#ডেন্জারাস_ভিলেন_হাজবেন্ড
#লেখিকা_তামান্না
#পর্ব_১৩
ফায়যান নিজের শার্ট এর হাতা হোল্ড করে ডেভিল লুক করে জারার বাসায় ঢুকে।
—“স্যার আপনার কথা মতো লেডিস স্কাউট থেকে গার্লড গাইড দের নিয়ে এসেছি। যাদের প্রশিক্ষণ শেষে তারা স্কাউটের উন্নতম মহিলা নামে উপাধি পেয়েছেন।
রাহুল গার্লস গাইড স্কাউটদের সবাইকে ফায়যানের সাথে পরিচয় করিয়ে দে।
ফায়যান সবার সাথে হাত মিলিয়ে কুশল বিনিময় করে।
রাহুল জারার বাসায় পুরো ঘর চেকিং দে। ফায়যান তাকে গাড়ির মধ্যেই কল করে জারার সাথে হওয়া ঘটনাটা জানায়। তাই পুরো ঘরটা যেনো চেকিং করে।
সে জারার বাসা খুব সুষ্ঠুভাবে চেক করে বাসার কোণা কোণা নজর দে।
পরে সিসি টিভি ফুটেজ পায়। বাসার এক কোণায় দেওয়ালে ঠাঙানো অবস্থায়।
ফায়যান কুশল বিনিময় শেষে রকিং স্টিক চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে বসে ফোনে গেইমস খেলতে থাকে। তার অপজিট সাইডে মিসেস রাহেলা আর তার মেয়ে মেহরান দাঁড়িয়ে আছে। তারা ভয়ে কিছু ও বলছে না।
ফায়যান গেইমস খেলার মধ্যেই কথা বলে।
—“আচ্ছা জারা আসলে কে আমাকে একটু বলবে? শান্ত কণ্ঠে গেইমের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে।
—“আ….আম..রা জানি না ওর ব্যাপারে কিছু।
—“তাহলে জারা আপনাদের আপন কেন ভাবে?
—“সে আমাদের নয় শুধু মেহরানের আব্বুকে পছন্দ করে। সারাক্ষণ দেখলে চাচু এটা দাও,ওইটা দাও। শুধু আবদার আবদার করতে থাকতো। আর আমার মেয়ে সে তার বাবাকে খুব ভয় করতো কারণ তার বাবা শুধু ঐ মেয়েটার জন্যে আমার মেয়েকে মারতো। হলে না হলে ঐ মেয়ে কাঁদলেই আমার মেয়ের দোষ হয়ে যেতো তখন এমনকি আমি ঐ মেয়েটার উপর হাত তুললে আমাকেও বকতে দ্বিধাবোধ করতো না মেহরানের আব্বু……..বাকি আর কিছু বলল না চুপ হয়ে যান। তাই আমি এই মেয়েকে একটুও সহ্য করতে পারতাম না। শুধু ঘরের চাকরানী বানিয়ে রেখেছিলাম।
শেষের কথাগুলো তিনি এমনভাবে বললেন যা শুনে ফায়যান মিসেস রাহেলার দিকে তাকাল।
ফায়যান উনার মুখখানি দেখে স্পষ্ট বুঝতে পারল যে জারার প্রতি উনার মনে ক্ষোপ ছাড়া আর কিছুই নেই!
ফায়যান আবারো খেলায় মনোযোগ দিল। সন্ধ্যা হয়ে গেল। এখনো ফায়যান আর বাকি সবাই জারার বাসায় বসা। কেউ কিছু বুঝছে না যে কি হতে চলেছে বা কি হবে?
