#প্রেম_পায়রা (২)
#অজান্তা_অহি (ছদ্মনাম)
#পর্ব____০৫
‘তিথি! আমার বিছানায় কেন তুমি? আরো রুম আছে তো।’
তিথির প্রতিত্তর না পেয়ে সম্পদ এগিয়ে গেল। কাছাকাছি গিয়ে আরো দু বার ডাকলো। তিথি শুনলো না। বুঝতে পারলো, ঘুমিয়ে পড়েছে। কপাল কুঁচকে গেল তার। একরাশ বিরক্তি এসে ভর করলো। মেয়েটা এসে সরাসরি তার বেডরুমে ঢুকে পড়েছে? শুধু ঢুকে পড়েনি, এই মুহূর্তে বিছানায় শুয়ে আছে। সে দ্রুত হাত বাড়িয়ে ডাকতে নিল। ধাক্কা দিতে নিতে তিথির ফ্যাকাসে মুখ দেখে থেমে গেল। তিথির অবস্থা খারাপ। জার্নি করে কাহিল হয়ে পড়েছে। একদম বিছানার সাথে মিশে শুয়ে আছে। নড়চড় নেই। এত দ্রুত গভীর ঘুমে চলে গেছে দেখে তার মায়া হলো। কুঁচকানো ভ্রু জোড়া শিথিল হয়ে এলো। সে ঘুমটা নষ্ট করতে চাইলো না। ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলে সরে এলো।
এক নজর সম্পূর্ণ রুমে নজর বুলাল। মোটামুটি গোছানো আছে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। হাতের ঘড়ি আর ফোন টেবিলের উপর রাখলো। অতঃপর আলমারি থেকে ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল।
৭.
তিথির ঘুম ভাঙতে নিজেকে অন্ধকার রুমে আবিষ্কার করলো। কিছুক্ষণ সেভাবেই চেয়ে রইলো। মস্তিষ্ক কাজ করতে দ্রুত উঠে বসলো। রুমে গাঢ় অন্ধকারের ছায়া। কিছুই চোখে পড়ছে না৷ আস্তে আস্তে চোখে অন্ধকার সয়ে আসতে দরজা দেখতে পেল। দরজার এক ইঞ্চি ফোকর দিয়ে ক্ষীণ আলোর রেখা রুমে ঢুকছে। বিছানা ছেড়ে নেমে পড়লো সে। শাড়ির কুচি খুলে গেছে। সেগুলো মোটামুটি গোছগাছ করে আবার গুঁজে নিল। আঁচল দিয়ে কোনো রকমে নিজেকে পেঁচিয়ে নিয়ে তবে বাইরে বের হলো।
বাইরে কড়া আলো। তীব্র ভোল্টেজের বাল্ব জ্বলছে। কয়েক হাত লম্বা বারান্দার মতো ড্রয়িং রুম। ড্রয়িং রুমে আসবাবপত্র বলতে একটা টেবিল আর দুটো চেয়ার শোভা পাচ্ছে। আর একপাশে কাউচ। ড্রয়িং রুমের শেষ মাথায় রান্নাঘর নজরে এলো। ধীর পায়ে হেঁটে সে ভেতরে গেল। রান্নাঘর ভীষণ অগোছালো। চুলা বন্ধ। বন্ধ চুলার চারপাশে হলুদের গুঁড়ো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ফ্রাই পেনে দুটো ডিম ভাজি রয়েছে। রাইস কুকার থেকে ধোঁয়া উঠছে। তার মানে ভাত রান্না শেষ।
তিথি রান্নাঘর থেকে বের হলো। আশপাশে তাকিয়ে সম্পদকে খুঁজলো। তার ডানপাশে লাগোয়া দুটো বড় বড় রুম। এর একটাতে সে শুয়ে ছিল এতক্ষণ। আরেকটাতে দরজা বন্ধ। কৌতূহল নিয়ে সে এগিয়ে গেল। সম্পদ ভেতরে ভেবে দরজায় মৃদু টোকা দিল। ভেতর থেকে কোনো শব্দ এলো না। বাধ্য হয়ে জোরসে ধাক্কা দিল। ধাড়াম করে দরজা খুলে গেল। সেই সাথে সম্পদ এক লাফে বিছানা ছেড়ে উঠে বসলো। তিথি সম্পদকে দেখে কিছুটা ঘাবড়ে গেল। সম্পদ শুয়ে পড়েছিল সেটা সে জানতো না। জানলে বিরক্ত করতো না।
তার মূর্তির মতো নিশ্চুপতা দেখে সম্পদ বলল,
‘কি চাই?’
