প্রেমাধিকার পর্ব ৫

#প্রেমাধিকার💝[ The_Egoistic_Love ]
#Written By: Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr [ Mêhèr ]
Part: 05…….

আরিয়া: দেখুন আশা করি নেক্সট টাইমে দুরত্বটা বজায় রেখে চলবেন…. [ বলেই রুম থেকে বেড়িয়ে যায়…. ]

রাজ: Oh no…. রাগের বসে এ কি করলাম আমি??? আমার সবটা প্লান নিজে হাতে নষ্ট করে দিলাম। এখন আরিয়া কি ভাববে আমাকে…..

[ প্রচন্ড রাগ লাগছে নিজের উপর…. কেন করল ও এরকম বোকামি….
,
রাজ আরিয়াকে সরি বলার চেষ্টা করেও পারেনি কারন আরিয়া বার বার রাজকে ইগনোর করেছে। কেন জানিনা আরিয়ার রাজকে ঠিক লাগছে না। সবসময় একটা রহস্যের জালে ফেলতে চায় আরিয়াকে……

ওখানে সব কাজ মিটে গেলে আরিয়া হোটেলের রুমে চলে যায়। গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় বসে ফোন চেক করে। কিন্তু অদ্ভুতভাবে ইশাদের কোন ফোন বা মেসেজ দেখতে পায় না। সারাদিনে এতটা ব্যস্ত ছিল যে ইশাদকে জানানো হয়নি যে ও চট্টগ্রাম এসেছে। ওর ফোন না পেয়ে আরিয়া নিজেই ইশাদকে কল দেয়…… কিন্তু বার বার ফোনটাকে সুইচড অফ বলছে…..

আরিয়া: ইশাদের মোবাইল তো কখনো বন্ধ থাকে না তাহলে…. ইশাদের কোন বিপদ হলো নাত….

[ ভেবেই বুক কেপে উঠে। ও বার বার মোবাইলে কল করছে কিন্তু বার বার তা সুইচড অফ বলছে ]

আরিয়া: নাহ ইচ্ছেকৃত ভাবে কল না দিয়ে ইশাদ থাকবে না। নিশ্চয়ই ওর কোনো বিপদ হয়েছে…. [ আরিয়া আর একমুহূর্তে অপেক্ষা করে না। ও নিজের ব্যাগ আর মোবাইল নিয়ে বেড়িয়ে সাদের কাছে যায়….. ]

সাদ: আরিয়া মেম আপনি…..

আরিয়া: এখানে তো আর কোনো কাজ নেই তাই না।

সাদ: হ্যা কিন্তু কেন???

আরিয়া: আমরা ফিরছি কবে…???

সাদ: কাল… কারন আমি অনেক চেষ্টার পরও প্লেনের টিকিট পাইনি।

আরিয়া: ওকে দেন আপনারা কাল আসুন আমাকে এখনো ঢাকায় ব্যাক করতে হবে।

সাদ: এসব কি বলছেন??? আমি স্যারকে কি বলব???

আরিয়া: আপনি ওনাকে ইনর্ফম করে দেবেন। আর বাকি কথা আমি ওনার সাথে বলে নেব…..

সাদ: কিন্তু মেম এখন অনেক রাত হয়ে গেছে আপনি যাবেন কিভাবে…..???

আরিয়া: সেটা তোমাকে চিন্তা করতে হবে না। আমি বাসে বা অন্য কোনো ভাবে ম্যানেজ করে যেতে পারব।

সাদ: কিন্তু মেম…..

কিন্তু আরিয়া কোনো কথাই শুনল…..

সাদ: এখন কি করি স্যার যদি জানতে পারেন ওনি চলে গেছে তাহলে আমাকে এখানে পুতে দিয়ে যাবে….

তখনি সাদ রাজকে ফোন দেয়….

সাদ: হ্যালো স্যার.. আরিয়া মেম হোটেল থেকে বেড়িয়ে ঢাকায় ব্যাক করছে।

রাজ: What… এই মুহুর্তে ও কিছুই পাবে না। আর এই জায়গা কতটা রিক্স তুমি তো জান???