সন্ধ্যা ৭টায় মিস্টার নায়েমান ব্যাগ গলায় জড়িয়ে রাখা অবস্থায় বাসার মধ্যে আছে। সিএনজি থেকে বের হয়ে ভাড়া দিয়ে গেইট খুলতেই দেখে বাসার লাইট জ্বালানো,গেইটের বাহিরে দুটি কালো গাড়ি। তিনি তড়িঘড়ি ভেতরে গিয়ে দেখেন। যে যার মতো স্বাভাবিক হয়ে আছে।
নায়েমান ফায়যানকে দেখে তেমন অবাক হোন নি যত অবাক গার্লস গাইড স্কাউটদের দেখে হলেন।
নায়েমানকে এসে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ফায়যান উঠে দাঁড়ায়। সে এসে আঙ্কেলকে সালাম জানিয়ে ভেতরে এনে বসান।
নায়েমানকে নিজ হাতে পানি গ্লাসে ঢেলে খেতে দে ফায়যান। তিনি অবাক হয়ে তাকে দেখছে। সে নায়েমানের হাত ধরে বলে।
—“আপনাকে কিছু কথা বলার ছিল!
—“হ্যা বাবা নিশ্চিত বলো।
—“প্রথমত আমি আপনার মেয়ে জারাকে পছন্দ করি তাকে বিয়ে করতে চাই।
নায়েমান শুনে কিছুটা অবাক হলেন কিন্তু তিনি ভালোই জানতেন ফায়যান কোনো না কোনো একদিন এই কথা বলবেই। তিনি স্বাভাবিকভাবে মুচকি হেসে বলেন।
—“অবশ্যই কেনো নয়। আমি তো দু পায়ে রাজি বিয়ে পড়ানোর জন্যে।
রাহুল শুনে আঙ্কেলকে হাত দিয়ে টোঁকা মেরে বলে।
—“আঙ্কেল পড়া না করাবার জন্যে হবে।
—“ওহ হ্যাঁ ধন্যবাদ বাবা ভুলটা ধরিয়ে দেওয়ার জন্যে।
—“আরে ইটস ওকে আঙ্কেল এটা তো আমার দায়িত্ব ছিল।
ফায়যান হালকা কেশে দুইজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলে।
—“দ্বিতীয়ত আপনাকে কিছু কুকর্মের দৃশ্য দেখাব। দুহাত পকেটের মধ্যে গুঁজে টিভির মধ্যে তাকিয়ে বলে।
—“কুকর্ম মানে? ভ্রু কুঁচকে ফায়যানের দিকে তাকিয়ে বলে।
ফায়যান ইশারা করে রাহুলকে ভিডিও অন করতে বলে।
রাহুল খুঁজে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজটা টিভির সাথে কানেক্ট করে অন করল।
অন করার সাথে সাথে সো হতে লাগল আগের সব রেকর্ডিং। ফায়যান টিভির কাছে এসে আজকে জারার সাথে ঘটে যাওয়া সময়গুলোর রেকর্ডিং প্লে করে। নায়েমান সব দেখে শুনে উনার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল। রাগে ঘৃণার নজরে তিনি চোখ গরম করে মিসেস রাহেলা আর মেহরানের দিকে তাকান।
তিনি মিসেস রাহেলার কাছে এসে জোরে উনার গালে চড় লাগায়।
—“তুমি এক মেয়ে হয়ে আরেক মেয়েকে এভাবে নিযার্তন করলে! ছিঃ ছিঃ আরে তুমি কি শুধু মেয়ে? একজন মাও এক মা হয়ে এক সন্তান কে মারতেও তোমার গায়ে লাগে নি। সত্যি ভাবতাম তোমার ক্রোধ,হিংসা অহংকার একদিন শেষ হয়ে যাবে আর ঐদিন তুমি জারাকে আপন করে ফেলবে। কিন্তু না….না আমি ভুলল….ছিলাম….হঠাৎ ফায়যান খেয়াল করল নায়েমান বুকে হাত দিয়ে কাঁপছেন।
