#ভালোবাসার নেশা তুই
পর্ব:৩
লেখিকা:মিহিয়া মিহি
সারাটা রাত আরিয়ানের সাথে ফস্টিনষ্টি করেছিস, দুইদিন পর তো আরিয়ানের বাচ্চা তোর পেটেও ধরবি
বাজে মেয়ে একটা।তোর এতোই যখন শরিরের জ্বালা ছিলো, যে তা মিটাতে রাতের অন্ধকারের আরিয়ানের কাছে চলে যেতে হলো।আরিয়ানের থেকে তো আমাকেই বলতে পারতিস আমি মিটিয়ে দিতাম।
অবশ্য তোর মতো জঘন্য মেয়ের কাছ থেকে এর থেকে কি আর আশা করা যায়।
রাস্তার মেয়েদের তো স্বভাব এইরকমি থাকে।নিশান আমার দেওয়ালের সাথে শক্ত করে চেপে ধরে কথাগুলো বললো,,,
আমি বেকুবের মতো তারদিকে চেয়ে আছি,নিশানের একটা হাত দিয়ে আমার কপালে আসা কিছু অবাধ্য চুল সরিয়ে দিবে এমন সময় ধাক্কা দিয়ে তাকে নিজের কাছ থেকে আলাদা করলাম।
হঠাৎ এমন হবে নিশান হয়তো ভাবতে ওও পারেনি, তাই সে ধাক্কার ফলে কিছুটা পিছিয়ে গেল।
নিশান প্রচন্ড রাগি চোখে আমার দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে,তার আগেই আমি তার বুক বরাবর খোলা শাটের কলার ধরে বলতে লাগলাম,,,,
‘
‘
~আমি-সবাইতো আর আপনার মতো নিচু আর জঘন্য মনের মানুষনা।আপনার মতো দায়িত্বহিন,যে নিজের গালফেন্ডের আবদার পূরন করতে গিয়ে অচেনা অজানা একটা জায়গায় একটা নতুন মেয়েকে রেখে চলে যায়।
একটাবার তার কাছে শুনতে চাইলোনা যে সে এখানে কি করবে,একা একা সেটা না হয় বাদিই দিলাম।
কিন্তু সারাদিন পার হওয়ার পর ও রাত 12টা পর্যন্ত যদি কথা দিয়ে নিতে না আসে, একটাবার ভাবলোনা এতোরাতে একটা নির্জন জায়গায় অনায়াসে কোনো বিপদ হয়ে যেতে পারে।
এইটা কথা একটা বারও আপনার মনে পড়লোনা, আর এখন বলছেন আমি খারাপ তাইতো। আরে কালরাতে যদি ঠিক সময়ে আরিয়ান ভাইয়ার দেখা না পেতাম,তাহলে এতোখনে হয়তো আমার আব্বু আম্মুর কাছে আমার লাসটা চলে যেত।
অবশ্য আপনার মতো বদমেজাজি স্বার্থপর জঘন্য মানুষ এগুলা ছাড়া আর কি বা ভাবতে পারেন। এতোদিন ভাবতাম আপনি হয়তো আমাকে,আপনাদের বাড়িতে আসা পছন্দ করেন না, কিন্তু আজ বুঝতে পারলাম আপনি আমাকেই সয্য করতে পারেন না।
এবার থেকে আমার পা ও আপনার বাড়িতে পড়বেনা, এটা আমি কথা দিলাম।
কথাগুলো বলার সময় আমার চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়তে লাগলো।
এতোখনে নিরবে সবকথা শুনছিল নিশান,,,
এখন যে একদমি এই মেয়ে তার মুখ বন্ধ করে দিয়েছে সেতো ভাবতো এইমেয়ে বোবা কিছু বলতে পারেনা। কিন্তু আজ সে জানতে পারলো এই মেয়ে ভয়ঙ্করভাবে কথা বলতে পারে।
তার প্রতিটা কথা যে নিশানের বুকে শত শত আঘাত করছে তা হয়তো বুঝতে পারছেনা।
‘
‘
পিছন থেকে আরিয়ান বলে উঠলো,,,
~আরিয়ান-তুই জানিস,কাল কতোবড় বিপদ হয়ে যেত, আর তুই এতো দায়িত্বহিন কবে থেকে হলিরে নিশান।
যাই হোক সকাল হয়েছে,ব্রেকফাস্টটা তোরা এখানেই করেনে তারপর না হয় বাসায় চলে যাস।
আরিয়ানের কথাটা শেষ হওয়ার আগে নিশান আমাকে আচমকা টানতে টানতে গাড়িতে নিয়ে জোর করে বসিয়ে দেয় আর সে ড্রাইভ করে।
আরিয়ান নিশানের এমন আচরন দেখে মুচকি হাসলো,,,
~আরিয়ান-আমি জানি তুই নিলাশার জন্য কি অনুভব করিস,কিন্তু তুই তা মেনে নিতে চাচ্ছিসনা।
কিন্তু তা খুব শিঘ্রইতা নিজের মুখে মেনে নিবি, তুই কিয়ারাকে না নিলাশাকে ভালোবাসিস।
সারাটা রাস্তা আমি চুপচাপ বাইরের দিকে
তাকিয়ে ছিলাম,আর নিশান বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছে আবার মুচকি হেসে আবার ড্রাইভ করছে।
এগুলা দেখে আমি আরো বিরক্তি হয়ে উঠলাম,,,,