সাদ: স্যার আমি ওনাকে না করেছি কিন্তু ওনি….. তো আমার কোনো কথা না শুনেই বেড়িয়ে গেলেন….

রাজ: Oh god…. আচ্ছা আমি আসছি তুমি একটা গাড়ির ব্যবস্থা করো।

সাদ: ওকে স্যার.।।।।

,
,
,
,
,
,
,
কিছুক্ষন পর রাজ ইশাদের কাছ থেকে চাবি নিয়ে বেড়িয়ে যায়…

,
,
,
,
,
,
,এদিকে রাস্তায় নেমে আরিয়ার হুশ ফেরে। আরিয়া বেশ ভালোই বুঝতে পারছ হুটহাট করে বেড়িয়ে কত ভুল করেছে। তাছাড়া এই শীতের রাতে আর যাই হোক গাড়ি পাওয়া যাবে না। এদিকে মোবাইলের চার্জ প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। এখন কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। আর অনেকটা রাস্তাও চলে এসেছে….

আরিয়া: নাহহহ…… আমাকে যেকরেই হোক ঢাকায় ব্যাক করতে হবে। [ এই ভেবে ও বাসের জন্য বাস স্যান্ডে যাওয়ার রাস্তা ধরে। তখনি ওর সামনে একটা গাড়ি থামে। আরিয়া প্রথমে একটু ঘাবড়ে যায়। কিন্তু রাজকে গাড়ি থেকে নামতে দেখে কিছুটা শান্ত হয় ]

রাজ: কোথায় যাচ্ছেন আপনি??? 😡😡 এখনি আমার সাথে হোটেলে ব্যাক করবেন। [ আরিয়ার হাত ধরে ]

আরিয়া: মি. রাজ আমার হাতটা ছাড়ুন।😡😡 আমি আজ & এই মুহুর্তে ঢাকায় ব্যাক করব….

কথাটা শুনে রাজের প্রচন্ড রাগ উঠে। ও চোখ বন্ধ করে নিজের অন্য হাত মুঠ করে নিজের রাগটা কন্ট্রোল করে। তারপর আরিয়ার হাতটা ছেড়ে দেয়….

রাজ: আপনি জানেন এই রাস্তাটা আপনার জন্য কতটা রিক্সি হতে পারে। কেন অবুঝের মত জেদ করছেন???

আরিয়া: আমি কি করছি না করছি সেটা আপনার না ভাবলেও চলবে। আর এমনিতে আমি আপনার কোনো চাকর নেই যে আমাকে আপনার সব কথা মেনে চলতে হবে। আমার দরকার তাই আমি যাচ্ছি সো আমাকে বাধা দেওয়ার কোনো রাইট নেই আপনার। আর না কোনো প্রয়োজন……. [ কথাটা বলেই আরিয়া চলে যেতে নেয় কিন্তু যেতে পারে না। তার আগেই রাজ আরিয়াকে টেনে ওর হাত দুটো গাড়ির সাথে শক্ত করে চেপে ধরে…… তারপর বলতে শুরু করে….

রাজ: আপনাকে আটকানোর কমপ্লিট রাইট আমার আছে। আর সাথে প্রয়োজন ও। আপনি আমার সাথে এখানে এসেছেন আমার কোম্পানির কাজে। আর এখানে থেকে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আপনার টোটাল রেসপনসেবলিটি আমার। এখন যদি আপনার কিছু হয়ে যায় তার দায় আমার আর আমার কোম্পানিকে নিতে হবে। আর আপনার কিছু হয়ে গেল না আপনি এসে বলে দিয়ে যাবেন না যে আপনি নিজের জেদে আপনার অবস্তা খারাপ করেছেন। তাতে আমার দোষ নেই। আর এখানে যদি কেউ আপনার সাথে কিছু করে বা আপনাকে মেরে ফেলে কেউ জানতেও পারবে না। তখন সবাই আমাকে জিজ্ঞেস করবে। [ প্রচন্ড রেগে আরিয়ার খুব কাছে গিয়ে ]

আরিয়া: কিন্তু আমার আজ ঢাকায় ব্যাক করতেই হবে সো কথা না বাড়ানোই ভালো….

