….#তুমি আসবে বলে
#অপেক্ষার প্রহর
#Sondha Halder
#পর্ব-১৭
দুপুরের শেষ ভাগে আর বিকেলের শুরুতে। আজ ঠাট্টা পরা রোদ উঠেছে। অতিরিক্ত গরম অন্তু সহ্য করতে পারে না সে, এমনিতে ফর্সা ত্বক তার ওপর গরমে লাল হয়ে গেছে। সবে মাত্র আর্ট ক্লাসে ভর্তি হয়ে বের হলো অন্তু আর আদি। সে দিন চাচ্চু বলার পর ১ সপ্তাহে হয়ে গেছে দাদাভাই ব্যস্ত থাকায় সে ভর্তি করতে পারে নিই। আজ ফ্রি ছিলো বলে কাজ টা হয়ে গেছে। আদি অন্তুকে বলে গাড়ি নিয়ে আসতে গেলো। অন্তু এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখতে দেখতে হঠাৎ একজোরা কাপলকে দেখে তার চোখ ওখানেই স্থির হয়ে যায়। একবার মনে হলো ভুল দেখেছে এটা ভেবেই চোখ ঘুড়িয়ে নেয় কিন্তু পরক্ষনেই আবার সেদিকে দৃষ্টি প্রয়োগ করে। অন্তু চোখ কুচকে তীক্ষ নজরে সবটা দেখে নিয়, না সে ভুল কিছু দেখে নিই। আদির কথায় সে তার চোখ সরিয়ে আদির দিকে তাকায় আদি গাড়িতে উঠতে বলছে। অন্তু আবার সেই কাপলের দিকে তাকালে দেখে সেখানে কেও নেয়। অন্তু চিন্তায় পরে যায় কি করবে সে, অনেক ভেবে একটা ডিসিশনে এসেছে। সে গাড়িতে উঠলে আদি গাড়ি স্টার্ট দেয় বাড়িতে যাবে বলে….
______________________________
অফিসে…
রোদ আর আদিবা রোদের কেবিনে বসে কাজ করছিলো। রোদ তীক্ষ নজরে আদিরার দিকে তাকিয়ে আছে, তার মনে হচ্ছে আদিবা ঠিক নেয়। (সেদিন আদির সাথে কথা হবার পর থেকে আদি অনেক ভাবে আদিবার সাথে কথা বলতে চায় কিন্তু আদিবা আদিকে ইগনর করে চলে যায়।) রোদ গলা ঝেড়ে বলতে লাগলো…
রোদঃ আদিবা তুমি ঠিক আছো
আদিবা রোদের কথা শুনে কাজ রেখে দিয়ে রোদের দিকে তাকায়। রোদকে এভাবে তাকাতে দেখে ঘাবড়ে যায়, সে মনে মনে বলে..রোদ স্যার কি কোন সন্দেহ করেছে আমার আর আদিকে নিয়ে। আদিবা জোরপূর্বক হেসে বলো…
আদিবাঃ জ্বি স্যার আমি ঠিক আছি। আপনার কেন মনে হলো এই কথা স্যার
রোদঃ তোমাকে কিছু দিন ধরে দেখছি কেমন মন মরা হয়ে থাকো, কেমন উদাসীন হয়ে থাকো। কাজ করছো কিন্তু ভাবছো অন্য কিছু। তার থেকে ও বড় কথা তোমার চোখ মুখ দেখে যে কেও বলতে পারবে তুমি কিছু নিয়ে চিন্তাত।
আদিবাঃ এমন কিছু না স্যার। আসলে বাড়িতে কিছু বিষয় নিয়ে টেনশনে আছি
রোদঃ ওকে। তুমি এই ফাইলটা চেক করে কাল আদি মির্জা অফিসে গিয়ে দিয়ে এসো…
বলে একটা ফাইল তার দিকে এগিয়ে দেয়। আদিবা ফাইলটা নিয়ে আমতাআমতা করে বলতে লাগলো…
আদিবাঃ আমি মানে স্যার অন্য কাওকে দিয়ে যদি পাঠয়ে দিতেন
রোদ আদিবার কথা শুনে সুক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলো…কেন তোমার কোন প্রবলেম আছে
আদিবাঃ না স্যার আমি কাল সকালে যেয়ে দিয়ে আসবো। আমার কাজ শেষ আমি তাহলে আসি
বলে রোদকে কিছু না বলতে দিয়ে চলে গেলো। রোদ আদিবার যাওয়া দিকে তাকিয়ে ভবতে লাগলো..এই মেয়ের কি হলো আগে তো এমন কখনো করেনি তাহলে এখন কি হলো৷ মনে হয় বাড়িতে আসলেই প্রবলেম আছে তাই। বলে সব বাদ দিয়ে কাজ করতে লাগলো।
__________________________
সন্ধ্যার আকাশে আবছা অন্ধকার নেমে আসছে। আদি আর অন্তু গাড়ি থেকে নেমে বাড়িতে আসলে দেখতে পারে বাড়ির সবাই গম্ভীর হয়ে আছে। আর আজাদ মির্জা আয়ানকে উচ্চ গলায় কি সব বলছে। তারা ভেতরে এসে দাড়াতে নিহিত মির্জা বললো…
নিহিতাঃ ভাইজান এতে আয়ানের কি দোষ আমি সেটাই বুঝতে পারছি না। পার্টি অফিসে কি না কি ঝামেলা তার রেশ ধরে আমার ছেলেকে কেন কথা শুনতে হবে।
নিহিতা কথা শুনে আজাদ মির্জা গর্জে বলো…নিহিতা তুমি যা জানো না সেটা নিয়ে কথা বলবে না। আর আয়ানে দোষ আছে কি না সেটা আমি আর আয়ান বুঝে নেব তুমি এতে কথা বলবে না।
আদি তার বাবার রাগ দেখে সে এগিয়ে এসে বলো…চাচি আপনি একটু থামুন আমি কথা বলছি। আব্বু এমন কি হলো যে তুমি এতো রেগে আছো
আজাদ মির্জাঃ রেগে থাকবো না কেন? পার্টি অফিসে থেকে কিছু দিন ধরে দরকারি সব ফাইল কাগজপত্র চুরি হচ্ছে। আয়ানের তাতে কোন হেলেদুল নেয়, কেন? এই ফাইলগুলো অন্যর হাতে গেলে আমাদের পার্টি কতো ক্ষতি হবে জানো। সামনে ইলেকশন।
আদিঃ এমন কি ছিলো ওই ফাইল ও কাগজপত্র যার জন্য তুমি এতো হাইপার হচ্ছে।
আদির কথা শুনে আজাদ মির্জা ঘাবড়ে যায়। কপাল বয়ে ঘাম ঝরতে থাকে, মনে হচ্ছে কোন গোপন রহস্য গর্ত থাকে বরিয়ে আসার ভয় তাকে তারা করছে। আয়ান মাথা উঁচু করে আজাদ মির্জা ভয়ার্ত চেহারা দেখে বাঁকা হাসলো। আয়ান আবার মাথা নিচু করে থাকলো। আজাদ মির্জা আমতা আমতা করে বলো…
আজাদঃ আছে কিছু ইমপোর্টেন্স পেপার তোমাকে না জানলেও হবে।
আজাদ মির্জা কথা শুনে আদি তাকে সন্দেহ নজরে তাকিয়ে থাকলো। বাড়ির সবাই নিরবতা পালন করতে লাগলো কথাটা শুনে। আজাদ মির্জা হেটে আয়ানে কাছে এসে নিচু গলায় বলতে লাগলো…
আজাদ মির্জাঃ আমি সব বুঝি আয়ান তুমি কি করতে চাচ্ছো। কিন্তু তুমি হয়তো ভুলে যাচ্ছো যার সাথে তুমি এই ছোট্ট খাটো খেলে খেলছো সে এই খেলার হেডমাস্টার।
আজাদ মির্জা কথা শুনে আয়ান তার দিকে ভ্রু কুচকে তাকায়। তা দেখে আজাদ মির্জা হালকা হেসে বলো….
