#ভালোবাসো কি আমায়🍁
#Part-08
#Writer#Saima Islam Mariam❤
.
🍁
.
-মায়া প্লিজ বিলিভ মি।আমি সব কিছু করিনি।ইভেন আমি আনিতা কে ছিনি না।প্লিজ বিলিভ মি!(রাফি)
– প্লিজ রাফি ড্রামা করো না। ড্রামা আমার পছন্দ না(মায়া)
– মায়া ট্রাস্ট মি। আমি আনিতাকে ছিনি না ওর সাথে আমার কোনো রিলেশন নাই এন্ড ছিলোও না(রাফি)
– তাহলে আমার ফ্রেন্ড আমাকে মিথ্যে কথা বলছে।আর তোমার ছবি সেটাও কি মিথ্যে(মায়া)
– মায়া আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে কেউ আমাকে ইচ্ছে করে ফাঁসিয়েছে(রাফি)
মায়া রাফি যা বলছে তাই সত্যি।রাফি এইসব কিছু করেনি রাফি সেজে এই সব অন্য কেউ করেছে।…. মায়া আর রাফি দুইজনে পিছনে ফিরে কথা গুলো কে বলেছে তা দেখার জন্য
— দুইজনে পিছন ফিরে তাকাতে শক খাই।কথা গুলো লিজা মায়ার পিছনে দাঁড়িয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলতেছে।লিজা ওদেরকে আবার অবাক করে দিয়ে বলতে শুরু করে
— মায়া সত্যি বলতেছি রাফি এই সবের কিছুই জানে না।ইভেন রাফি আগে কারো সাথে কোনো রিলেশন ছিলো না।এইসবের পিছনে অন্য কেউ আছে আর সেটা হলো……
— মায়া রাফি দুইজনে অবাক হয়ে বলে… কে করেছে এইসব লিজা আপু?
— সে আর কেউ না আমাদের খুব আপন জন, যাকে আমার ফ্রেন্ড ভেবে ভুল করেছি।যে আমাদের বন্ধত্বের সুযোগ নিয়ে আমাদের দিনের পর দিন ঠকিয়েছে!!!(লিজা)
— সে কে আপু?(মায়া)
— সে হচ্ছে আমাদের খুব প্রিয় ফাহাদ!!
মায়া রাফি আরো একদফা শক খাই।রাফি এতোক্ষন চুপ করে ছিলো,,, ফাহাদের কথা শুনে আর চুপ করে থাকতে পারেনি
–লিজা তুই এইসব কি বলছিস? তোর মাথা ঠিক আছে তো? ফাহাদ এইসব কেনো করবে?ও তো আমাদের ফ্রেন্ড!(রাফি)
–হ্যাঁ, আমার মাথা একদম ঠিক আছে।আমিও সাবার মতো ফাহাদ কে ফ্রেন্ড ভেবে ভুল করেছি!! কিন্তু যে দিন ফাহাদের সত্যি টা জেনেছি সেদিন থেকে আমি ফাহাদ কে ঘৃণা করি!(লিজা)
— সত্যি টা জেনেছিস মানে কি?(রাফি)
— সত্যি টার মানে হলো ফাহান তোকে আর রেহানকে হিংসে।তোদের কে সহ্য করতে পারে না।তাই ও তোর আর রেহানের পিক দিয়ে ফেক ফেসবুক আইডি দিয়ে মিথ্যে প্রেমের অভিনয় করে যাতে করে তোর আর রেহানের মাঝে ভিবাদ সৃষ্টি হয়।এইসব কিছু আমি জেনে যাওয়ার পর আমাকে থ্রেড করে যদি আমি এইসব কিছু কাউকে জানায় তাহলে স তোদের ক্ষতি করে দিবে। তাই ভয়ে কাউকে ওর সত্যি টা বলিনি। বাট এইখানে এসে তোদের সব কথা শুনার পর আর চুপ থাকতে পারিনি!(লিজা)
— লিজা!! রাফি অবাক হয়ে লিজার দিকে তাকিয়ে আছে
–তার মানে সব কিছুর মাষ্টার মাইন্ড ফাহাদ ভাইয়া!! অনেক ঠান্ডা মাথায় এই বড় গেমটা খেলেছে(মায়া)
— ইয়েশ মায়া! তুমি একদম ঠিক ধরেছো। মায়া তোমাকে আরো একটা সত্যি কথা বলার আছে(লিজা)
— হুম বলো(মায়া)
— তুমি হয়তো খেয়াল করেছো কি না জানি না বাহ জানো কি না(লিজা)
— কি আপু?(মায়া)
—রেহান তোমাকে অনেক ভালোবাসে শুধু তোমাকে নিজের মুখে বলেনি।ভেবে ছিলো তোমার ইন্টারমিডিয়েট কমপ্লিট হলে তারপর বলবে(লিজা)
.