~আমি-আর একবার যদি গাড়ি চালানো বাদ দিয়ে আমার দিকে তাকিয়েছেন,তাহলে আমি আপনাকে গাড়ি থেকে রাস্তায় ফেলে দেব,চোখ রাঙ্গিয়ে কথাটা বললাম,,,,,
‘
‘
ব্রেক কষার শব্দে দেখলাম বাসায় এসে পড়ছি।
আমাকে দেখেই নিঝুম খান আমাকে জড়িয়ে
ধরে কান্না করতে লাগল।
আর শাওনখান মানে আব্বু মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে জিঙ্গাসা করতে লাগলো,,,,
~শাওনখান-কোথায় ছিলি মা, তুই জানিস আমরা সবাই কতটা টেনশন করছিলাম।আর তোর আম্মু তো সেই কালকে থেকেই কান্না করে যাচ্ছে।
আমি তাদের কথায় কি জবাব দিব,তা ভেবে পাচ্ছিনা। কালকের ঘটনাগুলো যদি বলি তাহলে মামা নিশানের উপর প্রচন্ড রাগ করতে পারে।
এতোখনে নিশান চুপকরে মাথা নিচু করে বসেছিল।শাওনখানের কথা শুনে নিশান কিছু বলতে যাবে আমি তার আগে আমি বলে উঠি,,,,
~আমি-আসলে আব্বু আজকে আরিয়ান ভাইয়ার বোনের বার্থডে ছিল,আর রেস্টুরেন্টে তাদের সাথে দেখা হয় তাই তাদের সাথে গিয়েছিলাম।
আর আমার তো ফোন নেই, তাই তোমাদের জানাতে পারিনি।
কিন্তু আমি আরিয়ান ভাইয়ার নাম্বার থেকে ফোন দিতে চেয়েছিলাম,পরে আর মনেছিলো না।
সরি আব্বু,কান ধরে,,,,
আমার কথাশুনে,,,
~নিঝুম খান-এই মেয়ে তুমি কি এখোনো ছোট্টটি আছো নাকি, তোমার কোনো ধারনা আছে আমি তোমার আব্বু তোমার মামা মামি কতটা টেনশন করছিলাম।
আর নিশান সারাটা রাত তোমাকে পাগলের মতো খুজে বেড়িয়েছে,আমি আম্মুর কথাশুনে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিলাম।সেটা সবার নজরে এড়ালেও নিশাদের চোখে ঠিকই ধরা পড়লো।
আর নিশান বুঝতে পারলো তাকে বাচানোর জন্য আমি এসব মিথ্যা কথা বলছি।
‘
‘
সে যেন অবাকের চরমসীমায় পৌচ্ছালো,,,,
~শাওন খান-আহ নিঝুম বকছো কেন?
মেয়েটা কেবল আসলো,ওকে এখন বিশ্রাম নিতে দাও,আমরা আজ বিকালে বাড়িতে রওনা দিব।
আমি সবার সাথে কথা বলে রুমে এসে সাওয়ার নিয়ে রেডি হয়ে নিলাম,,,
ট্রেনে বসে আছি 1ঘন্টা আগে ট্রেন ছেড়েছে,সবাই দেখা করতে এসেছিলো কিন্তু নিশান ভাইয়া একটিবার ও দেখা করেনি তাই চোখের সামনে বার বার নিশান ভাইয়ার মুখটা ভেসে উঠছে।
10দিন পর নিশান ছাদে দাড়িয়ে আছে,কিছুখন আগে কিয়ারার সাথে ব্রেকআপ করছে সে।
কিন্তু সেটা তার ভাবান্তর না,তার মূল ভাবনা এখন নিলাশাকে ঘিরে।
এই 10টা দিনে নিশান প্রতিটা মুহূতে নিলাশা কথা ভেবেছে। যদিও ছোটবেলা থেকে নিলাশার উপর তার একটা টান ছিলো,তাই তো সেগুলোকে চেপে রাখার জন্য নিলাশা যখন আসতো তখন রুমবথেকে বের হতো না।
কিন্তু দূর থেকে ঠিকই নিলাশাকে দেখতো, কিন্তু হঠাৎ একদিন নিলাশা তাদের বাড়িতে আসা ছেড়ে দেয় আর সেই প্রয়োজনের তাগিতে হয়তো ভেবেছিল কিয়ারা তার জিবনে চলে এসেছিল।
কিন্তু নিলাশা চলে আসায় এই সুপ্ত অনুভূতিরা
তাজা হয়ে আঘাত হানে। সে রাতে ঘুমাতে পারেনা, সাহারিয়ার চৌধুরির সামনে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে। সে যে আজকে জিবনের সবথেকে বড় সিদ্ধান্তটা নিতে চলেছে।
আর সাহারিয়ার জিঙ্গাসা দৃষ্টিতে তার দিকে চেয়ে আছে,,,,
~নিশান-আসলে আব্বু আমি একটি মেয়েকে ভালোবাসি।আর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমি তাকে
নিজের করে নিতে চাই।সে আর কেউ না নিলাশা…….
to be continue……
গল্পটা কেমন লাগছে অবশ্যই জানাবেন,ভালো লাগলে অতি দ্রুত পরের পর্ব দেওয়া হবে।
ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।