খেয়াল করলো শ্রাবণ তৈরি হয়ে আছে। অবাক হলো সে, বিস্ময়ে বললো
“তুমি কি এক্ষুনি চইলা যাইবা শ্রাবণ ভাই?
শ্রাবণ মুচকি হেসে বললো
“হুম।
“এতো সকালে কেন?
“গতকাল যাওয়ার কথা ছিলো, যেতে পারিনি। তাই আজ সকাল সকালই যেতে হবে।
পদ্ম ছোট্র করে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো
“যাও তাইলে। এখানে দাঁড়াইয়া রইছো কেন!
পদ্ম’র অভিমানী মুখটা দেখে শ্রাবণের হাসিও পাচ্ছে আবারও খারাপও লাগছে।
শ্রাবণ একবার হাত ঘড়িটার দিকে তাকালো। দেরি হয়ে যাচ্ছে তার। সে আবারও পদ্ম’র দিকে তাকালো। কিছুক্ষন পদ্ম’র মায়াবী মুখপানে তাকিয়ে থেকে বললো
“একটা জিনিস চাইবো পদ্ম, দিবি আমায়?
পদ্ম অবাক হয়ে বললো
“আমি আবার কি দিমু তোমারে?
“আছে একটা জিনিস। দিবি?
“কি?
শ্রাবণ কয়েক সেকেন্ড নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে রইলো। পদ্ম তাড়া দিয়ে বললো
“কি জিনিস কও না কেন শ্রাবণ ভাই?
শ্রাবণ হঠাৎ ঢোক গিললো, আবেগ মেশানো গলায় বললো
“একটা কিস।
চমকে গেলো পদ্ম। সাথে সাথেই দু’পা পিছিয়ে গেলো সে। শ্রাবণ আবারও আবেশে বললো
“দিবি না পদ্মফুল?
পদ্ম কি করবে বুঝতে পারছে না। ব্যাপারটা তার জন্য বেশ লজ্জাজনক। আবার শ্রাবণ ভাইকে মুখের উপর না বলার সাহসও তার নেই। দু’টানায় ভোগতে লাগলো পদ্মফুল। হাত পা কাঁপছে তার।

শ্রাবণ হাসলো। বললো
“কিছু বলছিস না যে! তাহলে কি ধরে নিবো তোর এ নিরবতা সম্মতির লক্ষণ?
পদ্ম আবারও আতংকিত চোখে তাকালো শ্রাবণের দিকে। শ্রাবণ ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে তার দিকে। পদ্ম দেখছে সবটা, তবে নড়তে পারছে না। পা যেনো মাটির সাথে গেঁথে আছে তার। ধীরে ধীরে শ্রাবণ পদ্ম’র একদম কাছে চলে এলো। পদ্ম’র চওড়া কপালটায় চুম্বন আঁকার জন্য ঠোঁট দুটো বাড়িয়ে দিলো ঠিক তখনই পেছন থেকে শাপলার কন্ঠস্বর কানে এলো। খানিক রাগীস্বরে সে পদ্মকে বলছে
“সেই কখন আম্মা ডাকছে, এখনও ঘরে আসিস না কেন পদ্ম?

শাপলার কথা শুনে শ্রাবণ আর পদ্ম দুজন দুদিকে ছিটকে গেলো। শাপলা এখানে ঘটে যাওয়া কিছু দেখে নি। পদ্ম অপরাধীর মতো বললো
“আসতাছি আপা।
শাপলা এবার শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে বললো
“তুমি এখনো যাও নাই শ্রাবণ ভাই? শুনছিলাম তোমার নাকি দেরি হইয়া যাইতাছে।
শ্রাবণ হেসে বললো
“এক্ষুনি যাচ্ছি।
শাপলা পদ্ম’ র দিকে তাকিয়ে বললো
“আম্মা এখানে আসার আগে ঘরে আয়।
শাপলা এগিয়ে গেলো, তার পিছু পিছু হেঁটে গেলো পদ্ম। শ্রাবণ আগের যায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। যদিও সে পদ্ম’কে চুমু দিতে পারেনি, তবে শাপলার কথার উত্তর দিতে গিয়ে মুখে যে হাসি এনেছিলো, সেটা এখনো ঠোঁটের কোনায় ঝুলে আছে। সেই হাসিমাখা মুখে দাঁতে দাঁত চেপে কটমট করতে করতে শ্রাবণ বিড়বিড় করে বললো
“আসার সময় পাইলি না রে শাপলা আপার বাচ্চা।