লিজার কথা শুনে গতকাল সন্ধ্যা বেলার কথা মনে পরে যায়। মায়া রাফি আর লিজা কে বলে।
—এইসব নিয়ে পরে কথা বলবো। আর ফাহাদ ভাইয়ার বিরুদ্ধএ একটা লিগ্যাল স্টেপ নিবে(মায়া)
মায়া এইসব বলে আর এক মুহূর্ত ও দাঁড়ায়নি দৌড়ে খান ভিলার দিকে ছুটে যায়।
রাফি মায়ার চলে দিকে তাকিয়ে আছে আর তার চোখ থেকে দুই ফোটা পানি গড়িয়ে মাটিতে পরে। লিজা রাফি কাঁদে হাত দিতে রাফি বলে
–আমার কি দোষ ছিলো বলতো, আমার সাথে কেনো এমনটা হলো।আমি তো শুধু মায়াকে ভালোবেসে ছিলাম(কান্না করে)
— দোস্ত মায়া তোর জন্য না। সো এইসব নিয়ে মন খারাপ করিস না। বাসায় চলে যা কাল কলেজ দেখা হবে।(লিজা)
তারপর দুজনে পার্ক থেকে বাসায় চলে যায়
.
🍁
.
# সন্ধ্যা ৭টা, খান ভিলা
মায়া ডোরবেল বাজাতে রিফতি দরজা খুলে দেয়। মায়া বাসায় ঢুকে দেখে নিলামা খান, রিফাত খান মাথায় হাত দিয়ে সোফায় বসে আছে। মায়া তাদের সামনে এসে বলে
— খালামনি,আঙ্কেল তোমার এইভাবে সোফায় বসে আছো কেনো?
— নিলিমা খান, রিফাত খান দুইজনে চুপ করে আছে।
মায়ার মনে খটকা লাগে,,,,,,,, দৌড়ে উপরে চলে যায়,,,, রেহানের রুমে গিয়ে দেখে রেহান নেই! ওয়াশরুমে আর বেলকনি,, এক এক করে সব জায়গায় দেখে রেহান কোথাও নেই।মায়া আবার দৌড়ে ড্রইং রুমে যায়।
খালামনি কে আবার আস্ক করে
—খালামনি রেহান ভাইয়া কোথায়? আমি সব জায়গায় খুঁজে দেখেছি ভাইয়া কোথাও নেই!
মায়া রিফতিকে আস্ক করে কেউ কিছু বলে না । মায়া এইবার পাগলের মতো কান্না করে দেয়
– হঠাৎ নিলিমা খান বলে উঠে।রেহান আজকে সন্ধ্যা ৬টার প্লাইটে লন্ডন চলে গেছে মায়া
.