রাজ: তারমানে আপনি আমার কথা শুনবেন না তাইত😡😡

আরিয়া: আপনার মনে হলে তাই…… 😡😡

রাজ: ঠিক আছে আজকে আপনি যাবেন….. তবে…. [ আরিয়াকে ছেড়ে পকেটে হাত দিয়ে ]

আরিয়া: কি???

রাজ: তবে একা না। আমার সাথে.।।।

আরিয়া: মানে…..

রাজ: আমি আপনাকে একা ছাড়ব না। সেটা আমার কোম্পানির সুনামের জন্য রিক্সি। সো আপনাকে যদি আজকেই যেতে হয় তবে আমার সাথেই যেতে হবে। নাহলে আমি আপনাকে কিছুতেই যেতে দিতে পারছি না।

আরিয়া: কিন্তু….

রাজ: এখানে আপনি যাওয়ার মত কোনো বাস বা যানবাহন কিছুই পাবেন না। Choice is yours…. কি করবেন আপনি…..

আরিয়া কিছুক্ষন চুপ থাকল….

আরিয়া: ওকে মি. রাজ আমি যাব।

রাজ: তবে চলুন…….

রাজ গিয়ে গাড়িতে বসে। আর আরিয়াও গাড়িতে উঠে বসলে রাজ ড্রাইভ করা শুরু করে। আর আরিয়া জানালার দিকে তাকিয়ে আছে। বাইরে থেকে ঠান্ডা বাতাস আসছে। বেশ শীত করছে ওর…. ও জানালার কাচটা হালকা উঠিয়ে দিয়ে আবার বাইরেটা দেখতে থাকে। আর রাজ আড়চোখে আরিয়াকে দেখে নিচ্ছে। বেশ অদ্ভুত লাগছে ওর কাছে…. একটা মেয়ে এতটা অবাধ্য কিভাবে হয় সেটাই ভাবছে। রাজ যতটা ভেবেছে তার চেয়েও বেশি অবাধ্য ও…. রাজ খুব ভালো করে বুঝেছে ও জোর করলেও আরিয়া শুনত না। তাই ওকে আসতে না করে নিজেই ওর সাথে চলে এলো….

এসব ভাবতে ভাবতে আরিয়ার দিকে চোখ যেতেই দেখে আরিয়া ঘুমিয়ে পরেছে। আবছা অন্ধকারে অমায়িক লাগছে ওকে। কিছুক্ষন পর পর কেপে উঠছে আরিয়া। রাজ বুঝতে লেরেছে আরিয়ার শীত লাগছে। রাজ গাড়ি থামিয়ে কাচটা উঠিয়ে লক করে দেয়। নিজের কোটটা খুলে আরিয়ার গায়ে জড়িয়ে দিতেই রাজ আরিয়ার খুব কাছে চলে যায়। আরিয়ার নিশ্বাস রাজের মুখে বাড়ি খাচ্ছে। আরিয়া কাটা সিল্কি চুল গুলো আরিয়ার নাক মুখ ঢেকে দিয়েছে তাই রাজ খুব সাবধানে ওর চুল গুলো কানের নিচে গুজে দিয়ে ওর আরো কাছে যায়। ঠিক তখনি রাজের হুশ ফেরে ও দ্রুত আরিয়ার কাছ থেকে সরে আসে……

রাজ কিছুটা ইতঃস্তত হয়ে আবার গাড়ি স্টার্ট দেয়৷ এভাবেই চলতে থাকে গাড়ি। আর রাজ আরিয়ার ঘুমন্ত মুখটাকে দেখতে থাকে……

এভাবে চলতে চলতে অনেকটা পথ চলে আসে ওরা। কিন্তু তখনি ঘটে বিপক্তি গাড়িটা হঠাৎ থেমে যায়। আচমকা থেমে যাওয়ার কারনে আরিয়া ধাক্কা খেয়ে ঘুম ভেঙে যায়।

আরিয়া: কি হয়েছে…..?

রাজ: জানিনা। গাড়িটা স্টার্ট নিচ্ছে না। [ রাজ বেশ কয়েকবার ট্রাই করল কিন্তু হলো না। ]

রাজ: মনে হয় তেল ফুরিয়ে গেছে….