তিথির ঘোর কাটলো। দ্রুতলয়ে সম্পূর্ণ রুমে নজর বুলিয়ে নিল। এই রুমে শুধু বিছানা রয়েছে। আর রয়েছে একটা ডেস্ক। ডেস্কের উপর ল্যাপটপও চোখে পড়ছে। আর কিছুই নেই। সে দরজা ছেড়ে সরে আসতে নিতে সম্পদ বলল,
‘কোথায় যাচ্ছো? আজ থেকে এই রুমে থাকবে তুমি।’
‘আর আপনি?’
সম্পদ অদ্ভুত দৃষ্টিতে তার দিকে তাকাল। তার দৃষ্টি দেখে তিথি বুঝতে সক্ষম হলো প্রশ্নটা বেমানান হয়েছে৷ আর যাইহোক, সম্পদ আর সে এক রুমে, এক বিছানায় থাকবে না। গ্রামে সবার চোখে ধূলো দেওয়ার জন্য এক রুমে থেকেছে। তারা সুখী দম্পতির অভিনয় করেছে৷ এখন তো লুকোচুরির দরকার নেই। তার এটাও মনে পড়লো যে, বিয়ের দিন সকালে সম্পদ বলেছিল, কয়েক মাস গেলে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাকে মুক্ত করে দিবে। নিজেও মুক্ত হবে। তিথি দীর্ঘশ্বাস লুকিয়ে রুমে ঢুকলো। সম্পদ বিছানা ছেড়ে নিচে দাঁড়িয়ে পড়লো। তিথি আড়চোখে একবার তাকে পরখ করলো। পরণে টিশার্ট আর ট্রাউজার। হাতের কবজিতে ঘড়ি। এই মানুষটা সারাদিন রাত ঘড়ি পড়ে থাকে নাকি? হয়তো! বেশিরভাগ সময় সে হাতে ঘড়ি দেখেছে৷
সম্পদ সরে এসে বলল,
‘এটা গেস্ট রুম। আজ থেকে এই রুম তোমার। এখানে থাকবে তুমি। আর আমি আমার রুমে। মানে পাশের রুমে।’
‘আপনার রুমে আমি এতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম?’
সম্পদ উত্তর দিল না। তিথির বুঝতে অসুবিধা হলো না।মাথা নিচু করে বলল,
‘দুঃখীত। মাথা ঘুরছিল বলে যে রুম হাতের কাছে পেয়েছি ওটাতেই শুয়ে পড়েছিলাম। ঠিকমতো খেয়াল করা হয়নি।’
‘শরীর কেমন এখন?’
তিথি আরেক দফা চমকালো। সম্পদের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলো তার দৃষ্টি দরজার পানে। সম্পদের ছোট্ট এই প্রশ্নটা তার ভেতরে প্রচন্ড ভালো লাগার সৃষ্টি করলো। সে নিচু স্বরে বলল,
‘মোটামুটি সুস্থ।’
‘রান্নাঘরে খাবার আছে। ফ্রিজেও আছে। সব দেখেশুনে খেয়ে নিবে। আমি ড্রয়িং রুমের টেবিলের উপর মেডিসিন রেখে দিবো। খেয়ে নিও।’
‘ঠিক আছে।’
‘আমাকে কোনোকিছু নিয়ে বিরক্ত করবে না। যা করার এই রুমের মধ্যে করবে। নাহ! শুধু এই রুম নয়, রান্নাঘর, ডাইনিং, ওয়াশরুম সব ব্যবহার করতে পারবে৷ শুধু আমার রুমে ঢুকবে না।’
‘জ্বি।’
সম্পদ আর কথা বাড়াল না। দ্রুত হেঁটে এগিয়ে গেল। দরজার কাছে গিয়ে হঠাৎ পেছন ঘুরে দাঁড়াল। এক পলক তিথিকে লক্ষ্য করে বলল,
‘তোমার প্রয়োজনীয় জিনিস কি কি লাগবে সব লিস্ট করে রেখো। কাল এনে দিবো।’
‘কাল আপনার অফিস নেই?’