মায়া তার খালামনির কথা শুনে ধপ করে ফ্লোরে বসে যায়। নিলিমা খান আবারও বলে উঠে
–রেহান আমাদের কিছু না বলে সব কিছু ঠিক করে বাসা থেকে বের হওয়ার আগে বলেছে, (কান্না করে)
মায়া বসা থেকে উঠে নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।দরজার পাশে বসে কান্না করতে থাকে। কান্নার করতে করতে এক পর্যায়ে বলে উঠে
–এটা তুমি কি করলে ভাইয়া? আমাকে সবটা বলার একটা সুযোগ ও দিলে না! কেনো করলে এটা? কেনো আমাকে না বলে চলে গেলে? ফঁপিয়ে ফঁপিয়ে কন্না করে।
আচমকা মায়ার মোবাইল বেজে ওঠে, মায়া মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে রাফি কল করেছে।
মায়া কল রিসিভ করতেই অপর প্রান্ত থেকে রাফি বলে ওঠে…#ভালোবাসো কি আমায়🍁
#Part-09
#Writer #Saima Islam Mariam❤
.
🍁
.
— মায়া আর ইউ ওকে। তখন ও ভাবে চলে গেলে কেনো?(রাফি)
–মায়া কিছু বলেছে না ফাঁপিয়ে ফঁপিয়ে কান্না করতেছে। রাফি মায়ার কান্না শুনে আবার বলে উঠে
— মায়া কি হয়েছে? কান্না করতেছো কেনো? রেহান কি কিছু বলছে নাকি রেহানের মা-বাবা কিছু বলছে?
–……………..
— প্লিজ মায়া চুপ করে থেকো না! কি হয়ে আমাকে সব খুলে বলো!
— রাফিফিফি,রেহান ভাইয়া লন্ডন চলে গেছে.(ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করে)
— হুয়াট? কখন গেছে?
— আজ সন্ধ্যা ৬টার প্লাইটে!
— ডোন্ট ওয়ারি, তুমি কান্না করো না।আমি রেহান কে কল দিচ্ছি।
— ওকে
— হুম,তুমি আর কান্না করো না। প্লিজ ডোন্ট ক্রাই মায়া পরী।
।
রাফি কল কেটে দেয়, কিছু সময় রাফি নিজেও কান্না করে তারপর রেহান কে কল দেয়।রেহান রাফি নাম্বার দেখে রেগে যায়! রাফি অনেক বার কল দেয় বাট রেহান কল রিসিভ করে না, রেহান এক পর্যায়ে ডিস্টার্ব ফিল হয়ে মোবাইল সুইচ অফ করে দেয়। রাফি রেহানের মোবাইল সুইচ অফ শুনে একটা দীর্ঘ ফেলে
.
🍁
# ৭মাস পর
আজ আনিতা আর রাফির বিয়ে। ৭মাস আগে মায়া একবার আনিতার বাসায় গিয়ে দেখে আনিতা সুইসাইড করার জন্য ফ্যানের সাথে একটা লম্বা কাপড় বাধছে, মায়া দৌড়ে গিয়ে আনিতা কে নামিয়ে থাপ্পড় মারে
–আনু তুই কি পাগল হয়ে গেছিস কি করছিস টা কি?
–মায়া রাফি কে ছাড়া বাঁচতে পারবো না রে। প্লিজ রাফিকে আমার কাছে এনে দে প্লিজ মায়া (আনিতা)
— বাঁচবি না মানে কি হ্যাঁ? শুন আনু তোর সাথে রাফির বিয়ে হবে এন্ড এনি কস্ট
মায়া রাফি সাথে ধিরে ধিরে আনিতার পরিচয় করিয়ে দেয় রাফি মায়ার দিকে তাকিয়ে আনিতা কে মেনে নেই।
আর বাকি রইলো ফাহাদ। রাফি মায়া,লিজা মিথিলা মিলে ফাহাদকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ফাহাদ যাওয়ার আগে বলে যায়।
— মায়া আমি তোমাদের জীবনে আবার ফিরে আসবো, তোমাদের কাউ কে আমি ছাড়বো না এটার প্রতিশোধ আমি নিবই, খুব শীঘ্রই আমি তোমাদের জীবন নরকে বিষিয়ে দিতে আসবো!!