আজাদ মির্জাঃ তুমি কি ভাবছো তুমি অতীত খুড়বে আর আমি কিছু বুঝবো না। তাইলে তুমি ভুল ভাবছো, শুধু তোমার বিরুদ্ধে একটা প্রমাণ আমার হাতে আসে যে তুমি এসব করছো তাইলে তোমার হাল অতীতের থেকেও খারাপ হবে। আর একটা কথা অতীত ভুলে ভবিষ্যতকে প্রাধান্য দাও তা না হলে তোমার বর্তমান নষ্ট করতে আমার বেশি সময় লাগবে না বলে দিলাম
আজাদ মির্জা কথা শুনে আয়ান ভয় পেয়ে যায়। সে জানে আজাদ মির্জা কে ঘাটালে অনেক বড় ক্ষতি হবে। আজাদ আর আয়ানের কথা কেও শুনে পেলো না। আয়ান কিছু বলতে যাবে তার আগে ওপর থেকে কিছু পরার আওয়াজে সবাই ওপরে তাকায়। কিসের আওয়াজ হলো কেও বুঝতে পারে না কিন্তু আওয়াজটা আয়ানের রুম থেকে আসলো। আয়ান আয়রা কথা ভেবে ভয় পেয়ে যায়, আয়রা কিছু হলো না তো। আয়ান আজাদ মির্জা দিলে তাকালে দেখে তার ঠোঁটের সয়তানি হাসি যা কেও না বুঝলে আয়ান ঠিক বুঝেছে কি হয়েছে। আয়ান দৌড়ে তার রুমে দিকে যায় সাথে বাড়ির সবাই যায়…
আয়ান রুমে এসে দেখে কাচের গ্লাস নিচে পরে আছে তার সাথে রসমালাইের বাটি। আর আয়রা তার মাথা চেপে ধরে বেডে বসে ছটফট করছে। তার চোখ দিয়ে আঝরে পানি পরছে, আয়ান দৌরে আয়ার কাছে যায়। ব্যস্ত হয়ে আয়রাকে বলে…
আয়ানঃ আয়রা এমন করছো কেন কি হয়েছে তোমার। এই মেয়ে কথা বলছো না কেন??
আয়ানের কথা শুনে আয়রা তার দিকে অশ্রু ভরা নয়নে তাকিয়ে ব্যাথাকৃত স্বরে বলো… আয়ান আমার মাথা আমার মাথা ব্যাথা করছে, (বলে কান্না করতে লাগলো) আয়ান আগের মতো পেন হচ্ছে। আয়ান কিছু করো আমি এটা নিতে পারছি না প্লিজ, আমি মরে যাব আয়ান কিছু করো
বলে জোরে শব্দকের কান্না করতে লাগলো৷ আয়ান আয়রা কথা শুনে থ হয়ে বসে আছে, চোখ থেকে জল পরছে তার, শুধু আয়রা কথা মাথায় বাজছে, আয়ান আগের মতো ব্যাথা করছে মাথায়। আয়ান কিছু একটা করো। বাড়ির সবাই আয়ানের রুমে উপস্থিত হলে আয়রা এই আবস্থাতে দেখে ভয় পেয়ে যায়। দিদুন এসে আয়ানকে ধাক্কা দিয়ে বলে…
দিদুনঃ আয়ান দাদুভাই আয়রা কি হয়েছে এমন করছে কেন।
আয়ানের হুশ হয় সে আয়রাকে দেখছে মেয়েটা ব্যাথায় ছটফট করছে, সে বুঝতে পারছে না কেন আয়রা মাথা আবার ব্যাথা করবে৷ সব তো ঠিক হয়েগেছিল তাই এমন কি হলো আবার ব্যাথা করছে। আয়ান দিদুনকে বসিয়ে ফোন বের করে কাওকে ফোন করে বলো…
আয়ানঃ ডক্টর আয়রা আবার মাথা ব্যাথা করছে। সে এটা সহ্য করতে পারছে না। কি করবো বলুন এটা তো ঠিক হয়ে গেছিলো তাইলে আবার কেন
ডক্টর কি বলো সেটা শুনে আয়ান ফোন রেখে কিছু খুজতে লাগলো। আয়ানকে এতোটা অস্থির অসহায় দেখে সবাই কষ্ট পায়। আদি আয়ানে বলে…
আদিঃ আয়ান আয়রা কি হয়েছে আর তুই কি খুজছি এমন।
আয়ান আদির কোন কথার উত্তর না দিয়ে পাগলের মতো খুজতে লাগলো। আকাঙ্খা জিনিস পেয়ে আয়ানের শান্তি হলো। সে পানি নিয়ে আয়রা কাছে এসে বসে বলে…
আয়ানঃ আয়রা এটা খেয়ে নাও ব্যাথা কমে যাবে। আমার ওপর ভরসা করো ঠিক হয়ে যাবে।
বলে জোর করে আয়রাকে ঔষধ খাইয়ে দিলো। আয়ান আয়রাকে তার বুকে সাথে চেপে রাখে। আয়রা ব্যাথা সহ্য করতে না পেরে আয়ানের বাহু খামছে ধরে এর ফলে আয়ানের বাহুতে আঘাত পায় হালকা রক্ত বের হতে লাগলো। আয়ান দাঁতে দাঁত চেপে সবটা সহ্য করতে লাগলো। এদিকে কেও বুঝতে পারছে না হঠাৎ করে আয়রার কি হলো যে এমন ছটফট করছে। অন্তু শুধু দেখছে আয়ানের বাহুকে যেখানে আয়রার নখের কারনে আঘাত লাগে আর সেখান থেকে রক্তে বের হচ্ছে। আয়ান এত ধৈর্য ক্ষমতা পেলো কোথা থেকে যে ছেলের রাগ নাকের ডগার থাকে তার গায়ে আঁচড় লাগলে খেপে ওঠে সে কেমন শান্ত হয়ে আছে আঘাত পেয়ে। ভালোবাসা সবাইকে বদলে দেয় ভাবা যায়।
৫মিনিট পর আয়রা শান্ত হয়ে যায় আস্তে আস্তে আয়ানের বাহু থেকে হাত নামিয়ে নেয়। তার দেহের ভর সব আয়ানের ওপর ছেড়ে দেয়। আয়ান ছাপটে ধরে থাকে আয়রাকে, আস্তে আস্তে আয়রাকে শুয়ে দেয়। আয়ান আয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে দেখে কিছু সময়র ব্যবধানে কি হয়েছে আয়রা, মুখটা শুকিয়ে গেছে, চোখের কোণে এখন জল পরাছে, শরীর নেতিয়ে গেছে। ব্যাথা সহ্য করতে না পেরে কি হাল করেছে। আয়ান আয়রার এলোমেলো চুল ভালো করে গুছিয়ে দিয়ে কপালে চুমু এঁকে দিয়ে বিড়বিড় করে বলো…
আয়ানঃ সরি আ’ম সরি বউ। আমার জন্য তুমিও আবার কষ্ট পেলে। আমি তোমকে দেখে রাখতে পারিনি সরি।
