প্রণয়ের ত্রিভুবন পর্ব ৬

#প্রণয়ের_ত্রিভুবন
#সুপ্তি_আনাম
পর্বঃ ০৬

শুভ্রিলার দিকে চোখ রাঙিয়ে এগোতে শুরু করে এহমার। জোরে জোরে দম ফেলছে সে। শুভ্রিলা ভেতরে ভেতরে রীতিমতো ভয়ে কুপোকাত কিন্তু বাহিরে নিজেকে শক্ত করে রাখছে। এই মুহূর্তে ভয় পেলে চলবে না। খুব সাধারণ ভাবেই এহমারের চোখের দিকে সরু চাহনি দিয়ে আছে। শুভ্রিলার বলা কথাগুলো এহমারের কানে যেনো বারংবার বেজেই চলছে। এহমার শুভ্রিলার একদম কাছে চলে আসে। তবুও যেনো হেলদোল নেই শুভ্রিলার। রাগে ফোঁসফোঁস করতে করতে এহমার তাকে বলে,

—‘এই মেয়ে! তোমার মনে ভয়-ডর বলতে কিচ্ছুটি নেই? একে তো অপরাধ করেইছো এরপর তোমাকে বলছি এতেও কোনো হেলদোল নেই কেনো? এখন পাঁচ গোনার সাথে সাথে যদি তুমি সর‌্যি না বলো দ্যান আমি…
বলতে বলতেই থেমে যায় এহমার। ব্যাপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং লাগে শুভ্রিলার কাছে। সাথে সাথে বলে ওঠে,

–‘দ্যান আপনি? কি করবেন? ‘
–‘জানি না, তবে ফলাফল ভালো হবে না!’
শুভ্রিলা ব্যাঙ্গ বলতে চাইলো, আপনার থ্রেডে ডরাইনাহ!’ তবে তাকে কিছু বলতে না দিয়েই এহমার বলে উঠলো,
ওয়ান…
টু….
থ্রি…
ফোর… এন্ড,,,
আওয়াজ গাঢ় হচ্ছে এহমারের। এহমার ফাইভ বলবে তার আগেই তাকে চমকিয়ে দিয়ে তার গালে ঠোঁটের ছোয়া দেয় শুভ্রিলা। এতে যেনো বরফ হয়ে যায় এহমার। এহমারের কানের কাছে নরম স্বরে ফিসফিসিয়ে বলে,
–‘আ’ম সর‍্যি মি. এহমার আওয়ান!’
এহমার ভুলে যায় ফাইভ বলতে। এই মাত্র যেনো তার উপর বিষ্ময়ের প্রবল ঢেউ আছড়ে পড়লো! এহমার শুভ্রিলার দিকে বিষ্ময়কর দৃষ্টি দেয়। ইতোমধ্যে তার মাঝে জমে থাকা সকল রাগ ঠিক যেনো কর্পূরের ন্যয় উড়ে যেয়ে শূণ্যে মিলিয়ে গেছে। শুভ্রিলার মুখে লক্ষ্য করতেই এহমার দেখে তার মুখ টকটকে গোলাপি আভায় ছেয়ে গেছে। এতে যেনো শুভ্রিলার সৌন্দর্যটা কয়েকশ গুণ বেড়ে গেছে। নতজানু হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে সে। আর হাসিটায় যেনো এ্যালকোহল মিশ্রিত, যেই এ্যালকোহলের নেশায় ডুবে যেতে থাকে এহমার। তার বিষ্ময়ের ঘোর এখনও কাটছে না। এক হাত দিয়ে শুভ্রিলার গাল ছুঁইয়ে দেয় এহমার। এতে যেনো লজ্জায় নুয়ে পড়ে শুভ্রিলা।