আরিয়া: এইযে কেমন গাড়ি চালান। গাড়িতে তেল আছে কিনা জানেন না। 😡😡😡

রাজের খুব রাগ হচ্ছে এবার.. কেন এই মেয়ের কথা শুনতে গেল…

রাজ: আচ্ছা আপনি কি কখনো সাধারণ মেয়েদের মত ভাবতে পারেন না। আমি কি এখানে নিজের গাড়ি নিয়ে এসেছি। নাকি এটা ভেবে এসেছি আপনাকে নিয়ে এভাবে ঢাকায় ব্যাক করব। [ ধমক দিয়ে ]

আরিয়া: তাহলে আপনি কেন তেল আছে কিনা চেক করেননি…

রাজ: আবার এক কথা। আচ্ছা আমাকে দেখে ড্রাইভার মনে হচ্ছে আপনার। আমি রাজ আহমেদ। দেশের নামকরা ব্যবসায়ী কোনো ড্রাইভার নই।

আরিয়া: দেখুন…. 😡😡

রাজ: আর কিছু দেখতে চাইনা। এমনিতেও এইটুকু সময়ে কম কিছু দেখাননি…..

আরিয়া: 😡😡😡

রাজ: এবার নামুন। এখানে কোথায় তেল পাওয়া যায় কিনা দেখতে হবে।

আরিয়া:….😡

রাজ: এমনিতে খাটিয়ে খাটিয়ে আমার তেল বের করে দিল…. এখন দেখ মহারানী হয়ে বসে আছে…. [ বিড়বিড় করে ]

আরিয়া: কিছু বললেন.।। 😡😡

রাজ: নাহহ.. এমনি… আচ্ছা আপনার মোবাইলটা দিন।

আরিয়া: কেন😡

রাজ: আমি তাড়াহুড়ো করে মোবাইল আনতে ভুলে গেছি…. এখন সাদকে ফোন দিয়ে লোকেশনটা জানাতে হবে।

আইয়া: এই নিন….

রাজ মোবাইলটা হাতে নিয়ে ফিরিয়ে দিল।

রাজ: থাক লাগবেনা।

আরিয়া: কেন???

রাজ: আপনার মোবাইলের গাড়ির মত তেল শেষ। মানে চার্জ নেই তাই বন্ধ হয়ে গেছে।

আরিয়া: Oh noo..

রাজ: চলুন আমার সাথে।

আরিয়া: কোথায়?

রাজ: দেখি আশে পাশে কোনো কিছু পাই কিনা?

আরিয়া: আমি যাব না কোথাও। আপনি যান।

রাজ: সিরিয়াস আপনি এখানে একা থাকবেন।😲😲

আরিয়া চারপাশে তাকিয়ে দেখে ওরা একটা নির্জন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। আশেপাশে কয়েক কিলোমিটারে বাড়ি আছে বলে মনে হয় না।

আরিয়া: আমার কোনো সমস্যা হবে না। আমি ভিতু নই….

রাজ: ওকে.. তাহলে আমি আসি আপনি গাড়ি পাহারা দিন…. [ বলে চলে যায় ]

,
,
,
,
.
.
.
.
.
.
বেশ অনেকক্ষন হয়ে যায় কিন্তু রাজের কোনো খবর নেই। আরিয়া গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ায়। তখনি শিয়ালের ডাক শুনে আতকে উঠে।

হঠাৎ দুরে অন্ধকারের মাঝে কিছু জলতে দেখে। আরিয়া বেশ ভয় পেয়ে যায়। হঠাৎ দেখে জলন্ত আলো গুলো ওর দিকে আসছে আরিয়া কি করবে ভেবে না পেয়ে দৌড় দেয়। আর কোনো কিছুর সাথে প্রচন্ড ধাক্কা খায়….
.
.
.
ও মুখ উঠিয়ে রাজকে দেখতে পায়। এতটাই ভয় পেয়েছে কোন দিক না পেয়ে রাজকে জড়িয়ে ধরে প্রায় কান্না করে দেয়। আরিয়ার এমন ব্যাবহারে রাজের চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম। তবে এতটুকু বুঝতে পারে ও ভয় পেয়েছে…..