আয়ানের মনে পরে গেলো ডক্টরের কথা। ডক্টর বলেছে এটা হতেই পারে না যে আবার মাথা ব্যাথ করবে, আয়রা এমন কিছু খেয়েছে যাতে এমন কিছু ছিলো এর কারনে মাথা ব্যাথা হয়েছে। এটা ভাবতেই আয়ানের চোয়াল শক্ত হতে লাগলো। সে চোখের পানি মুছে কাট কাট গলায় বলো…
আয়ানঃ আয়রা কে কি খেতে দিয়েছে।
এতখন সবাই আয়রাকে শান্ত হতে দেখে শান্তি পায়। কিন্তু আয়ানের কাঠ গলায় বলা কথা শুনে সবাই চমকে যায়। দিদুন বলে… কি হয়েছে আয়ান এমন করছো কেন
আয়ানঃ আমি যা বলছি সেটার উওর চাই আয়রা কি খেয়েছিলো
আয়ানের কথায় মিনু খালা ভয়ে ভয়ে বলতে লাগলো…,আয়ান বাবা আমি আয়রা মাকে বড় সাহেবের (আজাদ) আনা রসমালাই এনে দিয়েছিলাম খাওয়ার জন্য
আয়ানের আর বুঝতে বাকি নেয় এটা কি করে হলো। আজাদ মির্জা কথার মানে সে এখন বুঝতে পারছে। অতীত ভুলে ভবিষ্যতে মন দাও না হলে বর্তমান নষ্ট হয়ে যাবে। আয়ান নিজেকে শান্ত করে বলে…
আয়ানঃ দিদুন আয়রাকে রেস্ট নিতে দাও পরে এসো আবার। তোমার সবাই এখন আসতে পারো।
নিহিতাঃ আয়ান এই মেয়ের জন্য তুই সত্যি পাগল হয়ে যাবি। এই মেয়ে আসলেই পাগল না হলে এমন করে দেখ তোকে কতোটা আঘাত করছে। তাও তুই ওর নিয়ে চিন্তা করছি। আমি বলি কি ওকে আর পালিত বাবা- মার কাছে রেখে দিয়ে আয়..
আর কিছু বলতে পারলো না আয়ান গর্জে ওঠে বলে…আম্মু তোমাকে আয়রা কথা ভাবতে হবে না ওর ভাবনা আমি একা ভাবতে পারো। তোমার যদি এতো সমস্যা হয়ে আয়রা এখানে থাকতা তাইলে আমি আয়রা কে নিয়ে চলে যাবো তাও আয়রাকে আমি ছাড়ছি না। আর না ওকে কোনো নরকে রেখে আসবো। আয়রা আমাকে মারুক কাটুক যা ইচ্ছা করুক ওর অধিকার আছে আমার ওপর। তুমি যাও এখান থেকে।
বলে ঘুড়ে দাড়ায়। আয়নের কথা শুনে নিহিতা মির্জা কষ্ট পায় কিন্তু আয়রা দিকে তাকিয়ে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চলে যায়। আস্তে আস্তে সবাই চলে যায়। আজাদ মির্জা বলে…আয়ান সাবধানে থেকো আর আয়রাকেও রেখো। অতীত নিয়ে আর ঘেটো না ফল তাতে ভালো হবে না। বলে চলে যায়, আয়না কিছু বলো না সে নতুন করে ছক কাটতে লাগলো। এখন না পরে কি করা যায়। আয়রা কে দেখে আয়রা গভির নীদ্রায় বিভর। আয়ান হাতের ক্ষত গুলো পরিস্কার করে রুম বন্দি করে আয়রা কাছে এসে তাকে বুকে নিয়ে বলো…
আয়ানঃ আমি তোমাদের কিছু হতে দেবো না আই প্রমিস। কিন্তু অতীতের সত্যি তো সবাই জানতে। এখন কিছু করো না পরে আবার খেলা নতুন করে শুরু করো।
বলে আয়রাকে শক্ত করে ধরে। আয়ানের স্পর্শ পেতেয় আয়রা বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টে আয়ানকে জড়িয়ে ধরে ভালো করে তা দেখে আয়ান হেসে ফেলে….
#তুমি আসবে বলে
#অপেক্ষার প্রহর
#Sondha Halder
#বোনাস পাট
রাত-৯ঃ৩০,,,
আকাশ প্রানে তাকিয়ে আছে অন্তু, আজ হয়ে যাওয়া সকল ঘটনা তার চোখের সামনে ভাসছে। অন্তু এখন ও ভাবতে লাগলো কি এমন হয়েছে আয়রা তা দেখে আয়ান ভাইয়া এতো হাইপার হয়ে গেলো। আর আয়রা ভাবি এটা বলো কেন আগে মতো মাথা ব্যাথা করছে, আয়রা ভাবির আগে ও কি কিছু হয়েছিলো যা আয়ান ভাইয়া তাদের থেকে লুকিয়ে রেখেছে আর কেন লুকাছে সবার কাছ থেকে আয়রা ভাবির বিষয়ে। আর আব্বু পার্টি অফিসে থেকে কেন সব দরকারি ফাইল গায়েব হয়ে যাচ্ছে, আর আব্বু কেন আয়ান ভাইয়াকে এর পেছনে মনে করছে। কেন? কেন? না আর ভাবতে পারছে না অন্তু। বেলকনিতে থেকে রুমে এসে বেডে বসলো অন্তু। অরনি অন্তুর রুমে এসে বললো…
অরনিঃ দিদিয়া নিচে খেতে চলো দাদাভাই ডাকছে।
অরনির কথা শুনে অন্তু তার দিকে তাকিয়ে বলো…অরু আয়রা ভাবি এখন কেমন আছে।
অরনি মলিন মুখে বলো…দিদুন গিয়েছিলো ভাবিকে দেখতে তখন সে ঘুমিয়েছিলা। একটু আগে আয়ান ভাইয়া সুপ করে নিয়ে গেছে সে বলো ভাবি এখন ঠিক আছে।
অন্তু দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে আয়রা ভালো আছে শুনে সস্তি পেলো। পরখনে কিছু মনে পরতেই সে অরনির দিকে চোখ ছোটো ছোট করে তাকিয়ে থাকলো। অন্তুকে তার দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে অরনি বললো…
অরনিঃ দিদিয়া এভাবে তাকিয়ে আছো কেন আমার দিকে আমি আবার কি করলাম
অন্তুঃ বিকেলে কোথায় ছিলি তুই। তোর ভার্সিটি তো ১ঃ৩০টা সময় বন্ধ হয়ে যায়। আর তুই বাড়ি আসছি আমি আসার আগে। তাইলে এতো সময় কোথায় ছিলি
অন্তু কথা শুনে অরনি ভরকে যায়, ভীতু ভীতু চোখে অন্তুর দিকে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করছে, অন্তু কি তাকে সন্দেহ করছে না কি। অরনি জোরপূর্বক একটু হয়ে বলো..