‘নেই!’
তিথি চোখ তুলে তাকানোর আগেই সম্পদ দরজার বাইরে মিলিয়ে গেল। দরজাটা ভিড়িয়ে দিয়ে সে বিছানায় এসে বসলো। বিছানা পরিষ্কার। নতুন ঝকঝকে বালিশ, কাভার, বেডশিট বিছানো। মাঝামাঝি পাতলা ফুলেল কম্বল গুটিয়ে রাখা। কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিয়ে সে শাওয়ার নেওয়ার চিন্তা করলো৷ প্রচন্ড ক্ষুধাও লেগেছে। সারাদিন কিছুই পেটে পরেনি। উল্টো সব বের হয়ে গেছে। অগোছালো শাড়ির আঁচল কোমড়ে গুঁজে সে উঠে দাঁড়ালো। লাগেজের জন্য বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে দেখলো রুমের কর্ণারে লাগেজ রাখা। আর দেরি করলো না। লাগেজ থেকে ড্রেস বের করে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল।
শাওয়ার ছেড়ে তার নিচে বসে পড়লো সে। ঠান্ডা পানির স্পর্শে প্রতিটি লোমকূপ কেঁপে কেঁপে উঠছে। দু হাতসহ শরীরের দাগগুলোর দিকে চেয়ে থাকতে থাকতে চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে এলো। দাগগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। মিশে গেছে প্রায়। কিন্তু শরীরের দাগগুলো মিশে গেলেও তার মনের দাগ কিভাবে মিশবে? মস্তিষ্ক থেকে এই ভয়ংকর দুঃস্বপ্নটি কি করে দূর করবে? কি করে মুছে ফেলবে জীবনের এই কালো অধ্যায়? যতই ভুলতে চাচ্ছে, ততই যেন স্মৃতিপটে আরো গভীর ভাবে গেঁথে যাচ্ছে। দু হাতে মুখ আটকে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলল সে।
কিছুক্ষণ পর শরীরে কাঁপুনি ধরলো। হাত-পা কুঁকড়ে এলো শীতে। ভেজা কাপড়ে আর থাকা যাচ্ছে না। শেষ বার মাথায় পানি দিয়ে সে থ্রি পিস পরে নিল। ভেজা কাপড় গুলো ওভাবেই রেখে দিল। প্রচন্ড শীত লাগছে। কম্বলের নিচে ঢুকতে হবে। মাথায় টাওয়াল পেঁচিয়ে সে কাঁপা কাঁপা হাতে ওয়াশরুমের ছিটকিনি খুলল। দরজা সরিয়ে রুমে ঢুকতে আচমকা পা থেমে গেল। শরীর জমে এলো। কোটরাগত অক্ষিযুগল আয়তনে বড় হয়ে গেল। বিস্ফারিত কন্ঠে বলল,
‘আপনি?’