আরিয়া: কোথায় গিয়েছিলেন আসতে এত সময় লাগে….. [ ভয়&কান্না মিশ্রিত কণ্ঠে ]

রাজ: cool down… মিস আরিয়া। শান্ত হন……

আরিয়া তখনি রাজকে ছেড়ে দাঁড়ায়….

আরিয়া: সরি আসলে…..

রাজ: সরি বলতে হবে না আমি কিছু মনে করিনি…

আরিয়া: এত সময় লাগল যে আর খালি হাতে কেন??

রাজ: যদি জানতাম এখানে তেল পাওয়া যাবে না তাহলে একটা তেলের দোকান দিতাম। না মানে আমার জন্য কেউ এই জায়গায় তেলের দোকান নিয়ে বসবে না।আর সকাল না হওয়া পর্যন্ত এখানে ওয়েট করতে হবে সো……

আরিয়া: মানে…. 😡

রাজ: পায়নি…. আচ্ছা এত ভয় পেয়েছিলেন তাহলে আমার সাথে গেলেই তো পারতেন….

আরিয়া: দেখুন… 😡😡

রাজ: আসলেই তো দেখার মত….

আরিয়া: what…. 😡😡😡

রাজ: উহুহ… ওদিকে দেখুন….

আরিয়া পিছনে তাকাতেই দেখে একটা পুকুর। সেই পুকুরে পুর্নিমার চাদের ছায়া পরেছে। তার সাথে হাজার জোনাকির আলোতে অপরুপ রুপে সাজিয়েছে সবটা. ….. আরিয়া অবাক চোখে দেখতে থাকে প্রাকৃতির এই সৌন্দর্য….

রাজ আরিয়ার পিছে গিয়ে দাঁড়ায়….

রাজ: যাবেন ওখানে…

আরিয়া মাথা নাড়িয়ে না বলে। কিন্তু ও যেতে চায়।

রাজ: আচ্ছা আপনার যেতে হবে না আমি যাচ্ছি….. আপনি এখানে বসে শিয়ালের ডাক শুনেন….

রাজ পুকুরের দিকে যায়। উপায় না পেয়ে আরিয়া রাজের পিছু পিছু যায়…… রাজ পুকুর পারে গিয়ে বসে পরে। আরিয়া একটু অবাক হয় এত বড় বিসনেসম্যান অথচ তেমন কোনো কিছু প্রকাশ পায় না। পুকুর পাড়ে বসে রাজ মাটির টুকরো পুকুরের পানিতে ফেলতে থাকে….

রাজ: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনি জেদ না করলে এই সুন্দর রাতটা আমি পেতাম না। অনেক আগেই এটা আমার লাইফ থেকে চলে গেছে যেটা আজ আপনার জন্য আমি পেয়েছি…… দাঁড়িয়ে কেন বসুন….

আরিয়া কিছু না বলে গুটি মেরে বসে পরল…. ওর শীত করছে। রাজ তখনকার কোটটা নিয়ে গিয়েছিল আরিয়ার দিকে তা এগিয়ে দেয়…..

আরিয়া: লাগবে না।

রাজ: নিয়ে নিন…. এখানে শুধু ঠান্ডা না মশা নামের কিছু প্রানীও আছে।

আরিয়া রাগ করেই রাজের হাত থেকে কোটটা নেয়। এটা দেখে রাজ মুচকি হাসে…. রাজ চোখ বন্ধ করে চারপাশ ফিল করতে থাকে….

রাজ: জানেন তো মাঝে মাঝে এমন পরিবেশে থাকতে হয়….. নাহলে জীবনের মুল্য থাকে না। আমারো মন চায় এভাবে থাকতে কিন্তু কি করব বলেন ফরমাল লাইফ বেচে থাকতে থাকতে তা হয় না। কিন্তু ওই লাইফে দম বন্ধ হয়ে আসে। তিক্ততা ভরে গেছে তাতে….. [ বলেই ঘাসের উপর শুয়ে পরে হাতে মাথা রেখে তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা গোনার বৃথা চেষ্টা করে ]

আরিয়া: তাহলে এভাবে থাকলেই তো পারেন….