অরনিঃ দিদিয়া আমি লিমার সাথে কিছু পড়া ডিসকাস করছিলাম তাই লেট হয়ে গেছে। কেন কিছু হয়েছে কি
অন্তুঃ না কিছু না এমনি।
অরনি অন্তুর কথা শুনে সস্তির নিঃশ্বাস নিলো। না কিছু বুঝতে পারেনি দিদিয়া। অরনি বললো…দিদিয়া চলো নিচে। বলে যেতে নিলে অন্তু কথায় থেমে যায়, পেছন ঘুরে অন্তুর দিকে তাকিয়ে থাকলো…অন্তু বলো…
অন্তুঃ অরু এমন কোনো কথা যদি থাকে যে কাওকে তুই বলতে পারছিস না তাইলে আমাকে বলতে পারিস। এমন কোন ভুল করিস না যে পরে তোকে পস্তাতে হয়। তুই যা আমি আসছি
অন্তুর কথা শুনে অরনি বুঝতে পরলো না কিন্তু এটা বুঝতে পারছে কিছু তো হয়েছে। অন্তর কথা মতো সে চলে গেলো। অন্তু বিকেলর সেই কাপলের কথা মনে পরলো…(বিকেলে সে অরিন আর প্রাপ্য কে দেখেছিলো। অরনি রেগেছিলো আর প্রাপ্য তাকে বুঝাতে লাগলো সে বোঝাতে না পেরে পরে কান ধরে সরি বলো। তারপর অরনির রাগ ভাঙ্গলে তাকে জড়িয়ে ধরে। অন্তু এটুকু দেখে তার পর আদি তাকে ডাকে তারপর কি হয় সেটা সবাই যানে) অন্তু নিচে খেতে গেলো।
_____________________________
রোদঃ হ্যালো আমি কিছু কাগজ তোমাকে পাঠিয়েছি আর যা যা বলছি ঠিক সেই ভাবে যেন হয়।
ওপাশ থেকেঃ——-
রোদঃ হ্যাঁ কালকের নিউজপেপারে হেডলাইন এটাই যেন হয়।
ওপাশ থেকেঃ———
রোদঃ ওকে বাই
বলে ফোন রেখে বললো… খেলে মেতে গেছে মি.মির্জা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। আপনার সব কাজ আস্তে আস্তে বন্ধ হবে যাবে সাথে পুরো মির্জা পরিবার। বলে বাঁকা হাসলো। আনভি পিছন থেকে রোদকে বলো…
আনভিঃ পাপা আমার চুল দেখ চাচ্চু কি করেছে। [কাঁদো কাঁদো গলায় বলো]
আনভির কথা শুনে রোদ তার দিকে তাকায়। রোদ আনভির চুলে আবস্থা দেখে হসে ফেলে। রোদ আনভির কাছে এসে কোলে তুলে নিয়ে বলো…
রোদঃ আম্মু তোমার চুল এমন কাকের বাসা কে করছে। [বলে এলোমেলো চুলে হাত বুলাতে লাগলো]
আনভিঃ চাচ্চু করেছে
(আসলে আনভি প্রাপ্যর কাছে চুল বাধতে যায়। কিন্তু প্রাপ্য টিভিতে খেলা দেখতে ব্যস্ত থাকায় প্রথমে না করে দেয় পরে আনভি কাঁদো কাঁদো গলায় বলে..প্লিজ চাচ্চু। হয়ে গেলো প্রাপ্য না চাইলেও করতে হয়। কিন্তু প্রাপ্য খেলে দেখেতে দেখতে চুল বাধতে গিয়ে চুল এলোমেলো করে কাকের বাসা করে দিয়ে বলে সে পারবে না। তার পাপার কাছে যেতে, তার আনভি রোদের কাছে আসে)
রোদঃ কাল চাচ্চুকে মার দেবো আমার আম্মু চুল কাকের বাসা করার জন্য
আনভি মাথা নাড়িয়ে খুশি হয়ে গেলো। রোদ তাকে বেডে নামিয়ে চিরুনি দিয়ে আস্তে আস্তে করে আনভির এলোমেলো চুল আচরাতে লাগো যাতে আনভির ব্যাথা না লাগে। সুন্দর করে আচরে বিনুনী করে দিতে লাগলো। চুল বাধা হয়ে গেলে বলো..
রোদঃ আম্মু দেখো ভালো লাগছে
আনভিঃ হুম ভালো।
বলে রোদকে চুমু দিল। রোদ আনভিকে বুকের সাথে নিয়ে বেডে শুয়ে তার মাথায় হাত বুলাতে লাগলো। আস্তে আস্তে আনভি ঘুম আসতে লাগলো। রোদ তার কপালে চুমু দিয়ে ঘুমিয়ে যায়…..
___________________________________
সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠে পরছে রোদ আনভিকে ঘুমাতে দিয়ে সে ফ্রেশ হয়ে নিচে যায়। নিচে গিয়ে দেখে প্রাপ্য জগিং করে আসছে, তার বাবাই আজ এখনো নিচে আসেনিই। প্রাপ্য রোদকে দেখে বলে….
প্রাপ্যঃ গুড মর্নিং ভাইয়া
রোদঃ গুড মর্নিং
বলে মালাকে বলে…মালা আজ নিউজপেপার আসেনিই এখনো
মালাঃ না স্যার একটু পরে এসে যাবে..