সে এসেই নায়েমানকে ধরে বসিয়ে পানি দেন। কিন্তু উনি পানি খেতে গিয়ে উনার শরীর অবশ হয়ে যায়। ফায়যান রাহুলকে তাড়াতাড়ি এম্বুলেন্স আনার ব্যবস্থা করতে বলে।
নায়েমান বুকে হাত রেখে তড়ফড় করা শুরু করে । তিনি ফায়যান এর দিকে তাকিয়ে তার হাত শক্ত করে ধরে।
সে ফায়যানকে তার কাছে টেনে কানের মধ্যে ফিসফিসিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করেন কিন্তু উনার ঠোঁট নড়ছে আওয়াজ বের হচ্ছে না।
—“আঙ্কেল আপনার কিছু হবে না। আপনাকে কিছু হতে দেবো না চিন্তা করিয়েন না। সে আঙ্কেলের হাত নিজের হাতের সাথে মুঠোবদ্ধ করে গরম করার চেষ্টা করে।
নায়েমান ফায়যানের কানের কাছে এসে।
—“জা……জা…..জার…রা..জারার অ…ত.তী….তখনিই নায়েমান বুকের হাত রেখে নিতেজ হয়ে পড়েন। এম্বুলেন্স আসতেই মেডিক্যাল এ নেওয়া হয়। আর ডক্টরকে খুব ভালোভাবে ট্রিট করার জন্যে বলে ।
—“যদি আমার চাচার কিছু হয় তাহলে একটারও চাকরী থাকবে না। যাও কাজে লেগে পড়ো।
রাহুলকে নায়েমান চাচার কাছে থাকতে বলে সে জারার বাসায় আসে। মেহরান আর মিসেস রাহেলাকে গার্লস গাইড স্কাউট দল অপরাধীদের কাপড় পরিয়ে বসিয়ে রাখল। জেলে যেমন অপরাধীদের জন্যে সাদা-কালো মিক্সড রঙের কাপড় পরতে দে ঠিক গার্লস গাইড দলেও তেমন এক নির্দিষ্ট কাপড় অপরাধীদের পরতে দে।
ফায়যান এসে টেবিলের উপর পায়ের উপর পা দিয়ে বসে। সে লেডিস স্কাউট এর দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে।
—“অন্যায়কারী কে আপনারা কিভাবে শাস্তি দেন?
—“যে অন্যায় করে তাদেরকে আমরা লাঠি বেত এসব দিয়ে মেরে সোজা করি। লেডিস স্কাউটের মধ্যে থেকে একজন যে অভিনেতা সে বলল। ফায়যান শুনে গালে হাত দিয়ে ভাবান্তর হওয়ার ভান করে।
—“ওওও তার মানে শাস্তিগুলো কম ভয়ংকর তেমন একটা বেশি ভয়ংকর না।
লেডিস স্কাউট শুনে তারা নিজেদের মধ্যে তাকাতাকি করতে করতে বলে।
—“স্যার লাঠি বেতের মাইরের চেয়ে আর কি ভয়ংকর হতে পারে?
—“হতে পারে এর চেয়েও ভয়ংকর হতে পারে। একটু জোর খাটান মাথায় বুঝতে পারবেন। আর যদি না বুঝেন তাহলে আমিই আজ বলব আরো কি কি ভয়ংকর শাস্তি আছে সো লেডিস স্কাউট প্রশিক্ষণ এর জন্যে রেডি?
ফায়যান আড়চোখে বাঁকা হেসে মেহরান আর তার আম্মুর দিকে তাকায়।
—“Yes, Sir. We are ready. লেডিস স্কাউট স্যালুট করল ফায়যানকে।
—“Hmm. Ok let’s start the game.