এটা শুনে রাজ একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দেয়।

রাজ: You know what miss ariya…. লাইফে আর যাই হোক মানুষ কখনো একা থাকতে পারে না। আজ আমার এই মুহুর্তটা খুব ভালো লাগছে কারন আপনি আছেন বলে কিন্তু এই সময়টাই যদি আপনি না থাকতেন তবে সেটা বিষাদময় লাগত।

আরিয়া: ও তারমানে আপনার কারো company চাই….. তাইত

রাজ: কিছুটা তেমনি। কারন একা একা কিছু দেখা আর কাউকে সাথে নিয়ে দেখায় পার্থক্য রয়েছে।

আরিয়া: then…. এমন কাউকে নিলেই তো হয় যার সাথে লাইফ লং থাকতে পারবেন।

রাজ: সারাজীবন এতটা দৌড়েছি যে এসব নিয়ে ভাবার সময় পায়নি। তাই কেউ কোনোদিন আসে নি। তা আপনার…..

আরিয়া: এরকম মুহুর্ত আমি অনেক কাটিয়েছি তাও…..

রাজ: থাক আর শুনতে ইচ্ছে করছে না। একটু নিজের মত থাকতে চাই….

আরিয়া আর কোনো কথা বলল না। আসলেই পরিবেশটা এতটা সুন্দর যে কারো মন শান্ত করে দেবে। আরিয়া নিজের চোখ দুটো বন্ধ করে আছে।

এভাবেই কেটে যায় অনেকটা সময়। ঠান্ডা বাতাসে কেপে উঠছে আরিয়া। আর রাজ ওর মুখটার দিকে দেখে। হঠাৎ করেই আরিয়া ঢলে পরতে ধরে। তখনি রাজ আরিয়াকে ধরে নেয়। বুঝতে পারে ও ঘুমিয়ে গেছে। এটাই স্বাভাবিক কারন সারাদিন কম কাজ করেনি শরীর ক্লান্ত তাই…… রাজ আরিয়ার মাথাটা ওর বুকের ডান পাশের কাধে রাখে। আর ওকে ডান হাত দিয়ে ধরে….

রাজ: সত্যি এর আগে কখনো কারো প্রতি এমন ফিলিংস আসেনি। আপনি প্রথম যার জন্য আমার মনে একটা অনুভুতি সৃষ্টি হয়েছে যাকে অনেকে ভালোবাসা বলে যদিও আমার কাছে এতদিন সেটা মুল্যহীন একটা Word ছিল। কিন্তু আপনাকে দেখার পর সেটাই লাইফের মিনিং হয়ে গেছে…. [ বলে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে ] আমি আপনার সাথে আমার দিনগুলো রাতগুলো এই ভাবে কাটাতে চাই। জানিনা এতে আপনার জবাব কি হবে….. কিন্তু আমি কি পারব আপনাকে ছেড়ে দিতে…….,

,
,
,
,,
এভাবে আরিয়াকে বুকে রেখে বসে থাকে আরিয়া। হঠাৎ খেয়াল করে আরিয়ার হাত মুখ ঠান্ডা হয়ে গেছে। এই ঠান্ডা বাতাসে এমনটা হয়েছে।

রাজ: এভাবে থাকলে সমস্যা হয়ে যাবে। নাহহহ……

রাজ আরিয়াকে কোলে তুলে নেয়। তারপর গাড়ির মধ্যে ওকে শুইয়ে। গাড়ির কাচ বন্ধ করে দেয় যাতে বাতাস না আসে…. রাজ চেয়েও আরিয়ার থেকে দুরে থাকতে পারছেনা। তাই আরিয়ার মাথাটা নিজের বা পাশে রেখে ওকে দেখতে কখন ঘুমিয়ে পরে নিজেও জানেনা……

সকালে ঘুম থেকে উঠে আরিয়া দেখে ও আর রাজ খুব কাছাকাছি। আরিয়া দ্রুত ওর থেকে দুরে সরে যায়….. আর রাজের ও ঘুম ভেঙে যায়।

রাজ: কিহল আপনার। [ হাই তুলে ]

আরিয়া: আমাকে এখানে কিভাবে???