রোদকে অস্থির হতে দেখে প্রাপ্য বুঝতে পারে কেনো এমন হাসফাস করছে সে। প্রাপ্য রোদকে বলে…
প্রাপ্যঃ ভাইয়া যেটা করেছি এটা কি এখনি করা উচিৎ ছিল
রোদঃ হ্যাঁ ছিল। আমি আর দেরি করতে চায় না।
প্রাপ্য কিছু বলবে তার আগে মালা নিউজপেপার রোদের কাছে দেয়। রোদ পেপার হাতে নিয়ে সব পাতা উল্টে পাল্টে দেখতে লাগলো কিন্তু কাঙ্খিত জিনিসটা না পেয়ে রাগে তার চোখ লাল হতে লাগলো। রোদকে রাগতে দেখে প্রাপ্য ভয় পেয়ে যা, সে পেপারটা হাতে নিয়ে বুঝলো রোদ যে নিউজ ছাপাতে বলেছিলো সেটা ছাপা হয় নি। প্রাপ্য কিছু বলতে যাবে তার আগে রোদ বলো…
রোদঃ আমারি দোষ আমি ঠিক মতো নিউজ টা হেন্ডেল করতে পারি নি। কেও না কেও তো আছে নিউজ টা লিক করে দিয়েছে তাই মি.মির্জা সব সাফল্য ভাবে নিউজটা ধামা চাপা দিয়ে দিলো। নো প্রবলেম আরো সুযোগ আসবে।
বলে বাঁকা হেঁসে চলে যায়। প্রাপ্য শুধু ভাবছে আজ কি হবে যখন রোদ তার উদ্দেশ্য পুরন করতে একটা মেয়েকে কষ্ট দেবে। প্রাপ্য অফিসের জন্য রেড়ি হতে গেলো…
____________________________
আজাদ মির্জাঃ সঠিক সময়ে ইনফরমেশন টা দিয়েছো বলে নিউজ টা ছাপা হয়নি। সব চাপিয়ে দিয়েছি। তাই তোমার প্রাপ্য তুমি পেয়ে যাবে
মানিকঃ স্যার এটা আয়ান করেনি আমি সিওর। কিন্তু এটা অন্য কেও করেছে কিন্তু কে সেটা এখনো জানা যায় নি।
আজাদ মির্জাঃ সেটা আমি বের করে নেবো তোমাকে কিছু করতে হবে না। রাখলাম
বলে ফোনটা কেটে দেয় সে। আজাদ মির্জা ভেবে পাছে না তার নামে এতো প্রমাণ পেলো কি করে আর নিউজটাই বা কে ছাপাতে বলেছে। কে তার সাথে আড়ালে শত্রুতা করছে। আজাদ মির্জা বলে…তুমি যেই কে না হও আমাকে দমন করা এতো সহজ নয়। তোমাকে তো খুজে বের করবো আমি। কঠিন শাস্তি পাবে কঠিন৷ বলে বাকা হসে।
____________________________
সকাল-১১টা, মির্জা অফিসে,,,,
মেম আপনাকে স্যার যেতে বলেছে কেবিনে একটা মেয়েলি কন্ঠে বল কথা শুলো শুনে আদিবা তার দিকে তাকায়। দেখে মেয়েটি হাঁটু পর্যন্ত একটা কালো স্কার্ট আর সাদা শার্ট পরা মুখে মেকাপের গোদাম বানানো মেয়ে তাকে যেতে বলছে। কাল রোদের কথা মতো আদিকে ফাইলটা দিতে এসেছে সে তার আফিসে। তাকে ওয়েট করতে বলে কিছুখন পর এই মেকাপের বস্তা তাকে ডাকতে আসে। আদিবা তার পিছু পিছু যায়, মেয়েটা নিজেকে একটু গুছিয়েন একটা কেবিনে নক করে ভেতরে যা। এতে আদিবা বুঝতে পারে এটা আদির কেবিন। আদিবা কেবিনে গিয়ে আদিকে একবার দেখে মাথা নিচু করে ফেলে তখন কার মেয়ে বলে…স্যার মিস.আদিবা এসেছে
আদি একবার মাথা তুলে তাকিয়ে মেয়েটিকে উদ্দেশ্য করে বলো….মিস. মিমি আপনি এখন আসতে পারেন দরকার পরলে আপানে ডাক দেয়া হবে।
আদিবা এবার বুঝলো এই মেয়েটির না মিমি। আদিবার তাকে দেখেই বুঝতে পেরেছে মেয়েটির নজর আদির অপর আছে। থাকলে থাকুক আমার কি, এই ময়দার বস্তাকে সে কি করবে না করবে তাতে আমার কি? মিস মিমি না ছাই কি সুন্দর করে বলে দরকার হলে ডেকে নেব আসলেই বিদেশ থেকে বাদরে পরিনত হয়ে এসেছে হুহু
আদিঃ মনে মনে না বলে সামনা সামনি মন খুলে বকো। তাইলে ভালো লাগবে
আদির কথা শুনে আদিবা তার ভাবনা জগৎ থেকে বেরিয়ে। নিজে কি ভাবছিল ভেবে লাজ্জায় লাল হতে লাগো। আর নিজের এতো কাছে আদিকে দেখে হচকে দূরে সরে যেতে নিলে আদি তার কোমর ধরে তার কাছে টেনে নিয়ে বলে…
আদিঃ তুমি সব সময় এতো পালায় পালায় করো কেন। আমি কি ভাগ না কি ভালুক
আদি কথা বলে তার উষ্ণ নিশ্বাস আছড়ে পড়ে আদিনার মুখে। আদিবা কাপা কাপা গলায় বলো…ক কি ক করছেন কি আপনি। দূ দূরে যান প্লিজ
আদিঃ কেন
আদিবাঃ প্লিজ আদি
আদিবার আসহায় মুখ দেখে আদি তাকে ছেড়ে দিয়ে দূরে দাড়ায়। ছাড়া পেতেই আদিবা সস্তির নিঃশ্বাস নেয় এতোখন মনে হচ্ছিলো দম বন্ধ হয়ে যাবে। আদিবা নিজেকে স্বাভাবিক করে আদির দিকে ফাইলটা দিয়ে বলে…
আদিবাঃ রোদ স্যার আপনাকে ফাইলটা দিতে বলেছে তাই এসেছিলাম। এখন আমাকে যেতে হবে বাই
বলে যেতে নিলে আদি তাকে আটকে নিজের কাছে নিয়ে এসে নরম কন্ঠে বলো…আদু প্লিজ আমাকে বলো কি প্রবলেম ছিলো তোমার আমি সবটা মেনে নেব। প্লিজ একটা বার আমাকে বলে দেখ আমি সব ঠিক করে দেবো। তুমি শুধু বলো কি হয়েছিলো ৪বছর আগে তোমার সাথে প্লিজ কেন আমরা সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন করে দিলে। তুমি ইমেজিং করতে পারবে না আমি এই আদি যে কিনা সগারটের গন্ধ সহ্য করতে পারে না সে এখন সগারটে খায় শুধু তোরা দেওয়া আঘাত ভুলতে। প্লিজ আমাকে বলো কি হয়েছিলো
আদির প্রতেকটি কথা আদিবাকে ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছিলো ভেতর থেকে। চোখ থেকে একফোঁটা নোনাজল গড়িয়ে পরে, নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে আদিকে জড়িয়ে ধরে শব্দ করে কেদে দিলো। আদি প্রথমে অবাক হয়ে সে বিশ্বাস করতে পারে না আদিবা তাকে জড়িয়ে ধরেছে তারপর আদিবার কান্নার শব্দের তার মনের সব রাগ কষ্ট গলতে লাগলো। সে আদিবার কান্না আগে ও সহ্য করতে পারতো না না এখন। আদিবা কান্নারতো কন্ঠে বলো…
আদিবাঃ আদি প্লিজ আমার থেকে দূরে থাকুন, আপনি ভালো থাকবেন। আর অতীতে যা হয়েছে তা খোজার চেষ্টাও করবে না এর ফল ভালো হবে না। প্লিজ আদি আমার থেকে দূরে থাকুন।
বলে আদিকে ধাক্কা দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে চলে গেলো। এদিকে আদি আদিবার কথা শুনে হতবিহ্বল হয়ে যায়। কি বলে গেলো মেয়েটা তার থেকে দূরে থাকতে বলছে সেটা সে কখনো করতে পারনে না। বিদেশে ছিলাম বলে কিছু করতে পারনি কিন্তু এখন তোমাকে পতে সব সব করবো। আদি আদিবার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলো…..
