ভালোবাসি প্রিয় ৩ পর্ব -০৩

#ভালোবাসি_প্রিয় (০৩)

#সিজন_৩

#লেখিকা_নূন_মাহবুব

-“নাম টা বিন্দু, বিন্দু বিন্দু পানিই,
আমি যে কতো ছলা কলা জানি। ইশ্ আমি যে কতো ছলা কলা জানি।।।”
ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে আপন মনে গান গাইছে আর চুল স্ট্রেট করছে বিন্দু মাহতাব।এমন সময় কামরুল হাসান বিন্দুর রুমে প্রবেশ করে বললো,

-“হোয়াট হ্যাপেন্ড বেবি?আজ তোমাকে এতো হ্যাপি হ্যাপি লাগছে কেন?”

-“উইথ আউট এনি রিজন পাপা।”

-” আই নো এবাউট ইউ।সেই ছোট বেলা থেকে একা হাতে তোমাকে এতো বড়ো করেছি,কোনটা তোমার খুশি,কোনটা তোমার রাগ,কোনটা অভিমান,কোনটা ভালোবাসা আমার থেকে কেউ ভালো জানে না। কোন কারণ ছাড়া এতো খুশি হবার মেয়ে তুমি ন‌ও। তুমি নিশ্চয় আমার থেকে কিছু লুকিয়ে যাচ্ছো।কি হয়েছে বেবি বলো পাপা কে?

-” তেমন কিছু নয় পাপা। তুমি যে কাজ টা করতে পারো নি, অসম্পূর্ণ রেখেছিলে , তোমার সেই অসম্পূর্ণ কাজটা আমি সম্পূর্ণ করেছি।”

-“আই হ্যাভ নো আইডিয়া হোয়াট ডিড ইউ সে।”

-“আজ থেকে কয়েক মাস আগে তুমি যে মেয়েটাকে মা”র”তে চেয়েছিলে এমনকি মা”রা”র সুপারি ও দিয়েছিলে কিন্তু পরে সেই কিলার ওকে মা”রে নি,সেই মেয়েটার এই পৃথিবীতে আজ‌ই শেষ দিন। এতোক্ষণে মনে হয় কাজ হয়ে ও গিয়েছে।মেয়েটা হয়তো বুঝতে ও পারি নি আজ তার সাথে ঠিক কি কি হতে চলেছে?”

-“তুমি কি ভার্সিটির সেই গাইয়া দেড় ফুট মেয়ের কথা বলছো বেবি?”

-” হ্যাঁ পাপা।এতো দিন আমি এই দিনটার জন্যই অপেক্ষা করেছিলাম। মুখ বুজে ওর ‌সব অপমান সহ্য করেছি শুধু মাত্র আজকের দিনটার জন্য। বাঘের খাঁচায় হাত দিয়েছিল ঐ গাইয়া মেয়েটা আর আজ তার পরিনতি হাড়ে হাড়ে টের পাবে। বুঝতে পারবে এই বিন্দু মাহতাব কি জিনিস?তার সাথে লাগতে আসার পরিনতি কতোটা ভয়াবহ হতে পারে।”

-“কিন্তু বেবি তুমি এতো কিছু করলে কিভাবে?”