সম্পদের কানে ঢুকলো না। তার চোখদুটো তিথির উপর নিবদ্ধ। সদ্য শাওয়ার শেষ করা ভেজা চুলের কোনো রমণীকে এই প্রথম দেখছে সে। এত কাছে থেকে দেখছে৷ কেমন ছবির মতো সে দৃশ্য! তিথির মাথায় টাওয়াল প্যাঁচানো। মুখে বিন্দু বিন্দু পানির রেশ। ভেজা পাপড়ির মাঝে বড় বড় দুটো চোখ। ঠোঁটযুগল মৃদু কাঁপছে। কানের পাশের কিছু ভেজা চুল গলার কাছে পড়ে আছে। সেখান থেকে পানি চুইয়ে পড়ছে। আস্তে ধীরে তার চোখ তিথির বুকের উপর পড়লো। সঙ্গে সঙ্গে তিথি মাথার টাওয়াল খুলে বুকে জড়িয়ে নিল৷ দ্বিতীয় বার কম্পিত কন্ঠে বলল,
‘আপনি এখানে কি করছেন?’
সম্পদের ঘোর কাটে। দ্রুত নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। রুমের এদিক ওদিক তাকিয়ে আমতা আমতা করে বলল,
‘ইয়ে মানে আমার ল্যাপটপ কোথায় রাখলাম?’
সম্পদের পেছনে ডেস্কের উপর ল্যাপটপ দেখা যাচ্ছে। তিথি এগিয়ে এলো। সম্পদের পেছন থেকে ল্যাপটপ হাতে তুলে নিল। তার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
‘এই যে নিন।’
সম্পদ ল্যাপটপ হাতে নিল। মাথা নিচু করে আড়চোখে তিথির দিকে তাকালো। একরাশ ভেজা চুলের মাঝে তার গোলগাল মুখটি দেখে বুকের ভেতর কেমন যেন করে উঠলো। আর দাঁড়ালো না৷ একপ্রকার দৌঁড়ে সে রুম থেকে বের হয়ে গেল।
সম্পদ চলে যেতে তিথি বালিশের উপর থেকে ওড়না নিয়ে গায়ে জড়ালো। রুমের দরজা বন্ধ করতে গিয়ে করলো না। একটুপর বের হতে হবে তাকে। পেটে প্রচন্ড ক্ষুধা। মাথার চুল গুলো পুনরায় ঝাড়লো। টাওয়াল দিয়ে মুছে ফেলল। ভেজা টাওয়াল শুকিয়ে দেওয়ার সময় দেখল তার রুমে বেলকনি নেই। রাস্তার পাশ ঘেঁষে শুধু একটা বড় জানালা। জানালার থাই খুলে সে বাহিরে তাকালো৷ অন্ধকারের মতো জ্বল জ্বল করছে শত শত লাইট। বনানীর এই রাতের শহর দেখে সে বুঝতে সক্ষম হলো না কত রাত হয়েছে এখন!
কিছুক্ষণ পর সম্পদের রুমের দিকে তাকালো। রুমের বেলকনির সম্পূর্ণ অংশ নজরে এলো। এখান থেকে জানালা দিয়ে সব দেখা যাচ্ছে। সম্পদের ভেজা শার্ট, প্যান্ট সব দেখতে পাচ্ছে। তার চাহনিরত অবস্থায় হুট করে সম্পদ বেলকনিতে ঢুকলো৷ তার ঠোঁটের মাঝে জ্বলন্ত সিগারেট। লম্বা করে টান দিয়ে ভুসভুস করে ধোঁয়া ছাড়ছে। সিগারেট টান দেওয়া দেখে আনাড়ি মনে হচ্ছে না। প্রথমবার নয়। স্পষ্ট অভিজ্ঞতা আছে। শ্বাস ফেলে সে তাকিয়ে সম্পদের গতিবিধি পরখ করতে লাগলো।
আঙুলের ফাঁকে সিগারেট গুঁজে সম্পদ বেলকনিতে পায়চারি করছিল। তার দৃষ্টি উদ্ভ্রান্ত। সিগারেটের ছাই গুলো ঝরে পড়ছে ফ্লোরে। কখনো সে মাথার চুলে হাত বুলাচ্ছে, কখনো আবার পায়চারি থামিয়ে রাতের শহর দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। সিগারেট অর্ধেকের বেশি শেষ হয়ে এসেছে। বেলকনির গ্রিল থেকে হাত সরিয়ে সে বাকি অংশ শেষ করলো৷ ছোট্ট জ্বলন্ত টুকরোটি ছুঁড়ে ফেলে দিল। বেলকনি থেকে সরে আসার সময় অকস্মাৎ পাশের রুমের জানালার দিকে তাকালো। তিথির চোখে চোখ পড়তে ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো। চাপা আর্তনাদ করে বলল,
‘জানালার ধারে কি করছো?’