ফায়যান তার এক গার্ডকে কল করে বলে তার কাজের বক্সটা আনতে। গার্ড ঠিক টাইমে এসে তাকে বক্সটা দিল। বক্সটা টেবিলে রেখে সে হালকা খুলে দেখল। দেখে শয়তানি হাসি দিয়ে মেহরান আর মিসেস রাহেলার দিকে মুখ ঘুরে তাকিয়ে বলে।
—“এখানে কোনো আয়নার বড় ফ্রেমের গ্লাস হবে? মিসেস রাহেলা ভাবান্তুর হয়ে পড়ে। মেহরান তো খুশিতে জট করে বলে।
—“হ্যা আমার একটা পুরোনো মাছের আয়নার ট্র্যাংক আছে।
—“ওহ গুড কই সেটা আমাদেরকে সেখানে নিয়ে যেতে পারবেন? গম্ভীর কণ্ঠে রুড গলায় ফায়যান বলে।
—“জ্বী অবশ্যই আছেন।
আমতা আমতা করে বলে মেহরান।
মেহরান তার প্রিয় খেলার রুমে সবাইকে আনে। মিসেস রাহেলাও মেহরানের সাথে আসে।
—“সো গালর্স ভয়ংকর কাকে বলে এখন বুঝবেন? ফায়যান মুচকি হেসে সবাইকে বলে।
মেহরান চোখজোড়া গোল করে ফায়যানের দিকে তাকায়।
ফায়যান মাছের ট্র্যাংকের মধ্যে কিছু পানি ঢালে। যখন দুইমিটারের মতো পানি ট্র্যাংকের মধ্যে জমে গেল তখন সে বক্স থেকে একটা জোঁকের রক্তাক্ত বক্স বের করে। বক্সটা দেখে লেডিস স্কাউট ভয় পেল না কারণ বিভিন্ন বিপদ ভয় কাটানোর চেষ্টা করতে করতে তাদের মধ্যে থেকে ভয়টা সরে গেছে। কিন্তু মেহরান বক্সটা দেখে চিৎকার করে সরে যেতে চাইলে ফায়যান চোখ গরম করে কড়া গলায় লেডিস স্কাউট এর মধ্যে দুইজনকে বলে মেহরানকে ধরতে।
—“নো নো স্যার প্লিজ স্যার আমাকে মেরেন না প্লিজ। মেহরান আকুতি বিনুতি করতে থাকে ফায়যানের কাছে। কিন্তু ফায়যান মেহরানের কথায় বিন্দুমাএ কর্ণপাত করছে না। সেও সমানভাবে হিংস্র নজরে মেহরানের দিকে তাকিয়ে ধমকের সুরে বলে।
—“আমার চোখে দেখ দেখখখখ আমার চোখে……গর্জন দিয়ে উঠে মেহরানের উপর। মেহরান ভয়ে চুপছে যাচ্ছে সে হাতজোর করে ক্ষমা চাইতে শুরু করে কিন্তু ফায়যান শয়তানি হেসে বলে।
—“অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে দুইজনই সমান অপরাধী। বলেই ফায়যান মেহরানের কানের কাছে এসে ফিসফিস করে। আমার জারাকে যেমন করেছিস আহত তেমনি তুইও তার সমান আহতের আহত হবি। বলে সে টেডি স্মাইল দিয়ে মেহরানের দুইহাত জোরে চেপে ধরে পানির মধ্যে ডুবিয়ে সেখানে জোঁকের রক্তাক্ত বক্সটা পানির মধ্যে ঢেলে দে সব জোঁক মেহরানের হাতের সাথে গড়িয়ে পানির মধ্যে পড়ে। মেহরানের চিৎকার চেঁচানি দেখে ফায়যান রেগে মেহরানের মুখে কাপড় পেঁচিয়ে দিয়ে হাত দুটো ট্র্যাংকের মধ্যে রেখে আয়নার গ্লাস দিয়ে চেপে ধরে।
মেহরান চিৎকার করে কান্না করে করে তার আম্মুকে বলে।
—“আম্মুওওও বাঁচাও প্লিজজজ দেখো এগুলো আমাকে খেয়ে ফেলবে আম্মুওও। মিসেস রাহেলা মেয়ের চিৎকার কাতর দশা দেখে তেড়ে আসতে চাচ্ছেন কিন্তু পারছেন না কারণ ফায়যান লেডিস স্কাউট দের মিসেস রাহেলাকে ধরে রাখতে বলে।