-“তোমার‌ই তো মেয়ে আমি পাপা। তোমার থেকেই শিখেছি কিভাবে শত্রু কে ঘায়েল করতে হয়।তবে মেয়েটা খুবই সহজ সরল।দুটো দিন একটু মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেছি আর আমাকে বিশ্বাস করছে ,আপন করে নিয়েছি।আর আমি সেই বিশ্বাস হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগিয়েছি। ভার্সিটির অনুষ্ঠানের নাচে ঐ মেয়ের নাম বৃত্ত নয় বরং আমি লিখিয়েছিলাম। কিন্তু বোকা মেয়েটা ধরে নিয়েছে এই কাজ বৃত্ত ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না। হা, হা হা। আজ যা যা হয়েছে সব আমার প্লান মাফিক হয়েছে। আমি ইমোশনাল ব্ল্যা”কমেইল করে ঐ মেয়েকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমার নিজের কাছে রেখেছিলাম।এমনকি যখন সিমরান আর ঐ মেয়ে গল্পে ব্যস্ত ছিল আমি ওর ফোন সিমরানের ব্যাগে ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম।যাতে বিপদে পড়ে কাউকে কল করতে না পারে।ব্যাস আমার কাজ ছিল ওকে অটো পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া।আর বাকি টা অটোওয়ালার দায়িত্ব। কিন্তু একটা ব্যাপার আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না বৃত্ত কেন আমার দোষ ওর নিজের উপর চাপিয়ে নিলো?ও তো কোন দোষ করেনি।বৃত্ত ইচ্ছা করলেই বলতে পারতো ও কিছু করেনি। কিন্তু সেইরকম কিছু না বলে উল্টো নিজের ঘাড়ে দোষ নিয়ে নিলো। কিন্তু কেন?”

-“কারন তোমাদের দুজনের এক‌ই উদ্দেশ্য ঐ গাইয়া মেয়েকে ভার্সিটি থেকে বিদায় করা,কষ্ট দেওয়া, অপমান করা।”

-“ইউ আর রাইট পাপা।”

-” তাহলে বৃত্ত জানে তুমি ঐ গাইয়া মেয়েকে মা”রা”র জন্য সুপারি দিয়েছো?”

-” নো পাপা।বৃত্ত চায় ও নিজে ওর অপমানের প্রতিশোধ নেবে,কষ্ট দেবে অপমান করবে। কিন্তু অন্য কেউ ঐ দেড় ফুট মেয়ের দিকে হাত বাড়ালে তার হাত কে”টে দিতে দুইবার ভাববে না। এজন্যই আমি বৃত্তের সামনে ঐ মেয়ের প্রশংসা করেছি,ঐ গাইয়া মেয়ের সঙ্গ দিয়েছি।যাতে কেউ আমার দিকে সন্দেহের আঙ্গুল না তোলে। শুধু বৃত্ত না ভার্সিটির সব স্টুডেন্ট এমনকি টিচার্সরা ও জানে ঐ গাইয়া মেয়েকে আমি আমার বোনের মতো দেখি।”

-” বাহ্ ইউর আর সো ব্রিলিয়ান্ট।আই অ্যাম প্রাউড অফ ইউ। লাভ ইউ বেবি।”

-” লাভ ইউ টু পাপা।”

___________________________________

-“আমি জেগে জেগে স্বপ্ন দেখছি না তো?কে কোথায় আছো আমাকে একটা চিমটি কা”টো।মিস দেড় ফুট আমার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছে। তুমি সত্যিই মিস দেড় ফুট তো?নাকি আমার মনের ভুল।না!না! আমার ভুল হয়ে পারে না। আমি শিওর তুমি মিস দেড় ফুট। কিন্তু তুমি আমার কাছে সাহায্য চায়ছো?ও মাই গড!আই কান্ট বিলিভ দিস।তবে তোমার এই আকুতি মিনতি দেখতে আমার খুব ভালো লাগছে। ইশ্ তোমার এই আকুতি মিনতি করা দৃশ্যে যদি ভিডিও করে রাখতে পারতাম ।তাহলে তুমি আমাকে যেভাবে ভাইরাল করেছিলে ঠিক একই ভাবে তোমাকে ও ভাইরাল করতে পারতাম। কিন্তু আফসোস আমার ফোন বন্ধ হয়ে গেছে।”