কোনো উত্তর এলো না। তবে জানালার ওপাশের তিথির ছায়াটি সরে গেল। সম্পদের কপাল কুঁচকে গেল। কয়েক সেকেন্ড যেতে ভয় জেঁকে ধরলো। ওখানে সত্যি সত্যি তিথি ছিল তো? নাকি সে কল্পনায় দেখলো? পরখ করার জন্য দ্রুত রুমে এলো। বাইরে বের হয়ে দেখলো তিথি প্লেটে খাবার এনে টেবিলে বসে পড়েছে। তিথি তার দিকে পেছন ঘুরে বসে আছে। সে আর এগিয়ে গেল না। কিছুক্ষণ সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে রুমে চলে এলো।
৮.
মধ্যরাত! সম্পদের ঘুম আসছে না কিছুতেই। দীর্ঘক্ষণ এপাশ ওপাশ করে সে উঠে পড়লো। রুমে আবছা আলো। বেলকনির আলো অনেকখানি রুমে এসেছে। সেই আলোতে ফের ল্যাপটপ খুলে বসলো সে। কিছুক্ষণ স্ক্রিণের দিকে তাকিয়ে রইলো। পানির তৃষ্ণা পেতে ল্যাপটপ বন্ধ করে উঠে পড়লো। ছিটকিনি খুলে ড্রয়িং রুমে প্রবেশ করলো। ড্রয়িং রুমে আলো জ্বলছে। অন্যান্য দিন সে এখানকার আলো বন্ধ করে রাখতো। আজ তিথির জন্যই অন রেখেছে। যাতে ভয় না পায়। এগিয়ে গিয়ে সে রান্নাঘরে ঢুকলো। ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানির বোতল বের করলো। সাথে বের করলো বেশ কিছুদিন আগের রাখা আপেল। আপেলের বাহিরটা চেক করে দেখলো নষ্ট হয়নি। বেসিনে ধুয়ে সে আপেলে দিল এক কামড়।
তারপর রান্নাঘর থেকে বের হলো। এক হাতে পানির বোতল নিয়ে আপেল খেতে খেতে সে তিথির রুমের দিকে তাকালো। দরজা ভেতর থেকে বন্ধ মনে হচ্ছে। কেন জানি সে দরজার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। কাছাকাছি পৌঁছাতে হঠাৎ তার কানে কান্নার আওয়াজ আসতে লাগলো। সেই সাথে চাপা আর্তনাদের। বুকের ভেতর ধ্বক করে উঠলো তার। হাতের বোতল খসে পড়লো। সে দরজায় ধাক্কা দিয়ে ক্রামগত ডাকা শুরু করলো,
‘তিথি? তিথি? দরজা খুলো! দরজা খুলো তাড়াতাড়ি।’
ভেতরের কান্নার আওয়াজ যেন বেড়ে গেল। সেই সাথে বেড়ে গেল সম্পদের বুকের অপ্রত্যাশিত ঝড়। তিথির কিছু হয়নি তো? ধুপধাপ কিল দিয়ে সে দরজা খোলার চেষ্টা করলো। আর তিথিকে ডাকতে লাগলো। তার সৃষ্ট শব্দের পরিমাণ বেড়ে যেতে আচমকা দরজা খুলে গেল। কিছু বুঝে উঠার আগেই অন্ধকার থেকে এক নারীমূর্তি এসে তার বুকে আছড়ে পড়লো।
(চলবে)
ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো। কিছু সমস্যায় আছি। গল্প লেখার সময় পাচ্ছি না। সেজন্য অনিয়ম হচ্ছে।🧡