—“ফায়যানা বাবা আমার মেয়েকে ছেড়ে দেন প্লিজ। আমরা আর…..ভু….ভুল করব না একবারের মতো মাফ করে দেন। দেখেন মেহরানের কতো কষ্ট হচ্ছে……..বাকি কিছু বলবে তার আগেই ফায়যান বলে।
—“তো তো আমি কি করব আপনার মেয়ের এই দশার কারণটা আপনি নিজেই। আপনার করা কাজে আপনার মেয়েওও……মেহরানের হাতে আয়নার গ্লাস আরো জোরে চেপে ধরে। মেহরান নড়াচড়া করছে কিন্তু কেউ কিছু বলছে না শুধু এক মা তার সন্তানের জন্যে ভিক্ষা চাচ্ছে। ফায়যান মেহরানকে সেই জোঁকের সাথে আটঁকে রেখে মিসেস রাহেলার কাছে আসেন।
—“আপনি আপনার মেয়ের জন্যে হাতজোর করছেন তাই না? এই যে ওই (আঙুল দিয়ে দেখিয়ে মেহরানকে ইঙ্গিত করছে) মেয়ে আপনার সন্তান বলে আপনি কাতরাচ্ছেন। আর জারা তার কি? সেও তো কারো না কারো সন্তান তার ও তো হয়তো মা ছিল বা আছে। এখন পাশে নেই তাও সে আপনাকে মায়ের চোখে দেখে সেটা কি আপনি জানেন? জারা কখনো চাচি বা মেহরানকে চাচাতো বোনের নজরে দেখে নি। সে দেখে নিজের মা বোনের মতো। এতো নিষ্ঠুর কিভাবে হতে পারলেন নিজের সন্তানের প্রতি। সেও তো এক কথায় আপনারই মেয়ে। হোক সেটা অন্যের সন্তান বা অন্যের সম্পর্কের কেউ। কিন্তু জারা তো সেরকম মানে নি। সে তো আপনাদের মতো নিষ্ঠুর পাপীদের ভালোবেসেছে। জানেন আপনার মেয়ে এরকম করে কাতরাচ্ছে যেরকম ভাবে আমার হবু বউ মানে জারা কাতরাছিল। এবার আপনার সাথেও তেমন এক জ্বলক খেলা হবে।
মিসেস রাহেলা মুখ বন্ধ করে আসে কিছু বলছেন না শুধু ফায়যানের কথা শুনছেন। অবশ্যই বলবেও বা কি? দোষ উনারই যদি উনি নিজের মেয়ের চোখে দেখে জারাকে মেনে নিতো। তাহলে আজ দিনটা অন্যরকম হতো। মা যেমন করে,মায়ের অংশ তার সন্তানের উপরও প্রভাব ফেলে। যা মিসেস রাহেলা মেহরানের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলছেন। কথাগুলো ভেবে উনি দূর্বল হয়ে যান। নিজেকে কুঁচতে থাকে।
কিন্তু ফায়যান এসব তোয়াক্কা না করে লেডিস স্কাউটকে আগুনের বয়াল বানাতে বলে।
—“ওকে স্যার। তিন-চারজন লেডিস স্কাউট মিলে কিচেনে যায়।
তারা গিয়ে আগুনের কলস বানাতে গাছের নিচ থেকে কিছু মূলছাড়া মাটি কুড়ে এনে চুলার একপাশে রাখল। এক মিটার পানি একটা বয়াল আকৃতির করিডিয়ামে (চক্রের মতো দেখতে কাঁচের স্টিল) ঢেলে। মাটিগুলো পানির মধ্যে দিয়ে মেখে নে। যখন শক্ত হয়ে যায় মাটিগুলো তখন সেখানে আগুনের জ্বলক দিয়ে গরম শক্ত মাটির পানি আগুনের বয়াল বানিয়ে নে।
সেই গরম বয়াল তারা ফায়যানের সামনে আনে। ফায়যান তখন জানালার ধারে দাঁড়িয়ে ফোনের মধ্যে জারার ছবি বের করে ছবিগুলো দেখছিল।
—“স্যার আগুনের বয়াল রেডি।
ফায়যান ভ্রু বাঁকিয়ে তাদের হাতের দিকে তাকায়। বয়াল দেখে মিসেস রাহেলার পা অবশ হয়ে যাওয়ার মতো কাঁপছে ভয়ে ঘেমে একাকার কিন্তু এখন তো কিছুই করার নেই।