আনিতা আজকে খুব সুন্দর করে সেজেগুজে স্টেজ এ বসে আছে মায়া গিয়ে আনিতার পাশে বসে।
— সত্যি দোস্ত তোর এই ঝৃণ কোনো দিনও শোধ করতে পারবো না,আমি সারাজীবন তোর কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো।(আনিতা)
— ধুর শাঁকচুন্নি। তুই আমার বেস্টু তোর জন্য আমি এই টুকু করতেই পারি (মায়া)
।
মায়া আনিতার সাথে আরো কিছুক্ষণ দুষ্টামি করে রাফির কাছে যায়।
— রাফি আনিতা কিন্তু খুব শান্ত শিষ্ট ও ভদ্র একটা মেয়ে, তুমি ভালোবেসে ও-কে যা করতে বলবে ও সব হাসি মুখে করবে,কখনও আনিতাকে কষ্ট দিও না প্লিজ,ও যদি কষ্টে থাকে ভাববে আমিও কষ্টে আছি
–রাফি মায়ার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে। এতোক্ষন মায়ার কথা গুলো মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করে।
— আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি আমি আনিতা কে খুব সুখে রাখব তুমি চিন্তা মুক্ত থাকতে পারো, আর আমার প্রতি আস্থা রাখতে পারো।
মায়া রাফির কথা গুলো চুপচাপ শুনে বিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে খান বিলাতে চলে যায়।
রাফি মায়ার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
— মায়া তুমি কেনো এমন করলে বলো তো, আমি তো শুধু তোমাকে সারাজীবন ভালোবাসতে চেয়েছি এর থেকে তো বেশি কিছু না(মনে মনে)
আনিতা আর রাফির বিয়েটা সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর রাফি আনিতাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে চলে যায়
#আজ রেহান বাংলাদেশের বাহিরে আছে প্রায় ১বছর ১১মাস। এই ১বছর ১১মাসে রেহান একটা বারের জন্য ও মায়ার কাছে কল করে তার খুঁজ খবর নেয় নি। মায়া অনেক বার রেহান কে কল দেয় কিন্তু প্রতিবারি মায়া শুনতে পাই মোবাইল সুইচ অফ। ১বছর ১১মাসে মায়া প্রতিটি মুহূর্তে রেহান কে একটু একটু করে ভালোবেসেছে। মায়ার প্রতিটা দিন শুরু হয় রেহানের ছবি দেখে আর প্রতিটা রাত রেহানের ছবি দেখে পার করে দেয়।
রেহান দেশে ফিরার দুইদিন আগে তার মাম্মাকে জানায়
— হ্যালো মাম্মা, আমি আর দুই
দিন পর দেশে ব্যাক করতেছি
— সত্যি বলছিস রেহান?
— হুম মাম্মা ৩সত্যি
— আমি অনেক খুশি হয়েছি রেহান!
— তোমাকে দেখবো বলে তো দেশে ব্যাক করতেছি
— হয়ছে হয়ছে আর বলতে হবে না, আমি জানি তুমি আমার জন্য দেশে ব্যাক করতেছো নাকি মায়া
পরীর জন্য সেটা আমি খুব ভালো করে জানি
— রেহান হু হা করে হেসে দেয়। বাই দ্যা ওয়ে মাম্মা মায়া পরী কেমন আছে?
— তেমন ভালো নেইরে রেহান, সারাদিন কেমন মন মরা হয়ে থাকে।
— রেহান কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে।মাম্মা এখন বাই পরে কথা বলবো
রেহান আর কিছু না বলে কল কেটে দেয়।
!
বিকালে মায়া ছাদে বসে আছে, নিলিমা খান হঠাৎ ছাদে এসে রেহানের দেশে ফিরার কথা জানায়। মায়া তো অনেক হ্যাপি, তার রেহান ভাইয়া কে সে আমার নিজের চোখের সামনে দেখতে পাবে।
#২দিন পর
মায়া, রিফতি রেহানের মাম্মা পাপ্পা দুইজনে এয়ারপোর্ট এর সামনে দাঁড়িয়ে আছে কিছুক্ষন পর রেহান এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে আসে
আশা করি তারপরের কাহিনি তো আপ্নারা সবাই জানেন!
চলবে…
(