#তুমি আসবে বলে
#অপেক্ষার প্রহর
#Sondha Halder
#পর্ব-১৮
বিকেল-৫টা
গরমের দিনে বলে বিকেল পরতেও রোদের তেজ কমেনি, ভেপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে জনপদ। আজ অন্তু আর্ট ক্লাসে প্রথম দিন ছিলো, অনেক ভালো গেছে দিনটা তার। প্রথম দিন বলে হলকা রং সম্পর্কে ধারনা দিয়েছে, পরের ক্লাস থেকে আর্ট সম্পর্কে ধরনা আর শেখার কাজ হবে। অন্তু আজ সবার সাথে পরিচয় হয়ে ভালো লাগছে নতুন মানুষ, নতুন করে বন্ধুত্ব করা। কিন্তু আজ ওর আদিবার কথা অনেক মনে পরছে, আদিবা বলতো..
আদিবাঃ দোস্ত তুই অনেক বড় আর্টিস্ট হবি দেখিস। তুই শুধু শুধু এই হিসাব নিয়ে পরছিস। দেখিস কেও তোকে এই হিসাব নিয়ে না ছবি আঁকা নিয়ে চিনবে। দেখিস..
আদিবার কথা শুনে অন্তু শুধু হাসতো। পুরাতন কথা মনে পরতেই অন্তু হাসির রেখা গাঢ় হয়। অন্তু তার ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে আসে ক্লাস থেকে। রাস্তায় এসে রিক্সা খুজতে লাগো, আদি গাড়ি নিতে বলে অন্তু মানা করে দেয়। সে আগের মতো স্বাধীন ভাবে চলতে চায়। অন্তু একটা রিক্সা ডকতে নিলে তার নাম ধরে পিছু থেকে কেও ডাকে। সেটা শুনে প্রথমে মনে করে সে ভুল শুনেছে কিন্তু পরক্ষনে আবার তার নাম ধরে ডাকতেই অন্তু ভ্রু কুচকে ভাবে,,, সে এখানে কাওকে চেনে না বা ভালো করে পরিচয় হয় নি তালে তাকে কে ডাকছে ভেবে পিছনে তাকাতেই দেখেতে পায় রোদের হাসোজ্জল মুখ খানা। রোদ এগিয়ে এসে হাসি মুখে বলে…
রোদঃ হোয়াটা আ প্রেজেন্ট সারপ্রাইজ মিস অন্তু। আপনি এখানে, এখন, আমি তো আশাও করিনি আপনার সাথে এখানে দেখা হবে। তা এখানে কি করছেন আপনি।
অন্তু রোদকে এখানে দেখে অবাক হলেও প্রকাশ করে না। অন্তু মৃদু হেসে বলো…
অন্তুঃ আমি এখানে আর্ট শিখি আজ তার প্রথম দিন ছিল। আপনি এখানে কি করছেন মিস্টার রোদ
রোদঃ আমি আনভিকে নিতে আসছি
অন্তু রোদের কথা শুনে বুঝতে পারলো না এখানে আনভি কোথা থেকে আসবে। অন্তু বিস্মিত হসে বলো…
অন্তুঃ আনভিকে নিতে মানে। আনভি এখানে আসবে কেন?
রোদঃ আনভি এখানে মানে আনভি ও এখানে আর্ট শেখে ১ মাস যাবত। আসলে বাড়িতে রং তুলি নিয়ে ছবি আঁকে দেখে আমি এখানে ভর্তি করে দিয়, যাতে এখন থেকে একটু একটু করে তৈরি হতে পারে।
রোদের কথা শুনে অন্তু হতবুদ্ধিকর হয়ে গেলো, এই ছেলে কি বলে তিন কি সারে তিন বছরের বাচ্চা কিনা আর্ট করতে এখানে ভর্তি করিয়েছে। বাচ্চা মেয়ে খেলার ছলে করেছে আর এ কিনা তাকে আর্ট শিখাতে দিয়েছে। অন্তু চোখে ছোট ছোট করে বলো…
অন্তুঃ আপনি কি পাগল মিস্টার রোদ
অন্তুর এই কথা শুনে রোদ বিষম খেলো। রোদ এমন কি বলো যাতে সে পাগল উপাধি পেয়ে গেলো। রোদ নরম কন্ঠে বলো…মানে
অন্তুঃ আপনি পাগল না তো কি একটা বাচ্চা মেয়ের খেলার বয়সে আপনি তাকে আর্ট ক্লাসে ভর্তি করিয়ে দিলেন। এতে আপনাকে পাগল বলবো নাতো কি বলবো বলুন তো
অন্তুর কথা শুনে রোদ শব্দ করে হাসতে লাগলো যাকে বলে গোড়াগুড়ি করা। রোদকে এভাবে হাসতে দেখে অন্তু বোকার মতো চেয়ে থাকে রোদের দিকে সে ভাবে,,, এমন কি বলাম যে এ এভাবে হাসতে লাগলো। যা বলাম তা তো সত্যি ছোট বাচ্চা কি পারে এসব। অন্তু বোকার মতো প্রশ্ন করে..