—“বয়ালটা শ্রদ্ধীয় চাচিজানের পায়ের নিচে রাখুন। লেডিস স্কাউটদের দিকে মুচকি এসে ফায়যান বলে।
বয়ালটা মিসেস রাহেলার পায়ের নিচে রেখে তারা দূরে সরে আছে।
ফায়যান টেবিলের উপর থেকে একটা আপেল নিল তা কেটে চার টুকরো করে দুইটা নিজে খেল বাকি দুইটা আলাদা রাখল।
সে আপেল চাবাতে চাবাতে মিসেস রাহেলার দিকে তাকিয়ে বলে।
—“হুম শ্রদ্ধীয় চাচিজান সম্মান দিয়ে আগ্রহ পোষণ করছেন আপনার দর্শক মানে আমরা। আপনার পাজোড়া বয়ালে রাখেন কষ্ট করিয়া।
ফায়যানের কথা শুনে মিসেস রাহেলা মনে খুব অনুতপ্ত হচ্ছে জারার সাথে করা কাজে। কারণ উনার সাথেও এখন সমানভাবে কাজ করা হচ্ছে। তিনি ফায়যানের দিকে ছলছল নয়নভরা চোখে তাকিয়ে বলে।
—“বাবা এবারের মতো মাফ করে দাও আমাদেরকে। (কান্নাজড়িত কণ্ঠে )
—“ফায়যানের নীতিতে ভুল করলে শাস্তি পেতেই হবে। শাস্তি ছাড়া কাউকে রেহাই দেই না। গট ইট? এখন শুরু করেন নইতো শুরু করাতে আমিও জানি।
মিসেস রাহেলা আর উপায় না পেয়ে গরম বয়ালে নিজের পা রাখতেই উনার পায়ের চামড়া জ্বলে জ্বালাতন হতে শুরু করে। উনিও চিৎকার করে আকুতি করতে লাগেন কিন্তু ফায়যান তো জারার সাথে করা অন্যায়ের শাস্তি যতোক্ষণ দিবে না ততোক্ষণ শান্তিতে বসবে না।
—“আহহহ হু আহহহহহ……আল্লাহ গো আমার পা শেষ রে বাবা খুব যন্ত্রণা হচ্ছে। মনে হচ্ছে এখনই…………….”হ্যাঁ হ্যাঁ বলেন বলেন চাচিজান কি মনে হচ্ছে ফায়যান মিসেস রাহেলার অর্ধেক কথা শুনেই বলে।
—“মনে হচ্ছে যেনো এখন ই আমার পা ফেটে রক্ত মাংস বের হয়ে যাবে। আহহহহহহহহ বাবা মাফ করো….আহহ…..আহহহ হাটু চেপে ধরে নিজের শরীরে শক্তি আনার চেষ্ঠা করছেন তিনি। কিন্তু গরম ভাব আগুনের এত যে উনার শরীরের সব শক্তি চুষে নিচ্ছে।
—“এবার জারার মতো ফিলিং আপনার মধ্যেও হবে। তাকে যেমন লোহার কুলি লাগিয়ে পায়ের মাংস বের করতে চেয়েছিলেন ঠিক তেমনি আপনার পায়ের বারোটা বাজবে হাহাহাহাহা।
লেডিস স্কাউট চুপচাপ কান্ড দেখছে। কারণ ফায়যান এর জাল সম্পর্কে রাহুল আগে থেকে স্কাউটদের সর্তক করে দে যেনো ফায়যানের কাজ তারা ব্যাঘাত না ঘটায়।
ফায়যান জারার ছবির দিকে তাকিয়ে মা মেয়ের কাতরতার মজা নিচ্ছে আর বির বির করে বলে।
—“ভালো যেমন বাসব তেমন ভালোবাসার কাতিরে নেমে পড়বো ক্ষতির কান্ডে। তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি জারা। তোমার পাগলামির সেরা কান্ডে পাগল হয়ে পড়েছে এই ফায়যান হাসান।
“I love you Jaraaaaaa💖”
জোরে চিৎকার করে বলে। পুরো বাসার কোণা কোণায় যেনো ফায়যানের ভালোবাসার প্রস্তাব গুনগুন করা শুরু করে।
মেহরান দাঁড়িয়ে থেকে তার হাতজোড়ার রক্ত চুষে নিচ্ছে জোঁকগুলো আর মিসেস রাহেলার পায়ের বেহলা দশায় পরিণত হচ্ছে।
ফায়যান দেখে মুচকি হেসে বলে।
—“This is only done for “My Crazy Loveness Jara”…
…………চলবে……..