_________
কলেজে যাবার পথে শাপলার মনে হলো কেউ তাকে ফলো করছে। সে পেছন ফিরে তাকালো, কিন্তু আশেপাশে কাউকে দেখতে পেলো না। আবারও সামনে এগুতে লাগলো শাপলা। খানিক বাদে আবারও সে অনুভব করে কেউ তার পিছু পিছু হাঁটছে। বুঝতে পেরে আকস্মিক সে পেছনে ফিরে তাকালো, কিন্তু এবারেও ফলাফল শুন্য। এবার খানিক ভয় পেতে লাগলো শাপলা। মনের মধ্যে ঘুরপাক খেতে লাগলো একটি কথায়, “আজ আমি একা। কোনো অঘটন ঘটবে না তো আমার সাথে?
বাড়িতে মেহমান আসায় তানি আজ আসেনি। যে কারণে একাই কলেজে যেতে হচ্ছে তাকে। এর আগেও সে একা একা অনেক বারই কলেজে গিয়েছে। কিন্তু কোনোদিন তো এমন হয়নি। আজ কে তাকে দেখছে? আর যদি কেউ তার পিছু নেয়ও তাহলে তাকে সে দেখতে কেন পাচ্ছে না?
শাপলার মনে অজানা ভয় কাজ করতে লাগলো। একটা বাটন ফোন আছে শাপলার কাছে। কলেজে ভর্তি হবার পর আলেয়া বেগম মেয়েকে এই ফোনটা কিনে দিয়েছিলো। এতটা রাস্তা পেরিয়ে মেয়েটা কলেজে যায়, পাছে কোনো বিপদ ঘটলে মেয়ের সাথে যেনো যোগাযোগ করতে পারে সেটা ভেবেই। ফোনটা শাপলার বইয়ের ব্যাগের মধ্যেই ছিলো। সে ব্যাগটা থেকে ফোন বের করলো জলদি করে। কপাল বেয়ে ঘাম ঝরছে তার। ডায়ালে গিয়ে একটা নম্বর বের করে সেটাতে ফোন করলো সে।

দুবার রিং হতেই ওপাশ থেকে ফোনটা রিসিভ হলো। কান্নাবিজড়িত গলায় শাপলা বলে উঠলো
“আমার খুব ভয় করতেছে, কষ্ট করে এসে আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও প্লিজ। ওপাশের মানুষটা শাপলার লোকেশন জানতে চাইলে শাপলা লোকেশন টা জানিয়ে দিলো তাকে। কিছুক্ষণ পর একটা মোটরসাইকেলে করে একটা লম্বা গোছের ছেলে এসে শাপলার সামনে দাঁড়ালো। আতংকিত শাপলাকে দেখে সেও কিছুটা চিন্তিত হলো। বললো
“কি হয়েছে তোমার শাপলা?
“আমার মনে হচ্ছিলো কেউ আমার পিছু নিয়েছে।
লম্বা মত ছেলেটি আশেপাশে পরখ করলো ভালো করে। শাপলার দিকে তাকিয়ে চিন্তিত গলায় বললো
“কাউকে তো দেখছি না এখানে। তুমি দেখেছো কাউকে?
“না।
“আচ্ছা, উঠে এসো।
শাপলাকে বাইকে তুলে ছেলেটি তীব্র গতিতে এগিয়ে গেলো সামনের দিকে। মুলত ছেলেটি শাপলার কলেজের সিনিয়র। কিছুদিন আগেই তাদের পরিচয় হয়, এরপর থেকেই ভালো বন্ধুত্ব তাদের মধ্যে।

রাতে পড়তে বসেও শাপলাকে চিন্তিত দেখালো। পদ্ম খেয়াল করলো সবটাই। তবে মুখে কিছু বললো না। এমনিতেই তার নিজেরই মন খারাপ, এখন অন্যের খবর নেওয়ার মতো সময় তার নেই। বেশ কিছুক্ষণ সময় পড়ার পর পদ্ম বোনের দিকে তাকালো। ততক্ষণে মায়ের ডাক পরেছে খাবার জন্য। সে ডাকে সাড়া দিলো না দুজনের একজনও। খানিক সময় নিজের দিকে পদ্মকে তাকিয়ে থাকতে দেখে শাপলা মিহি গলায় বললো
“বলবি কিছু?
খানিক ইতস্তত বোধ করছে পদ্ম। হাতের আঙ্গুল গুলো মোচড়াতে মোচড়াতে লাজুক গলায় শাপলাকে বললো
“তোর কাছে শ্রাবণ ভাইয়ের নাম্বার আছে আপা?
“কিসের নাম্বার? ভ্রু বাকিয়ে প্রশ্ন করলো শাপলা। শাপলার এমন প্রশ্নে চটে গেলো পদ্ম। এমনিতেই তার মন ভালো নেই, তার উপর এমন আজব প্রশ্ন। বাজখাঁই গলায় সে বলে উঠলো
“নাম্বার আবার কিসের হয়, ফোনের নাম্বারের কথা বলতাছি।
“ওহ!
কথাটা বলে আবারও চিন্তায় মশগুল হলো শাপলা।

পদ্ম শাপলাকে বেশ জোরে একটা ধাক্কা দিলো এবার। রাগীস্বরে বললো
“তোরে কি আমি চিন্তা করতে কইছি? নাম্বার আছে কিনা জিগাইছি। বলিস না কেন?
শাপলা অন্যমনস্ক হয়ে তাকালো পদ্ম’র দিকে। ওর বলা কথা তার মাথার উপর দিয়ে যেনো গেছে। সে আবারও পদ্মকে প্রশ্ন করলো
“কি যেনো বললি পদ্ম?

চলবে…..

[বিঃদ্রঃ যারা এখনো আমার পেইজটি ফলো দেন নি, তারা পেইজটিকে ফলো দিয়ে রাখতে পারেন। গল্প সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পেতে গ্রুপে এড হয়ে থাকতে পারেন। গ্রুপ লিংক : “তন্বী’র উপন্যাসমহল”- Tanni Islam✍️ ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here