অন্তুঃ আপনি হাসছেন কেন এভাবে আমি কি জোক করছি। যা বলাম সত্যি বলাম
রোদ তার হাসি কোনো মতো থামিয়ে বলো… হাসবো না তো কি করবো। আপনার যা প্রশ্ন না হেসে পারা যায়। হুমম আনভি এখন ছোট কিন্তু এতো ছোট্ট নয় যে সে ছবি আঁকতে পারে না। আনভি পারে ভালো কিন্তু ওর একটা প্রোপার গাইডলাইন লাগবে তাই দিয়েছি। বুঝলেন মিস অন্তু
অন্তুঃ তাও আনভি ছোট
রোদ আনমনে বলতে লাগলো,,, যার মার আর্ট সম্পর্কে ভালো ধারনা আছে তার মেয়ে হয়ে এই বয়সে আর্টের ওপর ঝক বেশি থাকনেই।
রোদের কথা শুনতে না পেরে অন্তু বলো…সরি আমি কিছু বুঝতে পারলাম না।
রোদঃ আমি আপনাকে কিছু বলি নিই। ওই তো আনভি এসে গেছে।
রোদের কথা শুনে অন্তু গেটের দিকে তাকিয়ে দেখে আনভি আসছে তার গায়ে, জামায় হালকা রং আছে। দেখেয় বোঝা যাচ্ছে রং গায়ে লাগিয়েছিল তা ধুয়ে দিয়েছে কিন্তু ভালো করে হয় নি। রোদ গিয়ে আনভিকে কোলে করে বলে…
রোদঃ তো আম্মু কেমন ছিলো ক্লাস
আনভি আনন্দ নিয়ে বলো…ভালো ছিলো পাপা
রোদঃ ভালো
বলে অন্তুর কাছে আসে। আনভি অন্তুকে দেখে রোদের কোল থেকে অন্তুর দিকে হাত বাড়ায়। মানে সে অন্তর কোলে যাবে, অন্তু মুচকি হেসে আনভিকে কোলে তুলে গালে চুমু দিয়ে আদুরি সুরে বলো…
অন্তুঃ কেমন আছো আনভি মামুনি
আনভি অন্তুকে দেখে অনেক খুশি হয়ে যায়। আহ্লাদি কন্ঠে বলে… ভালো আছি ভালো আন্টি। তুমি কেমন আছো। এখানে কি করছো
অন্তুঃ আরে আরে এক সাথে এতো প্রশ্ন। হুম আমি ভালো আছি। আমি ও তোমার মতো ছবি আঁকতে এখানে এসেছি
আনভিঃ সত্যি ভালো আন্টি [উচ্ছ্বসিত হয়ে বলে]
অন্তু হ্যাঁ বলতেই আনভি তার গলা জড়িয়ে ধরে অন্তুর গালে চুমু খায়। অন্তু আর আনভি নিজেদের মধ্যে খুনসুটি করে আর রোদ তা অপলক দৃষ্টি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। অন্তু আর আনভি একে ওপরকে ভালোবাসা দেখে রোদের মনে হয় তারা মা মেয়ে। কিন্তু আদোও কি তাই। রোদ গলা ছেড়ে বলো…
রোদঃ চলুন মিস অন্তু আপনাকে বাসায় পৌঁছে দিয়
অন্তু মাথা তুলে বলো..না আমি একাই যেতে পারবো।
আনভিঃ চলো না ভালো আন্ট আমাদের সাথে
আনভির আবদারি কন্ঠ শুনে অন্তু আর না বলতে পারে না। সে রোদের সাথে যেতে রাজি হয়ে যায়। সারারাস্তা অন্তু আনভি কথা বলে, খুনশুটি করে কাটিয়ে দেয়। আর রোদ শুধু তাদের দেখে মুচকি মুচকি হাসে। তার উদ্দেশ্য পূরন হচ্ছে বলে কথা…
______________________________
আদু মা কি হয়েছে বলবি তো আমাকে সেই দুপুরে অফিসে থেকে এসে রুমে গেছিসে আর বের হোস নি না কিছু খেয়েছিস। দরজা খোল মা দেখ আমর প্রেশার বেড়ে গেছে তোর চিন্তায় কি হলো দরজা খোল বলে আদিবার মা দরজা ধাক্কাছে। আদিবা বিছানায় এলোমেলো হয়ে শুয়ে আছে কিন্তু ঘুমায় নিয় সে, তার চোখের কোণ দিয়ে আঝরে পানি পরছে। আজ এতো বছর পর সে আদির এতো কাছে গেছে অবাধ্য মন শুধু সেই মুহূর্তে আর স্পর্শ শুলো মনে করাচ্ছে। বার বার মন বলছে সব ছেড়ে ছুরে আদির কাছে চলে যা গিয়ে বলি কেন সে প্রতারণা করেছে? কেন সে তাকে ঠকিয়েছে? আদিকে তার মনে কথা বলতে চায় যে সে তাকে কষ্ট দিয়ে নিজে সেই আগুনে ভস্ম হয়েছে। কিন্তু পরক্ষনে মনে পরে তার সাথে ঘটে যাওয়া সেই ঘটনা, না সে কিছুতেই আদির জীবন ফেরত যাবেনা তার মনকে শক্ত করতে হবে। যেকোনো মূল্যে তাকে আদির কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে। আদির কাছ থেকে দূরে যাওয়ার কথা শুনলে হু হু করে কেদে ওঠে আদিবা। তার মনের প্রশ্ন যাগে কেন তার সাথে হলো এমন, কেন আদি বিদেশে গেলো আর তার জীবন ছন্নছাড়া হয়ে গেলো। তারা তো অনেক সুখে ছিলো, আদির পাগলামো, অফুরন্ত ভালোবাসা, তাইলে কেন সব পাল্টে গেলো। আদিবা আর ভাবতে পারছে না মাথাটা ব্যাথা করছে। সে উঠে দরজা খুলে দিলো
দরজা খুলতেই আদিবার মা রুমের ভেতরে গিয়ে দাড়ালো। আদিবার দিকে তাকাতেই আদিবার মার মন ধক করে ওঠে। কি হাল করেছে মেয়েটা চোখ মুখ কান্না করার ফলে ফুলে গেছে, চোখ অসম্ভব লাল, মুখটা শুকিয়ে গেছে। সালেহা আদিবাকে নিয়ে বেডে বসলে আদিবা তার কোলে মাথা রেখে শোয়। সালেহা আদিবার মাথায় হাত বুলাতে বলাতে বলে….
সালেহাঃ কি হয়েছে আদু কিছু দিন ধরে দেখছি কেমন মন মরা হয়ে গেছে। অফিসে কি কিছু হয়েছে
আদিবাঃ না মা [শুকন গলায় বলো]
সালেহা আবার ও বলো… আমার কতো স্বপ্ন ছিলো তোমাকে নিয়ে তা তুমি আস্তে আস্তে পূরন করবে। কতো আশা নিয়ে আমার কাছ থেকে তোমাকে চেয়েছিলো কিন্তু তোমার জেদের কারনে সব শেষ হয়ে গেলো। একটা বার আদিকে বলো তোর তখন কি পরিস্থিতিতে ছিলে যার জন্য এমন করলে কি তুমি বলে না। নিজে কষ্ট পেলে সাথে ছেলেটা কেও দিল..
বলে আঁচল মুখে চেপে হু হু করে কান্না করতে লাগলো৷ আদিবা তার মার সমস্ত কথা মন দিয়ে শুনলো। আদি তার মার কাছে বিনীত অনুরোধে তাকে চেয়ে ছিলো সেটা দেখে আদিবা অনেক অবাক হয়েছিলো। আদি তাকে কতটা ভালোবাসে সে সেদিন দেখিয়েছিলো। আদিবার এখন মনে আছে সেই দিন যে দিন আদি তার হাত ধরে কোথাও একটা নিয়ে যায়….
৫বছর আগে….