-” প্লিজ বৃত্ত আমাকে সাহায্য করুন।ঐ লোকগুলো ভালো নয়। আমি অটোতে উঠার পর থেকে দেখছি লোকটা অত্যন্ত বাজে ভাবে আমাকে দেখছিল।আর এখন তো উনি একা নন,তার সাথে আরো দুইজন যুক্ত হয়েছে।তবে আমি একটা বিষয় পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারছি ,তারা নিজেদের ইচ্ছায় এইখানে আসে নি। তাদের কে পাঠানো হয়েছে আমার ক্ষতি করার জন্য।”

-” তো আমি কি করবো মিস দেড় ফুট।”

-“আমাকে সাহায্য করুন। আমি জানি আল্লাহ তায়ালা আপনাকে আমার সাহায্যের জন্য পাঠিয়েছেন।”

-” হা,হা হা, হা। তুই জোক্সস ও জানিস দেখছি। তুই ভাবলি কি করে আমি তোকে সাহায্য করবো? তুই আমার লাইফ টা হেল করে দিয়েছিস। আমার চোখের ঘুম হারাম করে দিয়েছিস। আমি ঘুমোতে গেলেই তোর করা অপমান চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তুই আমার সবচেয়ে বড়ো শত্রু।আর আমি কি না আমার শত্রুকেই সাহায্য করবো? হা, হা ,হা।”

-“দোয়া যখন দেখলো গড়িতে বৃত্ত রয়েছে তখন নিজেকে বাঁ”চা”নো”র আশা ফিরে পেল। দোয়া ভেবেছিলো বৃত্ত হয়তো তাকে সাহায্য করবে।এই মানুষ রুপি পশুদের হাত থেকে রক্ষা করবে। কিন্তু দোয়া সম্পূর্ণ ভুল ছিল। দোয়া এক মূহুর্তের জন্য ভুলে গেছিলো বৃত্ত ঠিক কি কি করেছে তার সাথে।তার মধ্যে যে কোন মনুষ্যত্ববোধ নেয় এইটা ভুলে বসেছিলো দোয়া। হঠাৎ দোয়ায় নজরে এলো লোকগুলো একদম তার কাছাকাছি চলে এসেছে।যা দেখে দোয়ার হাত পা থরথর করে কাঁপতে শুরু হলো। শরীরে বিন্দু মাত্র শক্তি পাচ্ছে না।মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে রাস্তায় লুটিয়ে পড়বে।”

-” সেই অটোওয়ালা দোয়ার কাছে এসে বললো, মামনি অনেক খাটিয়েছো আমাদের, অনেক সময় নষ্ট হয়েছে তোমার জন্য।এর জন্য তোমাকে দ্বিগুণ মাশুল দিতে হবে। আমাদের চোখে ধুলো দিয়ে পালাতে চেয়েছিলে? কিন্তু আজ তোমার কোন রক্ষা নেই মামনি। কেউ বাঁ”চা”তে এগিয়ে আসবে না তোমাকে।আর কেউ যদি বাঁ”চা”তে আসে তাকে সহ তোমাকে শেষ করবো , বৃত্তকে উদ্দেশ্য করে লোকটা বললো।”

-” লোকটার কথা শুনে বৃত্ত বললো,না! না!মামা। আমি শুধু শুধু আপনাদের কাজে কেন বাঁধা দিবো?আপনারা আপনাদের উদ্দেশ্যে হাসিল করুন। বেস্ট অফ লাক।ক্যারি অন বলেই বৃত্ত শিষ বাজাতে বাজাতে গাড়ি নিয়ে চলে গেল।”

-“বৃত্তের জন্য দোয়া যতটুকু বাঁ”চা”র আশা ফিরে পেয়েছিল ,এক নিমিষেই জন্য সব শেষ হয়ে গেল। দোয়া ঝাপসা চোখে দেখতে পেল লোকগুলো নোং”রা
ভাবে হাসতে হাসতে তার দিকে এগিয়ে আসছে।”

-” দোয়া আল্লাহ রক্ষা করো বলেই রাস্তায় লুটিয়ে পড়লো।”

চলবে ইনশাআল্লাহ।।।

ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here