#নিস্বার্থ ভালোবাসা
#পর্ব:১০
#লেখিকা:তাসনিম জাহান রিয়া
রিদ শুভ্রতার দিকে একটা হাত বাড়িয়ে দেয়। আচমকা সব লাইট অফ হয়ে যায়। তারা দুজন চমকে ওঠে। হঠাৎ অনেক জুরে জুরে গুলির আওয়াজ আসতে থাকে। শুভ্রতা ভয় পেয়ে রিদকে জড়িয়ে ধরে।
শুভ্রতা: রিদ আমার অনেক ভয় করছে। (ভীত গলায়)
রিদ: হা হা হা । আরে বোকা মেয়ে ভয় পাচ্ছো কোনো? আমি তোমার সাথে আছি তো। আমাদের পাশের রুমে একজন ভদ্রলোক আছেন। মাথায় একটু ছিট আছে তাই মাঝে মাঝে রেগে ওয়েটারের ওপর রাগারাগি করে। আর বেশি রেগে গেলে গুলাগুলি করে।
শুভ্রতা: যদি আমাদের কোনো ক্ষতি করে দেয়।
রিদ: আমাদের সাথে কিছু করবে না। আমাদেরকে তো চিনে না।
রিদ শুভ্রতাকে ছেড়ে দিয়ে গিয়ে মিউজিক অন করে। শুভ্রতার দিকে হাত বারিয়ে দেয়। শুভ্রতাও রিদের হাতের ওপর হাত রাখে।
tera dil be jana bekraaa ho jaye….
tera dil be jana bekraaa ho jaye….
Rab kare tujhku be pear ho jaye…
Rab kare tujhku be pear ho jaye…
tera dil be jana bekraaa ho jaye….
tera dil be jana bekraaa ho jaye….
Rab kare tujhku be pear ho jaye…
Rab kare tujhku be pear ho jaye…
নাচ শেষে রিদ শুভ্রতাকে কোলে করে টেবিলে সামনে দাঁড় করায়। রিদ একটা নাইফ হাতে নিয়ে ইশারায় শুভ্রতাকে কেক কাটতে বলে। তারা দুজন একসাথে কেক কাটে। রিদ শুভ্রতাকে কেক খাইয়ে দেয়। শুভ্রতা খাওয়াতে গেলে রিদ বাধা দেয়। শুভ্রতা ভ্রু কোচকে রিদের দিকে তাকায়।
রিদ: আমি তো এভাবে খাবো না।
শুভ্রতা: তাহলে কীভাবে খাবে।
রিদ শুভ্রতার গলায় কেক লাগিয়ে দেয়। শুভ্রতার গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়।
————————————————————–
সকালে
শুভ্রতা এখনো ঘুমে কাতর। রিদ ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে যায়। ঘুমন্ত শুভ্রতার কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়।
২ ঘন্টা পর
শুভ্রতা গাল ফুলিয়ে বেডে বসে আছে। সে রিদের ওপর রেগে আছে।
শুভ্রতা: কী বজ্জাত ছেলে আমাকে না বলে চলে গেছে? আজকে আসো তোমার একদিন কী আমার যত দিন লাগে। এখানে কত কত সুন্দর সুন্দর মেয়ে আছে যদি আমার জামাইকে চুরি করে নেয়। আমার জামাইয়ের দিকেও নজর দিলেও সাদা বিল্লিগুলোর চোখ তুলে ফেলবো।
রিদ: সকাল সকাল কার চোখ তুলার কথা বলছো।
শুভ্রতা দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে রিদ দরজার সাথে হেলান দিয়ে বুকের ওপর হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে। রিদ অতিরিক্ত ফর্সা নাহলেও উজ্জ্বল শ্যামলা। চোখের মনির রং হালকা নীল। হাই ৫ফুট ৮ ইঞ্চি। রিদ আজকে নেভি ব্লু কালার শার্ট, ব্ল্যাক কালার প্যান্ট, হোয়াইট কালার সু পড়ছে। হাতে একটা ব্ল্যাক ফিতার ঘড়ি পড়ছে। চুলগুলো অগোছালো হয়ে কপালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। এতেই জেনেও রিদকে অসাধারণ লাগছে। শুভ্রতা রিদের থেকে চোখই ফেরাতে পারছে না। শুভ্রতার রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে এভাবে হিরো সেজে বাইরে বের হবে কেনো রিদ? রিদকে শুধু সে দেখবে অন্য কেউ কেনো দেখবে।
শুভ্রতা বেড থেকে নেমে ধুপ ধাপ পা ফেলে রিদের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। শুভ্রতাকে এভাবে আসতে দেখে রিদ একটু অবাক হয়ে যায়।
রিদ: কী হলো তুমি এভাবে আমার সামনে মূর্তির মতো দাঁড়ালে কেনো?
শুভ্রতা কোনো কথা না বলে রিদের শার্টের বোতাম সবগুলো খুলে ফেলে। তাকিয়ে দেখে রিদকে এভাবে দেখতেও খারাপ লাগছে না। এবার সে রিদের চুলে ধরে টানা শুরু করে। সব রাগ এই চুলের ওপর দিয়ে মিটাচ্ছে।
রিদ: আরে শুভি কী হয়েছে তুমি এভাবে আমার চুল ধরে টানছো কেনো?
শুভ্রতা: তোর সাহস হয় কী করে অন্য মেয়েদের সামনে হিরো সেজে যাবার?
রিদ: আচ্ছা বাবা আর যাব না। আমার চুলগুলো ছাড়ো নাহলে ছিড়ে যাবে।
শুভ্রতা: তোর সব চুল ছিড়ে টাকলা বানিয়ে দিবো। ঐ টাকের ওপর আমি ঢুল বাজাবো।
রিদ: সবাই তো তোমাকে টাকলার বউ ডাকবে।
শুভ্রতা: ডাকলে ডাকুক অন্য কোনো মেয়ে তো তোর দিকে তাকাবে না।
রিদ শুভ্রতাকে কোনোভাবে শান্ত করতে না পেরে গালে ঠাস করে একটা কিস করে দেয়। শুভ্রতা অবাক হয়ে গালে হাত দিয়ে রিদের দিকে তাকিয়ে আছে। রিদ শুভ্রতাকে জড়িয়ে ধরে।
রিদ: আমি তো শুধু তোমার। কোন মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে তাতে আমার কিছু আসে যায় না। আমার নজর তো এই শুভ্রতাতে আটকে আছে।
শুভ্রতা: আমাকে না বলে তুমি বের হলে কেনো?
রিদ: কাজ ছিল তাই যেতে হয়েছে।
শুভ্রতা: তুমি আমাকে একবার ডেকে যেতে পারলে না।
রিদ: আচ্ছা সরি এখন থেকে বলে যাবো। একটু জামেলার কারণে আমাদের এখানে আরও একমাস থাকতে হবে।
শুভ্রতা: আমাদের এখানে মোট ২ মাস থাকতে হবে।
রিদ: হুম।
————————————————————–
এভাবে হাসি, আনন্দ কাজের মাঝে কেটে যায় ১ মাস ২৯ দিন। আজকে তাদের বাংলাদেশে ফিরে আসার দিন। তাই রিদ আর শুভ্রতা বাসার সবার জন্য শপিং করতে এসেছে। শপিং শেষে রিদ শুভ্রতা দাঁড় করিয়ে পার্কিং সাইড থেকে গাড়ি আনতে যায়। রিদ তাকিয়ে দেখে শুভ্রতার দিকে একটা গাড়ি দ্রুত বেগে আসছে।
চলবে…..