রাজ: আমি নিয়ে এসেছিলাম। আসলে আপনি ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন তাই ডাকিনি।

আরিয়া:…….

রাজ নেমে গাড়ি থেকে পানির বোতল বের করে নিজের চোখে মুখে পানি দিয়ে বোতলটা আরিয়ার দিকে এগিয়ে দেয়। আরিয়া রাজের হাত থেকে বোতলটা নিয়ে নিজেও মুখে পানি দিয়ে নেয়।

আরিয়া: কিভাবে যাব এখন…..

রাজ: সাদকে ইনফর্ম করে….

আরিয়া: কিভাবে করবেন???

রাজ: মোবাইল দিয়ে….

আরিয়া: আপনি না বললেন মোবাইল নিয়ে আসেননি???

রাজ: আমি কখন বললাম আমার ফোন।

আরিয়া: তাহলে……

রাজ: আপনার ফোন যেটা আমি কাল রাতে গাড়িতে চার্জ দিয়ে রেখেছিলাম। পরে সাদকে ইনফর্ম করে জানিয়ে দিয়েছি আমরা কোথায় আছি। গাড়ি কিছুক্ষনের মধ্যে চলে আসবে……..

আরিয়া: আমি এখনো ঢাকায় যেতে পারলাম না।

রাজ: বড়দের কথা না শুনলে এমনই হবে…

আরিয়া: কি বললেন???😡

রাজ: কি বলেছি।।।😁

আরিয়া: আপনি এতবড় বিজনেসম্যান কিন্তু মাঝে মাঝে লোফার মনে হয়…..

রাজ: বিজনেসম্যানদের বুঝি মন বলে কিছু থাকে না…. [ বিড় বিড় করে ]

আরিয়া: কিছু বললেন😡

রাজ: আজব আপনাকে কি আমার সব কথাই শুনতে হবে….

আরিয়া: What ever…… 😡😡😡

রাজ মুচকি হাশে…….

রাজের অবস্থা দেখে আরিয়া কি করবে বুঝতে পারছে না। রাজ যেন নিজের ক্যারেক্টারটাই চেঞ্জ করে ফেলেছে। ও রাস্তার দিয়ে যাওয়া সমস্ত লোকদের সাথে আগ বাড়িয়ে কথা বলছে। রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়া যেমন রস গুড় যা পাচ্ছে তাই খাচ্ছে। যেন কলেজ পড়ুয়া কোনো ছেলে…..

আরিয়া: মি. রাজ আপনি কি করছেন এসব??

রাজ: খাচ্ছি….. [ রস খেতে খেতে ] আপনি খাবেন.….

আরিয়া: নো থ্যাংকস ….. [ প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে ]

রাজ: এটা কি মেয়ে… ধুর… [ বলে পেট পুরে খেয়ে নেয় ]

,
,
,
,
তার বেশ কিছুক্ষন পর গাড়ি আসে…..

রাজ: চলুন…..

রাজ গিয়ে গাড়িতে বসে। আরিয়া বসলে বলে….

রাজ: যাই বলেন রসটা সেই ছিল। [ ঢেকুর তুলে ] এত টেস্ট তো ড্রিংক…..

আরিয়া রাগী চোখে ওর দিকে তাকায়……

রাজ: না কিছুনা। [ মুখে হাত দিয়ে ]

তারপর ওর চলতে শুরু করে। অনেকটা সময় লাগে ঢাকায় ফিরতে। সন্ধ্যা গড়িয়ে আসে….. তারপর রাজ আরিয়াকে ওর বাড়ি নামিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আরিয়া না করে কারন ও ইশাদের কাছে যাবে।

রাজ চলে গেলে ও ইশাদের বাড়ি যায়। ইশাদের বাড়ি গিয়ে যা দেখে তাতে ওর মেজাজ টাই বিগড়ে যায়…….

আরিয়া: ইশাদ তোকে আজকে……. 😠😠😠😠
,
,
,

,
,
,
,
,
[ বাকিটা পরের পর্বে জানবেন ]
..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here