আদি আদিবাকে নিয়ে আদিবার বাড়িতে নিয়ে আসে। আদিবা বাড়িতে আসতে দেখে আদিকে আবাক হয়ে প্রশ্ন করে..তারা এখানে কেন এসেছে মা দেখে তাকে মেরে ফেলবে চলুন এখান থেকে। কিন্তু আদি শোনার পত্র ছিলো না তাকে নিয়ে বাড়ি কলিং বেল বাজায়, আদিবার জান যায় যায় আবস্থা। আদিবারা ভাড়া বাড়িতে ২টা রুম ১টা কিচেন ড্রইং রুমে নিয়ে থাকতো। দরজা খোলে সালেহা ইসলাম, মেয়েকে দেখে ভ্রু কুচকে কিছু বলবে তার আগে আদিকে দেখে হাসি মুখে বলে…
সালেহাঃ আরে আদি বাবা তুৃমি যে অন্তু মামুনি ও এসেছে কই ও তাকে তো দেখছি না
(সালেহা অন্তুকে চেনে বিধায় আদিকে ও বেশ ভালো করে চেনে। অন্তুকে আদিবার থেকে কম ভালোবাসে না সে, আর আদিকে নিজের ছেলে মনে করে)
আদিঃ আন্ট অন্তু আসেনি আমি এসেছি আপনার সাথে কিছু কথা আছে। আমার ভেতরে গিয়ে কথা বলি
সালেহা সম্মতি প্রসন্ন করলে তার ভেতরে এসে সোফায় বসে। সালেহা একবার মেয়ে কে আবার আদিকে দেখছে আর বোঝার চেষ্টা করছে কি বলবে। আদি আগে বলো…
আদিঃ আন্টি আমি কথা ঘুড়িয়ে পেচিয়ে বলতে পছন্দ করি না যা বলি সরাসরি বলি সেটা আপনি জানেন
সালেহা ভ্রু সুরু করে বললো…হ্যাঁ
আদিঃ আন্টি আমি আর আদিবা একে ওপরকে ভালোবাসে ইনফ্যাক্ট আমি আদিবা কে বিয়ে করতে চায়
সালেহা বিস্মিত হয় আদির কথায় সে আদিবার দিকে ইশারায় করলে যে সত্যি কিনা আদিবা মাথা নিচু করে হ্যাঁ বলে। সালেহা মাথা নিচু করে ফলে। তা দেখে আদি সালেহা সামনে মাথা নিচু করে বিনীত গলায় বলে..
আদিঃ আন্টি আমি জানি আপনার মনে অনেক প্রশ্ন থাকবে এখন, কেন আমি এতো বড় লোকের ছেলে হয়ে আদিবাকে ভালোবাসলাম, আমার পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নেবে না। আন্টি আমি আপনাকে আসাস দিচ্ছি আদিবার কোন অসুবিধা হবে না, আমার পরিবার ওকে মেনে নেবে। আমি আদিবাকে অনেক ভালোবাসি আন্টি ওকে ছাড়া থাকতে পারবো না। তাই বিদেশে যাবার আগে আপনাকে জানিয়ে যেতে চায় যাতে আপনি আদিবার বিয়ের কোন ব্যবস্থা না করেন। আন্টি প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দেবে না।
সালেহা আদির সব কথা শুনে বোঝে যে আদি তার মেয়েকে কতটা ভালোবাসে। সে হেসে সব মেনে নেয় আর বলে তুমি না আসা পর্যন্ত আদিবা তার কাছে তোমার গচ্ছিত আমানত হিসেবে থাকবে৷ মায়ের কথা শুনে আদিবা কান্না করে আর আদির প্রতি তার ভালোবাসা সম্মান আরো বেড়ে যায়।
আদিবার ভাবনার সমাপ্তি ঘটে তার ফোনের উচ্চ সরের রিংটোনে। সালেহা আদিবাকে খেতে ডেকে বাইরে চলে যায়। আদিবা ফোন হাতে নিয়ে দেখে অপরিচিত নাম্বার , ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত-১১টা বাজে এতো রাতে কে ফোন দিয়েছে ভেবে পাছে না দরকারি ফোন মনে করে ফোন ধরে বলে…
আদিবাঃ হ্যালো কে
ওপাশ থেকে কথা আসছে না শুধু নিশ্বাসের শব্দ আছে। আদিবা আবার হ্যালো বলে বলো,,,কে কথা বলছে না কেন ফোন দিয়ে ক..। আর বলতে পারলো না সে চুপ করে গেলো তার বুঝতে এখন ভুল হলো না ওপাশে কে আছে। আদিবা গলায় কান্না দলা পাকিয়ে আসছে, কান্নার্ত গলায় কাপা কাপা সরে বলো…
আদিবাঃ আদি
এদিকে আদি আদিবার কাপা কাপা গলা শুনে চোখ কোণে একফোঁটা অশ্রু দেখা দেয় সে হাত দিয়ে মুছে। নরম সুরে বলো..
আদিঃ এখনো আমার নিশ্বাসের শব্দে বুঝে গেলে আমি ফোন দিয়েছি। কেন করছো এমন আদু, নিজের মনকে কেন আটকাছো, ভালোবাসাকে কেন লুকাছো প্লিজ বলো আদু। আমার বুকে অসম্ভব জ্বালা করছে তোমার এই নিশ্চুপ থাকা আদু
এদিকে আদি কান্না জড়িত কথা প্রতিটি কথা তার মনে গিয়ে লাগে। আদিবা কি বলবে করবে সে বুঝতে পারছে না। সে ফুপিয়ে কেঁদে ওঠে। আদিবার কান্না শুনে আদি ব্যস্ত হয়ে বলো…
আদিঃ আদু কি হয়েছে তোমার আদু আমার কথায় কি তুমি কষ্ট পেলে প্লিজ আমাকে বলো আদু। দেখো আমার ভেতরটা পুরছে তোমার কান্না শব্দ শুনে। প্লিজ আদু কান্না করো না তোমার কান্না আমার সহ্য হচ্ছে না। আমাকে পাগল করে দিচ্ছে
আদিবাঃ আদি প্লিজ আমাকে আমার মতো ছেড়ে দিন। আমি আর নিতে পারছি না আদি আমার কষ্ট হচ্ছে।
আদিঃ তোমাকে আমি ছাড়ছি না আদু, অনেক ছেড়েছি আর না তোমাকে কি করে আমার কাছে আনতে হবে আমি জানি। তোমার ওপর আমার অধিকার তোমার থেকেও বেশি তা নিশ্চিত ভুলে যাওনি তুমি। একটা কথা মনে রেখো আমার কাছ থেকে পালানোর চিন্তাও করবে না এর ফল ভালো হবে না। রাখছি আই লাভ ইউ আদু
বলে ফোন দেখে দিলো আদি হাতের জ্বলন্ত সিগারেট ফেলে দিয়ে বলো..তোমাকে অনেক সুযোগ দিয়েছি বলার জন্য কিন্তু তুমি বলতে চাও না, এখন আমার পাখি খাঁচায় বন্দ করার টাইম এসেছে। বাই হুক বাই কুরুক। এদিকে আদিবা আদির কথায় স্তব্ধ সে বুঝতে পেরেছে আদি কিসের কথা বলেছে। তার হাত পা কাপছে আদি যদি তার কথা রাখে তাইলে কি হবে। সবাই যদি যেনে যায় আদির অধিকার কতটা তার ওপর তখন না সে কিছুতেই এটা হতে দেবে না…সে অনেক ভেবে একটা সিদ্ধান্তে এসেছে এখন সেটা বাস্তবায়ন করা বাকি…সে না খেয়ে শুয়ে পরে তার কানে এখন আদি আই লাভ ইউ আদু বলা বায়ছে। আদিবা বলো..আই লাভ ইউ আদি…
চলবে….