–‘বারে ভার্সিটিতে ওঠার কটি দিন হলো, ইতোমধ্যে এরা সঙ্গি জুটিয়ে ফেলেছে। আবার ফের, লাইব্রেরীটাকে রোমান্সের জায়গা বানিয়েছে বাহ ভাই বাহ!’
কারো কন্ঠ কর্ণকুহরে বাড়ি খেতেই এক ঝটকায় এহমারকে দূরে ঠেলে দেয় শুভ্রিলা। এহমারও ভরকে যেয়ে অন্যদিকে সাইড হয়ে যায়। গলা খাঁকারি দিয়ে আগন্তুকের দিকে তাকায় সে৷ শুভ্রিলা চোখ উঠিয়ে দেখে এক পাশে অর্পিতা দাড়িয়ে। ঠোঁট চেপে মিটিমিটি হাসতে ব্যস্ত সে। এহমার তরিৎ গতিতে তার পাশ কাটিয়ে ‘এক্সকিউজ মি’ বলে অপ্রতিভভাবে চলে যায়। শুভ্রিলা আমতা আমতা করে সামনে এগোয়। গলা ঝেড়ে অর্পিতাকে বলে,

–‘হোয়াট ডিড ইউ সে? ও আর আমার পার্টনার? দ্যাটস্ নান অফ মাই বিজনেস!’

–‘আচ্ছা তাই বুঝি? তাহলে ওর গালে কিস্ করলা কেনো? ‘
অর্পিতার কথায় একপ্রকার বিষম খেয়ে যায় শুভ্রিলা। আমতা আমতা করে বলে,
,–‘তুমি এতো কিছু লক্ষ্য করেছো? বাট কাহিনী কি সেটা তুমি জানো না। আমি বুঝিয়ে বলবো তোমাকে ব্যাপারটা!’

–‘না ভাই এতো ব্যাপার স্যাপার বুঝে আমার লাভ নাই। তবে আমি একটা ব্যাপারে ওয়ারেন্টি-গ্যারান্টি সব দিচ্ছি ইট’স কলড্, লাভ এ্যাট ফার্স্ট সাইড!’

ভ্যাবাচেকা হয়ে যায় শুভ্রিলা, অর্পিতার কথায়। অর্পিতা আবারও ঠোটযুগল প্রসারিত করে বলতে শুরু করে,

–‘ অবশ্য আমার কোনো ইনটেনশন ছিলো না তোমাদের রোমান্সের মাঝে ইন্টারফেয়ার করার। আমি জাস্ট তোমাকে খুঁজতে এসেছিলাম যে তুমি বই আনার কথা বলে বাসায় চলে গেলে না তো! পরে এসে দেখি মহাশয়া আপনা সঙ্গিকে নিয়ে রোমান্টিক সিনের স্মৃতি ক্রিয়েট করছে হে হে হে! ‘

শব্দ করে হাসতে শুরু করে অর্পিতা। এতে কিছুটা রেগে গিয়ে শুভ্রিলা বলে,
–‘উহু, তুমি বুঝছো না ব্যাপারটা। আমি আসলে,

–‘হয়েছে আমাকে আসলে নকলে বুঝতে হবে না। তুমি এবার একটা বই নিয়ে আমাকে রক্ষা করো! একসাথে পড়ি এসো…’

–‘আজকে লেট হয়ে গেলো যে? কালকে পড়ি?’
–‘বলা যায় না কালকেও যদি তুমি এভাবে….’
শুকনো কাশি দেয় শুভ্রিলা।

——————————-
বাসায় এসেই শাওয়ার থেকে ঠান্ডা পানি ছেড়ে মাথায় দিচ্ছে এহমার। লাইব্রেরীর দৃশ্যটা মনে পড়লেই যেনো সমস্ত শরীরে কাটা দিয়ে উঠছে। চোখ বন্ধ করলেই বারংবার ফুটে উঠছে শুভ্রিলার লাজুুক মুখশ্রীর অবয়ব!
ফিসফিসালো কন্ঠে বলা স্যরিটাও যেনো কানে বাজছে। এহমারের মনে হতে থাকে যেনো সে শুভ্রিলার মোহে আঁটকে গিয়েছে। মনের মধ্যে তার প্রতি হাজারো সুপ্ত অনুভূতিগুলো যেনো দোল খেয়ে যাচ্ছে। মনে মনে বিভিন্ন চিন্তার আগমন ঘটছে। মন মনকেই প্রশ্ন করছে ‘তোরা কি একে অপরকে ভালোবেসে ফেলেছিস?’

[ অনেক ব্যস্ততার মাঝেও আজকে গল্প দিয়েছি, ছোট হয়েছে। রিচেইক করা হয়নি। ভুল ত্রুটি মার্জনীয় 💗 ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here